বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছেলেবেলা কেমন ছিল?
ঘটনাবহুল মার্চ মাসটিতে বাঙালি জাতির জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিবস ১৭ মার্চ। কারণ এই দিনটিতে জন্ম নিয়েছিলেন বাংলাদেশের বাঙালিত্বের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের অভ্যূদ্বয়ের জন্য মানুষটি তাঁর পুরো জীবনটিকেই করে তুলেছেন সংগ্রাম মুখর। সে সংগ্রামে কখনো তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে, কখনো বজ্র কন্ঠে লাখো মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন অধিকারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার জন্য। শৈশব-কৈশোর জুড়ে নিপীড়িত মানুষের বঞ্চনায় রুখে দাড়ানোর নিরন্তর অনুশীলনের এক স্বতঃস্ফূর্ত উপহার এই শেখ মুজিব। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক, কেমন ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছেলেবেলা।
শেখ মুজিবুর রহমান: টুঙ্গিপাড়ার খোকা
দিনটি ছিল ব্রিটিশ শাসন আমল; ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ। পূর্ব বাংলার গোপালগঞ্জ ছিলো ফরিদপুর জেলার একটি মহকুমা। এরই অন্তর্গত পাটগাতি ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
গোপালগঞ্জের দেওয়ানি আদালতের কোর্ট ক্লার্ক ছিলেন বাবা শেখ লুৎফুর রহমান। আর মা শেখ সায়েরা খাতুন গৃহিণী। তাদের চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে শেখ মুজিব ছিলেন তৃতীয় সন্তান। বাবা-মা আদরের মুজিবুর রহমানকে খোকা বলে ডাকতেন। তবে আকিকা দেয়ার সময় শেখ মুজিবুর রহমান নামটি দিয়েছিলেন পিতা লুৎফর রহমানের নানা শেখ আবদুল মজিদ। কারো কাছে মুজিব, কারো কাছে মিয়া ভাই অথবা মুজিব ভাই; কখনো বা তাকে ডাকা হয়েছে শেখ সাহেব নামে।
পড়ুন: ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের পট’ পেইন্টিং পরিদর্শন নৌপ্রতিমন্ত্রীর
শিক্ষা জীবনে শেখ মুজিব
গৃহশিক্ষক মৌলভী সাখাওয়াৎ উল্লাহ ছিলেন শিশু মুজিবের প্রথম শিক্ষক। তাঁর একাডেমিক পড়াশোনার হাতেখড়ি হয় ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ছিলো গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়। তার স্কুলে পড়াশুনা শুরু করেন। ১৯২৯ সালে নয় বছর বয়সে মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। তার দুই বছর বাদে চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন মাদারীপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে।
১৯৩৪ সালে বেরিবেরি রোগ বা গ্লুকোমার কারণে চোখে জটিলতা দেখা দিলে তাঁর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ রোগ থেকেই তার চোখে জটিল অসুখ দেখা দেয়। বাবা চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে কলকাতায় পাড়ি জমান। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেজ্ঞ ডা. টি আহমেদ সার্জারিতে সুস্থ হয়ে ওঠেন বাবা-মার আদরের খোকা।
তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তাঁর শিক্ষাজীবন থেকে চারটি মূল্যবান বছর কেড়ে নেয়। ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জে মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে আবার পড়াশোনা শুরু করেন। এখান থেকেই তিনি ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন (বর্তমান মাধ্যমিক পরিক্ষা) পাশ করেন। ইন্টারমিডিয়েট বা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ১৯৪৪ সালে ইসলামিয়া কলেজ থেকে এখন যেটি মাওলানা আজাদ কলেজ নামে পরিচিত। ১৯৪৭ সালে এখান থেকেই বিএ পাশ করেন মিয়া ভাই।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আ.লীগের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি
একজন রাষ্ট্রনায়কের আবির্ভাব
শৈশব থেকেই ধীরে ধীরে পরিশীলিত হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা। স্কুলে থাকাকালীন তিনি একবার এক অযোগ্য শিক্ষককে অপসারণের দাবীতে সকল ছাত্রদের নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন।
গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে পড়ার সময় তাঁর জন্য বাড়িতে গৃহশিক্ষক দেয়া হয়েছিলো। গৃহশিক্ষক ছিলেন আবদুল হামিদ, মুজিবুর রহমানের শিক্ষাজীবনে যার অবদান অপরিসীম। গোপালগঞ্জে আবদুল হামিদের একটি সংগঠন ছিলো যার নাম ‘মুসলিম সেবা সমিতি’। এর কাজ ছিলো দরিদ্র ছাত্রদের খাওয়া ও পড়াশোনায় সহায়তা করা। প্রতি রবিবার মহকুমার মুসলমান বাড়িগুলো থেকে মুষ্টি চাল যোগাড় করা হতো। তারপর সেই চাল বিক্রি করে গরিব ছাত্রদের বই কেনা, পরীক্ষা ও অন্যান্য খরচ চালানো হতো। এমনকি জায়গির ঠিক করার কাজও করা হতো। মিয়া ভাই ছিলেন এই সংগঠনের একনিষ্ঠ কর্মী।
আবদুল হামিদের মৃত্যুর সেবা সমিতিটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন মুজিবুর রহমান।
পড়ুন: বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বায়োপিক’
তাঁর মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশনারী হাই স্কুলে পড়ার সময়কার একটি ঘটনা আছে। মুজিব তখন নবম শ্রেণির ছাত্র; পড়াশোনার বাইরেও তিনি বিভিন্ন সংস্কারমুলক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে এক ভাষণ দেয়ার সময় হঠাৎ একদিন গ্রেফতার হয়ে যান মুজিব। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি ছিলো মিথ্যা। তাই ছাত্রদের প্রচন্ড চাপের মুখে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় স্থানীয় পুলিশ।
শেখ মুজিবুর রহমানের ঘটনাবহুল ছেলেবেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে তাঁর পরিচয় হওয়া।
১৯৩৮ সালে শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মিশনারি স্কুল পরিদর্শনে আসেন। দেখতে একটু বড় হওয়ায় হাজার ছাত্রদের মধ্যে স্কুল স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের দায়িত্ব পড়ল শেখ মুজিবের ওপর। শহীদ সাহেবকে দলীয়ভাবে সংবর্ধনা দেয়ার সময় ছাত্রদের পক্ষ থেকে কথা বললেন শেখ মুজিব। এমনকি স্কুলের ছাদ দিয়ে পানি পড়ার কথা জানিয়ে তা সংস্কার করে দেবার প্রতিশ্রুতিও নিয়ে নিলেন। পরবর্তীতে ওই দাবি পুরণ করা হয়।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মবার্ষিকী বৃহস্পতিবার
কিন্তু যাবার সময় সোহরাওয়ার্দী এই ছোট্ট ছেলেটির সৎ সাহসে মুগ্ধ হয়ে মুজিবুর রহমানের নাম ও বংশ পরিচয় জেনে নিলেন। তাকে কাছে ডেকে নিয়ে আদর করলেন। সেদিনের পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শেখ মুজিবুর রহমানকে চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে তিনি মুজিবকে কলকাতায় তাঁর সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন। এভাবেই শুরু হয়েছিলো রাজনৈতিক মঞ্চে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মিলিত প্রচেষ্টার যাত্রা।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় সোমবার দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ।
১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল জনসমুদ্রের সামনে যে যুগান্তকারী ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। সে দিনটি থেকে নতুন করে অনুপ্রেরণা পাওয়ার জন্য প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়।
লক্ষাধিক স্বাধীনতাকামী জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু তার ১৯ মিনিটের অসামান্য ভাষণে শোষক পাকিস্তানি শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বিশাল জনসভা থেকে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন,‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা’।
তার এই ভাষণকে প্রায়ই মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ঐতিহাসিক গেটিসবার্গের ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়। বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন. যেহেতু আমরা রক্ত দিতে শিখেছি, আমরা আরও রক্ত দেব। ইনশাআল্লাহ, এদেশের মানুষকে মুক্ত করতেই হবে...প্রতিটি ঘরকে দুর্গে পরিণত করব। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে (শত্রু) মোকাবিলা কর।
সেদিন বঙ্গবন্ধুর দেয়া সেই ভাষণ জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করেছিল, যা সমগ্র জাতিকে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তার স্বৈরাচারী ও দমনমূলক শাসন থেকে স্বাধীনতার সংগ্রামে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ২০২২’ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল,রেডিও স্টেশন ও জাতীয় দৈনিকগুলোতে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে।
পড়ুন: ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ হাইকোর্টের
এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে জাতির স্বাধীনতার যাত্রাকে বাস্তবায়িত করার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুধু আমাদের জন্য নয়, সারা বিশ্বের স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনের স্বপ্ন ছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করা। ‘আমাদের মহান নেতার সেই স্বপ্ন পূরণে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’
তিনি বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে অবদান রাখার জন্য রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি, আজ বাঙালি জাতির জন্য এক বিরল সম্মান ও গর্বের।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত বছর আমরা ৭ই মার্চের এই মহান ভাষণের সুবর্ণজয়ন্তী ও স্বাধীনতা উদযাপন করেছি। এ বছর আমরা ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর ও মুজিববর্ষ উদযাপন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের গৃহীত উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।’
