খালেদা জিয়া
‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ সম্মাননা পেলেন খালেদা জিয়া
আরও পড়ুন: বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
লিভার সিরোসিসসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৮১ দিন থাকার পর মঙ্গলবার রাতে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
তার প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে চিকিৎসকরা ম্যাডামকে (খালেদা) সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানের বাসায় পৌঁছান।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড জানায়, তার অবস্থা স্থিতিশীল, তবে তিনি এখনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘তিনি ক্লিনিক্যালি স্থিতিশীল, কিন্তু নিরাময় এবং রোগমুক্ত নয়... করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আমরা তাকে আপাতত বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এরপর যদি কোনো সংকট দেখা দেয়, আমরা তাকে আবার হাসপাতালে নিতে প্রস্তুত।’
তিনি জানান, তারা হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সম্ভাব্য সব ধরনের চিকিৎসা নিশ্চিত করেছেন।
ডা. শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমরা যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞসহ বিদেশের পরামর্শকদের সঙ্গে কথা বলেছি। সকলেরই একই মতামত, চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদার রোগের শেষ চিকিৎসা হলো লিভার প্রতিস্থাপন, কিন্তু তিনি এখন সেই অবস্থানে নেই।’
মেডিকেল বোর্ডের আরেক সদস্য ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ রয়েছে, তবে তার অসুস্থতার জন্য তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল। আমরা লক্ষ্য করছি যে সারা দেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই এই হাসপাতালের ৩৮০ জনেরও বেশি স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে, মেডিকেল বোর্ড তাকে ছেড়ে দেয়ার এবং আমাদের তত্ত্বাবধানে বাড়িতে তার চিকিত্সা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের উৎস বন্ধ হয়েছে। তিনি এখন ব্যাপক রক্তক্ষরণে ভুগছেন না। কিন্তু কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারে না যে আবার তার বেশি রক্তপাত হবে না।
আরও পড়ুন: ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে’
প্রসঙ্গত, ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় তাকে অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে।
বিএনপি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন ও আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কয়েকজন মন্ত্রী বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে ফিরে নতুন আবেদন না করা পর্যন্ত তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছেন খালেদা জিয়া
স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে আজ মঙ্গলবার ( ১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাসায় ফিরবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে বলেন, ‘চিকিৎসকরা আজ সন্ধ্যায় ম্যাডামকে (খালেদা) হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
তিনি জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে গুলশানের বাসার উদ্দেশে হাসপাতাল ত্যাগ করবেন খালেদা।
আরও পড়ুন: ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে’
শায়রুল বলেন, এভার কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গঠিত বিএনপি প্রধানের মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা বিষয়ে সন্ধ্যা ৬ টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন।
প্রসঙ্গত, ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় তাকে অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে।
বিএনপি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন ও আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কয়েকজন মন্ত্রী বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে ফিরে নতুন আবেদন না করা পর্যন্ত তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে’
খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে স্লো পয়জনিং করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেছেন, রাজপথকে প্রকম্পিত করে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। গুলি খেতে হবে, রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করতে হবে।
বুধবার বিকেলে সিলেটের টুকেবাজার এলাকায় বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবিতে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুকু বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দী। তিনবারের সাবেক সফল প্রধামন্ত্রীকে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ফরমায়েসী রায়ে সাজা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া আজ পর্যন্ত যত জায়গা থেকে যতবার নির্বাচন করেছেন, সবগুলো নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। আর খালেদা জিয়াকে যিনি বন্দী করে রেখেছেন তিনি নির্বাচনে সাদেক হোসেন খোকা ও মেজর মান্নানের কাছে পর্যন্ত পরাজিত হয়েছেন। আর পরাজিত হওয়ার পরে ঢাকায় আর নির্বাচন করেননি। জাতি সেই ইতিহাস ভুলে যায়নি।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
তিনি বলেন, শুধু উন্নয়ন-উন্নয়ন করেন। দেশে উন্নয়নের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। সাহস থাকলে একবার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখুন। নৌকার প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। আর কোন ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবেনা, খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি রাজপথের আন্দোলনেই ফয়সালা হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তির আন্দোলনে যদি আমার দেশের মানুষের গুলি আমার শরীরে লাগে, তবে আমি গর্বিত শহিদ। প্রতীকী নয়, আসল কাফনের কাপড় পরে জেলের তালা ভেঙে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের আগে সংলাপ তামাশা মাত্র: বিএনপি
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিলেন এবং এর পরের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েছিলেন। একেই বলে গণতন্ত্র। তিনি চাইলে সেদিন আন্দোলন দমিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, কারণ তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের ইতিহাস পাল্টিয়ে দিয়েছে। আজকের ইতিহাসে একটামাত্র পাতা আছে, যে ওরা ছাড়া স্বাধীনতাযুদ্ধে আর কেউ যায় নি। তবে বাকীরা গিয়ে কী করেছে? মূলত এ দেশের খেঁটে খাওয়া মানুষ, লুঙ্গি পরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয়, সিলেট বিভাগীয় ও জেলা-মহানগর বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এদিকে, বিএনপির পূর্ব ঘোষিত এই সমাবেশে সকাল থেকে দলে দলে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। বিকাল ৩টার দিকে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় টুকেরবাজারের মাঠ।
বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি-ছাত্রলীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি
নেতার পাশে দাঁড়ানো নিয়ে মারামারি, ভেঙ্গে পড়লো মঞ্চ!
