গণপরিবহন
ঈদযাত্রায় ২৪০ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৭৩
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেয়া কঠোর লকডাউন ঈদুল আজহার জন্য শিথিল করা হয়েছিল। বিধি নিষেধ শিথিলের মাঝে মাত্র আটদিন গণপরিবহন চালু ছিল। তবুও এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে। দেশের সড়ক-মহাসড়কে ২৪০ সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৪৪৭ জন। আর সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ২৬২ দুর্ঘটনা হয়েছে। এতে ২৯৫ জন নিহত এবং ৪৮৮ জন আহত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আরও পড়ুনঃ পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নাটোরে নিহত ২শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১ প্রকাশকালে এই তথ্য তুলে ধরেন।
লকডাউন: সিলেটে গণপরিবহন বন্ধ
করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত সীমিত লকডাউনে সিলেটের রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা না গেলেও বন্দরবাজার, মদিনা মার্কেট, আখালিয়া এলাকায় লেগুনা ও সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।
সোমবার সকাল থেকেই সিলেট নগরীর উপশহর, টিলাগড়, মেজরটিলা, কুমারপাড়া, মীরবক্সটুলা, কদমতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা যায়।
আরও পড়ুনঃ সিলেটে একদিনে সর্বোচ্চ ২৩৪ জনের করোনা শনাক্ত
এদিন, সিলেট থেকে কোন দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। এমনকি সিলেটের অভ্যন্তরেও কোন বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। বন্ধ রয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) টাউন বাসও।
এদিকে, সোমবার সকালে পরিবহনের অভাবে সিলেটের বিভিন্ন পয়েন্টে অফিসগামী যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে দেখা গেছে। অনেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন যানবাহনের অপেক্ষায়।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনকে ‘তামাশা’ বললেন ফখরুল
উল্লেখ্য, সারাদেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণ হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার সারাদেশে ১৪ দিনের পূর্ণ শাটডাউন দেয়ার সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে বিধিনিষেধ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যদিও এর আগে থেকে বিধিনিষেধ জারি ছিল, যেটির মেয়াদ রয়েছে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের সীমিত লকডাউন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে। তবে সেদিন থেকে সর্বাত্মক লকডাউন দেয়া হবে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কোভিড-১৯: লকডাউন এবার ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাড়ল
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অবনতি অব্যাহত থাকায় দেশব্যাপী চলমান লকডাউন ১৬ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে সরকার।
বুধবার বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এর আগে ৬ জুন পূর্ববর্তী সব নির্দেশনা এবং বিধিনিষেধকে কার্যকর রেখে ১৬ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সিনোফার্মের দ্বিতীয় দফায় ৬ লাখ টিকা দেশে পৌঁছেছে
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে।
হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় বা সরবরাহ করতে পারবে এবং আসন সংখ্যার অর্ধেক সেবাগ্রহীকে সেবা দিতে পারবে।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে একদিনে আরও ৬০ মৃত্যু, শনাক্ত প্রায় ৪ হাজার
লকডাউনে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
গণপরিবহনগুলো স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে মার্চের মাঝামাঝি থেকে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে সরকার কোভিড-১৯ এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় কয়েক দফা বাড়িয়ে ১৬ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫ লাখ মানুষ ভ্যাকসিন পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে করোনা পরিস্থিতি
মহামারি করোনাভাইরাসে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে।
বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৯৫৬ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৮ লাখ ৩৭ হাজার ২৪৭ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬০ জন মারা গেছেন। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ১৩ হাজার ২৮২ জনে দাঁড়াল।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় চট্টগ্রামে দুই শতাধিক বাহন আটক করেছে পুলিশ
করোনা মহামারীর কারণে সারাদেশে দূর পাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীবাহী পরিবহনে নিয়োজিত প্রায় দুই শতাধিক গাড়ি আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রবেশদ্বার সিটি গেইট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব গাড়ি আটক করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ৫ মে থেকে গণপরিবহন চলাচলের ঘোষণা
আটককৃত গাড়ির মধ্যে বাস, যাত্রী পরিবহণকারী ট্রাক, মাইক্রোবাস হাইস ও প্রাইভেট কার রয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর দাবি শ্রমিকদের
পুলিশ জানায়, ঈদকে সামনে রেখে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নানা কৌশলে রাতের আঁধারে, ভোরে চট্টগ্রাম নগরী ছাড়ছে অন্য জেলার মানুষ। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিটি গেট এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে ট্রাফিক পুলিশ।
আরও পড়ুন: করোনায় সড়কে গণপরিবহনের যাত্রা শুরু
সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের (পশ্চিম) সহকারী কমিশনার মো: মমতাজ উদ্দিন জানান, সিএমপির ট্রাফিক (পশ্চিম) বিভাগের উপ-কমিশনার তারেক আহমেদের নেতৃত্বে করোনা মহামারীর সংক্রমণ রোধ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে আন্তঃজেলা বাস, যাত্রীবোঝাই পণ্যবাহী গাড়ি আটক করা হচ্ছে সিটি গেটে। সোমবার রাত থেকে শুরু করে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দুই শতাধিক গাড়ি আটক করা হয়েছে।
দৌলতদিয়ায় ঈদে ঘরমুখী মানুষের ঢল
ঈদ উপলক্ষে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ছেড়ে আসা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার বা ছোট যান ভাড়া করে এসব মানুষ বাড়ি ফিরছেন।
শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়ায় দেখা যায়, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে অজস্র ছোট যানবাহনের সাথে মানুষের ভিড়। সব ফেরি দৌলতদিয়া ঘাটে ভেড়ামাত্র মানুষের ঢল নামেছে। পাশাপাশি শত শত মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার এসে নামছে। অনেকে এসব গাড়ি নিয়ে সরাসরি নিজ গন্তব্যে ছুটছেন। আবার অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত এসে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছে।
করোনাকে উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই সবাই বাড়ি ছুটছেন। অনেকে ফেরিতে ভিড়ের মধ্যে আসা-যাওয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে মনে করলেও কেউ কেউ এটাকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন। তাদের মতে, নিজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে তেমন কোন সমস্যা নাই।
ঈদে আরও বেশি ভিড় হতে পারে এই আশঙ্কায় স্ত্রী-সন্তানকে আজ ছুটির দিকে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর দিতে যাচ্ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আমজাদ হোসেন।
আরও পড়ুন: দৌলতদিয়ায় রাজধানী ছেড়ে আসা যাত্রী ও ছোট যানের ভিড়
ফেরিতে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে করোনার ঝুঁকি রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক বিষয়।
তিনি বলেন, ‘নিজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে তেমন সমস্যা হবে না।’
ঢাকা থেকে রাজবাড়ী গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়া মশিউর রহমান বলেন, ‘ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ বাসে করে পাটুরিয়া ঘাটে এসে নেমেছি। সারা রাস্তায় তেমন সমস্যা হয়নি। তবে ফেরিতে প্রচণ্ড ভিড় দেখে নিজেই হতবাক হয়ে গেছি।’
তিনি বলেন, এ যেনো করোনাকে সাথে করে বাড়ি ফেরা।
গতকাল রাতে সিলেট থেকে গ্রামের বাড়ি মেহেরপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়া আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুর রাজ্জাকের সাথে দুপুরে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরি ঘাটে আলাপকালে তিনি বলেন, পরিবারের বাবা-মার সাথে ঈদ করতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। প্রায় তিনগুন বেশি ভাড়া দিয়ে সিলেট থেকে ঢাকায় আসেন। ঢাকা থেকে ভোরে পাটুরিয়ার উদ্দেশে রওনা হন। সকাল ১১টার দিকে পাটুরিয়ায় নেমে ফেরিতে উঠেন। পথ ভেঙ্গে ভেঙ্গে গাড়িতে ঘাট পর্যন্ত আসলেও কোথাও তেমন সমস্যা হয়নি। তবে ফেরিতে মানুষের ভিড় দেখে তিনি চিন্তিত।
তার মতে, ফেরিতে এত মানুষের ভিড় দেখে মনে হচ্ছে কোথাও করোনা নাই। তবে সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণভাবে তিনি ফেরিতে নদী পাড়ি দিলেন বলে মনে করেন।
এদিকে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যাত্রী এবং যানবাহন যাতে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারে এ জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুক্রবার দুপুরে ঘাট পরিদর্শন করতে আসেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজিজুল হক, পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডল, বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানার সকল দপ্তরের কর্মকর্তারা।
এ সময় বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. খোরশেদ আলম বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে ঈদমুখী মানুষ অসংখ্য ছোট গাড়ির সাথে বাড়ি ছুটছে। দৌলতদিয়া ঘাটে কোন ধরনের চাপ না থাকলেও পাটুরিয়া প্রান্তে ছোট গাড়ি ও হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছে।
যাত্রী এবং গাড়ি পারাপারে সবকটি ফেরি সচল রয়েছে বলে তিনি জানান।
করোনায় সড়কে গণপরিবহনের যাত্রা শুরু
করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকারের অনুমতিতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সড়কগুলোতে চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন। বৃহস্পতিবার থেকে আন্তঃজেলা ব্যতীত সকল বাস সেবা চালু হয়েছে।
ঈদ ও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তঃজেলার বাস, ট্রেন এবং লঞ্চ সেবা বন্ধ রেখেছে সরকার।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনাল যেমন, মিরপুর রোড, রোকেয়া স্মরণী, উত্তরা, বনানী এবং মহাখালী থেকে বাসগুলো ছেড়ে যেতে দেখা যায়।
সড়কে গণপরিবহনের উপস্থিতির কারণে অন্যদিনের মতো রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ি এবং পিকআপ ভ্যানের সংখ্যা কম চোখে পড়ে। গণপরিবহনগুলোতে যাত্রীদের মাস্ক পরে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলাচল করতে দেখা যায়। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ে।
রাজধানীর একজন ট্রাফিক পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু সকাল থেকেই রাস্তায় গণপরিবহন চলা শুরু করেছে, তাই আমরাও সকল বাসগুলোতে চেক করে স্বাস্থ্যবিধি পালনের বিষয়গুলো নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’
ইউএনবির কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকেই জেলার শাসনগাছা, জঙ্গলিয়া, চকবাজার বাস টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। একটু পরপরই ছেড়ে যাচ্ছে বাস।
কোনো যাত্রীকেই বাসে মাস্ক ছাড়া ভ্রমণ করতে দেয়া হচ্ছে না। মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পরিবহন শ্রমিকদের বেশ সচেতন হতে দেখা গেছে।
গত ৫ এপ্রিল লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ করা হলেও, দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৭ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন চালু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ১৪ এপ্রিলে লকডাউনের সময় থেকে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সকল প্রকার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার।
বাস ভাড়া বৃদ্ধি
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ৩০ মার্চ জানান, সরকার গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে, যা ৩১ মার্চ থেকে কার্যকর হয়।
এর আগেও গত বছরে ৩১ মে সরকার আন্তঃজেলা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরসহ আশপাশের এলাকার বাস ভাড়া বৃদ্ধি করে। গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ কম যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে, ভাড়া বৃদ্ধি করে সরকার।
বর্ধিত লকডাউন
করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মেয়াদ ৫ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে এবং ছয় দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
বুধবার (৫ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই প্রজ্ঞাপন জারি করে।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সকল সরকারি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে ঈদের ছুটিতে নিজস্ব কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করতে হবে। এছাড়া দোকানপাট-বিপণীবিতান সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে না মানা হলে, তাৎক্ষণিকভাবে দোকানপাট-বিপণীবিতান বন্ধ করে দেয়া হবে।
আন্তঃজেলার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। ৬ মে থেকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। কিন্ত, ট্রেন, লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
সরকাল প্রথমে গত ৫ এপ্রিল দেশে সীমিত লকডাউন ঘোষণা করে। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের মেয়াদ কয়েক দফা বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে ২৫ এপ্রিল থেকে দোকন ও বিপণীবিতান মালিক সমিতির দাবি মেনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের শর্তে দোকান ও বিপণীবিতান খোলার অনুমতি দেয় সরকার।
আবারও লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল
করোনার বিস্তাররোধে সরকার আবারও চলমান লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। আগামী ১৬ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময় বাড়ানোর পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার (৬ মে) থেকে জেলার ভেতরে গণপরিবহন সেবা চালু করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সাপ্তাহিক মন্ত্রিপরিষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সভায় যোগ দেন।
সভাশেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলো এবং সেই সাথে শুধুমাত্র জেলার ভিতরে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলো। অর্থাৎ দূরপাল্লার বাস চলবে না।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
এসময় তিনি বলেন, প্রত্যেক এলাকার স্থানীয় প্রশাসন বিপণিবিতানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করবে। যদি কোথাও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হতে দেখা যায়, তাহলে সেসকল বিপণিবিতান ও দোকান তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক সমিতির
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল ছয়দিনের নতুন লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। ২৮ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দোকান ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্যসামগ্রী পেল কর্মহীন ১২০০ পরিবহন শ্রমিক
এর আগে ১৪ এপ্রিল প্রথম দফায় এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। পরে সেই লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর দাবি শ্রমিকদের
স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে গণপরিবহন পুনরায় চালু করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় মিছিল করেছে পরিবহন শ্রমিকরা।
রবিবার সকালে ঢাকা মহানগর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে নেতা-কর্মীরা মিছিলটি বের করেন।
এর আগে শনিবার সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে সরকার দেশে গণপরিবহন পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক সমিতির
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের এ ব্যাপারে কোনও প্রকার আন্দোলন না করে ধৈর্য্য ধরারও আহ্বান জানান তিনি।
করোন মহামারি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশ জুড়ে ৫ এপ্রিল লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। সেই সাথে বন্ধ করে দেয়া হয় গণপরিবহন চলাচল।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্যসামগ্রী পেল কর্মহীন ১২০০ পরিবহন শ্রমিক
শুক্রবার চলমান লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
কর্মহীন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সহযোগিতা প্রদানসহ বাস চালু করতে সারা দেশের মালিকদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানায় সমিতি।
এক বিবৃতিতে সমিতির নেতারা বলেন, লকডাউনে বাস ছাড়া সবই চলছে। বাস চালু না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিকল্পভাবে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, টেম্পু, থ্রি-হুইলার, মাইক্রোবাস, স্টাফ বাস এমনকি অ্যাম্বুলেন্সেও গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বরং স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়ছে। লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে সিটের অর্ধেক যাত্রী অর্থাৎ দুই সিটে একজন যাত্রী নিয়ে বাস চালু থাকলে করোনা সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
চট্টগ্রামে ৫ মে থেকে গণপরিবহন চলাচলের ঘোষণা
আগামী ৪ মে এর মধ্যে সরকারি সিদ্ধান্ত না এলেও ৫ মে থেকে গণপরিবহন চলাচল করা হবে বলে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা।
রবিবার দুপুরে চট্টগ্রামের স্টেশন রোডে বিআরটিসি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সড়ক পরিবাহন নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে গণপরিবহন চালুর অনুমতি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিবহন মালিকদের ব্যাংক ও কিস্তির সুদ মওকুফসহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ।
আরও পড়ুন: লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক সমিতির
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনে বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরে গত এক বছরের ব্যাংকের ঋণ কিস্তির সুদের টাকা মওকুফসহ হয়রানি ও পুলিশের মামলা বন্ধ, গাড়ির ডকুমেন্ট হালনাগাদের সময় বৃদ্ধির দাবি করা হয়।
পরিবহন নেতারা অভিযোগ করেন, লকডাউনে শুধু গণপরিবহন বন্ধ রেখে কলকারখানা, শপিংমলসহ সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গণপরিবহন বন্ধ রেখে মোটরসাইকেল, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সে পুলিশের সামনে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গণপরিবহন রাস্তায় নামলে সরকারকে বছরে ২৩ হাজার ১০০ টাকা অগ্রিম ট্যাক্স দিতে হয়। বর্তমানে লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। দৈনিক ৫ কোটি টাকার আয় থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্যসামগ্রী পেল কর্মহীন ১২০০ পরিবহন শ্রমিক
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মূছা, সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ।
ঈদের আগেই চালু হতে পারে গণপরিবহন: কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে সরকার দেশে গণপরিবহন পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করছে।
শনিবার (১ মে) মন্ত্রী তার বাস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান। এছাড়া পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের এ ব্যাপারে কোনও প্রকার আন্দোলন না করে ধৈর্য্য ধরারও আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক সমিতির
করোন মহামারি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশ জুড়ে ৫ এপ্রিল লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। সেই সাথে বন্ধ করে দেয়া হয় গণপরিবহন চলাচল।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) পরিবহন মালিক সমিতি সরকারের কাছে দ্রুত গণপরিবহন চালু করার আহ্বান জানান। এছাড়া পরিবহন শ্রমিকদের জন্য অনতি বিলম্বে খাদ্য সহায়তা প্রদানের দাবিও জানান।
সমিতির এক বিবৃতিতে বলা হয়, অনেক দিন ধরেই গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে।