দুদক
দেশে দেশে পাচার বায়োফার্মার টাকা দুদক ও এনবিআরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
‘বায়োফার্মা লিমিটেড’ নামের ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে দেশে দেশে টাকা পাচার ও কর ফাঁকির যে অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও জাতীয় রজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে (এনবিআর) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।
রবিবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘দেশে দেশে পাচার বায়োফার্মার টাকা’-শীর্ষ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
জানা গেছে, একইসঙ্গে রিট আবেদকারী ডা. মোর্শেদ উদ্দিন আকন্দ এবং ডা. জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্তের বিষয়ে দেওয়া আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং এই দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আব্দুস সালাম মামুন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন মো. সাইফুদ্দিন খালেদ।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল ‘দেশে দেশে পাচার বায়োফার্মার টাকা’- শিরোনামে ওই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, দেশে মন্ত্রী-এমপি, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সঙ্গে দহরম-মহরম সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তোলা হাস্যেজ্জ্বল ছবি দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও; কিন্তু লন্ডনে স্ত্রীর জন্য চেয়েছেন রাজনৈতিক আশ্রয়। শুধু তাই নয়, লন্ডনে কোম্পানি খুলে ব্যবসাও করছেন। কয়েকটি দেশে তৈরি করেছেন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য দেশ থেকে অবৈধ চ্যানেলে নেওয়া হয়েছে বিপুল অংকের টাকা। বিদেশে টাকা পাচার করে বিত্ত-বৈভবে ফুলেফেঁপে উঠলেও যেই কোম্পানির হাত ধরে এত কিছু, সেই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে রুগ্ন দশায়।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা,প্রকল্পের সব নথি হাইকোর্টে তলব
গত ১৫ বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়নি বার্ষিক সাধারণ সভা। ২২ বছর ধরে দেওয়া হয় না কোনো লভ্যাংশ। এ সময়ে মোট পণ্য বিক্রির ৪০ শতাংশ কম দেখিয়ে শত শত কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। কোম্পানির অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে এসব অনিয়মের চিত্র। এমন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানটি হলো বায়োফার্মা লিমিটেড। ওষুধ শিল্পে একসময়ে নেতৃত্ব দেওয়া এ প্রতিষ্ঠানটি এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে।
ধারাবাহিক অনিয়মে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের মূল কারিগর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ডা. লকিয়ত উল্লাহ। কাগজে-কলমে ডিএমডি হলেও তিনিই প্রতিষ্ঠানটির সর্বেসর্বা। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বায়োফার্মা লিমিটেড’ নামের ওষুধ কোম্পানিটি। ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে পাস করা কয়েকজন চিকিৎসক কিনে নেন প্রতিষ্ঠানটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটি নতুনভাবে যাদের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় তাদের বেশিরভাগই জামায়াতের নেতাকর্মী। পরে এটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়। সাধারণ শেয়ারহোল্ডার হিসেবে যাদের নেওয়া হয়, তাদের বেশিরভাগই উদ্যোক্তাদের ‘নিজের লোক’।
বায়োফার্মার নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, নতুনভাবে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কোম্পানির বতর্মান ৯ পরিচালক ঘুরেফিরে আছেন পরিচালনা পরিষদে। সাবেক চেয়ারম্যান এন এ কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে বেশকিছু সরকারবিরোধী মামলা রয়েছে। তিনি ২০১৯ সালে পালিয়ে স্থায়ীভাবে আমেরিকা চলে যান। এরপরও রয়ে গেছেন উপদেষ্টা হিসেবে।
বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে আছেন শেয়ারহোল্ডার নাছিমা বেগম ঝুমুর প্রতিনিধি হিসেবে তার স্বামী ডা. শাহাবুদ্দিন আহমদ। ১৮ বছরের সাবেক এমডি ডা. আনোয়ারুল আজিম এখন ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে। আর ডিএমডি ডা. লকিয়ত উল্লাহ শুরুতে ছিলেন নির্বাহী পরিচালক (মার্কেটিং)। তারা তিনজনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চবি) শিক্ষার্থী ছিলেন।
বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে আছেন ডা. মো. মিজানুর রহমান। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) শিক্ষার্থী ছিলেন।
অন্য পরিচালকরা হলে- ডা. জহির উদ্দিন মাহমুদ, ডা. আলী আশরাফ খান, শেয়ারহোল্ডার নাজমা হকের প্রতিনিধি ও তার স্বামী ডা. ফজলুল হক মজুমদার এবং সাইফুল আমিন। তারা প্রত্যেকেই জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বে রয়েছেন।
তাদের মধ্যে আলী আশরাফ নারায়ণগঞ্জ থেকে জামায়াতের হয়ে সংসদ নির্বাচনও করেছিলেন। জামায়াত সমর্থিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড বিজনেসম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের (আইবিডব্লিউএফ) মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন বায়োফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান ডা. আনোয়ার।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের নির্দেশে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন কেসিসির মেয়র প্রার্থী মুশফিকুর
কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ দখলের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুয়েত-বাংলাদেশ সরকারি মৈত্রী হাসপাতালের স্টোর অফিসার ও তার স্ত্রী নবীনগর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুদক কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সা'দাৎ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে দুদকের মামলা থেকে ৫ জনকে অব্যাহতি দিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন
অভিযুক্ত কুয়েত বাংলাদেশ সরকারি মৈত্রী হাসপাতালের স্টোর অফিসার মো. হাবিবুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার চরলাপাংয়ের চিত্রী গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে এবং অপর অভিযুক্ত তার স্ত্রী মোসাম্মাৎ শিউলী আক্তার নবীনগর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক।
মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, মো. হাবিবুর রহমান এবং তার স্ত্রী নারী ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী রহমান ওরফে মোসাম্মাৎ শিউলী আক্তার একে অপরের সহযোগিতায় মোট এক কোটি চার লাখ ১৪ হাজার ৭৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বগুড়ায় ‘৫০০ কোটির বাড়ি’র মালিকের নামে দুদকের মামলা
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওসি প্রদীপের সম্পদের খোঁজে ৭ দেশে দুদকের চিঠি
টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রদীপ কুমার দাশের সম্পদের খোঁজে সাতটি দেশে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের যেসব দেশে চিঠি পাঠিয়েছে- কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত।
দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০১৯ সালে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকিকে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার নোটিশ প্রদান করা হয়।
পরবর্তীতে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে চুমকির জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকিকে দুদকের মামলায় জামিন দেননি হাইকোর্ট
নুরুল ইসলাম বলেন, দেশের বাইরে ওসি প্রদীপের কোনো সম্পদ আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে সাতটি দেশে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৭ জুলাই দুদকের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার দাশকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে প্রদীপের ঘুষের টাকায় চুমকির নামে নেওয়া কোটি টাকার বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজার জেলার টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ হত্যা মামলায় প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এ রায় দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুনানি ২০ জুন
দুদকের মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি ১ জুন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত আইনের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে শেষ বারের মতো অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য সময় মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমামের আদালতে মামলাটির অভিযোগ শুনানির কথা ছিল। এজন্য সকালে সম্রাট আদালতে হাজিরা দেন।
আরও পড়ুন: সম্রাটের জামিন বাড়লো ২০ অক্টোবর পর্যন্ত
তবে তার আইনজীবী শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। এরপর আদালত শেষ বারের মতো সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ শুনানির নতুন তারিখ ১ জুন ধার্য করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়েক করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করে সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আরও পড়ুন: সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৯ এপ্রিল
দুদকের মামলায় সম্রাটের চার্জ শুনানি পিছিয়ে ৮ নভেম্বর
ফরিদপুরে খাদ্য কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক
ফরিদপুরে দুর্নীতি মামলায় একজন উপ-খাদ্য পরিদর্শককে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।রবিবার বেলা আড়াইটায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের নিকট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মো. ছানোয়ার হোসেন (৪১) ঢাকার ধামরাইয়ের নওগাঁও বাজারের মো. আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি বোয়ালমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের উপ-খাদ্য পরিদর্শক ছিলেন। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
দুদুকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপপরিচালক রেজাউল করিম জানান, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে চরভদ্রাসনের বিএসডাঙ্গী খাদ্য গুদাম থেকে বিপুল পরিমাণ ধান, চাল ও গম আত্মসাৎ করেন ছানোয়ার। আত্মসাৎকৃত মালামালের মধ্যে এক হাজার ২৮৯ বস্তায় ৭৩ হাজার ৭৬৩ মেট্রিক টন চাল ৬৭ বস্তার তিন হাজার ৩৭৪ মেট্রিকটন গম, ৪০০ বস্তায় ১৯ হাজার ৯৫০ মেট্রিকটন ধান এবং আট হাজার ৮৪১টি খালি বস্তা রয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা (সংশোধিত), ২০১৯ এর বিধি ১০ (৫) মোতাবেক দণ্ডবিধি ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার আবুল বাসার বাদি হয়ে ছানোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. ইমরান আকন এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। দ্রুতই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলে জানা গেছে।
এ অবস্থায় দুদুকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপপরিচালক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল ছানোয়ার হোসেনকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের পাশে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার সময় গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায়।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় সেলিম প্রধানের ৮ বছরের কারাদণ্ড
রাজউকের ২৬ হাজার ৭৭৭ নথি উদ্ধার
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে গায়েব হয়ে যাওয়া ২৬ হাজার ৭৭৭ নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাজউক। মঙ্গলবার (২ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানিয়েছেন রাজউকের আইনজীবী ইমাম হাসান।
তিনি আদালতকে জানান, হ্যাকাররা সার্ভার থেকে নথি হ্যাক করেছিল। সব নথি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এরপর এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিকে আদেশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৯ জুলাই দিন রেখেছেন।আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান, আর রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হাছান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
‘রাজউক থেকে ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব’ শিরোনামে গত ২৯ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। ২ জানুয়ারি প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এরপর এ বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। পাশাপাশি দুদককে অনুসন্ধান করতে বলেন।সে অনুসারে মঙ্গলবার রাজউক একটি হলফনামা দেন। আর দুদক জানায়, তারা তিন সদস্য দিয়ে ঘটনাটি অনুসন্ধান করছে। ইতোমধ্যে কমিটির পক্ষ থেকে রাজউকের কাছে এ ব্যাপারে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজউক আওতাধীন এলাকায় ৬৬ শতাংশ ভবন অপরিকল্পিত: মন্ত্রী
অন্যদিকে, রাজউকের হলফনামার একটি অংশে বলা হয়, গত ৬ ডিসেম্বর ম্যালিসিয়াস অ্যক্সেস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে রাজউকের কনস্ট্রাকশন পারমিট (সিপি) সিস্টেম শীর্ষক সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিডিসিএসলের ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত ২৬ হাজার ৭৭৭ নথি মুছে যায় এবং সিপি সিস্টেমটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২১ ডিসেম্বর সিস্টেমটি পুনরায় চালু করা হয়।এ বিষয়ে ২২ ডিসেম্বর রাজউক মতিঝিল থানায় জিডি করে। পাশাপাশি ২৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে বুয়েটের সঙ্গে একটি চুক্তি করে রাজউক।
বুয়েটের তদন্ত টিম ২৯ এপ্রিল এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দেয়। শীঘ্রই বুয়েটের তদন্ত টীম চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। মুছে যাওয়া সকল ফাইল পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদনসংক্রান্ত প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের আবেদনের নথিপত্র গায়েব হয়ে গেছে। ৬ ডিসেম্বর বিষয়টি প্রথম জানতে পারে রাজউক। এটি নিছক কারিগরি ত্রুটি, নাকি এ ঘটনায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জড়িত, সে বিষয়ে এখনো অন্ধকারে রাজউক। অন্যদিকে এই বিপর্যয়ের কারণ উদঘাটনে রাজউকের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ ঘটনার তিন সপ্তাহ পরও সরকারি এই সংস্থা কোনো তদন্ত কমিটিও করেনি।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মে থেকে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহক ভবন নির্মাণের অনুমোদন পেতে আবেদন করেছিলেন।
রাজউক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এসব নথি হারিয়ে যাওয়ার কারণে ওই গ্রাহকেরা নানা রকম ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। তবে নথি গায়েবের ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: হাতিরঝিলে স্থাপনা নিষিদ্ধ: আপিলের অনুমতি পেল রাজউক
ঢাকার দুই মেয়র ও রাজউক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রুল
দুর্নীতি মামলায় তারেক ও জোবায়দার বিচার শুরু
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। মামলায় তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমান পলাতক রয়েছেন।
এদিকে একই আদালত তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান আইনজীবী দিয়ে আইনি লড়াই করতে পারবেন না মর্মে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ২৯ মার্চ পলাতক এ দুই আসামির পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নিতে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার। আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য ৯ এপ্রিল তারিখ ধার্য করেন।
৯ এপ্রিল এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের পক্ষে মাসুদ আহমেদ তালুকদার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে শুনানিতে অংশ নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবাইদার দেশের বাইরে থেকে আইনি লড়াইয়ের সুযোগ নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য রাখেন। আজ আদালত তাদের আবেদনটি নামঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১ নভেম্বর একই আদালত তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত ১৯ জানুয়ারি তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: বিদেশে থেকে তারেক ও জোবায়দা আইনি লড়াই করতে পারবেন কিনা, আদেশ বৃহস্পতিবার
তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা: চার্জ শুনানি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি
বগুড়ায় ‘৫০০ কোটির বাড়ি’র মালিকের নামে দুদকের মামলা
বগুড়ার শিবগঞ্জের দেউলিতে ‘৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে’ নির্মিত বাড়ির মালিক সাখওয়াত হোসেন টুটুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ৯ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৮৬১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের হয়। দুদকের বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান বাদী হয়ে রবিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে এ মামলা করেন।
সাখওয়াত হোসেন এএইচজেডি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও বগুড়ার শিবগঞ্জের দেউলি গ্রামের মৃত আব্দুল হাই সরকারের ছেলে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় আ.লীগ নেতা দুলুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জানা যায়, সাখওয়াত হোসেন টুটুল তার গ্রামে শ্বেতপাথর দিয়ে প্রাসাদোপম বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ২০০৬ সাল থেকে ১০ বছর ধরে এক একর জমিতে বাড়িটি নির্মাণে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে কথিত আছে। তবে সেই বাড়িতে কেউ বসবাস করেন না। সাখাওয়াত সপরিবারে ঢাকায় থাকেন।
এর আগে ২০১৮ সালে ঢাকার মতিঝিল থানায় রূপালী ব্যাংকের দিলকুশা শাখা থেকে ৯৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম একটি মামলা করেন।
মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি কারাগারেও ছিলেন কিছু দিন।
দুদকের বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, সাখাওয়াত হোসেনকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ দেওয়া হলে তিনি ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
বিবরণীতে দেখা যায়, তার স্থাবর-অস্থাবর মিলে সম্পদের পরিমাণ ১৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৮৩৭ টাকা। কিন্তু যাচাইকালে তার স্থাবর-অস্থাবরসহ মোট গ্রহণযোগ্য সম্পদ পাওয়া যায় ৯ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার ৯৬৭ টাকার।
এই হিসাবে সাখাওয়াত জ্ঞাত-আয়বহির্ভূতভাবে ৯ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৮৬১ টাকার সম্পদ ভোগ-দখলে রেখেছেন।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করায় দুদক আইন-২০০৪ সালের ২৭-এর (১) ধারায় সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা দুলুর দুর্নীতি মামলার বিচার ১ বছরে শেষ করার নির্দেশ
বিএনপি নেতা মিনু, দুলুসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বগুড়ায় আ.লীগ নেতা দুলুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ১ কোটি ৬ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের অভিযোগে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য আসাদুর রহমান দুলুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ে সংস্থার সহকারি পরিচালক মো. তারিকুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
দুদক জানায়, দুলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর ২০২৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি ওই বছরের ২৫ জুলাই তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দুলুর দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে দেখা যায় তার স্থাবর অস্থাবর মিলে সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৯২ লাখ ৫২ হাজার ২৬৯ টাকা। কিন্তু যাচাইকালে আওয়ামী লীগের এই নেতার স্থাবর-অস্থাবর মিলে সম্পদ পাওয়া যায় ৩ কোটি ৭২ লাখ ৭৭ হাজার ২০৯ টাকার। তার পারিবারিক ঋণ ও খরচ বাদ দিলে দুলুর মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৭১ লাখ ৫২ হাজার ৩৬ টাকা। এই হিসেবে দুলু জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ১ কোটি ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৯০ টাকার সম্পদ ভোগ-দখল রেখেছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা দুলুর দুর্নীতি মামলার বিচার ১ বছরে শেষ করার নির্দেশ
মামলার বাদী দুদকের সহকারি পরিচালক মো. তারিকুর রহমান জানান, আওয়ামী লীগ নেতা দুলু অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ সালের ২৬ এর (২) ও ২৭ এর (১) ধারায় মামলা হয়েছে।
দুলু তার সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য, আয়ের উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে স্থানান্তর ও রূপান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (৩) (২) ধারায় অপরাধ করেছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু বলেছেন, ‘আমার তথ্য গোপন করার কিছু নেই। মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা রিজভী ও দুলুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বিএনপি নেতা মিনু, দুলুসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
চট্টগ্রামে দুদকের মামলা থেকে ৫ জনকে অব্যাহতি দিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন
চট্টগ্রামে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ-স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগের দায় থেকে সাবেক এক মন্ত্রীপুত্রসহ ৫ আসামিকে দায়মুক্তি দিতে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. আতিকুল হক।
এতে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) গ্রাহক ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে মুজিবুর রহমানসহ অন্য যাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন- কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ার ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত দক্ষিণ জোনের টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, ব্যবস্থাপক মুজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী।
চট্টগ্রাম আদালতের দুদকের জিআরও আবদুল লতিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: কৃষি ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তিনি বলেন, ‘দুদক একটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। মামলার প্রতিবেদন পাওয়ার পর মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিল এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।’
জমা দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দুদক উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায়, এম এ সালামের স্ত্রীর কোনও অভিযোগ না থাকায়, সরকার কোনও আর্থিক ক্ষতি না হওয়ায় এবং ঘুষ লেনদেনের কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।’
দুদক সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১০ জুন দুদকের চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ, স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা এম এ সালামের (বর্তমানে মৃত) নামে বরাদ্দ করা ১৮টি অব্যবহৃত দ্বৈত চুলার সংযোগ ছিল। এরমধ্যে ১২টি নগরের চান্দগাঁও থানার সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তর করা হয়। এ কাজে সালামের স্ত্রীর নামে ভুয়া চুক্তিনামা করা হয়। সালাম ও মুজিবুরের গ্রাহক সংকেত পৃথক হওয়ায় সংযোগ স্থানান্তরে আইনগত কোনও বৈধতা নেই। এছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে মুজিবুরের নামে আরও ১০টি নতুন সংযোগ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে ২০১৮ সালের ২ আগস্ট পর্যন্ত এসব সংযোগ দেওয়া হয়। মামলা করার পরদিন অবৈধভাবে দেওয়া ২২টি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কেজিডিসিএল।
আরও পড়ুন: চসিক কার্যালয়ে দুদকের অভিযান, মশার ওষুধ কেনায় অনিয়ম
দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া ৪৭৩ নথি আদালতে দাখিলের নির্দেশ