বিদ্যুৎ
কাল থেকে এলাকাভিত্তিক ২ ঘণ্টা লোডশেডিং
বিদ্যুতের তীব্র সংকট মোকাবিলায় মঙ্গলবার থেকে প্রতি এলাকায় দৈনিক দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ড. তৌফিক ইলাহী এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়সূচির অধীনে লোডশেডিং পরিচালনা করবে,যাতে জনগণ তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত হয় এবং কোনো ঝামেলা অনুভব না করে।
তবে প্রতিটি স্পেলে আধা ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং চলবে না।
তিনি বলেন, পেট্রোলিয়াম জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ডিজেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকবে এবং শপিংমল ও বাজার রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার মতো কিছু বিকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি অফিসের সময় পুনঃনির্ধারণ করা হতে পারে এবং শারীরিক উপস্থিতির পরিবর্তে ভার্চুয়াল মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে সরকার অফিসের সময় পরিবর্তনের কথা ভাবছে: জ্বালানি উপদেষ্টা
কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে জনগণের কাছে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চিত পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় সরকারি ভর্তুকি হ্রাস করা প্রয়োজন বলে জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি দেশের জনগণ আমাদের সহযোগিতা করবে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) দেশের প্রথম ক্যাম্পাসভিত্তিক বিজনেস ইনকিউবেটর ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’, শেখ জামাল ডরমেটরি এবং রোজি জামাল ডরমেটরির ভার্চুয়াল উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ঈদের আগে ২৭১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং এলএনজি আমদানিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের লোডশেডিং এর দিকে যেতে হবে এবং আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমিত করতে হবে যাতে সরকার এই খাতে ভর্তুকি কমাতে পারে।
তিনি বলেন, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির জন্য সরকার দেয় ৫৯ দশমিক ৬০ টাকা যেখানে ভোক্তা পর্যায়ে দাম মাত্র ৯ দশমিক ৬ টাকা। সম্প্রতি দাম বাড়িয়ে ১১ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও সেখানে বিশাল ভর্তুকি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ প্রতি কিলোওয়াট ১২ দশমিক ৮৪ টাকা, যেখানে সরকার চার্জ করছে মাত্র পাঁচ দশমিক ৮ টাকা।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফারনিজ তেলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল্য ১৭.৪১ টাকা এবং বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫.০৮ টাকা। ডিজেলের জন্য, প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ৩৬ দশমিক ৮৫ টাকা এবং বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫ দশমিক ০৮ টাকা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ১২ দশমিক ৩৭ টাকা যেখানে বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫ দশমিক ০৮ টাকা।
তিনি বলেন, কতদিন আমরা এত বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে পারব। আমাদের গৃহহীনদের জন্য খাদ্য, চিকিৎসা সুবিধা এবং ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে সরকার ভর্তুকি হিসাবে ৮৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ভর্তুকি না কমালে সরকার টাকা পাবে কোথা থেকে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমতাসহ সব কিছুর ব্যবহার এবং নিজ নিজ সঞ্চয় বাড়ানোর জন্য তিনি সকলকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে একটিই বিকল্প আছে, আমি ইতোমধ্যে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং আরোপ করার নির্দেশ দিয়েছি এবং জনগণকে আগে জানানোর জন্য একটি রুটিন তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছি যাতে তারা প্রস্তুতি নিতে পারে এবং আমরা তাদের ভোগান্তি কমাতে পারি।
গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান নসরুল হামিদের
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান লোডশেডিংয়ের মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই পরিস্থিতি খুব বেশি দিন থাকবে না। এ বছরের মধ্যেই পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ভারত থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট আমদানি করা বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
এই পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর প্রভাব সব জায়গাতে পড়েছে। কোভিড-১৯ এর ধাক্কা যখন সবাই কাটিয়ে উঠছিল তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি সারা বিশ্বকেই গভীর এক সংকটে ফেলেছে। এই সংকট শুধু উন্নয়নশীল দেশেই না অনেক উন্নত দেশেও এর আঁচ লেগেছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি মার্কেট চরম অস্থিতিশীল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক খাদ্য পণ্যের বাজারও বেসামাল। বৈশ্বিক এই সংকট আমাদেরও বিপদে ফেলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংকটের কারণে দেশব্যাপী লোডশেডিং বাড়ছে
নসরুল হামিদ বলেন, আপনারা জানেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ৫২ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির অনন্য মাইলফলক অর্জন করেছে। অর্থাৎ গত এক যুগে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে আমাদের শিল্পায়ন অতীতের সকল সময়কে ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে তার ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিবেন। সেই রূপকল্প আমরা বাস্তবায়ন করেছি। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুতের কোনো বিকল্প নাই। আমরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু যুদ্ধের কারণে হঠাৎ করেই কিছুটা ছন্দ পতন সব জায়গাতেই।
তিনি বলেন, জাপানের মত উন্নত ও অর্থনৈতিভাবে সমৃদ্ধ দেশও তাদের সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষকে নিয়মিত বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে পারছে না। একই অবস্থা আরেক উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়ারও। ভারত-পাকিস্তানের কথা নাহয় নাইবা বললাম। অর্থাৎ সবাইকেই এই সংকটের সময়ে রেশনিং করতে হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৬০০-১৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন। সেখানে আমরা দিতে পারছি মাত্র ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এর বেশি গ্যাস আমরা দিতে পারছি না। কারণ আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে কৃষি ও শিল্পখাতকে। কৃষির জন্য সার অপরিহার্য। সার উৎপাদনেও আমাদের অনেক পরিমাণ গ্যাস দিতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরণে ২ শ্রমিক আহত
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের উৎপাদন ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদার বাকি বৃহৎ অংশ এলএনজি আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ও গ্যাসের উৎপাদন ছিল মাত্র দৈনিক ১৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট। সেখান থেকে আমরা উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছিলাম দৈনিক ২৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত। ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমরা এ সক্ষমতায় গ্যাস উৎপাদন করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন কমতে শুরু করেছে আমাদের খনিগুলোর রির্জাভ কমে যাওয়ার কারণে।
তিনি বলেন, এলএনজি আমদানির জন্য কাতার ও ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় আমরা এলএনজি পাচ্ছি। এর পাশাপাশি আমরা আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি আমদানি করতাম। কোভিড-১৯ এর আগে আমরা এক ইউনিট এলএনজি চার ডলারেও আমদানি করেছি কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা ৪১ ডলারও ছাড়িয়ে গেছে। এত উচ্চমূল্যে আমদানি করলে আমাদের অর্থনীতির ওপর বিশাল চাপ তৈরি হবে। শুধু গ্যাসের দামই না। বেড়েছে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম। ২০২১ সালের জুলাইয়ে ডিজেল ব্যারেল প্রতি ৭৭ ডলার ছিল; সেটা এ বছরের জুনে ১৭১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
২০০৮ সালের পূর্বের অবস্থা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালের আগে সারাদেশে দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। সেই কঠিন সময়ে আপনারা শেখ হাসিনার ওপর বিশ্বাস রেখেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেই স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।
এই সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান তিনি। ‘আমরা সবাই মিলে এই সংকট পার করবো।’
সিলেটে বন্যায় মারা গেছে ৩ হাজারের বেশি গবাদিপশু
সিলেটে চলমান বন্যায় প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বন্যার পানিতে সিলেট জেলায় হাঁস-মুরগিসহ তিন হাজারের বেশি গবাদিপশু মারা গেছে। আর ডুবে গেছে গবাদিপশুর ৭১০টি খামার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানি কমলে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে।
বন্যায় হালের গরু ভেসে যেতে দেখেছেন কোম্পানীগঞ্জের বিলাজুর এলাকার এরশাদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘বন্যা সব নিয়ে গেছে। ঘরে গরু ও মুরগি ছিল, এগুলোও ভাসিয়ে নিয়েছে। ঘরের আসবাবপত্রও স্রোতে ভেসে গেছে। কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। কেবল নিজেরা জীবন নিয়ে কোনোমতে আছি।’
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে বন্যায় ৭ দিনে ২২ জনের মৃত্যু: বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে জেলায় এখন পর্যন্ত তিন হাজার ১৮৯টি গবাদিপশু মারা গেছে।
আর জেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় সিলেট জেলায় ৭১০টি খামার ডুবে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে এক হাজার ৯৯১ টন খড় ও দুই হাজার ৯৫৯ টন ঘাস। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত জেলায় প্রাণিসম্পদের ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
চলমান বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। তবে এ উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য নেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে।
অধিপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, পানিতে উপজেলা পরিষদ ভবন তলিয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এই উপজেলার তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
রাত ৮টার পর যা যা খোলা থাকবে
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে আগামীকাল সোমবার থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, বিপণি-বিতান, মার্কেট ও মুদি দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রবিবার বিকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
তবে আইন অনুযায়ী কোন কোন প্রতিষ্ঠান এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে তা তুলে ধরেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. এহছানে এলাহী।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- সোমবার থেকে রাত ৮টার পর ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমান বন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস, সবজি, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান, ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, দাফন ও অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান, তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান, পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ির সার্ভিস স্টেশন, নাপিত ও কেশ প্রসাধনীর দোকান, যে কোন ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, যে কোন শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে, ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: সোমবার থেকে রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ থাকবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
সামাজিক দূরত্ব: কাঁচাবাজারের সময় বাড়ানোর দাবি বিএইচআরসি’র
সোমবার থেকে রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ থাকবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সারাদেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণি বিতান সোমবার রাত ৮টার পর থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
রবিবার বিকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদিন রাত ৮টার পর দোকান বন্ধের নির্দেশনা ইতোমধ্যে দিয়েছেন। সেটা আগামীকাল সোমবার থেকে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাত ৮টার পর দোকান-শপিংমল বন্ধ রাখার নির্দেশ
এর আগে গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ শ্রম আইন,২০০৬ এর ১৪৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালন করে রাত ৮টার পরে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণি বিতান ও কাঁচাবাজার যাতে খোলা না থাকে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর/দক্ষিণ, এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: আরও দুই দোকানকর্মী গ্রেপ্তার
নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি, কিশোরগঞ্জের ১৫ গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
কিশোরগঞ্জের হাওরে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও নিকলী উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এইসব এলাকায় তলিয়ে গেছে মাছের ঘের। তাছাড়াও হাওরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়ায় বাড়িঘরসহ পানির ঢেউয়ে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ফলে সড়কে পানি উঠায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তাছাড়াও পানি বৃদ্ধির কারণে করিমগঞ্জ ও ইটনা উপজেলায় ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ঝড়ো হাওয়ার কারণে এই ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এতে করে ১০ হাজার গ্রাহক অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে পানি ও ঝড়ো হাওয়া কমে গেলে উক্ত গ্রামগুলোর বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জের হাওরে নিখোঁজের ৩৪ ঘন্টা পর ছাত্রলীগ নেতার লাশ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একটি সূত্র জানায়, হাওর অধ্যুষিত করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর এবং ইটনা উপজেলার চৌগাঙ্গা অফিসের আওতাধীন শান্তিপুর, চারিতলা, বালিয়াপাড়া, খাকশ্রী, সুতারপাড়া, বালিখলা, পাঁচকাহনিয়া, এলংজুরির বড়িবাড়ি, এন সহিলা, দিয়াকান্দি, বাদলা, কুর্শি, শিমুলবাক, টিয়ারকোনা ও চং নোয়াগাঁও এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন ঝড়ো হাওয়ার কারণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন্যার্তদের জন্য ১২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। গত শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র খোলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম প্রায় পুরোপুরি বন্যা কবলিত হয়েছে। এছাড়াও তাড়াইল, করিমগঞ্জ, নিকলী, বাজিতপুর ও ভৈরবের আংশিক এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, ইতোমধ্যেই কিশোরগঞ্জ জেলায় বন্যার্তদের জন্য ১৪০ টন চাল, আড়াই লাখ টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না কিশোরগঞ্জের হাওরের ধানচাষিরা
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে মা ও মেয়ের মৃত্যু
বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ: সিলেট ও সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন
সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার আরও অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এতে এ দুই জেলার বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রধান প্রধান নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সিলেটের কুমারগাঁও গ্রিড পাওয়ার সাব-স্টেশনে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় শনিবার দুপুর ১২টায় কর্তৃপক্ষ দুই জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আব্দুল কাদির।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, নজিরবিহীন এ বন্যায় সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ ও সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
রাত ৮টার পর দোকান-শপিংমল বন্ধ রাখার নির্দেশ
বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টার পর সারা দেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণি বিতান, কাঁচা বাজার খোলা না রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের সই করা চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সানুগ্রহ নির্দেশনা দিয়েছেন।
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও অনেক এলাকা। পূর্ব থেকেই প্লাবিত হওয়া এলাকায় পানি আরও বাড়ছে। এমন পরিস্থতিতে সমগ্র সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে সারা সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এ উপকেন্দ্রের এক্সেন প্রকৌশলী সুরঞ্জিত সিং বলেন, ইতোমধ্যে উপকেন্দ্রের সুইচ ইয়ার্ডে (কন্ট্রোল রুমের বাইরের অংশ) বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে এটা চলমান থাকলে কন্ট্রোল রুমে পানি প্রবেশ করতে বেশি সময় লাগবে না। যদি কন্ট্রোল রুমে পানি প্রবেশ করে তাহলে এই গ্রিড উপকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। এই গ্রিড বন্ধ করলে সারা সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে।
এর আগে গত মাসের বন্যায় দক্ষিণ সুরমা, উপশহরসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুতের সাব স্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতিতে শাবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা