গণপরিবহন
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: বাড়ছে গণপরিবহন ও লঞ্চের ভাড়া
দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে গণপরিবহন ও লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে সরকার নির্দেশিত নতুন দাম কার্যকর হওয়ায় সড়ক ও নৌ উভয় রুটের পরিবহন খাতের জ্বালানি খরচ ১৩ দশমিক ১৬ থেকে ১৯ দশমিক ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এনার্জি অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্স ডিভিশনের এক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১১৪ টাকা এবং পেট্রোল ও অকটেনের দাম যথাক্রমে ১৩০ ও ১৩৫ টাকা লিটারে বাড়িয়েছে সরকার।
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ডিজেলের দাম প্রতি লিটার ৩৪ টাকা বৃদ্ধির ফলে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ৫২ সিটের দূরপাল্লার বাস ভাড়া ০.২৯২ টাকা বা ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়বে এবং শহর এলাকায় ৫২ সিটের বাসের ভাড়া ০.২৮৩ টাকা বা ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
জ্বালানি বিভাগের তথ্যানুসারে, একইভাবে ডিজেল চালিত মোটর লঞ্চের প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ভাড়া ০.৪২ টাকা বা ১৯.১৮ শতাংশ বাড়তে পারে।
বিশ্লেষণ অনুসারে, প্রতি কিলোমিটার দূরপাল্লার বাসের ভাড়া বর্তমান ১.৮০ টাকার বিপরীতে ২.০৯২ টাকা হতে পারে।
একটি সিটি কোচের জন্য, বর্তমান ২.১৫ টাকা থেকে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ভাড়া বেড়ে ২.৪৩ টাকা হবে।
একইভাবে প্রতি কিলোমিটার লঞ্চ ভাড়া বর্তমান ২.১৯ টাকা থেকে বেড়ে ২.৬২ টাকা হবে বলে জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল
সর্বশেষ ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছিল।
শুক্রবার জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) এবং ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) পেট্রোলিয়ামের দাম সামঞ্জস্য করেছে। কারণ বিশ্ব বাজারে এগুলোর দাম দেশের তুলনায় অনেক বেশি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘যতদিন সম্ভব হয়েছে সরকার জ্বালানির দাম বাড়ায়নি। এখন বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু সমন্বয় করতে হবে।’
তবে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হলে দাম কমতে পারে বলে কিছুটা আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানির দাম কমায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেই অনুযায়ী জ্বালানির দাম সংশোধন করা হবে।’
নসরুল হামিদ আরও বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় অনেক দেশই নিয়মিত দামের সমন্বয় করছে।
এছাড়াও, বিপিসি ইতোমধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত গত ছয় মাসে পেট্রোলিয়াম বিক্রিতে আট হাজার ১৪ দশমিক ৫১ কোটি টাকা লোকসান করেছে।
আরও পড়ুন: ১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৩৫ টাকা
ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়ল: কৃষি মন্ত্রণালয়
গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
সারাদেশের গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কার্যকর ও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএ'র প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মামুনুর রহমান ও খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ১২২ ধারা অনুযায়ী বাস, মিনিবাস তথা গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিধিমালা প্রনয়ণ না করতে পারার ব্যর্থতা, আইন অনুযায়ী ভাড়ার তালিকা প্রকাশ্য স্থান ও সহজে দৃশ্যমান স্থানে না টানিয়ে ভাড়া আদায় করার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতা এবং আইন অনুযায়ী যাত্রীদের থেকে বাস মালিক, কন্টাক্টরদের বেশি ভাড়া আদায় বন্ধ করার ব্যর্থতা কেন বেআইনি ও আইন পরিপন্থী ঘোষণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী, কমছে দোকান-পাট খোলার সময়ও
এছাড়া রুল পেন্ডিং অবস্থায় আগামী এক মাসের মধ্যে বাস থামার প্রতিটি নির্দিষ্ট জায়গায় প্রকাশ্য ও যাত্রীদের নিকট সহজে দৃশ্যমান স্থানে ভাড়ার তালিকা প্রকাশ ও সেগুলো ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডের মাধ্যমে উক্ত তালিকা প্রদর্শনের জন্য ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিআরটিএ'র প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মামলা পরিচালনা করেন রিটের বাদী ও আইনজীবী জনাব মো. আবু তালেব। সাথে ছিলেন আইনজীবী মোখলেসুর রহমান ও ব্যারিস্টার মুসতাসীম তানজীর।
এর আগে গত ৪ জানুয়ারি রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আবু তালেব।
তিনি জানান, মূলত সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর কয়েকটি ধারা বাস্তবায়নের দাবিতে রিটটি করেছি। রিটে সড়ক পরিবহন সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ১১ ডিসেম্বর থেকে গণপরিবহনে হাফ ভাড়া কার্যকর
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে রাজধানীর গণপরিবহনকে ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ’ করার উদ্যোগ
আপাতত স্কুল খোলা থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আপাতত স্কুল খোলা থাকবে। যদি সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পায়, তখন আমরা দেখব স্কুল নিয়ে কী করা যায়। যদি বেশি হারে বৃদ্ধি পায়,তাহলে স্কুল বন্ধ করার প্রয়োজন দেখা দেবে। তবে এখনও সেই অবস্থা হয়নি।
করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউ মোকাবিলায় নানা ধরনের বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে সব ধরনের দোকানপাট রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে সরকার। সেই সঙ্গে আবারও অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে গণপরিবহন। শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়ার দুই হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাস-ট্রেন ও লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করোনা নিয়ন্ত্রণে আগামী দুই-একদিনের মধ্যে জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য বিধির বিষয়ে নিদের্শনা চলে যাবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের জাতীয় কারিগরি কমিটির নির্দেশনা আছে, প্রধানমন্ত্রী সেগুলো অনুমোদন করছেন। রাত ৮টার মধ্যে সকল দোকানপাট বন্ধ করতে হবে এবং আমাদের যানবাহন বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী নিতে হবে। এ বিষয়ে জেলায় জেলায় আগামী দুই একদিনের মধ্যে নির্দেশনা চলে আসবে এবং কার্যকর হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: রেস্টুরেন্টে খেতে লাগবে ভ্যাকসিন কার্ড: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী, কমছে দোকান-পাট খোলার সময়ও
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন মোকাবিলায় সরকার আবারও বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে। গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন এবং দোকান-পাট রাত ১০টার পরিবর্তে ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখাসহ আগামী সাতদিনের মধ্যে এসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে এবং দোকান-পাট রাত ১০টার পরিবর্তে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।’
আগামী সাত দিনের মধ্যে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: করোনায় কমেছে সুস্থতার হার
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ওমিক্রনের কিছু রোগী পাওয়া গেছে। গত দুই সপ্তাহ গড়ে ২৫০ জন ছিল করোনা রোগী। গতকাল ছিল ৬৭৫ জন। যেভাবে বাড়ছে তা আশঙ্কাজনক।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এখন দেশের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মাস্ক ছাড়া কেউ যানবাহনে চলাচল করতে পারবে না, করলে জরিমানা।’
তিনি জানান, দোকান-পাট রাত ১০টার জায়গায় রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। দোকানে মাস্ক ছাড়া কেউ যেতে পারবে না। গেলে দোকান মালিক ও ক্রেতা সবার জরিমানা করা হবে।
এখনই লকডাউন না
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, লকডাউনের চিন্তা এখনও করছে না সরকার। সংক্রমণ বেড়ে গেলে তখন সেটা নিয়ে চিন্তা করা হবে।
সীমান্ত বরাবর স্ক্রিনিং জোরদার করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ২০ হাজার শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রোগী আরও বাড়লে আমাদের পরবর্তী করণীয় নিয়েও আমরা ভাবছি।
এর আগে সোমবার করোনা মোকাবিলায় সরকার বিধিনিষেধ তীব্রতর করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৫৪ লাখ ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে
লিওনেল মেসি করোনায় আক্রান্ত
অবশেষে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালু
ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও যানজট নিরসনের জন্য দুই সিটি করপোরেশনের বাস রুট র্যাশনালাইজেশনের অংশ হিসেবে অবশেষে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালু করেছে সরকার।
রবিবার সচিবালয় থেকে রাজধানীর ঘাটার চর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত বাস এর উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বাস সার্ভিসের উদ্বোধনকালে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জন্য একটি সুশৃঙ্খল ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি গত ১২ দিন হাসপাতালে ছিলাম। আজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় না গিয়ে সরাসরি মন্ত্রণালয়ে এসেছি। আমি এই উদ্যোগটাকে গুরুত্ব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিজয় মিছিলে যানজট, দুঃখ প্রকাশ আওয়ামী লীগের
চট্টগ্রামে ১১ ডিসেম্বর থেকে গণপরিবহনে হাফ ভাড়া কার্যকর
