আবহাওয়া অফিস
কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা
টানা কয়েকঘণ্টার বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিতে মহানগরীর কিছু কিছু এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার জন্য সড়কে যান চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ায় নগরবাসীকে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে।
এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ওপর ক্ষুব্ধ নগরবাসী।
আরও পড়ুন: ঢাকায় রেকর্ড ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, চকবাজার, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকাসহ অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফ্লাইওভারের নিচেও হাঁটু পানি জমেছে। বৃষ্টি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা রয়েছে।
দেশের ৮ বিভাগেই বৃষ্টির পূর্বাভাস
দেশের আট বিভাগে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
রবিবার সকাল ৯টায় আবহাওয়ার বুলেটিনে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা ঝড়ো হাওয়ার সাথে বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
পশ্চিমাঞ্চলীয় নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মানের উল্লেখযোগ্য উন্নতি
টানা বর্ষণে সিলেট-সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি
ভারী বর্ষণ ও ভারত সীমান্ত থেকে আসা পানির কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদ-নদীর পানি বিপদসীমায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এছাড়া আগামী ২৪ ঘন্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের ত্রিপুরাতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সিলেট ও সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি নদীসহ সীমান্তবর্তী নদনদীগুলোর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা।
এদিকে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও চলমান বৃষ্টিপাতে সিলেটের প্রায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট উপজেলা দিয়ে ইতোমধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার ভোর ৬টায় ওই অঞ্চলে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ০.৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট এলাকায় বিপদসীমার ১২.৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে শুক্রবার সকাল ৬টায় ছিল ১৩.৩৪ সেন্টিমিটার। সিলেটে সুরমার বিপদসীমার ১০.৮০ সেন্টিমিটার। সকাল ৬টায় এই নদীর পানি ছিল ৯.৫২ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি শেওলা এলাকায় রয়েছে বিপদসীমার ১৩.০৫ সেন্টিমিটার। সকাল ৬টায় এই নদীর পানি ছিল ১০.৮৬ সেন্টিমিটার। সারি নদী গোয়াইঘাট এলাকার বিপদসীমার ১২.৩৫ সেন্টিমিটার। সকাল ৬টায় এই নদীর পানি ছিল ১১.৯৫ সেন্টিমিটার। সুনামগঞ্জ সুরমার বিপদসীমার ৭.৮০ সেন্টিমিটার। সকাল ৬টায় এই নদীর পানি ছিল ৬.৩২ সেন্টিমিটার।
এদিকে, সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে
সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, আগামী ১৮ মে পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের চেয়ে রাতে বেশি বৃষ্টিপাত হবে।
পড়ুন: সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ দুর্বল হচ্ছে
পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
মঙ্গলবার আবহাওয়ার বুলেটিনে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় এটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক হাজার ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা বন্দর থেকে এক হাজার ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে এক হাজার ১৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রায় ৮৯ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার ঘণ্টায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি সাগর উত্তাল থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তাদের গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শও দেয়া হয়েছে।
পড়ুন: খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশালে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস
দেশে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
দেশের বিভিন্ন জেলায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
দেশের নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধায় ৬টার আবহাওয়ার বুলেটিনে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং কুমিল্লা অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দু’ এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেছেন, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেটের ওপর দিয়ে প্রায় ৬০-৮০ কিমি/ঘন্টা বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এছাড়া ৪৫-৬০ কিমি/ঘণ্টা বেগে ঝড়ো হাওয়া যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল ও কুমিল্লায় আঘাত হানতে পারে বলেও জানান তিনি।
দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এদিকে, খুলনা বিভাগ এবং টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙামাটি, রাজশাহী ও পাবনা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে বুলেটিনে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুর বিভাগের তেতুলিয়ায় ২৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পশ্চিমাঞ্চলীয় নিম্নচাপটি উপ-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। মৌসুমী নিম্নাংশ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
পড়ুন: তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
চুয়াডাঙ্গায় বছরের সর্বনিম্ন ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা, জনজীবন বিপর্যস্ত
চুয়াডাঙ্গায় হাড় কাঁপানো শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও শৈত্যপ্রবাহের কারণে কমেনি শীতের দাপট। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ এলাকার মানুষ।
তীব্র শীতে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো। সোমবার ভোরে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ও চায়ের দোকানে শীত নিবারণের চেষ্টায় আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে।
রিকশাচালক মাসুম বলেন, আজ প্রচণ্ড শীত লাগছে। ঠান্ডার জন্য রিকশা চালানো যাচ্ছে না। হাত ও পায়ের পাতা মনে হচ্ছে বরফ হয়ে যাচ্ছে। পেটের দায়ে বাড়ি থেকে বের হলেও পেসেঞ্জার পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
রাতে ভারতে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’
উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। ফলে এটি আজ রাতে (২৬ সেপ্টেম্বর) ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের উত্তরাঞ্চল এবং উড়িষ্যার দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হনতে পারে বলে দেশটির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
গুলাবের প্রভাবে প্রতিবেশী বাংলাদেশে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
