শিক্ষার্থী
ববি শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগে ৪ আনসার সদস্য বরখাস্ত
মাকে ডাক্তার দেখাতে এসে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে বিতণ্ডার জেরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চার আনসার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (১৯ জুন) বেলা ১১টায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত বেলা ১১টায় তার মা ফরিদা বেগমকে (৫৫) নিয়ে বাকেরগঞ্জের নিয়ামতি থেকে শেবাচিম হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসেন।
আরও পড়ুন: যৌন হয়রানি: ঢাবির ক্রিমিনোলজির শিক্ষার্থী সাময়িক বরখাস্ত
এ সময় তার মা লাইনে না দাঁড়িয়ে পাশে ফ্যানের নিচে দাঁড়ান। পরে দায়িত্বরত আনসার সদস্য হেমায়েত উদ্দিন টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য বলেন তাকে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ফরিদা বেগম তার জুতা খুলে আনসার সদস্যকে মারধর করেন। এ সময় ববি শিক্ষার্থী শান্ত ছুটে এলে আনসার সদস্য হেমায়েত উদ্দিন তার কলার ধরেন। পরে বাকি আনসার সদস্য শাকিল, হানিফ ও রিয়াজ এসে ওই ছাত্রকে মারধর করেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্ররা ছুটে এসে হাসপাতালে বিক্ষোভ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় তিনি ওই ৪ আনসার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেবাচিম হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মোশারেফ হোসেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পর ওই চার আনসার সদস্যকে সরিয়ে নতুন সদস্যদের নিয়োগের জন্য বিভাগীয় দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভাগীয় পরিচালক আশরাফুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তিনি হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জেলা কমান্ডার বাসুদেব ঘোষকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, সিসি ক্যমেরার ফুটেজে দেখা গেছে আনসার সদস্যরা ওই ছাত্রের কলার ধরে টেনে নিয়ে মারধর করেছেন। যা তাদের দ্বারা কাম্য ছিলনা। বিষয়টি দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, ওই ৪ আনসার সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি তিনমাস পর পর হাসপাতালে আনসার সদস্য পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীরকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত আইনানুগ ছিল না: হাইকোর্ট
চট্টগ্রামে পথশিশুকে মারধরের অভিযোগে কনস্টেবল বরখাস্ত
রাজশাহীতে বাসার ছাদে বজ্রপাতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
রাজশাহীতে বাসার ছাদে বৃষ্টিতে গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১৮ জুন) বিকাল ৫ টার দিকে মহানগরীর হেতমখাঁ এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিক্ষার্থী সাহাবুল রাজশাহী কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং মোহনপুর ভাতুড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
আরও পড়ুন: হিলিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সাহাবুল বিকালে গোসল করতে হেতেমখাঁ এলাকার রাতের মায়া হোষ্টেলের ছাদে গেলে সেখানে আকস্মিক বজ্রপাত গুরুতর আহত হয়।
পরে সহপাঠি ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, নিহত শিক্ষার্থীর লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে আহত জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
পদ্মায় গোসলে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
বরিশালে বিএম কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের একটি হলের কক্ষ থেকে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৭ জুন) বিকালে কলেজের মুসলিম হলের একটি পরিত্যক্ত কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত মাইনুল ইসলাম বরিশালের হিজলা উপজেলার বাউশিয়া এলাকার আব্দুল রহিম হাওলাদারের ছেলে। তিনি ওই হলের আবাসিকছাত্র এবং বিএম কলেজে সমাজকল্যাণ বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে একই শাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমাদের কলেজের মুসলিম হলের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে এ ছাত্রের লাশ পাওয়া গেছে। পুলিশ এই বিষয়টি দেখছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) বিপ্লব কুমার রায়।
পুলিশ পরিদর্শক বলেন, মুসলিম হোস্টেলের উপরের একটি কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেছি। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলতে পারবো। কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন, তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: মাগুরায় নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, সাবেক স্বামী গ্রেপ্তার
ফরিদপুরে যুবকের অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহত
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পরীক্ষা দিতে এসে সড়ক দুর্ঘটনায় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে অপর ভাই।
বুধবার (১৪ জুন) সকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের পাকুন্দিয়া উপজেলাধীন কালিয়াচাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত
নিহত অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হুসাইন (১৩) ও গুরুতর আহত মোহাম্মদ হাসান (১৩) পাকুন্দিয়া উপজেলার আদর্শ পাড়া গ্রামের সোহেল মিয়ার ছেলে।
এরা দু’জনই কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং যমজ ভাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্কুলের সামনে পৌঁছে রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতিতে আসা একটি মাইক্রোবাস তাদের সাইকেলকে ধাক্কা দেয়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুই ভাইকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হুসাইনকে মৃত ঘোষণা করেন। আর চিকিৎসকের পরামর্শে হাসানকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ হাসান সুমন জানান, ঘাতক মাইক্রোবাসটিকে আটক করা হলেও চালক পলাতক রয়েছে। তবে চালকের পরিচয় পাওয়া গেছে। চালককে আটক এবং থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৫: ট্রাকচালক গ্রেপ্তার
মাথা উঁচু করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যান: প্রধানমন্ত্রী
কারও কাছে মাথা নত না করে, বিশ্বমঞ্চে আত্মমর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে দেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে নিজেকে প্রস্তূত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। ইনশাআল্লাহ, এই বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্ব অঙ্গনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা কারো কাছে মাথা নত করব না। এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত
রবিবার (১১ জুন) প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি, টিউশন ফি এবং পুরস্কার বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) এবং এর সমমানের স্তর পর্যন্ত অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি এবং টিউশন ফি বিতরণের সূচনা করেন।
বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা-২০২৩ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বৃত্তি পুরস্কার-২০২৩ এর মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান করেন।
শিক্ষার্থীদের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী তাদের এটা সবসময় মনে রাখতে বলেন যে, তারা মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জনকারী বিজয়ী জাতির অন্তর্ভুক্ত এবং এখানকার মানুষ কারো কাছে মাথা নত করে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। তাই আমরাও পথ দেখাই। আমাদের মেধাবী সন্তানেরা এভাবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। দেশে স্মার্ট মানুষ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সোসাইটি থাকবে।
আজকের যুগ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার যুগ উল্লেখ করে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে বলেন।
কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি এখন চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণাকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, আমরা সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের গবেষণা একটি ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে আছে আর তা হলো স্বাস্থ্য খাত। আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমি মনে করি এটিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। সরকার সমুদ্রবিজ্ঞান গবেষণা এবং নীল অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিয়েছে কারণ এটি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছে এবং তাদের উদ্ভাবনী শক্তি উন্মোচিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোরবানির ঈদে কিশোরগঞ্জের দম্পতির উপহার হিসেবে গরু গ্রহণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সত্যিই আশাবাদী এই দেশকে আর কেউ পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
তিনি বলেন, তার সরকার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেশনজট ও অস্ত্র সহিংসতা থেকে মুক্ত রাখতে সফল হয়েছে।
তিনি বলেন, ৬-৮ বছর ধরে সেশনজট ছিল এবং অতীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অস্ত্রের মহড়া হতো।
তিনি বলেন, আমরা অন্তত দাবি করতে পারি যে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা ক্যাম্পাসকে সেই পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে, যা বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার সুবাদে দেশ উন্নয়নের যাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি।
সারাবিশ্বে এখন জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশের মানুষও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়ছে, তবুও এখানে খাদ্যশস্য পাওয়া যায়। খাদ্যশস্যের অভাব নেই।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্মৃতি কর্মকার তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (পাস) ও সমমানের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫৩ লাখ ৬ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিউশন ফি হিসেবে মোট ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে।
এছাড়া ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ১৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে, যারা বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা-২০২৩-এর মাধ্যমে পুরস্কৃত হয়েছেন, এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ২২ জন শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বৃত্তি পুরস্কার-২০২২-এ ভূষিত করা হয়েছে।
১৫ জন শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও ২ লাখ টাকা এবং বৃত্তি পুরস্কার-২০২২-এর জন্য নির্বাচিত ২২ জন শিক্ষার্থী প্রত্যেকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও ৩ লাখ টাকা পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং শিক্ষা-উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
আরও পড়ুন: স্থানীয় খেলাধুলার আরও ব্যাপক প্রসার করুন: প্রধানমন্ত্রী
অপর্যাপ্ত শিক্ষা বাজেট প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে, বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি শিক্ষার্থীদের
২০২৩-২৪ অর্থবছর যতই ঘনিয়ে আসছে, শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। এবারের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাবি), কারিগরি প্রতিষ্ঠান এবং মাদরাসার ছাত্রদের সঙ্গে কথা হয়।
বাজেট প্রসঙ্গে কথা হয় ঢাবি’র একাউন্টিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ইমন ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, “গত বছরের পরিসংখ্যানের তুলনায় শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়লেও প্রস্তাবিত বাজেটে তা জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের তুলনায় আর্থিক মূল্য বৃদ্ধি পেলেও প্রকৃত অর্থে তা বাড়েনি। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির আশংকাজনক ঊর্ধগতির সময়ে শিক্ষাখাতে মোট জিডিপির ওপর বাজেটের পরিমাণ আরও বাড়ানো উচিত।”
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদী ভিসা প্রদানের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা
ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক রিয়াদ বলেন, “বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষাখাতকে আরও ভালো করে সাজাতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “তাই অন্যান্য খাতের পাশাপাশি এই খাতকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। বাড়াতে হবে বাজেট বরাদ্দ।”
ঢাবি’র তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী সিদ্দিক ফারুক জানান, “একটি দেশের মোট বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা উচিত। বিপরীতে আমাদের দেশের শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র ১০ শতাংশ। এটিকে আরও বাড়ানো উচিত। আমাদের দেশের যে অর্থনীতি তাতে মোট বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা অসম্ভব। তবে ধীরে ধীরে এটি বাড়বে বলে আশা করা যায়।”
তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য বরাদ্দ অনেক কম। শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরও বেশি গবেষণা হবে। সামনের দিনের অর্থনীতি হবে 'নলেজ ইকোনমি' অর্থাৎ ‘জ্ঞানভিত্তিক’। আর জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে দেশকে এগিয়ে রাখতে হলে আমাদের শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অপর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ শুধু সাধারণ শিক্ষাকেই প্রভাবিত করে না, কারিগরি শিক্ষাকেও বাধাগ্রস্ত করে।”
চট্টগ্রাম পলিট্যাকনিকাল ইন্সটিটিউট থেকে সদ্য ডিপ্লোমা শেষ করা কাজী শাহাদাত হোসেন সাকিব বলেন, “বর্তমান সময়ে যুগের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে হলে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে এই খাতটি।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা তথা বাস্তবমুখি করার জন্য এই কারিগরি সেক্টরে বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো ও বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা অবশ্যক।”
তিনি আরও বলেন, “বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই। অথচ আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক যন্ত্রপাতি অনেক পুরানো আমলের। এছাড়া অর্থ সংকটের কারণে সেগুলা নতুন করে কেনা সম্ভব হয় না অধিকাংশ সময়েই। আর এজন্য আরও বেশি বাজেটের প্রয়োজন এই খাতে।”
আরও পড়ুন: গণরুম বিলুপ্তির দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীর অনশন
ঈদুল আজহায় যশোর মাতাবে ‘ভাইজান’
মুন্সীগঞ্জে পদ্মায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর ১ জনের লাশ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়ায় ঘুরতে গিয়ে গোসলে নেমে পদ্মার স্রোতে ভেসে যান ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থী। শুক্রবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ দুই ছাত্রের একজনের লাশ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দল।
হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার সাজন গ্রামের বাসিন্দা সব্যসাচী সৌম্যের (২৯) লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মায় গোসল করতে নেমে যুবকের মৃত্যু
তবে রাজধানীর ভাটারা থানার বাসিন্দা নিখোঁজ নূরুল হক নাফিউলকে (২৪) উদ্ধারে অভিযান চলছে।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. আব্দুল আউয়াল জানান, ইউনিভার্সিটির চারছাত্র ও একজন ড্রাইভারসহ মোট ৫ জন স্পীডবোট যোগে পদ্মা সেতুর ১৬ নং পিয়ারের পাশের চরে ঘুরতে আসে। তারা গোসল করতে নামলে দুই জন নিখোঁজ হয়। বর্তমানে কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে রাজধানীর বাড্ডা থেকে পদ্মাপাড়ে ঘুরতে যান ইউনিভার্সিটির চার শিক্ষার্থী। স্পীড বোটে পদ্মা সেতুর ১৬ নং পিয়ারের পাশের চরে ঘুরতে যান তারা। এ সময় নদীতে গোসল করতে নামলে স্রোতে ডুবে যান দুই শিক্ষার্থী।
লৌহজং ফায়ার সার্ভিস ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে। এছাড়া প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল পথে রয়েছে। তারাও এসে উদ্ধার কাজে অংশ নিবেন।
আরও পড়ুন: পদ্মায় গোসলে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
মণিরামপুরে বিদ্যালয়ের পলেস্তারা খসে ৩ শিক্ষার্থী আহত
যশোরের মণিরামপুরে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলাকালে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে উপজেলার টেংরামারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম রিপন বলেন, তখন ক্লাস নিচ্ছিলাম। কিছু বুঝে উঠার আগেই ছাদের প্রায় পাঁচ বর্গফুট জায়গার পলেস্তারা শব্দে খসে পড়ে। এসময় সবাই আতংকে কান্নাকাটি শুরু করে।
আরও পড়ুন: বাসের সিট নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত
তিনি আরও বলেন, পরে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা ছুটে এসে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন। এরমধ্যে পূর্ণা দাস, সোনালী আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস জখম হলে তাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
এছাড়া দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ায় তাৎক্ষণিকভাবে স্কুল ছুটি দেয়া হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শম্পা রানী ঘোষ ও তাপসী রানী জানান, সকাল ১১ টায় ভবনের দোতলার শ্রেণিকক্ষে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জীবন ও জীবিকা বিষয়ে পাঠদান করছিলেন সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম রিপন। এক পর্যায়ে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। এতে তিন ছাত্রী পূর্ণা দাস, সোনালী আক্তার ও জান্নাতুল ফেরদৌস আহত হয়।
প্রধান শিক্ষক প্রভাস চন্দ্র দাস জানান, পুরাতন ভবনের দোতলার ছাদের এক অংশে ফাটল দেখা দেয়। তার ওপর পানি জমে থাকায় পলেস্তারা খসে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অবশ্য তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে ওই কক্ষের পশ্চিমপাশে শিক্ষার্থীদের বসতে নিষেধ করা হয়েছিল।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, তিন ছাত্রী আহত হবার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাদের চিকিৎসা করানো হয়েছে।
এখন তারা সুস্থ আছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় ছুরিকাঘাতে ৩ শিক্ষার্থী আহত
রাজধানীতে বিলবোর্ড ভেঙে জবি শিক্ষার্থী আহত
বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে: দোহায় কাতারের শিক্ষার্থীদের জানালেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার কাতারের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নেতা হওয়ার জন্য তার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত সাতটি পরামর্শ তুলে ধরেছেন।
দোহায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তৃতাকালে তিনি এসব পরামর্শ দেন।
তিনি 'বাংলাদেশ: আ ডেভেলপমেন্ট মডেল: লার্নিং ফ্রম শেখ হাসিনা' প্রতিপাদ্যের ওপর বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দিতে দোহার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রাম থেকে ভবিষ্যত নেতাদের জন্য কয়েকটি পরামর্শ দিতে চাই: প্রথম: উপযুক্ত মূল্য উপস্থাপন করুন, দ্বিতীয়: আপনার দৃষ্টিভঙ্গিতে মনোনিবেশ করুন, তৃতীয়: আপনার দৃষ্টিভঙ্গি উপলব্ধি করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করুন, চতুর্থ: উদাহরণ দিয়ে নেতৃত্ব দিন এবং পরিবর্তনকারী নির্মাতা হোন, পঞ্চম: আপনার মানুষ ও দলকে বিশ্বাস করুন, ষষ্ঠ: আপনার মাতৃ-আত্মাকে আহ্বান করুন এবং সপ্তম: নতুন ও ভবিষ্যতকে আলিঙ্গন করুন।’
বাংলাদেশের ইতিহাস ও সাম্প্রতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ ভূখণ্ড এক সময় ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধির দেশ ছিল। ১৯৪৭ সালে অবিভক্ত ভারত বিভক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ঔপনিবেশিক শাসকরা এটিকে নির্মমভাবে শোষণ ও লুণ্ঠন করেছিল এবং তারপরে পাকিস্তানিরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভিক্ষ, চরম দারিদ্র্য, অনাহার, অপুষ্টি, মৃত্যু ইত্যাদির ব্যাপকতা এই ভূখণ্ডে সাধারণ জনগণের প্রতি শাসকদের প্রতিশ্রুতিহীনতার কারণে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রাম ও ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তার সরকারের প্রথম শাসনামলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক রূপান্তরের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।
তিনি বলেন যে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তার দল পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর এবং এরপর পরপর আরও দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে তারা বাংলাদেশকে তার বাবার স্বপ্নের সুখী ও সমৃদ্ধ 'সোনার বাংলাদেশ' এর জন্য প্রস্তুত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয় এবং আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখি। এরই মধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় সকল আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং নারীর ক্ষমতায়নের মতো কয়েকটি ক্ষেত্রের উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, যার জিডিপি হচ্ছে ৪৬০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৫-২০০৬ সালে জিডিপি’র আকার ছিল মাত্র ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৬ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে। ২০০৫-২০০৬ সালে মাথাপিছু দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমি ৫ শতাংশ, যেখানে বর্তমান দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।’
আরও পড়ুন: কাতার ইকোনমিক ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে দেশের জাতীয় বাজেটের আকার ছিল ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাজেটের আকার দাঁড়ায় ছয় লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকায়। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ১০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
তিনি আরও বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মহামারি আঘাত হানার আগে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খাদ্য নিরাপত্তা, বিনামূল্যে ও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, ডিজিটাল সেবা, বিদ্যুতের সহজলভ্যতা, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জলবায়ু অভিযোজনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।’
এ ছাড়া গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণে বাস্তবায়নাধীন আশ্রয়ণ প্রকল্প, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ১৮ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও পল্লী স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়তায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ এবং শিক্ষা খাতে উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশে থাকবে স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সমাজ এবং স্মার্ট জনশক্তি। মানুষকে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে দক্ষ করে তোলা হবে, যাতে তারা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অবদান রাখতে পারে।’
নারী শিক্ষা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার সরকার নারী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এক দশকের প্রচেষ্টার পরে আমরা এখন লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাসে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ অবস্থানে আছি… প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় আমাদের মেয়েদের পক্ষে লিঙ্গ সমতা রয়েছে।’
নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে আমরা বিশ্বের শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে রয়েছি। বাংলাদেশ সম্ভবত একমাত্র দেশ যেখানে প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা এবং সংসদ উপনেতা সবাই নারী। স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষিত আসন রয়েছে। আমি আমাদের যোগ্য নারীদের সর্বত্র শীর্ষ নেতৃত্বের পদে বসিয়ে সমস্ত কাচের আবরণ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টিকে তুলে ধরেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ। একে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপুষ্টি, নিরক্ষরতা ইত্যাদি দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। দেশে আমাদের কষ্টার্জিত উন্নয়ন অলৌকিক কিছু নয়। এটা আমাদের নারী ও পুরুষের সম্মিলিত কাজ। আমি শুধু তাদেরকে কাঙ্ক্ষিত পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছি। তবে আজকের অবস্থানে পৌঁছানো সহজ যাত্রা ছিল না। আমাকে সারা জীবন প্রচুর অগ্নিপরীক্ষা ও নিপীড়নের সম্মুখীন হতে হয়েছে।’
অগ্নিপরীক্ষা ও নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শুধু আমার দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন এটা চালিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। আমার স্বপ্ন আমাদের বদ্বীপকে আবারও সমৃদ্ধির দেশে পরিণত করা।’
কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানির আমন্ত্রণে কাতার ইকোনমিক ফোরাম-২০২৩ এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে সোমবার দোহায় পৌঁছান শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দিতে দোহা পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মমুখী শিক্ষা বাড়াতে হবে: রাষ্ট্রপতি
শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের জন্য কর্মমুখী শিক্ষার বিষয়ে মনোযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্মমুখী শিক্ষা বাড়াতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।
সোমবার জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ বঙ্গভবনে তার সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উদ্ভাবনী কার্যক্রম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, উদ্ভাবন যেন দেশের জন্য টেকসই হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: জনগণের অর্থের যথাযথ ব্যয় নিশ্চিত করুন: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
এসময় ভিসি সৌমিত্র শেখর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।