���������������������-������������������-���������������������
শেয়ারবাজারে সাড়ে ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো বৃহস্পতিবার
বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ লেনদেনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দেশের উভয় শেয়ারবাজারের লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক পয়েন্ট বেড়েছে ৭ পয়েন্ট এবং চট্টগ্রামের স্টক ১৪ পয়েন্ট বেড়েছে, যা সাড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ফলে ঈদের পর চার কার্যদিবসে শেয়ারবাজারের সূচক বেড়েছে। ঈদের আগেও পাঁচ দিনের সূচক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। সব মিলিয়ে টানা ৯ কার্যদিবস দর বেড়েছে পুঁজিবাজারে।
বৃহস্পতিবার খাদ্য, বীমা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পাশাপাশি রহিমা ফুড, আইটিসি, কোহিনূর কেমিক্যাল, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এবং বসুন্ধরা পেপার মিলসের শেয়ারের দাম বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। শেয়ার সূচক বৃদ্ধিতে এই পাঁচটি কোম্পানির অবদান প্রায় ৩৫ শতাংশ।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, আজ (বৃহস্পতিবার) ডিএসইতে ১৫ দশমিক ৯০ কোটির বেশি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এতে লেনদেন হয়েছে ৯৬৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকার বেশি এবং বুধবার লেনদেন হয়েছে ৭৬৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২০০ কোটি টাকার বেশি।
গত সাড়ে ৫ মাসের মধ্যে এটি ছিল সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর ডিএসইতে এক হাজার ১৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে সাত দশমিক ৭০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৭৪ পয়েন্টে। অন্য দু’টি সূচকের মধ্যে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক তিন দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে ডিএসই-৩০ সূচক চার দশমিক ৬৪ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে মোট ৩৫১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৭৯টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ৬২টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর।
আরও পড়ুন: বড়দিনে চীন, জাপানের শেয়ার বাজারে দরপতন
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। এরপর সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। তৃতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। এরপর সেরা দশে ছিল যথাক্রমে ইস্টার্ন হাউজিং, বসুন্ধরা পেপার মিলস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, জেমিনি সি ফুড, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার এবং আইটি কনসালট্যান্ট লিমিটেড।
অন্যান্য শেয়ারবাজারের সার্বিক সূচক সিএসই, সিএএসপিআই ১৪ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৪৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে ১৬০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৪টি কোম্পানির, কমেছে ৪৫টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৮টি কোম্পানির।
দিন শেষে সিএসইতে সাত দশমিক ৯৫ কোটির বেশি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: অক্টোবরের মধ্যেই শেয়ারবাজারে আসবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ৪ ব্যাংক: অর্থমন্ত্রী
তাপপ্রবাহে এসির বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ
গত ছয় দশকের মধ্যে রাজধানীতে তাপপ্রবাহের কারণে সবচেয়ে উষ্ণতম দিনগুলোতে ভোগান্তির শিকার হওয়ায় এখানে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বিক্রি দৃশ্যত দ্বিগুণ হয়েছে।
এসিই প্রায় একমাত্র বিকল্প যা স্বাভাবিক রুটিনে বিঘ্ন ছাড়াই কিছুটা স্বস্তি দেয়। ঢাকার অনেক ইলেকট্রনিক্সের দোকানে এসি কেনার জন্য গ্রাহকদের চাপ বেড়েছে।
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আউটলেটের বিক্রয় অপারেটররা ইউএনবিকে জানান, সাধারণত গ্রীষ্মের মৌসুমে এসির বিক্রি বাড়ে। তবে এই বছর বিক্রয় বৃদ্ধি ইতোমধ্যে অসাধারণ, অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ, যা অনেকটাই তাদের প্রত্যাশার বাইরে।
তারা বলছিলেন যে আগে শুধুমাত্র ধনী পরিবারগুলোই এসি কিনত, কিন্তু এখন সমাজের অনেক বড় অংশ যা একসময় 'বিলাসবহুল' পণ্য হিসাবে বিবেচিত হত তা কিনতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: স্বর্ণের দাম ভরিপ্রতি লাখ টাকা ছুঁইছুঁই
বিক্রয়কর্মীদের দাবি, তীব্র চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এসি এখন আর 'বিলাসবহুল' পণ্য নয়, বরং 'নগরবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ'।
বনানীতে এলজি বাটারফ্লাই আউটলেটের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান বলেন, ‘গরম সবেমাত্র শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা যেভাবে ইতোমধ্যে রেকর্ড পরিমাণ অতিক্রম করেছে তা সহনীয় নয়। এ জন্য প্রচুর এসি বিক্রি হচ্ছে। পণ্যটি দোকানে তোলার আগেই বিক্রি হয়ে যায়। এখনও অনেক অর্ডার আছে, কিন্তু শেষ করতে পারছি না।’
অন্যদিকে গরমে এসির দামেও প্রভাব পড়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। গত বছরের তুলনায় এক টনের এসির দাম ১০ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। যেসব বড় আকারের এসি বড় পরিসরে সেবা দিতে পারে, সেগুলোর দাম ব্র্যান্ডভেদে বেড়েছে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, ওয়ালটনের মতো দেশি কোম্পানিগুলো এসির বাজারে প্রবেশ করলেও এখনও বিদেশি ব্র্যান্ডের আধিপত্য রয়েছে।
তাই এসি বিপণন সংস্থাগুলো আমদানি এসির উচ্চ মূল্যের চালিকাশক্তি হিসেবে মার্কিন ডলারের সঙ্গে স্থানীয় মুদ্রা বিনিময়ের অবমূল্যায়নকে দায়ী করেছে, এমনকি তাপপ্রবাহ ক্রেতাদের পকেট শিথিল করার পরিস্থিতি তৈরি করার আগেই।
আরও পড়ুন: ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা কেজি, কমেছে ডিমের দাম
অগ্রিম আয়কর ও আগাম কর রহিত করার আহ্বান এফবিসিসিআই’র
শিল্প উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে খরচ কমাতে অগ্রিম আয়কর ও আগাম কর রহিত করার আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ বিষয়ে এনবিআর ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪৩তম সভায় এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই সভাপতির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন তার বক্তব্যে চলমান বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের বিনিয়োগ ও উৎপাদনশীল খাতকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে একটি শিল্প ও বিনিয়োগ বান্ধব বাজেট প্রণয়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানকে দৃঢ় করতে ব্যবসায়িক খরচ (কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস) কমিয়ে এনে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিনিয়োগ সুরক্ষা, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুষম বিনিয়োগ সহায়ক মুদ্রা ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, শিপিং খরচসহ সকল ধরনের পরিবহন খরচ হ্রাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া জরুরি’।
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নে বিনিয়োগ, দেশীয় শিল্প ও সেবা এবং সিএমএসএমই-কে শুল্ক করের যৌক্তিক প্রতিরক্ষণ; ক্ষেত্র বিশেষে অব্যাহতি বা বন্ড সুবিধা দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ভিত্তিতে রপ্তানি বৈচিত্রকরণ, রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণ; নিত্য ব্যবহার্য পণ্যমূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা; করনীতি, কর পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণের মাধ্যমে কর নেট বা কর জাল সম্প্রসারণ; স্বেচ্ছায় কর প্রতিপালন হার বৃদ্ধিপূর্বক রাজস্ব আদায় তথা কর জিডিপি’র অনুপাত বৃদ্ধি; আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, কারিগরী ও কর্মমুখী শিক্ষা এবং শ্রমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি বিষয়গুলোর ওপর বিশেষ নজর রাখার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
রাজস্ব আহরণ এবং রাজস্ব পলিসি কার্যক্রম পৃথক করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বিভাগ গঠন, মুদ্রা পাচারে সহায়ক ও আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা পরিপন্থী বিদ্যমান ট্যারিফ মূল্য ও মিনিমাম ভ্যালু সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন রহিত করে এর বদলে বিনিময় মূল্য সিস্টেম চালু; প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদেরকে প্রদত্ত বন্ড সুবিধার বাহিরে অন্যান্য রপ্তানিকারকদের জন্য কেন্দ্রীয় বন্ড ব্যবস্থা প্রবর্তন করা; জমি ক্রয়, নির্মাণ এবং শিল্প ও সেবা খাতের ইউটিলিটি বিলসহ সকল উৎপাদনশীল খাতে দেওয়া যাবতীয় প্রশাসনিক সেবা সম্পূর্ণরূপে পরোক্ষ করমুক্ত রাখার বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
আমদানি শুল্কের ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি, তালিকাভুক্ত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, মৌলিক এবং দেশে উৎপাদিত হয়না এমন কাঁচামাল-এর শুল্ক হার ১ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা; আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখতে তালিকাভুক্ত পণ্য বা সেবার ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা; জ্বালানি সাশ্রয় ও পরিবেশবান্ধব গাড়ি ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক হার হ্রাস করার আহ্বান জানান মো.জসিম উদ্দিন।
এছাড়াও মূসকের ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যন্ত ভ্যাট অফিসের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করে সক্ষম ভ্যাট প্রদানকারীদের ভ্যাট নেটের আওতায় আনা, আমদানিকৃত উপকরণের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ আগাম কর ধাপে ধাপে রহিত করা, নিম্নআয় এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ব্যবহার্য পণ্য, সাধারণ পণ্য পরিবহন, নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবা, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্পের কাঁচামাল/উপকরণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রি-সাইক্লিং, টেন্ডার বহির্ভুত সরাসরি পণ্য মেরামত বা সার্ভিসিং খাত ইত্যাদি ক্ষেত্রে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি দেয়া, করদাতাদের ব্যবসা পরিচালনা ও মূসক কর্তৃপক্ষেরও করদাতাদের তদারকি সহজ করতে ভ্যাট নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল, রিফান্ড, অডিটসহ সকল কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে অটোমেশন নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
আয়করের ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ব্যয়, মূল্যস্ফীতি এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকা এবং মহিলা ও সিনিয়র নাগরিকদের জন্য ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা, এসএমই শিল্পের বিকাশ তরান্বিত করার জন্য প্রিন্টিং শিল্প, প্যাকেজিং ও বাইন্ডিং এর সরবরাহকারীদের উৎসে আয়কর এর আওতা বহির্ভূত করা, সকল প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় তালিকাভূক্ত ভোগ্যপণ্যকে উৎসে কর কর্তনের আওতা বহির্ভূত রাখার প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
অনষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি এম এ মোমেন।
তিনি তার বক্তব্যে বর্তমান চ্যালেঞ্জিং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে স্থানীয় পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও সূদৃঢ় করতে আগামি বাজেটে যথাযথ দিক নির্দেশনা থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান, মীর নাসির হোসেন, প্রাক্তন প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী, বর্তমান সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবীব উল্লাহ ডন, সালাউদ্দিন আলমগীর, এম এ রাজ্জাক খান রাজ, পরিচালকবৃন্দসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাতের ডিজিটালাইজেশনে বিপ্লব ঘটিয়েছে: ড. আতিউর
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের আর্থিক খাতকে ডিজিটালাইজেশনে অসাধারণ কাজ করছে।
তিনি বলেন, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে এবং গ্রামীণ ও শহর উভয় এলাকার সকল পর্যায়ের আয়ের লোকেরা ডিজিটাল পরিষেবা ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনাবাসিক বাংলাদেশিদের সংগঠন স্কলারস বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ট্রান্সফরমেশন অব দ্য পেপার মানি টু ডিজিটাল: টেকিং ফ্রম অ্যান্ড মেকিং অব সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতিউর এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস এবং ব্যাংকগুলোর মধ্যে আন্তঃপরিচালনাযোগ্য সুবিধার উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও বেশি মানুষের অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করবে।
আরও পড়ুন: বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিবেদন দ্রুত পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে বিবি’র নির্দেশ
তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে একটি ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। যেখানে প্রকৃত লেনদেন এবং আর্থিক অপরাধ শনাক্ত করা সহজ হবে।
সেমিনারে একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জামালউদ্দিন আহমেদ এফসিএ, পিএইচডি। গবেষণাপত্রে, তিনি আইএমএফ এবং ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের প্রতিবেদনের একটি সমীক্ষা উল্লেখ করেছেন যে বাংলাদেশ ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসান করেছে।
এটি দেখায় যে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং কার্যক্রম ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল এস কাদির।
কাদির শক্তিশালী ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য চারটি মূল মৌলিক কার্যক্রমের পরামর্শ দিয়েছেন যেমন ইউনিফাইড লিগ্যাল ফ্রেম, সঠিক ট্র্যাকিং বা ব্যক্তির জাতীয়তা চিহ্নিত করা, ব্যবহৃত প্রযুক্তির জন্য শক্তিশালী এবং বিশ্বব্যাপী, এবং সঠিক শাসন।
সেমিনারে ব্যক্তিগতভাবে এবং কার্যত বিভিন্ন দেশ থেকে অধ্যাপক ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা যোগ দেন।
আরও পড়ুন: এমএফএসের দৈনিক লেনদেন ৩২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে: বিবি
বৃদ্ধাশ্রমে ইফতার কর্মসূচির বাজেটে দান করবে বিজিএমইএ
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) তার সদস্যদের জন্য একটি ইফতার অনুষ্ঠানের জন্য বাজেট করা অর্থ একটি বৃদ্ধাশ্রম এবং অন্যান্য সামাজিক সংস্থাগুলোতে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা সুবিধাবঞ্চিত ও নিঃস্ব মানুষের যত্ন নেয়।
এর আগে বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিজিএমইএ তাদের নির্ধারিত ইফতার কর্মসূচি বাতিল করে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান রবিবার আপন ভুবন নামে একটি বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শন করেন, যেখানে তিনি এর বাসিন্দাদের সঙ্গে সময় কাটান।
পরিদর্শনকালে তিনি প্রবীণ নাগরিকদের সুস্বাস্থ্যের জন্য আপন ভুবনে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন এবং তাদের পোশাক, খাবার ও অন্যান্য উপহার প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ বাণিজ্য মেলা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ও জায়ান্ট গ্রুপের পরিচালক শারমিন হাসান তিথি।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে স্যামসাংয়ের ‘ঘর ভর্তি ঈদ ফুর্তি’ ক্যাম্পেইন
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে প্রতিবারের মতো ঈদ ক্যাম্পেইন শুরু করেছে স্যামসাং। নতুন এ ক্যাম্পেইনের আওতায় স্যামসাং টিভি, রেফ্রিজারেটর ও ওয়াশিং মেশিনে থাকছে বিভিন্ন অফার এবং এসব অ্যাপ্লায়েন্স কেনা যাবে বিশেষ প্রোমোশনাল প্রাইসে।
‘ঘর ভর্তি ঈদ ফুর্তি’ শীর্ষক এই ক্যাম্পেইনে স্যামসাং-এর বিভিন্ন মডেলের টিভিতে থাকছে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিসকাউন্ট। স্যামসাং এর ৪৩ ইঞ্চি ফোরকে ইউএইচডি টিভি (এইউ৭৫০০) এখন কেনা যাবে মাত্র ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকায়। অন্যদিকে, ৫৫ ইঞ্চি কিউএলইডি ফোরকে স্মার্ট টিভি (৫৫কিউ৬০এ) ক্রেতারা কিনতে পারবেন এক লাখ ২১ হাজার ৯০০ টাকায়।
এই ক্যাম্পেইনের আওতায় অন্যান্য হোম অ্যাপ্লায়েন্সের মধ্যে রেফ্রিজারেটর ও ওয়াশিং মেশিনও কেনা যাবে। স্যামসাং রেফ্রিজারেটরের মডেলের ক্ষেত্রে ক্রেতারা সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক ও ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ অফার উপভোগ করতে পারবেন। সাতশ’ লিটার সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর (আরএস৭২) কেনা যাবে মাত্র এক লাখ ৪৯ হাজার ৯০০ টাকায়। এ অফারের ওয়াশিং মেশিনের মূল্য শুরু হয়েছে ৩৮ হাজার টাকা থেকে। নির্দিষ্ট কিছু মডেলের ওয়াশিং মেশিনে দেওয়া হয়েছে মূল্য ছাড়।
এছাড়াও, হোম অ্যাপ্লায়েন্সগুলোতে সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের ইএমআই সুবিধাসহ থাকছে ফ্রি ইনস্টলেশন ও ডেলিভারি সুবিধা।
আকর্ষণীয় এ ঈদ ক্যাম্পেইন নিয়ে স্যামসাং-এর কনজ্যুমার ইলেকট্রনিকস ডিভিশনের ডিরেক্টর ও হেড অব বিজনেস শাহরিয়ার বিন লুৎফর বলেন, ‘ঈদ হচ্ছে আনন্দ উদযাপনের সময়। এ সময় মানুষ তাদের ঘরও সাজিয়ে তুলতে চান। আনন্দ ও উদযাপনের এ সময়ে ‘ঘর ভর্তি ঈদ ফুর্তি’ ক্যাম্পেইনের মতো একটি ক্যাম্পেইন সবাইকে স্যামসাং-এর উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা গ্রহণের সুযোগ করে দিবে। পাশাপাশি, ঝামেলাহীনভাবে তারা ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে পারবেন।’
আরও পড়ুন: ১০ বছরের ওয়ারেন্টি নিয়ে স্যামসাং এর স্পেসম্যাক্স সিরিজের রেফ্রিজারেটর
বিশেষ শিশুদের জন্য স্যামসাং-ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের আর্ট ক্যাম্প
বঙ্গবাজার আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মেগা ক্যাম্পেইনের আয় দান করবে নগদ
মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) প্রদানকারী নগদ বৃহস্পতিবার বলেছে যে এটি বঙ্গবাজার ব্যবসায়ীদের পাশে থাকবে। যারা একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাদের জীবিকা হারিয়েছে।
নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেছেন, নগদ তার চলমান মেগা প্রচারাভিযান থেকে সমস্ত উপার্জন দান করবে আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসাগুলোকে, সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে যাদের দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
নগদ ঈদ-উল-ফিতরের আগে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছে, যার মাধ্যমে গ্রাহকদের গাড়ি, মোটরবাইক, স্মার্টফোন, নোটপ্যাড, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, স্মার্টওয়াচ, হেডফোন এবং আরও অনেক কিছু জেতার সুযোগ দিয়েছে।
তানভীর বলেন, প্রচারণার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ তারা বঙ্গবাজারের আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেবেন।
নগদ জানিয়েছে, বুধবার রাত পর্যন্ত এই ক্যাম্পেইন থেকে তার আয় হয়েছে ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫০ টাকা।
আরও পড়ুন: ঈদ: পুরস্কার পেল নগদ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীরা
মার্চে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯.৩৩ শতাংশ, ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য উদ্ধৃত করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা বিগত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিবিএস অনুসারে, পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে আট দশমিক ৭৮ শতাংশে পৌঁছেছে, যা জানুয়ারির আট দশমিক ৫৭ শতাংশ থেকেও বেশি।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে জনগণ ব্যয় কমাতে বাধ্য হয় এবং নির্দিষ্ট ও সীমিত আয়ের জনগোষ্ঠীকে কেনাকাটা কমিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
ফেব্রুয়ারি মাসে খাদ্যে আট দশমিক ১৯ শতাংশ এবং অখাদ্য পণ্যে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি রেকর্ড করা হয়েছে। ওই সময় নগরীতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল সাত দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং অখাদ্য পণ্যে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের ঈদ বোনাস ও বেতন দিতে ১৫০০ কোটি টাকা সরকারি সহায়তা চায় বিকেএমইএ
এর আগে গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে উঠেছিল। গত ১১ দশমিক ৯ বছরে (১৪৪ মাস) মূল্যস্ফীতির এই হার ছিল সর্বোচ্চ। ২০১১ সালের মে মাসে মূল্যস্ফীতির সর্বোচ্চ হার ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। এরপর কখনোই মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি হয়নি।
২০২২ সালের আগস্টের পরে মুদ্রাস্ফীতির হার আবার কমতে থাকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা কমেছে আট দশমিক ৫৭ শতাংশ।
অন্যদিকে, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় মুদ্রাস্ফীতির চাপ এখনও বেশি।
আরও পড়ুন: ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৩% কমিয়েছে এডিবি
এডিবি ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৩% কমিয়েছে
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ২০২৩ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ করেছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এডিবি বলেছিল, এবছরের এপ্রিল মাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।
মঙ্গলবার ২০২৩ সালের এপ্রিলের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে (এডিও) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়েছে। গড় মূল্যস্ফীতি ২০২২ অর্থবছরের ছয় দশমিক দুই শতাংশ থেকে ২০২৩ অর্থবছরে আট দশমিক সাত শতাংশে পৌঁছাবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি কম হবে। কারণগুলো হলো- জ্বালানির ঘাটতি ও উচ্চ উৎপাদন খরচ, রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি, মিতব্যয়ীতা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস।
তবে চলতি হিসাবের ঘাটতির দিক থেকে গত অর্থবছরে জিডিপির ৪ দশমিক ১ শতাংশ থাকলেও, এবার তা কমে হবে ১ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশের জন্য এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটা বড় ঝুঁকি হচ্ছে বিশ্বের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে প্রধান রপ্তানি বাজারগুলোর অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়া।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও চাহিদা কমে গেছে, রপ্তানির গতিও কমে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বাহ্যিক প্রতিকূলতার প্রভাবের বিরুদ্ধে তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে দেশ পরিচালনা করছে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে।’
আরও পড়ুন: এডিবি’র ১ বিলিয়ন: আলোচনার জন্য রাতে ঢাকায় আসছেন লাভাসা
গিনটিং বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে মূল সংস্কারগুলোকে ত্বরান্বিত করা দেশকে মধ্য মেয়াদে উচ্চ প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এই সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট এবং অভ্যন্তরীণ রিসোর্স মোবিলাইজেশন জোরদার করা, আর্থিক খাতকে সুস্থির করা এবং বেসরকারি খাতে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রতিযোগিতা বাড়ানো।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জলবায়ু এজেন্ডার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে অভ্যন্তরীণ নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারের অস্থিরতার বিরুদ্ধে সহনশীলতা বাড়ানোর জন্য এটাই সঠিক সময়।’
গিনটিং বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ৫০ বছরের অংশীদারিত্বে এডিবি দেশের জনগণের জন্য অবকাঠামো, জনসেবা এবং সামাজিক উন্নয়নের উন্নতির জন্য সহ-অর্থায়নসহ ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ও অনুদান পেয়েছে। বাংলাদেশে ৫০টি চলমান প্রকল্পে ১১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামোতে এডিবি’র আরও সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী
টিসিবির কাজের অসঙ্গতি দূর করতে ১ কোটি পরিবারকে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
নিম্নআয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের লক্ষ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দেওয়া এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রুপান্তরের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালে টিসিটির কার্ড স্মার্ট কার্ডে রুপান্তরের পাইলটিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হাতে লেখা সকল কার্ড কিউআর কোড সম্বলিত স্মার্ট কার্ডে রুপান্তর করা হবে। যার কাজ চলমান রয়েছে। এসব কার্ড স্মার্ট কার্ডে পরিবর্তিত করলে অসঙ্গতিগুলো দূর করা সহজ হবে।
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় টিসিবি আয়োজিত সারাদেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে রমজান মাস উপলক্ষে দ্বিতীয় পর্বের টিসিবি পণ বিক্রয় কার্যক্রম এবং উত্তরা এলাকায় টিসিবি পণ্যের অস্থায়ী সংরক্ষাণাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রোজার প্রথম সপ্তাহেই চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
টিপু মুনশি বলেন, আমরা সবাই জানি করোনা মহাসংকটের পরপরই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। তা সত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীব মানুষদের মধ্যে কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নতসহ অনেক দেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের বেশি ক্রেতাদের দেওয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববাজার বিবেচনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে দেশের এককোটি পরিবারের মাঝে স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতি মাসে একবার দিলেও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দ্বিতীয় বার দেওয়া হচ্ছে এবং আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে বিতরণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন তাদের দুঃখ কষ্ট অনুভব করেন। সেজন্যই তিনি এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী অর্থাৎ প্রতি পরিবারে গড়ে পাঁচজন সদস্য হলেও প্রাই পাঁচ কোটি মানুষ এই সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন আমরা প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ মানুষকে সাশ্রয়ী দামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্ত প্রধানমন্ত্রী তা এক কোটি করার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তা বাস্তবায়ন করছি।
কার্ডধারীর সংখ্যা এককোটির বেশি করার চিন্তা সরকারের আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এখন যে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়েছে এছাড়াও কিছু সংখ্যক নিম্ন আয়ের মানুষের তালিকা অর্থাৎ যারা বাদ পড়েছেন আমাদের নিকট আসছে তবে সংখ্যা খুব বেশি নয়। তারপরও আমরা বিশেষ বিবেচনায় বাদ পড়া মানুষকে পণ্য দিয়ে থাকি।
আরও পড়ুন: রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ডিসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
পণ্য মজুদের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে পণ্য মজুদ আছে। বিগত কয়েক বছরের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে এ বছর আমরা সরবরাহ ও বিতরণে শক্ত অবস্থানে আছি।
পণ্যের মজুদ পর্যাপ্ত এরপরেও বাজারে দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাজারে সব পণ্যের মূল্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে না। এ বিষয়ে একটা মিস কনসেপসন আছে যে মূল্য বৃদ্ধি মানেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্ত। ব্রয়লার মুরগি, মাংস ও মাছসহ কিছু পণ্য অন্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। তারপরও আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি, যাতে দ্রব্যমূল্য মানুষের হাতের নাগালে রাখা সম্ভব হয়।
টিসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারা দেশে টিসিবি পণ্যে সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষাণাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে উত্তরা এলাকায় আজকে এই সংরক্ষাণাগারের উদ্বোধন করা হলো। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে পণ্য মজুদ করে কার্ডধারীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এছাড়া, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডি্য়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আফসার উদ্দিন খান অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দাম বাড়বে না ভোজ্যতেলের: বাণিজ্যমন্ত্রী