মুক্তিযুদ্ধ
৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ঢাকা ত্যাগ ভারতীয় রাষ্ট্রপতির
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ঢাকা ত্যাগ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। এক কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও তার সফরসঙ্গী নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা ছেড়ে যায়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় দু’দেশের জনগণের যৌথ আত্মত্যাগের ৫০তম বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে এই সফরটি ছিল ‘ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ।
বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের এটাই প্রথম সফর এবং করোনা মহামারির পর এটা তার প্রথম বিদেশ সফরও।
সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়ে বিজয় দিবস উদযাপিত
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক ‘সোনার বাংলা’ গড়ার শপথ নিয়ে ৫১তম বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নতুন শক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৫০ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন সর্বস্তরের মানুষ।
৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বরের গৌরবময় দিনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৭১ সালের এই দিনেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে।
মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করেছে।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বৃহস্পতিবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
৫১তম বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করেন।
এছাড়া রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।
এ সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ছবির স্বত্ব ব্যক্তির নয়, রাষ্ট্রের: হাইকোর্ট
মুক্তিযুদ্ধকালীন বর্বরতা ও পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসাজশের জন্য জামায়াতের কড়া সমালোচনা জয়ের
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্বরতা ও বাংলাদেশিদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে বানচাল করতে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসাজশ করে ষড়যন্ত্রের জন্য জামায়াতে ইসলামীর কড়া সমালোচনা করেছেন। বুধবার তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে এক পোস্ট করে জামায়াতের বিভিন্ন স্বাধীনতা বিরোধী কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি লেখেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ যখন শেষের দিকে, বাঙালি জাতির বিজয় যখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। পাকিস্তানিদের বর্বরতার বিরুদ্ধে এবং মুক্তিকামী বাঙালি জাতির পক্ষে যখন বিশ্বজুড়ে জনমত তুঙ্গে, ঠিক তখনই নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে পাকিস্তানিরা। তারা তখন জামায়াতের কয়েকজন নেতাকে বাঙালি জাতির প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘের অধিবেশনে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। উদ্দেশ্য, বাঙালির চূড়ান্ত বিজয় বানচাল করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ রুদ্ধ করা।’
জয় লেখেন, ‘১৯৭১ সালের নভেম্বরে যখন মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি জান্তারা ঠিক তখনই পাকিস্তানি জান্তার সমর্থনে ও বাঙালির জাতির বিরুদ্ধে জাতিসংঘে কথা বলতে যায় জামায়াতের মুখপাত্র ও মুসলিম লীগ নেতা শাহ আজিজুর রহমান। সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধ বিষোদগার করে সে।’
তিনি লেখেন, ‘পাকিস্তান কূটনৈতিক দলের বাঙালি নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার কথা অস্বীকার করে এই শাহ আজিজ। এমনকি অন্যান্য মুসলিম দেশকে যেনে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয় এজন্য আহ্বান জানায় সে। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এই ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি লেখেন, ‘এমনকি যুদ্ধকালে নিয়াজীর তৈরি সশস্ত্র আল-বদর ও আল-শামস বাহিনীও দারুণ সহযোগিতা করেছে পাকিস্তানি সেনাদের। এসব বাহিনীর প্রধান ছিল গোলাম আযম, শাহ আজিজ, নিজামী, মুজাহিদসহ শীর্ষ জামায়াত ও শিবিরের নেতারা। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ৭১-এর ধর্ষক-খুনিদের এই কমান্ডারদের মন্ত্রী বানিয়েছিল।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর খুনিকে মরণোত্তর চাকরি ফিরিয়ে দেয় খালেদা জিয়া: জয়
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জয়ের
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ছবির স্বত্ব ব্যক্তির নয়, রাষ্ট্রের: হাইকোর্ট
মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ছবির স্বত্ব (কপিরাইট) কোন ব্যক্তি দাবি করতে পারবেন না, এর স্বত্ব একমাত্র রাষ্ট্রের বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, কেউ কোনো প্রকাশনায় বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ছবি ব্যবহার করতে চাইলে সূত্র উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির অভিযোগে যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
রায়ে বলা হয়, জাতির পিতাকে নিয়ে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন নিয়ে ‘৩০৫৩ দিন’ বইয়ের মেধাস্বত্ব যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের জার্নি মাল্টিমিডিয়ার হলেও বইয়ে ব্যবহৃত চিত্রকর্ম ও ছবির স্বত্ব প্রকাশনী বা তার নয়। যদি বই দুটির প্রকাশিত সংস্করণে চিত্রকর্ম বা ছবির সূত্র উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা না থাকে, তাহলে সূত্র উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে একটি পৃষ্ঠা যুক্ত করতে হবে। আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনিক আর হক। আর সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
আরও পড়ুন: নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বঙ্গবন্ধুর ছবি অন্তর্ভুক্তিতে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
রিটকারীর আইনজীবী অনিক আর হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবির ওপর কোনো ব্যক্তি বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কারো কোনো স্বত্ব থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর ছবির স্বত্ব থাকবে জনগণের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে। কেউ নিজের বলে দাবি করতে পারবে না। যারা বইগুলো এরইমধ্যে পাবলিশ করেছেন, সেগুলো তারা আবার সংগ্রহ করে প্রত্যেকটিতে লিখে দেবেন যে, বইগুলোতে ব্যবহার করা ছবির স্বত্ব প্রকাশকের নয়।
রায়ের পর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, আজ ঐতিহাসিক যে বিষয়টি হয়েছে, তা হলো বঙ্গবন্ধুর পিকটোরিয়াল এবং ইমেজেস নিয়ে আদেশ। এবং স্বাধীনতার যুদ্ধকালীন ছবি ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ছবি দিয়ে যতগুলো বই প্রকাশ হবে, সেসব ছবির কপিরাইট রাষ্ট্রের থাকবে। এটা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দাবি করতে পারবে না। এ ছবিগুলো দিয়ে যখন বই বের হবে, তখন বইয়ের কপিরাইট ব্যক্তির থাকবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের কপিরাইট নিয়ে মামলা হয়েছিল। আদালত বলে দিয়েছেন, যেহেতু মুজিববর্ষ উপলক্ষে বইগুলো ছাপানো হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে যেন বইয়ের কার্যক্রম মন্ত্রণালয় শেষ করে। এরপর যে বইগুলো প্রকাশ হবে, সেগুলোর মধ্যে যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ থাকে, যেখান থেকে ছবিগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা যায়, ৬৫ হাজার ৭০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নারে’ দেয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ৩৯টি বই কেনার অনুমতি দেয়া হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেজন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৭ কোটি টাকায় আটটি বই কেনা হয়। যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের জার্নি মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ ও বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন নিয়ে ‘৩০৫৩ দিন’ নামে দুটি বই ১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকায় এবং তার স্ত্রী শারমীনের স্বাধীকা পাবলিশার্স থেকে ‘অমর শেখ রাসেল’ নামে একটি বই তিন কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ টাকায় কেনা হয়। সে সময় অভিযোগ ওঠে, ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটি প্রকাশে লেখকের অনুমতি নেয়া হয়নি। আর বাকি দুটি বইয়ে স্বত্ব ব্যবহারের যথাযথ প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করা হয়নি। এর মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটি প্রথম প্রকাশ করেছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ‘৩০৫৩ দিন’ প্রকাশ করেছিল কারা অধিদপ্তর।
‘অমর শেখ রাসেল’ বইটি স্বাধীকা পাবলিশার্স প্রথম প্রকাশ করলেও এর সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমেদকে না জানিয়েই তা প্রকাশ এবং বঙ্গবন্ধু কর্নারে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে গত বছর ৩১ অগাস্ট স্বাধীন অথবা বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এই রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত বছর ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত দুটি বইয়ের মেধাস্বত্ব জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ওই তদন্ত কমিটিতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হককে রাখা হয়। ওই আদেশের পাশাপাশি বই দুটির মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণ করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল দেয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে অ্যালবাম তৈরির কাজ করছি: পাকিস্তানি হাইকমিশনার
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ এবং সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের স্ত্রী শারমীন সুলতানাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এর মধ্যে গত বছর ২০ অক্টোবর তদন্ত কমিটি আদালতে প্রতিবেদন দেয়। সেখানে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং ‘৩০৫৩ দিন’ বই দুটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বই। বই দুটির প্রথম প্রকাশক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জেল। পরে প্রকাশক পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই এ দুটো বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জেল এর থাকাই বাঞ্ছনীয় বলে কমিটি মনে করে। ওই প্রতিবেদনেই বলা হয়, ‘৩০৫৩ দিন ’ বইয়ের স্বত্ব পেতে গত বছর ২৯ জানুয়ারি কারা অধিদপ্তর কপিরাইট অফিসে আবেদন করে। তখন পর্যন্ত আবেদনটি বিচারাধীন ছিল।
এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটির স্বত্ব পেতেও কপিরাইট অফিসে আবেদন করেন বইটির সম্পাদক অমিতাভ দেউরী। তার আবেদনটি গত বছর ৭ অক্টোবর খারিজ করে দেয় কপিরাইট অফিস।
নাজমুল হোসেনের আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক, ‘কপিরাইট অফিস কারা অধিদপ্তর ও অমিতাভ দেউরীর আবেদন দুটি খারিজ করেছিলেন। হাইকোর্ট রায়ে কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছেন। ফলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই দুটি শিশুদের কাছে পাঠাতে কোনো জটিলতা থাকছে না। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশিত বই দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী।
আরও পড়ুন: পীরগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর মামলার আসামিদের আ’লীগে যোগদান
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করবে দেশ
মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের হাতে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে মঙ্গলবার যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
১৯৭১ সালের এ দিনে দেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পী, লেখক ও সাংবাদিকসহ অন্যান্য মেধাবী ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। পরে তাদের মরদেহ রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: সারাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন
পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ঠাণ্ডা মাথায় এ গণহত্যা চালায়। তাদের উদ্দেশ ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ যাতে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
আরও পড়ুন: শাবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ডা. ডালিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ডা. ফজলে রাব্বি, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন, সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক ড. জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সান্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান, এএনএম গোলাম মুস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক ও সেলিনা পারভিন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক: সুজেয় শ্যাম
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। দেশ স্বাধীনের আগে থেকে সংগীত নিয়ে কাজ করে চলেছেন সুজেয় শ্যাম। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতারের জন্য তার সুরকরা গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’, ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বাংলাদেশের নাম’, ‘ওরে আয়রে তোরা শোন’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘রক্ত চাই, রক্ত চাই’।
গত বছর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকদিন ঘরবন্দি সময় কেটেছে তার। তবুও থেমে থাকেনি তার সৃষ্টি। চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে পাঁচটি গান প্রকাশ করেছেন তিনি। বর্তমানে তার ব্যস্ততা বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে। সেসব প্রসঙ্গের পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ইউএনবির সঙ্গে।
প্রতিবছর বিজয় দিবস এলে আপনার ব্যস্ততা অনেকটা বেড়ে যায়। এবার কোন কোন বিশেষ আয়োজনে আপনাকে পাওয়া যাবে?
হ্যাঁ, ব্যস্ততা তো খানিকটা বেড়ে যায়। গত বছর করোনার জন্য অনেক আয়োজন সম্ভব হয়নি। তবে এবারের চিত্রটা পাল্টেছে। বড় পরিসরে একাধিক অনুষ্ঠান হবে। আমিও বেশ কয়েকটিতে থাকবে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৬ ডিসেম্বর সংসদ ভবনের আয়োজনটি। এছাড়া টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের বেশ কয়েকটি শোতে থাকব।
আরও পড়ুন: ঢাকার দর্শকদের মুগ্ধ করেছে সুফি সঙ্গীত
মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার মতো কণ্ঠযোদ্ধাদের যেমন প্রতিবাদের মাধ্যম ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের গান দিয়ে জাগ্রত করেছেন আপনারা। সেই সময় আপনার ভূমিকার কথাগুলো জানাতে চাই।
গান সব সময় শক্তিশালী মাধ্যম। এর মধ্য দিয়ে মানুষকে যেমন বিনোদন দেয়া যায়, তেমনি এটি প্রতিবাদের হাতিয়ার। পৃথিবীর অনেক সংগ্রাম ও প্রতিবাদের গানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমাদের ক্ষেত্রেও তেমন। কণ্ঠ দিয়ে আমরা যেমন প্রতিবাদ করেছি তেমনি একটি স্বাধীন দেশের জন্য বিজয়ের স্বপ্ন বুনেছি। এজন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালকসহ সবাই দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর জন্য আমার প্রথম গান ছিল কবি দেলওয়ারের ‘আয়রে চাষি মজুর’। পরবর্তীতে আরও ৮টি গান করেছি। সুর ও সংগীতায়োজনের মধ্য দিয়ে আশার মশাল জ্বালানোর আহ্বান জানিয়েছি। একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে হয়।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানও যুক্ত। নতুন প্রজন্মের কাছে গানগুলো কতটা পৌঁছেছে মনে করেন?
দেশ গঠন সম্পর্কে জানতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার বিকল্প নেই। সেটি তরুণ প্রজন্মসহ সবার জন্যই। সেই সময়ের অবস্থা, দুঃখ বা আনন্দ সবকিছুই স্বাধীন বাংলার গানে প্রকাশ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছেও স্বাধীন বাংলা বেতারের গানের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তরুণ যারা গান করছেন তাদের কণ্ঠেও গানগুলো শোনা যায় মাঝে মাঝে। তবে সেই প্রসার আরও হওয়া প্রয়োজন মনে করি। এনটিভির জন্য একটি রিয়্যালিটি শোতে দুই দিনব্যাপী স্বাধীন বাংলার গান নিয়ে একটি আয়োজন ছিল। যেগুলো তখনকার প্রতিযোগিরা গেয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই গানগুলো নিয়ে অ্যালবাম বের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আর হয়নি। আমার একটা ইচ্ছার কথা বলি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক। যদিও মাঝে একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠান একটি উদ্যোগ নিয়ে দুটি অ্যালবাম রিলিজ করেছিল। কিন্তু সেখানে যারা গেয়েছেন এর মান নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রথম বাংলাদেশ কউচার উইক
‘পিস রানার অ্যাওয়ার্ড' পেলেন বিশ্বজয়ী বাংলাদেশি পর্যটক নাজমুন নাহার
এখন অন্যান কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
শরীরের জন্য তো আগের মতো নিয়মিত কাজ করতে পারি না। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর শেখ হাসিনাকে নিয়ে ৫টি গান করেছিলাম। সেটি বেশ বড় আয়োজন ছিল। এখন বাংলাদেশ টেলিভিশনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করছি। এরইমধ্যে চারটি পর্ব প্রচার হয়েছে।
অনেক সিনেমায় সংগীত পরিচালক হিসেবে আপনাকে পাওয়া গেছে। তবে এখন বিরতিতে আছেন। সামনে কাজ ও এখন প্লেব্যাকের অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন।
একবারে যে বিরতি নিয়েছি এমনটা নয়। গত বছর নার্গিস আক্তার পরিচালিত ‘যৈবতী কন্যা মন’ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছি। যদিও এখন পর্যন্ত তা মুক্তি পায়নি। আর এখন তো আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেককিছুতেই সংকট। সিনেমার গানের যেই জনপ্রিয়তা এক সময় ছিল, সেটিও কমেছে। প্রযুক্তর উন্নতি হয়েছে কিন্তু আবেগ হয়তো কমে যাচ্ছে। তবে এর মধ্যেও ভালো কাজ হচ্ছে। অনেক চেষ্টা প্রশংসা করার মতো।
পাকিস্তানিদের কাজ ছিল এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা: শাবিপ্রবি উপাচার্য
মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাক্ষদর্শী হিসেবে বলব যে, পাকিস্তানিদের কাজ ছিল এই দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা। মুক্তিযুদ্ধকালীন এই দেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে বর্বরতা-নিষ্ঠুরতা পাকিস্তানি আর্মিরা চালিয়েছিল তা ইতিহাসে বিরল বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: প্রসঙ্গ জেনোসাইড’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, জেনোসাইডের কথা বললে, আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী নির্মমভাবে গণহত্যার ছাপ রেখেছে। অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাটির সঙ্গে মেশানোর চেষ্টা করেছে। এই গণহত্যায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক কাউকে বাদ রাখেনি। সবচাইতে বেশি নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। সারাদেশে অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে সঠিক গবেষণার অভাবে এই হত্যাকাণ্ডের চিত্রগুলো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শাবিপ্রবি প্রশাসনের পদক্ষেপ
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও সত্য ইতিহাস সংরক্ষণ ও প্রকাশ করা হচ্ছে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম একটি সত্য ইতিহাস জেনে বড় হচ্ছে।উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যারা বিরোধী ছিল, তাদের পরিবারের লোকেরাই আজকে দেশের উন্নয়নের বিরোধীতা করছে।বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে জেনোসাইড গবেষক হাসান মোরশেদ এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমান। এছাড়াও সেমিনারের আহ্বায়ক ও সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন শাবিপ্রবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তার সরকার।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের ‘মুজিব শতবর্ষ ক্রীড়া সপ্তাহ’র উদ্বোধন
শাবিপ্রবিতে প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে সচেতনতার আওয়াজ
ক্যানবেরায় বাংলাদেশ-ভারত ‘মৈত্রী দিবস’ উদযাপন
অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে যৌথভাবে ‘মৈত্রী দিবস’ এর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ও ভারতের হাইকমিশন।
৫০ বছর আগে এই দিনে, বাংলাদেশের প্রকৃত বিজয়ের ১০ দিন আগে ভারত একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এসময় মুক্তিযুদ্ধ থেকে বর্তমান সোনালী অধ্যায় পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিহাস তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্মিত একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: বাণিজ্য ও সংযোগের ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি ও ভারতীয় শিল্পীরা পৃথকভাবে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন।
এসময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান, ভারতের হাইকমিশনার মনপ্রীত ভোরা এবং অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হারিন্দার সিধু বক্তব্য দেন। এছাড়া রাশিয়াসহ অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত ৩১টি দেশের মিশনপ্রধান, বাংলদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী বাংলাদেশি ও ভারতীয়সহ শতাধিক ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা, স্বাধীন বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সহায়তা এবং প্রধানমন্ত্রী মুজিব ও ইন্দ্রিরা কর্তৃক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সুদৃঢ় ভিত্তি স্থাপনের বিষয়কে স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত 'মৈত্রী দিবস' পালিত
ভারতের হাইকমিশনার মনপ্রীত ভোরা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পাশে থাকতে পেরে ভারতের জনগণ গর্বিত। বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং বাংলাদেশ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হারিন্দার সিধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীতে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে অস্ট্রেলিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করেন। ১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন তিনি। শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে একযোগে কাজ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জয়ের
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
বুধবার তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এক বার্তায় জয় বলেন, ‘বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই হোক আমাদের সকলের প্রত্যয়।’
তিনি বলেন, ‘বিজয়ের মাসের শুরুতে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদকে। একই সঙ্গে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে, যাদের নেতৃত্ব ও দৃঢ়তার কাছে হেরে গিয়েছিল বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী; অর্জিত হয়েছিল বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয় বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের সীমাহীন ত্যাগের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, বিজয়ের ৫০তম বছরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। জাতি হিসেবে যা আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক অর্জন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ইতোমধ্যেই আমরা সফলভাবে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছি। সামনে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতার খুনিদের রাষ্ট্রদূত বানায় খালেদা জিয়া: জয়
আ. লীগ একটি রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক আন্দোলন: পরিকল্পনামন্ত্রী