আদালত
আদালত অবমাননা আইন বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
আদালত অবমাননা আইন-২০১৩ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে তা অবৈধ ও বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রায় ৯ বছর আগে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের দেয়া ওই রায়ের ৩৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বুধবার হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন রিটকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
২০১৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে আদালত অবমাননা আইন-২০১৩ পাস হয়। ১৯২৬ সালের আদালত অবমাননার আইন রহিত করে ওই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি গেজেট প্রকাশিত হয়।
পরে একই বছরের ২৫ মার্চ নতুন আইনের ৪, ৫, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৩(২) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী রিট আবেদন করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করেন আদালত।
আইনের ৪ ধারায় নির্দোষ প্রকাশনা বা বিতরণ অবমাননা নয়, ৫ ধারায় পক্ষপাতহীন ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ আদালত অবমাননা নয়, ৬ ধারায় অধস্তন আদালতের সভাপতিত্বকারী বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আদালত অবমাননা নয়, ৭ ধারায় কিছু ক্ষেত্র ছাড়া বিচারকের খাসকামরায় বা রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ আদালত অবমাননা নয় বলে আইনে ব্যাখ্যাসহ বলা হয়েছে।
আইনের ৯ ধারায় আদালত অবমাননার পরিধি বিস্তৃত না হওয়া অর্থাৎ এই আইনে শাস্তিযোগ্য নয় এমন কোনও কাজ আদালত অবমাননা বলে গণ্য হবে না।
আরও পড়ুন : আদালতের ব্যতিক্রমী সাজায় আসামি এখন জনপ্রতিনিধি!
আইনের ১০ ধারায় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের কথা বলা হয়।
১০(১) ধারায় বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রচলিত আইন, বিধিমালা, সরকারি নীতিমালা, পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন, স্মারক ইত্যাদি যথাযথভাবে অনুসরণ করে জনস্বার্থে ও সরল বিশ্বাসে কাজ করলে তা আদালত অবমাননা হিসেবে গণ্য হবে না।
১০(২) ধারায় বলা হয়, উপধারা(১)-এর অধীনে করা কাজের বিষয়ে আদালতের আদেশ-নির্দেশ যথাযথ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন বা প্রতিপালন করা অসম্ভব হলে তার জন্য আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা যাবে না।
আর আইনের১৩(২) ধারায় বলা হয়, আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তি হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আপিলে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে এবং আদালত তাতে সন্তুষ্ট হলে তাকে ক্ষমা করে দণ্ড মাফ বা কমাতে পারবেন।
বুধবার আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, আদালত রায়ে বলেছেন, যে উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য নিয়ে আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে তাতে মনে হয় নির্দিষ্ট একটি গ্রুপকে আদালত অবমাননার দায় থেকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য প্রনয়ন করা হয়েছে।
আদালত আরও বলেন, সংবিধানের আর্টিকেল ১০৮ অনুসারে যেকোনও নাগরিক আদালতের রায় অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালত শাস্তি দিতে পারেন এবং অনুচ্ছেদ ১১২ অনুসারে রাষ্ট্রের সকল কর্তৃপক্ষ, নির্বাহী এবং বিচার বিভাগীয় ব্যক্তিগণ সুপ্রিম কোর্টের কাজে সাহায্য করবে।
সংবিধানে উক্ত নির্দেশনা থাকা স্বত্বে আদালত অবমাননা আইনের উল্লেখিত ধারাসমূহ সংবিধানের উক্ত নির্দেশনাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
এছাড়া সংবিধানে আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান এবং একই প্রতিকার পাওয়ার বিধান থাকলেও উক্ত ধারাগুলো বিশেষ ব্যক্তিদের সুরক্ষা দিয়েছে।
এসব কারণে আদালত অবমাননা আইনের ওই ধারাগুলো সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং বৈষম্যমূলক।
রায়ে আদালত আরও বলেন, ২০১৩ সালের আইনে উল্লেখিত মূল ধারাগুলো না থাকলে আইনের অন্যান্য বিষয়গুলো অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়।
সে কারণে ‘আদালত অবমাননার আইন-২০১৩’ সংবিধান পরিপন্থী ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
রায়ে আদালত ‘১৯২৬ সালের আদালত অবমাননার আইন’ পুনর্বহাল করেন বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আরও পড়ুন: এএসপি আনিস হত্যা: ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা
'হত্যার ষড়যন্ত্র': আদালতে সাক্ষ্য দিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়
জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা বহাল
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এর ফলে জিএম কাদের দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন না তিনি।
বুধবার ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হক শুনানি শেষে নিষেধাজ্ঞাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন খারিজ করে দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয় শুনানি শেষ হয়।
বুধবার আদেশের জন্য দিন ঠিক করেছিলেন আদালত।
এরপর লিখিত জবাব দাখিল ও মূল মামলার শুনানির জন্য ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে ৬ অক্টোবর জিএম কাদেরের পক্ষে শেখ সিরাজুল ইসলাম, কলিম উল্যাহ মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে জি এম কাদেরের ওপর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সরকার মোমেনের বক্তব্যের দায় এড়াতে পারে না: জিএম কাদের
৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা এই মামলা করেন।
বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের যাবতীয় দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহনে নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী আদেশ দেন।
একই আদালতে মশিউর রহমান রাঙ্গা ৩ অক্টোবর জি এম কাদেরসহ চার জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন।
একই বিষয়ে ঢাকার দ্বিতীয় সহকারী জজ আদালত বাদী নাফিজ মাহবুবের একটি মামলা সোমবার খারিজ করে দেন।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
পরে চলতি বছরের ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন।
এছাড়া ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন।
এতে আরও বলা হয়, ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
তাই ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসি নিজেই স্বীকার করেছেন ইভিএম দিয়ে সঠিকভাবে নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না: জিএম কাদের
জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতার স্বীকৃতি না দিলে সংসদে যাবে না জাপা
ফারদিন হত্যা: রিমান্ড শেষ, বুশরা জেলে
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আমাতুল্লাহ বুশরাকে কারাগারে পাঠিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আতাউল্লাহ তার জামিনের আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন।
বুশরাকে আদালতে হাজির করে মামলার ও গোয়েন্দার (ডিবি) তদন্ত কর্মকর্তা।
তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখার অনুমতি চান পুলিশ পরিদর্শক মজিবুর রহমান।
আরও পড়ুন: বুয়েটের ফারদিন হত্যার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গত ১০ নভেম্বর ঢাকার বনশ্রী বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
ফারদিনের বাবা কাজী নুরুদ্দিন রানা ওই দিনই রামপুরা থানায় তার ছেলে হত্যার ঘটনায় বুশরাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবপুর এলাকার বাসিন্দা।
নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ৭ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে একটি কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ ফরহাদ ময়নাতদন্ত করে ৮ নভেম্বর জানান, ফারদিনের মাথায় ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফারদিন হত্যা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর
বুয়েট ছাত্র ফারদিন হত্যা মামলায় বান্ধবী বুশরা গ্রেপ্তার
'হত্যার ষড়যন্ত্র': আদালতে সাক্ষ্য দিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি–বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। রবিবার আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেন তিনি।
ঢাকার অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। মামলার দশম সাক্ষী হলেন সজীব ওয়াজেদ।
আরও পড়ুন: বিএনপি শাসনামলে মির্জা আব্বাসের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল: জয়
২০১৫ সালের ৩ মার্চ পল্টন থানায় সজীব ওয়াজেদকে অপহরণ ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগে এ মামলা হয়।
মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- যায়যায়দিনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শফিক রহমান, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির সাংস্কৃতিক শাখা জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহমেদ সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। তারা সবাই পলাতক রয়ে গেছে।
পুলিশ ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে শফিক রহমান ও মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
২০১৮ সালের ৬ মার্চ মামলায় সাংবাদিক শফিক রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
আরও পড়ুন: ২০০৭ সালের নির্বাচনের আগে ‘৩০০ দলীয় ক্যাডার’ নিয়োগ দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত: জয়
আদালতের ব্যতিক্রমী সাজায় আসামি এখন জনপ্রতিনিধি!
বরিশাল আদালতে পৃথক মাদক মামলায় ১২ আসামি দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর জেলে না দিয়ে এক বছরের প্রবেশনে (পরীক্ষাকালীন) মুক্তি দিয়েছিলেন বিচারকরা।
সাজায় তারা গত এক বছর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে কেউ হয়েছেন জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী আর কেউবা মৎস্যজীবী।
বুধবার বেলা ১২টায় মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ।
ব্যতিক্রমী এ সাজাকালীন সময়ে মাদক সেবন ও বিক্রির মতো ভয়াবহ কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে অংশ নিয়েছেন মাদক বিরোধী নানা কর্মকাণ্ডেও। পরিবেশ রক্ষায় লাগিয়েছেন গাছ, ধর্মীয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাধ্যানুযায়ী দান করেছেন। আসামিরা প্রবেশনকালীন সময়ে আদালতের নির্দেশনা মতো জীবন পরিচালনা করেছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর, বিএনপির ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এর আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ১২ আসামিকে নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক সভা হয়।
বরিশাল জেলার একটি উপজেলায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া যুবক মোতালেব সরকার (ছদ্দনাম) জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার দায় স্বীকারের পর আদালত আমাকে প্রবেশনে সংশোধনের জন্য পাঠায়। গত এক বছর আদালতের নির্দেশনা মেনে জীবনযাপন করে নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছি।
নগরীর বাসিন্দা রফিকুল হাসান (৩৯) বলেন, মাদকসহ আটকের পর আদালত তাকে মাদক থেকে বিরত ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিতে বলেন। তিনি এখন মাদক সংশ্লিষ্টতা ছেড়ে উজিরপুর উপজেলায় ব্যবসা করছেন।
শরিফুল ইসলাম (৩৩) জানান, আদালতের নির্দেশনা মেনে একটি কওমী মহিলা মাদ্রাসার নির্মাণকাজে দানসহ মাদক বিরোধী প্রচারণা চালিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মাছচাষ করে পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন।
প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ জানান, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ায় শিগগিরই তারা মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে সমাজে মাথা উচু করে বাঁচতে পারবে। তাদের আর আদালত প্রাঙ্গণে ঘুরতে হবে না। এসব কাজে পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শদান ছাড়াও তাদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
তাদের মাদক বিরোধী কার্যক্রমে আরও গতি আনতে জাতীয় যুব পুরষ্কার প্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন আবিষ্কারের উদ্যোগে মাদক বিরোধী শ্লোগান সম্বলিত টিশার্ট ও প্লেকার্ড দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে কামাল হত্যা: ছাত্রলীগ নেতা সম্রাটসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গাইবান্ধায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ডেসটিনির মোহাম্মদ হোসেনের অর্থদণ্ড স্থগিত
মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাতের মামলায় ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে বিচারিক আদালতের দেয়া এক কোটি ৫০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে এম সরোয়ার হোসেন বলেন, এ মামলায় তাকে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং দেড় কোটি টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ইতোমধ্যে তার দশ বছর সাজা ভোগ শেষ হয়েছে। এখন জরিমানার আদেশ স্থগিত করা হলো। এ প্রেক্ষিতে এ মামলায় তার কারামুক্তি পেতে কোন বাধা নেই। তবে ডেসটিনি ট্রি-প্লানটেশন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মামলা থাকায় তিনি কারামুক্তি পাচ্ছেন না। তবে এ মামলায় তার জামিনের আবেদনের ওপর আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ-পাচার অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুলসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়।
আরও পড়ুন: ডেসটিনি পরিচালনায় বোর্ড গঠন করে দিলেন হাইকোর্ট
রাজধানীর কলাবাগান থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুই মামলায় মোট চার হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। দুই মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫৩। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিনসহ ১২ জনের নাম দুটি মামলাতেই রয়েছে। আসামিদের মধ্যে আগে থেকেই কারাগারে আছেন মোহাম্মদ হোসেন ও রফিকুল আমিন।
মামলা দুটির মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলাটির বিচার শেষ হয়েছে গত ১২ মে। রায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিনসহ ৪৬ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। রায়ে ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিনকে ১২ বছর কারাদণ্ড ও ২০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, কোম্পানি প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদকে চার বছরের কারাদণ্ড ও ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
বাকি আসামিদের ৫ থেকে ৯ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে কারামুক্তি পান, অনেকে কারামুক্তির পথে। এছাড়া ৩৯ আসামি এখনও পলাতক রয়েছে।
অন্যদিকে, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি বিচারিক আদালতে এখনও বিচারাধীন।
আরও পড়ুন: ডেসটিনির এমডি’র আপিল শুনবেন হাইকোর্ট
হারুনসহ ডেসটিনির ৪৫ জনের সাজা বাড়াতে হাইকোর্টে দুদকের আবেদন
ওসির বিরুদ্ধে করা তাবিথের মামলা খারিজ
মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা না করায় হেফাজত আইনে বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আজম মিয়ার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়ালের করা মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।
ওই মামলায় মারধরের অভিযোগে আওয়ামী লীগের ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছিল।
এর আগে সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকালে তাবিথ আউয়াল মামলাটি করেন ।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশ অপেক্ষমান রাখেন। এরপর সন্ধ্যায় আদালত থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার আদালত এ বিষয়ে আদেশ দিবেন।
মঙ্গলবার সকালে আদালত মামলাটি খারিজের আদেশ দেন বলে জানান আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।
আরও পড়ুন: বনানীতে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা, তাবিথসহ আহত ১০
তাবিথ আউয়ালের পক্ষে আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানি করেন।
মামলার আবেদনে আরও যাদের আসামি করা হয়- ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন, বনানী থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি ও ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাছির, শ্রমিক লীগ কর্মী বাবু, শফিক, বনানী থানার যুবলীগ কর্মী শ্যামল, দোলন, রনি, ববি, সাগর, মামুন ও ফারুক। এছাড়াও আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত করে আসামি করা হয়। এছাড়া, বনানী থানার আরও ২০ থেকে ৩০ জন পুলিশ সদস্যকেও অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির আমান, তাবিথসহ ৭০ নেতাকর্মীর আগাম জামিন
মামলারসূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ গ্যাস, ডিজেল, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ দলীয় তিন নেতার নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গত ১৭ সেপ্টেম্বর গুলশান ২ এর গোলচত্বরে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এসময় কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করে। এসময় বাদী বিএনপির নির্বাহী কমিটি সদস্য তাবিথ আউয়াল মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি নিশ্চিতের জন্য বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর হামলায় তাবিথ আউয়ালসহ বিএনপির অনেকে গুরুতর আহত হন। তাই এ অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: সিটি নির্বাচন বাতিল চেয়ে তাবিথের মামলা
অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে চট্টগ্রাম আদালতে তালা
চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীর সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের পেশকারসহ সকল স্টাফদের তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে আদালতে দায়িত্বরত পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সাইফুদ্দিন পারভেজের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে রবিবার (৬ নভেম্বর) সকালে আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে আইনজীবীরা।
আদালতের সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিকালে আইনজীবী মনজুর আলম একটি মামলার নথি দেখার জন্য প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে গেলে পেশকার পারভেজ তার কাছে টাকা দাবি করে। আইনজীবী মঞ্জুর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পেশকার পারভেজসহ আদালতের কর্মচারীরা আইনজীবীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং আইনজীবীদের নিয়ে বিভিন্ন কটুক্তিমূলক কথা বলে, এতে আইনজীবী মনজুর প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষ কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে পেশকার-পিয়নরা আইনজীবী মঞ্জুর ওপর হামলা করলে তিনি আহত হয়।
এ ঘটনা জানাজানি হলে সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম আদালত ভবন উড়িয়ে দেয়ার টার্গেট ছিল জঙ্গিদের: র্যাব
শুক্রবার ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকার পর রবিবার সকাল ১০টায় বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘটনার প্রতিবাদে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেন এবং আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দেন।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোহাম্মদ হাশেম ও সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দীন, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীসহ আইনজীবী নেতারা।
উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞার নজরে আনেন।
চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বিষয়টি আমলে নিয়ে তাৎক্ষণিক পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সাইফুদ্দিন পারভেজসহ ওই আদালতে দায়িত্বে থাকা সংশিষ্ট সবাইকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন।
জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ হাশেম বলেন, প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে, পরে সমিতির নেতারা মধ্যস্থতায় চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞার তাৎক্ষণিক নির্দেশে বেঞ্চ সহকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকল স্টাফের প্রত্যাহার ও বিভাগীয় মামলার ঘোষণায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জাগ্রত আইনজীবী পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট টি. আর খান বলেন, চট্টগ্রাম আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সেরেস্তাদার, উমেদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের হাতে আইনজীবীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি হচ্ছে, কোন নথি দেখতে গেলে হাজিরা, সময়ের দরখাস্ত দিলে, বেইল বন্ড জমা দিলে, মহামান্য হাইকোর্ট এর বেইল কনফার্ম করতে গেলে আইনজীবীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়।
টাকা না দিলে করা হয় হয়রানি, শুনতে হয় কটুক্তি সহ নানা অপমানজনক কথা, এসব আর চলতে দেয়া যায় না।
আরও পড়ুন: ৯১ লাখ টাকা আত্মসাত: চট্টগ্রাম আদালতে প্রতারক সাহেদ
চট্টগ্রাম আদালতের মালখানা থেকে নথি চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের
রাজশাহীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুই যুবকের ১৫ বছরের কারাদণ্ড
রাজশাহীতে পরিচয় গোপন রেখে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে দুই যুবককে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনটি ধারায় ৫ বছর করে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়াও উভয়কেই ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ছেলের বউকে ধর্ষণ: শ্বশুরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এনায়েতউল্লাহপুর এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ওয়াসিম আল রাজী (৩৩)। অলোকছত্র এলাকার নওশের আলীর ছেলে নাসিম আলী (২০)।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত জানান, ২০২১ সালের ১ আগস্ট নিজেদের নাম পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে আসামিরা ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়। পোস্টটি মুলত দুইটি ধর্মের মানুষদের মধ্যে দাঙ্গা সৃষ্টি করার জন্য ছিল। এর পর ওই সময় তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে মামলার চার্জশিট দাখিল করা হলে আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। বিচার শেষে আদালতের বিচারক আজ এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলায় যুবকের ৭ বছরের কারাদণ্ড
বাল্যবিয়ে: কুড়িগ্রামে নানা-নাতির কারাদণ্ড
আটক জঙ্গি ও কুকি-চিনের ১০ সদস্যকে জেল হাজতে পাঠাল আদালত
বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়থলি ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে আটক সাত জঙ্গি ও তিন কুকি-চিনের সদস্যকে রাঙ্গামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে সাতটার দিকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তারের আদালতে তাদেরকে হাজির করা হয়।
আরও পড়ুন: ফেসবুক লাইভে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, যুবক গ্রেপ্তার
কোর্ট পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানায়, সাত জঙ্গি ও তিন কুকি-চিনের সদস্যকে রাঙ্গামাটি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
তবে শুক্রবার তাদের রিমান্ড চাওয়া হয়নি। কয়েকদিন পর আবারও তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে তখন হয়ত রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এর আগে পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলার সীমান্তবর্তী মিয়ানমার সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতে র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর অভিযানে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া' ও কুকি-চিন ন্যাশনাল পার্টির (কেএনএফ) সদস্যদের আটক করা
পরবর্তীতে বিকেলে তাদেরকে র্যাব ও পুলিশের প্রহরায় রাঙ্গামাটিতে আনা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তাদেরকে আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
প্রসঙ্গত, র্যাব-৭ ও র্যাব-১৫ সহ অন্যান্য বাহিনীর সহস্রাধিক সদস্য অভিযানে অংশ নেয়। এসময় তাদের অভিযানে গ্রেফতাররা হলেন- সুনামগঞ্জের সৈয়দ মারুফ আহমদ ওরফে মানিক(৩১), পিরোজপুরের ইমরান হোসাইন ওরফে সাওন(৩১), ঝিনাইদহের কাওসার ওরফে শিশির(৪৬), সিলেটের জাহাঙ্গীর আহম্মেদ ওরফে জনু(২৭), বরিশালের মো. ইব্রাহিম ওরফে আলী(১৯), সিলেটের আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাপ্পি(২৩), সুনামগঞ্জের রুফু মিয়া(২৬), বান্দরবানের জৌথান স্যাং বম (১৯), স্টিফেন বম(১৯), এবং মাল সম বম (২০)।
অভিযানকালে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে ৯টি বন্দুক, বন্দুকের ৫০ রাউন্ড গুলি, কার্তুজ কেইস ৬২টি, হাত বোমা ছয়টি, কার্তুজ কেইস একটি, কার্তুজ বেল্ট দুইটি, দেশীয় পিস্তল একটি, ওয়াকিটকি সেট একটি, চার্জার তিনটি, কুকিচিং লিখা ১০টি মানচিত্র এবং অস্ত্র গোলা বারুদ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
‘গ্রেফতাররা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে যে তাদের অর্থের বিনিময়ে আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর (কেএনএফ) সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার আমির পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক সশস্ত্র গ্রুপ কেএনএফের সঙ্গে আগামী বছর পর্যন্ত এলাকায় জঙ্গি প্রশিক্ষণের বিষয়ে একটি চুক্তি করেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে তিন লাখ টাকা এবং কেএনএফ সদস্যদের খাবারের খরচ বহন করবে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে সড়কে স্বামীর সামনে মাদরাসা শিক্ষিকার মৃত্যু
বোয়ালমারীতে পরকীয়ার জেরে মেয়ের সামনে মাকে কুপিয়ে হত্যা!