মুক্তিযুদ্ধ
সৈয়দা সাজেদার দাফন সম্পন্ন
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদীয় উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দ্বিতীয় জানাযা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে বনানীর কবরস্থানে দাফন করা হয়। কবরে শায়িত করার আগে পুলিশ বাহিনী তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে সকাল ১১টায় ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার এমএন একাডেমি স্কুলে তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ জানাযায় অংশ নেয়।
পড়ুন: আ.লীগ নেত্রী সাজেদা চৌধুরী মারা গেছেন
জানাযা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাজেদা চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা মরদেহ নিয়ে ঢাকায় পৌঁছান দুপুর ১২টার দিকে। এরপর তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ২টা ৪০ মিনিট থেকে ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়।
দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতির পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল সালাউদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কিবরিয়া আহমাদ সাজেদা চৌধুরীর কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আওয়মী লীগের পক্ষ থেকে দলের সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সেক্রেটারি লেখক ভট্টাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ডা. শরীফু্দ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে এফবিসিসিআই সভাপতির শোক
সাজেদা চৌধুরির মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাজেদা দলের দুর্যোগপূর্ণ সময়ে সাহসী নেতার ভূমিকা রেখেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিবার অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহচর ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিশাল অধ্যায়ের সূচনা করেছেন।’
ফরিদপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাজেদা চৌধুরী রবিবার রাতে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৮৭ বছর বয়সে মারা যান।
কোভিড-১৯ জটিলতায় দুই সপ্তাহ আগে সংসদ উপনেতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাজেদার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনও তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণকারী সাজেদা ২০১৯ সালে টানা তৃতীয় মেয়াদে সংসদের উপনেতা হন। তিনি ভাষা আন্দোলনের একজন সম্মুখ সারির নেতা এবং দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
২০১০ সালে স্বাধীনতা পদক পান।
আরও পড়ুন: সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি: জয়
বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা একের পর এক চক্রান্তের ফাঁদ পেতেছে।
সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী উচ্চাভিলাষী কয়েকজন সদস্যকে ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যবহার করেছে ওই চক্রান্তেরই বাস্তব রূপ দিতে। এরাই স্বাধীনতার সূতিকাগার বলে পরিচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে হামলা চালায় গভীর রাতে।
জয় বলেন, হত্যা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে। বিশ্ব ও মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সেদিন তারা কেবল বঙ্গবন্ধুকেই নয়, তার সঙ্গে বাঙালির হাজার বছরের প্রত্যাশার অর্জন স্বাধীনতার আদর্শগুলোকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। মুছে ফেলতে অপপ্রয়াস চালিয়েছিল বাঙালির বীরত্বগাথার ইতিহাসও। বঙ্গবন্ধুর নৃশংসতম হত্যাকান্ড বাঙালি জাতির জন্য করুণ বিয়োগগাথা হলেও ভয়ঙ্কর ওই হত্যাকাণ্ডে খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত না করে বরং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের আড়াল করার অপচেষ্টা হয়েছে। এমনকি খুনিরা পুরস্কৃতও হয়েছে নানাভাবে। হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক সরকার।
তিনি বলেন, ‘আজ এই শোকের দিনে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের।’
পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগ-বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি- শুরু করেছেন নড়াইলের এক রাজনীতিবিদ।
কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বি এম বরকত উল্লাহ বন্ধুদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে উপজেলায় ১৯৭১টি এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত ৭১টি করে চারা রোপণ করতে চান।
আরও পড়ুন: বিমান বাহিনীর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন
শুক্রবার খাশিয়াল ইউনিয়নের বড়দিয়া-কালিয়া সড়কের পাশে চারা রোপণের মাধ্যমে তিনি এ কর্মসূচি শুরু করেন। ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেন।
বি এম বরকত বলেন, ‘এর উদ্দেশ্য হলো মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করা। সব বাড়িতে চারা বিতরণ করা হবে এবং ইউনিয়নের সব রাস্তা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।’
মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে ৪ দিনের আসাম সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল
মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যকে উদ্যাপন ও স্মরণ করতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল চারদিনের সফরে ভারতের আসাম রাজ্যে গেছেন। রবিবার ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলাট যাত্রা শুরু করে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর এবং ভারতের আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অংশ হিসেবে ভারত সরকার এই সফরটির আয়োজন করেছে।
প্রতিনিধি দলটিতে আসাম সংলগ্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে জড়িত থাকা ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা, ছয়জন সাংবাদিক ও চারজন যুব প্রতিনিধি রয়েছেন।
সফরকালে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি আসাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রীসহ শীর্ষ সাংবিধানিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এছাড়া তারা আসাম ও পার্শ্ববর্তী মেঘালয়ের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ পরিদর্শন করবেন।
মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ভারতীয় ও বাংলাদেশি নাগরিকদের স্মরণ করতে ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারতের নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই সফর আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে ৪ দিনের মেঘালয় সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল
আ.লীগ ও বিজেপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক, সম্পর্ক উন্নয়নে জোর
সংসদে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল পেশ
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত এমএনএ এবং এমপিএদের একটি তালিকা তৈরি করবে- মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক শূন্য ঘোষণা করা আসনের উপ-নির্বাচনে এমএনএ এবং এমপিএ নির্বাচিত ব্যক্তিদের নামও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তালিকাগুলো গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।
সোমবার সংসদে পেশ করা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল ২০২২-এর প্রতিবেদনে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
কমিটির সভাপতি শাহজাহান খান প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: অর্থ পাচারকারীদের দায়মুক্তির সমালোচনা সংসদ সদস্যদের
গত ৫ জুন পেশ করা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল অনুযায়ী কাউন্সিলের প্রাথমিকভাবে রাজাকার, আলবদর ও আল শামস, মুজাহিদ বাহিনী ও শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা তৈরি করার কথা ছিল, যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং বিভিন্ন জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে পাকিস্তানি দখলদার সেনাদের সহযোগিতা করে।
বিল অনুযায়ী, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল থাকবে; যার প্রধান কার্যালয় ঢাকায় হবে। এটি সরকারের পূর্বানুমতি নিয়ে দেশের যে কোনো স্থানে শাখা স্থাপন করতে পারে।
পরিষদের চেয়ারম্যান থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তবে মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী থাকলে তিনি সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন হবেন। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে থাকবেন, উপদেষ্টা পরিষদের মহাপরিচালক মনোনীত আটজন এবং কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।
কাউন্সিল প্রতি দুই মাসে অন্তর একটি সভা করবে।
কাউন্সিলের অন্যতম প্রধান কাজ হবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ বা মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাসহ স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত রাজাকার, আলবদর ও আল শামসদের তালিকা তৈরি করা।
উপদেষ্টা পরিষদের নেতৃত্বে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। উপদেষ্টা পরিষদের অন্য সদস্যরা হবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ও সচিব কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত
উপদেষ্টা পরিষদের মেয়াদ হবে তিন বছর।
গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ খান।
বৃহস্পতিবার এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ একজন প্রগতিশীল, সৃজনশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একজন অগ্রগামীকে হারালো। তার রচিত অমর গান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতিকে দিয়েছে অসীম সাহস ও প্রেরণা।
লেখালেখির মাধ্যমে তিনি সারাজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিকশিত করতে কাজ করেছেন বলেও জানান আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তার মৃত্যু দেশের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক অপূরণীয় ক্ষতি। প্রয়াত আবদুল গাফ্ফার চিরকাল তার কালজয়ী গান ও লেখনীর মাধ্যমে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে গেঁথে থাকবেন।
রাষ্ট্রপতি গাফ্ফার চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী আর নেই
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বিশিষ্ট প্রবীণ সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও স্বাধীনতাপদক প্রাপ্ত লেখক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো' গানের রচয়িতা আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী তাঁর মেধা-কর্ম ও লেখনিতে এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখেছেন, ও বাঙালির অসাম্প্রদায়িক মননকে ধারণ করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে সমর্থন করে জাতির সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত সাপ্তাহিক জয় বাংলা পত্রিকায় বিভিন্ন লেখালেখির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। পরবর্তীতে তিনি প্রবাসে থেকেও তাঁর লেখনীর মাধ্যমে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
তিনি আরও বলেন, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর সঙ্গে আমার বহু স্মৃতি। অনেক পরামর্শ পেয়েছি। একজন বিজ্ঞ ও পুরোধা ব্যক্তিত্বকে হারালাম, যিনি তাঁর লেখা ও গবেষণায় আমাদের বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী আর নেই
বিশিষ্ট গীতিকার ও সাংবাদিক কে জি মোস্তফা মারা গেছেন
ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত ২৭ টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
ঠাকুরগাঁও শহরের আশ্রমপাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত ২৭ টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ব্যবহৃত এই ২৭ টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে ২৪ টি ত্রি নট ত্রি ও তিনটি এসএলআর রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এর সঙ্গে একবাক্স গুলিও উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময়ের আর্মির ব্রিগেডিয়ার নাজির হাওলাদার নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ছিল এটা। সম্প্রতি তার নাতি বাপ্পি হাওলাদার বাড়িসহ জমি বিক্রি করে দেয়।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে অস্ত্র উদ্ধার, আটক ১
মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে ৪ দিনের মেঘালয় সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল
ভারত সরকার ৯-১২ মে ভারতের মেঘালয়ে ২৫ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সফরের আয়োজন করছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী এবং আজাদী কা অমৃত মহোৎসবের অংশ হিসাবে এ আয়োজন করা হচ্ছে।
এই প্রতিনিধি দলে রয়েছে ১৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা যারা মেঘালয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং ১১ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি প্রতিনিধি দলে সাংবাদিক সহ অন্যান্য পেশার বাংলাদেশিরাও রয়েছেন।
এই সফরে, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল মেঘালয় সরকারের নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিনিময় করবে যার মধ্যে গভর্নর এবং মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন
বিএনপির অপপ্রচারের রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মুছে দিচ্ছে: বক্তারা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি মানুষের মন থেকে ভুলিয়ে দেয়ার জন্য, নিজেদের অপরাধকে ঢাকার জন্য এবং যেকোনও উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য বিএনপি ক্রমাগত মিথ্যাচারের রাজনীতি করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন একটি আলোচনাসভার বক্তারা।
বিএনপির মিথ্যাচার শুধু দেশের গণ্ডির মধ্যেই নয়, দেশের বাইরেও ছড়িয়েছে এবং বিদেশি দূতাবাস এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের নিয়ে মিথ্যাচার করতেও ছাড়ছে না তারা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়েই শুধু মিথ্যাচার নয়, বিএনপি নামক দলের উত্থান, জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রপতি হওয়া এমনকি পরবর্তীতে বিএনপির গঠণতন্ত্র পযন্ত সংশোধনেও অজস্র মিথ্যাচার লুকিয়ে রয়েছে বলে আলোচনা সভায় উঠে আসে।
শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘রাজনীতির সাতকাহন: বিএনপির রাজনীতি মিথ্যাচারের পর্ব-১’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব মন্তব্য করেন বক্তারা।
আওয়ামী লীগের ভেরাফায়েড ফেসবুক থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত এই ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও লেখক অজয় দাশগুপ্ত এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক শ.ম রেজাউল করিম।
সঞ্চালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারের হত্যার পর পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রেসক্রিপশনে যে দল জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং যার জন্মদাতা ছিলেন স্বৈরাচারি জিয়াউর রহমান। সেই বিএনপিই মিথ্যাচারের রাজনীতি এমন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন যে, আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, মিথ্যাচারের রাজনীতির জনক গোয়েবলসও হয়তো আজকে লজ্জা পেতেন বিএনপির এই মিথ্যাচারের সামনে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও লেখক অজয় দাশগুপ্ত ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর সাঁজোয়া যান চলে আসছে। চারিদিকে গুলি হচ্ছে। সেইসময় বঙ্গবন্ধু ধীরস্থিরভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করছেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা এবং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবার কাছে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণার খবর পাঠিয়ে দিলেন ওই রাতে যেসময় ট্যাংকের গোলাবর্ষণ হচ্ছে, তার বাড়ির দোড়গোড়ায় পাকিস্তানি বাহিনী পৌঁছে গেছে। সেই রাতে চট্টগ্রামে খবর পৌঁছে গেছে, সেই রাতে গোটা বিশ্বে খবর চলে গেছে। সেই রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা দপ্তর বলছে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। ভারত, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের পত্রিকায় পরেরদিন খবর ছাপা হয়ে গেছে। সেই স্বাধীনতার ঘোষণায় মানুষ কিন্তু প্রতিরোধে নেমে গেলো।’
অজয় দাশগুপ্ত বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যে দল পরবর্তীতে মিথ্যাচার করতে পারে, সেই মিথ্যাচার তারা করে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার জন্যে। সেই মিথ্যাচার তারা করে, বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেই স্মৃতি ভুলিয়ে দেয়ার জন্যে।
তিনি বলেন, ‘সেই পাকিস্তানি অপশক্তি, ৫১ বছর ধরেই কিন্তু তারা যে ভুল করেছে, তারা যে অপরাধ করেছে, শুধু যে বাংলাদেশের মানুষের সাথে নয় গোটা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে, সেটাকেই আড়াল করতে চায়। সেই মিথ্যাচারের রাজনীতি কিন্তু এখনো চলছে।’
সম্প্রতি জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের ব্রিফিং নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ তোলা হয়েছে জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে। এর আগে ভারতের বিজেপি প্রধান অমিত শাহের সঙ্গে টেলিফোন আলাপ নিয়ে নিয়েও মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল। শুধু বাংলাদেশ না দেশের বাইরে এসব মিথ্যাচারের প্রসঙ্গ তোলেন উপস্থাপক।
বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ, ছয়জন কংগ্রেসম্যানের সাক্ষর জাল করা, নিউ ইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধ এবং বিএনপির নেতার সঙ্গে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সম্পর্ক নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচারের কথা উল্লেখ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, বিএনপি চায় যেনতেন উপায়ে ক্ষমতায় যেতে, যেমনটা তারা গিয়েছিল। এই যেনতেনটা হলো অসাংবিধানিক উপায়ে। ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার যে প্রক্রিয়া, এই বাইরে কীভাবে যাওয়া যায় এটাই বিএনপির মূলমন্ত্র। জিয়াউর রহমান যে প্রক্রিয়ার রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করলেন সেটাও বেআইনি ছিলো। সে কারনে পঞ্চম সংশোধনী মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জিয়াউর রহমান ও তার সহযোগীদের বলেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহী, তস্কর, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী। এবং ক্ষমতা দখলের দিন থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত তাদের সকল কৃতকর্মকে বেআইনি ঘোষণা করেছেন।
আরও পড়ুন: অপরাজনীতির চর্চার কারণে বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যত প্রশ্নবিদ্ধ: কাদের