ভারতীয় আবহাওয়া অফিস আজ সকালে জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘গুলাব’। পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য উড়িষ্যা এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ-পূর্ব রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশে ৯৫ কিলোমিটার বেগে বাতাসের গতিতে আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়া অফিস এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, ‘গুলাব’ উত্তর-পশ্চিম এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে গোপালপুরের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব এবং কলিঙ্গপত্তনমের ৩৩০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থান করছে।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’: সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত
স্থানীয় জনগণকে সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে উভয় রাজ্যে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) মোতায়েন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ভারতীয় রেলওয়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করেছে।
বাহিনীর প্রধান সত্য নারায়ণ প্রধান স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উড়িষ্যায় ১৩টি এবং অন্ধ্রপ্রদেশে পাঁচটি এনডিআরএফ টিম মোতায়েন করা হয়েছে। দুটি রাজ্যের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী বেশ কিছু মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’
এদিকে, রবিবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রায় ৬২ কিলোমিটার দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
অক্টোবরে আবার টিকা রপ্তানি শুরু করবে ভারত
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে নগরবাসী
চট্টগ্রামে রাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সকাল থেকে কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ এবং প্রয়োজনে ঘরের বের হওয়া নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
বুধবার (২৫ আগস্ট) নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালিশহর, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ সিডিএ, বহদ্দারহাট, ষোলশহর, দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর, প্রবর্তক মোড়, চকবাজার ও এলাকা হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। অফিসগামীরা পায়ে হেঁটে ও রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে কয়েক স্থানে পাহাড় ধস
আবহাওয়া অফিস বলছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এই বৃষ্টিপাত। যা আরও দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
সকালে ষোলশহর এলাকায় অফিসগামী ইদ্রিস আলী বলেন, চট্টগ্রামে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানিতে তলিয়ে যায়। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এক ঘণ্টা পানিতে দাড়িয়ে আছি কোন গাড়ি পাচ্ছি না। জনপ্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপনার কারণে চট্টগ্রাম নগরবাসীর এ দু:খ যাচ্ছে না।
এদিকে জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন কর্মজীবী নারীরা। সড়কে পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় হাঁটুপানি মাড়িয়ে যেতে হয় কর্মস্থলে।
জলাবদ্ধতার কারণে ঘর থেকে বের হওয়া নগরবাসীর চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি ঢুকে সিএনজি নষ্ট হয়ে যেতে দেখা গেছে বিভিন্ন জায়গায়। অফিসমুখী মানুষকে হাঁটু পর্যন্ত পানি দিয়ে হেটে বা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে দুই নম্বর গেইট এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনা চায় চাষিরা
দুর্ভোগের কথা জানিয়ে নাছিমা আখতার নামে এক গার্মেন্ট কর্মী বলেন, কারখানায় যাওয়ার উদ্দেশে ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে আটকে গেছি। যে পরিমাণ পানি, কোনোভাবেই চলাফেরা করা যাচ্ছে না। রিকশা ভাড়াও বেশি নিয়েছে। সড়কে সকালে ছিল না পর্যাপ্ত বাসও।
এই বৃষ্টি আরও দুদিন থাকতে পারে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমদ বলেন, আজ বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃষ্টি হচ্ছে।
বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকা
মুষলধারে বৃষ্টিতে পানিতে তলিয়ে গেছে বন্দরনীর অধিকাংশ এলাকায়। এতে ব্যাপক জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নগরবাসী।
আজ রবিবার ভোর থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও প্রবল বৃষ্টি শুরু হয় সকাল ৯টার পর থেকে। দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি চলছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রামে বিভাগে ৭৮৯ মিলিমিটার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রাক মৌসুমী বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে তা থেমে থেমে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুন: তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা
এদিকে সকাল থেকে বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েন সাধারণ মানুষ। সেই সাথে পানির মধ্যে গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে চালকদের।
নগরীর চকবাজার জামাল খান, আগ্রাবাদম বড়পোল, ছোটপোল, হালিশহর পতেঙ্গা, ইডিজেড, প্রবর্তক মোড়, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর বাকলিয়া, ষোলশহর দামপাড়াসহ বিভিন্ন নিচু এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ছোট শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষকে পানির কারণে চরম বেকায়দায় পড়তে দেখা গেছে।
নগরবাসীর অভিযোগ বছরের পর বছর পার হলেও জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে কোনোভাবেই পরিত্রাণ মিলছে না চট্টগ্রামবাসীর সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলার পরও কোনো উন্নয়ন না হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। তারা বলছেন সিডিএ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার শেষ হচ্ছে না।
সিলেটে আরেক দফা ভূমিকম্প
সিলেটে শনিবার সকালে এক ঘণ্টার মধ্যে তিনবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর বেলা ২টায় আরেক দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এতে সিলেট জুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই নিয়ে আজ চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পগুলোর উৎপত্তিস্থল সিলেট। এখানে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১।
এর আগে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে, ১০টা ৫১ মিনিটে ও বেলা সাড়ে ১১টায় তিন দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রধান আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সিলেটে চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। অনেকেই পাঁচবার দাবি করলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট। এখানে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১।
আরও পড়ুন: তিন দফা ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো সিলেট
এদিকে একইদিনে চার দফা ভূমিকম্পে অফিস-আদালত ও বাসা বাড়িতে থাকা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভূমিকম্পের সময় অনেককেই অফিস ও বাসা বাড়ি থেকে বের হয়ে খোলা স্থানে ও সড়কে চলে আসতে দেখা যায়।
এছাড়া অনেকেই এমন ছোট ছোট ভূমিকম্পের পর বড় ধরণের ভূমিকম্পের আশঙ্কা করছেন।
তবে কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতি খবর পাওয়া যায়নি।