পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর কোনো দেশ মানবতার কথা বলেনি: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে খুনিরা যখন বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হত্যা করে, তখন পৃথিবীর কোনো দেশ মানবতার গান গায়নি।
তিনি আরও বলেন, সেই মৃত্যুতে শোক বার্তাও পাঠায়নি। আজকে বিভিন্ন দেশ মানবতার জন্য হুঙ্কার দেয়। কিন্তু এতোগুলা মানুষকে যে হত্যা করা হয়েছিল তখন কারো মুখে কোনো কথা শোনা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ অডিটোরিয়ামে জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইনডেমনিটি আইনের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না এমন কালো আইন তখন করা হয়েছিল। খুনির বিচার করা যাবে না, এমন কালো আইন পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও আছে বলে আমার জানা নাই।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২১ বছর সংগ্রামের পর, সরকারে আসার পর, এই কালো আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করে জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করেন।’
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের সন্ত্রাস ও দুর্নীতি ফিরলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে: মোমেন
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জেলের ভেতরে জাতীয় ৪ নেতাকেও হত্যা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল- স্বাধীনতার চেতনায় যারা বিশ্বাস করে তাদের সম্পূর্ণভাবে মূলোৎপাটন করা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যেসব দল আছে তারা সন্ত্রাস ও খুনখারাবিতে বিশ্বাস করে এবং তারা যখন সরকারে এসেছে তখন তারা এই কাজটাই করেছে।’
বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে দেশের চিত্র তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১-২০০৬ সালে দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটে। সরকারি মদদে বাংলা ভাইয়ের উত্থান ঘটে। প্রকাশ্যে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে মানুষ হত্যা করে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলায় একসঙ্গে বোমাবাজি করে। আদালতে বিচার চলাকালীন বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা করে। বিদেশি একজন রাষ্ট্রদূত সিলেটে মাজারে গিয়েছেন, সেখানেও গ্রেনেড হামলা করে এবং পুলিশসহ তিনজন নিহত হন। রাষ্ট্রদূতসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশ চলাকালে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন, প্রায় ৩০০ জন আহত হন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ওই রকম সন্ত্রাসের দেশ আর দেখতে চাই না। বিএনপি-জামায়াতের সরকার আমরা চিনি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫-এর আগে যেভাবে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল সাম্প্রতিক কালেও সেরকম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে বিদেশি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন: মোমেন
তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যদি আমরা সন্ত্রাসীদের হাতে দেশকে তুলে দিতে না চাই, জিহাদিদের হাতে তুলে দিতে না চাই, দুর্নীতিবাজদের হাতে তুলে দিতে না চাই তাহলে আমাদের প্রত্যেকের একটি দায়িত্ব আছে। ২০০১-২০০৬ সালে দেশের অবস্থা কেমন হয়েছিল তা সবাইকে জানান।’
তিনি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যদি আপনার সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যৎ চান তাহলে শেখ হাসিনার সরকারকে আবার জয়যুক্ত করবেন।
বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সিদ্ধান্ত আপনাদেরই নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন ড. মোমেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ মনিরুল ইসলাম মনি, সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি আইনজীবী ড. মশিউর মালেক, তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ড. হারুন অর রশিদ।
আরও পড়ুন: জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যোগদান ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের ‘সোনালী অধ্যায়ে’ আরেকটি পালক যোগ করবে: মোমেন
বাংলাদেশ ও এর জনগণ তিমুর-লেস্তের মানুষের হৃদয়ে: দেশটির প্রধানমন্ত্রী
তিমুর-লেস্তের প্রধানমন্ত্রী জানামা গুসমাও বলেছেন, বাংলাদেশ ও এর জনগণ তিমুর-লেস্তের মানুষের হৃদয়ে রয়েছে।
পূর্ব তিমুরের জনগণের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব এবং ২০০২ সাল থেকে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটিকে নেতৃত্ব দেওয়া জানামা গুসমাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখতে হবে কীভাবে ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা এবং তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।’
