একনেক
অক্টোবরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি খানিকটা কমে ৮.৯১%
বাংলাদেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ ছিল।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, টাকার অবমূল্যায়নকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা উচিত। কারণ এটি বাজারে মার্কিন ডলারের সরবরাহ বাড়াতে সাহায্য করে।
এক প্রশ্নের জবাবে মান্নান বলেন, আইএমএফ যাই বলুক না কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি: আগস্টে ৯.৫% শতাংশ, ১২ বছরে সর্বোচ্চ
চলতি বছরের আগস্টে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশে। অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল সূচকটি গত ১২ বছরের মধ্যে আগস্টে সর্বোচ্চ ছিল।
২০১০-১১ অর্থবছরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ। এরপর এই সূচক ৯ শতাংশের ওপরে ওঠেনি।
আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে কয়েক মাস ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রবণতা ছিল।
৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম ৪৬ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বেড়েছে।
জ্বালানির দাম বৃদ্ধির এই রেকর্ড মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: সহিংসতায় দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী
জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কমে ৭.৪৮ শতাংশ: বিবিএস
এখন মেগাপ্রজেক্ট নয় জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ বা জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসতে বলেছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেগাপ্রজেক্ট করা যাবে না, তবে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ প্রকল্প বা কল্যাণমুখী প্রকল্পে কোনও আপস করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: এখনও ৫ মাসের খাদ্য আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
একনেক সভাপতি শেখ হাসিনা যে কোনও বড় প্রকল্প গ্রহনের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি দেশের সর্বত্র অনাবাদি জমি চিহ্নিত করে চাষের জন্য প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেন।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’ উদ্বৃতি দিয়ে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় অনাবাদি জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী চলমান বিশ্ব মন্দার মধ্যে সবাইকে মিতব্যয়ী হতে এবং অপচয় বন্ধ করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন:কৃষি উৎপাদন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সমবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: যুবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
একনেক সভায় মোট তিন হাজার ৯৮১ দশমিক ৯০ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়ের সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে (শুধুমাত্র তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় এখানে গণনা করা হয়েছে)।
ব্যয়ের মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে তিন হাজার ৩৯২ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা, সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৬৭ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৩৩২ দশমিক ২১ কোটি টাকার যোগান আসবে।
আরও পড়ুন: ২৫ জেলায় ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ঢাকায় ৮৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি খাল সংস্কারসহ ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে কালুনগর, জিরানী, মান্দা ও শ্যামনগর-এর প্রায় ২০ কিলোমিটার চারটি খাল পুনরুদ্ধার করা হবে জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়নে।
এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘কমিটি পাঁচটি নতুন প্রকল্প এবং একটি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন করেছে। সংশোধিত প্রকল্পসহ ছয়টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় প্রায় সাত হাজার ১৮ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে চার হাজার ৩৬২ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে ২৬৯ দশমিক ৬২ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ হিসাবে দুই হাজার ৩৮৬ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা বহিরাগত উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
একনেক ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন করেছে, যার ব্যয় ১০ হাজার ৪৬০ দশমিক ৯১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ৫০০ দশমিক ২১ কোটি টাকা হয়েছে এবং প্রকল্পের সময়সীমা ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পের তথ্যপত্র অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৮৯৮ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি খালের ১৯ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পুনরুদ্ধার বা সংস্কারের জন্য ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে ‘খাল পুনরুদ্ধার ও সংস্কার এবং নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি’- শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
এর মধ্যে ৬২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং বাকি ২৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা দেবে ডিএসসিসি।
প্রকল্পের আওতায় মান্ডা খালের আট দশমিক ৯ কিলোমিটার (দুই লাখ ১৭ হাজার ৫০০ বর্গমিটার), শ্যামনগর খালের চার দশমিক ৭৮ কিলোমিটার (৫৭ হাজার ৩৬০ বর্গমিটার), জিরানী খালের তিন দশমিক ৯ কিলোমিটার (৭৮ হাজার বর্গমিটার) এবং কালুনগর খালের দুই দশমিক চার কিলোমিটার (২৮ দশমিক ৮০ বর্গমিটার) খাল পুনরুদ্ধার বা সংস্কার করা হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- খাল পরিষ্কার করা, পলি অপসারণ, ঢাল সুরক্ষা ও নিষ্কাশন কাঠামো নির্মাণ, ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকা সবুজায়ন।
এছাড়া প্রকল্পের অধীনে নাগরিক সুবিধার জন্য ৩৮ দশমিক ছয় কিলোমিটার চোখ ধাঁধানো সুরক্ষা দেয়াল, ৩৬টি পথচারী সেতু, গাড়ি চলাচলের জন্য ১৯টি সেতু, ১০টি পাবলিক টয়লেট, ৩২ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার হাঁটার পথ, চারটি প্লাজা ও সাইকেল লেন স্থাপন করা হবে এবং নান্দনিক ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ৭৭১টি বাতি স্থাপন করা হবে।
অন্য চারটি প্রকল্প হলো- ৫৯ দশমিক ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সীমান্ত হোস্টেল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ’ (চট্টগ্রামের সল্টগোলায়); ১২২ দশমিক তিন কোটি টাকায় ‘ইন্টারডাকশন অব ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)’ (মুন্সিগঞ্জের কেরানীগঞ্জ ও শ্রীনগর উপজেলায়) দ্বারা বাংলাদেশের জাতীয় মহাসড়ক করিডোরগুলিতে নির্ভরযোগ্যতা ও নিরাপত্তার উন্নতি করা; ৩৪৭ দশমিক চার কোটি টাকায় ‘ঘোনাপাড়া থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার পর্যন্ত রাস্তাটি (শেখ লুৎফর রহমান সেতুর অ্যাপ্রোচসহ) যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীতকরণ’; এবং ৫৫২ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে নদীর তীর রক্ষা।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
নারীদের আইটি দক্ষতা বাড়াতে ২৫০ কোটি টাকার একনেক প্রকল্প অনুমোদন
কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য সাত হাজার ১৮৯ কোটি টাকার প্রকল্পসহ ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত মহাসড়কটি ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে চার লেনে উন্নীত করা হবে। যার উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন থাকবে। প্রকল্পটির লক্ষ্য হচ্ছে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্যে দ্রুত, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা।
একনেকের চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সভায় যোগ দিয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেন।
এনইসি সম্মেলন কক্ষে সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘অনুমোদিত ছয়টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় প্রায় আট হাজার ৭৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা (তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের শুধুমাত্র অতিরিক্ত খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে)।’
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
তিনি বলেন, মোট ব্যয়ের মধ্যে পাঁচ হাজার ৯২৯ কোটি তিন লাখ টাকা সরকারের তহবিল থেকে নেয়া হবে এবং বাকি দুই হাজার ৮১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বৈদেশিক ঋণ হিসেবে আসবে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্যমতে, সাত হাজার ১৮৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কুমিল্লা (ময়নামতি)-ব্রাহ্মণবাড়িয়া (ধরখার) জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সরকার চার হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে এবং বাকি দুই হাজার ৮১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) থেকে আসবে।
আরও পড়ুন: নারীদের আইটি দক্ষতা বাড়াতে ২৫০ কোটি টাকার একনেক প্রকল্প অনুমোদন
প্রধান প্রকল্পের কার্যক্রম হচ্ছে-১০৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ, ১৪টি সেতু নির্মাণ (মোট দৈর্ঘ্য এক হাজার ২১৮ দশমিক ৪৪ মিটার), একটি এক হাজার ৩০ মিটার ফ্লাইওভার, দুটি আন্ডারপাস, ৫০টি কালভার্ট, ১২টি ফুট ওভার ব্রিজ, ৫০ কিলোমিটার নমনীয় ও চার দশমিক পাঁচ কিলোমিটার অনমনীয় ফুটপাত।
আরও পড়ুন: একনেকে চতুর্থ এইচপিএনএসপি প্রকল্পের ব্যয় বাড়ল ৩০ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা
সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর উপায় বের করছে: প্রধানমন্ত্রী
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাওয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে আনার উপায় নিয়ে ভাবছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এনইসিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) নিয়মিত বৈঠকে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সহনীয় পর্যায়ে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নামিয়ে আনা এখন গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি সরকারের ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এক কোটি মানুষকে বিশেষ পরিবার কার্ড দেবো, যার মাধ্যমে তারা ন্যায্য মূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে সক্ষম হবে। আমরা এই পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্ন-মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীকে ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে সরকারকে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
আরও পড়ুন: ডলার সাশ্রয়ে টেলিটকের ২৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প স্থগিত
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, নিম্ন-আয়ের মানুষ, মধ্যম-আয়ের মানুষ এবং সীমাবদ্ধ আয়কারী মানুষ মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা তা বুঝতে পারি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি জনগণের জন্য তার রাজনীতি করেন এবং যখনই জনগণের কষ্ট হয়, তিনিও কষ্ট অনুভব করেন।
প্রধানমন্ত্রী আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ক্রয় করার ক্ষমতা ছিল, কিন্তু দাম আমাদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে গেছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখনই এগিয়ে যেতে শুরু করেছে এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করেছে; তখনই বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে এই ধরনের অনিশ্চয়তা আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: আ.লীগের প্রতি জনগণের আস্থা সরকারের সাফল্যের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী
তরুণদের উদ্যোক্তা হতে দক্ষতা অর্জনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ডলার সাশ্রয়ে টেলিটকের ২৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প স্থগিত
বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে সরকারের নেয়া রিজার্ভের ডলার সাশ্রয়ে পদক্ষেপের অংশ হিসেবে রাজধানীতে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি সেবা চালুর জন্য টেলিটকের ২৩৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প স্থগিত করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
তবে একনেক দুই হাজার সাত কোটি ৫৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়সহ আরও সাতটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে (এখানে তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা করা হয়েছে)।
মঙ্গলবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এতে যোগ দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ‘আজকের বৈঠকে সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করা হলেও টেলিটকের নতুন একটি প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, টেলিটকের প্রকল্পটি স্থগিত করা হয়েছে, কারণ এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ হবে, যা এখন খুবই প্রয়োজনীয়।’
মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি একেবারে বাতিল করা হয়নি, পরবর্তীতে এটা বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটক নেটওয়ার্কে ফাইভ-জি প্রযুক্তির বাণিজ্যিক প্রবর্তন’- শিরোনামের নতুন এই প্রকল্পটি ২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছিল।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করা, ফাইভ-জি প্রযুক্তির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানো এবং অন্যান্য মোবাইল ফোন অপারেটরদের ফাইভ-জি পরিষেবা চালু করতে উৎসাহিত করা।
সভায় অনুমোদিত চারটি নতুন প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি হল এক হাজার ২২৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ প্রকল্পের বিভাগীয় সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও তাদের পুনর্বাসন।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ১০ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
আবারও জীবনের সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা অনুশীলন করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক মুল্যস্ফীতি পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ ব্যবহারসহ জীবনের সব ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাই যদি মিতব্যয়ী হতে পারে, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে দেশ লাভবান হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) প্রথম বৈঠকে সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
এসময় তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সরকার প্রধান বলেছেন মিতব্যয়ী হতে হবে। আসুন সবাই মিতব্যয়ী হই। তিনি গোটা আমলাতন্ত্রসহ সরকার এবং সরকারের বাইরে যারা সাধারণ নাগরিক আছেন সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।’
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘যে পণ্যগুলো আমরা নিজেরা উৎপাদন করি না, সেগুলোর অভিঘাত মোকাবিলায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মূলত এ কারণে দেশবাসীকে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।’
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় সবাইকে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি প্রতিনিয়তই নাগরিক পরিষেবা খাতগুলোর অপব্যবহার বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন। যেমন- গরমের সময় অফিসে কোট-স্যুট না পরতে। এছাড়া সরকারি অফিসগুলোর এসি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় চালানোর জন্য বলেছিলেন। অপচয় না করতে প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই বলে আসছেন।
আরও পড়ুন: জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য যুদ্ধ দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মোট আনুমানিক দুই হাজার ২১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ প্রকল্প বাস্তবায়নে অনুমোদন দেয়া হয়।
মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আজকের বৈঠকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে এবং প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় দুই হাজার ২১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।’
তিনি বলেন, ‘ব্যয়ের মধ্যে সরকার অর্থায়ন করবে এক হাজার ৮৭৫ দশমিক ৫৭ কোটি টাকা এবং বাকি ৩৪১ দশমিক ১৮ কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে আসবে।’
তিনি জানান, ১০টি প্রকল্পের মধ্যে চারটি সংশোধিত প্রকল্পও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মান্নান বলেন, সিলেট অঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের নতুন নির্মাণ না করে ব্রিজ কালভার্ট করে পানি প্রবাহ ঠিক রেখে প্রকল্প হাতে নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পানিপ্রবাহকে বাধা দেয়া যাবে না বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
হাওর ও বন্যাপ্রবণ এলাকায় সড়কের পরিবর্তে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: একনেকে ১০ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
সিলেট অঞ্চলের বন্যা দুর্গতদের পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়া হবে বলে জানান মান্নান।
তিনি বলেন, আন্ডারপাস ও ওভারপাস নির্মাণের প্রয়োজনীয় জায়গা খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রকল্পের তথ্যপত্র অনুযায়ী, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রশস্তকরণ (এক দশমিক ৬০তম কিমি-৩২তম কিমি) প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এক হাজার ৯২ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হবে।
সড়ক প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল একটি নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং মেরিন ড্রাইভ সড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটার প্রশস্তকরণ এবং রেজু খালের ওপর ৩০৫ মিটার দুই লেনের রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধন।
প্রধান প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১১৩ দশমিক ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ, সাত দশমিক ২৪ লাখ ঘনমিটার আর্থ ফাইলিং, ৬০৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং শূন্য দশমিক ৩২ কিলোমিটার ফুটপাথ বাঁক সোজা করা।
পাঁচটি নতুন প্রকল্প হল- ১৭১ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ; ১১৯ দশমিক ৫০ কোটি টাকায় মশলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ; ৭৫ কোটি টাকায় কুষ্টিয়া (ত্রিমোহনী)-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রকল্পের ৮১তম কিলোমিটারে অবস্থিত রেলবাজারে একটি রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ; ৩৩২ দশমিক ৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে চরখালী-তুষখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা মহাসড়ক প্রকল্পের পিরোজপুর অংশে জরাজীর্ণ, সরু বেইলি সেতুর জায়গায় পিসি গার্ডার ব্রিজ ও আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ; ৯৮ দশমিক ৫০ কোটি টাকায় ঢাকা সেনানিবাস প্রকল্পে এমইএস (মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস) এর ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধার সম্প্রসারণ।
জামালপুর টাউনের গেটপাড় এলাকায় একটি রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ১৩২ কোটি টাকা (মূল্য বাড়িয়ে ৪২৩ দশমিক ৭০ কোটি টাকা); বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সদরে প্রধান বিচারিক হাকিম আদালত ভবন নির্মাণ-প্রথম পর্যায় (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের আগের প্রাক্কলিত ব্যয় দুই হাজার ৪৬৪ দশমিক ৬০ কোটি টাকা থেকে ২০৪ কোটি টাকা কম; কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনে জরুরি সহায়তা (প্রথম সংশোধিত) অতিরিক্ত ব্যয়ে ৩০৭ কোটি টাকা (ব্যয় বেড়ে ৮৯২ কোটি) এবং কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক (এন-১) উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) ৯২ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়সহ প্রকল্প মূল্য বাড়িয়ে ৫৯০ দশমিক ২৮ কোটি টাকা করা হয়েছে)।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৫ হাজার ৮২৬ কোটি টাকার ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন
একনেকে ১০ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে ৬ হাজার ১৭৯ কোটি টাকার প্রকল্পসহ ১০ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বৈঠকে যোগ দেন।
সভায় ছয়টি নতুন প্রকল্প এবং চারটি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১০টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় ১০ হাজার ৮৮৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা (সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয়সহ)।
তিনি জানান, মোট ব্যয়ের মধ্যে পাঁচ হাজার ১৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা অর্থায়ন করা হবে সরকারের তহবিল থেকে, ৭৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা আসবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার তহবিল থেকে এবং বাকি ৪ হাজার ৯৫৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে।
ব্যয়ের দিক থেকে তিনটি বৃহত্তম নতুন প্রকল্প হলো- বিআরইবি নেটওয়ার্কের (ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগ) আধুনিকীকরণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প যার আনুমানিক ব্যয় ছয় হাজার ১৭৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (আরএমইউ) এক হাজার ৮৬৭ কোটি আট লাখ টাকার প্রকল্প এবং মর্ডানাইজেশন অব পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন-স্মার্ট গ্রিডস ফেজ ১ প্রকল্প যার ব্যয় এক হাজার ৬৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
বাকি তিনটি নতুন প্রকল্প হলো সাতশ এক কোটি ৫৩ লাখ টাকায় কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগ প্রকল্পের আওতায় গৌরীপুর-আনন্দগঞ্জ-মধুপুর-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প, মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-জলসুখা-আজমী হাইওয়ে প্রকল্পের সঙ্গে মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-এর দিরাই-শাল্লা অংশ পুনর্নির্মাণ প্রকল্প ছয়শ ২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকায় এবং মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কর্মসূচি (৬ষ্ঠ পর্যায়) প্রকল্প যার ব্যয় ৩৬৫ কোটি টাকা।
চারটি সংশোধিত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নলকা-সিরাজগঞ্জ-সৈয়দাবাদ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ শহর অংশ (শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ থেকে ওয়াপদা জংশন পর্যন্ত) চার লেনে উন্নীতকরণ এবং অবশিষ্ট অংশকে দুই লেনে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত), বগুড়া শহর থেকে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (এন-৫১৯) (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, বরিশাল-দিনারেরপুল-লক্ষ্মীপাশা-দুমকী জেলা মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে রাঙামাটি নদীর ওপর গোমা সেতু নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি (সংশোধিত ৪৬টি) উপজেলা সদর/স্থানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয় ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: একনেকে ৫ হাজার ৮২৬ কোটি টাকার ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন
একনেকে ২ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ৭১২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন প্রকল্পসহ দুই হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
বুধবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, ‘আজ সংশোধিত প্রকল্পসহ মোট ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৬৬৫ কোটি ২১ লাখ টাকা (সংশোধিত প্রকল্পসমূহের অতিরিক্ত ব্যয়সহ)।
রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানো এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুতের সিস্টিম লস কমানোর রক্ষ্যে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে দ্য নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেডের আওতাধীন এলাকায় ‘স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন’-শিরোনামের প্রকল্পের কাজ আগামী ২০২৪ সালের জুন মাসে বাস্তবায়িত হবে।
নেসকো মোট ১২ লাখ স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এই দুই বিভাগের ১৪টি বিভাগের দুটি সিটি করপোরেশন এবং ৩৩টি জেলায় ১১ লাখ ১৩ হাজার ৬০৮টি সিঙ্গেল ফেজ এবং ৮৬ হাজার ৩৯২টি তিন ফেজে কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন: একনেকে ৫ হাজার ৮২৬ কোটি টাকার ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন