হত্যা
বগুড়ায় হত্যা মামলার আসামির গলাকাটা লাশ উদ্ধার
বগুড়ার নন্দীগ্রামে তিনটি হত্যা মামলার আসামি ও বালু ব্যবসায়ী আখের আলীর (৪০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার ওমরপুর এলাকার একটি ধান খেত থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আখের আলী বগুড়া সদরের সাবগ্রাম চান্দপাড়া গ্রামের মোয়াজ্জেম আলীর ছেলে। আখের আলীর নামে তার আপন বড় ভাই রাশেদ, যুবলীগ নেতা মানিক ও বালু ব্যবসায়ী সবুজ হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার নামে ডাকাতি, ছিনতাইসহ আরও ৭-৮ টি মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজশাহীতে বৃদ্ধার গলাকাটা লাশ উদ্ধার
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে ওমরপুর এলাকায় একটি ধান খেতে স্থানীয় লোকজন গলাকাটা লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, আখের আলী সরাসরি রাজনীতি না করলেও সরকারি দলের নেতাদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। এক সময় তিনি শ্রমিক লীগ সাতমাথা আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুবলীগ নেতা মানিক ও বালু ব্যবসায়ী সবুজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন আখের আলী। নিজের বড় ভাই রাশেদের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে ভাবীকে বিয়ে করতে ভাইকে খুন করে। পরে আখের আলীর ভয়ে তার ভাবী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
বর্তমানে তিনি লেবানলে শ্রমিকের কাজ করেন। আখের আলীর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তাদেরও ঘনিষ্ঠতা ছিল। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আখের আলীর একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া গেছে। ছয় মাস আগে জামিনে জেলখানা থেকে বের হন আখের আলী। এরপর গত ছয় মাসে তার নামে কোন অভিযোগ এলাকায় নেই। রবিবার সন্ধ্যার পর সাবগ্রামের পাশে ফনির মোড় এলাকার বাপ্পী নামের এক বালু ব্যবসায়ীর মোটর সাইকেল চেয়ে নেন আখের আলীর। লাশ উদ্ধারের পর সেই মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে আখের আলীর ঘনিষ্ঠ জন কেউ ডেকে এনে গলা কেটে হত্যা করেছে। তার নামে তিনটি হত্যাসহ অসংখ্য মামলার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:বাগান থেকে হত্যা মামলার আসামির গলাকাটা লাশ উদ্ধার!
মানিকগঞ্জে শ্বশুরবাড়ি থেকে নববধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
গাজীপুরে যুবক হত্যা: মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪
গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন আউচপাড়ায় ব্যবসায়ী সুমন মোহাম্মদ পাটোয়ারী হত্যায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ। রবিবার (২১ আগস্ট) রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার মোবারক হোসেন (২২), দত্তপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলম ওরফে জাহাঙ্গীর (২০), একই এলাকার সাকিব (২২) ও আউচপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন (৩৮)।
এর আগে রবিবার রাতে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল পূর্ব ঘটনার জের হিসেবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নোয়াখালীর চাটখিলের বাসিন্দা টঙ্গীর বড়দরা এলাকায় বসবাসকারী সুমন মাহমুদ পাটোয়ারী ওরফে তানোনকে (৩৩) হত্যা করে। হামলায় আহত হন নোয়াগাঁও এলাকায় বসবাসকারী সালাউদ্দিন তুহিনকে (২৮)।
এ ঘটনায় জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিস জানান, তার নেতৃত্বে ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার চারটি টিম এবং সহকারী পুলিশ কমিশনারের (ডিবি) নেতৃত্বে দুটি টিম টঙ্গী পশ্চিম এবং টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে যুবক হত্যা মামলায় এসআই রিমান্ডে
তিনি জানান, মূলহোতা মোবারককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন কসাই বাড়ি রেল গেইটে সহযোগী আসামিদের গ্রেপ্তার করতে গেলে সহযোগীরা মোবারককে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং পুলিশের উপর আক্রমণ করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে আসামির সহযোগীরা পালিয়ে যায়। মোবারককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি ছুরি ও একটি চায়নিজ কুড়াল উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে প্রুলশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে যুবক হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি, ৭ জনের যাবজ্জীবন
আজমিরীগঞ্জে যুবক হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড
কুষ্টিয়ায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ার মিরপুরে ডলি খাতুন নামের এক নারীকে গলাটিপে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজকে (৪২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো.তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ মিরপুর উপজেলার শামুখিয়া গ্রামের হান্নান ওরফে সন্টু কবিরাজের ছেলে। আর নিহত ডলি খাতুন মিরপুর উপজেলার পশ্চিম চুনিয়াপাড়া গ্রামে বাহারুল ইসলামের মেয়ে।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কড়া পুলিশ পাহারায় জেলা করাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় ধর্ষণ মামলায় আসামির যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়া জজ কোটের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী রায় এই বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মিরপুর উপজেলার পশ্চিম চুনিয়াপাড়া গ্রামে বাহারুল ইসলামের মেয়ে ডলি খাতুনের সাথে ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাব বিয়ে হয় একই উপজেলার শামুখিয়া গ্রামের হান্নান ওরফে সন্টু কবিরাজের ছেলে আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজের। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডলির সঙ্গে কামালের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এর মধ্যেই ডলি মিরপুর থানার তালবাড়ীয়া পরিবার পরিকল্পনা অফিসে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকুরী পান। চাকুরি পাওয়ার পর থেকে ডলি খাতুনের ওপর তার স্বামী কামাল নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল সকালে আসাদুজ্জামান কামালের সঙ্গে তার স্ত্রী ডলির কথা কাটাকাটি এবং ধস্তাধস্তি হয়। এর এক পর্যায়ে কামাল তার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত ডলির পিতা বাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে একই দিনে মিরপুর থানায় ডলির স্বামী আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ, তার পিতা সন্টু কবিরাজ এবং মা আমেনা খাতুনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারের পর স্ত্রী ডলিকে গলা টিপে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসাদুজ্জামান কামালকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালে ২৬ জুন মামলার চুড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কার।
পরে দীর্ঘ শুনানী শেষে ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় আ.লীগ নেতা হত্যা: ৫ জনের যাবজ্জীবন
শিক্ষক হত্যা মামলা: খুলনায় ১৭ বছর পর ২ জনের যাবজ্জীবন
সম্পত্তির জন্য মাকে গুলি করে হত্যা!
চট্টগ্রামের পটিয়ায় সম্পত্তির জন্য মাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মাইনুদ্দিন মইনুল (৩০) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পারিবারিক কলহের জেরে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা সদরের সামজার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জেসমিন আকতার (৫৫) জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম মাস্টারের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানায়, বাবা শামসুল আলমের রেখে যাওয়া সম্পত্তি ও টাকা-পয়সা নিয়ে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া লাগে মইনুলে। ঝগড়ার একপর্যায়ে দুপুরে মাকে মাথায় গুলি করে মইনুল। পরে প্রতিবেশিরা এসে জেসমিন আকতারকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রামে মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: উখিয়া ক্যাম্পে গুলিতে ২ রোহিঙ্গা নেতা নিহতপটিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি ছেলের পিস্তলের গুলিতে মা জেসমিন মারা গেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে।’তিনি বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে তাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০টি কার্তুজ ও একটি এয়ারগান জব্দ করে। তবে অভিযুক্ত মইনুল পালিয়ে যাওয়ায় ধরা যায়নি। তাকে আটকের জন্য অভিযান চলছে।’
অভিযুক্ত মইনুলের নামে কয়েকটি মামলা আছে বলেও পুলিশ জানায়।জানা গেছে, নিহত জেসমিন কিছুদিন পর মেয়ের কাছে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। মইনুলের সন্দেহ ছিল সব সম্পত্তি বিক্রি করে মা বিদেশে পাড়ি দিতে চাচ্ছেন। তার বাবা শামসুল আলম মাস্টার দীর্ঘদিন পৌর মেয়র ছিলেন। গত ১৩ জুলাই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান তার বাবা। তার বিপুল সম্পত্তি রয়েছে। তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের গুলিতে শিশু নিহত
পাবনায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
পাবনার সদর উপজেলার ভাঁড়ারায় যৌতুকের দাবিতে রুমানা পারভিন নামে এক নারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী আব্দুল্লাহ ওরফে অকাতকে ফাঁসির আদেশ এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল্লাহ ওরফে অকাত ভাঁড়ারা ইউনিয়নের পশ্চিম দামুয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ প্রামাণিকের ছেলে। এবং নিহত রুমানা পারভিন একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে।
রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে মৃত্যুদণ্ড আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং খালাসপ্রাপ্তদের মুক্তির আদেশ দেয়া হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালে ভালোবেসে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী আব্দুল্লাহ। একাধিকবার টাকা দিলেও ঘটনার কয়েকদিন আগে আবারও যৌতুকের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবর গভীর রাতে ঘরে থাকা বন্দুক দিয়ে রুমানাকে গুলি করে হত্যা করেন স্বামী।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ চারজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই রায় ঘোষণা করা হলো।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম ফরিদ উদ্দিন এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ট্রাইব্রুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুর রকিব।
রাজধানীর হোটেলে নারী চিকিৎসককে হত্যার অভিযোগ ‘স্বীকার' স্বামীর
রাজধানীর এটি হোটেলের কক্ষে নিজের চিকিৎসক স্ত্রীকে হত্যার কথা তার স্বামী স্বীকার করেছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব সদরদপ্তরে পুলিশের এলিট ফোর্সের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের সময় রেজাউল করিম রেজা আমাদের জানান, তিনি তার স্ত্রী ডা. জান্নাতুল নাঈম শ্রীতিকাকে তার জন্মদিন উদযাপনের অজুহাতে হোটেলে নিয়ে যান এবং তারপর ছুরি দিয়ে গলা কেটে তাকে হত্যা করেন।’
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর এলাকা থেকে রেজাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২ ও ৭ সদস্যরা।
গত ১০ আগস্ট রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টের পঞ্চম তলার কক্ষ থেকে শ্রীতিকার লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: সাভারে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার
মগবাজার কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে গাইনোকোলজির প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন শ্রীতিকা।
পরদিন নিহতের বাবার অভিযোগে রেজাকে আসামি করে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করা হয়।
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মরত রেজা কক্সবাজারের বাসিন্দা। গ্রেপ্তারের পর রেজার কাছ থেকে রক্তমাখা কাপড়, মোবাইল ফোন ও স্ত্রীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করে র্যাব।
রেজার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ২০১৯ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হওয়ার পর রেজা ও শ্রীতিকা একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে এবং ২০২০ সালে গোপনে বিয়ে করেন। তাদের পরিবার এই বিয়ের কথা না জানায় তারা রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে দেখা করতেন।
র্যাব বলেন, ‘রেজার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য শ্রীতিকা ও রেজার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকলে রেজা তার স্ত্রীর কাছ থেকে পরিত্রাণ পেতে তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।’
র্যাব আরও জানায়, গত ১০ আগস্ট রেজা তাকে তার জন্মদিন উদযাপনের জন্য হোটেলে নিয়ে যায় এবং পরিকল্পিতভাবে ঝগড়া শুরু করে। তারপর ছুরি দিয়ে শ্রীতিকাকে আঘাত করে এবং পরে তার গলা কেটে দেয়।
হত্যার পর আসামি হোটেলের ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা দিয়ে রুম ছেড়ে দিয়ে বাসে করে চট্টগ্রামে পালিয়ে যায় বলে জানায় র্যাব।
আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান কমান্ডার খন্দকার।
আরও পড়ুন: মীরসরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
উখিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গুলি করে হত্যা
সাভারে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার
সাভারে সামিয়া রহমান (২১) নামের এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগে শুক্রবার তার স্বামী সাদমান সাকিব হৃদয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, প্রতিবেশিরা ওই নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এবিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম জানান,কিভাবে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
এঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামিকে কুপিয়ে ‘হত্যা’
সিরাজগঞ্জে মেয়ে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
মীরসরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে সুভাষ চৌধুরী (৬৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাতে উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপুর গ্রামে সুভাষকে পিটিয়ে আহত করার পর সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত সুভাষ চৌধুরীর ছেলে ফিলিপ চৌধুরী বলেন, ‘জায়গা জমি নিয়ে গতকাল প্রতিবেশি বরুণ চৌধুরীর ছেলে শাওন চৌধুরীর সঙ্গে বাবার ঝগড়া হয়। তখন তারা বাবাকে হুমকি দিয়েছিল। অবশ্য পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য সমাধানও করে দেন। কিন্তু রাতে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাবাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। সারারাত বাড়িতে না ফেরায় সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে বাড়ির পাশের ঝোপঝাড় থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় বাবাকে উদ্ধার করা হয়। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে বাবা মারা যান। বাবার শরীরে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা হত্যা মামলা করবো।
চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, সুভাষ চৌধুরী নামে গুরুতর আহত অবস্থায় এক বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের ভাষ্যমতে, তিনি প্রতিবেশিদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন।
আরও পড়ুন: উদয়ন ট্রেন থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ উদ্ধার
ট্রেনের টয়লেট থেকে মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার
বাগান থেকে হত্যা মামলার আসামির গলাকাটা লাশ উদ্ধার!
মাদারীপুরের রাজৈরে শাহিন (২৭) নামে এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকালে উপজেলার চৌরাশির একটি বাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শহিন উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের মস্তফা শেখের ছেলে। তিনি একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সুত্র জানায়, শনিবার, ৬ আগস্ট পরিবারের লোকরা বেড়াতে যাওয়ায় শাহীন ঘরে একাই ঘুমিয়ে ছিল।পরদিন সকালে চৌরাশি এলাকার একটি বাগানে এলাকার লোক শাহীনের ক্ষত -বিক্ষত গলাকাটা লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
শাহিন ২০১৯ সালে রাজৈরের মুরগী ব্যবসায়ী সোহেল হাওলাদার হত্যা মামলার ৬ নং আসামি ছিল। ঢাকায় বর্তমান রং মিস্ত্রির কাজ করতো। কয়েক দিন আগে মামলার হাজিরা দিতে দেশে আসছিল।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাইনদ্দিন (৪৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বুড়িগঙ্গা থেকে মাঝির লাশ উদ্ধার
হোটেল থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের লাশ উদ্ধার
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে রুল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে ও পুনর্বাসনে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধাদের চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি/কমিশন কেন গঠন করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব, সংস্কৃতি সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. বাকির উদ্দিন ভুঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. আবু হানিফ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষিকা সামিয়া রহমানের পদাবনতির সিদ্ধান্ত অবৈধ: হাইকোর্ট
পরে অ্যাডভোকেট বাকির উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যরা ও তার নিকটাত্মীয়দের নৃশংসভাবে হত্যার পর বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৎকালীন সামরিক সরকার মিছিল-মিটিং সব বন্ধ করে দেয়। তখন মানুষের মনে একটা ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়। ওই দিনই নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, খুলনা, যশোর, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ হয়।
পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় মুজিব বাহিনী নামে দুটি সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী গঠিত হয়। তখন কয়েক হাজার বঙ্গবন্ধু ভক্ত ছাত্র-তরুণ-যুবক এ দুই বাহিনীতে যোগদান করেন। তারা ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে লিপ্ত হন। তাদের প্রতিরোধের কারণে তৎকালীন সরকার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ওপর জুলুম নির্যাতন শুরু করে। ওই সময়ের ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনীকে নানাভাবে সহযোগিতা করত।
কিন্তু ১৯৭৭ সালে মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় মোর্চা সরকার’ জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনীর সদস্যদেরকে বাংলাদেশের বিডিআরের কাছে হস্তান্তর করলে তাদের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্দিন, জেল, জুলুম ও নির্যাতন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ৪৭ বছর পার হলেও এখনও সেই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অনেকেই চরম কষ্ট-অবহেলায় জীবন যাপন করছেন।
গত ১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। নেত্রকোণার আনিস খোন্দকার, সাইদুল কাদির, সুনামগঞ্জের ইউসুফ আলী, পরিমল সরকার ও গাজীপুরের স্বপন চন্দ হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি মামলার আসামিদের অব্যাহতি, দুদকের আইওকে হাইকোর্টে তলব
অস্ত্র মামলায় নূর হোসেনের যাবজ্জীবন