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঢাকার পর এবার চট্টগ্রামেও গণপরিবহনে হাফভাড়া কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রামে গণপরিবহনে কার্যকর হবে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ১১ দাবি নিয়ে আবারও সড়কে শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া কার্যকর হবে। হাফ ভাড়া কার্যকরের সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এজন্য শিক্ষার্থীর ছবিযুক্ত আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হবে। সরকারি ছুটির দিন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মৌসুমি ছুটিতে হাফ ভাড়া কার্যকর হবে না। হাফ ভাড়া শুধু চট্টগ্রাম শহরে কার্যকর হবে, বাইরে হবে না। যেখানে সিটি সার্ভিস চালু আছে সেখানেও এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। আমরা ছাত্রদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে হাফ ভাড়া কার্যকর করেছি। সুতরাং তারা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাবে বলে আশা করছি।’
আরও পড়ুন: শিক্ষকের মৃত্যু: কুয়েটের ৯ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতির সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কফিল উদ্দিন আহামদ, চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি-ঢাকার যুগ্ম-সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ এলিট, চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল, মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল, মৃণাল চৌধুরী, মো. শাহজাহান, মিজানুর রহমান, আহসান উল্লাহ চৌধুরী হাসান, শহিদুল ইসলাম সুমু, অলি আহমেদ, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
১১ দাবি নিয়ে আবারও সড়কে শিক্ষার্থীরা
নিরাপদ সড়ক ও দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়ার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারিসহ ১১ দফা দাবি নিয়ে আবারও রাজধানীর রামপুরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১১টায় ইকরামুন্নেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইমপেরিয়াল কলেজ ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ করেন।
এ সময় তারা যানবাহনের কাগজপত্র, লাইসেন্স, ফিটনেস সনদ যাচাই করে। এতে মালিবাগ-রামপুরা সড়কে যান চলাচল ধীর হয়ে যায়। এছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়।
হারিস নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে না নিলে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে এক ঘণ্টার জন্য তারা একই সড়কে আবার অবস্থান নেবে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিলে দুপুর ২টার দিকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: রামপুরায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে রাজধানীর গণপরিবহনকে ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ’ করার উদ্যোগ
বাসে হাফ ভাড়ার দাবিতে রাস্তা অবরোধ বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। যদিও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শুধু ঢাকা মহানগরীতে হাফ ভাড়া কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাস মালিক সমিতি। তবে সারাদেশে সব গণপরিবহনে হাফ ভাড়ার দাবি মানা না পর্যন্ত আন্দোলন করে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এই অচলাবস্থা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থায় আরও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে যার ফলে যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরকার ৩ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। অন্যদিকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের পর ৭ নভেম্বর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) আন্তনগর ও আন্তজেলা বাসের ভাড়া যথাক্রমে ২৬.৫ শতাংশ ও ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া কার্যকরের সিদ্ধান্ত: ওবায়দুল কাদের
তবে পরিবহন শ্রমিকরা এই নির্ধারিত হারের বাইরে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া এই অনিয়মের প্রতিবাদকারী যাত্রীরা পরিবহন শ্রমিকদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন, এমনকি একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকিও দেয়া হয়েছে।
২০ নভেম্বর বদরুন্নেসা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী অর্ধেক বাস ভাড়া দিতে চাইলে ঠিকানা পরিবহনের বাসের চালকের এক সহকারী তাকে ধর্ষণের হুমকি দেয়।
মনিটরিং ব্যবস্থায় সমন্বয়ের অভাব থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া পরিবহন শ্রমিকরা নির্ধারিত বাস স্টপেজের পরিবর্তে যেকোনো স্থানে যাত্রী উঠাচ্ছে বা নামিয়ে দিচ্ছে। রাজধানীর গণপরিবহনের এরূপ বিশৃঙ্খল চলাচলের কারণে যাত্রীদের প্রচুর অর্থ ও সময় ব্যয় হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শুধু ঢাকায় শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া
পরিবহন বিশৃঙ্খলার পেছনের কারণ
উত্তরা-কুড়িল-বাড্ডা-মালিবাগ-গুলিস্তান রুটে রাইদা, আলিফ, ইকবাল, ইউনিক, ভিক্টর, আকাশসহ বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাস চলাচল করে। মিরপুর-ফার্মগেট-গুলিস্তান সড়কে মিরপুর পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহন রয়েছে।
গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর থেকে রামপুরা, বিমানবন্দর সড়ক থেকে মহাখালী-মগবাজার-মৌচাক পর্যন্ত প্রায় ২৯১টি রুটেই এসব পরিবহন চলতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ইউএনবিকে বলেন, রাজধানীর গণপরিবহনে চরম বিশৃঙ্খলাবিরাজ করছে। তাতে যাত্রীদের প্রতিনিয়ত হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে। রাজধানীতে চলাচলকারী ৮৭ শতাংশ মিনিবাসে এই অবস্থা বিদ্যমান। এ বিষয়ে আসলে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেই, ফলে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না।
তিনি আরও বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা আনার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশ, বিআরটিএ, সিটি করপোরেশনগুলোর।
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৩১ লাখ।
বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির তথ্য বলছে, রাজধানীতে চলাচল করছে আড়াই হাজারকোম্পানির প্রায় ৩০ হাজার বাস। রাজধানী ছাড়া সারা দেশে এক লাখের বেশি বাস চলাচল করে।
সারা দেশে ৭০ লাখ চালকের মধ্যে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) লাইসেন্স আছে মাত্র ১৬ লাখের। বাকি সব চালক অবৈধ।
বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ ইউএনবিকে বলেন, গণপরিবহন বিশৃঙ্খলার জন্য অন্যতম দায়ী পরিবহন শ্রমিকরা। গণপরিবহন শ্রমিকদের আমরা বিভিন্নভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছি। তবে আরও সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ সড়ক ও হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
গণপরিবহন সেবা শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে পদক্ষেপ
খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, নির্দেশের চেয়েও বেশি বাস ভাড়া নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের অনিয়ম ঠেকাতে মালিক, শ্রমিক ও ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে নয়টি টিম বিভিন্ন রুটে কাজ করছে।
কোনটি সিএনজিচালিত চলাচলকারী বাস ও কোনটি ডিজেলচালিত বাস সেটা বাসের গায়ে লিখা থাকতে হবে।
এছাড়া রাজধানীর অধিকাংশ চালকই দক্ষ নন। বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএ তাদের জন্য এককালীন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এটি পুনরায় চালু করার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট
সরকারি-বেসরকারি গণপরিবহনে (বাস, ট্রেন, লঞ্চ) শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেন।
আগামী রবিবার এই রিট আবেদনটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।
ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, করোনার কারণে অভিভাবকদের আয় কমে গেছে। তারা স্কুল-কলেজের বেতন পরিশোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন যৌক্তিক।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিতে প্রজ্ঞাপন চায় ক্যাব
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার খরচ সরকার বহন করে। কিন্তু অর্ধেক ভাড়ার বিষয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা সংবিধানের ১৫ (১), ১৭ ও ২৮(৪) ও ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।
আবেদনে স্বরাষ্ট্র, নৌ, রেল ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে ২২ নভেম্বর সংশ্লিষ্টদেরকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন এই আইনজীবী। নোটিশের জবাব না পেয়ে রিট করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের হুমকির বিচারের দাবিতে বদরুন্নেসার শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
হাফ পাসের সমাবেশ শেষে হামলা, এক ছাত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
গণপরিবহনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হাফ পাস (অর্ধেক ভাড়া) চালুর দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে একদল ছাত্র। এ সময় আইডিয়াল কলেজের এক ছাত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে এই সমাবেশে সারাদেশের সব গণপরিবহনে হাফ ভাড়া কার্যকর ও সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজসহ আশেপাশের কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে এই সমাবেশ করে। গত কয়েকদিন ধরেই এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন তারা। এ সময় সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী কয়েকটি বাস আটকে রাখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইডিয়াল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ইউএনবিকে জানায়, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সমাবেশ শেষে তাদের ওপর ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী চড়াও হয়। এ সময় তারা আইডিয়াল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিতে প্রজ্ঞাপন চায় ক্যাব
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শাহেন শাহ বলেন, একজনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ পেয়েছি। এই ব্যাপারে দুই কলেজ অধ্যক্ষের সাথে কথা বলেছি। এবং আমরা এ ব্যাপারে আইনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।