বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে শাবিপ্রবিতে সপ্তাহে ১ দিন অনলাইন ক্লাস
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা বিবেচনা করে সপ্তাহের একদিন অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সপ্তাহের বৃহস্পতিবার অনলাইনে এবং অন্য চারদিন সরাসরি ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এছাড়া ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে এবং অন্যান্য দিনেও কিছু পরিবহন সেবা কিছুটা হ্রাস করা হবে।
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে সৃষ্ট জাতীয় এ সমস্যায় আমরা দেশবাসীর পাশে থাকতে চাই। আমাদেরকে দেশপ্রেমের সঙ্গে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয় করোনা মহামারিতে ক্যাম্পাসে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেশের মানুষের পাশে ছিল। এবারও ২০ শতাংশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে তাদের পাশে থাকবো।’
তবে কোনকিছুতেই যাতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকার জন্য বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকদের প্রতি তিনি অনুরোধ করেন তিনি।
সভায় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঈদে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশাসনের প্রীতিভোজ আয়োজন
ঈদের ছুটির পর শাবিপ্রবিতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত
‘বৈচিত্র্যময় জ্বালানি খাত সময়ের দাবি'
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী একটি বৈচিত্র্যময় জ্বালানি খাত গড়ে তোলার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যা সমাধানের জন্য সৃজনশীল সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।’
মঙ্গলবার জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আয়োজিত 'বৈচিত্র্যময় শক্তি, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ' -শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা সেচ পাম্পে ডিজেলের পরিবর্তে সৌর শক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সৌর সেচ পাম্প চালু করতে পারি, তবে এটি অর্ধ মিলিয়ন মেট্রিক টন ডিজেল সাশ্রয় করতে পারে।’
সরকারের গ্যাস আমদানি নীতির পক্ষে ড. চৌধুরী বলেন, এটি বহুমুখী জ্বালানি-মিশ্রণ নীতির অংশ হিসেবে চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত যশোরের সবজির বাজার
তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয় যে দেশে গত ৫-১০ বছরে কোনো খনন হয়নি। বরং, গত পাঁচ বছরে ৩৫টি কূপ খনন করা হয়েছে, যার মানে বছরে গড়ে সাতটি কূপ খনন করা হয়েছে।’
সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম ওয়াসেকা আয়েশা খানম, বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সচিব মো. (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান।
অনুষ্ঠানে ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া পৃথক দুটি উপস্থাপনা করেন।
তার পক্ষে নসরুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট একটি বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র কিনে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আজ অবধি চুক্তির সুবিধা পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, জ্বালানি খাতে সিদ্ধান্ত নেয়ার সাহস দেখিয়ে তার (বঙ্গবন্ধুর) পথ অনুসরণ করতে হবে।
তিনি সকলকে ঐক্য ও ধৈর্যের মাধ্যমে জ্বালানি খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আহ্বান জানান।
বেগম ওয়াসেকা আয়েশা খানম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যা সমাধানে উপযুক্ত প্রযুক্তি ও মৌলিক গবেষণা কাজকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
অন্যদিকে হাবিবুর রহমান বলেন, সরকার পরিবহন খাতে বিদ্যুতের ব্যবহার উৎসাহিত করতে বৈদ্যুতিক যানবাহন নীতি প্রণয়ন করেছে। ‘নবায়নযোগ্য বিকল্প হিসেবে অফশোর বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মডুলার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথাও ভাবা হচ্ছে।
নাজমুল আহসান বলেন, পেট্রোবাংলা আগামী কয়েক বছরে ৪৬টি কূপ খননের একটি পদক্ষেপ শুরু করেছে, ‘যার ফলে জাতীয় গ্রিডে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাবে’।
এবিএম আজাদ বলেন, বিপিসি একটি সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যা গভীর সমুদ্র থেকে চট্টগ্রামের জ্বালানি শোধনাগারে পেট্রোলিয়াম পরিবহনে বছরে ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করবে।
আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে নীলক্ষেতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়াতে আইএমএফের কোনো প্রস্তাব পাইনি: অর্থমন্ত্রী
ঋণ দেয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে পেট্রোলিয়াম ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে কোনো প্রস্তাব পাননি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা (আইএমএফ) বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কোনো প্রস্তাব দেয়নি।’
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরপর দুই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আইএমএফের কাছে ঋণ চাইলেও অর্থনীতির অবস্থা খারাপ নয়: অর্থমন্ত্রী
আইএমএফ সাড়ে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেলআউট ঋণ দেয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে- একটি সংবাদমাধ্যমের এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়।
দেশের স্বার্থে কোনো বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়াতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন তিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা টাকা পাচার করেছে তারা যেন নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে তা ফেরত আনে সে ব্যাপারে সবার উৎসাহিত করা উচিত।
কালো টাকা সাদা করার জন্য সরকারের এমন পদক্ষেপের বিষয়ে নিজের অবস্থানের পক্ষে তিনি বলেন, সরকারি ব্যবস্থার কারণে টাকা কালো হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সবকিছু ঠিক পথে এগোচ্ছে। তাই কয়েক মাসের মধ্যে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশই উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ব্যাপক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার মধ্যেও চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা
চলমান জ্বালানি সংকটের মধ্যে সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য কিছু কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও, সারা দেশে বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু রয়েছে; যার কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি আরও বাড়ছে।
জেলার পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি) কর্তৃপক্ষ জেলার বাসিন্দাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করে এমন ব্যাপক লোডশেডিংয়ের জন্য কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে। যার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা একটি শীর্ষস্থানীয় কারণ বলে মনে করছে তারা।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার তথ্যমতে, পৌরসভায় নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা দুই হাজার ৪০০ হলেও বাস্তবে এ ধরনের প্রায় চার হাজার রিকশা রাস্তায় চলাচল করছে।
এতে বলা হয়েছে, এই যানবাহনগুলো প্রতিদিন গড়ে ৩৩ হাজার ইউনিট এবং প্রতি মাসে ৯লাখ ৯০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
এতে আরও বলা হয়, একটি পরিবার প্রতি মাসে প্রায় ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার মানে মোট তিন হাজার ৩০০ পরিবার এই পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে; যা ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চার্জার স্টেশনের মালিকরা জানান, রিকশার ব্যাটারি চার্জ করতে তারা ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা নেন। এছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশার চালককে দৈনিক ৩০০ টাকা দিতে হয় মালিককে।
তারা আরও জানান,‘একটি সম্পূর্ণ চার্জযুক্ত ব্যাটারি চালিত রিকশা ২০০ কিলোমিটার যেতে পারে। কখনও কখনও দীর্ঘ দূরত্ব চালানোর জন্য বিকালের মধ্যে চার্জ কমে যায়। ’
জেলার ইজিবাইক চালক মো. কালাম বলেন, এই ধরনের রিকশার একজন চালক প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করেন।
ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, চার্জিং স্টেশনের জন্য আলাদা বিদ্যুতের দর রয়েছে। ‘ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ করার জন্য ফ্ল্যাট রেট ৭ টাকা ৬৪ পয়সা, অফ পিক রেট ৬টাকা ৮৮ পয়সা এবং পিক রেট ৯ টাকা ৫৫ পয়সা।
মামুনুর বলেন, যারা ডবল ট্যারিফ মিটার ব্যবহার করেন তারা পিক এবং অফ পিক রেট অনুযায়ী তাদের বিল পরিশোধ করেন; আর যাদের একক ট্যারিফ মিটার, তারা ফ্ল্যাট রেট হারে তাদের বিল পরিশোধ করে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকে প্রভাবিত করে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় দৈনিক দুই ঘণ্টা লোডশেডিং এর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পরে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সংশোধিত সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘এলাকা অনুযায়ী, আমরা সারা দেশে প্রতিদিন এক ঘণ্টার লোডশেডিং শুরু করব। প্রয়োজন হলে, সিদ্ধান্তটি এক সপ্তাহ পরে পুনর্বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার দেশে মোট ১৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি লোডশেডিং অধিকাংশ বিতরণ সংস্থার
সরকার রাত ৮ টার মধ্যে শপিং মল বন্ধ, এয়ার কুলারের সীমাবদ্ধ ব্যবহার সহ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে। এছাড়া অফিসের সময় সীমিত করার এবং সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার পরিকল্পনাও চলছে।
বর্তমান বিদ্যুৎ সংকটের ৯টি কারণ চিহ্নিত করেছে জাতীয় কমিটি
তেল-গ্যাস ও খনিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ খাত ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য নয়টি সুনির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করেছে।
রবিবার কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, বিদেশি কোম্পানির স্বার্থে সরকারের অনুসৃত ভুল নীতি ও দুর্নীতি বিদ্যুৎ খাতকে বর্তমান সংকটের মুখে ফেলেছে।
সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়ে কমিটি বলেছে, দেশি-বিদেশি কোম্পানি ও তাদের কমিশন এজেন্টদের একটি অংশ এই ভুল নীতি ও দুর্নীতির কারণে লাভবান হয়েছে।
সংকটের জন্য কমিটি যে নয়টি কারণ চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে রয়েছে- তেল-কয়লা ও এলএনজি আমদানি-নির্ভর নীতির ভিত্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উন্নয়ন, ভাড়া, কুইক রেন্টাল এবং অন্যান্য ধরনের পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য ৫৪ হাজার কোটি টাকা দেয়া,ক্যাপাসিটি চার্জ,ভাড়া,কুইক রেন্টাল ও অন্যান্য তেল-ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট কাজ না করে ফেলে রাখা এবং পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিচালনার জন্য এলএনজি-আমদানি নির্ভরতা বৃদ্ধি।
অন্যান্য কারণগুলো হল- নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকল্পগুলো এড়িয়ে যাওয়া এবং উপেক্ষা করা, স্থানীয় গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগের অভাব, প্রতিবেশি মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পরে অফশোর গ্যাস অনুসন্ধান বন্ধ রাখা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের উন্নয়নের দিকে মনোযোগ না দেয়া, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে পরিবেশ সুরক্ষা উপেক্ষা করা এবং দেশীয় মালিকানা নিশ্চিত করে হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানে ঠিকাদার নিয়োগে উদ্যোগের অভাব।
আরও পড়ুন: লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি লোডশেডিং অধিকাংশ বিতরণ সংস্থার
দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু
ঘোড়াশালে ৩৬৫ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) আওতাধীন এলাকায় গ্রাহকরা তিন ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং অনুভব করেছেন এবং ঢাকা পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) আওতাধীন এলাকায় কোনো লোডশেডিং হয়নি।
শনিবার সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ঘোড়াশাল পাওয়ার স্টেশনের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র জোরপূর্বক বন্ধ করে দেয়ায় উত্তরা, গুলশান, বারিধারা, বসুন্ধরা, বনানী, বাড্ডা, উত্তরা খান, দক্ষিণখান, আগারগাঁও, মিরপুর, কাফরুল, কল্যাণপুর, খিলক্ষেত, পল্লবী, রূপনগর ও টঙ্গীসহ ডেসকো এলাকায় দীর্ঘ লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ,
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী বলেন, ‘ঘোড়াশালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় আমরা অন্য দিনের তুলনায় কম সরবরাহ (বিদ্যুৎ) পাচ্ছি বলে বিভিন্ন সময়ে তিন ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে।
তিনি জানান, ঘোড়াশাল পাওয়ার স্টেশন হচ্ছে বিদ্যুতের একটি প্রধান উৎস, যেখান থেকে ডেসকো পাওয়ার সাপ্লাই পায়।
ডেসকোর প্রধান নির্বাহী ইউএনবিকে বলেন, ‘ঘোড়াশাল স্টেশনে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পর শনিবার ডেসকোতে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুত সরবরাহ এক হাজার ৩৮ মেগাওয়াটের পরিবর্তে ৭৫০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছে।’
ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে ডেসকোকে প্রায় ২৭৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার ভোর ৪টা ৪৯ মিনিটে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৬৫ মেগাওয়াট ইউনিট-৭ বিপর্যস্ত হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়।
বিপিডিবির জনসংযোগ পরিচালক শামীম হাসান জানান, শনিবার বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিস্থিতি ভালো ছিল। এদিন এক হাজার ২৪২ মেগাওয়াটের নির্ধারিত লোডশেডিং অনুমান করা হয়েছিল এবং ১৪ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে প্রজেক্টেড উৎপাদন ছিল ১২ হাজার ৭৫৮ মেগাওয়াট।
ডিপিডিসি তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের এলাকায় কোন নির্ধারিত লোডশেডিং নেই, যা মূলত ঢাকা শহরের দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং কেন্দ্রীয় অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
চলমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় মঙ্গলবার থেকে সারা বাংলাদেশে দৈনিক এক ঘণ্টা এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু করেছে সরকার।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা
সরকারি অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত
ভবিষ্যতের জন্য বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সব সরকারি অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন: পুলিশ বাহিনীকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের নির্দেশ আইজিপির
সরকারের মিতব্যয়ী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বৈঠকে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. সব সরকারি অফিসে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহার কমানোর জন্য সব মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
২. সংশ্লিষ্ট অফিসের জন্য বরাদ্দ করা জ্বালানির ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের জন্য অর্থ বিভাগ একটি গেজেট প্রকাশ করবে।
৩. অনলাইনে সভা আয়োজন করতে হবে এবং জরুরি না হলে সশরীরে সভা এড়িয়ে যেতে হবে।
৪. অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করা।
৫. মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা জোরদার করা এবং খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
৬. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার যৌক্তিক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
৭. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অর্থবছরের শুরু থেকেই অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
৮. প্রতিটি মন্ত্রণালয় ক্রয় পরিকল্পনা পর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেবে।
বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম, অর্থ বিভাগের জ্যৈষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার কোন এলাকায় কখন লোডশেডিং, তালিকা প্রকাশ
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লোডশেডিং হবে।
এই দুই কোম্পানির ওয়েবসাইট ভিজিট করে নির্দিষ্ট লিঙ্কে গেলে লোডশেডিংয়ের সম্ভাব্য সময়সূচি জানতে পারবেন গ্রাহকরা।
আরও পড়ুন: দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু
ডিপিডিসির সম্ভাব্য লোডশেডিং সময়সূচি: https://dpdc.gov.bd/site/page/18336fb4-6096-41b9-9172-837283684a15
ডেসকোর সম্ভাব্য লোডশেডিং সময়সূচি: https://www.desco.org.bd/bangla/uploads_b/pdf/Wednesday_DESCO_Load_Shed_Schedule_20_07.pdf
এসি, বাতি বন্ধ রেখে সংসদীয় কমিটির বৈঠক
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি), এমনকি বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার না করেই বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি বৈঠক করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে সভা পরিচালনার জন্য বাইরে থেকে দিনের আলো যথেষ্ট ছিল বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারপার্সন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ওয়াসেকা আয়শা খান।
ওয়াসেকা দাবি করেছেন যে সভায় আইন প্রণেতারা এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
সংসদ সচিবালয় সূত্র বলেছে, কোনও লোডশেডিং না থাকা সত্ত্বেও গরমের মধ্যে এসি ও বাতি ছাড়া কোন কমিটির এটিই প্রথম বৈঠক।
তিনি বলেন, সভা পরিচালনার জন্য বাইরের দিনের আলোই যথেষ্ট ছিল।
কমিটি বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে বিভিন্ন সরকারি ভবনে এনার্জি অডিট করতে বলেছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
সভায় প্রধান বৈদ্যুতিক পরিদর্শন (সিইআই) দপ্তরের কার্যক্রম এবং দেশের সার্বিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় এর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ ওয়াসেকা বলেন, প্রাথমিকভাবে সংসদীয় কমিটি একটি সরকারি ভবনে এনার্জি অডিট করতে বলেছে যেখানে এসি ব্যবহারের কারণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদ্যুৎ খরচ হয়।
‘টেকসই এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বিদ্যুৎ বিভাগকে অডিট পরিচালনা করতে বলা হয়েছে’, তিনি বলেন।
অডিট রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে বলেও ওয়াসেকা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সংসদীয় কমিটি চায় বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও পরিবেশ রক্ষার জন্য সব সরকারি ভবনগুলোকে জ্বালানি সাশ্রয়ী কাঠামোতে পরিণত করা হোক।
বৈঠকে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের বিপরীতে গৃহীত বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়।
কমিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য প্রবিধান প্রণয়নের সুপারিশ করেছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা
গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান নসরুল হামিদের
মঙ্গলবার দেশে মোট ১৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং
সরকার কর্তৃক ঘোষিত এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের প্রথম দিন দেশে মোট ১৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টায় রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) জনসংযোগ বিভাগের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পরিচালক শামীম হাসান বলেন, ‘আমরা ১৪ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে মোট ১২ হাজার ৪৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ব্যবধান মেটাতে এক হাজার ৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো দেশে জ্বালানি সংকট এড়াতে বিদ্যুতের রেশনিংয়ের আশ্রয় নেয়।
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার একজন বাসিন্দা জানান, সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত তারা এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হন।
অন্যদিকে নিকেতনের আরেক বাসিন্দা জানান, তাদের এলাকায় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না।
একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির নির্বাহী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, বনানীতে তাদের অফিস দুপুর ১২টা থেকে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী দৈনিক দুই ঘণ্টা এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং কার্যকর করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সংশোধিত সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে, পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে দৈনিক এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টার লোডশেডিং দেয়া হবে। এক সপ্তাহ পর প্রয়োজনে আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবো।’
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড তাদের এলাকাভিত্তিক বিভ্রাটের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।
এছাড়া সরকার রাত ৮টার মধ্যে শপিংমল ও বাজার বন্ধ করার এবং এয়ার কন্ডিশনার সীমিত ব্যবহার সহ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা
এবং অফিসের সময়সীমা সীমিত করার এবং প্রতি সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার পরিকল্পনা চলছে।
তবে কিছু এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের বাইরেও তাদের ঘন ঘন বিভ্রাটের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
রাজধানীর রামপুরা এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর জানান, তার এলাকায় দিনভর কয়েকবার বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হয়েছে।
আরও কয়েকটি এলাকা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান,’১০-১৫ মিনিটের বিভ্রাটগুলো সরকারের ঘোষিত পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের অংশ নয়৷ দুর্বল বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাপনার কারণে এটি ঘটতে পারে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে সরকার অফিসের সময় পরিবর্তনের কথা ভাবছে: জ্বালানি উপদেষ্টা