হাইকোর্ট
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই হাত হারানো শিশুকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই হাত হারানো ঢাকার ধামরাইয়ের বর্ণমালা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো. শেখ সাদিকে কেন ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে সোমবার (১২ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এছাড়া সাত দিনের মধ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, মো. শেখ সাদি ধামরাই বর্ণমালা স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। গত বছরের ১৫ জুলাই দুপুর ১২টার সময় মো. শেখ সাদি ধানসিঁড়ি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত একটি পুকুরে গোসল করতে যায়। সে গোসল করার জন্য পুকুরে ঝাঁপ দেয়, এসময় পানির ওপর ঝুলন্ত বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে তার উভয় হাতে আগুন ধরে যায়। তার চিৎকারে আশপাশে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে পাঠান।
তিনি বলেন, শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তার জীবন বাঁচাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক শেখ সাদির উভয় হাত কাঁধ থেকে কেটে ফেলে দেয়। দুর্ঘটনাস্থলে ও তার আশপাশে বিভিন্ন সময় পল্লী বিদ্যুতের তার ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। স্থানীয় লোকজন অনেকবার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ধামরাই জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারকে ওই এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
আরও পড়ুন: অর্পিত সম্পত্তির তদারকি-লিজের ক্ষমতা ডিসিদের: হাইকোর্ট
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ধামরাইয়ের অবহেলায় শেখ সাদি তার উভয় হাত হারিয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কোনোভাবেই ঘটনায় দায়দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না।
মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, গত ২ মার্চ শেখ সাদির বাবা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি আবেদন করে। কিন্তু কোনো জবাব না পেয়ে গত ২ মে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বরাবর ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
রিটে শেখ সাদির চিকিৎসা খরচ বাবদ বিশ লাখ টাকা, দুর্ঘটনার কারণে যন্ত্রণা ও দুভোর্গের জন্য দশ লাখ টাকা, কর্মক্ষমতা হারানো বাবদ এক কোটি বিশ লাখ টাকা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে শেখ সাদির চিকিৎসার সকল খরচ বহন এবং ভবিষ্যতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। পড়াশুনার জন্য বিশেষায়িত সুবিধা এবং ভবিষ্যতে শেখ সাদিকে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করারও দাবি করা হয়েছে এই রিটে।
আরও পড়ুন: তাফসির আউয়ালকে বিদেশ যেতে বাধা না দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
যমুনা নদী প্রকল্প নিয়ে করা রিট খারিজ
যমুনা নদী ছোট করার জন্য নেওয়া প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে করা রিট আবেদন খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।
যমুনা নদী ছোট করা হচ্ছে না বলে হাইকোর্টকে জানানোর পর সোমবার (১২ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছিলেন অরবিন্দ কুমার রায়।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা,প্রকল্পের সব নথি হাইকোর্টে তলব
এছাড়া, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
মনজিল মোরসেদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে বলেছে, ভবিষ্যতে যে প্রজেক্ট নেওয়া হবে সেখানে যমুনা নদী ছোট করার কোনো পরিকল্পনা থাকবে না।
তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম যাতে নদী ছোট করা না হয়। ভবিষ্যতে কোন পক্ষই আর সাহস পাবেনা নদী ছোট করার।
এর আগে রবিবার যমুনা নদী ছোট করার পরিকল্পনা নেই বলে হাইকোর্টকে প্রতিবেদন দিয়ে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পরে এই বিষয়ে আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করা হয়।
এর আগে গত ১২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘যমুনাকে ছোট করতে চায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যমুনা নদী প্রতিবছর বড় হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার সময় নদীটি ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার হয়ে যায়। এত বড় নদীর প্রয়োজন নেই। তাই এটির প্রশস্ততা সাড়ে ৬ কিলোমিটার সংকুচিত করা হবে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনাকে ছোট করার এমন আইডিয়া এসেছে খোদ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের মাথা থেকে।
এজন্য তারা ১১শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও প্রণয়ন করেছেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে যখন বারবার ব্যয় সংকোচনের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে, সে সময় মন্ত্রণালয় এমন প্রকল্প নিয়েছে কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই।
এছাড়া বিশেষজ্ঞরা বিরল এ প্রকল্পকে অবাস্তব বলছেন।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী সংকীর্ণকরণ প্রকল্প বাতিলের দাবি বিএনপির
বেলকুচিতে অবৈধভাবে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন, ২ জনের কারাদণ্ড
তাফসির আউয়ালকে বিদেশ যেতে বাধা না দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাফসির মোহাম্মদ আউয়ালকে বিদেশ যেতে বাধা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি করে তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেন।
বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালতে তাফসির আউয়ালের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব।
আরও পড়ুন: ৪২ ঘন্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত; পুলিশ সুপার যোগাযোগ করায় অসন্তোষ হাইকোর্টের
গত ১ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাফসিরকে যুক্তরাজ্যে যেতে ইমিগ্রেশন পুলিশ বাধা দেয়। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক তাফসির মোহাম্মদ আউয়ালের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন পুলিশের বাধার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন তাফসীর আউয়াল। নির্বিঘ্নে বিদেশ যেতে ও দেশে ফিরে আসতে নির্দেশনা চেয়ে তাফসির ২ মার্চ ওই রিট করেন।
এই রিটের প্রাথমিক শুনানি করে তাফসির আউয়ালকে গত ১ মার্চ বিদেশ যেতে বাধা দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট আজ (বুধবার) রায় দেন।
আইনজীবী জানান, ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর দুদক এক স্মারকের সূত্রে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে তাফসিরের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই স্মারক ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এর আগে আপিল বিভাগ এ বিষয়ে নির্দেশনাসহ রায় দিয়েছেন। রায়ে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের তিনদিনের মধ্যে দুদককে আদালত থেকে অনুমতি নেওয়ার কথা বলা রয়েছে। এ অবস্থায় ২০২০ সালের ৪ অক্টোবরের ওই স্মারক দেখিয়ে ১ মার্চ তাফসিরকে যুক্তরাজ্যে যেতে বাধা দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
দেশের কারাগারগুলোয় আগামী ১ মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৬ জুন) এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কারা কর্তৃপক্ষকে শূন্য পদে কারা চিকিৎসক নিয়োগের অগ্রগতি এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান।
মঙ্গলবার (৬ জুন) শুনানিকালে এখন কারা হাসপাতালগুলোতে কতজন চিকিৎসক আছেন-আদালতের এমন প্রশ্নে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১২৫ জন।
তখন আদালত জানতে চান, বাকিগুলো পূরণ করছেন কিভাবে?
জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, শূন্যপদ পূরণের কাজ চলছে।
আদালত তখন বলেন, কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ।
আদালত আরও বলেন, শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকে না।
ধনীরা কারাগারে গেলেও তাদের জন্য ডিভিশনের ব্যবস্থা থাকে। গরিবদের বাঁচান।
এরপর কারা চিকিৎসক নিয়োগের বিধিমালা চূড়ান্ত করা কথা বলে আদালত কারা কর্তৃপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা এক মাস পর তারিখ রাখছি। এর মধ্যেই চূড়ান্ত করবেন। এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর আদালতে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬৮ কারাগার এবং কারা হাসপাতালে ১৪১টি চিকিৎসকের পদের বিপরীতে প্রেষণে ও সংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৯৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
এরপর আদালত শূন্য পদগুলোতে অবিলম্বে কারা চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেন।
এর ধারাবাহিকতায় মামলাটি কার্য তালিকায় আসে। ২০১৯ সালে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
তখন আদালত কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে কারাগারের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক নিয়োগসহ কারাগারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে কারাগারে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা জানায়। পরে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
৪২ ঘন্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত; পুলিশ সুপার যোগাযোগ করায় অসন্তোষ হাইকোর্টের
পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিল অফিস নির্মাণের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এই আদেশের ফলে পুকুরটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকবে।
স্থিতাবস্থা জারির আদেশ কার্যকর করে বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রেক্ষিতে সোমবার (৫ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহী সিটির ৯৫২ পুকুর সংরক্ষণের নির্দেশ
রুলে পুকুরটি রক্ষা করতে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ গোষণা করা হবে না, সিএস ও আর এস রেকর্ড অনুযায়ী পুকুরটি সংরক্ষণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং পুকুরের মধ্যে যেসব স্থাপনা করা হয়েছে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার সচিব, পরিবেশ সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
এর আগে গতকাল পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট, কাউন্সিল অফিস নির্মাণ বন্ধ করে পুকুরটি সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
রিটে পুকুর দখলের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ রিট দায়ের করেন। রিটে গত ৩ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিলর অফিস’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ১৯৬৩ সালে ১৩ দশমিক ৫৭ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এর মধ্যে দুই একরের একটি পুকুরও ছিল।
এলাকাবাসী খাওয়ার পানি সংগ্রহ থেকে ধোয়া-মোছাসহ নানাকাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। পুকুর থেকে মাছও ধরতেন তারা। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সেই পুকুরটি ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে প্রায় ভরাট করে ফেলা হচ্ছে।
চারপাশে ছোট ছোট মার্কেট, দোকান ও রিকশার গ্যারেজও গড়ে তোলা হয়েছে। দখল নিশ্চিত করতে পুকুরের একটি অংশ ভরাট করে নির্মিত দোতলা ভবন স্থানীয় ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহানা আক্তারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পরিবেশ সংরক্ষণে টিলাকাটা ও পুকুর ভরাট বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বছরের পর বছর ধরে দখল চললেও উচ্ছেদ না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গত শুক্রবার পুকুর রক্ষার দাবিতে আয়োজিত পুকুর ঘেরাও কর্মসূচি ও মানববন্ধন পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। কর্মসূচি পালন না করে ফিরে গেছেন এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
পুকুরটি রক্ষায় এলাকাবাসী সিটি করপোরেশন ও রাউজকে বিভিন্ন সময় চিঠি দিয়েছে। এতে পুকুরটি সংরক্ষণ করে সুপেয় পানি ও অগ্নিকাণ্ডে পানি সরবরাহ এবং অবৈধ অংশ উদ্ধার করে চারদিকে দেয়াল দিয়ে পুকুর রক্ষার দাবি জানানো হয়।
তবে এসব চিঠি কিংবা দাবি-দাওয়ায় টনক নড়েনি সংশ্লিষ্টদের।
এলাকাবাসী জানান, ২০০৪ সালেও রাজউকের পুকুরে গোসল করেছেন তারা। এরপর থেকেই মূলত পুকুরটি প্রভাবশালীদের দখলে চলে যেতে থাকে। দখলের শুরুতে পুকুরটিতে প্রচুর আবর্জনা ফেলা হয়।
গৃহস্থালি থেকে শুরু করে সব ধরনের বর্জ্যে পুকুরটি ভরে ওঠে। তারপর স্থানীয় প্রভাবশালীরা পুকুরপাড়ে টং দোকান ও রিকশার গ্যারেজ নির্মাণ করেন।
তখন পুকুরটির ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
গেন্ডারিয়া পুকুরের চারপাশ মার্কেট, কংক্রিটের দোকান ও রিকশার গ্যারেজে ঘেরা।
স্থানীয়রা মনে করেন, পুকুরের পাড় দখল করে দোকান তৈরি করা হলেও এখনো পুকুরের বড় অংশই দৃশ্যমান। ধীরে ধীরে ভেতরের অংশ দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই চারপাশে মার্কেটের প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।
কয়েকজন দোকানি বলেন, এখানে দেড়শ থেকে দুইশ দোকানের ভাড়া তোলেন বর্তমান কাউন্সিলরের বাবা ও সাবেক কাউন্সিলর সাইদুর রহমান সহিদ।
রাজউকের সম্পত্তি বিভাগ জানিয়েছে, পুকুরটি রাজউকেরই। এটি দখলে নেওয়ার জন্য প্রভাবশালীরা ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলছে।
তবে গেজেটভুক্ত সম্পত্তি হওয়ায় পুকুরটি দখলে নিতে পারছেন না দখলদাররা।
এছাড়া অবৈধ দখল উচ্ছেদে রাজউকের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে পুকুর থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সীমানা পিলার উদ্ধার
ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের কর ফাঁকির বিষয়ে ৩ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ
ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের কর ফাঁকির বিষয়ে কর আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এদিকে আদালত কামাল হোসেন এন্ড অ্যাসোসিয়েটসের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করতে এবং আপিলটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছেন।
এছাড়া এ বিষয়ে করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের বেঞ্চ এই রায় দেন।
আরও পড়ুন: সরকার যেনতেন নির্বাচনের ‘পাঁয়তারা’ করছে: ড. কামাল হোসেন
রায়ের ব্যাপারে কামাল হোসেন এন্ড অ্যাসোসিয়েটসের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন বলেছেন, কর ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে আমরা ট্যাক্সেস আপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করেছিলাম।
তিনি বলেন, ডিপোজিট জমা দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে আমাদের আপিল গ্রহণ করেনি আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে আমরা সেটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করি। অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স দেওয়া হয়েছিল, আমরা সেটাকে ডিপোজিট হিসেবে গ্রহণ করতে বলি।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট সোমবার রিট আবেদনটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দিয়েছেন। আমরা যেটা চেয়েছিলাম, সেটাই আদেশ দিয়েছেন। আমাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করতে কর আপিল ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দিয়েছেন।
একই সঙ্গে আপিলটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন।
জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ড. কামাল হোসেন ১ কোটি ৪ লাখ ৩ হাজার ৪৯৫ টাকা আয় দেখিয়ে রিটার্ন দাখিল করেন। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ২১৯ টাকার সম্পদ দেখিয়ে ৬ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজা ৩১৫ টাকা ট্যাক্স এবং সুদ ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা দাবি করে।
২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাজস্ব বোর্ডের এক ডেপুটি কমিশনারের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করেন কামাল হোসেন এন্ড অ্যাসোসিয়েটস।
ওই আপিল শুনানি শেষে ২০২০ সালের ২৫ জুন খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর যুগ্ম কমিশনারের ওই আদেশের বিরুদ্ধে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কর আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন।
কিন্তু আইনে নির্ধারিত নির্দিষ্ট পরিমাণ ডিপোজিট জমা না করার কারণ দেখিয়ে আপিল ট্রাইব্যুনাল সেই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ না করেই খারিজ করে দেয়।
পরে গত বছরের জুনে কর আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে কামাল হোসেন এন্ড অ্যাসোসিয়েটস।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল চান ড. কামাল হোসেন
রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাৎ করতে চান ড. কামাল হোসেন
৪২ ঘন্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত; পুলিশ সুপার যোগাযোগ করায় অসন্তোষ হাইকোর্টের
উচ্চ আদালতের সঙ্গে পুলিশ সুপার যোগাযোগ (ফোন) করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, বেশি স্বচ্ছতার জন্য যোগাযোগ করে? এটি পেশাগত অসদাচরণ।
সোমবার মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল হত্যা মামলাটি পুনরায় তদন্তের অগ্রগতি-বিষয়ক শুনানিকালে বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
পরে তদন্ত কর্মকর্তার সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়ে এ হত্যা মামলাটির পুনঃতদন্তের অগ্রগতি জানাতে বলেছেন।
‘লাশ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত’ শিরোনামে গত ২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়।
আরও পড়ুন: এবি ব্যাংকে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
প্রতিবেদনটি যুক্ত করে মামলার নথি তলবের নির্দেশনা চেয়ে আসামি সোহেল ওরফে নুরুন্নবী ও বাদী চম্পা আক্তার ওরফে অঞ্জনা গত ৫ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করেন।
সোহেল ও চম্পা সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন। আর নিহত রুবেল হলেন সোহেলের ভগ্নিপতি।
আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৪ মার্চ হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাকসুদুর রহমানকে কেস ডকেটসহ আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
সে অনুসারে কেস ডকেটসহ তিনি গত ৩ এপ্রিল আদালতে হাজির হন। ওই দিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন।
পুলিশ সুপারের নিচে নন-পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এমন একজন কর্মকর্তা দিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
অধিকতর তদন্তের সময় চারটি বিষয়ে পিবিআইকে তদন্ত করতে বলা হয়।
এর মধ্যে বাদী যখন সংশ্লিষ্ট থানায় এজাহার করেন, তখন বর্তমান অভিযুক্তকে (সোহেল) জড়িত করে অথবা এজাহারে বাদী সই করেছিলেন কি না, নির্যাতন বা ভয়ভীতি দেখিয়ে সোহেলের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে কি না, তা-ও তদন্ত করতে বলা হয়।
হাইকোর্ট শুনানির জন্য ৫ জুন পরবর্তী দিন রাখেন।
এদিকে হাইকোর্টের আদেশে হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাকসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের এ নির্দেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
এর শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৬ এপ্রিল ওই সাময়িক বরখস্তের আদেশ অংশটুকু আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। তবে হত্যা মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করতে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা বহাল থাকে।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
আগের ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পি।
শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, হত্যা মামলাটির তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। কয়েকজন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সঠিক ও সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
মামলার বস্তুনিষ্ঠ সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থলের ডিজিটাল এভিডেন্স (সেল, কললিস্ট ইত্যাদি) সংগ্রহ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তসহ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মামলার তদন্তে আরও সময়ের প্রয়োজন।
এছাড়া তদন্তের জন্য আরও ৯০ কার্যদিবস সময় বর্ধিত করার আরজি জানান তিনি।
আদালত বলেন, অধিক তদন্তের জন্য ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। আরও ৯০ দিন চাচ্ছেন। পুলিশ সুপার ফোন কল করেন। আদালতের জন্য এটি বিব্রতকর।
উনি কি এটি করতে পারেন?
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, কোর্টের মর্যাদা সবচেয়ে বড়। তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ ও আদালতের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে। আদালতের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হবে, তা বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশনে রয়েছে।
কোর্টের মর্যাদা সমুন্নত না রাখলে আমাদের মূল্যায়নও থাকবে না। পুলিশ সুপার কোর্টকে ফোন করার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছেন। আদালতের উদ্বেগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জির উদ্দেশে আদালত বলেন, ২৪ ঘণ্টায় এক তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে দেন। আদালত ৬০ দিন সময় দিলেও অধিকতর তদন্তের প্রতিবেদন দিতে পারলেন না।
এছাড়া শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১৭ জুলাই এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেন।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা,প্রকল্পের সব নথি হাইকোর্টে তলব
হাইকোর্টের রায় নিয়ে ফখরুলের বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল: কাদের
দুই বিএনপি নেতার কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে এটিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, দায়িত্বহীন বক্তব্য দেশের মানুষকে হতাশ করেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘নির্দেশিত রায়’ বলে অভিহিত করে তার বক্তব্য আদালত অবমাননার সমতুল্য।
আরও পড়ুন: সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে চায়: কাদের
বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কখা বলেন।
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, এই শাস্তি বিএনপির দুই নেতার ক্রমাগত দুষ্ট রাজনীতির ফল। বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কারণ তারা (বিএনপি-জামায়াত নেতারা) হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে জড়িত ছিল।
বিএনপির দুই নেতার বিরুদ্ধে রায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং নিম্ন আদালত অভিযোগ হিসেবে রায় দেয়।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার পৃথক দুর্নীতির মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
আদালত টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড, আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড ও তার স্ত্রীর তিন বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন।
২০০৭ সালের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালত আমানকে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের জন্য ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রীকে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিতে বিএনপির নির্বাচন বয়কটের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে: ওবায়দুল কাদের
আ.লীগকে বিদেশিদের কাছে আগ্রাসী হিসেবে তুলে ধরতে চায় বিএনপি: কাদের
ড. ইউনূসকে দানকর দিতে হবে: হাইকোর্ট
দানের বিপরীতে ধার্যকৃত কর দাবি করে এনবিআরের পাঠানো নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূসের করা তিনটি আয়কর রেফারেন্স আবেদন খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
এই রায়ের ফলে ড. মোহাম্মদ ইউনণূসের কাছে এনবিআরের দাবি করা দানের বিপরীতে ধার্যকৃত কর দিতে হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আর ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু হওয়ার পর ড. ইউনুসদের মুখে কথা নেই: তথ্যমন্ত্রী
এর আগে গত (২৩ মে) দানের বিপরীতে ধার্যকৃত প্রায় ১৫ কোটি টাকা কর দাবি করে এনবিআররের পাঠানো নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূসের করা তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলার শুনানি শেষ হয়। হাইকোর্ট শুনানি গ্রহণ শেষে ৩১ মে রায়ের দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী আজ (বুধবার) রায় দেওয়া হয়।
জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ পাঠায়। একইভাবে ২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দানকর দাবি করে আরেকটি নোটিশ দেয় এনবিআর।
এছাড়া ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেওয়া হয়। দানের বিপরীতে কর দাবির এসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূস মামলা করেন।
ড. ইউনূসের দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এই কর দাবি করতে পারে না। ২০১৪ সালে তার মামলা খারিজ করে রায় দেন কর আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে পৃথক তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন হাইকোর্টে। হাইকোর্ট ২০১৫ সালে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর গতকাল চূড়ান্ত শুনানি হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান।
আরও পড়ুন: লালসা থেকে বেরিয়ে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হও: ড. ইউনুস
শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের ওপর ছয় মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আদালত।
ড. ইউনূসের পক্ষে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে মঙ্গলবার (৩০ মে) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাত হারানো শিশুটিকে ৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল
আদালতে ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী শরীফ।
পরে অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী শরীফ বলেন, গত ৩ এপ্রিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ পরিশোধ করতে রায় দেন শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল।
তিনি আরও বলেন, এই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ড. ইউনূস।
শ্রমিকদের পক্ষের আইনজীবীরা জানান, ১০৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারী ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণে কর্মরত ছিলেন। ২০০৬-২০১৩ অর্থ বছরে কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
শ্রম আইনে বলা আছে, শ্রম আইন কার্যকর হওয়ার দিন থেকে কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণ ও অংশগ্রহণ তহবিল দিতে হবে। এই লভ্যাংশ না পাওয়ার কারণে প্রথমে তারা গ্রামীণ কল্যাণকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। কিন্তু লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা মামলা করেন।
আরও পড়ুন: এবি ব্যাংকে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল