খুলনা
কেসিসি এলাকায় ৭ আগস্ট থেকে টিকা দেয়া শুরু
আগামী ৭ আগস্ট থেকে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) এলাকায় ৩১টি ওয়ার্ডে ৯৩ কেন্দ্রে করোনা প্রতিষেক টিকা প্রদান শুরু হবে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত টিকা প্রদান করা হবে।
জানা গেছে, করোনা নির্মূলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার আলোকে খুলনা সিটি করপোরেশন ১৯৬ জন ভ্যাক্সিনেটর প্রস্তুত করেছে। রবি ও সোমবার ছয় দফায় তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে করোনার টিকা নিবন্ধন সাময়িক বন্ধ
কেসিসি টিকাদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য মাস্টারপ্লান করেছে। বয়োজ্যেষ্ঠ ও নারীদের প্রাধান্য দেয়া হবে। টিকাদানের সময়সূচি শেষ হওয়ার পর ভ্যাক্সিনেটরদের কেন্দ্রে এক ঘণ্টা অবস্থান করতে বলা হয়েছে। প্রশিক্ষণে ইপিআই কর্মী, নার্স, প্যারা মেডিকেলের ছাত্রী ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা অংশ নেন। কেসিসির স্বাস্থ্য ভবনে ২৮ হাজার ৩৯ ডোজ মডার্না ও ৫ হাজার ৪৭৮ ডোজ সিনোফার্মের টিকা মজুদ রয়েছে।
মহানগরীর পুলিশ হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, শেখ আবু নাসের হাসপাতাল ও নেভী ক্যাম্পের উপশমে নিয়মিত টিকা দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: টিকা কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবককে মারধর, দুজনের এক মাসের কারাদণ্ড
রবিবার প্রশিক্ষণ নেয়া যক্ষা প্রকল্পের কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার সবিতা মজুমদার জানান, টিকাদান সম্পর্কে তিনি পরিপূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের যে কোন নারী-পুরুষ জাতীয় পরিচয়পত্র আনলেই তিনি টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
খুলনা বিভাগে করোনায় ২৬ মৃত্যু
খুলনা বিভাগে করোনায় মৃত্যু কমলেও বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৭৩ জনের। এর আগে রবিবার বিভাগে ৪০ জনের মৃত্যু ও ৮৮০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
সোমবার বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: করোনা: বরিশাল বিভাগে আরও ৩১ মৃত্যু
স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে খুলনা ও কুষ্টিয়ায় সাত জন করে, যশোর ও মেহেরপুরে তিন জন করে, মাগুরা ও ঝিনাইদহে দুজন করে; বাগেরহাট ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে রয়েছেন। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৯৫ হাজার ১৮৫ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৪৫৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭১ হাজার ৪৯৪ জন।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে খুলনা বিভাগে করোনায় ১৩১৮ মৃত্যু
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছর ১৯ মার্চ।
জুলাইয়ে খুলনা বিভাগে করোনায় ১৩১৮ মৃত্যু
সদ্য বিদায়ী মাস জুলাইয়ে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় করোনার ভয়াবহতা ছিল সবচেয়ে বেশি। সর্বাধিক মৃত্যুর সাথে রেকর্ড শনাক্তও হয়েছে জুলাইতে।
একই সাথে সর্বোচ্চ সংখ্যাক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর ওই মাসেই এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। তবে মাসের শেষ দিকে শনাক্ত ও মৃত্যু কমেছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মহামারিতে এক মাসে সর্বাধিক ১ হাজার ৩১৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে জুলাইয়ে। এক মাসে সর্বাধিক ৩৬ হাজার ১৫ জন রোগীও শনাক্ত হয়েছে ওই মাসেই। আর একই মাসে সর্বাধিক ৩০ হাজার ৩৮৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে করোনায় রেকর্ড ৯৯৬ শনাক্ত, মৃত্যু ৯
গত জুন মাসে বিভাগে ৪২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। শনাক্ত হয়েছিল ২২ হাজার ৬২৬ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন ৭ হাজার ৪৩ জন। দুই মাসে তিনদিক বিবেচনায় জুলাইয়ে করোনার ভয়াবহ অবস্থা ছিল খুলনা অঞ্চলে। মহামারির ১৭ মাসে এখন পর্যন্ত খুলনা বিভাগে এটাই সর্বোচ্চ।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার ডেল্টা বা ভারতীয় ধরনের কারণেই জুলাই মাসে এত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু ও আক্রান্তের লাগাম টানতে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে কিনা তা এখনো বলা কঠিন বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ৩১ জুলাই সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৯২ হাজার ৯৩২ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৩৮৮ জনে। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬৮ হাজার ৭৮৬ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: বরিশাল বিভাগে ১৮ মৃত্যু
জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে রয়েছে। খুলনায় মারা গেছেন ৬২৪ জন। এরপর কুষ্টিয়ার অবস্থান। এই জেলায় ৫৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া যশোরে ৩৪৪ জন, ঝিনাইদহে ২০২, চুয়াডাঙ্গায় ১৬১, মেহেরপুরে ১৩৭, বাগেরহাটে ১২৩, নড়াইলে ৯২, সাতক্ষীরায় ৮৫ ও মাগুরায় ৬৭ জন মারা গেছে।
কোভিড-১৯: খুলনা বিভাগে ৪০ মৃত্যু
খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৮০ জনের।
এর আগে শনিবার বিভাগে ১৯ জনের মৃত্যু এবং ৫৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। রবিবার বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে।
স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়ায়। বাকিদের মধ্যে যশোরে সাতজন, খুলনায় ও ঝিনাইদহে পাঁচ জন করে, বাগেরহাটে তিন জন, নড়াইলে ও চুয়াডাঙ্গায় দুই জন করে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু প্রায় ৪২ লাখ ১৬ হাজার
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৯৩ হাজার ৮১২ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৪২৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭০ হাজার ৯৫ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের জেলাভিত্তিক করোনা-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৮৯ জনের। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৩ হাজার ৯৬৫ জনের। মোট মারা গেছেন ৬২৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ৮৫৪ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৯ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৭১ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৪১৮ জন।
আরও পড়ুন: রামেক হাসপাতালে ১৮ জনের মৃত্যু
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭০৪ জন এবং মারা গেছেন ৮৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ৪৫৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় যশোরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৮৬ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৮২৬ জন। মোট মারা গেছেন ৩৫১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ২৭৩ জন।
এছাড়া, নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৪২ জনের। মোট মারা গেছেন ৯৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৮৭ জন।
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪৪ জনের শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ১২৫ জনের। মোট মারা গেছেন ৬৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৬৯ জন।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৬৫৪ জন। মোট মারা গেছেন ২০৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৭২৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৮১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৪১৫ জনের। মোট মারা গেছেন ৫৬৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৯৯২ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: বরিশাল বিভাগে ১৮ মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫২ জনের শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৪৬ জন। মোট মারা গেছেন ১৬৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ১৭ জন।
মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৩৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৮৬৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ১০৯ জন।
ফের বাড়ল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি
সারা দেশে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় এবং কঠোর লকডাউন থাকায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আবারও বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসাগুলোর চলমান ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় এবং কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসাগুলোর চলমান ছুটি আগামী ৩১ শে আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে: প্রধানমন্ত্রী
এর আগে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছিল।
গত ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা শিক্ষার্থীদেরও সংক্রামিত করতে পারে, এটা জেনেও সরকার তাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে পারে না। শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে।
এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর দেড় বছর পেরিয়ে গেছে, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। এতে তাদের পড়াশোনা ব্যাহত হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করার আহবান জানিয়েছে ইউনিসেফ-ইউনেস্কো।
আরও পড়ুন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে আর অপেক্ষা নয়: ইউনিসেফ-ইউনেস্কো
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে বৃহস্পতিবার আরও ২৩৯ জন মারা গেছে। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ২০ হাজার ২৫৫ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া একই সময়ে আরও ১৫ হাজার ২৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ব্লেন্ডেড এডুকেশন সিস্টেম’ চালু করার কথা ভাবছে সরকার: শিক্ষামন্ত্রী
খুলনায় ‘মাদকাসক্ত’ যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু
খুলনা নগরীর দৌলতপুর থানার অন্তর্গত রেলিগটে এলাকায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে মাদকাসক্ত বলে পরিচিত এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নিহত বাবু ওরেফে কুক বাবু (৩৫) রেলিগেট সা হেব বাজার এলাকায় বসবাস করতো বলে জানা যায়। স্থানীয়দের কাছে একজন মাদকাসক্ত হিসেবেই পরিচিত ছিল বাবু।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বখাটেদের ছুরিকাঘাতে দোকানি নিহত
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১২ টার দিকে প্রতিদিনের মতো আকাংখা বসতির পাশের বস্তি থেকে মাদকসেবীরা এসে নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদের ওপর মাদকের আসর বসায়। এ সময় অতিরিক্ত মাদক সেবনে বাবু নামের ওই যুবক জ্ঞান হারিয়ে ছাদ থেকে পড়ে যায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্য মাদকসেবীরা তাকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তবে নিহত বাবুর স্বজনদের দাবি, তার সঙ্গে থাকা মাদকসেবীরা তাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: খুলনা বিভাগে আজও ৪৬ মৃত্যু, শনাক্ত ১৪৩৫
মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে জানায় পুলিশ।
খুলনায় আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
খুলনার দিঘলিয়ায় এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। রবিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার চন্দনীমহল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ইয়াসিন শেখ (৪৫) ওই গ্রামের মোল্লাপাড়ার নিজাম শেখের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, রাতের কোনও একসময়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা
নিহতের পরিবারের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। রাতে কে বা কারা তাকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। নিহত ইয়াসিন স্থানীয় নৌকা প্রার্থীর সমর্থক ছিলেন।
দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিপন কুমার সরদার জানান, দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২
করোনায় খুলনা জেলায় ১১ মৃত্যু
খুলনার চারটি হাসপাতালে করোনায় শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা করোনা হাসপাতালে পাঁচ জন, শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে দুই, খুলনা জেনারেল হাসপাতালে এক ও গাজী মেডিকেল হাসপাতালে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহী মেডিকেলে করোনায় আরও ১১ মৃত্যু
হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আট জন করে।
খুলনার শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ৪১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন পাঁচ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার জন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের ৮০ শয্যার করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৫ জন, তার মধ্যে ২০ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ৯ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন।
আরও পড়ুন: করোনা ও উপসর্গে কুষ্টিয়ায় আরও ১৯ মৃত্যু
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্তাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ১১ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন সাত জন।
খুলনায় কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে লকডাউন
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে শুরু হওয়া লকডাউনের দ্বিতীয় দিন খুলনায় বেশ কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।
সর্বাত্মকভাবে লকডাউন পালনের জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশ ব্যাপক তৎপর রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: কুমিল্লায় আরও ১০ মৃত্যু, শনাক্ত ২০৯
শহর ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, লকডাউন সর্বাত্মকভাবে পালনে বাধ্য করতে পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক ও মোড়ে মোড়ে পুলিশ টহল দিচ্ছে। রাস্তায় পুলিশের টহল গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহৃত সীমিত সংখ্যক যানবাহন ছাড়া তেমন যানবাহন চোখে পড়ছে না। পথে পথে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। জরুরি কাজে কেউ বের হলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক জানান, লকডাউনের নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। যাদের সাথে রয়েছে বিজিবি ও এপিবিএন।
আরও পড়ুন: রামেকে করোনা কেড়ে নিলো আরও ২২ প্রাণ
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুব হাসান বলেন, জেলাব্যাপী লকডাউন কার্যকর করতে জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করছি। আমাদের সাথে সব সময় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণ রয়েছেন। লকডাউন সফল করতে জেলার ৯ থানায় ২৯টি চেক পোস্ট বসানো রয়েছে। ৪১টি টহল গাড়ির টিম সমগ্র জেলায় কাজ করছে।
তিনি জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে শুরু হওয়া দুই সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের শেষ পর্যন্ত কঠোর অবস্থানে থাকবে খুলনা জেলা পুলিশ।
খুলনা বিভাগে করোনায় ৩০ মৃত্যু
খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছে ৩৬১ জনের। এর আগে বৃহস্পতিবার বিভাগে ৪০ জনের মৃত্যু ও ২১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
শুক্রবার বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: রামেকে করোনা কেড়ে নিলো আরও ২২ প্রাণ
স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়া জেলায়। বাকিরা খুলনায় ও যশোরে পাঁচ জন করে; মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় তিন জন করে; মাগুরায় ২ জন ও ঝিনাইদহে একজন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে করোনা ও উপসর্গে আরও ১০ মৃত্যু
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৮৫ হাজার ৫৩৫ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৯৩ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৯ হাজার ১১৫ জন।