এশিয়া
নেপালের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ১২৮
শুক্রবার মধ্যরাতের ঠিক আগে নেপালের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে আহতদের সহায়তার জন্য হেলিকপ্টার এবং স্থল সেনারা ছুটে যান। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১২৮ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছেন বলে শনিবার দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
অনেক জায়গার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র কুবের কাদায়াত বলেন, দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারগুলো সাহায্যের জন্য ওই অঞ্চলে উড়ে যায় এবং মাটিতে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী ধ্বংসস্তূপ থেকে আহত এবং মৃতদের খুঁজে বের করার কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুন: নেপালের রাজধানীর নিকটবর্তী জেলায় ৩টি ভূমিকম্প
ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসের কারণে অবরুদ্ধ রাস্তা ও পাহাড়ি পথও পরিষ্কার করছে সেনারা। হেলিকপ্টারগুলো সেখানকার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাকর্মী এবং ওষুধ নিয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালও চিকিৎসকদের একটি দল নিয়ে হেলিকপ্টারে যান।
কাদায়াত বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল জাজারকোট জেলায় ৯২ জন নিহত এবং আরও ৫৫ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পে পার্শ্ববর্তী রুকুম জেলায় কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছে, যেখানে অসংখ্য ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে এবং কমপক্ষে ৮৫ জন আহত ব্যক্তিকে ইতোমধ্যে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সারা রাত অন্ধকারে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কাজ করে মৃত ও আহতদের পড়ে থাকা বাড়ি থেকে বের করে আনেন।
৮০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল) দূরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির প্রাথমিক মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬ এবং এটি ভূপৃষ্ঠের ১১ মাইল গভীরে আঘাত হানে। নেপালের ন্যাশনাল ভূমিকম্প মনিটরিং অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২৫০ মাইল উত্তর-পূর্বে জাজারকোটে।
আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনার জুজুই প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প
নয়াদিল্লিতে আন্তর্জাতিক সৌর জোটের ৬ষ্ঠ অধিবেশন অনুষ্ঠিত
ভারতের নয়াদিল্লিতে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সৌর জোটের (আইএসএ) ৬ষ্ঠ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ভারতের বিদ্যুৎ ও নতুন ও নবায়নযোগ্য শক্তিমন্ত্রী শ্রী রাজ কুমার সিং। আইএসএর ১১৬টি সদস্য ও স্বাক্ষরকারী দেশের মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা অধিবেশনে অংশ নেন।
এই উপলক্ষে শ্রী রাজ কুমার সিং বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ জনসংখ্যা এমন দেশে বাস করে যেগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির আমদানির উপর নির্ভর করে। নবায়নযোগ্য শক্তি উৎসগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট বিদ্যুতের ৬৫ শতাংশ সরবরাহ করতে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের ৯০ শতাংশ কার্বনমুক্ত করতে পারে। আন্তর্জাতিক সৌর জোট সদস্য দেশগুলিকে সৌরকে শক্তির উৎস হিসেবে বেছে নিতে, বিনিয়োগ আকর্ষণের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে এবং বাড়ন্ত বিশ্ব চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
তিনি বলেন, ‘এর জন্য আইএসএ তার ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং (ভিজিএফ) পদ্ধতির মাধ্যমে দেশে প্রতি প্রকল্পে ১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রকল্পের ব্যয়ের ১০ শতাংশ (যেটিই কম) অনুদান প্রদান করে। অধিবেশনে প্রকল্পের ধারণা এবং দেশগুলোর প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে প্রকল্পের ব্যয়ের ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত অনুদানের পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
অধিবেশনের সহসভাপতি ফ্রান্সের উন্নয়ন, ফ্র্যাঙ্কোফোনি ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের প্রতিমন্ত্রী হেলেন জাকারোপুলো বলেন, ‘ফ্রান্সের জন্য আইএসএ ক্লিন এনার্জির উন্নয়ন এবং জলবায়ু বিঘ্ন মোকাবিলা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। আমাদের জোটকে নিয়মিত এবং ক্রমবর্ধমান সমর্থনসহ আমরা এই প্রকল্পে আমাদের পূর্ণ ভূমিকা পালন করছি।’
তিনি বলেন, ‘ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার (এএফডি) মাধ্যমে আমরা ২০১৬ সাল থেকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি মূল্যের সৌর প্রকল্পে অর্থায়ন করেছি। ফ্রান্স পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আমরা তা ত্বরান্বিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। গত বছর, আমরা আমাদের অংশীদারদের জলবায়ু অর্থায়নে ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি অর্থ সরবরাহ করেছি। এগুলো কেবলমাত্র সংখ্যা নয়, বরং বাস্তব প্রকল্প। যেমন বেনিনের ওনিগবোলো সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ; যা আমরা এই বছর সম্পন্ন করেছি। যা বেনিনের জনগণের কাছে ২৫ মেগাওয়াট ক্লিন এনার্জি নিয়ে এসেছে।’
আরও পড়ুন: বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়ে ডিপিআই ও এআই আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের অংশীদারদের ন্যায্য শক্তি রূপান্তর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অর্থায়নেও সহায়তা করি। এটি আমাদের সমস্ত আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের প্রতিষ্ঠাতা নীতি: জাতীয় কর্মসূচি ও অগ্রাধিকারের উপর ভিত্তি করে। সৌর বিপ্লবকে শক্তির অভিগম্যতার একটি বিস্তৃত কৌশল দ্বারা সমর্থিত হতে হবে। আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি যে এই জোটের বিশ্বের বৃহৎ চ্যালেঞ্জগুলোর একটির সমাধান প্রদানের ক্ষমতা রয়েছে, বিশ্বের অসঙ্গতি সত্ত্বেও।’
আন্তর্জাতিক সৌর জোটের মহাপরিচালক ড. অজয় মথুর বলেন, ‘বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এবং নির্ভরযোগ্য শক্তি না পাওয়াদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে এমন প্রয়োগে সৌর শক্তির বিকাশ ত্বরান্বিত করার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে। যেমন- সৌর মিনি-গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া, কৃষি পাম্পে শক্তি জোগানো, কোল্ড স্টোরেজ পরিচালনা ইত্যাদি।’
তিনি বলেন, ‘আইএসএ এলডিসি ও এসআইডিসহ ৫৫টি উন্নয়নশীল দেশে ৯ দশমিক ৫ গিগাওয়াটেরও বেশি সৌর অ্যাপ্লিকেশন সুবিধা প্রদান করছে এবং সৌর শক্তিকে সমর্থন করে জীবিকা নির্বাহের উপায়গুলোর উপর উন্নয়নশীল বিশ্বজুড়ে প্রায় চার হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আমরা আমাদের সদস্য দেশগুলোতে সৌর শক্তি বিষয়ে প্রযুক্তি, জ্ঞান ও দক্ষতার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে এমন স্টার কেন্দ্রগুলো গড়ে তুলতে কাজ করছি।’
ড. অজয় মথুর বলেন, ‘এছাড়াও, আইএসএ সৌর মিনি-গ্রিডগুলোকে বিশ্বব্যাপী শক্তির অভিগম্যতা প্রদান করতে সক্ষম করছে, বিশেষ করে যেখানে গ্রিড সম্প্রসারণ খুব ব্যয়বহুল। গ্যারান্টিগুলো বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে আকর্ষণ করতে সাহায্য করে এবং আইএসএ আফ্রিকার সদস্য দেশগুলোতে তার গ্লোবাল সোলার সুবিধার মাধ্যমে গ্যারান্টি প্রদানের জন্য এমন একটি পদ্ধতি তৈরি করেছে। আমরা এই দেশগুরোর উদ্যোক্তাদেরকেও সক্ষম করছি, যারা সাহায্যে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলজুড়ে সৌর শক্তির প্রধান সরবরাহকারী হতে পারে।’
২০২০ সালের মে মাসে এলডিসি ও এসআইডির চাহিদা পূরণের জন্য আইএসএ নমুনা প্রকল্প শুরু করে। এর লক্ষ্য ছিল সৌর প্রযুক্তির অ্যাপ্লিকেশনগুলো প্রদর্শন করা, যা স্কেল আপ করা যেতে পারে এবং উপকারী সদস্য দেশগুলোর ক্ষমতা গড়ে তোলা। আইএসএ-র সহায়তায় স্থাপিত চারটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন শ্রী আর কে সিং।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে:
মালয় প্রজাতন্ত্রের সংসদ ভবনের সৌরায়ণ, ফিজি প্রজাতন্ত্রের দুটি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সৌরায়ণ, প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য ৮ কিলোওয়াট সৌর পিভি সিস্টেম এবং ২০ কিলোওয়াট ব্যাটারি স্টোরেজ ক্ষমতাসহ সেইচেল প্রজাতন্ত্রের লা দিগ দ্বীপে কৃষি অংশীদারদের সুবিধার্থে ৫ মেট্রিক টন ক্ষমতার একটি সৌর চালিত কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন। এছাড়া, কিরিবাতি প্রজাতন্ত্রের নওয়াই জুনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল (জেএসএস)-এ ২৪ কিলোওয়াট বিএসএসের সঙ্গে জুড়ি ৭ কিলোওয়াট সৌর পিভি ছাদ সিস্টেমসহ সৌরায়ণ।
প্রকল্পগুলো আইএসএর সদস্য দেশগুলোকে সৌর শক্তি উন্নয়নে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতির প্রমাণ। আইএসএ সৌর শক্তির সুবিধাগুলো সবার কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করে চলবে, যাতে আমরা একটি টেকসই ও স্বচ্ছ শক্তি ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারি।
আরও পড়ুন: ঢাকায় টেক্সাইল ট্যালেন্ট হান্ট ৮.০ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
শ্রী সিং বলেন, ‘আইএসএ অনুদান উদ্যোগের আওতায় আইএসএ’র প্রদত্ত ৫০ হাজার মার্কিন ডলার প্রতিটি প্রকল্পের মাধ্যমে মালয় প্রজাতন্ত্র, ফিজি প্রজাতন্ত্র, সেইচেল প্রজাতন্ত্র এবং কিরিবাতি প্রজাতন্ত্রের চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করা আমার সম্মান ও সৌভাগ্যের। আইএসএ আমাদের সদস্য দেশগুলোর অর্জনকে স্বীকৃতি দেয় এবং সৌর শক্তির মাধ্যমে শক্তি রূপান্তরের কারণে তাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে। আমাদের সম্মিলিতভাবে একে অপরের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ থেকে শিখতে হবে।’
অধিবেশনটিতে আইএসএ’র সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থার প্রতিটি সদস্য দেশের প্রতিনিধিত্ব করা হয়।
এই সংস্থা আইএসএর ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির বাস্তবায়ন এবং এর উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গ্রহণযোগ্য সমন্বিত পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অধিবেশনটি বার্ষিকভাবে মন্ত্রী পর্যায়ে আইএসএর সদর দপ্তরে বসে।
এটি সৌর শক্তি স্থাপন, কর্মক্ষমতা, নির্ভরযোগ্যতা, খরচ ও অর্থায়নের স্কেলের ক্ষেত্রে প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য কার্যক্রমের সামগ্রিক প্রভাব মূল্যায়ন করে।
আইএসএর ষষ্ঠ অধিবেশনে শক্তি অভিগম্যতা, জ্বালানি সুরক্ষা এবং শক্তি রূপান্তরের তিনটি জটিল বিষয়ের উপর আইএসএর মূল উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আন্তর্জাতিক সৌর জোট (আইএসএ) ১১৬টি সদস্য এবং স্বাক্ষরকারী দেশ নিয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এটি সরকারগুলোকে সৌর শক্তির ব্যবহার সহজ করতে এবং কার্বন-নিরপেক্ষ ভবিষ্যতে টেকসই রূপান্তর হিসেবে সৌর শক্তির প্রচারে সহায়তা করে।
আইএসএর লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে সৌর শক্তিতে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং প্রযুক্তি ও এর অর্থায়ন খরচ কমানো। এটি কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবহন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে সৌর শক্তির ব্যবহারকে উৎসাহিত করে।
আইএসএ সদস্য দেশগুলো নীতি ও বিধিমালা প্রণয়ন, সেরা অনুশীলন শেয়ারিং, সাধারণ মানদণ্ডে সম্মত হওয়া এবং বিনিয়োগ সংগঠনের মাধ্যমে পরিবর্তন নিয়ে আসছে।
এই কাজের মাধ্যমে আইএসএ সৌর প্রকল্পের জন্য নতুন ব্যবসায়ী মডেল শনাক্ত, নকশা এবং পরীক্ষা করেছে; সরকারগুলোকে সহজে সৌর বিশ্লেষণ এবং পরামর্শের মাধ্যমে তাদের শক্তি বিধিমালা এবং নীতিগুলোকে সৌরবান্ধব করতে সহায়তা করেছে; বিভিন্ন দেশ থেকে সৌর প্রযুক্তির জন্য চাহিদা পূরণ করেছে এবং খরচ কমিয়েছে; ঝুঁকি কমিয়ে এবং খাতটিকে বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলে অর্থায়নে অভিগম্যতা উন্নত করেছে; সৌর প্রকৌশলী এবং জ্বালানি নীতি নির্ধারকদের জন্য সৌর প্রশিক্ষণ, ডেটা এবং অন্তর্দৃষ্টির অ্যাক্সেস বৃদ্ধি করেছে।
আইএসএ ভারতে সদর দপ্তর সহকারে প্রথম আন্তর্জাতিক আন্তঃসরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। এটি বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি), উন্নয়ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান (ডিএফআই), বেসরকারি ও সরকারি খাতের সংগঠন, নাগরিক সমাজ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করছে যাতে বিশেষ করে অনুন্নত দেশ (এলডিসি) এবং ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে (এসআইডি) সৌর শক্তির মাধ্যমে ব্যয়বহুল ও রূপান্তরমূলক সমাধান স্থাপন করা যায়।
আরও পড়ুন: ঢাকায় জাতীয় যুব উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ভারতে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৬, আহত ৪০
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের বিজয়নগরম জেলায় একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে অন্তত তিনটি রেলগাড়ি লাইনচ্যুত হয়।
ভারতের রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সৌরভ প্রসাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একাধিক উদ্ধারকারী দল এবং বাসিন্দারা ধ্বংসস্তুপ থেকে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করছে।
আরও পড়ুন: ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯০ জনের বেশি নিহতের ঘটনায় ৩ রেল কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডি কর্তৃপক্ষকে দুর্ঘটনাস্থলে যতবেশি সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো এবং অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব দুর্ঘটনার জন্য প্রায়শই মানুষের ত্রুটি বা পুরানো সংকেত সরঞ্জামকে দায়ী করা হয়।
চলতি বছরের জুনে ভারতের পূর্বঞ্চলে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। যা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘনা।
এক কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ প্রতিদিন ভারত জুড়ে ১৪ হাজার ট্রেনে চড়ে ৬৪ হাজার কিলোমিটার (৪০ হাজার মাইল) রেলপথ ভ্রমণ করে।
আরও পড়ুন: ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘনা: ময়মনসিংহের একই পরিবারের ৪ জন নিহত
রাফাহ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল সহায়তা বহনকারী তৃতীয় চালান, ২ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি হামাসের
ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন (হামাস) সোমবার গাজায় জিম্মি থাকা দুই বয়স্ক ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে।
সোমবার সর্বশেষ দুই ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির পর রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় মানবিক সহায়তার তৃতীয় চালান ঢুকেছে।
অন্যদিকে, মানবিক সহায়তা বহনকারী আরও বেশ কয়েকটি বিমান মিশরের উত্তর সিনাইয়ের আল-আরিশ বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পাঠানোর অপেক্ষা করছে।
এছাড়া, গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা এবং ফিলিস্তিনে সম্ভাব্য স্থল আক্রমণের প্রস্তুতি অব্যাহত থাকায়, লেবাননের শিয়া সামরিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল সীমান্তে আরও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। যা বিরোধের আঞ্চলিক বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘মিশর-কাতারের মধ্যস্থতার’ মাধ্যমে ‘মানবিক কারণে’ আরও দুই জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।
৭ অক্টোবর আটক করার পর গত শুক্রবার দুই আমেরিকান জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। এবার দ্বিতীয়বারের মতো হামাস দুই ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে।
একজন ইসরায়েলি সরকারি কর্মকর্তা গাজা ও মিশরের মধ্যবর্তী রাফাহ ক্রসিংয়ে এসে পৌঁছানো দুই ইসরায়েলির মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, একটি ইসরায়েলি দল তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ দেখা করতে যাচ্ছিল।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কান টিভির খবরে ওই দুই নারীকে ইয়োচেভেড লিফশিটজ (৮৫) এবং নুরিট কুপার (৭৯) হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ইয়োচেভের স্বামী ৮৩ বছর বয়সী সাংবাদিক ওডেদ লিফশিটজকে তার স্ত্রীর সঙ্গে অপহরণ করা হয়েছিল এবং তিনি এখনও হামাসের হাতে বন্দী রয়েছেন।
বিমসটেকের পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে শিগগিরই যোগ দেবেন ভারতের ইন্দ্র মণি পান্ডে
বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) পরবর্তী মহাসচিব হচ্ছেন ইন্দ্র মণি পান্ডে।
তিনি ১৯৯০ ব্যাচের একজন ভারতীয় ফরেন সার্ভিস অফিসার এবং বর্তমানে জেনেভায় জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় ভারতের রাষ্ট্রদূত/স্থায়ী প্রতিনিধি।
শনিবার পান্ডে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের প্রধান আঞ্চলিক সংস্থা বিমসটেকের মহাসচিবের মর্যাদাপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব আমাকে অর্পণ করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
আরও পড়ুন: বিমসটেক সম্মেলন: নভেম্বরে থাইল্যান্ড সফরে যাবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবারই প্রথম কোনো ভারতীয় বিমসটেকের মহাসচিবের পদে অধিষ্ঠিত হবেন।
ইন্দ্র মণি পান্ডে শিগগিরই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
বিদায়ী বিমসটেক মহাসচিব তেনজিন লেকফেল ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর বিমসটেকের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি বিমসটেকের তৃতীয় মহাসচিব।
আরও পড়ুন: সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কলম্বোতে বিমসটেক সনদ স্বাক্ষরিত
প্রধানমন্ত্রী বছরের শেষ দিকে থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দেবেন
নওয়াজ শরিফ ৪ বছর পর পাকিস্তানে ফিরেছেন
পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ চার বছর পর লন্ডন থেকে শনিবার (২১ অক্টোবর) দেশে ফিরেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে জনসমর্থন তৈরির জন্য তিনি দেশে ফিরেছেন।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে শনিবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে একটি বিশাল সমাবেশে বক্তৃতা করবেন তিনি।
শরীফ সম্প্রতি লন্ডন থেকে সৌদি আরব এবং সেখান থেকে দুবাই আসেন। সেখান থেকে ইসলামাবাদ রওনা হওয়ার আগে শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমি চার বছর পর পাকিস্তানে যাচ্ছি এবং আল্লাহর রহমতে আমি খুব খুশি।’
তিনি জানান, তিনি আশা করেছিলেন এই কয় বছরে দেশের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করেন এবং এর দুই বছর পর ২০১৯ সালে তিনি পাকিস্তান ত্যাগ করেন।
তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা ভিডিওতে এসব তথ্য জানা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, আমি আল্লাহর উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি ১৫০ বারেরও বেশি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।
২০১৯ সালে বুকে ব্যথার কথা বলায় তার উত্তরসূরি ইমরান খান তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেন। শরীফ পরে লন্ডনে তার অবস্থান দীর্ঘায়িত করে বলেছিলেন যে তার ডাক্তাররা তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দিচ্ছে না। এরপর থেকে তিনি লন্ডনে পলাতক ছিলেন।
শরীফের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরান খানকে আগস্ট মাসে গ্রেপ্তার করা হয়।
একটি আদালত তাকে দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন।
দুবাইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শরীফ বলেন, তিনি আশা করেন পাকিস্তান আবার উন্নয়নের পথে এগোতে পারবে। ‘আশার আলো এখনও টিকে আছে এবং আশাহত হওয়া উচিত নয়। আল্লাহর রহমতে আমরা পরিস্থিতি ঠিক করতে সক্ষম হয়েছি।’
পাকিস্তানের একটি ফেডারেল আদালত দুর্নীতির মামলায় শরীফকে কয়েক দিনের জামিন দিয়েছে। এর ফলে লন্ডন থেকে তার দেশে ফেরার পথ পরিষ্কার হয়েছে।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্তটি শরীফ এবং তার দলের জন্য একটি বড় অর্জন।
তিনি দেশে ফিরে না আসায়, ২০২০ সালে ইসলামাবাদের একটি দুর্নীতিবিরোধী আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বৃহস্পতিবার একই আদালত সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন।
আরেকটি ফেডারেল আদালত ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত শরীফকে জামিন দিয়েছেন এবং ততদিন পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার থেকে সুরক্ষা দিয়েছেন।
শরিফকে ২০১৮ সালে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং লন্ডনে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কেনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি দুর্নীতির মামলায় তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
ইমরান খানকে অপসারণের পর নওয়াজ শরীফের ভাই শেহবাজ শরীফ খানের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পর খানের দল ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।
শেহবাজ শরীফ দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটাতে ব্যর্থ হন। তবে তিনি পাকিস্তানকে খেলাপির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। গত আগস্টে তার মেয়াদ শেষ হয়।
একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে এবং আগামী জানুয়ারিতে তারা ভোটগ্রহণ করবে।
মানবিক সহায়তা নিয়ে ট্রাক রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে
দুই সপ্তাহের অবরোধের পর শনিবার (২১ অক্টোবর) মানবিক সাহায্য নিয়ে ২০টি ট্রাক রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে।
এটি অবরুদ্ধ উপকূলীয় ছিটমহল গাজা ও মিশরের মধ্যে একমাত্র সীমান্ত ক্রসিং।
লাইফ মেকার্স ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আয়া আহমেদ সিনহুয়াকে বলেন, ট্রাকগুলোতে মিশরের ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর সিভিল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক এবং মিশরীয় রেড ক্রিসেন্টের দান করা চিকিৎসা সহায়তার সরঞ্জাম ছিল।
সিনহুয়াকে পাঠানো এক বিবৃতিতে গাজায় হামাস পরিচালিত সরকারি মিডিয়া অফিসের প্রধান সালামা মারুফ বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকা যে মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে এ ধরনের সীমিত সহায়তা তা মোকাবিলা করতে পারবে না।’
মারুফ বলেন, একটি নিরাপদ করিডোর প্রতিষ্ঠা করা গুরুত্বপূর্ণ, যার মাধ্যমে মানবিক সহায়তা এবং আহতরা উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা পেতে পারে।
গত ৭ অক্টেবর সর্বশেষ হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হয়েছে।
এদিন হামাস ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি এবং গাজা উপত্যকাসংলগ্ন শহরগুলোতে আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে। এরপর গাজায় ব্যাপক ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু হয়।
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এ পর্যন্ত উভয় পক্ষের ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছে ভারত বায়োটেক: কর্তৃপক্ষ
ডেঙ্গুর টিকা আবিষ্কার নিয়ে কাজ করছে ভারতের অন্যতম টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক। একই সঙ্গে মশাবাহিত চিকুনগুনিয়ার টিকার তৃতীয় ট্রায়াল শেষে অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের ‘ভারত বায়োটেক’ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) হায়দরাবাদে ভারত বায়োটেক কারখানায় ভারত সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিক প্রতিনিধি দলকে এক প্রেজেন্টেশনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ভারত বায়োটেক কতৃপক্ষ প্রেজেন্টেশনে জানায়, ডেঙ্গুর টিকা আবিষ্কার নিয়ে আমরা কাজ করছি। ডেঙ্গুর ভাইরাস খুবই জটিল। এদের ভ্যারিয়েন্টের খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়। তাই এই ভাইরাস নিয়ে কাজ করাও কঠিন।
মশাবাহিত চিকুনগুনিয়ার টিকা আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে। চিকুনগুনিয়ার টিকা এবং একই সঙ্গে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিসের টিকার তৃতীয় ট্রায়াল শেষে অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে জানিয়েছে ভারত বায়োটেক কতৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ভারত বায়োটেকের কো-ফাউন্ডার ও এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান কৃষ্ণা এলা ভ্যাকসিন গবেষণায় বিপ্লব এনেছেন। বিশেষ করে করোনার কঠিন সময়ে অক্সফোর্ড, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্নার মতো ভ্যাকসিনের পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে কোভ্যাক্সিন আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দেয় ভারত বায়োটেক।
আরও পড়ুন: দেশে ভ্যাকসিন প্ল্যান্ট তৈরির প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার আহ্বান জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞের
স্বাস্থ্যের অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক তলালেং মোফোকেং মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ক্রমাগত সহিংস বাস্তুচ্যুতি ও হামলার হুমকি একটি বড় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করেছে।
এই অঞ্চলে সহিংসতা বৃদ্ধির পর থেকে কমপক্ষে ১২জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত এবং ২৪ স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জেরে তিনি এসব কথা বলেন।
মোফোকেং বলেন, ‘সংঘাতে জড়িত সব পক্ষ এবং তাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের অবশ্যই দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্নভাবে খাদ্য, পানীয়, ওষুধ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় মানবিক পরিষেবাগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘গাজার চিকিৎসা অবকাঠামোগুলোর অপূরণীয়ভাবে ক্ষতি হয়েছে এবং স্বাস্থ্য সেবাকারীরা চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবসহ একটি ভয়ানক পরিস্থিতিতে কাজ করছে।’
এই বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘মানবতাবাদী কর্মী, চিকিৎসক, সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংস্থা ও সাংবাদিকরা এই অঞ্চলে বোমাবর্ষণের মধ্যেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।’
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলোতে ১১১ টিরও বেশি হামলার নথিভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যার মধ্যে গাজা উপত্যকায় ৪৮টি হামলা করা হয়েছে, এর ফলে কমপক্ষে ১২ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
মোফোকেং বলেছেন, গাজায় খাদ্য, পানীয়, জ্বালানি, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় সরবরাহের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল।
তিনি বলেন, ‘গাজা উপত্যকা ক্রমাগত বোমাবর্ষণ ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সম্মুখীন হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশটির স্বাস্থ্যখাত সহনসীমার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: গাজার দক্ষিণাঞ্চলে শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪০ ফিলিস্তিনি
মোফোকেং মানবিক করিডোরের মাধ্যমে সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার দাবি করে সংঘাতের বৃদ্ধি রোধ করতে এবং সকলের স্বাস্থ্যের অধিকার রক্ষা ও সম্মান করার জন্য অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর জন্য খাদ্য, পানীয়, আশ্রয়, জ্বালানি, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, মনোসামাজিক সহায়তা এবং প্রাথমিক চিকিৎসার জরুরি সরবরাহ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সাম্প্রতিক আগ্রাসন বৃদ্ধিকে অবশ্যই উপক্ষো করা উচিত নয়। দখলদারিত্বের পর থেকে প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের উপর চলমান স্থূল কাঠামোগত, পদ্ধতিগত ও দীর্ঘমেয়াদি সহিংসতার একটি নিষ্পেষণ মুহূর্তকে প্রতিনিধিত্ব করে এটি।’
মোফোকেং বলেন, ‘আমি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং সদস্য দেশগুলোকে যুদ্ধের দামামা বাজানো বন্ধ করার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণ ৭৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটি ৫৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক দখলে রয়েছে। এই দখলদারিত্বের ফলে জবাবদিহিতার অভাব, চলমান স্থানচ্যুতি ও ধ্বংস, চলাচলে নিয়ন্ত্রণ এবং পদ্ধতিগত জাতিগত বৈষম্য প্রভৃতি ঘটেছে।’
এই বিশেষজ্ঞ স্মরণ করেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০০৯ থেকে ২০২৮ সালকে ‘শান্তির দশক’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সব দেশের সার্বভৌম সমতা এবং তাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান বজায় রাখার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
তিনি বলেন, ঘোষণাটি সংঘাত প্রতিরোধ করে এবং এর মূল কারণগুলোকে সমাধান করে শান্তি বজায় রাখার জন্য একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা গ্রহণ করাকে সমর্থন করে।
মোফোকেং বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আদায়ের পদক্ষেপ তাদের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত। আপনারা মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে নিভিয়ে দিতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাস দ্বন্দ্ব বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে: আইএমএফ প্রধান
সিরিয়ার আলেপ্পো বিমানবন্দরে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেয়নি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
সমকামী বিয়েকে বৈধতা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দেশটির প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এই জাতীয় আইন তৈরি করার বিষয়টি সংসদের উপর নির্ভর করে।
সমকামী সম্প্রদায়ের অধিকার সমুন্নত রাখতে এবং তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অবসান ঘটাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটিতে সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেওয়ার জন্য ২০টি আবেদনের শুনানি করেন পাঁচ বিচারপতির একটি বেঞ্চ।
চন্দ্রচূড় বলেন, সমলিঙ্গের বিয়ে নিয়ে 'আমাদের কতদূর অগ্রসর হতে হবে' তা নিয়ে বিচারপতিদের মধ্যে একমত ও মতবিরোধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে পাঠানোর অনুমতি দিল ভারতের আদালত
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘এই আদালত আইন করতে পারে না। এটি কেবল আইনের ব্যাখ্যা করতে পারে এবং এটি কার্যকর করতে পারে।’ এটি সংসদের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে যে তারা সমকামী ইউনিয়নগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিবাহ আইনগুলো সংশোধন বা প্রসারিত করতে পারে কিনা।
ভারতে এলজিবিটিকিউ+ মানুষের জন্য আইনি অধিকারগুলো গত এক দশকে প্রসারিত হয়েছে এবং এই পরিবর্তনগুলোর বেশিরভাগই সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এসেছে।
মঙ্গলবারের রায়ের মাধ্যমে ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ আদালত ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইন বাতিল করে দেয়, যেখানে সমকামী যৌনতার জন্য ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল। সমকামী সম্প্রদায়ের জন্য সাংবিধানিক অধিকার প্রসারিত করা হয়েছিল।
এই সিদ্ধান্তকে এলজিবিটিকিউ অধিকারের জন্য একটি ঐতিহাসিক বিজয় হিসাবে দেখা হয়েছিল। একজন বিচারক বলেছিলেন যে এটি ‘আরও ভাল ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করবে।’
আরও পড়ুন: ‘পরকীয়া অপরাধ নয়: ভারতের আদালতের একটি প্রগতিশীল রায়’