আইন
প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না: মন্ত্রিসভায় আইনের খসড়া অনুমোদন
নিবন্ধিত চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ করে ওষুধ ও প্রসাধনী আইন, ২০২৩-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘খসড়া আইন অনুযায়ী, কোনো নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি করা যাবে না এবং এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।’
তিনি বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি করলে ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
আরও পড়ুন: ওষুধ আইন নিয়ে সরকার গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলো প্রস্তাবিত আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, কারণ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) প্রতিরোধ এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
মাদক আইন, ১৯৪০ এবং ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৮২- হলো দুটি মাদক আইন।
কিন্তু দুটি আইন শুধুমাত্র ওষুধের বিষয়কে কেন্দ্র করে, প্রসাধনী নয়।
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে প্রসাধনীর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
প্রস্তাবিত আইনে প্রায় ৩০ ধরনের অপরাধের উল্লেখ করা হয়েছে এবং নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরির পাশাপাশি ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরির মতো বিভিন্ন অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, খসড়া আইনে ওষুধ, ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা ডিভাইসের উন্নয়নসহ কিছু নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে ওষুধের সমস্যার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।
মাহবুব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী কিছু ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার।
বৈঠকে পাইরেসি রোধে শাস্তিমূলক বিধান রেখে কপিরাইট আইন, ২০২৩-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোগীর প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম ইংরেজি বড় অক্ষরে লিখতে হবে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
খসড়া আইন অনুমোদন: ওষুধ সংক্রান্ত অনিয়মে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড
জাতীয় সংসদে বিইআরসি আইনের সংশোধনী পাস
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২২ পাস করেছে জাতীয় সংসদ। এই আইনের দ্বারা বিশেষ ক্ষেত্রে গণশুনানি ছাড়াই সরকারকে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার বিরোধী দলের বিরোধীতার মধ্যেই আইনটির সংশোধনী পাস করে জাতীয় সংসদ।
জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাব ঠিক করার পরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে বিলটি উত্থাপন করে। এরপর কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
আরও পড়ুন: হাট ও বাজার (প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা) বিল জাতীয় সংসদে
তবে বিলটি পাসের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।
২০০৩ আইনের সংশোধনের ফলে, গ্যাস ও বিদ্যুতের নতুন মূল্য নির্ধারণে মন্ত্রণালয়কে আর বিইআরসি’র মাধ্যমে গণশুনানির প্রয়োজন হবে না।
এর আগে ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভা কমিশনের গণশুনানি এবং সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা না করে সরকারকে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজস্বভাবে জ্বালানি শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়ার জন্য বিইআরসি আইন-২০০৩ -এর একটি সংশোধনী অনুমোদন করে।
বিলে বলা হয়েছে, 'এই আইনের অন্য কোনো বিধান থাকা সত্ত্বেও, জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার বিশেষ ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে শুল্ক নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সামঞ্জস্য করতে পারে। কৃষি, শিল্প, সার, বাণিজ্য ও গার্হস্থ্য কাজে জনগণের চাহিদার আলোকে যাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ এবং সঞ্চালন নিশ্চিত করা যায়।'
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, পানির ট্যাংক ফুটো থাকলে কখনও তা ভরাট করা যায় না। যতদিন ভাড়া বিদ্যুৎ থাকবে এবং কুইক রেন্টাল থাকবে ততদিন লোকসান বাড়তে থাকবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'ভর্তুকি কি? মন্ত্রী ব্যাখ্যা করবেন। ভর্তুকির নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এই টাকা দিয়ে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিল পরিশোধ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির বলেন, সরকার গত ১৪ বছরে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
এ আইনকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের সংকটের কারণ লুটপাট ও দুর্নীতি।
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সামনে রমজান মাস। এর আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।
তিনি বলেন, এই বিল জনস্বার্থবিরোধী।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, ঢাকায় দিনের বেলা গ্যাস থাকে না।
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে তিন-চার ঘণ্টা গ্যাস নেই। গ্রামের অবস্থা আরও খারাপ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়াই ভালো।’
আরও পড়ুন: দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ১৭ লাখ: জাতীয় সংসদে প্রতিমন্ত্রী
সংসদে সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তন বিল পাস
দেশের ক্রমবর্ধমান প্রবীণ জনসংখ্যাকে সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের আওতায় আনার লক্ষ্যে ইউনিভার্সাল পেনশন ম্যানেজমেন্ট বিল-২০২৩ সংসদে পাস হয়েছে।
মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিলটি উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিল অনুসারে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশি নাগরিক এই পেনশন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হবেন।
ক্রমবর্ধমান প্রবীণ জনগোষ্ঠীকে টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনতে বিলের খসড়া তৈরি করেছে অর্থ বিভাগ।
এটির মাধ্যমে মূলত বয়স্ক জনগোষ্ঠী অবসরে বা বেকার হয়ে যাওয়ার পর উপকৃত হবেন। এছাড়া রোগ, পক্ষাঘাত, বার্ধক্য বা অন্যান্য অনুরূপ পরিস্থিতিতে বা উচ্চ আয়ু হারের মধ্যে চরম দারিদ্র্য হলেও তারা সুবিধা পাবেন।
খসড়া আইন অনুসারে একজন ব্যক্তিকে ৬০ বছর বয়স থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পেনশন পেতে কমপক্ষে ১০ বছর বিরতিহীনভাবে প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
৭৫ বছর বয়সের আগে একজন বয়স্ক ব্যক্তি মারা গেলে মনোনীত ব্যক্তি অবশিষ্ট সময়ের জন্য পেনশন পাবেন।
তবে প্রিমিয়ামের পরিমাণ প্রস্তাবিত আইনের অধীনে একটি নিয়ম দ্বারা নির্ধারিত হবে।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ থাকবে এবং অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ১৫ সদস্যের একটি গভর্নিং বডি থাকবে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: স্পিকারের সাক্ষাৎ চেয়েছেন সিইসি
সরকার চেয়ারম্যান এবং বাকি চার সদস্যকে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দেবে।
অর্থমন্ত্রী গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান থাকবেন যেখানে অন্য সদস্যরা হবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের
সচিব, প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বিএসইসি চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই সভাপতি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, বিডব্লিউসিসিআই সভাপতি এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান।
গভর্নিং বডি প্রতি বছর কমপক্ষে তিনটি সভা করবে।
কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় হবে এবং পূর্বানুমতি সাপেক্ষে দেশের যেকোনো স্থানে এর শাখা স্থাপন করা যাবে।
এই পেনশন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তি স্বেচ্ছায় হবে, যদি না সরকার এটিকে বাধ্যতামূলক করার জন্য কোনো গেজেট জারি না করে।
জমাকৃত ফিকে তিনি বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করবেন এবং কর মওকুফের জন্য প্রযোজ্য হবে যখন পেনশনটি করমুক্ত হবে।
বিলে বলা হয়েছে যে বিনামূল্যের একটি অংশ সরকার সর্বনিম্ন আয়ের স্তরের নীচে বা যারা দেউলিয়া তাদের জন্য দিতে পারে।
একটি সর্বজনীন পেনশন তহবিল জমাকৃত অর্থ সঠিকভাবে পরিচালনা করবে। এক বা একাধিক তফসিলি ব্যাংক তহবিলের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করবে।
নির্দিষ্ট সময়ে স্থানান্তর নিশ্চিত করতে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার সিস্টেমের মাধ্যমে তহবিল স্থানান্তর করা হবে এবং এর জন্য একটি কেন্দ্রীভূত এবং স্বয়ংক্রিয় পেনশন বিতরণ কাঠামো গঠন করা হবে।
সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোকে এই পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করতে সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বিলটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারের একটি চমৎকার উদ্যোগ বলে অভিহিত করেন।
তবে, তিনি বলেন যে এই পেনশন ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের সাড়া পাবে না। কারণ সরকারি কর্মচারীরা যেভাবে পেনশন পান তার সঙ্গে অনেক কিছুই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তিনি বলেন, ‘মানুষ কীভাবে লাভ বা সুবিধা পাবে তা পরিষ্কার নয়। এটা অনেকটা ব্যাংকিং প্যাকেজের মতো। এই বিল পাশ হওয়ার আগে জনগণের মতামত নেয়া উচিত।’
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেছেন, এই বিল সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে, বেকারত্ব, অসুস্থতা বা দুর্বলতা বা বিধবা, পিতামাতাহীনতা বা বার্ধক্য বা অন্যান্য অনুরূপ পরিস্থিতির মতো অনিয়ন্ত্রিত কারণে সরকারের কাছ থেকে জনগণের সহায়তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোছা. ডরথী রহমান
তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণের কাছ থেকে ফি নেবে এবং ফেরত দেবে। এই বিল পাশ হওয়ার কোনও সুযোগ নেই।’
জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক প্রশ্ন রেখে বলেন, বিলের কথাগুলো ভালো। ‘কিন্তু এই পেনশন স্কিমে সরকারের অংশগ্রহণ কি?
পেনশনে সরকারের কোনও সম্পৃক্ততা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এটা ব্যাংকের ডিপিএস স্কিমের মতো। গুজব আছে যে সরকারের অর্থের অভাব থাকায় জনগণের কাছ থেকে টাকা নিতে বাধ্য হচ্ছে?
অর্থমন্ত্রীর মৌন অবস্থান নেয়ার সমালোচনা করে মুজিবুল হক বলেন, অর্থমন্ত্রী বেশি কথা বলেন না।
তিনি বলেন, ‘বোবার কম শত্রু আছে। কিন্তু কথাগুলো অর্থমন্ত্রীর কানে পৌঁছেছে কি না তা জানা যায়নি। তার কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া বা উদ্যোগ দেখা যায় না।’
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আপাতদৃষ্টিতে আইন ভালো। কিন্তু বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের দেয়া পথের বাইরে কিছু আছে বলে মনে হয় না।
‘সরকার কী লাভ দেবে তা পরিষ্কার নয়।’
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, এটা শেয়ালের কাছে মুরগি পালনের মতো।
‘মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখবে এবং ব্যাংকগুলো টাকা বিদেশে পাচার করবে। ব্যাংকগুলো মানুষের আস্থা হারিয়েছে। এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ঋণ খেলাপিরা সব সুবিধা পাচ্ছে।
বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বিষয়টি দেখার কেউ নেই।
যারা অর্থ পাচার করছে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
বিরোধী দলের সদস্যদের সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এই বিল আনার আগে অনেক আলোচনা হয়েছে।
‘যারা লিখিত মন্তব্য জমা দিয়েছেন তাদের বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটিতেও বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিলটি গ্রহণযোগ্যতার লক্ষ্যে সংসদে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
আয়কর আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে আয়কর আইন-২০২৩-এর খসড়া অনুমোদন করেছে। এই আইনে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আয়কর কর্মকর্তার কর নির্ধারণের ক্ষমতাকে রোধ করা হয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয় বলে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন।
খসড়ার মূল বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আয়কর কর্মকর্তারা তাদের ইচ্ছানুযায়ী আয়কর নির্ধারণ করতে পারবেন না এবং আইন দ্বারা নির্ধারিত সূত্র অনুযায়ী আয়কর নির্ধারণ করা হবে।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের মধ্যে অন্যতম ছিল সামরিক শাসনের সকল আইন এবং ইংরেজীতে যেসব আইন আছে সেগুলো পরিবর্তন করে যুগোপযোগী করা। সে কারণেই অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এই আইনের খসড়া তৈরি করেছে বলে জানান মাহবুব।
প্রকৃতপক্ষে, ইংরেজিতে বিদ্যমান আইনটিকে বাংলায় রূপান্তরিত করা হয়েছে এবং কিছু সংযোজন সহ সরলীকৃত করা হয়েছে। এছাড়া কিছু জটিল ও অস্পষ্ট ভাষা বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া আইনে আয়কর কর্মকর্তার বিবেচনার ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আয়কর মেলা শুরু, রিটার্ন জমা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এই আইনে ৩৪৮টি ধারা রয়েছে এবং ব্যবসায়ীরা সহজেই তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।’
করদাতাদের তাদের কর নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য এই আইনে একটি গাণিতিক সূত্র চালু করা হয়েছে। এর ফলে করদাতারা সহজে তাদের কর পরিশোধ করতে পারবেন।
এই আইন করদাতাদের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে সাহায্য করবে।
এছাড়া এজেন্সি টু ইনোভেট (A2i) আইন-২০২২ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মাহবুব বলেন, আইন অনুসারে, তথ্য প্রযুক্তি খাতে সরকারের উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য একটি সংস্থা গঠন করা হবে। এটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং এর বাস্তবায়নে কর্মসূচি গ্রহণে সহায়তা করবে। সংস্থাটি ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে গঠিত হবে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন, যা স্বায়ত্তশাসিত হবে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়াও, সংস্থাটি একটি নীতিমালা তৈরি করবে এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।’
মাহবুব আরও বলেন, ‘২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভার গৃহীত প্রায় ৬৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই সময়ে মন্ত্রিসভার ছয়টি বৈঠকে ৯০টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং ৬১টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং বাকি ২৯টি সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন চলছে।
এই সময়ের মধ্যে, মন্ত্রিসভা দুটি নীতি এবং ১১টি চুক্তি বা প্রোটোকল অনুমোদন করেছে।
আরও পড়ুন: সারাদেশে ‘আয়কর মেলা’ শুরু
জাতীয় আয়কর দিবস শনিবার
হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগে নতুন আইন আসছে: আইনমন্ত্রী
হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগের জন্য সরকার একটি আইন প্রণয়নের কাজ করছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে তা সংসদে পেশ করা হবে।
সোমবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও সুযোগ-সুবিধা) বিল-২০২৩ পাসের বিষয়ে আলোচনাকালে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণফোরামের সংসদ সদস্যদের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: আইনমন্ত্রী
বিলটি পাসের বিষয়ে অংশগ্রহণের সময় জাপা ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা দাবি করেন যে সরকারকে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য একটি বহুল কাঙ্ক্ষিত আইন প্রণয়ন করতে হবে।
সিলেট থেকে নির্বাচিত গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এখন হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ দেন।
তিনি বলেন, ‘বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্যতার কথা বলা হয়, কিন্তু যোগ্যতার মানদণ্ড উল্লেখ করা হয় না। এক্ষেত্রে বিচারক নিয়োগের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন করা হলে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকবে না।’
সুনামগঞ্জ থেকে নির্বাচিত জাপা সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেছেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কোনো আইন নেই।
তিনি বলেন, ‘গত বছর এই আইনটি পাস হয়েছিল এবং এই আইনের ভিত্তিতে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল।’
তিনি আরও জানান, একইভাবে হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগেও আইন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা এখনও হয়নি।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয়।
ময়মনসিংহ থেকে নির্বাচিত আরেক জাপা সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামও একই দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আদালত স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করে: আইনমন্ত্রী
নির্ধারিত সময়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে: আইনমন্ত্রী
যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে বর্তমান সরকার সর্বতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন উঠছে, সেখানেই সরকার তড়িৎ ব্যবস্থা নিচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান একেবারে পরিষ্কার। বাংলাদেশে যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।শনিবার দুপুরে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে মানবাধিকার দিবস-২০২২ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের অনেক বড়বড় অর্জন সত্ত্বেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউকেউ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার হীন চেষ্টা করছেন।বাংলাদেশের সংবিধান ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র এদুটির কোথাও অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা নেই- একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদ ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ২০ অনুচ্ছেদে শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলা আছে। কিন্তু মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এদুটি অনন্য দলিলের কোথাও বলা নেই রাস্তাঘাট বন্ধ করে, জনসাধারণের চলাচলের পথ রুন্ধ করে সভা-সমাবেশ করা যাবে।তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আজকাল মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি-না তা জানার আগেই অনেকে আমাদেরকে মানবাধিকার সমন্ধে ছবক দিচ্ছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘৃণতম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলেও তারা মানবাধিকার রক্ষা দূরে থাক, এবিষয়ে একটি টু শব্দও করেন নাই।
আরও পড়ুন: জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন: সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রীতিনি বলেন, যে বঙ্গবন্ধু তার সারাটা জীবন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন, সেই বঙ্গবন্ধুকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়, যা ছিল বিশ্বের ইতিহাসে ঘৃণ্যতম ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভৎসতা এত ভয়াবহ ছিল যে, ইনডেমনিটি আইন করে দীর্ঘ ২১ বছর খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, তাঁদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল এবং বিশ্বের বড়বড় দেশ খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল। দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন খুনি এখনো কয়েকটি বড় দেশের আশ্রয়ে আছে। তাদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।মি. হক আরও বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ন করে এর অধীনে শক্তিশালী জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। সরকারের অব্যাহত সহযোগিতায় বর্তমানে এই কমিশনের এখতিয়ার ও কাজের পরিধি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। এটি এখন নারী, শিশু, দলিত, হিজড়া, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, মেহনতী মানুষ ও প্রবাসী শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে স্বল্প সময়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এশিয়া প্যাসিফিক ফোরামের সদস্য পদ লাভ করেছে এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির স্ট্যাটাস অর্জন করেছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় জবাবদিহিতার অংশ হিসেবে সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটিতে নিয়মিত রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ছায়া প্রতিবেদন প্রেরণ করছে। দেশে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করার পাশাপাশি সব ধরণের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে কাজ করছে। মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট উচ্চ আদালতের বিভিন্ন রায় ও আদেশ দ্রুত কার্যকর করার যথাযথ পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে সরকার আরও অনেক আইন প্রণয়ণ করেছে। বৈষম্য বিরোধী আইন প্রণয়নের বিষয়টিও এখন আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নিকট পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন রয়েছে।সরকারের সুনীতি ও দৃঢ় অবস্থানের কারণেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চারনেতা হত্যাকাণ্ড ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধসহ বড় বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করা সম্ভব হয়েছে। দেশ থেকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়েছে। মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছেন। মানবাধিকার সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশ চার চার বার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ লাভ করেছে, বলেন আইনমন্ত্রী।জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মইনুল কবির প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
দেখা যাক, ছদ্মবেশে জামায়াতের নিবন্ধন ইসি কীভাবে পরিচালনা করে: আইনমন্ত্রী
খুচরা বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে পদক্ষেপ নিবে বিইআরসি
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এখন খুচরা বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিষয়ে গণশুনানির জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করবে।
বিইআরসি’র সদস্য (পাওয়ার) মোহাম্মদ বজলুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা মনে করি জমা দেয়া প্রস্তাবগুলোর ওপর গণশুনানির জন্য কোনও প্রক্রিয়া শুরু করার আগে আমাদের প্রথমে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।’
সরকার খুচরা এবং বাল্ক বিদ্যুত ও জ্বালানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ তৈরি করতে বিইআরসি আইন ২০০৩ সংশোধন করার সরকারের সর্বশেষ পদক্ষেপের পটভূমিতে বিইআরসি সদস্যের কাছ থেকে এই ধরনের মন্তব্য আসলো।
বজলুর রহমান বলেন, ‘প্রস্তাবিত সংশোধনীর পর বিইআরসি কোনও বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতিতে যাওয়া উচিৎ নয়।’
কমিশনের গণশুনানি এবং সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা না করে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজস্বভাবে জ্বালানি শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারকে দিতে ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভা বিইআরসি অধ্যাদেশ-২০২২-এর একটি সংশোধনী অনুমোদন করেছে।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: পাইকারি পর্যায়ে অপরিবর্তিত থাকবে বিদ্যুতের দাম: বিইআরসি
তিনি বলেন, বিইআরসি শুল্ক হার নির্ধারণের বিষয়ে পর্যালোচনা এবং সিদ্ধান্ত নিতে ৯০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে এবং এটি একটি দীর্ঘ সময়। এখন বিরাজমান পরিস্থিতির আলোকে সরকার জরুরি ভিত্তিতে জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করতে পারে সেজন্য এই সংশোধন করা হচ্ছে।
বৈঠকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় জ্বালানি ও জ্বালানি আমদানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে বিইআরসি চেয়ারম্যান সরকারের সাবেক সচিব আবদুল জলিল প্রস্তাবিত সংশোধনী নিয়ে গেজেট প্রজ্ঞাপনে যাওয়ার আগে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আমাকে আগে গেজেট বিজ্ঞপ্তি দেখতে দিন... তারপর কমিশন জনশুনানি বা ট্যারিফ নির্ধারণ সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।’
এদিকে, বাল্ক বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পর খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ছয়টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা তাদের নিজ নিজ প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, ছয়টি প্রতিষ্ঠান- বিপিডিবি, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি পিএলএস (নেসকো) এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডব্লিউজেডপিডিসিএল) খুচরা বিদ্যুতের শুল্ক প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ানোর জন্য প্রায় অভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে।
১ ডিসেম্বর থেকে বিইআরসির বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর তারা তাদের প্রস্তাব জমা দেয়।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিদ্যুৎ খাতের প্রধান সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুতের একক ক্রেতা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) আর্থিক ক্ষতি বছরে ১৮ হাজার ৯৪ কোটি টাকা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
