ইন্দোনেশিয়া
প্রায় ২৩ মিলিয়ন লিটার সয়াবিন তেল চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে
সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ আমদানি করা ভোজ্যতেল চট্টগ্রাম বন্দরে আসার কয়েকদিনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ২২ দশমিক ৯ মিলিয়ন লিটার সয়াবিন তেল এসেছে এবং শুক্রবার ১৩ হাজার টন পামতেলের ট্যাঙ্কার বন্দরে আসবে।
জানা গেছে, সিঙ্গাপুর থেকে ২২ মিলিয়ন লিটার অপরিশোধিত সয়াবিন তেল নিয়ে ‘এমভি ওরিয়েন্ট চ্যালেঞ্জ’ নামের একটি জাহাজ গত ২৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। অপরদিকে ১৩ হাজার টন পামতেল বহনকারী জাহাজ ‘এমটি সুমাত্রা পাম’ আসার কথা রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটি ২৬ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার লুবুক গিয়াং বন্দর থেকে যাত্রা করেছিল। মেরিন ট্রাফিক তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সয়াবিন তেলের সংকটের জন্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে দুষছে বিএনপি
সিপিএ সেক্রেটারি উমর ফারুক সাংবাদিকদের জানান, গত বৃহস্পতিবার তেল নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।
তিনি বলেন, দেশের শীর্ষ চার কোম্পানি সিটি গ্রুপ, সেনা কল্যাণ ভোজ্যতেল, বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ও বসুন্ধরা গ্রুপ এ তেল আমদানি করেছে। আমদানি করা তেল খালাসের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে ইন্দোনেশিয়ার জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট মোহাম্মদি ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক কাজী আবু নাঈম জানান, ‘এমভি সুমাত্রা পাম’ জাহাজটি শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার পামতেল রপ্তানি বন্ধে বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল রপ্তানিকারক দেশ। বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পামতেলের প্রায় ৯০ শতাংশই সাধারণত ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। দেশটি (ইন্দোনেশিয়া) ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে পাম তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়া সরকারের পাম তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার আগে দেশের শীর্ষ আমদানিকারকরা এপ্রিল মাসে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টন পাম তেল এনেছিল।
বাংলাদেশ বছরে প্রায় এক দশমিক তিন মিলিয়ন টন পামতেল আমদানি করে। এর ৯০ শতাংশ ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। বাকি ১০ শতাংশ আসে মালয়েশিয়া থেকে।
ইন্দোনেশিয়ার পামতেল রপ্তানি বন্ধে বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম
বিশ্বের শীর্ষ পামতেল উৎপাদনকারী ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর গত দুই দিনে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম তীব্রভাবে বেড়েছে।
শুক্রবার ইন্দোনেশিয়া ২৮ এপ্রিল থেকে পামতেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক এবং কয়েক সপ্তাহ বা মাস খানেক স্থায়ী হবে।
রাজধানীতে যে সয়াবিন তেল (খোলা) প্রতি লিটার ১৯২ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল সোমবার তা বিক্রি শুরু হয়েছে ২০০ টাকায়।
রাজধানীর কিছু এলাকায় বেশি দামেও তেল পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু খোলা সয়াবিন তেলই নয়, বোতলজাত তেলেও ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের আমদানির ওপর ভ্যাট কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
শান্তিনগর বাজারের ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, বেশি দামে তেল বিক্রির জন্য বিক্রেতারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন।
এক খুচরা বিক্রেতা ইউএনবিকে জানান, রবিবার সকালে তারা ১৭৫ টাকা লিটারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করেছেন। ওই দিন বিকেলে তারা পাইকারের কাছ থেকে লিটার প্রতি ১৮২ টাকায় একই ভোজ্যতেল কেনেন। পরে সোমবার সকালে একই তেল লিটার প্রতি ১৯২ টাকায় কেনেন তারা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি সেলের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা এক অতিরিক্ত সচিব ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
আরও পড়ুন: ২৯ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল নিয়ে চট্টগ্রামে দুই জাহাজ
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, পামতেলের চাহিদা মেটাতে ভোজ্যতেলের বিকল্প উৎসের বিষয়ে মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।
বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছে বা আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে। তাই দাম বৃদ্ধি বা ঘাটতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এশিয়ার লাখো মানুষ বাস্তুহারা হবে: জাতিসংঘ
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী কয়েক দশকে এশিয়ার লাখ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়বে। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত নিমজ্জিত হয়ে যাওয়া শহরগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা অন্যতম। খুব দ্রুতই জলবায়ু পরিবর্তন শহরটির বিভিন্ন অংশকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। জাভা সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী এক দশকে শহরটির আনুমানিক এক-তৃতীয়াংশ নিমজ্জিত হয়ে যাবে।
ইন্দোনেশিয়া সরকার রাজধানী এক হাজার ২৪০ মাইল (২০০০ কিলোমিটার) উত্তর-পূর্বের বোর্নিও দ্বীপে সরানোর পরিকল্পনা করছে। এজন্য কমপক্ষে ১৫ লাখ বেসামরিক কর্মচারীকে দ্বীপটিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
এটি একটি বিশাল উদ্যোগ, তবে এটি মূলত ইন্দোনেশিয়ার জনগণের গণআন্দোলনের ফল। আগামী দিনগুলোতে এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ রিপোর্ট অনুসারে, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, খরা, অধিক তাপমাত্রা এবং অন্যান্য জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে আগামী ৩০ বছরে ১৪৩ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়বে।
এশিয়ায় বিভিন্ন দেশের সরকারকে ইতোমধ্যে এটি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অভিবাসী এশিয়া থেকে এসেছে। চরম আবহাওয়া, ঝড় ও বন্যার কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার সংখ্যার দিক থেকে এশিয়ার অবস্থান সবার ওপরে। একে একে গ্রামগুলি খালি হয়ে যাওয়া ও জাকার্তার মতো মেগাসিটিগুলি ঝুঁকির মধ্যে থাকায় বিজ্ঞানীরা অভিবাসন বৃদ্ধির ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৪০ মিলিয়ন মানুষ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে পানির অভাব, ফসল বিনষ্ট, ঝড়বৃষ্টি এবং অন্যান্য বিপর্যয়ের কারণে স্থানান্তরে বাধ্য হতে পারে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানী ক্রিস ফিল্ড বলেছেন, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বৃদ্ধি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে বর্তমানে অল্প কিছু স্থান রয়েছে যেগুলো বসবাসের জন্য অধিক উষ্ণ। তবে এশিয়ায় এরকম স্থানের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে, ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এর পরিণতি ও প্রভাব সম্পর্কে আমাদের কঠোরভাবে ভাবতে হবে।
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত ৭, আহত ৮৫
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্পে কমপক্ষে সাতজন নিহত এবং ৮৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির ন্যাশনাল বোর্ড ফর ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (বিএনপিবি)।
সংস্থাটির মুখপাত্র আব্দুল মুহারি বলেছেন, শুক্রবার ছয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পের কারণে পাঁচ হাজারের অধিক মানুষকে অস্থায়ীভাবে পশ্চিম পাসামান জেলার ৩৫টি অপসারণ কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত এলাকায় বিভিন্ন উদ্ধারকারী সংস্থা, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান এখনও অব্যাহত রেখেছেন।
প্রথমে ভূমিকম্পটিকে ছয় দশমিক দুই মাত্রার বলা হলেও পরবর্তীতে এটি সংশোধিত হয়। এ ঘটনায় কয়েক ডজন ভবন ও এক হাজারের অধিক বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত ২২
করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইন্দোনেশিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
শনিবার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১১ হাজার ৫৮৮ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, যা গত বছরের আগস্টের পর একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। এছাড়া একদিনে ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ইন্দোনেশিয়া গত বছর করোনা মোকাবিলায় যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। গত ডিসেম্বেরে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ২০০-এ নেমে এসেছিল। তবে ওমিক্রন সংক্রমণ শনাক্তের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু সাড়ে ৫৬ লাখ ছাড়িয়েছে
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুনাদি সাদিকিন শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘সংক্রমণ অত্যন্ত দ্রুত বাড়বে। আমরা শিগগিরই সংক্রমণ বৃদ্ধি দেখতে পাব। বর্তমান ঢেউ সম্ভবত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে বা মার্চের শুরুতে শীর্ষে উঠবে৷
তিনি বলেন, সরকার কোভিড রোগীদের জন্য আরও শয্যা বৃদ্ধি করেছে। সব এলাকায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ওমিক্রন প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল রাজধানী জাকার্তা। যদিও রাজধানীর ৮০ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে বলে জাকার্তার ডেপুটি গভর্নর আহমদ রিজা পাত্রিয়া জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকার লঙ্কান ক্রিকেটার ইসুরু উদানা করোনায় আক্রান্ত
ইন্দোনেশিয়ায় নাইটক্লাবে সংঘর্ষের পর আগুন, নিহত ১৯
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম পাপুয়া প্রদেশের সোরং শহরের একটি নাইট ক্লাবে দুই দলের সংঘর্ষের পরে আগুন লেগে ১৯ জন মারা গেছেন।
মঙ্গলবার দেশটির পুলিশের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
দেশটির জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র আহমেদ রামাদান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দুই গ্রুপের সদস্যরা একে অপরের ওপর ছুরি, তীর এবং মোলোটভ ককটেল দিয়ে হামলা চালায়।
তিনি আরও জানান, নিহতদের মধ্যে সোমবার রাতে সংঘর্ষে লিপ্ত গোষ্ঠীর এক সদস্য রয়েছে। এছাড়া ক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের পরে ১৮ জনের লাশ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ৭৭ বছর পর ভারতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিখোঁজ বিমানের সন্ধান
সোরং শহরের পুলিশ প্রধান আরি নিয়োতো সেতিয়াওয়ান বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে একই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে প্রথমে শনিবার রাতে সংঘর্ষ হয়। এরপর সোমবার রাতে নাইটক্লাবে সংঘর্ষ হয়।
সেতিয়াওয়ান বলেন, আমরা তাদের ডেকে মধ্যস্থতা করি। কিন্তু তারা গভীর রাত পর্যন্ত সংঘর্ষ চালিয়ে যায়। সংঘর্ষের সময় পুলিশ নাইটক্লাবের দর্শকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু দমকলকর্মীরা পরে ভবনের ভেতরে একটি কক্ষে ১৮টি লাশ খুঁজে পান।
সংঘর্ষের কারণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি ইচ্ছাকৃত এ বিষয়টি অনুসন্ধানে পুলিশ এখনও তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আফ্রিকা কাপ অব নেশনস: ক্যামেরুনে স্টেডিয়ামে পদদলিত হয়ে নিহত ৬
ভারতে আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৭, দগ্ধ ১৫
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী, সুনামির আশঙ্কা নেই
ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় দ্বীপ জাভায় শুক্রবার ৬ দশমিক ৬ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এসময় ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি এবং লোকজন ভয়ে রাস্তায় বের হয়ে আসে, তবে কোনো হতাহাতের খবর পাওয় যায়নি। ভূমিকম্পে ফলে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি সমুদ্রের তলদেশে ৩৭ কিলোমিটার বা (২৩ মাইল) গভীরতায় আঘাত হানে এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল বানটেন প্রদেশের উপকূলীয় শহর লাবুয়ানের প্রায় ৮৮ কিলোমিটার (৫৪ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত মহাসাগরে।
ইন্দোনেশিয়ার মেটিওরোলজি, ক্লাইমাটোলজি এবং জিওফিজিক্যাল এজেন্সির প্রধান দ্বিকোরিতা কর্নাবতী বলেছেন, সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই তবে সম্ভাব্য আফটারশকের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র তলদেশে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প: সুনামি সতর্কতা
ভূমিকম্পে রাজধানী জাকার্তায় উচ্চ দালানগুলো ১০ সেকেন্ডেরও বেশি সময় ধরে নড়াচড়া করে এবং কিছু লোক দ্রুত রাস্তায় নেমে আসে। এছাড়া স্যাটেলাইট শহর টাঙ্গেরং, বোগর এবং বেকাসিতেও দোতলা বাড়িগুলো প্রবলভাবে কেঁপে ওঠে।
জাকার্তার একটি ভবনের ১৯ তলা বাসিন্দা লায়লা আনজাসারি বলেন, ‘কম্পনটি ভয়ঙ্কর ছিল... আমার রুমের সবকিছু দুলছিল, আমরা আতঙ্কে সিঁড়ি বেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে পড়ি।’
ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সির মুখপাত্র আবদুল মুহারি বলেছেন, অন্তত ২৫৭টি বাড়ি এবং ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার বেশিরভাগই ভূমিকম্পের সবচেয়ে কাছের জেলা পান্ডেগ্লাংয়ে। এছাড়া অন্যত্র সামান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে, তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ারের’ অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কূলে পৌঁছে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী
ভাঙা নৌকায় ভেসে বেড়ানো ১২০ রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীকে উদ্ধার করে বন্দরে পৌঁছে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ। গত কয়েকদিন আগে আচেহ প্রদেশ থেকে এই শরণার্থীদের নিয়ে নৌকাটি রওনা হয়।
বৃহস্পতিবার দেশটির নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শরণার্থীবাহী কাঠের নৌকাটি গত কয়েকদিনে ভেঙে যায় এবং নৌকাটির ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়।
বুধবার ইন্দোনেশিয়ার সরকারি এক বিবৃতিতে জানানো হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তারা কূলে ভিড়তে অনুমতি দিচ্ছে। কারণ নৌকাটির অবস্থা খুবই খারাপ এবং এর যাত্রীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
যদিও এর আগের দিন মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, নৌকায় থাকা ১২০ রোহিঙ্গাকে তারা খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করবেন। তবে আন্তর্জাতিক অনুরোধ রেখে তাদের শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করা হবে না।
আরও পড়ুন: ভাসানচর থেকে পালানোর সময় রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যু
নৌবাহিনীর ওয়েস্টার্ন ফ্লিট কমান্ডের মুখপাত্র কর্নেল লা ওডে এম হোলিব জানিয়েছে, ভাঙা নৌকাটিকে বৃহস্পতিবার ভোরে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ আচেহ জেলার বিরুয়েন উপকূল থেকে প্রায় ৫৩ মাইল (৮৫ কিলোমিটার) দূরের লোকসেউমাওয়ে জেলার একটি বন্দর; ক্রুয়েং গেউকেহের দিকে নিয়ে যায়।
কর্নেল হোলিব আরও বলেন, তীব্র ঢেউ ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাদের উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে, তারা আশা করছে আজকের আবহাওয়ার উন্নতির ফলে নিরাপদে শরণার্থীদের উদ্ধার করতে পারবে।
স্থানীয় উপজাতীয় মাছ ধরা সম্প্রদায়ের নেতা বদরুদ্দিন ইউনুস বলেন, স্থানীয় জেলেরা রবিবার প্রথমে নৌকাটি বিরুয়েনের উপকূল থেকে প্রায় ৬০ মাইল (৯৬ কিলোমিটার) দূরে ভাসতে দেখেছিল।
তিনি আরও বলেন, জেলেরা ৬০ জন নারী, ৫১ জন শিশু ও ৯জন পুরুষসহ যাত্রীদের খাবার, পানি ও কাপড় সরবরাহ করেছে। ভাসমান রোহিঙ্গারা জানিয়েছিল তারা মালয়েশিয়া যেতে চায়, নৌকার ইঞ্জিন বিকল হওয়ার আগে তারা ২৮ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পক্ষে একা রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেয়া উচিত না: জাতিসংঘ
অন্যদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্দোনেশিয়ার প্রতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। সেসময় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করেছিল। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর প্রতি গণধর্ষণ, হত্যা এবং হাজার হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির ছেড়ে সমুদ্রপথে প্রাণ ঝুঁকি নিয়ে অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে মুসলিম-অধ্যুষিত মালয়েশিয়া তাদের কাছে জনপ্রিয় একটি গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এছাড়া পাচারকারীরাও মালয়েশিয়ায় তাদের উন্নত জীবন-যাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাচার করছে। কিন্তু বাস্তবে মালয়েশিয়ায় এসে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী বন্দি জীবন কাটাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরের পথে ৬১৩ রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমারকে শক্তিশালী বার্তা পাঠাবে ইন্দোনেশিয়া
দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে শক্তিশালী বার্তা দিতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। বুধবার ঢাকায় সফররত ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানিয়েছেন।
এসময় মারসুদি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আমরা মিয়ানমারকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবো।’
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দেয়ার পর, তিন বছর পার হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষা করে যাচ্ছে…. কারণ বর্তমানে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝায় পরিণত হয়েছে।’
১৮তম ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পরিষদ বৈঠকে যোগ দিতে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় এসেছেন।
এছাড়া এ বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসা দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ড. প্যন্ডরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি শেখ হাসিনার আহ্বান
এসময় প্রধানমন্ত্রী ড. প্যন্ডর বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম একই ছিল, কারণ দুই নেতাই দীর্ঘ সময় জেলে বন্দী থাকা ছাড়াও ব্যক্তি জীবনে অসামান্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে জানান,বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,‘আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সুনীল অর্থনীতি বিকাশের স্বার্থে ভারত মহাসাগরকে শান্তিপূর্ণ রাখা।’
এসময় ড. প্যন্ডর বৈশ্বিক করোনা মহামারির কথা উল্লেখ করে দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইজার এবং জনসনের করোনা টিকা তৈরির কথা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরেক পৃথক বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিশেষ করে যোগাযোগ প্রযুক্তি, ব্যবসা ও ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ইহসানুল করিম জানান, এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের ক্ষুদ্র সঞ্চয় কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া মহামারি পরবর্তী সময়ে দেশে খাদ্য ঘাটতি এড়াতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা খাদ্য সুরক্ষার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছি।’
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সঙ্কটে ফ্রান্স বাংলাদেশের পাশে থাকবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের নিয়ে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে ঢাকা-প্যারিসের মতবিনিময়
ইন্দোনেশিয়ার কারাগারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪১
ইন্দোনেশিয়ার একটি কারাগারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪১ বন্দী নিহত এবং প্রায় ৮০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দেশটির রাজধানী জাকার্তার খুব কাছে অবস্থিত তাংগেরাং কারাগরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
জাকার্তা পুলিশ প্রধান ফাদিল ইমরান জানিয়েছেন, প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় কারাগারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। কারাগারের নিরাপত্তায় এবং বন্দীরা যেন পালাতে না পারে, সেই লক্ষ্যে কারাগারের চারপাশে কয়েক শ’ পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণের ফুলকি থেকে কেরানীগঞ্জের টিনশেড মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড
তিনি বলেন, ‘আগুন নেভানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি আমাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জন মারা গেছে এবং ৮০ জনকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।’
তবে, আহতদের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জাকার্তার পুলিশ প্রধান জানান।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড
ফাদিল ইমরান আরও জানান, কারা কর্তৃপক্ষ এখনও এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।
উল্লেখ্য, কারাগারটির ধারণ ক্ষমতা ১২২৫ জনের হলেও, সেখানে ২ হাজার কারাবন্দীকে রাখা হয়েছিল।