মঞ্চে অবস্থান নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ আহত হয়নি।তবে হুড়োহুড়িতে সমাবেশের মঞ্চ ভেঙ্গে পড়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে বুধবার দুপুরে কর্ণফুলী থানার সিডিএ আবাসিক মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা সরওয়ার নিজামকে লাঞ্ছিত করে নেতাকর্মীরা।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘সকাল থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে আসতে থাকে। অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পরই তারা নিজেরাই মারামারিতে জড়ায়, তবে কেউ তেমন গুরুতর আহত হয়নি। বিএনপির এক নেতা লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে শুনেছি। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্য দেয়ার সময় নেতাকর্মীরা হুড়োহুড়ি করে উঠতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় হঠাৎ মঞ্চ ভেঙে পড়ে। এরপর দুই দলের সদস্যরা চেয়ার মারামারি ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রধান অতিথি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ জেলার আজকের সমাবেশ বাঁধ ভেঙেছে সরকার পতন আন্দোলনের। কিছুতেই জনগণকে আটকে রাখা যাবে না। এত লোকের সমাবেশ মঞ্চ তো ভাঙবেই। আন্দোলন বন্ধ হবে না, চলতে থাকবে।তিনি আরও বলেন, ১৪৪ ধারার দিন শেষ হয়ে গেছে। দফায় দফায় অনুমতি নিয়ে জনসভার দিন শেষ হয়ে গেছে। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ।এ সমাবেশে আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম ছাড়াও কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশকে ঘিরে সকাল থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ ও কর্ণফুলী উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড
বিরোধী ও ভিন্নমত দমনে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে: বিএনপি
খালেদা জিয়া সিসিইউ থেকে কেবিনে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়াকে রবিবার রাতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামকে (খালেদা) মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিসিইউ থেকে কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে তিনি বলেন, ‘তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলেও সেখানে সিসিইউ’র সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। সিসিইউর নার্সরা কেবিনে তার সেবায় থাকবেন।’
জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। তার অবস্থা আগের মতোই আছে এবং তার স্বাস্থ্যের সব প্যারামিটার আগের মতো ওঠানামা করছে।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: আরও ৪০ জেলায় সমাবেশ করবে বিএনপি
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় তাকে অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে।
বিএনপি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন ও আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কয়েকজন মন্ত্রী বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে ফিরে নতুন আবেদন না করা পর্যন্ত তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আইনগত সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: আরও ৪০ জেলায় সমাবেশ করবে বিএনপি
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে দ্বিতীয় দফায় ৮ জানুয়ারি থেকে আরও ৪০টি সাংগঠনিক জেলায় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচি জানানো হয়।
কর্মসূচি অনুযায়ী, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে ৮, ১২, ১৫, ১৭, ২২ ও ২৪ জানুয়ারি ছয়দিন ধরে সমাবেশ করবে দলটি।
আগামী ৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমাবেশের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে দলটি।
অন্যান্য জেলার মধ্যে রয়েছে- রাজশাহী, চাঁদপুর, রংপুর, বরিশাল দক্ষিণ, খুলনা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, সিলেট, নীলফামারী, ফেনী, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, বরগুনা, শেরপুর, বাগেরহাট, রাঙামাটি, নেত্রকোণা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজবাড়ী, নড়াইল, পিরোজপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুড়িগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ দক্ষিণ, নাটোর, বরিশাল উত্তর, চট্টগ্রাম উত্তর, সৈয়দপুর, শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ উত্তর, ঝালকাঠি, মাগুরা, মাদারীপুর, বান্দরবান, মৌলভীবাজার ও পঞ্চগড়।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
প্রথম দফায় একই দাবিতে ২২ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২টি জেলায় সমাবেশ করেছে দলটি।
এর আগে সারাদেশে মানববন্ধন, গণঅনশন, সমাবেশ ও ডিসি অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপি।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিএনপি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন ও আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কয়েকজন মন্ত্রী বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে ফিরে নতুন আবেদন না করা পর্যন্ত তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আইনগত সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার অভাবে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আসামির অভিযোগ আনা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে জেনেশুনে পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে হত্যার চক্রান্ত করছে। তারা আমাদের নেত্রীকে হত্যা করতে চায়।’
২০১৪ সালের এই দিনে অনুষ্ঠিত ‘একতরফা’ দশম সংসদ নির্বাচনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি শাখা আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিদের নিয়েই বিএনপির রাজনীতি: ওবায়দুল কাদের
তিনি আরও বলেন, দলমত নির্বিশেষে মানুষ যখন খালেদাকে বিদেশে পাঠাতে চায়, তখন বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে সেখানে চিকিৎসার জন্য যেতে দিচ্ছেন না।
বিএনপি নেতা বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যদি উন্নত চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে তাদের প্রত্যেককে (সরকারের) হত্যা মামলার আসামি করে বিচার করা হবে।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার রাজনীতি ও বিএনপি প্রধানকে অপসারণের নীলনকশা' হিসেবে 'মিথ্যা' মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধার’ হবে: বিএনপি
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
বিএনপি নেতা বলেন, চিকিৎসকরা বলছেন, খালেদা জিয়াকে এখনই বিদেশে পাঠানো জরুরি, কিন্তু সরকার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা আইনের অজুহাতে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। মানুষের জীবনের চেয়ে কোনো আইন বড় হতে পারে না।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে দেশ, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রে তার অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে অবিলম্বে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: যাবে না বিএনপি
খালেদা জিয়া কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না:মোজাম্মেল হক
খালেদা জিয়া ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্যান্টনমেন্টে নিরাপদ আশ্রয়ে ছিলেন জানিয়ে তিনি কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানে নিতে লোক পাঠিয়ে ছিলেন, কিন্তু খালেদা জিয়া নিজের নিরাপত্তার জন্য ক্যান্টনমেন্টে থেকে যান।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা জনতা সমাবেশে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দের সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সিলেট ৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমন, সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হাজী নুরুল মোমেন, দোয়ারাবাজার উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক, ছাতক উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার তোতা মিয়া।
এসময় সমাবেশে আগত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের রেশন, বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ স্মার্ট কার্ড প্রদানের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত: চিকিৎসক
ফিরে দেখা ২০২১: আগের মতো এবারও জনমত গঠনে ব্যর্থ বিএনপি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ২০২১ সালে বিএনপি জনগণের মাঝে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরির বেশ ভালো প্রচেষ্টা চালালেও ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বড় কোনও প্রভাব ফেলার মতো কিছু করতে পারেনি।
বিশ্লেষকদের মতে, খেলার ধরন যেমন পাল্টেছে, বিএনপিকেও তেমনি পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কৌশলী হতে হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আন্দোলন ছাড়াও, বিএনপির উচিত এখন এমন কিছু করা যাতে জনগণের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। জনগণ একটি কঠিন আন্দোলন দেখতে চায়। বিএনপির এ বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলী রীয়াজের মতে, বিএনপির উচিত প্রথমে নিজেদের দল গোছানো, এরপর ভবিষ্যতের জন্য কৌশল নির্ধারণ করা।
২০২১ সালে কোনো অর্জন নেই
২০২১ সালের প্রথম দিনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, তারা দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নতুন শপথ নিয়েছে। কিন্তু দলটি তাদের অঙ্গীকার রক্ষায় তেমন কিছু করতে পারেনি।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসাসহ অন্য আরও বেশ কিছু দাবিতে বিএনপি র্যালি, মানববন্ধনসহ অনেকগুলো কর্মসূচি পালন করেছে।