মঙ্গলবার তিমুর-লেস্তের দিলিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানামা গুসমাওয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক সাফল্য নিছক একটি দুর্ঘটনা নয়, তার অঙ্গীকার এবং লক্ষ্যযুক্ত পদ্ধতির কারণে সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী দিনে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা আরও গভীর হবে: উজবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিমুর-লেস্তের প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন, যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সুযোগের কথা উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিমুর-লেস্তের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন এবং সংকট সমাধানে কিছু বাস্তব চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন।
তিমুর-লেস্তের প্রধানমন্ত্রী আগামী বছর বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তিমুর-লেস্তে সরকারি সফরকালে সোমবার তিমুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এলিয়া আন্তোনিও ডি আরাউজো ডস রেইস আমারালের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
মন্ত্রী কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে তিমুর প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে কমিউনিটি ভিত্তিক সম্পৃক্ততার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত।
তিমুর-লেস্তের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজগুলোতে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার অন্যান্য বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রশংসা করেন আমারাল।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় মাত্র কয়েক দশকের মধ্যে দ. কোরিয়া উন্নত হয়েছে: রাষ্ট্রদূত পার্ক
মোমেন সোমবার তিমুর-লেস্তের কিংবদন্তি প্রেসিডেন্ট জে রামোস হোর্তার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় মোমেন প্রেসিডেন্ট রামোস হোর্তার ব্যক্তিগত সাহসিকতা ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। হোর্তা ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরকালে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের স্মৃতিচারণ করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট হোর্তার সমর্থন কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট রামোস হোর্তা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অভিন্ন চ্যালেঞ্জের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি হোর্তা বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি রামোস হোর্তাকে বাংলাদেশ সফরের এবং 'বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজ' এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বক্তৃতা দিতে আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশিদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় সহায়তা করবে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার
এটা তাদের জন্য লজ্জার: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন অজুহাতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাংলাদেশে হস্তান্তর না করে আশ্রয় দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সমালোচনা করেছেন।
মঙ্গলবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যা ওই দেশগুলোর জন্য লজ্জার, যদিও আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’
মোমেন বলেন যে তারা মানবাধিকার ইস্যুতে তারা সোচ্চার, তাদের কথার সঙ্গে কাজের মিল নেই।
তিনি বলেন, খুনিরা সেসব দেশে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যা 'খুবই দুঃখজনক' এবং 'হতাশাজনক'।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগস্ট মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠান শেষে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা বিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনিরা সবসময় বাংলাদেশকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ বানানোর চেষ্টা করছে: প্রধানমন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, কানাডা নূর চৌধুরীকে ফেরত দেয়নি, কারণ যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় সেসব দেশে তাদের কাউকে হস্তান্তর করা হয় না।
কানাডা এমনকি তার নাগরিকত্বের বিষয় নিশ্চিত করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফিরে আসার পরে, তার (রাষ্ট্রপতির কাছে) প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে।’
খুনি রাশেদ চৌধুরী প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার কখনো বলেনি যে তারা তাকে ফেরত পাঠাবে না। আমরা বিচার প্রক্রিয়ার বিবরণ পাঠিয়েছি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আত্মস্বীকৃত খুনিদের যেন কোন দেশ আশ্রয় না দেয় সে জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব তোলা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
স্কুল ফিডিং কর্মসূচি সম্প্রসারণে ডব্লিউএফপি'র সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিডিং কর্মসূচি সম্প্রসারণ ও উন্নত করতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালু করে এবং বর্তমানে ১০৪টি উপজেলার ১৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২৩ লাখ শিক্ষার্থী বিনামূল্যে খাবার পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ডব্লিউএফপি’র সহায়তা হ্রাসে রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়তে পারে অপরাধ, উগ্রপন্থা: এআরএসপিএইচ
নতুন চুক্তির আওতায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে ১৫০টিরও বেশি উপজেলায় সম্প্রসারিত করা হবে, যার ফলে বিনামূল্যে খাবার পাবে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭ লাখে উন্নীত হবে। এছাড়া ফর্টিফাইড বিস্কুটের পরিবর্তে ফল, দুধ, রুটি, ডিমসহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার পরিবেশন করা হবে।
মোমেন বলেন, ফিডিং কর্মসূচির কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝরে পড়ার হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভর্তির হার ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া সোমবার এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্কুল মিলস কোয়ালিশনের ৮৫তম সদস্য হয়েছে।
এ সময় ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান এবং প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ডব্লিউএফপিএ'র কান্ট্রি ডিটেক্টরের সাক্ষাৎ
মানবাধিকার ইস্যুতে শিগগিরই ভালো খবর পাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বুধবার বলেছেন, বাংলাদেশ শিগগিরই মানবাধিকার ইস্যুতে ভালো খবর পাবে।
বুধবার সিলেটে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বন্ধু। তারাও আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে চায়। বাংলাদেশ সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাসী।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আরও বলেন যে মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে তারা।
তিনি বলেন, অবস্থানগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।
মন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে আগ্রহী। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঘন ঘন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করছেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোজন প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন
শান্তিরক্ষী নিয়ে অ্যামনেস্টির আহ্বান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান, বিজয়ী জিম্বাবুয়ের প্রতিষ্ঠানকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিবাদন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন ক্রিয়েটিভ ইকোনমি পুরস্কার প্রদান করেন।
প্যারিসে ইউনেস্কো সদরদপ্তরে এক জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই পুরস্কারের বিজয়ী জিম্বাবুয়ের প্রতিষ্ঠান মিউজিক ক্রসরোডস-এর প্রতিনিধি মেলোডি যাম্বুকো’র হাতে এই পুরস্কারটি তুলে দেন।
বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক বহিঃপ্রকাশ সংক্রান্ত ইউনেস্কো ২০০৫ কনভেনশন-এর সাধারণ পরিষদের সভার উদ্বোধনী দিনের কার্যসূচির শেষে আয়োজিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছাড়াও ইউনেস্কোর সংস্কৃতিবিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ও সহকারী মহাপরিচালক আর্নেস্তো অতোনে-সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধির পাশাপাশি সাধারণ পরিষদে যোগদানকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ, প্রবাসী বাংলাদেশিগণ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রান্সস্থ বাংলাদেশের দূতাবাস-এর কূটনৈতিক উদ্যোগে এবং সকল সদস্য রাষ্ট্রের সম্মতিক্রমে এই পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন: সার্ক লেখক ও সাহিত্যিকদের ফাউন্ডেশন বঙ্গবন্ধুকে প্রদান করল সার্ক সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩
পরবর্তীতে, ২০২১ সালে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে অনুরূপ একটি আয়োজনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা প্রথম বিজয়ী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার তুলে দেন।
দ্বি-বর্ষভিত্তিক এই পুরস্কারের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা উদ্ভাবনী সাংস্কৃতিক উদ্যোগসমূহকে উৎসাহিত করা হয়।
শুভেচ্ছা বক্তব্যের শুরুতেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, আত্মত্যাগ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একটি সদ্যস্বাধীন দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা আনয়নে বঙ্গবন্ধু’র তারুণ্যনির্ভর উদ্ভাবনী অর্থনীতির যে রূপরেখা প্রণয়ন করেছিলেন তা উদ্ধৃত করেন।
এই পুরস্কার প্রদানের ফলে বাংলাদেশের জাতির পিতার অর্থনৈতিক মুক্তির দর্শনকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সহকারী মহাপরিচালক আর্নেস্তো অতোনে তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে এই পুরস্কার প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে উদ্ভাবনী চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ইউনেস্কোর সংস্কৃতিবিষয়ক এই শীর্ষ কর্মকর্তা আরও বলেন, এই পুরস্কার প্রদানের ফলে তরুণ সমাজ উদ্ভাবনী অর্থনীতির দর্শনকে ধারণ করবে এবং তা চর্চার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্য, বিনিয়োগ সম্পর্ক নিয়ে উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদনের স্বীকৃতিস্বরূপ সাংবাদিকতা পুরস্কার
বিচারকমন্ডলীর সভাপতি ইলান স্টিফেনস জানান, এ বছর বিশ্বের ১৯টি দেশ হতে পুরস্কারের বিবেচনার জন্য মোট ৮৪টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়ে, যার প্রতিটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও অভিনব। তবে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানকে তাদের উদ্ভাবনী চর্চা ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনে নারী ও তরুণদের সম্পৃক্ত করার জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
আলোচনা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুরস্কারের স্মারক বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির নিকট তুলে দেন। এ সময় ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা বিজয়ীকে সনদপত্র প্রদান করেন।
পুরস্কার প্রদান শেষে ফ্রান্স-প্রবাসী বাংলাদেশের একটি ব্যান্ডদল মনোমুগ্ধকর সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
আয়োজনের শেষভাগে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের সম্মানে কূটনৈতিক রিসিপশন ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: উদ্ভাবনে অবদানের জন্য দুইটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করল অপো
প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের সর্বোত্তম সেবা দিতে হবে: মোমেন
প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের সর্বোত্তম সেবা প্রদান এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের লেবার উইংয়ে নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের ‘ডিপ্লোম্যাটিক ওরিয়েন্টেশন’ কোর্সের সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সামনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।’
মোমেন বলেন, প্রায় এক কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে কর্মরত আছেন এবং তারা প্রচুর রেমিট্যান্স সরবরাহ করে আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন। সেজন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সর্বোত্তম সেবা প্রদান করে তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে ফিরলেই রোহিঙ্গারা সুন্দর ভবিষ্যৎ পাবে: মোমেন
বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোর সফলতার জন্য টিমওয়ার্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিশনের সকলে মিলে একটি টিম হিসেবে কাজ করে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তুলে ধরুন।'
তিনি আরও বলেন, ‘সেবা প্রত্যাশী প্রতিটি বাংলাদেশিকে সহানুভূতির সঙ্গে, যত্ন সহকারে সেবা প্রদান করবেন যাতে আপনাদের সততা নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে।’
লেবার উইংয়ে নিযুক্ত কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ কোর্সে যেসব নির্দেশনা পেয়েছেন এবং জ্ঞান অর্জন করেছেন তা প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ রক্ষায় সহায়তা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তিনি ওরিয়েন্টেশন কোর্স সফলভাবে সমাপ্ত করায় কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান।
এ সময় ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস -এর সভাপতিত্বে সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, বিএন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেন, ‘পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শ্রম উইংয়ের ভূমিকা আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিদেশের শ্রম বাজার বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের শ্রমশক্তিকে কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে একাডেমির রেক্টর বলেন, ‘এই ধরণের ওরিয়েন্টেশন কোর্স শুধুমাত্র অফিসারদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান দিয়ে তাদের সমৃদ্ধ করবে না বরং সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সহযোগিতার জন্য বিশেষ সুযোগ তৈরি করবে।’
বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোর শ্রম উইংয়ে নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের জন্য রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গত (১৪মে হতে ২৫ মে ২০২৩) পর্যন্ত 'কূটনৈতিক ওরিয়েন্টেশন' শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রশিক্ষণ কোর্সে ১১জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন মধ্যপ্রাচ্যে (দুবাই, দোহা, বাগদাদ, বৈরুত), তিনটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, ব্রুনাই) এবং পূর্ব এশিয়ার (সিউল), আফ্রিকার (পোর্ট লুইস) এবং পূর্ব ইউরোপ (বুখারেস্ট) বাংলাদেশ মিশনে যোগ দেবেন।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ লেবার উইংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিজ নিজ প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন: মোমেন
বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।’
বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ড. মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উৎসব আমরা আমাদের বিদেশস্থ সকল মিশনে উদযাপন করছি। জুলিও কুরি পদক ছিল জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন বঙ্গবন্ধু মেনে নিতে পারেননি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাংলার নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
ড. মোমেন বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়’ এই বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘে এক নম্বর শান্তিরক্ষী দেশের মর্যাদা পেয়েছে এবং দেশে দেশে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ চালু করেছে।’
‘বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে আমাদের অঙ্গীকার হবে বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ করে যাওয়া, তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অর্জিত হবে’ বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত
মোমেনের মানহানির অভিযোগে দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের নিন্দা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় রবিবার (২১ মে) ‘আরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসছে, প্রস্তুত সরকার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উক্ত সংবাদের একটি অংশে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে হেয় করতে, ‘তিনি মন্ত্রী হওয়ার আগে একটি চীনা প্রতিষ্ঠানের লবিস্ট হিসেবে কাজ করতেন’ মর্মে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সর্বৈব (পুরোপুরি) মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এতে আরও বলা হয়েছে যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নামে এ ধরনের মিথ্যাচারের মাধ্যমে তার মানহানির পাশাপাশি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মোমেনের বক্তব্য গণমাধ্যমে সঠিকভাবে প্রকাশিত হয়নি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
নির্বাচনের আগে সংলাপের প্রয়োজন নেই, পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই এবং তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যে ব্যবস্থা রয়েছে তা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সংলাপের প্রয়োজন কেন? ক্ষমতায় কি পেছনের দরজা দিয়ে আসবে? মোটেই না। যেহেতু একটি ব্যবস্থা আছে তাই আলোচনার প্রয়োজন নেই এবং যারা নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক তাদের (বিএনপিসহ বিরোধী দল) এগিয়ে আসা উচিত।’
ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন মোমেনের- ‘নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টি বা অন্যান্য দল কি আলোচনা করে? না, কখনোই না। কারণ, একটা সিস্টেম আছে। তারা সিস্টেম অনুসরণ করে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যাদের কথা বলছেন তারা বন্দুকের মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু করেছে। তারা ব্যালটে নয়, বন্দুকে বিশ্বাস করে।’
আরও পড়ুন: আমেরিকা আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু দেশ: মোমেন
মোমেন বলেন, ‘তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর আস্থা রাখে এবং এ কারণেই তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়। কারণ আমরা মানুষকে বিশ্বাস করি। আমরা একটি মডেল নির্বাচন চাই।’
তিনি আরও বলেন যে বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে ৩০ লাখ মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের রক্তে ভোটাধিকারসহ গণতন্ত্র রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় উল্লেখ করে বলেছে, বিশ্ববাসী বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন গত ১০ এপ্রিল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের সময় বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা তথা বিশ্ব বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছি, যাতে তারা এই অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের একটি শক্তিশালী দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মোমেনের ফলপ্রসূ বৈঠক
মোমেন ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা সার্ভিসকে বলেন, ‘আমি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে একমত। আমি খুব খুশি যে তিনিও এমন একটি মডেল নির্বাচন চান যা সারা বিশ্বে চিত্রিত হতে পারে। আমিও চাই এবং আমরা সকলের সমর্থন চাই।’
মোমেন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব দলকে আন্তরিকতা ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রদর্শন করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘তার দল আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, অভ্যুত্থান বা বুলেটের মাধ্যমে নয়। গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের যে আন্তরিকতা ও অঙ্গীকার রয়েছে তার দিক থেকে অন্যরা আমাদের কাছাকাছিও নেই।’
মোমেন বলেন যে বিএনপি যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাহলে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। বিএনপি অতীতে নির্বাচন বর্জন করেছে এবং নির্বাচন বানচাল করতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। আমরা সেই পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না।
তিনি আরও বলেন যে তিনি ব্লিঙ্কেনকে যত বেশি সম্ভব নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রেরণের অনুরোধ করেছেন। তবে পক্ষপাতদুষ্ট পর্যবেক্ষকদের এড়ানোর জন্য তাদের স্বাধীন হতে হবে এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হওয়া যাবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লুকানোর কিছু নেই। কারণ আমরা গত ১৪ বছরে একটি চমৎকার কাজ করেছি এবং আমরা নিশ্চিত যে গল্প বানানো হলেও মানুষ আমাদের ভোট দেবে এবং সেই সব গল্প তারা বিশ্বাস করবে না।’
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মোমেন