হাইকোর্ট
সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চিকিৎসক বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলিকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসকের ‘অবহেলায়’ মারা যাওয়া নবজাতকের মায়ের মৃত্যু
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন ডা. বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলি।
জানা যায়, সেন্ট্রাল হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার (গাইনি) অধীনে গত ৯ জুন ভর্তি হয়েছিলেন মাহাবুবা রহমান আঁখি। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে ছিলেন না। পরে তার দুই সহযোগী চিকিৎসক আঁখির সন্তান প্রসব করানোর চেষ্টা করেন। জটিলতা দেখা দেওয়ায় নবজাতককে এনআইসিইউতে রাখা হয়। একইসঙ্গে আঁখির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পরে গত ১০ জুন বিকালে আঁখির নবজাতক সন্তান মারা যায়। এ ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ধানমন্ডি থানায় অবহেলা জনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়।
এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১৮ জুন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখিও।
ওই মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ডা. বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলি।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু: অপারেশন থিয়েটার বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
আঁখি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর জন্য সেন্ট্রাল হাসপাতাল দায়ী: ডা. সংযুক্তা সাহা
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন রিটটি দায়ের করেন।
বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবারের কার্যতালিকায় বিষয়টি শুনানির জন্য ৫৬ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গত ৬ জুন ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে দানকর দিতে হবে: হাইকোর্ট
অন্যরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান এবং পরিচালক নূর জাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
এই মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের কার্যালয় পরিদর্শন করে শ্রম আইনের লঙ্ঘন দেখতে পান। একই বছরের ১৯ আগস্ট অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গ্রামীণ টেলিকমকে চিঠি দেওয়া হয়।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে ৬৭ জন কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করার কথা থাকলেও গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এছাড়া কর্মচারী অংশীদারিত্ব ও কল্যাণ তহবিল গঠন এবং কোম্পানির পাঁচ শতাংশ লভ্যাংশ কর্মচারীদের পরিশোধ করা হয়নি।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এসএম আরিফুজ্জামান বিচারিক আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
মুনাফা-লোভভিত্তিক আমাদের এই সভ্যতা নিশ্চিত আত্মহননের পথে এগিয়ে চলেছে: ড. ইউনূস
জাহাঙ্গীরকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত আইনানুগ ছিল না: হাইকোর্ট
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া আইনানুগ ছিল না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রবিবার (১৮ জুন) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
জাহাঙ্গীরের আইনজীবী এতথ্য নিশ্চিত করেন। আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে সময় আবেদন করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল।
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে হাইকোর্টে রিট
গত বছরের ১৪ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম পদ ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। রিটে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ব্যারিস্টার মশিউর রহমান সবুজ জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এ রিট করেন।
পরে একই বছরের ২৩ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এরপর গত ১৫ মার্চ এ রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। আজ রবিবার হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য মেয়র জাহাঙ্গীরকে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এরপর গত বছর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি রিট করেন।
রিট বিচারাধীন অবস্থায় গত বছর ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে জাহাঙ্গীর আলমের ক্ষমা ঘোষণা করে দলটি।
গত ২১ জানুয়ারি সে ক্ষমা ঘোষণার চিঠি পান জাহাঙ্গীর আলম।
এরপর গত ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন (ইসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটির ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন।
ভোটগ্রহণ ২৫ মে।
তবে ঋণ খেলাপীর অভিযোগে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে তার মায়ের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচনেতার মা মেয়র পদে বিজয়ী হন।
আরও পড়ুন: শীর্ষ মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
দুর্নীতিবাজদের সহ্য করা হবে না: হাইকোর্ট
শীর্ষ মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
দেশের শীর্ষ মাদক কারবারিদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এক মাসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দিতে হবে।
একইসঙ্গে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকাসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদনে মাদক কারবারির মাধ্যমে অর্থপাচার সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানেরও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- (সিআইডি), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট –(বিএফআইইউ), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড –(এনবিআর) ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে এই অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রবিবার অর্থ পাচার বিষয়ে বিচারাধীন এক রিটে সম্পূরক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে হাইকোর্টে রিট
রুলে মাদক কারবারির মাধ্যমে অর্থ পাচারকারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইন অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং মাদক কারবারির মাধ্যমে অর্থ পাচারকারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এর আগে ১৩ জুন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দি দাস এই সম্পূরক আবেদন করেন।
গত ১১ জুন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ থেকে মাদকের কারণে প্রতিবছর পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। আর মাদক কেনাবেচা করে অর্থ পাচারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। এশিয়ার দেশগুলো বিবেচনায় নিলে মাদকের মাধ্যমে অর্থ পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ একেবারে শীর্ষে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুন আঙ্কটাড (ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) তাদের ওয়েবসাইটে অবৈধ অর্থপ্রবাহ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে। যার বরাত দিয়ে দেশের প্রায় সব জাতীয় দৈনিকসহ গণমাধ্যম খবর-প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাদকের অবৈধ অর্থপ্রবাহের দিক থেকে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো। এরপর যথাক্রমে রয়েছে কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু ও বাংলাদেশ।
মাদক এবং অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনওডিসির সহায়তায় এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাদকের মাধ্যমে অবৈধ অর্থপ্রবাহের অনুমানভিত্তিক এই হিসাব করেছে আঙ্কটাড।
তালিকায় এশিয়ার যে পাঁচটি দেশের নাম রয়েছে, এর মধ্যে শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের পরেই আছে মালদ্বীপ ও নেপাল। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার। মূলত ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মাদকের মাধ্যমে অবৈধ অর্থপ্রবাহের এই চিত্র প্রথমবারের মতো তুলে ধরে আঙ্কটাড।
আরও পড়ুন: বাফুফে’র দুর্নীতি, অর্থ পাচারের বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো মতামত প্রকাশ নয়: হাইকোর্ট
দুর্নীতিবাজদের সহ্য করা হবে না: হাইকোর্ট
৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘কারা এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, কারা এই সার আত্মসাৎ করেছে- সুনির্দিষ্ট করে তাদের নাম দিন। দুর্নীতিবাজদের সহ্য করা হবে না।
আদালত আরও বলেন, ‘দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখানো হবে না। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে ধরে সরাসরি জেলে পাঠিয়ে দেব।’
বিসিআইসির পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে শুনানিকালে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। আদালত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে বিসিআইসি’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোল্লা কিসমত হাবিব। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
গত ৪ জানুয়ারি ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরের দিন প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে হাইকোর্টে রিট
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা। মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। পোটন ট্রেডার্স যে সার আত্মসাৎ করেছে, তা উঠে এসেছে সারের আমদানিকারক শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) দুটি তদন্তে। সারগুলো খালাস হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ মের মধ্যে। সার সরবরাহ না করার পর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বিসিআইসি। সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বিসিআইসির পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়।
হাইকোর্ট প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বাফুফে’র দুর্নীতি, অর্থ পাচারের বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো মতামত প্রকাশ নয়: হাইকোর্ট
পাশাপাশি ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করে শিল্পসচিব ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যানকে চার মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে বিসিআইসির পক্ষে আইনজীবী মোল্লা কিসমত হাবিব, দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে ছিলেন।
শুনানিতে বিসিআইসির আইনজীবী মোল্লা কিসমত হাবিব বলেন, প্রতিবেদন এসেছে, তবে হলফনামা করতে পারেনি।
আদালতের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রতিবেদনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। বিসিআইসির আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ওই ঘটনায় কারা জড়িত? নাম–ঠিকানা পাওয়া যায়নি? মানুষ আত্মসাৎ করেনি? তাহলে বাতাস খেয়ে ফেলেছে? তদন্ত প্রতিবেদনে নাম উল্লেখ না থাকলে এর কী দাম আছে? এ সময় বিসিআইসির আইনজীবী বলেন, আত্মসাৎ হয়েছে। আদালত বলেন, সুনির্দিষ্ট করে বলেন। তখন বিসিআইসির আইনজীবী বলেন, মেসার্স পোটন ট্রেডার্সের পোটন নিজে জড়িত। আদালত বলেন, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না, সে যে–ই হোক।
শুনানিতে অগ্রগতি জানাতে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এক দিনের সময়ের আরজি জানান। এই পর্যায়ে আদালত আগামী রোববার শুনানির দিন রাখার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তখন বিসিআইসির আইনজীবী মোল্লা কিসমত হাবিব বলেন, অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি অনেক পৃষ্ঠার, হলফনামা করে আগামী রোববার দাখিল করা প্রায় অসম্ভব। অবকাশ শেষে দিন রাখার আরজি জানান তিনি। পরে আদালত আগামী ৯ জুলাই শুনানির পরবর্তী দিন রাখেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে হাইকোর্টে রিট
থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জনস্বার্থে হাইকোর্টে হিউম্যান রাইটস্ অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট সংযুক্ত করে এ রিট আবেদন দায়ের করে।
রিট আবেদনকারীরা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী এবং অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া।
রিটের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করা হবে।
রিটে থ্যালাসেমিয়া রোগ বিস্তার রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং বিবাহ রেজিস্ট্রি ফরমে বর-কনের থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কিত তথ্য কেন লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারি করার আবেদন জানানো হয়েছে।
এছাড়া রিটে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ বন্ধে গাইডলাইন তৈরি করার জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন এবং কমিটির ড্রাফট গাইডলাইন ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
থ্যালাসেমিয়া রোগ বিস্তার রোধে ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ জনগণ, সরকারি কর্মচারী ও অন্যান্য পেশার মানুষদের মধ্যে প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য বিবাদীদের ওপর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মহাপরিচালকসহ মোট ৮ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, থ্যালাসেমিয়া জিনগত অর্থাৎ বংশানুক্রমিক রোগ। এই রোগ থ্যালাসেমিয়ার জিনবহনকারী দুই বাবা-মায়ের মাধ্যমে সন্তানের দেহে সংক্রমিত হয়। তবে সচেতনতার অভাব এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অপ্রতুলতার কারণে দুই থ্যালাসেমিয়া জিন বাহকের বিয়ে বন্ধ করতে না পারায় এই রোগ ক্রমেই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে বিস্তার লাভ করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগ সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুই থ্যালাসেমিয়া জিন বাহকের বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে এই রোগ প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, বাবা-মায়ের একজনও যদি থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক না থাকে বা সুস্থ থাকে তা হলে তাদের পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে এই রোগ সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন চিকিৎসা বিষয়ক জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি অর্থাৎ ১ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ থ্যালাসেমিয়া বাহক বা রোগী। এছাড়াও প্রতি বছর আরও ৭ হাজারের বেশি নতুন শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগের জিনসহ জন্মগ্রহণ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানের মাত্র ১০ শতাংশ বাহককে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আগামী ৫০ বছরে এই সংখ্যা ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে। দেশ ও জাতি হবে মেধাশূন্য, কমে যাবে মানুষের কর্মক্ষমতা।
থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক পরিবারের পক্ষেই তা বহন করা সম্ভব হয় না। কারণ চিকিৎসায় রোগীকে প্রায় প্রতি মাসেই এক বা একাধিকবার রক্ত দিতে হয়। ২০১৭ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে একজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য শুধু রক্ত সঞ্চালনের জন্য তার পরিবারকে বছরে প্রায় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। আরেক ধরনের চিকিৎসা হলো অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এই চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত মাত্র দুজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
অর্পিত সম্পত্তির তদারকি-লিজের ক্ষমতা ডিসিদের: হাইকোর্ট
বাফুফে’র দুর্নীতি, অর্থ পাচারের বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো মতামত প্রকাশ নয়: হাইকোর্ট
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) দুর্নীতি-অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, ব্যারিস্টার সুমনসহ যেকোন গণমাধ্যমকে কোন ধরণের মতামত প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৪ জুন) সালাউদ্দিনের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই হাত হারানো শিশুকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
আদালতে কাজী সালাউদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির। অপর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ব্যারিস্টার অনিক আর হক জানিয়েছেন, দুদকের অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোন মতামত প্রকাশ করতে পারবে না মর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ১৫ মে হাইকোর্ট বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন।
ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির পক্ষে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। চার মাসের মধ্যে এ অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদকের চেয়ারম্যান, বিএফআইইউ প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বাফুফের কর্তা-ব্যক্তিদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
এই রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাফুফে’র দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বিষয়ে কোন ধরণের মতামত প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিষয়ে প্রচারিত পাবলিক ডোমেইনে থাকা ভুয়া ও মানহানিকর তথ্য অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়।
আবেদনে কাজী সালাউদ্দিনের মৌলিক অধিকার হিসেবে মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না ও তার বিরুদ্ধে মানহানি ও যে কোনো ভুয়া তথ্য তৈরি এবং প্রচার থেকে বিরত রাখতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
একইসঙ্গে ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং পলিসি ২০১৪ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিতে আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সেই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় পাবলিক ডোমেইনে থাকা কাজী সালাউদ্দিনেকে নিয়ে করা মানহানিকর ও ভুয়া তথ্য অপসারণ করতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে কাজী সালাউদ্দিনের বিষয়ে মানহানিকর ও ভুয়া তথ্য প্রচারে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন, একাত্তর টিভি, একাত্তর টিভির স্পোর্টস ইনচার্জ এহসান মাহমুদ, যুগান্তরের সিনিয়র স্পোর্টস জার্নালিস্ট মোজাম্মেল হক চঞ্চল, গ্লোবাল স্পোর্টসের সমন্বয়ক শাকিল মাহমুদ চৌধুরী, নীলফামারী জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি আরিফ হোসেন মুন, একাত্তর টিভির স্পোর্টস জার্নালিস্ট মেহেদী নাইম, পার্থ বণিক, মাহমুদুল হাসান সজিব, অর্ণব বাপ্পী, এহতেশাম সবুজ, মেহেদী হাসান, ফাহিম হাসান, রিয়াসাদ আজিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, কহিনুর কনাকে বিবাদী করা হয়। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ বিষয়ে মতামত প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি হত্যা মামলায় দুই আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৩ জুন) তাদের আগাম জামিনের জন্য আবেদন করা হলে বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকার্ট বেঞ্চ কার্যতালিকা থেকে তা বাদ দেন।
দুই আসামি হলেন- মো. সোহেল ও শামসুল হায়দার উজ্জ্বল।
আরও পড়ুন: 'পাকিস্তান' শব্দ যুক্ত থাকা আইনের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. কামাল হোসেন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া জানান, আসামিদের আগাম জামিন না দিয়ে আবেদন কার্যতালিকা থেকে ডিলিট করে জামিন আবেদন ফেরত দেন।
এর আগে গত ৫ জুন এ মামলায় ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযুক্ত দাখিল করে ডিবি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তদন্তে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলেও এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তাই তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। বাকি ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আগামী ১৫ জুন মামলাটির পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।
গত বছর ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজার সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলা ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজছাত্রী প্রীতি। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: বায়ু দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচান: পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট
টিপু-প্রীতি হত্যা: বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর তদন্ত ২ মাসের মধ্যে শেষ করুন: হাইকোর্ট
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আরও দুই মাস সময় বেধে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে সময় চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেছেন, এটা সেনসিটিভ বিষয়। দুই মাস ক্রস করবেন না। দুই মাস কিন্তু দুই মাসই। আর দেরি করবেন না।
আরও পড়ুন: জেসমিনের মৃত্যু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনে নয়: চিকিৎসক
এর আগে গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্টের উপরোক্ত বেঞ্চ আটকের পর র্যাব হেফাজতে নওগাঁর সুলতানা জেসমিন নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
কমিটিতে নওগাঁর জেলা জজ পদ মর্যাদার একজন এবং সেখানকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখতে বলা হয়। তদন্ত সম্পন্ন করে কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। তদন্তকালীন সময়ে জেসমিনকে আটকের সঙ্গে র্যাবের যেসব সদস্য জড়িত ছিলেন তাদেরকে দায়িত্ব পালন থেকে সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে মামলা ছাড়াই সুলতানা জেসমিনকে তুলে নেওয়া ও পরবর্তী পদক্ষেগুলো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান ও তৌফিক সাজাওয়ার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের পক্ষে দুই মাস সময়ের আরজি জানিয়ে শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে (সমন্বয় ও সংস্কার) আহ্বায়ক করে গত ২২ মে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটি রাজশাহী ও নওগাঁ সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে।
আদালত বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া কি সম্পূর্ণ হয়েছে? তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এভিডেন্স ও তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হয়নি।
কমিটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় বাড়ানোর প্রার্থনা করেছে।
আদালত বলেন, কমিটি কবে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল? জবাবে সমরেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত ২৯ থেকে ৩১ মে।
যেসব মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে, তা জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর ফরেনসিক টেস্ট করা হবে। সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, গত ৫ এপ্রিল আদালত আদেশ দেন। ২২ মে কমিটি গঠন করা হয়। আদালতের আদেশের পর এক মাসের বেশি সময় লেগেছে কমিটি গঠন করতে। ধীরগতিতে করেছে। এক মাস সময় দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, নওগাঁ ও নাটোরের র্যাবকে বিবাদী করে রিট আবেদনকারী রিট করেন। এটি সংশোধন করতে হয়েছে, যা রিট আবেদনকারী আদালতে আনেননি।
দুই মাস সময় দিলে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা যাবে।
এ সময় আদালত বলেন, বিষয়টি সেনসিটিভ। বারবার সময় নেওয়া যাবে না। দুই মাস কিন্তু দুই মাস। এর মধ্যে শেষ করবেন। পরে আদালত দুই মাস সময় দিয়ে আদেশ দেন।
স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁ শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে।