তিনি জাতির পিতার মহান আদর্শ অনুসরণ করে তার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করারও আহ্বান জানান।
২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
২০২০ সালের ৭ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’-এর পরিবর্তে ‘ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে, তাই দিবসটি এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়।
পড়ুন: সোমবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ
বীমা পদক পেলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান
বীমা পদক ২০২২ পেয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান। বীমা খাতের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখার কারণে তিনি এই পদকে ভূষিত হন।
মমঙ্গলবার (১ মার্চ) জাতীয় বীমা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই পদক গ্রহন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তাঁর হাতে পদক তুলে দেন অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ।
এন আই খান হিসেবে বহুল পরিচতি নজরুল ইসলাম খান সরকারের সচিব পদ থেকে ২০১৬ সালে অবসরগ্রহণ করেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন এটুআই প্রোগ্রাম জাতীয় প্রকল্প পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
সরকারের সাবেক এই সচিব ২০২০ সালের জুনে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড এর পরিচালনা পর্ষদে যোগ দেন। যোগদানের পর থেকে তিনি গ্রাহক থেকে শুরু করে সব স্তরের স্টেকহোল্ডারদের কাছে আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।
পড়ুন: বীমার সুবিধা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৫২টি জটিল রোগে আর্থিক সুরক্ষা দিতে মেটলাইফ বাংলাদেশের নতুন স্বাস্থ্য বীমা
দেশের প্রথম গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ বইমেলায়
বিশ্বজুড়ে গ্রাফিক নভেল নিয়ে বেশ উন্মাদনা রয়েছে। বাংলাদেশেও প্রথমবারের মতো এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে বই প্রকাশ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে কাল্পনিক কোনো চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে নয় বরং বাস্তব জীবনের এক নায়ককে উপস্থাপন করা হয়েছে এ নভেলে।
মুজিব গ্রাফিক নভেলের ১০ খণ্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনকে চিত্রিত করা হয়েছে। রঙ ও শব্দে ফুটিয়ে তোলা বইটিতে গ্রাফিক নভেল প্রেমীরা জাতির পিতার জীবন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
১০ খণ্ডের বইটি একুশে বইমেলার সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন স্টলে (সিআরআই, স্টল নম্বর ৭৩৫ এবং ৭৩৬) পাওয়া যাবে।
বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ওপর ভিত্তি করে রচিত সিরিজটিতে তাঁর জীবনের গল্প আঁকা হয়েছে যেখানে অসাধারণ স্বপ্ন নিয়ে একজন সাধারণ ছেলের যাত্রার গল্প বলা হয়েছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এটি প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: পাউরুটি কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন: মুক্ত দুই শিক্ষককে বঙ্গবন্ধুর বই পড়ার আদেশ
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শে বাংলাদেশ পরিচালিত হবে: প্রধানমন্ত্রী
নূর চৌধুরীকে ফের ফেরত চেয়েছে ঢাকা
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও দোষী সাব্যস্ত খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশের অনুরোধের কথা তিনি তার সরকারের কাছে জানাবেন।
বুধবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হাইকমিশনার বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।
কানাডার পরীক্ষিত অংশীদার বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধুর এ খুনিকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করে আসছে।
আরও পড়ুন: কানাডার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি এক বার্তায় বলেন, ‘এই খুনি প্রায় ৩০ বছর ধরে পলাতক হিসেবে কানাডায় বাস করে আসছে। কানাডা মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা এবং আইনের শাসনের প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। এই জঘন্য খুনি ও মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘনকারীকে বহিষ্কারে দু’দেশ কিছু পদ্ধতিতে একমত হওয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’
বাংলাদেশ ও কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি দেশ দুটি তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির কাছে কানাডার নতুন হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের পরিচয়পত্র পেশ
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।
এরপর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। তারা দুজনই ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বায়োপিক’
প্রথম মুজিব শতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার পরের দিন ২০২০ এর ১৮ মার্চ শুরু হবে সিনেমা তৈরি- পরিকল্পনাটা ছিল এরকমই। কিন্তু তাতে বাঁধ সাধলো মহামারি করোনাভাইরাস। পুরো দশ মাস পিছিয়ে ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি মুম্বাইতে শুরু হলো বঙ্গবন্ধু ছবির দৃশ্য ধারণ। বাংলাদেশের অংশটুকুও শুরু হয়ে গেছে ১ নভেম্বর থেকে। ছবি মুক্তির নতুন তারিখ ঠিক হয়েছে ২০২২ এর মার্চে। চলুন, এই ঐতিহাসিক বায়োপিকটির ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
চিত্রনাট্য জুড়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনচরিত
শেখ মুজিবুর রহমানের তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পাশাপাশি একজন ব্যক্তি মুজিবেরও আত্মপ্রকাশ ঘটবে বঙ্গবন্ধু বায়োপিক-এ। কোটি বাঙালির প্রাণপ্রিয় নেতাকে দর্শকরা আবিষ্কার করবে একজন সন্তান, একজন স্বামী ও একজন বাবা হিসেবে।
চিত্রনাট্যকার শ্যামা জায়দি ও অতুল তিওয়ারি বায়োপিক লেখার ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্ভর করেছেন প্রাথমিক উৎসের উপর। আর এই প্রাথমিক উৎসটি ছিলেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ মুজিবুর রহমানের সমগ্র জীবনটাকে তুলে ধরতে নিজেদের সেরাটা দিয়ে শৈল্পিক ভাবে চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন জায়দি ও তিওয়ারি। তবে রাজনৈতিক অংশগুলোকে আরও প্রাণবন্ত করার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার অবদানও অপরিসীম। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিবেশনের জন্য বেশ সময় নিয়েই চিত্রনাট্যকারদের সহযোগিতা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: জিৎ-এর প্রযোজনায় প্রসেনজিৎ-মিথিলা জুটির প্রথম ছবি 'আয় খুকু আয়'
বঙ্গবন্ধু চলচ্চিত্র নির্মাণের নেপথ্যে
একদম শুরু থেকে বায়োপিকটির সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন ভারতের ৮৬ বছর বয়সী পরিচালক শ্যাম বেনেগাল। বায়োগ্রাফী জনরার প্রতি নিবেদিত প্রাণ শ্যাম বেনেগাল এর আগে কাজ করেছেন সুভাস বোস, গান্ধী, এবং নেহেরুর জীবনচরিত নিয়ে।
২০২১ এর এপ্রিল নাগাদ বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তি ও পারিবারিক অংশটুকু শেষ করা হয়েছে মুম্বাইয়ের দাদাসাহেব ফিল্মসিটিসহ বিভিন্ন স্থানে। নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া শ্যুটিং-এ মূলত তাঁর রাজনৈতিক অংশগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
চলচ্চিত্রটি তৈরিতে সহযোগী পরিচালক হিসেবে আছেন দয়াল নিহালানি। শিল্প নির্দেশনার দিকটা দেখছেন নীতিশ রায়। কস্টিউম পরিচালনায় থাকছেন শ্যাম বেনেগালের মেয়ে পিয়া বেনেগাল। সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আকাশদীপ পান্ডে। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শান্তনু মৈত্র।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন এবং ভারত জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের সহযোগে এই চলচ্চিত্রটি তৈরির জন্য বাজেট ঠিক করা হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা, যার ৬০ ভাগ বাংলাদেশ ও ৪০ ভাগ ভারত বহন করবে।
আরও পড়ুন: সরকারি অনুদানের ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ সিনেমায় নায়িকা দীঘি
৩০ প্রতিষ্ঠানকে ‘গ্রীন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ দেবে শ্রম মন্ত্রণালয়
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’কে অধিকতর গৌরবোজ্জ্বল ও স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো ৬টি খাতের ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গ্রীন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করবে।
নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও দক্ষ শ্রমশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরও অধিক পরিমাণে উৎপাদন নিশ্চিত করে দেশের অর্থনীতির গতিকে বেগবান ও টেকসই করার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমাণ এবং দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহনে উদ্বুদ্ধকরণে ‘গ্রীন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ প্রবর্তন করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতিবছর এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আগামী ৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করবেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রণীত নীতিমালার আওতায় শ্রমমান সম্পর্কিত কিছু নির্ণায়ক মাপকাঠি যেমন-অপরিহার্য প্রতিপালন, পরিবেশগত প্রতিপালন, প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিপালন, উদ্ভাবনী কার্যক্রম বিবেচনা করে ৬টি সেক্টরের ৩০টি শিল্প-কারখানাকে নির্বাচন করা হয়েছে।
প্রথমবারের মতো এবছর তৈরী পোশাক খাতের ১৫টি কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ সেক্টরে ৩টি প্রতিষ্ঠান, চা শিল্পে ৪টি প্রতিষ্ঠান, চামড়াজাতপণ্য সেক্টরের ২টি শিল্প-কারখানা, প্লাষ্টিক সেক্টরে ৩টি প্রতিষ্ঠান এবং ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টরে ৩টি প্রতিষ্ঠানকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন:জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ
দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় ঢাকা
শীত ঘনিয়ে আসতেই ‘অস্বাস্থ্যকর’ হচ্ছে ঢাকার বাতাস
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ রাসেল দিবস উদযাপিত
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কনিষ্ঠ ছেলে শেখ রাসেলের জন্মদিন স্মরণে ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ উদযাপন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে শেখ রাসেলের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। তিনি শেখ রাসেলের জন্ম দিবসকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দেশের শিশু-কিশোররা শেখ রাসেল সম্পর্কে আরও জানতে পারবে যা তাদেরকে মানবতাবাদী ও অধিকারবোধ সম্পন্ন ভবিষ্যত নাগরিকে পরিণত করবে।
পড়ুন: কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে শেখ রাসেলের জন্মদিন উদযাপিত
শেখ রাসেলকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচিত বই ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ পড়ার জন্য প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতার বর্বরোচিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন ‘ঘাতকেরা নিষ্পাপ ও কোমলমতি শিশু রাসেলকেও রেহাই দেয়নি।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্টের পালিয়ে থাকা খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন তা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, বিদেশে পালিয়ে থাকা খুনিদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচার আওতায় আনতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
পড়ুন: শেখ রাসেল: অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার প্রতীকী নিশান
‘শেখ রাসেল দিবস’ পালিত হচ্ছে আজ
শেখ রাসেল: অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার প্রতীকী নিশান
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেই হত্যাযজ্ঞে বাদ যায়নি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র ১০ বছর বয়সী শেখ রাসেলও। আজ ৫৮ বছর আগে ১৯৬৪ সালের এই দিনটিতে জন্ম গ্রহণ করে শেখ রাসেল।
যুদ্ধ, প্রতিহিংসা কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করে না। তাই স্বাধীনতার অর্ধশত বর্ষপূর্তির সান্নিধ্যে এসেও শেখ রাসেলের মৃত্যু বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার হাতছানি দিয়ে ডাকে। আজকের এই স্মৃতিচারণ ফিচারটি সেই নিষ্পাপ প্রাণকে উদ্দেশ্য করেই।
দেশে সংকটপূর্ণ মুহূর্তে শেখ রাসেল-এর বেড়ে ওঠা
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসার কোল জুড়ে শেখ রাসেলের আগমনের সময় বাবা স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কাজে চট্রগ্রামে ছিলেন।
সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু রাসেলকে বড় বোন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোলে তুলে দেয়া হয়। দেশের চরম দুরবস্থার মধ্যেও বড় চার ভাই-বোনসহ আত্মীয়দের মাঝে শিশু রাসেল যেন এক শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছিল।
১৯৬৬ সালের ৮ মে যখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন শেখ রাসেলের সবে মাত্র দেড় বছর। মায়ের কোলে করে কেন্দ্রীয় কারাগারে বাবাকে দেখে আসার সময় বাবাকে নিয়ে আসার জন্য রাসেল কান্না জুড়ে দিতো। এক সময় তাকে বোঝানো হয়েছিল যে ওটাই বাবার বাড়ি। পুরো এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর রাসেল মাকেই আব্বা বলতে শুরু করে আর কারাগার থেকে আসার সময় বাবাকে নিয়ে আসার জন্য কাঁদে না। ‘কারাগারের রোজনামচা’য় বঙ্গবন্ধু তাঁর ছোট্ট ছেলে রাসেলকে নিয়ে ঠিক এভাবেই লিখেছিলেন।
পড়ুন: শিশুদের ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলুন: প্রধানমন্ত্রী
১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেখ মুজিবুর রহমান যখন বঙ্গবন্ধুর উপাধি পান তখন রাসেলের বয়স সাড়ে চার বছর চলছিল।