সহিংসতা
সহিংসতা বর্জন করে সংযম বজায় রাখার আহ্বান ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সারাহ কুকের
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক 'অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ' নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন, সহিংসতা পরিহার এবং একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় যুক্তরাজ্যের গভীর উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বুধবার(১ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কুক। আসন্ন নির্বাচন ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
বিস্তৃত আলোচনায় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের শক্তিশালী আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্বের প্রতিফলন ঘটে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে এসওপি হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
হাইকমিশনার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ কৌশলগত সংলাপে উভয় পক্ষের অঙ্গীকারের সঙ্গতি রেখে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন।
দ্বিপক্ষীয় অভিবাসন ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম আলোচনা করতে উভয়েই সম্মত হন।
তারা অ্যাকসেস টু জাস্টিস প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন অবদান নিয়েও আলোচনা করেন। এটি প্যারালিগ্যাল সেবার মাধ্যমে দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বিচার ব্যবস্থায় আরও ভাল সুবিধা পেতে সহায়তার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই সংলাপে উৎসাহ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ঢাকায় সাম্প্রতিক সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে 'সঠিকভাবে' জানানো হয়নি : মোমেন
ঢাকায় সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনা সম্পর্কে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে 'সঠিকভাবে' জানানো হয়নি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
মানবাধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের শীর্ষ স্থানীয় সংস্থাকে সরকার সত্যের ভিত্তিতে জবাব দেবে জানিয়েছে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক বিবরণ ত্রুটিপূর্ণ এবং বাস্তবতাবর্জিত। তাদের তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ রকম তথ্যঘাটতি দুর্ভাগ্যজনক।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা প্রদান স্থগিত করেছে ওমান
মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় জানায়, গত ২৮ অক্টোবর বিরোধী দলের বিক্ষোভকারীরা প্রধান বিচারপতি ও অন্য বিচারপতিদের বাসভবনে হামলা চালায় এবং প্রায় ৩০ জন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করে। এ সময় মুখোশ পরে মোটরসাইকেলে যারা এসেছিলেন, তাদের ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক বলে মনে করা হয়।
মানবাধিকার কমিশনার উল্লেখ করেছেন, তারা বাংলাদেশে চলমান বিক্ষোভের সময় ধারাবাহিক সহিংস ঘটনার জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এ ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য এবং সহিংসতায় উসকানি দিতে পারে এমন কোনো বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড এড়ানোর জন্য বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: সহিংসতা পরিহার করতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ যেহেতু দেশে নির্বাচনের সময় কাছে চলে এসেছে, তাই এ ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য। একই সঙ্গে সহিংসতায় উসকানি দিতে পারে এমন কোনো বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড এড়াতে সব দলের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
তথাকথিত 'মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা' সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিথ্যা ও ভুয়া বিষয়' নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে বিএনপি।
তিনি বলেন, বিএনপিও ঢাকার সহিংসতা নিয়ে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা 'ভুয়া উপদেষ্টা' নিয়ে আসে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রেরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনাগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র মিলার
বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনাগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র মিলার
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশকে ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছে এবং তারা সহিংসতার ঘটনাগুলোকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে’ নিয়েছে।
মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, তারা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে এবং তা অব্যাহত রাখবে; এবং বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার্থে ও শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য তাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
আরও পড়ুন: সহিংসতা পরিহার করতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি- এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ।’
মিলার বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকার, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম- সকলের দায়িত্ব।
মুখপাত্র বলেন, ‘এবং আমরা যা চাই, বাংলাদেশের মানুষও তাই চায়, আর তা হলো- শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন।’
আরও পড়ুন: পূর্বশর্ত ছাড়াই সব পক্ষ সংলাপে অংশ নেবে: সিইসির সঙ্গে সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত হাসের প্রত্যাশা
সহিংসতা ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশের সব পক্ষের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
৩ দিনের অবরোধ: সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে চলছে দ্বিতীয় দিন
বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী ৩ দিনের অবরোধের ২য় দিন (বুধবার) ইতোমধ্যে সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে চলছে।
ঢাকার মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় সকাল ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা একটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিল নিয়ে একদল পিকেটারকে মালিবাগের দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায়। আবুল হোটেলের কাছে পৌঁছালে তারা একটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পুলিশের একটি টহল দল পিকেটারদের ধাওয়া করে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। ধাওয়া করা হলে পিকেটাররা ঘটনাস্থল থেকে একটি গলি দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
আরও পড়ুন: বিএনপির অবরোধের প্রথম দিন: চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ, আটক ১৪
নাশকতা এড়াতে রাজধানীর মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেখা গেছে।
আজ সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় বাস, সিএনজিচালিত ৩ চাকার গাড়ি ও প্রাইভেট গাড়ি দেখা গেছে।
সাভারের বালিয়ারপুর তুরাগ এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০-২৫ জনের একদল যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে অবরোধের সমর্থনে মিছিল বের করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির অবরোধ পাগলামি ছাড়া আর কিছুই না: সাঈদ খোকন
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, এক পর্যায়ে তারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
ওসি বলেন, পুলিশ তাদের ধরার চেষ্টা করছে।
বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী ৩ দিনের সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধের প্রথম দিনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, যানবাহন পোড়ানোসহ সহিংসতায় কিশোরগঞ্জে ২ জন ও সিলেটে ১ জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধ শেষ হবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায়।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী বিরোধী দলগুলোর ৩ দিনের অবরোধ চলছে
সহিংসতা পরিহার করে অংশগ্রহণমূলক-শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একসঙ্গে কাজ করুন: কূটনৈতিক মিশন
অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে 'সহিংসতা পরিহার ও একসঙ্গে কাজ করার' জন্য সব স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকার কূটনৈতিক মিশনগুলো।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) মিশনগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশের সময় সাম্প্রতিক সহিংসতায় গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।
দূতাবাস ও হাইকমিশনের সই করা যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ' ২৮ অক্টোবর ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশের সময় সহিংসতায় তাদের দেশ- অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিক-জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে আজ ব্রিফ করবে সরকার
এতে হতাহতের ঘটনায় এবং আহতদের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছে দেশগুলো।
কূটনীতিকদের জন্য সরকারের নির্ধারিত ব্রিফিংয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে এই বিবৃতি এসেছে।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আজ বিকালে ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিক, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের জানাবে সরকার।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিকাল ৪টায় কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা সম্পর্কে মার্কিন সিনেটরদের অবহিত করলেন রাষ্ট্রদূত ইমরান
শনিবারের সহিংসতায় আহত সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়া মারা গেছেন
ঢাকার সেগুনবাগিচায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়া রবিবার (২৯ অক্টোবর) বিকালে মারা গেছেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নেতা এম আবদুল্লাহ জানান, বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার তিনি মারা যান।
ভূঁইয়া শনিবার বিকালে মাদারটেকের বাসা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে যাচ্ছিলেন। সেগুনবাগিচায় পৌঁছালে ওই এলাকায় চলমান সহিংসতা ও কাঁদানে গ্যাসের আঘাতে তাকে বহনকারী রিকশাটি উল্টে যায়।
বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
রফিক ভূঁইয়া চট্টগ্রামের দৈনিক সমাচার পত্রিকায় সাংবাদিকতা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের ওপর হামলা: সম্পাদক পরিষদের নিন্দা-উদ্বেগ
পরে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি কয়েকটি পত্রিকাও প্রকাশ করেন। কানাডায় অবস্থানের সময়ও তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
রফিক ভূঁইয়া বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য এবং জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) স্থায়ী সদস্য ছিলেন।
তার লাশ ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তার দুই ছেলে বিদেশ থেকে ফেরার পর তাকে দাফন করা হবে।
১৯৫১ সালে ফেনীর দাগনভূঁইয়ায় জন্মগ্রহণকারী রফিক ভূঁইয়া তার ছেলে, মেযে, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী 'অপরাধীদের' বিচারের আওতায় আনা হবে: হাছান মাহমুদ
সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা ডিক্যাবের
ঢাকায় প্রাণহানি-সহিংসতায় ইইউ ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শোক প্রকাশ
ঢাকার রাস্তায় প্রাণহানি ও সহিংসতার ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও এর সদস্য দেশগুলো।
ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল রবিবার (২৯ অক্টোবর) টুইটারে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ঢাকার রাস্তায় প্রাণহানি ও সহিংসতা দেখে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো গভীরভাবে শোকাহত।’
তারা বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পথ খুঁজে বের করা জরুরি।’
এর আগে ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ৬ বছরের জিএসপি+ সুবিধা দিতে ইইউ'র প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেছেন, ‘আমরা সব পক্ষকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য সমস্ত সহিংসতার ঘটনা পর্যালোচনা করব।’
শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যা ও একটি হাসপাতাল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা অগ্রহণযোগ্য।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়।
শনিবার বিএনপির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য ও একজন রাজনৈতিক কর্মী নিহত হন। এ ছাড়া অপর এক পুলিশ সদস্য ও দুই আনসার সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইইউ’র সমর্থন চান প্রধানমন্ত্রী
ওষুধ ও ভ্যাকসিন উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনতে ইইউ'র প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে পারে বাংলাদেশ: ইআইবি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রী
সহিংসতার দায় বিএনপির নেতারা এড়াতে পারবেন না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার দায় বিএনপির নেতারা এড়াতে পারবেন না।
রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, হামলার ঘটনায় মামলা হবে।
তিনি বলেন, যারা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে প্রবেশ করেছে, পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, হাসপাতালে হামলা করেছে, গাড়িতে আগুন দিয়েছে- তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
আরও পড়ুন: পুলিশকে পিটিয়ে হত্যার ছাত্রদল নেতার ভিডিও আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার জানা মতে প্রায় শ’খানেক পুলিশ আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেত্রীদের ওপরও হামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় কেউ মামলা করতে চাইলে সেগুলো নেওয়া হবে।
বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যখন সহিংসতা চলছিল তখন দলের সিনিয়র নেতারা মিটিং করছিলেন। তাদের ডিএমপি কমিশনার বার বার জিজ্ঞেস করছিলেন, তাদের মহাসমাবেশের সীমানা কতদূর হবে। তারা জনিয়েছিলেন, নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘যে সহিংসতা হয়েছে সেটির দায় কি বিএনপি নেতারা এড়াতে পারবেন?’
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালে ঢাকার সড়ক ফাঁকা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর
সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী 'অপরাধীদের' বিচারের আওতায় আনা হবে: হাছান মাহমুদ
নয়াপল্টনে সহিংসতায় যুবদল নেতা নিহত, বিএনপির এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত: ফখরুল
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টনে 'পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলায়' যুবদলের এক নেতা নিহত ও এক হাজারের বেশি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে দলটি।
মুগদা থানা যুবদল নেতা শামীম মোল্লা ‘পুলিশের গুলিতে’ নিহত হয়েছেন বলে শনিবার এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসমাবেশে পরিকল্পিতভাবে হামলা ও গুলি করে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবদল নেতা শামীম নিহত হয়েছেন।’
যুবদল নেতা হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: রবিবার সারাদেশে হরতালের ডাক দিল বিএনপি
এছাড়া বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
ফখরুল আরও বলেন, সহিংসতায় অনেক গণমাধ্যমকর্মীও আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আহত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা আরও দাবি করেন, শনিবার থেকে তাদের দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দুই হাজারের বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রাজধানীর কাকরাইলে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা: ডিবি
এদিকে যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন জানান, নয়াপল্টনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শামীম আহত হন এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তবে পুলিশ জানায়, পেশায় গাড়িচালক শামীম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল হায়দার বলেন, শামীম সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ চলছে
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সহিংসতামুক্ত হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আগামী নির্বাচন সহিংসতামুক্ত হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সহিংসতামুক্ত হবে। আমার মনে হয় না কোনো সমস্যা হবে। আমরা তাদের বলেছি যে ৮০ ও ৯০ এর দশকে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। আমরা নিঃসন্দেহে তাদের বলেছি যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সফররত দলের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভিসা নীতিতে কাকে নিষিদ্ধ করেছে জানি না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কীভাবে হবে, তা পর্যবেক্ষণ করতে মার্কিন প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসেছেন। এবার তাদের প্রতিনিধি দলের নেতা ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এসেছিলেন।
এদিকে নির্বাচনের সময় যদি কোনো প্রার্থী নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন কিংবা কোনো দল বাধাগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ করেন, তখন কী হবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রশ্ন তারা জিজ্ঞাসা করেছেন।
আমরা বলে দিয়েছি, আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড দেখেছি, এমন হত্যাকাণ্ড আর দেখিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তিনি আবার এখানে আসার পর আবার তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি সহিংসা ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি। এখানে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। তিনি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনিও চান, নির্বাচনের কমিশনের মাধ্যমে একটি সুন্দর নির্বাচন হোক। স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তিনিই প্রবর্তন করেছেন। কাজেই এখন দুর্নীতির কোনো কারণ নেই।
তারা জিজ্ঞাসা করেছেন, নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তা আমরা দিতে পারব কি না? বিরোধী দল নির্বাচনে এলে সঠিকভাবে তারা প্রচার চালাতে পারবে কি না। আমরা বলে দিয়েছি, নির্বাচনের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা সর্বময় ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তার নেতৃত্বে সেই এলাকার নির্বাচন হবে। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এমনকি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের ক্ষমতার কথাও আমরা বলেছি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন পরিচালনায় পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আনসার দায়িত্ব পালন করে। অনেকগুলো নির্বাচন পরিচালনার অভিজ্ঞতা তাদের আছে।
এই নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে ৫ হাজার ৩০০টি নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীন থাকে। এখানকার পুলিশ সুপ্রশিক্ষিত, কীভাবে নির্বাচনকে পরিচালনা করতে হয়, তা তারা জানে। আগের মতো সহিংসতা আমাদের দেশে হয় না। এখন আমরা সহিংসতামুক্ত।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী