আইন আদালত
মা-মেয়ে হত্যা: ১৫ বছর কনডেম সেলে থাকা ২ ফাঁসির আসামি খালাস
রাজশাহীতে মা ও মেয়ে হত্যার মামলায় ১৫ বছর কনডেম সেলে থাকা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণা করেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- ইসমাঈল হোসেন বাবু ও সোনাদি।
একই মামলায় অন্য আসামি তরিকুল ইসলামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আপিল বিভাগ খালাস পাওয়া দুজনকে দ্রুত কনডেম সেল থেকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে জোড়া খুন: ৮ জন খালাস, তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল
এই দিন আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
২০০৬ সালের ১০ অক্টোবর রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মিলিয়ারা খাতুন ও তার মেয়ে পারভীন খুন হন। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০০৮ সালে ইসমাঈল, সোনাদি ও তরিকুলকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলাটি ডেথরেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে এবং আসামিরা পৃথক আপিল করেন। ডেথরেফারেন্স ও আপিলের শুনানি নিয়ে পরবর্তীতে ২০১৪ সালে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন।
আরও পড়ুন: মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
পরে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে দুজনকে খালাস ও একজনকে যাবজ্জীবনের নির্দেশ দেন।
নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ২ আসামির যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থান কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সাজাপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই এলাকার ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী এবং তার কর্মচারী ফয়সাল।
এছাড়া এই মামলায় সোলেমান মিয়া ও আলী হোসেন নামে দুই আসামির অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বাড়িওয়ালাকে হত্যার দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকার থান কাপড় ও ঝুট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান চৌধুরী সেলিমের দুই লাখ টাকা আত্মসাৎ করে একই এলাকার ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী ও তার সহযোগীরা। পরবর্তীতে সেলিম পাওনা টাকা ফেরত চাইলে ২০১৯ সালে ৩১ মার্চ পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়।
এ ঘটনায় সেলিম নিখোঁজ হলে তার স্ত্রী রেহানা আক্তার রেখা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। নিখোঁজের আট দিন পর ৯ এপ্রিল পুলিশ মোহাম্মদ আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাটি খুঁড়ে সেলিমের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। পরে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলে তারা হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাদক মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জাসমিন আহমেদ বলেন, স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই আদালত এই রায় দিয়েছেন।
তবে আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান নিহতের স্বজনরা।
নাটোরে মাদক ও অস্ত্র মামলায় ২ জনের কারাদণ্ড
নাটোরের বড়াইগ্রামে মাদক মামলার একজনকে যাবজ্জীবন ও অস্ত্র মামলার একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. শরীফ উদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার মহিশালবাড়ি গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে কলিমুদ্দিন (২৫) ও মশিউর রহমান (৩৭)। এদের মধ্যে কলিমুদ্দিনকে যাবজ্জীবন এবং মশিউরকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া রায়ের সময় মশিউর আদালতে উপস্থিত থাকলেও কলিমুদ্দিন পলাতক রয়েছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ইয়াবা পাচার মামলায় যুবকের ১০ বছর কারাদণ্ড
সরকারি কৌসুলি সিরাজুল ইসলাম জানান,২০১৫ সালের ২০ আক্টোবর বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রান এলাকায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে ১০০ গ্রাম হেরোইনসহ কলিমুদ্দিনকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বাড়িওয়ালাকে হত্যার দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এদিকে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একই উপজেলার লক্ষ্মীকোল এলাকার মশিউর রহমানের বাড়ি থেকে গুলিসহ সুটারগান উদ্ধারের পর পুলিশ পরে তাকে আটক করা হয়।
কুষ্টিয়ায় বাড়িওয়ালাকে হত্যার দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় জালাল উদ্দিন (৭০) নামে বাড়িওয়ালা এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যার দায়ে সাহাবুল ও তার স্ত্রী মারিয়া খাতুনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মিরপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মৃত মুন্তাজ মন্ডলের ছেলে সাহাবুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মারিয়া খাতুন।
আদালতে রায় ঘোষণার সময় আসামি সাহাবুল উপস্থিতিত থাকলেও তার স্ত্রী মারিয়া খাতুন পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাদক মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি আসামি সাহাবুল ও তার স্ত্রী মারিয়া বাড়িওয়ালা জালালের বাসায় চুরি করার পরিকল্পনা করেন। নিহতের স্ত্রী রিনা খাতুন বাড়ির বাইরে গেলে আসামিরা মেইন গেট দিয়ে বাসায় ঢুকে বাড়ির মালামাল চুরি করে। চুরি বিষয়টি বাড়ি মালিক জালাল টের পেয়ে চিৎকার করা শুরু করলে আসামি সাহাবুল ও তার স্ত্রী মারিয়া বাড়ির মালিককে কৌশলে মাটিতে ফেলে দিয়ে মুখ হাত পা চেপে ধরে ধারালো বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
এ বিষয়ে একই দিন বিকালে নিহতের স্ত্রী রিনা খাতুন কুষ্টিয়া মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর স্বামী-স্ত্রী দু’জন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় এবং আদালতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত এ মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাদক মামলায় ২ আসামির কারাদণ্ড
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় স্বামী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সাহাবুলের স্ত্রী আসামি মারিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
কিশোরীর আত্মহত্যা: নড়াইলে স্কুল শিক্ষকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইলের কালিয়ায় এক কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি স্কুল শিক্ষকসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর বাবা।
নিহত শ্রাবনী (১৪) উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের এস এম মোস্তাইন হোসেনের মেয়ে।
আরও পড়ুন: ডিএসসিসির সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
মামলার অভিযোগ, নিহত শ্রাবনী প্রতিবেশী মকিদ সরদারের ছেলে যুবা সরদারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে শ্রাবনীর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। শ্রাবনী ও তার খালাতো বোন ঘটনাটি যুবা ও তার পরিবারকে জানাতে গেলে প্রেমিক যুবা, তার বাবা মকিত সরদার ও মা ছমিরণ বেগমসহ একই গ্রামের স্কুল শিক্ষক হেমায়েত সরদার তাকে ভৎসনা করে। লোক লজ্জার ভয়ে ও প্রেমিকের কাছ থেকে প্রতারিত হয়ে গত ২৬ এপ্রিল শ্রাবনী নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
পরে শ্রাবনীর বাবা মোস্তাইন শেখ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার নড়াইলের নড়াগাতী বিজ্ঞ আমলী আদালতে যুবা, মকিত সরদার, ছমিরণ বেগম ও হেমায়েত সরদারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই যশোরের ওপর ন্যস্ত করেছেন।
আরও পড়ুন: জেব্রা মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে
উপজেলার তালুকদার পাড়া শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেমায়েত সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে হয়রানি ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে আমাকে আসামি করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার কিছুই জানি না।
ডবল মার্ডার : বিশ্বনাথে একজনের মৃত্যুদণ্ড, ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
সিলেটের বিশ্বনাথে ডবল মার্ডারের দুই মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মৃত তিন জন ও মামলার প্রধান আসামিসহ ১৫ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কাদির পশ্চিম গাঁওয়ের মৃত ইন্তাজ আলীর ছেলে।
সাজাপ্রাপ্ত বাকি ১০ আসামির মধ্যে পশ্চিমগাঁওয়ের আব্দুল মনাফ (৪৬) ও তার ছেলে সুহেল আহমদ (৩৩) ও ইলিয়াস আলীকে (৩৮) ১০ বছরের কারাদণ্ড সহ ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। দশঘর গ্রামের ধন মিয়াকে (৪৫) তিন বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। পশ্চিমগাঁওয়ের আব্দুল মতিন (৩৫), ইসলাম উদ্দিন (৩০), আলম (২৯), রেজাউল করিম (৩০) ও ছাতকের কাদিপুরের রুবেল আহমদকে (২৮) এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের পর হত্যা, ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড
এছাড়া আসামি পক্ষের আজমান আলীর দায়ের মামলায় বাদী নুর উদ্দিন মেম্বারের চাচাতো ভাই দৌলতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবারক আলী (৫৫) ও আকবর আলীকে (৪৫) এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সিলেটের বিশ্বনাথের সিংগেরকাছ পশ্চিমগাঁওয়ে সরকারি জায়গায় ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে দৌলতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবারক আলী এবং আব্দুল মনাফ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আবারক আলীর পক্ষের আব্দুল খালিক (৪৮) ও আব্দুন নুর (৪৬) নিহত হন। এ ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর নিহত আব্দুল খালিকের ছেলে নুর উদ্দিন বাদী হয়ে আব্দুল মানফসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন । অন্যদিকে এ ঘটনায় আব্দুল মনাফ পক্ষে আজমান আলী বাদী হয়ে পাল্টা একটি মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে স্কুলছাত্র হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান ও অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান আফজাল বলেন, আদালতের এই রায়ে তারা হতবাক হয়েছেন। কারণ ডবল মার্ডারের ঘটনায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় কোনো বিধানে।
সেজন্য বাদী পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানান তারা।
দুই শিশুকে বিদেশে নিতে জাপানি মায়ের আবেদন খারিজ
দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য অনুমতি চেয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপলি বিভাগের ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এদিকে, একই বেঞ্চ দুই শিশুর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে জাপানি মা নাকানো এরিকোর করা আদালত অবমাননার অভিযোগও খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করা নিয়ে জাপানি স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর পাল্টা দালত অবমাননার অভিযোগও আমলে নেননি আদালত।
আরও পড়ুন: দুই শিশুকে আগামী ২ দিন জাপানি মায়ের জিম্মায় দিতে নির্দেশ
গত ১৭ মে জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে বিদেশে বেড়ানোর জন্য আদালতের অনুমতি নিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন জাপানি মা নাকানো এরিকোর আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।
আবেদনে বলা হয়, দুই মেয়ে শিশুকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে অনেক দিন কাটিয়েছেন। তারা অবকাশ কাটাতে দেশের বাইরে বেড়ানোর জন্য যেতে চান। সেটা জাপানও হতে পারে। একই সঙ্গে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে শিশুদের বাবা বাংলাদেশি নাগরিক ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে আবেদন করেন মা নাকানো এরিকো। এর পরেই আবার বাবা ইমএরান শরীপও বাচ্চাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দিতে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলে পাল্টা আদালত অবমাননার আবেদন করেন। সবগুলো আবেদনি বৃহস্পতিবার খারিজ করেন আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: দুই সন্তান জাপানি মায়ের কাছে থাকবে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাপানি বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি দুই কন্যাশিশু আপাতত তাদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর হেফাজতেই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ওই আদেশে বলা হয়, শিশু দুটির বিষয়ে ঢাকার পারিবারিক (সহকারি জজ) আদালতে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা মায়ের কাছেই থাকবে। একই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে পারিবারিক আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তিরও নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের আদেশে গত বছর ১২ ডিসেম্বর থেকে মায়ের হেফাজতেই রয়েছে শিশু দুটি। তবে, তাদের বাবা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে সুবিধাজনক সময়ে তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
গত বছর ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগ জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা বাংলাদেশে তাদের বাবা ইমরান শরীফের হেফাজতে থাকবে বলে রায় দেন। এতে বলা হয়, যেহেতু মা জাপানি নাগরিক, সেখানে থাকেন এবং কাজ করেন, তাই তিনি নিজের সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশে এসে বছরে তিন বার ১০ দিন করে দুই সন্তানের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে পারবেন।
আরও পড়ুন: জাপানি মায়ের কাছে থাকবে দুই শিশু, পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তির নির্দেশ
হাইকোর্ট বিভাগের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মা। এ আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গত বছর ১২ ডিসেম্বর মায়ের কাছে শিশু দুটিকে দিতে তাদের বাবাকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
জিএম কাদেরের কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণা চেয়ে মামলা
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মাদ কাদেরের (জিএম কাদের) সব কার্যক্রম অববৈধ ঘোষণা চেয়ে ঢাকার দেওয়ানি আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় সহকারী জজ মো. জুলফিকার হোসাইন রনির আদালতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাফিজ মাহবুব এ মামলা করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করেছেন।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে মানুষ: জিএম কাদের
মামলায় জিএম কাদের ছাড়াও জাতীয় পার্টির মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচন কমিশন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জিএম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
এরপর গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন, যা অবৈধ।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য খাতের বাজেট লুট হচ্ছে: জিএম কাদের
তাই ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছর ৫ মার্চের বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চাওয়া হয়।
খুলনায় স্কুলছাত্র হত্যায় ১৭ আসামির ৭ বছর করে কারাদণ্ড
খুলনা পাবলিক কলেজের ছাত্র ফাহমিদ তানভীর রাজিন হত্যার দায়ে ১৭ আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে যে সব আসামির বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার আসামিদের উপস্থিতিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ ও শিশু আদালতের বিচারক মো. আ. ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাদক মামলায় ২ আসামির কারাদণ্ড
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে সাব্বির হাওলাদার (১৬), বিএম মাজিব হাসান রয়েল (১২), শাহারিয়ার জামান তুর্য্য (১৭), রিয়ান শেখ ওরফে রেফাত (১২), ফাহিম ইসলাম মনি (১৪), সানি ইসলাম ওরফে আপন (১৩), জিসান খান (১৫), তারিন হাসান ওরফে রিজভী (১৩), শাকিব খান শিমুল (১৭), অন্তর কুসার দাস (১৫), মো.হাকিম (১৭), সৈকত (১৬), শেখ সাকিব (১৭), আসিফ প্রান্ত আলিফ (১৫), শেখ তামিম (১৬), সাকরান সালেহ ওরফে মিতুল (১২), মোস্তফিজুর রহমান নাঈম (১৪)।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে কনসার্ট দেখার জন্য কলেজের উদ্দেশে রওনা হয় রাজিন। রাতে অনুষ্ঠানস্থলে বসাকে কেন্দ্র করে আসামি তামিমের সঙ্গে রাজিনের হাতাহাতি হয়। রাত ৯টার দিকে রাজিনকে অনুষ্ঠানের মঞ্চের পেছনে নিয়ে গিয়ে চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। একপর্যায়ে সাব্বির বলে আমার কাছে চাকু আছে। অনেকদিন চাকুটি রক্ত খায় না। এরপর মামলার অন্যান্য আসামিরা রাজিনের হাত চেপে ধরে। আর সাব্বির চাকু দিয়ে রাজিনের পেটে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং আসামিরা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: খুলনায় হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
পরে স্থানীয়ার গুরুতর আহত রাজিনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ছয় জন আসামির নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০ জনের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি খালিশপুর থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
নড়াইলে মাদক মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
নড়াইলে মাদক মামলায় দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
মামলা বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ রাতে লোহাগড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন পাটোয়ারী নেতৃত্বে লোহাগড়া কালনাঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, যানবাহন তল্লাশি ও মাদক উদ্ধার পরিচালনার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালনা ঘাটের বটগাছ সামনে রাস্তায় নড়াইল-ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনে তল্লাশি করে বাসের চালক মিলন পোদ্দারের সিটের নিচ থেকে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। এঘটনায় মিলন পোদ্দারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গাড়ির হাওয়া ট্যাংকির ওপর চ্যাসিসের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় দুটি সাইড ব্যাগ থেকে ১২৯ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় চালক ও চালকের সহকারীকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।