বিদ্যুৎ
হবিগঞ্জে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আগুন
হবিগঞ্জে শাহজীবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লাগে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় তিন ঘন্টা চেষ্টার পর দমকল বাহিনীর ৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে কেন্দ্রের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মিহানুর রহমান প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ালে তা আত্মঘাতী হবে: এফবিসিসিআই
সরকারের কাছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) বলেছে, এ ধরনের ইউটিলিটির দাম বাড়ানো আত্মঘাতী হবে।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।
তারা বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড -১৯ এর ধাক্কা থেকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে কোনো পদক্ষেপ দেশের ব্যবসায় ও শিল্পের জন্য ক্ষতিকর হবে।
আরও পড়ুন: পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করল রাশিয়া
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিমসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর এটা সঠিক সময় নয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ হতে পারে
সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করে ১৮ হাজার কোটি টাকা করার কথা ভাবছে।
মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেটে সামগ্রিক ভর্তুকি এবং প্রণোদনা বরাদ্দ ১৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বেড়ে আনুমানিক ৫৭ হাজার ৪৫ কোটি টাকা হবে।
চলতি বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। এ বছর এ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করা হচ্ছে। তবে সংশোধিত বাজেটে, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি তিন হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।
প্রতিবছর বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাড়ছে। ফলে বরাদ্দও বাড়ানো হচ্ছে। যেমন ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা হিসেবে বরাদ্দ ৪০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে ১২ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫৩ হাজার ২৮২ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাজেট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের কারণে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ সহায়তায় বরাদ্দ আনুমানিক ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ বা ২৭ হাজার ৯১০ কোটি টাকা বেড়ে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এর আগে ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে এই তিনটি খাতে বরাদ্দ ছিল এক লাখ ৪৯ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, আগামী ২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রায় ছয় দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ; এই তিনটি খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল
নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির পাশাপাশি আমদানির প্রস্তাব বাংলাদেশের
শীতকালে নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানি করা এবং গ্রীষ্মকালে দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়।
বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ প্রস্তাব দেন।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে নেপাল থেকে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারি। আবার শীত মৌসুমে যখন তাদের বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যায় তখন তারা আমাদের দেশ থেকে বিদ্যুৎ নিলে উভয়ই উপকৃত হবে।’
মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নেপালের জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচমন্ত্রী পাম্পা ভুসালের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেন এবং নসরুল হামিদ আট সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে নেপালে ৪৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতই পরবর্তী চ্যালেঞ্জ: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য ও ক্লিন এনার্জির পরিমাণ ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লক্ষ্য অর্জনে নেপাল ও ভুটানের সহযোগিতা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
পাম্পা ভুসাল নেপালের জলবিদ্যুতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন।
নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে এবং ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে আসছে।
দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান এবং পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
নেপালের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে নেপালের জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. সুরেন্দ্র ল্যাব কর্ণ, নেপালের জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচ সচিব দেবেন্দ্র কার্কি উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম এই মুহূর্তে বাড়াতে চায় না সরকার: নসরুল হামিদ
বিবিয়ানায় সম্পূর্ণ উৎপাদন শুরু না হওয়ায় গ্যাস সংকট অব্যাহত
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উৎপাদন শুরু না হওয়ায় সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো সারাদেশে গ্যাস সংকট অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, তারা গ্যাস পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা পবিত্র রমজানে তাদের খাবার রান্না করতে বিকল্প চুলা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে রমজানের প্রথম দিন রবিবার দেশের গ্যাস উৎপাদন প্রায় ৪৫০ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন কিউবিক ফিট পার ডে) কমেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাস ফিল্ড প্রক্রিয়া সিস্টেম লক্ষ্য করেছে যে দুটি উৎপাদন কূপ থেকে বালি বের হচ্ছে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কূপ দুটি থেকে উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
এ ঘটনায় সামগ্রিক গ্যাস উৎপাদনের ওপর বড় প্রভাব পড়েছে। কেননা ত্রুটির ফলে গ্যাস সরবরাহের চাপ কমে যাওয়ায় অনেক অঞ্চলে সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিতে গ্রাহকদের ভোগান্তি
সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর। কারণ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) তাৎক্ষণিক বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় যার ফলে সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় লোডশেডিং দেখা দেয়।
শেভরন ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।
শেভরন বাংলাদেশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিবিয়ানা গ্যাস প্ল্যান্টকে পূর্ণ ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অগ্রগতি করেছেন।
উৎপাদন ক্ষেত্রে কিছু অসঙ্গতি দেখা দেয়ার পর ৩ এপ্রিল প্লান্টটির দুটি ট্রেনের মধ্যে দুটি এবং ছয়টি উৎপাদন কূপের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
সরকারি সূত্র জানায়,৩ এপ্রিল দেশে গ্যাস উৎপাদন হয় দুই হাজার ৫২৪ দশমিক চার এমএমসিএফডি। যার মধ্যে বিবিয়ানার ৮৮৬ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি। তবে এ গ্যাস ক্ষেত্রটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ এমএমসিএফডি।
বিপিডিবি এর তথ্যে দেখা যায়, ২০৬৯ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ২০টিরও বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম গ্যাসের স্বল্পতার জন্য বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫ জেলার মানুষ উদ্বিগ্ন
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোবাংলা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের সংকট দেখা দিতে পারে।
গ্যাস সংকটে জনগণের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পেট্রোবাংলা আশা প্রকাশ করেছে, যত দ্রুত সম্ভব রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের কাজ শেষ করে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শেখেরটেক, রায়েরবাজার, ধানমন্ডি, শংকর, কাঁঠালবাগান, মধুবাজার, কলাবাগান, রামপুরা, ওয়ারী, মগবাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল, বনশ্রী, গোপীবাগ, মিরপুর, ইস্কাটনসহ বেশ কিছু এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, তারা খাবার রান্নার জন্য গ্যাস পাচ্ছেন না।
এছাড়া গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকায় সিএনজি চালিত মোটরযানও বিপাকে পড়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তুলে দেয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর হাতে
মুজিববর্ষে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার গৌরবময় সাফল্য অর্জনে দূরদর্শী নেতৃত্ব ও কার্যকর নীতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রাপ্ত স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে।
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান এবং দেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আনার সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের সর্বোচ্চ এই জাতীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২ পেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ আরও ১০ ব্যক্তি ও সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
পরে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এমএম ইমরুল কায়েস জানান, প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার (পদক ও সনদ) তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২’ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
বিদ্যুৎ খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, নীতি ও কৌশলের কারণেই দেশের শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
তারা বলেন, ‘তিনিই এই গৌরবময় অর্জনের স্থপতি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষে প্রতিটি ঘর আলোকিত করার ঘোষণা দেন।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে তিনি দেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আনার কাজে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এভাবেই সারাদেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জনের স্মারক প্রাপ্য বলে তারা জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শতভাগ বিদ্যুতায়ন একটি যুগান্তকারী অর্জন: প্রধানমন্ত্রী
‘জয় বাংলা’ স্লোগান না দেয়া মানে স্বাধীনতার আদর্শকে অবিশ্বাস করা: প্রধানমন্ত্রী
সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতই পরবর্তী চ্যালেঞ্জ: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করাই সরকারের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা সবাই সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে কাজ করবো।’
সরকারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২’ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন নসরুল হামিদ।
আরও পড়ুন: পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াটে উন্নীত এবং দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করায় বিদ্যুৎ বিভাগকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২’ দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিদ্যুৎ বিভাগসহ ৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেছেন।
নসরুল বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পর জনগণের প্রত্যাশা বেড়েছে। ‘এখন মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ চায়।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম এই মুহূর্তে বাড়াতে চায় না সরকার: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের লক্ষ্য অর্জনে মন্ত্রণালয় এখন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।
এই গ্রীষ্মে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের নতুন চাহিদা তৈরি হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি আমরা ২০২৪ সালের মধ্যে আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হব।’
শতভাগ বিদ্যুতায়ন একটি যুগান্তকারী অর্জন: প্রধানমন্ত্রী
দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া একটি যুগান্তকারী অর্জন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই অর্জনের মাধ্যমে সরকার জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, শিগগিরই সকল গৃহহীন মানুষের জন্য ঘর নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে বঙ্গবন্ধুর আরেকটি স্বপ্ন।
শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রমকারী সকল সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো বেসরকারি উদ্যোগে বিদেশি বিনিয়োগে ৪৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার মেঘনা ঘাট ও ৩৬০ মেগাওয়াট হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে, আওয়ামী লীগে সরকার ২০০৯ সাল থেকে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যার ফলে শতভাগ বিদ্যুৎ কভারেজ অর্জন সম্ভব করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অর্জনের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতার আরেকটি স্বপ্ন পূরণে দেশের সব গৃহহীন মানুষের জন্য ঘর নির্মাণের কাজ চলমান।
অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলে বিগত বছরগুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, গতকাল (সোমবার) পটুয়াখালী জেলায় সবচেয়ে বড় পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দর, সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটিও অন্যান্য অবকাঠামোর মতো অনেক বড় স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে যা এই অঞ্চলের সামগ্রিক দৃশ্যপটকে বদলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: শতভাগ বিদ্যুতায়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধানমন্ত্রীকে এফবিসিসিআই সভাপতির অভিনন্দন
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই এই মেগা প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবে এবং দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চিরতরে শেষ হবে।
বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন দক্ষিণাঞ্চলকে ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও অন্যান্য দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণ ও সবুজ বনায়নের প্রচারণার পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলে কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ বন তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং গত ১৩ বছর ধরে জনগণের রায়ে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারকে দেশের জন্য এই বড় অর্জনে সহায়তা করেছে।
আরও পড়ুন: ‘জয় বাংলা’ স্লোগান না দেয়া মানে স্বাধীনতার আদর্শকে অবিশ্বাস করা: প্রধানমন্ত্রী
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম এই মুহূর্তে বাড়াতে চায় না সরকার: নসরুল হামিদ
সরকার এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়াতে চায় না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছি। তবে আন্তর্জাতিক দিক থেকে যদি কোনো বড় পরিবর্তন আসে তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
২১ মার্চ পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে সোমবার মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সরকারকে ব্যাপক লোকসান গুণতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গ্যাস ও বিদ্যুতে ভর্তুকি ধাপে ধাপে কমানো উচিত: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ মার্চ পায়রায় দেশের প্রথম এক হাজার ৩২০ আলট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করবেন বলেও জানান তিনি।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি মাইলফলকে পৌঁছাবে। কেননা বাংলাদেশে এটিই প্রথম আলট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র যা পরিবেশবান্ধব।
এ সময় বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, এনডব্লিউপিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুরশেদ আলম, এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীর ও নির্বাহী পরিচালক রিশান নাসরুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ওপর গণশুনানি ২১ থেকে ২৪ মার্চ
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট করে বাড়ছে।
উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উদ্বৃত্ত উৎপাদন না হলে আগামী গ্রীষ্মে দেশে লোডশেডিং হতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে পেট্রোলিয়ামের দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) প্রতিদিন ৮০ কোটি টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই অবস্থা চলতে থাকলে মাসিক ক্ষতি হবে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এটি একটি বড় প্রশ্ন, আমরা এই বিশাল ক্ষতি কতদূর বহন করতে পারি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করা হলেও সঞ্চালন লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের কারণে ঢাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছাতে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি: ২৮ মার্চ অর্ধবেলা হরতাল ডেকেছে বামজোট
ভোজ্যতেল, চাল, ডাল, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধির অপতৎপরতা বন্ধে আগামী ২৮ মার্চ দেশব্যাপী অর্ধবেলা হরতালের ঘোষণা দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
শুক্রবার (১১ মার্চ) বেলা ১১টায় পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বাম জোটের নেতারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এদিন সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত হরতাল পালিত হবে।
নিজেদের বাঁচার স্বার্থে সবাইকে হরতাল পালনের আহ্বান জানান বাম জোটের নেতারা।
সম্মেলনে সিন্ডিকেট ভাঙতে মজুতদার, আড়তদার এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে দরিদ্রদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান তারা।
এসময় তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেরও দাবি জানান জোটের নেতারা।
এছাড়াও প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর যথাযথ বিতরণ নিশ্চিত করতে বাজারে নজরদারি ও তদারকি বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পড়ুন: দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম কমে আসবে: আইনমন্ত্রী
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী