নির্বাচন
বাংলাদেশের নির্বাচন ছিল একতরফা ও কৃত্রিম প্রতিযোগিতা: টিআইবি
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক ছিল না বলে একটি প্রতিবেদনে বলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত গত ৭ তারিখের ভোটের ফলাফল মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘লাভ-ক্ষতিসহ সামগ্রিক অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশুভ, যা গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা ও স্বপ্নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক-এডিবির ঋণ নয়, অনুদান চাই: টিআইবি
আজ ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এতে বক্তব্য দেন।
টিআইবি তাদের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের অধীনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ৫০টিতে এই জরিপ পরিচালনা করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন প্রধান বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, 'দুই বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক পরস্পরবিরোধী ও অসহিষ্ণু অবস্থানের কারণে নির্বাচন অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি।’
এতে বলা হয়,‘এই পরস্পরবিরোধী কর্মসূচি এবং অসহিষ্ণুতা কারণে সংঘাতের কাছে গণতন্ত্রের ভবিষ্যতকে জিম্মি করার অবস্থা আরও তীব্র হয়েছে।
আরও পড়ুন: হলফনামায় প্রার্থীদের সম্পদের সত্যতা ও সম্পদের বৈধতা যাচাইয়ের আহ্বান টিআইবির
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অব্যাহত থাকা নিশ্চিত করার কর্মসূচি সফলভাবে অর্জিত হয়েছে। যার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা নাও হতে পারে। আর চ্যালেঞ্জ করা হলে টিকে নাও থাকতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক সততা, গণতান্ত্রিক ও নৈতিক মূল্যবোধের দিক থেকে এই সাফল্য চিরদিন বিতর্কের বিষয় হয়ে থাকবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ধারণা এবং অবাধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সর্বোপরি অবাধ, উন্মুক্ত ও অবাধ প্রতিযোগিতার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের পূর্বশর্তের মতো জাতীয় আন্তর্জাতিক ভাল অনুশীলনের মূল উপাদানগুলো পূরণ করা হয়নি বলে প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়েছে।
তবে প্রতিবেদনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়, 'নির্বাচন কমিশন কখনও সাংবিধানিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতার নামে এবং কখনও নকশার মাধ্যমে একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে মূল অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে। রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনও একই ভূমিকা পালন করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'এটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, দেশে নির্বাচনী রাজনীতির সমান সুযোগ পাওয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক মতাদর্শের কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। কোনো অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও, যেখানে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে এবং তার নিজস্ব 'স্বতন্ত্র' এবং অন্যান্য অনুসারী দলের বিরুদ্ধে বানোয়াট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এমনকি নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হয়েছে। এর মধ্যে অস্বাস্থ্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং সহিংস শত্রুতা রয়েছে। যেটির সঙ্গে রাজনৈতিক মতাদর্শ বা জনস্বার্থের কোনও সম্পর্ক নেই।’
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে অগণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশ হয়: টিআইবি
প্রতিবেদনের শেষ অংশে বলা হয়, 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি যেমন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য অশুভ অভিজ্ঞতা। তেমনি গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাসম্পন্ন দেশ ও জনগণকে কী করতে হবে এবং এড়ানো উচিত, বিশেষ করে গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি কৌশল ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এটি একটি পাঠ হতে চলেছে।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের বিজয় এবং গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতার বিজয়।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থবার বিজয়ে অভিনন্দন জানাতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে শতাধিক প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, তার সরকার এই মাসের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনটি অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ সবাইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শেখ হাসিনাকে মন্ত্রিসভার অভিনন্দন
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রতীক নৌকা দিয়েছি এবং আগ্রহী দলের অন্যদের নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছি।’
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন করেন, তারা কীভাবে নির্বাচনে আসবে।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাদের ২০ দলীয় জোট নিয়ে মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল এবং আওয়ামী লীগ একাই ২৩৩টি আসন পেয়েছিল।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকেই ভেবেছিলেন সাংগঠনিক শক্তি বিবেচনায় বিএনপি আওয়ামী লীগের সমান। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে তা ভুল প্রমাণিত হয়।’
আরও পড়ুন: রমজানে আগাম পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কখনই নির্বাচন চায়নি। তারা নির্বাচন নষ্ট করতে অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে, ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) যতই অগ্নিসংযোগ করবে, ততই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। তারা জানে যে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কারণেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না।
তিনি বলেন, ‘বরং তারা নির্বাচন নষ্ট করতে চেয়েছিল এবং ক্ষমতায় আসার জন্য অবৈধ উপায় খুঁজছিল।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি সহ্য করা হবে না: নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে ‘বহিরাগত প্রচেষ্টা’ ছিল: রাশিয়া
নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার ‘বহিরাগত প্রচেষ্টা’ সত্ত্বেও ভোটারদের মত প্রকাশের ইচ্ছার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার জন্য বাংলাদেশের নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া।
বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচন ও নতুন সরকার প্রসঙ্গে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে বহিরাগতদের প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। এর আগেও আমরা গত বছরের ২২ নভেম্বর ও ১৫ ডিসেম্বরে উল্লেখ করেছি।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের সভাপতি হলেন ড. ইউনূস
তিনি বলেন, স্থানীয় পর্যবেক্ষক ও রাশিয়াসহ ২০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নির্বাচনের বৈধতা ও সাধারণভাবে গৃহীত শর্ত মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, রুশ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সদস্য আন্দ্রে শুতভ নির্বাচনের সময় বাংলাদেশে রুশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গভর্নর সের্গেইভিচের বৈঠক অনুষ্ঠিত
নতুন মন্ত্রিসভায় ৩ নারী সংসদ সদস্য
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) শপথ নিতে যাওয়া নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন ৩ জন নারী সংসদ সদস্যের। যার মধ্যে একজন মন্ত্রী ও দু’জন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
৩৬ জনের নতুন মন্ত্রিসভায় ২৫ মন্ত্রী, ১১ প্রতিমন্ত্রী। যার মধ্যে দু’জন নারীসহ ২০ জনই নতুন।
১১ জন প্রতিমন্ত্রীর তালিকায় জায়গা হলো দু’জন নারী সংসদ সদস্যের। দু’জনই এবারের মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ।
দীপু মনি
চাঁদপুর-৩ আসনে নির্বাচনে লড়েছেন ৭ জন প্রার্থী। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দিপু মনি ১৬৫টি কেন্দ্রে ১ লাখ ৯ হাজার ৪৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিজয়ী দিপু মনির সবচেয়ে কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর সামসুল আলম ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ২৪ হাজার ১৮৩ ভোট।
আরও পড়ুন: নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে ১১ জানুয়ারি
রুমানা আলী
গাজীপুর-৩ আসনে নৌকা প্রতীকে ২৪ হাজার ৫২২ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রুমানা আলী।
রুমানা আলী নির্বাচনে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৯৬ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ। তিনি ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৭৪ ভোট।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভা গঠনে শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
সিমিন হোসেন রিমি
গাজীপুর-৪ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমি ৮৯ হাজার ৭২৯ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আফসারউদ্দিন আহমদ খান ৪৪ হাজার ৪৫ ভোট পেয়েছেন।
বিজয়ী সিমিন হোসেন রিমি হচ্ছেন এই আসনে আগেকার সংসদ সদস্য তানজিম আহমদ সোহেল তাজের বড় বোন।
রিমি ও সোহেল তাজের বাবা বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ।
আরও পড়ুন: নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা
নির্বাচন হয়েছে সরকার বনাম সরকার: তৈমূর
তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, নির্বাচন হয়েছে সরকার বনাম সরকারের। দেশ একদলীয় শাসনের দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা সাজানো নির্বাচনে আর যাবো না। আমাদের সকল প্রার্থীরা ঢাকায় আসবে। তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেব।
আরও পড়ুন: অদৃশ্য শক্তির মতো আইভীর মাথার ওপর আমার হাত আছে: তৈমূর
বুধবার(১০ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অভিযোগ প্রদান শেষে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের জন্য দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি সম্ভব না। আগামী প্রজন্মও পারবে না। তৃতীয় প্রজন্ম হয়ত পারবে। সরকার ভাবে ক্ষমতা ছাড়লে আমাকে জেলে যেতে হবে। সেকারণেই ওরা নির্বাচন কুক্ষিগত করে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের কোন ক্ষমতা নেই। প্রশাসনও সরকারের আজ্ঞাবহ। সিইসির সচিবের বক্তব্য শুনেছেন, সে বলেছে ডিসিদের কাছে মেসেজ চলে গেছে। সে অনুযায়ী রেজাল্ট হবে। আমরা সবসময় রাজপথে ছিলাম। বাকি জীবনও আমাকে রাজপথেই থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: আমৃত্যু নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য কাজ করবো: আইভী
তৈমূর বলেন, যখন চোখের সামনে দেখলাম এই ব্যারিস্টার সুমনও বলেছে সরকার বনাম সরকার নির্বাচন। এটা তাদের মুখেরই কথা। রূপগঞ্জের দুটি সন্ত্রাসী বাহিনী শমসের ডাকাত ও রীতা মেম্বার। আমরা বারবার নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে বলে এসেছি। আমাদের কাছে ডকুমেন্টস আছে।
আমরা বলেছি- এরকম সিরিজ মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনা হোক। কিন্তু আমরা কোন প্রতিকার পাইনি। নির্বাচনের দিন চনপাড়ায় রেজাল্ট ঘোষণার পর সমশের বাহিনী ও রিতা বাহিনী আমার কর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট করে। আমি আজ এই পরিবারটিকে নিয়ে এসপি অফিসে এসেছি।
আরও পড়ুন: সবার নজর নারায়ণগঞ্জে
যেহেতু তারা আমার নির্বাচন করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসপি সাহেব আশ্বস্ত করেছেন যে তারা নির্বিঘ্নে চনপাড়ায় বসবাস করতে পারবে। তিনি ওসিকে ফোনে নির্দেশনাও দিয়েছেন।
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশি বন্ধুদের অভিনন্দন
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদাররা তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নতুন ও পুরাতন মুখের সমন্বয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করতে যাচ্ছেন তিনি।
তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
রবিবারের নির্বাচন ‘অবাধ বা সুষ্ঠু’ হয়নি- যুক্তরাষ্ট্র এমন অভিযোগ করলেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে দেশটি।
আরও পড়ুন: স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
ভোটের একদিন পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, 'অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নিতে, বাংলাদেশের মানবাধিকার ও সুশীল সমাজকে সমর্থন করতে এবং আমাদের জনগণের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, জিএসপি প্লাস অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য স্কিমে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রবেশাধিকারসহ রাজনৈতিক, মানবাধিকার, বাণিজ্য ও উন্নয়ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে চিহ্নিত করে অগ্রাধিকারের বিষয়ে তারা কাজ অব্যাহত রাখবে।
ইইউ'র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেল ফন্টেলেস বলেন, 'রাজনৈতিক বহুত্ববাদ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানকে সম্মান জানাতে এবং শান্তিপূর্ণ সংলাপে অংশ নিতে ইইউ সব অংশীজনকে জোরালোভাবে উৎসাহিত করে।’
ইইউ বলেছে, এটি অপরিহার্য যে গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং রাজনৈতিক দলগুলো সেন্সরশিপ বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
যুক্তরাজ্য সব রাজনৈতিক দলকে তাদের মতপার্থক্য দূর করতে এবং বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে অভিন্ন পথ খুঁজে বের করতে উৎসাহিত করেছে। ‘আমরা এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন অব্যাহত রাখব।’
যুক্তরাজ্য অবশ্য বলেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশিদের 'পূর্ণ সুযোগ' দেয়নি।
মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনের শাসন এবং উন্নয়নের প্রসারে 'সহায়ক' গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়া সরকার বলেছে, 'একটি উন্মুক্ত, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চলের জন্য আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এর আগে ভারত, জাপান, চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মুসলিম বিশ্বসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রাজিলের অভিনন্দন
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল উপযুক্ত সুবিধাজনক সময়ে নেপাল সফরের জন্য শেখ হাসিনাকে আন্তরিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসিও নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'নির্বাচনে বিজয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার অভিনন্দন।’
তিনি বলেন, কমনওয়েলথ সচিবালয় জাতীয় অগ্রাধিকার অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে প্রস্তুত এবং বাংলাদেশের জনগণ ও কমনওয়েলথ পরিবারের সকল সদস্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
কানাডা অবশ্য 'হতাশা' প্রকাশ করে বলেছে, এই নির্বাচন প্রক্রিয়া গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার যে নীতির ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার 'ঘাটতি' হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সকল পক্ষের সঙ্গে স্বচ্ছভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ
গত ৯ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে কানাডা সরকার বলেছে, 'কানাডা বাংলাদেশি নাগরিকদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রশংসা ও সমর্থন করে এবং নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের সময় সংঘটিত ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার নিন্দা জানায়।’
অন্যদিকে কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, 'আমরা কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর করার অপেক্ষায় রয়েছি এবং এ লক্ষ্যে আপনার ও আপনার সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’
কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারম্যান ব্র্যাড রেডেকোপ এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান সালমা আতাউল্লাহজান, কেভিন ওয়াহ এমপি, ল্যারি ব্রক এমপি এবং কেন হার্ডি এমপি যৌথভাবে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান অধ্যাপক ক্লাউস সোয়াব বলেন, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে সক্ষম হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো এক বার্তায় সোয়াব বলেন, 'আপনার নেতৃত্বে গৃহীত সাহসী সংস্কারগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানকে উন্নত করতে সহায়তা করেছে।’
তিনি বলেন, 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তার পূর্ণ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা অর্জনে সহায়তা করার জন্য আপনার এবং আপনার সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছে।’
আরও পড়ুন: স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস: স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নিঃসন্দেহে উন্নয়নের গতিশীলতার একটি শক্তিশালী প্রভাবশালী দেশ।
তিনি বলেন, নতুন অর্থনৈতিক প্রকল্প, শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, নতুন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ(ফডিআই) সুবিধা এবং বৈশ্বিক সংঘাত বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থায়ন করতে হবে।
এক্স (পূর্বে টুইটার) এ শেয়ার করা পৃথক বার্তায় তিনি বলেন, প্রায় সবাই একমত যে সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দলের অভাব রয়েছে। 'আওয়ামী লীগকে একটা পথ খুঁজে বের করতে হবে'
অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের চ্যালেঞ্জগুলো বিশাল, যা উন্মুক্ত ও তীক্ষ্ণ বিতর্কের মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, 'ভিন্নমত ও মতবিরোধের সুযোগ দিতে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রস্তাব করছি।’
সরকার বলেছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে কোনো অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়াই নির্বাচিত সরকারের মধ্যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের এক ব্রিফিং নোটে বলেছে, 'গণতন্ত্রের দুর্বলতা আছে, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমেই তা পরিপক্কতা অর্জন করে।
কূটনীতিকদের কাছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী এতে অংশ নিতে আগ্রহী হলেও এটা দুঃখজনক যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অসাংবিধানিক দাবির অজুহাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০১১ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে অসাংবিধানিক ও অকার্যকর ঘোষণা করে। কারণ, এটি আমাদের রাষ্ট্রনীতির মৌলিক নীতি হিসাবে গণতন্ত্রের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরও পড়ুন: সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
গত ৭ জানুয়ারি ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে 'অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ' পদ্ধতিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
২০২৪ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের যাত্রার ইতিহাসে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা আরও ভাল অংশীদারিত্ব, আরও ভাল সহযোগিতা এবং আরও ভাল আবাসন দেখার জন্য আগ্রহী। এটা আমাদের জন্য অপরিহার্য।’
তিনি বলেন, সহযোগিতা ও সহায়তার কারণে বাংলাদেশ অনেক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে জয়ের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসি।
তিনি বলেন, 'নির্বাচনে বিজয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার অভিনন্দন।
আরও পড়ুন: বিএমসিসিআইয়ের সভাপতি সাব্বির খান, মহাসচিব মোতাহার খান
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এক অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়, কমনওয়েলথ সচিবালয় জাতীয় অগ্রাধিকার অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের জনগণ এবং কমনওয়েলথ পরিবারের সকল সদস্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় পার্টির এমপিরা পরে শপথ নেবেন: জাপা মহাসচিব
নির্বাচনে জয়ের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
রবিবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে: প্রধানমন্ত্রী
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন শেখ হাসিনা।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে সঙ্গে নিয়ে বনানী কবরস্থানে যান এবং ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। তারা সেখানে ফুলের পাপড়ি বিছিয়ে দেন।
শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ফাতেহা পাঠ করেন এবং ১৫ আগস্টের শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
এ সময় সায়মা ওয়াজেদ ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন ২০২৪: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীনের অভিনন্দন
নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের অভিনন্দন
বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না: রবিবারের নির্বাচন প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্য
রবিবারের নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না বলে অভিমত দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
সোমবার পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক দপ্তরের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাজ্য দেখেছে যে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের প্রচার চলাকালে সংঘটিত ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য বলেছে, রাজনীতিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো জায়গা নেই।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের চ্যানেল এসের বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পেলেন সাঈদা মুনা তাসনীম
যুক্তরাজ্য সকল রাজনৈতিক দলকে তাদের মতপার্থক্য দূর করে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে একটি অভিন্ন পথ খুঁজে বের করতে উৎসাহিত করেছে এবং বলেছে, ‘আমরা এই প্রক্রিয়ায় সমর্থন অব্যাহত রাখব।’
বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য বলেছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর নির্ভর করে।
এতে বলা হয়, ‘মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এই মানদণ্ডগুলো ধারাবাহিকভাবে পূরণ করা হয়নি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভোটের আগে বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্য বলেছে, ‘একটি টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা ও প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করলে দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে মামলা এবং ১৯৭১-এর ইতিহাসের ভবিষ্যৎ
কর্মীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ইউনূসের: নির্বাচন পরবর্তী সভায় প্রধানমন্ত্রী
শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্ষমা করা তার কাজ নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নির্বাচনে বিজয় উদযাপনের সময় ড. ইউনূসকে ক্ষমা করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রম আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে এখানে তার কিছু করার নেই।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) গণভবনে সফররত বিদেশি পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন ২০২৪: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীনের অভিনন্দন
শেখ হাসিনা বলেন, ইউনূস শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং নিজের কর্মচারীদের বঞ্চিত করেছেন। সেসব কর্মচারীরাই শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ‘এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। তিনি যাদের বঞ্চিত করেছেন, তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।’
কোনো বিরোধী দল ছাড়াই বাংলাদেশকে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে তিনি বিশ্বাস করতে পারেন কি না- বিবিসির এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, প্রতিটি দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে।
ওই সাংবাদিক আরও উল্লেখ করেন, রবিবারের নির্বাচনে ৬০ শতাংশ ভোটার ভোট দেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো নির্দিষ্ট দল নির্বাচনে অংশ না নেয়, তার মানে এই নয় যে গণতন্ত্র নেই। তিনি বলেন, 'জনগণ অংশ নিয়েছে কি না- তা বিবেচনা করতে হবে।’
তিনি বলেন, 'দলটি নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং তারা জনগণকে ভোট দিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জনগণ তাদের কথা শোনেনি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, এখানে জনগণের অংশগ্রহণই মূল বিষয়। এটা ছাড়া গণতন্ত্রের অন্য কোনো সংজ্ঞা আছে কি না তা জানেন না।
সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের জন্য বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করেন, তিনি কীভাবে একটি গণতান্ত্রিক দলকে সংজ্ঞায়িত করেন। তিনি বলেন, 'তারা একটি সন্ত্রাসী দল।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইন্দিরা গান্ধী, গোল্ডা মেইর, মার্গারেট থ্যাচার ও শ্রীমাভো বন্দরনায়েকের মতো মহান নারী নেতাদের সঙ্গে তার তুলনা হোক তা তিনি চান না।
তিনি বলেন, 'তারা মহান নারী ছিলেন। আমি একজন সহজ-সরল মানুষ।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করার সময় তিনি নিজেকে নারী বা পুরুষ মনে করেন না।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসা এক মার্কিন নাগরিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'প্রতিটি দেশের সঙ্গে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। সুতরাং, আমাদের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক। এটা এখন আপনার এবং আপনার সরকারের ওপর নির্ভর করছে।’
পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হচ্ছে 'সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়’, তাই বাংলাদেশের সব দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
ভারতকে বাংলাদেশের মহান বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার পরবর্তী সরকারের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ (২০২৬ সাল থেকে) হিসেবে উন্নীত করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করা, দারিদ্র্য বিমোচন, চরম দারিদ্র্য বিমোচন, দেশকে গৃহহীনমুক্ত করা। সর্বোপরি দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখা এবং দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের অভিনন্দন
এক বিদেশি সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং জনগণের উন্নত জীবন নিশ্চিত করাই আমার মূল লক্ষ্য।’