এনামুল হককে সঙ্গে নিয়েই র্যাব ওই অভিযান চালায়।
এনামুল হকের অভিযোগ, সুলতানা জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্ন ব্যক্তিকে।
আটকের পর সুলতানা জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে তাঁকে নওগাঁর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহীতে নেওয়া হয়। ২৪ মার্চ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
পরিবারের অভিযোগ, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে।
সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর জানা যায়, তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হক একটি মামলা করেছেন, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ বিকেলে। এ মামলার আসামি জেসমিন ও তাঁর কথিত সহযোগী মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট আল-আমিন।
এদিকে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর গত ২৭ মার্চ হাইকোর্টের নজরে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।
পরে আদালতের নির্দেশে ২৮ মার্চ তিনি হাইকোর্টে এ বিষয়ে রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ ও র্যাবের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে মৃত্যু: জেসমিনের ছেলে ও ভগ্নিপতিকে জিজ্ঞাসাবাদ
শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া কয়েকজন আসামি ও তাদের স্বজনদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ৭২ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনায় শরীয়তপুরের নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির এবং পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমকেও তলব করা হয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই তাদের সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তাফসির আউয়ালকে বিদেশ যেতে বাধা না দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
হাজির হয়ে উচ্চ আদালতের আগাম জামিনের পরও কেন গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করে ৭২লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে এবং আসামিদেরকে কেন জামিন দেওয়া হয়নি তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এক ফৌজদারি বিবিধ আবেনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান।
এর আগে গত ১১ জুন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান।
তখন আদালত বলেন, লিখিত আবেদন দাখিল করুন। আমরা ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। পরে তিনি লিখিত আবেদন করেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া কয়েকজন আসামি ও তাদের স্বজনদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ৭২ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির এবং পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়।
ভুক্তভোগীর বড় ভাই আবু জাফর ঠান্ডু জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোহাম্মদ বদিউজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
এছাড়া ঘটনায় অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মে দ্রুত বিচার আইনে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানায় একটি ছিনতাই মামলা হয়। মামলায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা আহম্মেদ চোকদার কান্দি এলাকার সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদারসহ নয়জনকে আসামি করা হয়।
সেই মামলায় ২৯ মে সাদ্দাম, বকুল, সাইদুল উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই হাত হারানো শিশুকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
জামিনে আসার পর ৩০ মে রাতে তারা এ মামলার আরেক আসামি আনোয়ারকে নিয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জ সাদ্দামের বন্ধু আলমগীর চোকদারের বাসায় যান। ওইদিন রাতে তথ্য পেয়ে সেই বাসায় হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারীসহ ১০-১২ পুলিশ সদস্য।
অভিযোগে বলা হয়, এ সময় সাদ্দাম তাদের জামিনের কাগজ দেখালে তা ছিঁড়ে ফেলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। পরে পুলিশ সাদ্দাম ও বকুলকে লাথি, কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড়সহ পুলিশের লাঠি (ডান্ডা), কাঁঠ, হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়।
সাদ্দাম পানি পান করতে চাইলে ছোট ভাই বকুলকে দাঁড় করিয়ে মুখে প্রস্রাব করতে বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির। পরে সাদ্দামের শরীরে প্রস্রাব করেন বকুল। এমন নির্যাতন চলে রাত ১টা থেকে পরদিন ৩১ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কিছুক্ষণ পর ওই চারজনকে গামছা ও কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে গাড়িতে করে জাজিরা প্রান্তে পদ্মাসেতুর নিচে আনা হয়। পরে সাদ্দাম ও বকুল এবং সাইদুল ও আনোয়ারকে পৃথক দুই স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসি সাদ্দাম-বকুলকে বলেন, সাইদুল-আনোয়ারকে ক্রসফায়ার দিয়ে দিয়েছি। তোরা ৭২ লাখ টাকা দিবি, তা না হলে তোদেরও ক্রসফায়ার দিয়ে দেওয়া হবে।
এভাবে সারাদিন রেখে রাতে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানায় এনে ৭২ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে বেত ও কাঁঠ, কোদালের বাট, লাঠি দিয়ে আবার বেধড়ক মারা হয় সাদ্দাম ও বকুলকে। সারারাত চলে এ নির্যাতন।
এরপর টাকার জন্য বকুলের স্ত্রী সানজিদা, দুই বছরের সন্তান, বাবা রশিদ চোকদার, মা রমেলা ও চাচাতো ভাই আবু জাফর ঠান্ডুকে থানায় এনে সারারাত আটকে রাখা হয় এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
পরে আত্মীয়-স্বজনরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসির কাছে পাঁচটি চেকের মাধ্যমে ৭২ লাখ টাকা দিলে নির্যাতন থেকে মুক্তি মেলে সাদ্দাম ও বকুলের।
এ দুই দিন যন্ত্রণায় চিৎকার করলেও তাদের খাবার ও ওষুধ দেয়নি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসি।
আরও পড়ুন: অর্পিত সম্পত্তির তদারকি-লিজের ক্ষমতা ডিসিদের: হাইকোর্ট