বিপিডিবি’র সর্বশেষ নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতি ২০২১ থেকে ২০২২ অর্থবছরের ২৯ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা থেকে ২০২২ থেকে ২০২৩ অর্থবছরে ৪৮ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করবে, যা প্রায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র জানায়, বেশি দামে বিদ্যুৎ ক্রয় ও কম দামে বিক্রি, পেট্রোলিয়াম জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিপিডিবির রাজস্ব ঘাটতি আরও বেড়েছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন যে যখন একটি বিশাল রাজস্ব ঘাটতি বিপিডিবি’র একটি বড় বোঝা হবে তখন বাল্ক ট্যারিফের সাম্প্রতিক ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি সংস্থাটিকে মাত্র পাঁচ হাজার কোটি টাকা লোকসান কমাতে সাহায্য করতে পারে।
অন্যদিকে, বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধিতে পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিগুলোকে তাদের নিজস্ব রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে বিইআরসিতে তাদের খুচরা শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা দিতে চাপ দেয়।
আরও পড়ুন: বিইআরসি ছাড়াই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার, মন্ত্রিসভায় সংশোধনী অনুমোদন
বিইআরসি একটি গণশুনানির পর ২০২০ সালের মার্চ মাসে খুচরা বিদ্যুতের শুল্ক সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছিল।
একটি ঘোষণার মাধ্যমে, বিইআরসি ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকরভাবে খুচরা পর্যায়ে পরিমিত গড়ে পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খুচরা বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট (প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা)ছয় দশমিক ৭৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাত দশমিক ১৩ টাকা করা হয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিভাগ তার বিশাল আর্থিক ক্ষতি পূরণের জন্য বাল্ক এবং খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে।
বিদ্যুত বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার সাম্প্রতিক প্রতিশ্রুতি চাপ বাড়িয়েছে। কারণ দাতা সংস্থাটি বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি হ্রাস এবং ক্ষতি পূরণের জন্য বিদ্যুতের শুল্ক বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিইআরসি আইন সংশোধনে সরকারি পদক্ষেপের নেপথ্যে যা রয়েছে
বিইআরসি আইন সংশোধনে সরকারি পদক্ষেপের নেপথ্যে যা রয়েছে
সরকার বিদ্যমান বাংলাদেশ এনার্জি কমিশন (বিইআরসি) আইন-২০০৩ সংশোধন করতে একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। যার ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে পাশ কাটিয়ে যথেচ্ছভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণ করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান আইনে এই সংশোধনী আনার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ‘বিইআরসি আইন (সংশোধন)-২০২২’ শিরোনামের একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
সেই প্রেক্ষাপটে, আজ (সোমবার) মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) অধ্যাদেশ ২০২২-এর একটি সংশোধনী অনুমোদন করেছে। যাতে কমিশনের গণশুনানি ও সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজস্বভাবে জ্বালানি শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারকে দেয়।
সূত্র জানায়, এটি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে। কারণ তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।
অনুমোদনের ঘোষণার আগে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভা যদি সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করে, তাহলে এটি সংসদে একটি সংশোধনী বিল হিসেবে পেশ করা হবে।’
আরও পড়ুন: পাইকারি পর্যায়ে অপরিবর্তিত থাকবে বিদ্যুতের দাম: বিইআরসি
বিলটি সংসদে পাস হলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে তা আইনে পরিণত হবে।
বিদ্যমান বিইআরসি আইন অনুসারে, সরকার যদি বিদ্যুতের শুল্ক বা প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম সমন্বয় করতে চায়, তবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাকে নিয়ন্ত্রকের কাছে একটি প্রস্তাব দিতে হবে এবং তারপরে বিইআরসি এই ইস্যুতে স্টেকহোল্ডাররা তাদের মতামত শোনার জন্য একটি গণশুনানি করে।
গণশুনানির পর, বিইআরসি মূল্য সমন্বয় প্রস্তাবের বিষয়ে ৯০ দিনের মধ্যে তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।
বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেছেন, প্রস্তাবিত সংশোধনী সংসদে পাস হলে, সরকার যে কোনো সময় বিদ্যুতের শুল্ক এবং গ্যাস বা পেট্রোলিয়াম পণ্যের মতো অন্যান্য জ্বালানির দাম নির্ধারণ করতে পারবে।
তিনি বলেন যে বর্তমান আইন অনুযায়ী বিদ্যুতের শুল্ক বা গ্যাসের দামে যেকোনো পরিবর্তন আনতে কমপক্ষে ৯০ দিন সময় লাগে। এ কারণেই সরকার প্রয়োজনে যে কোনো সময় দাম পুনর্নির্ধারণের জন্য নতুন এই পদক্ষেপ নেয়।
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি, বিইআরসির বর্তমান পদ্ধতিও বহাল থাকবে।’
আরও পড়ুন: বিইআরসি বাল্ক বিদ্যুতের শুল্কের রিভিউ আপিলের রায় দিবে সোমবার
কর্মকর্তারা বলেছেন যে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বর্তমান দুর্দমনীয় সংকট সরকারকে তার চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি ও বিদ্যুতের শুল্ক সামঞ্জস্য করতে সময়ে সময়ে এই ধরনের পদক্ষেপ শুরু করতে প্ররোচিত করেছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এএসএম শামসুল আলম সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে বিইআরসির বিদ্যমান আধা-বিচারিক প্রক্রিয়ার জন্য ধ্বংসাত্মক’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে করপোরেট সেক্টরে জবাবদিহিতা আনয়ন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার একটি ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে বিইআরসি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, কারণ মূল্য নির্ধারণের সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।
তবে এখন প্রস্তাবিত সংশোধনী জ্বালানি খাতের জন্য ক্ষতিকর হবে।
আরও পড়ুন: বিইআরসি ছাড়াই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার, মন্ত্রিসভায় সংশোধনী অনুমোদন
নাটোরে বিস্ফোরক আইনে বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
নাটোরের লালপুরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের পাশে পাঁচটি ককটেল ও দুইটি বোমা সদৃশ বস্তু উদ্ধারের ঘটনায় ২৫ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে।
লালপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিমাদ্রি হালদার ও স্থানীয় যুবলীগ কর্মী শরিফুল নেওয়াজ বাদী হয়ে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক নজরুল ইসলামসহ দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে বিএনপির ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
মামলা সূত্র বলছে, শনিবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে যুবলীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালপুর সার্কেল) শরীফ আল রাজীব বলেন, পরে তারা অফিসের পাশ থেকে পাঁচটি ককটেল ও দুটি বোমার মতো বস্তু উদ্ধার করে। পরে পুলিশ কার্যালয়টি সিলগালা করে দেয়।
এর আগে ১৫ নভেম্বর রাতে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে সভা চলাকালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ করা হয়।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় এখনও কাউকে ধরা হয়নি।
আরও পড়ুন: নাটোরে অস্ত্র মামলায় একজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড
সিলেটে বিএনপির ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যুবলীগকর্মীর মামলা
আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি আইজিপি’র
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেছেন, পুলিশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকসহ যেকোনো অপরাধ মোকাবিলা করছে। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শনিবার সিলেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইজিপি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: থানাকে জনগণের আস্থার জায়গা পরিণত করার অঙ্গীকার নতুন আইজিপি’র
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করা পুলিশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় পুলিশ নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।
মাদক সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, মাদক একটি সামাজিক সমস্যা। এছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কারাগারে বন্দিদের বেশিরভাগই মাদকের মামলায়।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদক সমস্যা সমাধান হবে।
প্রবাসীদের সমস্যা প্রসঙ্গে আইজিপি উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স আসে।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে পুলিশ সদর দপ্তরে ইতোমধ্যে একটি ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে, যার হটলাইন নম্বরগুলি চব্বিশ ঘন্টা খোলা থাকে।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা যে কোনো সমস্যায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের সহায়তা দিয়ে আসছি। এছাড়াও, প্রবাসীদের আত্মীয়রা জাতীয় জরুরি পরিষেবা নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও পরিষেবা দেয়া হয়।
পরে আইজিপি প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেট রেঞ্জ, সিলেট জেলা পুলিশ, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং সিলেট ভিত্তিক সকল পুলিশ ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে বিশেষ কল্যাণ সভায় বসেন।
এসময় আইজিপি সিলেট বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা এবং শহীদ পুলিশ পরিদর্শক চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কাইছার বিপিএম ভবনের উদ্বোধন করেন।
তিনি সিলেট পুলিশ লাইনে কৃষ্ণচূড়া ও সাতকরা গাছের চারা রোপণ করেন।
আরও পড়ুন: আইজিপি র্যাঙ্ক ব্যাজ পরানো হলো চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে