আইন
তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে জাবি শিক্ষার্থীর ৭ বছরের কারাদণ্ড
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের অভিযোগে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের মামলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুল আলম বাবুর সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার রাজধানীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জগলুল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন জামিনে থাকা আসামি বাবু রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালত সাজা পরোয়ানা জারি করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রায়ে বলা হয়, আসামির বয়স মাত্র ২৩ বছর। তার স্বল্প বয়স বিবেচনায় তাকে তথ্য ও প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধিত/২০১৩) এর ৫৭ ধারায় ন্যূনতম সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।
২০১৫ সালের ৫ আগস্ট আসামি শামসুল আলম বাবুর বিরুদ্ধে সাভারের আশুলিয়া থানায় তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়।
আরও পড়ুন: হলের ছাদ থেকে পড়ে জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ওই বছরেরই ২১ জুলাই ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে ৯জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট জাবির সরকার ও রাজনৈতিক বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল আমিন সেতু বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের ওপর একটি কলাম পত্রিকায় প্রকাশ করে। ওই লেখাটি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোরশেদুর আকন্দ ফেসবুকে পোস্ট করেন।
ওই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় শামসুল আলম বাবু তার ‘মো.কবির মামু’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি মন্তব্য করেন। যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন।
এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। আল আমিন সেতু লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে শামসুল আলম বাবুকে আটক করা হয়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. ইয়াকুব আলী মিয়া আসামি বাবুকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে এজাহার দাখিল করেন।
এজাহারের সঙ্গে আসামি বাবুর ফেসবুক আইডি হতে দেয়া বক্তব্যের হার্ড কপি এবং আল আমিন সেতুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা অভিযোগের কপি সংযুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: জাবিতে সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা
জাবিতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
পণ্য, সেবা ক্রয়ে প্রতারিত হলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করার উপায়
দেশে নতুন পণ্য বা সেবা তৈরির মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনীতিকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায়। আবার একই ভাবে অনিয়ম ও অনৈতিকতার কারণে ত্রুটিপূর্ণ সেবা বা পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার হন ভোক্তারা। তাই প্রতিটি ব্যবসায়ের পণ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট নীতিমালা। আর তা অনুসরণ করে গ্রাহকদের চাহিদার সদ্ব্যবহার করা হচ্ছে কি না তা তদারক করতে আছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইন। যে কোন পণ্য কিনে প্রতারিত হলে একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ভোক্তা সেই আইন মোতাবেক অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন। চলুন জেনে নেয়া যাক এই অভিযোগ দাখিলের নিয়ম-নীতি।
বাংলাদেশের জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করার পদ্ধতি
যথাযথ প্রমাণ সংগ্রহ
অভিযোগের পূর্বে যে কাজটি অবশ্যই করতে হবে তা হলো অভিযোগের স্বপক্ষে সঠিক প্রমাণাদি সংগ্রহ করা। অভিযোগপত্রের সাথে সংযুক্তি হিসেবে পণ্য বা সেবা গ্রহণের রশিদটি অবশ্যই দিতে হবে। এর পাশাপাশি পণ্য ও দোকানের ছবিটিও দেয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
অভিযোগ ফরম পূরণ
প্রথমে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট-এর জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ-কেন্দ্র বক্স থেকে অভিযোগ ফরম ডাউনলোড করতে হবে। অতঃপর ফরমটি প্রিন্ট করে তাতে প্রাপক অংশের শূন্যস্থানে জেলার নাম লিখতে হবে।
তারপরেই সঠিকভাবে লিখতে হবে অভিযোগের বিবরণ। এরপর পিতা-মাতার নামসহ অভিযোগকারির পূর্ণাঙ্গ তথ্য উল্লেখ করতে হবে। এ অংশে অভিযোগকারির মোবাইল নম্বর দেয়া বাঞ্ছনীয়। সবশেষে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ নাম ও ঠিকানা লেখার মাধ্যমে ফরম পূরণ সম্পন্ন হবে।
এবার পূর্বে সংগৃহীত পণ্য ক্রয়ের রশিদটি এই ফরমের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ভোক্তার সচেতনতা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে: খাদ্যমন্ত্রী
পণ্য কিনে প্রতারিত হলে কোথায় অভিযোগ করতে হয়
সংযুক্তিসহ পূরণকৃত ফরম নিয়ে সরাসরি চলে যেতে হবে কাওরান বাজারে অবস্থিত টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) ভবনে। এর অষ্টম তলায় সহকারী পরিচালকের কার্যালয়ে অভিযোগ জমা নেয়া হয়। এছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবরও অভিযোগ করা যায়। এই দাখিলকৃত অভিযোগপত্র পরবর্তীতে বিভাগীয় প্রধান অধিদপ্তরে এসে জমা হয়। এখানে উল্লেখ্য যে এই অভিযোগ দাখিলে কোন রকম ফি প্রয়োজন হয় না।
অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ
অভিযোগ দাখিলের পর অধিদপ্তর থেকে একটি মামলা নম্বর দেয়া হবে, যা পরবর্তীতে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজন হবে। অতঃপর প্রায় এক মাসের মধ্যে শুনানির জন্য অভিযোগকারির ঠিকানায় চিঠি যাবে। আর এই শুনানির মাধ্যমেই চূড়ান্তভাবে অভিযোগ নিষ্পত্তির দরুণ অভিযুক্তকে সংশ্লিষ্ট অভিযোগ যাচাই করে নির্ধারিত জরিমানা ধার্য করা হয় এবং নির্দিষ্ট শাস্তি প্রদান করা হয়। জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারিকে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বাহারি আম এবং তাদের উৎপাদনকারী অঞ্চল
পণ্য কিনে প্রতারিত হলে কিভাবে অনলাইনে অভিযোগ করবেন
সংযুক্তির জন্য নথি প্রস্তুত করা
অভিযোগকারির স্বাক্ষর, পণ্য ক্রয়ের রশিদসহ প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি স্ক্যান করে অথবা মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করতে হবে। এগুলো আগে থেকেই প্রস্তুত করে রাখা উচিত, কেননা তা হলে অনলাইনে অভিযোগ পূরণের পরপর খুব সহজেই কম্পিউটার থেকে আপলোড করে দেয়া যাবে।
আমার সরকার ওয়েবসাইটে নিবন্ধন
অনলাইনে অভিযোগের জন্য আমার সরকার ওয়েবসাইটের জাতীয় ভোক্তা অধিকার অভিযোগ সেবার পেজটিতে যেতে হবে। এখানে অভিযোগকারির নাম ও মোবাইল নম্বর বা ইমেইল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। মোবাইল বা ইমেইল আইডিটি যাচাইয়ের জন্য ছয় সংখ্যার একটি কোড বার্তা পাঠানো হবে। সেই কোড দেয়ার পর নিবন্ধন সম্পন্ন হলে অনায়াসেই অভিযোগকারি তার নতুন তৈরি হওয়া অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কিছু বোঝা ভোক্তাদের বহন করতে হবে: অর্থমন্ত্রী
অনলাইনে অভিযোগ ফরম পূরণ
এবার অভিযোগকারির প্রোফাইল পেজ-এর বামে প্রদর্শিত মেনু থেকে নতুন আবেদন-এ ক্লিক করলে জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ ফরমের ওয়েব পেজটি দেখাবে। আগে থেকে অভিযোগকারির যাবতীয় তথ্য দিয়ে প্রোফাইলটি সম্পন্ন করা থাকলে এখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অভিযোগকারির তথ্য অংশগুলো পূরণ দেখাবে। আর তা না হলে নাম, ঠিকানা, পেশা, পিতা-মাতার নাম টাইপ করতে হবে।
অতঃপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ তথা অভিযোগের বর্ণনা দিতে হবে। এরপরেই নিচে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা বক্স দুটি পূরণ করতে হবে।
সংযুক্তি আপলোড ও অভিযোগ দাখিল
বিনীত নিবেদকের নিচে অভিযোগকারির নামের পাশে ছোট্ট বাটনটিতে ক্লিক করে পূর্বে কম্পিউটারে সংরক্ষণকৃত স্বাক্ষরের ছবিটি সংযুক্ত করতে হবে। পরিশেষে পণ্য ক্রয়ের রশিদের ছবি সহ অন্যান্য প্রমাণাদি আপলোড করতে হবে। এরপর সবার নিচে আবেদন প্রেরণ করুন বাটনে ক্লিক করলেই চূড়ান্ত ভাবে অভিযোগটি দাখিল হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
পণ্য কিনে প্রতারিত হলে অভিযোগ করার শর্তাবলি
অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট কারণ উদ্ভব হওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অথবা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট দাখিল করতে হবে। নতুবা অভিযোগটি নাকচ করে দেয়া হবে।
অভিযোগকারী অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা হলে তিনি দোষী সাব্যস্ত অভিযুক্তের নিকট থেকে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ পাবেন না।
পণ্য ক্রয়ে হয়রানির শিকার হলে অভিযোগের অন্যান্য মাধ্যম
পণ্য বা সেবা কিনে হয়রানির শিকার হলে ভোক্তা ফ্যাক্স, ইমেইল, এমনকি ফোনের মাধ্যমেও অভিযোগ জানাতে পারবেন। যোগাযোগের ফোন নম্বর- ০২৫৫০১৩২১৮, মোবাইল- ০১৭৭৭৭৫৩৬৬৮ এবং ইমেইল- [email protected]। এছাড়া ভোক্তা হটলাইন ১৬১২১ নাম্বারে ফোন করেও নির্দেশনা সমূহ অনুসরণ করে অভিযোগ দায়ের করা যাবে।
আরও পড়ুন: নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে নাকাল ভোক্তারা
শেষাংশ
জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগের উপায় প্রতিটি নাগরিকের গণতন্ত্র চর্চার পরিচায়ক। জনসাধারণের মৌলিক চাহিদাগুলোর অপব্যবহার করে অসাধু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ত্রুটিযুক্ত পণ্যগুলো তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে প্রায়ই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় সত্ত্বেও ক্রয়কৃত পণ্য নিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়। এতে শুধু জনগণের মৌলিক অধিকার ব্যহত হচ্ছে তা-ই নয়, একই সাথে তারা আর্থিক, সময় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্ধারিত আইনের সঠিক ও সক্রিয় প্রয়োগই পারে এ থেকে জনগণকে রক্ষা করতে।
সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টির জন্য এমন কোনো আইন করা হয়নি: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেল, সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টির জন্য এমন কোনো আইন করা হয়নি।
তিনি বলেন, সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টির জন্য এ আইন করা হয়নি। টেকনোলজির উন্নয়ন হয়েছে। এর মাধ্যমে যে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলোও মোকাবিলা করতে হবে। সেজন্য আমরা এ আইন করেছি। এই আইনের অপব্যবহার বন্ধে ইতোমধ্যে একটি কমিটি কাজ করছে। আগামীতে এর অপব্যবহার বন্ধ হবেই।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত গণমাধ্যমকর্মী আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ডাটা সুরক্ষা আইন নিয়ে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এই সব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, 'আমার মনে হয় আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলাও কমে যাচ্ছে। আবার মামলা করলে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।'
আরও পড়ুন: ডাটা সুরক্ষা আইনে স্টেক হোল্ডারদের যৌক্তিক পরামর্শ গ্রহণ করা হবে: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'আমরা যে অবস্থানটা নিয়েছি, এটা গ্রাউন্ড লেভেল পর্যন্ত যাচ্ছে, তাতে মিস ইউজ ও অ্যাবিউজ- এটা বন্ধ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার এমন কোনো আইন করবে না, যে আইন স্বাধীন সাংবাদিকতা কিংবা স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনের দায়িত্বকে খর্ব করে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণকে সেবা করতে এসেছি, এর মাধ্যমে যদি কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি হয়, সেটা যদি জনগণ বলতে চায় আমরা সেটা শুনবো, প্রতিকারের প্রয়োজন হলে আমরা সেটা করব।
আরও পড়ুন: মানব নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি সন্ত্রাসবাদ: আইনমন্ত্রী
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের যেসব জায়গায় সমস্যা আছে, সেখানে সংশোধনের কথা জানিয়েছিল আইনমন্ত্রী বলেন, '২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ জাতিসংঘের রেসিডেন্স কো-অর্ডিনেটরের মাধ্যমে জেনেভায় জাতিসংঘের হাই-কমিশন ফর হিউম্যান রাইটসের অফিসের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা দুই পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের দিক থেকে একটি কমিটি করে দেয়া হবে, তাদের দিক থেকে একটা কমিটি থাকবে। সারা বিশ্বের যে বেস্ট প্র্যাকটিস সেগুলো দেখব দেখার পর কোনটা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রযোজ্য হয়, সেটা আমরা গ্রহণ করব। আমরা লেজিসলেটিভ সচিবের নেতৃত্বে একটা কমিটি করে দিয়েছি।
ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, 'মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আমার সঙ্গে দেখা করে তাদের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো বলেছেন। আমি অবহিত হয়েছি। আমি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আগামীকাল ১ জুন আমি তার সঙ্গে বসবো। তিনিও বলেছেন আমরা এটা (ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট) পর্যালোচনা করব।'
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, কথা উঠেছে এই (ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট) আইনটির বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হয়নি। আমি নিশ্চিত করবো স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে যেন আলোচনা করা হয়।
'সারা পৃথিবীতে ডাটা প্রটেকশন আইন নিয়ে কি কি আছে এটা পর্যালোচনা করার জন্য আমি সব আইন আনাচ্ছি। যারা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাদের সঙ্গে আমি আলাপ আলোচনা করছি।'
গণমাধ্যমকর্মী আইনের প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিকদের জন্য দরকার রয়েছে। তারপরও এই আইনের বিষয়ে আপনাদের বক্তব্যটা যাতে দিতে পারেন সেটার জন্য আমি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর সঙ্গে ইতোমধ্যে কথা বলেছি। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকেও আমি বলে দেবো যাতে তারা সাংবাদিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি ফাইনাল করেন।
গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমি দৃড়ভাবে বলতে পারি, বাংলাদেশে এমন কোন আইন হবে না, যেটা স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সরকার চায় সংবাদ মাধ্যমে শৃঙ্খলা থাক। ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত না করে সঠিক তথ্যদিয়ে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীতা থেকেই কিছু আইন থাকতে হয়।
আরও পড়ুন: জনগণের টাকায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু, বিএনপির সহ্য হচ্ছে না: আইনমন্ত্রী
এই আইনে সাংবাদিকদের অবসরের বয়সসীমা নিয়ে এক প্রশ্নেন জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর বলার উদ্দেশ্য হলো, স্বেচ্ছায় কোন সংবাদকর্মী চাইলে অবসরে যেতে পারবে। তবে কোনো মালিক বাধ্য করতে পারবে না। এ আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে, তবে এ বিষয়ে আরো পরিষ্কার করে তথ্য সংযোজন করা হবে। আপনাদের সাথে আলোচনা করেই যেন এটি ঠিক করা হয় সেটি বলবো।
'আপনারা তিনটি আইনের কথা বলেছেন। এর সঙ্গে রয়েছে ওটিটি এবং বিটিআরসি রেগুলেশন, আমি সবগুলোর ব্যাপারে আলোচনার মধ্যে আছি।
বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক সংলাপ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
ডাটা সুরক্ষা আইনে স্টেক হোল্ডারদের যৌক্তিক পরামর্শ গ্রহণ করা হবে: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডাটা সুরক্ষা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্টেক হোল্ডারদের যৌক্তিক পরামর্শ অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। তবে কোন অযৌক্তিক পরামর্শ গ্রহণ করা হবে না।
তিনি জানান, ডাটা সুরক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্তকরণের আগে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি, ব্যবসায়িক প্রতিনিধিসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে আলোচনা করা হবে। এর আগে তিনি জুন মাসের এক তারিখে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
রবিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটগণের জন্য আয়োজিত ১৪৫তম রিফ্রেসার কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
সারা বিশ্বে ডাটা সুরক্ষার ব্যাপারে কি কি আইন আছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং যে উদ্দেশ্যে এইআইন প্রণয়ন করা হচ্ছে, সেই উদ্দেশ্য যাতে সাধিত হয়, সেই আইন করা হবে ইনশাল্লাহ।
দণ্ডপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদে থাকার সুযোগ আছে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের ২-৩টি রায় আছে। তার জানামতে হাজী সেলিম এই মামলায় দণ্ডের বিষয়ে আপিল বিভাগে আপিল করেছেন।
আরও পড়ুন: মানব নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি সন্ত্রাসবাদ: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, আমার জানামতে যতক্ষণ পর্যন্ত এই আপিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সংসদ সদস্য পদ ‘ইফেক্টেড’ হয় না, এটাই কিন্তু রায়ে আছে।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, বাক স্বাধীনতা ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা বন্ধ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি। ডিজিটাল মাধ্যমে যেসব অপরাধ হচ্ছে, সেগুলো দমন করার জন্য এই আইন করা হয়েছে।
মামলাজট কমানোর গুরু দায়িত্ব বিচারকের এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই জট কমানোর ব্যাপারে বিচারকদের আরও উদ্যোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, মামলাজট কমানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০০৯ সালের পূর্বে বিচারক ছিল মাত্র সাত থেকে আট শত। এখন এ সংখ্যা উনিশ শতের উপরে। এই কয় বছরে এক হাজার ২২৫ জন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। বিচারকদের যানবাহন সমস্যা সমাধানের পথে। অতি শিগগিরই তাদের জন্য জেলা পর্যায়ে বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে ভাচুয়াল অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: জনগণের টাকায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু, বিএনপির সহ্য হচ্ছে না: আইনমন্ত্রী
সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে: আইনমন্ত্রী
তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নেবে সরকার: মোজাম্মেল হক
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করে সময়োপযোগী করতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন ফর টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্য করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে সংশোধনের অঙ্গীকার করেছেন।’
রবিবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পূয়র (ডরপ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সময়োপযোগীকরণে নীতি-নির্ধারকদের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না:মোজাম্মেল হক
এসময় মন্ত্রী সরকারের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করে সময়োপযোগী করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
আলোচনা সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সময়োপযোগীকরণে ৬টি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন ডরপ’র উপ-নির্বাহী পরিচালক মো. যোবায়ের হাসান।
উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো হলো-সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক দ্রব্যের প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার প্যাকেটের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা কৌটায় নূন্যতম পরিমাণ নির্ধারণসহ মোড়কীকরণে কঠোর নিয়ম আরোপ করা তথা প্লেইন প্যাকেজিং বাস্তবায়ন করা।
হাসান আরও উল্লেখ করেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সময়োপযোগী করার প্রস্তাবসমূহ আইনে অন্তর্ভুক্ত হলে সাধারণ মানুষ তামাকজনিত রোগের অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ: মোজাম্মেল হক
ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়রের (ডরপ) চেয়ারম্যান মো. আজহার আলী তালুকদার সভাপতিত্ব ও ডরপের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাংবাদিক, সুশীল সমাজের সদস্যরা, বিড়ি শ্রমিক ও নেতা এবং যুব ফোরামের সদস্যরা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে ছয়টি সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন এবং সংসদ সদস্যরা ও নীতি-নির্ধারকদেরকে উক্ত প্রস্তাব সমূহকে সমর্থন ও আইনটি পাশ করার ক্ষেত্রে সংসদ ও সংসদের বাইরে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
নরসিংদীতে নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণ: ৪ জনের যাবজ্জীবন
নরসিংদীর পলাশে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের দায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাকি দুজনকে খালাস দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) ও আসামিদের আপিল শুনানি করে বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত চারজন হলেন-পলাশ উপজেলার বাগপাড়া এলাকার আশিকুর রহমান, ইলিয়াছ মিয়া, মো. রুমিন ও মো. রবিন।
আরও পড়ুন: মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে ঋণ: দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
খালালপ্রাপ্তরা হলেন- ইব্রাহিম ও আবদুর রহমান।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী, লুৎফর রহমান আকন্দ ও আক্তার রসুল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুনর রশিদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো সাংবাদিকদের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৩ মে দুপুরে ওই নারী শ্রমিক কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে আসামিরা তাকে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ভিডিওচিত্রও ধারণ করেন আসামিরা।
আরও পড়ুন: সিইসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
পরে এ ঘটনায় পলাশ থানায় একটি মামলা করা হয়।
বিচার শেষে ওই নারী শ্রমিককে (২০) ধর্ষণের দায়ে ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীম আহাম্মদ।
পরবর্তীতে নিম্ন আদালতের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে দণ্ডপ্রাপ্তরা হাইকোর্টে আপিল করেন।
খাদ্যদ্রব্যে অপরাধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে আইনের খসড়া অনুমোদন
খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলের যে কোনো পর্যায়ে অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রেখে ‘খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২২’-এর খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনের অধীনে কেউ অপরাধ করলে সেই ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।’
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আলোচনা
তিনি বলেন, ‘দ্য ফুড গ্রেইন সাপ্লাই প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯’ এবং ‘ফুড স্পেশাল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ এ দুটো আইনকে একসঙ্গে করে নতুন আইনটি করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন পর্যায়ে অপরাধ ও বিভ্রান্তিকর তথ্য রোধে খসড়া আইনে কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
হাওরে শুধু উড়ালসড়ক নির্মাণ করা যাবে: মন্ত্রিসভা
পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে দেশের হাওরে উড়ালসড়ক ছাড়া অন্য কোনো সড়ক নির্মাণ করা যাবে না বলে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, হাওরে পানির স্থবিরতায় অষ্টগ্রাম-মিঠামইন সড়ক কোনো বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে কি না তা যাচাই করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বৈঠকে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমকর্মী আইন পরিমার্জনে টিআইবির বিবৃতি সহায়ক নয়, বরং অন্তরায়: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা প্রতি আধা কিলোমিটারের মতো যৌক্তিক দূরত্ব বজায় রেখে হাওর এলাকার সড়কে ১৫০ থেকে ২০০ মিটার সেতু নির্মাণ করে পানির স্থবিরতার সমস্যা কাটানো যাবে কি না তা জরিপ করতে বলেছে।
আকস্মিক বন্যায় এ পর্যন্ত হাওর অঞ্চলের পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
অর্থ পাচার: ডিআইজি মিজানের শাস্তি চেয়ে দুদকের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ
ঘুষ লেনদেনের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক মিজানুর রহমানের তিন বছরের সাজা হলেও অর্থ পাচারের অভিযোগ থেকে খালাসের বিরুদ্ধে দুদকের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত এ মামলার নথি তলব করেছেন। সাজার বিরুদ্ধে তার করা আপিলসহ দুটি আপিল একসঙ্গে শুনানি হবে। এছাড়া দুদককে চার মাসের মধ্যে পেপার বুক প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ডিআইজি মিজানের আপিল শুনানি ১৩ এপ্রিল
দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
আইনজীবী খুরশিদ আলম খান জানান, অর্থ পাচারের অভিযোগ থেকে অধস্তন আদালত ডিআইজি মিজানকে খালাস দিয়েছিলেন। পরে ওই অভিযোগে সাজা চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করি। হাইকোর্ট রবিবার দুদকের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন।
আরও পড়ুন: সাবেক ডিআইজি মিজান ও দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুলের মামলার রায় ২৩ ফেব্রুয়ারি
তিনি জানান, অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে খন্দকার এনামুল বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু এ ধারায় মিজানুর রহমানকে খালাস দেয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আপিলে সাজা চাওয়া হয়েছে।
একটি মামলা থেকে বাঁচার আশায় দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। পরে তাদের দুজনকেই বরখাস্ত করা হয়।
ওই মামলার রায়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম দুইজনকে সাজা দেন।
বন্দর এলাকার দূষণ রোধে সংসদে আইন পাস
বন্দর এলাকার পরিবেশ দূষণ করায় কঠোর শাস্তির বিধান রেখে সংসদে ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল ২০২২’ শিরোনামের একটি বিল পাস হয়েছে। মঙ্গলবার নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিলটি সংসদে উত্থাপন করলে, কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়।
সামরিক শাসনামলে জারি করা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ বাতিল করার লক্ষ্যেও বিলটি আনা হয়।
প্রস্তাবিত বিলে পানি, ভূমি ও উপকূল দূষিত করে পরিবেশের ক্ষতি করার শাস্তি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে।
খসড়া আইনে আরও বলা হয়েছে, আইনের অধীনে কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করলে এবং শাস্তির বিধান পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে উল্লেখ না থাকলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
আরও পড়ুন: পেটেন্ট মেয়াদ ২০ বছর রেখে সংসদে বিল পাস
বিলে সংযোজিত নতুন বিধান অনুযায়ী বন্দরের টোল, ফি ও অন্যান্য চার্জ ফাঁকি দিলে এক মাসের জেল বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
ভাড়া ও টোলের জন্য কর্তৃপক্ষ একটি চার্ট তৈরি করবে এবং সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নেবে। তবে ৫ হাজার টাকার নিচে ভাড়া বা টোল দিতে কোনো অনুমতি লাগবে না।
খসড়া আইনে বন্দরের উন্নয়নে একটি তহবিল গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিল অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য একজন চেয়ারম্যান এবং সাত সদস্যের বোর্ড থাকবে। বিদ্যমান আইনে চার সদস্যের বোর্ড রয়েছে। বোর্ড প্রতি দুই মাসে অন্তত একটি সভা করবে।
আরও পড়ুন: মেয়াদ শেষ হলে পৌরসভায় প্রশাসক, সংসদে বিল পাস
বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে শৃঙ্খলা নিশ্চিতে সংসদে বিল উত্থাপন
খুলনায় হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
খুলনার আলোচিত মডার্ন সি ফুডের কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার সাহা হত্যা মামলায় প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলেসহ পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শহীদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়া একই মামলায় অন্য চার আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় প্রত্যেককে খালাস দেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মডার্ন সি ফুডের মালিকের ছেলে মেহেদী হাসান স্টারলিং, মো.আরিফুল হক সজল, নাহিদ রেজা রানা ওরফে লেজার রানা, মো. ডালিম শিকদার ওরফে আমির শিকদার ডালিম ও সজল মোল্লা।
আরও পড়ুন: ফেনীতে শিশু হত্যা মামলায় চাচীর যাবজ্জীবন
সাজাপ্রাপ্ত সকল আসামি জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত সকলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৭ জুন সাড়ে ১০টার দিকে মেয়েকে নিয়ে সামছুর রহমান রোডে জোহরা খাতুন স্কুলে আসেন উজ্জ্বল কুসার সাহা। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মেহেদী হাসান স্টারলিংয়ের খালাতো ভাই আরিফুল হক সজল তাকে ফোন দেয়। অবস্থান নিশ্চিত করে অন্যান্য আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সজল। আসামিদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষাও করে উজ্জ্বলের সঙ্গে। সজল স্থান ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমের ওপর ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও ইট নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ শুরু করে। তাদের আঘাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আসামিরা উজ্জ্বলকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা জেনারেল ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: খুলনায় প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন
এ ব্যাপারে নিহতের ছোট ভাই সুমন কুমার সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন খুলনা থানার এসআই সোহেল রানা। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে মামলার মূল পরিকল্পনাকারীর নাম বাদ দেয়ায় বাদী আদালতে নারাজি পিটিশন করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহাজাহানের কাছে দেয়া হয়। তিনিও আগের তদন্ত কর্মকর্তার পথ অনুসরণ করায় মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়। পরে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ সুপার হেড কোয়ার্টারস মো. আমিনুল ইসলাম ৯ জন আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।