মুক্তিযুদ্ধ
কাল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস
আগামীকাল রবিবার পালিত হবে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়েছিল।
সকাল ৯টায় মেহেরপুরের মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হবে।
পরে মুজিবনগরের আম বাগানে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ বাহিনীর সদস্য, বিজিবি, আনসার, ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউটস, গার্লস গাইড ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন।
এ বছর সরকার দিনটিকে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ পাচ্ছেন ২ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মুজিবনগর দিবসের প্রাক্কালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতি গঠনে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়তে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমুন্নত রাখুন: ওবায়দুল কাদের
নিজ নিজ ধর্ম পালনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, ধর্মের নামে কোনরূপ বাড়াবাড়ি কোন ধর্মই অনুমোদন করে না। নিজ নিজ ধর্ম পালনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখি।’
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে ওবায়দুল কাদের নিয়মিত বিফ্রিংকালে এসব বলে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে জনগণের প্রত্যাশা ও স্বপ্নের সাথে সঙ্গতি রেখে সকল কার্যক্রম এগিয়ে নেয়াই আজকের দিনের অঙ্গীকার।
তাঁর বাসভবনে ব্রিফিংকালে দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পড়ুন: উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ
পাশাপাশি পহেলা বৈশাখে আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত, আরও আধুনিক ও স্মার্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে এদেশের গণমানুষের স্বপ্ন পূরণে ইতিবাচক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারও করেন ওবায়দুল কাদের।
এবার বৈশাখ এসেছে রমজান মাসে তাই দেশবাসী জনগণ রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করার পাশাপাশি আবহমান কাল থেকে বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, এমন প্রত্যাশা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দলকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথরেখায়, ইতিবাচক ধারাকে আরও বলিষ্ঠ ও বেগবান করা হবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে দেশের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুবাতাস ছড়িয়ে দিতে আওয়ামী লীগ বদ্ধ পরিকর।
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে দেশের সকল গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল শক্তিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নানা বাধা অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে, তাই আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করি।
পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
শাবিপ্রবিতে চলছে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন
উৎসবমুখর পরিবেশে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২২ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হবে বিকাল ৪টায়।
এবারের নির্বাচনে ১১টি পদের বিপরীতে দুটি প্যানেল থেকে মোট ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামীপন্থী ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ও ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
তবে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা এবারের নির্বাচনে নিজেদের কোনো প্যানেল দেননি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে শিক্ষকদের নির্বাচনে শাকসু নির্বাচনের দাবি
নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন-ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন আজিজ খান, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রশিদ, আইপিই বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ সায়েম ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজোয়ান আহমেদ।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. অনিমেষ সরকার বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। আশা করছি, সবার সহযোগিতায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারব।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে চাইনিজ কর্ণার উদ্বোধন
সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারে কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ গড়তে চান।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে কেউ ফাউল করতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি শুধু আমাদের ওপর হামলা নয়, সমগ্র বাঙালি জাতির ওপর হামলা ছিল।
তিনি বলেন, মানুষের মুক্তি এবং তাদের একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তার সরকার ২০২১ সালে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছে যখন দেশ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছে।
আরও পড়ুন: কোভিড মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
শনিবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধুর স্মরণে স্থাপিত অস্থায়ী বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন তারা।
এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস, ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর আসাদ আলম সিয়াম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মানবিক কারণে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার নতুন শপথ নিয়ে শনিবার ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দমন-পীড়নের পর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
৩০ লাখ মানুষের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এবং দুই লাখ নারীর সম্মানের বিনিময়ে ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপ্রধান স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সলিমপুর ওয়্যারলেস স্টেশনের ওপর একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন। স্টেশনটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার গ্রহণ ও প্রচারকারী স্টেশন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে ১০ টাকার স্মারক ডাকটিকিটের পাশাপাশি ১০ টাকার উদ্বোধনী খাম ও পাঁচ টাকার ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেন।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
সকালে জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ সারাদেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলোতে একযোগে গাওয়া হয়।
সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং সরকারি ও আধা-সরকারি ভবন ও অন্যান্য পাবলিক প্লেসে আলোকসজ্জা করা হয়।
বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তৃত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেছে।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারি রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছে এবং একইসঙ্গে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ সাপ্লিমেন্ট প্রকাশ করেছে।
জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও অন্যান্য দেশপ্রেমিকদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দেশব্যাপী সব মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
রাষ্ট্রপ্রতি প্রথমে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং পরে প্রধানমন্ত্রী ৫২ তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের সূচনা করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন প্রদান করেছে।
আরও পড়ুন: মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস শনিবার
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস শনিবার
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার অঙ্গীকার নিয়ে শনিবার বাংলাদেশে ৫২তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হবে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির বিরুদ্ধে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পর ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
৩০ লাখ মানুষের প্রাণ এবং দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ২১ বার তোপধ্বনি ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হবে।
সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ নাটক ‘নিহত নক্ষত্র’
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সব ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে।
জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ সম্প্রচার করবে এবং বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেসরকারি রেডিও স্টেশন এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশু একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন শিশুদের জন্য সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ওপর চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবে।
মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে সম্মাননা দেয়া হবে। বাংলাদেশ ডাকঘর বিভাগ দিবসটি উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করবে।
এদিকে দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহফিল করবে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন।
দিবসটির প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ-বিদেশে থাকা সকল বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২’ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, ‘স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের অবশ্যই জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন, সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য সহনশীলতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সুসংহত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নিশ্চিত করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে একই সঙ্গে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতির পিতা মুজিব বর্ষের ২০২০-২১ সালের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে পেরেছি।’
তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ লালন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মমর্যাদাপূর্ণ ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি মোকাবিলার শপথ নিয়ে আ. লীগের বিজয় শোভাযাত্রা
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আ’লীগ: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ১৯৭১ সালে যে আশা আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেগুলো এ আওয়ামী লীগ সরকার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
তিনি বলেন, যদি সত্য ঘটনাগুলো সামনে আসে তাহলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থাকে না। আজকে যদি মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে বইয়ে লেখা হয়, তাহলে তারা জানে তারা যে মিথ্যাচার করছে, তা সকল ক্ষেত্রে ধরা পড়ে যাবে। কিন্তু এটাই সত্য যে ইতিহাস ইতিহাসই। ইতিহাস বিকৃতি থেকে দেশটাকে মুক্ত করার জন্য সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।’
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকার নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সরকার নিজেদের সুবিধামতো নির্বাচন পদ্ধতি বানিয়ে নিয়েছে: খসরু
আমীর খসরু বলেন, সব দেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, সবাই সব সময় তা সমুন্নত রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু বিশ্বের কোনো দেশে বাংলাদেশের মতো মুক্তিযুদ্ধকে বেচাবিক্রি করার কালচার নেই। আর এটা ক্ষমতাসীনরা যখন করে তখন সেটা ইতিহাস তো হই না, এটা প্রোপাগান্ডা হতে পারে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন মাইলফলক উন্মোচন করার জন্য ২৭ মার্চ সভা করছি। বিএনপির নীতি নির্ধারকরা অনেক আলাপ আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। জাতির ক্রান্তিকালে ইতিহাস বিকৃতি থেকে মুক্ত করার জন্য এই কর্মসূচি। যেহেতু মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস, সেহেতু এই মাসে শহীদ জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে হবে। একটি দল যখন আত্মসমর্পণ করেছে, সেখানে শহীদ জিয়ার আবির্ভাব ঘটেছে, তিনি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার যে কাজটি করেছিলেন সেটি জাতিকে জানাতে হবে।
এই সময় তিনি আগামী ২৭ মার্চ রবিবার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচি সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ধানের শীষে ভোট দিতে জনগণ মুখিয়ে আছে: খসরু
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ হারুনের পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার বক্তব্য রাখেন।
স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ নাটক ‘নিহত নক্ষত্র’
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গেরিলা যোদ্ধা শহীদ আজাদের ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে নাটক ‘নিহত নক্ষত্র’। সঞ্জয় সমদ্দারের পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, সাবেরী আলম, মনিরা মিঠুসহ অনেকে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ মার্চ (শনিবার) রাত ৮টা আরটিভিতে প্রচারিত হবে নাটকটি।
নাটকের গল্পে দেখা যাবে, ত্রিপুরার মেলাঘর থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে দলটি পূর্ব পাকিস্তানে ঢোকে। দলের নাম ক্র্যাক প্লাটুন । তাদের মূল পরিকল্পনা ছিল ২ নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন উডিয়ে দেয়া। ব্রিগেডিয়ার মেজর খালেদ মোশাররফের পরিকল্পনায় এই অপারেশনটির জন্য দলটিকে এক মাস ধরে ট্রেইন করা হয়।
নাটকের গল্প এভাবেই এগিয়ে যায়। এক সময় আজাদ মারা যায়। কবে, কোথায়, কিভাবে তার মৃত্যু হয়, সেই খবর তার স্নেহময়ী মা জানতে পারেন না। সুদীর্ঘ ১৪ বছর শহীদ আজাদের মা ভাত খেতে পারেন নি। আরাম করে শুতে পারেননি বিছানায়। প্রতীক্ষায় ছিলেন, হয়ত আজাদ মারা যায়নি। হয়ত সে তার চিরচেনা হাসিমুখ নিয়ে ফিরবে।
আরও পড়ুন: জনপ্রিয় বাঙালি অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জি আর নেই
আবারও জয়া আহসানের হাতে ‘ব্ল্যাক লেডি’