������������������
ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ৬৯ রোহিঙ্গা শরণার্থী উদ্ধার
ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি বিধ্বস্ত হওয়া নৌকার সন্ধান পেয়েছে ইন্দোনেশিয়ার একটি তল্লাশি ও উদ্ধারকারী জাহাজ। বৃহস্পতিবার সেই নৌকার ধ্বংসাবশেষে আশ্রয় নেওয়া ৬৯ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে তারা।
উদ্ধারকারী জাহাজে থাকা এপির এক আলোকচিত্রী জানিয়েছেন, স্থানীয় মাছ ধরার নৌকায় ১০ জনকে তোলা হয়েছে এবং আরও ৫৯ জনকে ইন্দোনেশিয়ার জাহাজটি উদ্ধার করেছে।
রাতের বৃষ্টিতে ভিজে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। উদ্ধার করা রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুও ছিল। রাবারের ডিঙ্গি নৌকায় করে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়ার সময় ছোট নৌকাটিতে কতজন শরণার্থী ছিল তা এখনো জানা যায়নি। স্থানীয় জেলেরা প্রাথমিকভাবে ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে, ধারণা করা হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ জনের মতো রোহিঙ্গা ছিল।
প্রাথমিকভাবে উপকূলের উত্তাল পানিতে নৌকাটি খুঁজে পেতে অসুবিধা হচ্ছিল। কয়েক ঘণ্টা পরে, ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল বুধবার সন্ধ্যায় বান্দা আচেহ শহর ত্যাগ করেছে।
অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নৌকা ও জীবিতদের খুঁজে পাওয়া যায়।
আচেহ বারাত জেলার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের নেতা আমিরুদ্দিন বলেন, উদ্ধার করা রোহিঙ্গারা জানয়েছেন, নৌকাটি পূর্ব দিকে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে এটি ফুটো হতে শুরু করে এবং তারপরে তীব্র স্রোত এটিকে আচেহর পশ্চিমের দিকে ঠেলে দেয়। ওই ছয়জন জানান, ডুবে যাওয়া নৌকায় এখনও বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন বাকিরা।
মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযানের নৃসংশতা থেকে বাঁচতে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশের জনাকীর্ণ শিবির ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালানোর চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। নভেম্বর থেকে ইন্দোনেশিয়ায়ও শরণার্থীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো ইন্দোনেশিয়াও জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তাই শরণার্থীদের আইনি সুরক্ষা দিতে এবং তাদের গ্রহণ করতে বাধ্য নয় তারা। তবে তারা এখন পর্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, গত বছর প্রায় সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা, যাদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু, তাদের জন্মভূমি মিয়ানমার ও প্রতিবেশী বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে নৌকায় করে পালিয়ে আসে। এর মধ্যে ৫৬৯ জন বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন, যা ২০১৪ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ প্রাণহানির সংখ্যা।
চীনের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৪, আহত ৩৭
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শানশি প্রদেশে মঙ্গলবার যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।
বিষয়টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
শানশির হোহোত-বেইহাই এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী বাসটি একটি টানেলের দেয়ালে ধাক্কা খায়।
উদ্ধারকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত ৩৮
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত ৩৮
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে এক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২১ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রাদেশিক ট্রাফিক বিভাগ।
হেলমান্দের বিভাগটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রবিবার সকালে হেলমান্দ প্রদেশের গেরাশক জেলায় দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার ও পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রধান মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
হেলমান্দের ট্রাফিক কর্মকর্তা কাদরাতুল্লাহ বলেন, একটি মোটরসাইকেল একটি যাত্রীবাহী বাসকে ধাক্কা দেয়, যা রাস্তার বিপরীত দিকের একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কারে আঘাত করে। এতেই মূলত দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
হেলমান্দ পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র হাজাতুল্লাহ হাক্কানি জানান, আহত ৩৮ জনের মধ্যে ১১ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ৩০০ শিক্ষার্থী অপহরণ
অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডগামী উড়োজাহাজে ‘যান্ত্রিক ত্রুটির’ কারণে ৫০ জন আহত
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী
ভারতীয় নৌবাহিনী সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে একটি বাল্ক ক্যারিয়ারের (বাণিজ্যিক জাহাজ) নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং জাহাজের ১৭ জন ক্রুকে উদ্ধার করেছে।
শনিবার এক এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় ভারতীয় নৌবাহিনী উল্লেখ করেছে, মাল্টার পতাকাবাহী এমভি রুয়েন নামের জাহাজটি দখলে নেওয়া ৩৫ জন জলদস্যুর সবাই আত্মসমর্পণ করেছে এবং জাহাজটিতে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং নিষিদ্ধ দ্রব্য রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুপুরে সোমালিয়া উপকূলে পৌঁছাতে পারে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’
শুক্রবার আন্তর্জাতিক জলসীমায় বাল্ক ক্যারিয়ার থেকে একটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর পর এই অভিযান পরিচালিত হয়।
গত ১৪ ডিসেম্বর সোমালিয়া থেকে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার দূরে ইয়েমেনের সোকোত্রা দ্বীপের কাছে জলদস্যুরা জাহাজটির দখল নেয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোমালিয়ার জলদস্যুদের তৎপরতা কমেছে। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের জাহাজে হামলাসহ ওই অঞ্চলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ব্যাপক বিশৃঙ্খলার মধ্যে তৎপরতা আবার শুরু হতে পারে বলে উদ্বেগ বাড়ছে।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার হাবিয়ো বন্দরে নোঙর করেছে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ
মুসলিমদের বাদ রেখেই নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা ভারতের
ভারতে মুসলিমদের বাদ রেখেই ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়নের জন্য বিধি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার।
সোমবার (১১ মার্চ) আসন্ন ভোটের কয়েক সপ্তাহ আগে তৃতীয় মেয়াদে দেশটির ক্ষমতায় যাওয়ার সময় এই ঘোষণা দেন হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ভারতে পালিয়ে আসা হিন্দু, পার্সি, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে দ্রুত নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। এই আইনে মুসলমানদের বাদ দেওয়া হয়েছে, যারা উল্লেখিত তিনটি দেশেই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
আইনটি ভারতের সংসদে ২০১৯ সালে অনুমোদিত হলেও রাজধানী নয়াদিল্লিসহ অন্যান্য স্থানে প্রাণঘাতী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মোদি সরকার এর বাস্তবায়ন আটকে দেয়। সেসময় কয়েকদিনের চলা সংঘর্ষে বিপুল সংখ্যক মানুষ নিহত হয়।
২০১৯ সালে দেশব্যাপী বিক্ষোভগুলো সব ধর্মের অনুসারীদের দৃষ্টিগোচর হয়। সে সময় তারা বলেছিল, আইনটি ধর্মনিরপেক্ষ জাতি হিসেবে ভারতের ভিত্তিকে দুর্বল করে। মুসলমানরা বিশেষত উদ্বিগ্ন ছিল, সরকার তাদের কোণঠাসা করার জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধকের সঙ্গে আইনটি ব্যবহার করতে পারে।
অবৈধভাবে ভারতে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত ও নির্মূল করতে মোদি সরকারের প্রচেষ্টার অংশ হচ্ছে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি)। নিবন্ধনটি কেবল উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি দেশব্যাপী অনুরূপ নাগরিকত্ব যাচাইকরণ কর্মসূচি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৩ বাংলাদেশির ভাগ্য নির্ধারিত হতে যাচ্ছে ভারতের আদালতে
মোদির সরকার ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব আইনকে মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে বহাল রেখেছে। তাদের যুক্তি, এই আইন শুধু নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য। এটি ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে না।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক টুইট বার্তায় বলেন, 'এই নিয়মের আওতায় এখন থেকে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় কারণে নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘুরা আমাদের দেশের নাগরিকত্ব পাবেন।’
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টি এই ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছে, 'নির্বাচনের মেরুকরণের জন্যই এর ঠিক আগের সময়টিতে এটি ঘোষণা স্পটতই পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে এই আইনটিকে 'বৈষম্যমূলক' বলে উল্লেখ করেছে।
সংস্থাটি বলেছে, ‘এটি সমতাভিত্তিক সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী।’
এতে আরও বলা হয়, আইনটি 'ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যকে বৈধতা দেয়' এবং 'এর কাঠামো ও উদ্দেশ্য বর্জনীয়'।
আরও পড়ুন: নোম্যান্সল্যান্ডে যৌথভাবে বাংলাদেশ-ভারতের ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন
১৪০ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ ভারতে ২০ কোটি মুসলমান রয়েছে, যারা বড় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী। তারা ভারতের প্রায় প্রতিটি অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ২০১৪ সালে মোদির দল প্রথম ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা ধারাবাহিক হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, মুসলিমবিরোধী সহিংসতার বিষয়ে মোদির স্পষ্ট নীরবতা তার কিছু চরমপন্থী সমর্থককে উৎসাহিত করেছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে আরও ঘৃণামূলক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
মোদি এমন একটি ফর্মুলায় ক্রমান্বয়ে ধর্মকে রাজনীতির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলেছেন যা ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠীকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে, তিনি উত্তর অযোধ্যায় একটি মসজিদকে ধ্বংস করে সেখানে রাম মন্দির উদ্বোধন করেন। যা তার দলের দীর্ঘদিনের হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রতিফলন।
বেশিরভাগ জরিপ বলছে, আগামী মে মাসে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে মোদি আবারও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবেন।
আরও পড়ুন: ভারতে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা রোধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
ভারতে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা রোধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামের একটি ভিডিওতে বিধস্ত অবস্থায় এক নারীকে কথা বলতে দেখা যায়। এতে দেখা যায়, তিনি কথা বলতে বলতে কেঁপে কেঁপে উঠছেন। তার মুখ ফুলে ও ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। স্বামীর পাশে বসে তিনি ভয়ংকর সেই মুহূর্তের কথাগুলো বলছেন।
ভিডিওতে ইংরেজিতে ক্যাপশন দিয়ে তিনি স্প্যানিশ ভাষায় বলেন, 'আমাদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে, যা অন্য কারোর সঙ্গে যেন না ঘটে। সাতজন লোক আমাকে ধর্ষণ করেছে, মারধর ও লুটপাট করেছে।'
পরে অবশ্য ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ওই ভিডিওতে ভুক্তভোগী নারী জানান, শুক্রবার রাতে পূর্ব ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকা জেলার একটি জঙ্গলে তাকে এবং তার ব্রাজিলিয়ান সঙ্গীর ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি বলেন, সাতজন পুরুষ তাদের গলায় ছুরি ধরে তাকে যৌন নির্যাতন করে।
একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দুই লাখেরও বেশি অনুসারীর জন্য তাদের ভ্রমণের ডকুমেন্টেশন করছিলেন তারা। হামলার শিকার হওয়ার পর এই দম্পতিকে একটি পুলিশ টহল ভ্যানে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে তিনি বলছিলেন, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ড পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে এবং সপ্তাহের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার পুলিশ জানিয়েছে, তারা আরও চারজন সন্দেহভাজনকে খুঁজছে।
নীতি অনুযায়ী যৌন নির্যাতনের শিকারদের পরিচয় প্রকাশ করেনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
এই ঘটনায় ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। দেশটির বড় সমস্যাগুলোর একটি এটি। নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান যৌন সহিংসতা রোধে কয়েক দশক ধরে এ আন্দোলন দেশব্যাপী তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে পুলিশ ৩১ হাজার ৫১৬টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: ভারতে ধর্ষণের ভয়াবহতা অব্যাহত রয়েছে যে কারণে
ভারতে ২০১৩ সালে ধর্ষণ আইন সংশোধন করা হয়। গোপনে অন্যদের নগ্ন অবস্থায় দেখাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিচারের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করা হয়।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, কঠোর আইন সত্ত্বেও সরকার এখনও নারীদের সুরক্ষা ও হামলাকারীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে ধর্ষণের মামলায় সাজার হার ৩০ শতাংশের নিচেই থাকছে।
বিদেশি হাই প্রোফাইল দর্শনার্থীদের ধর্ষণের ঘটনাগুলো এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ২০২২ সালে গোয়ায় এক ব্রিটিশ পর্যটক তার সঙ্গীর সামনে ধর্ষণের শিকার হন। এর আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে নয়া দিল্লির একটি হোটেলে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নারী অভিযোগ করেন, তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
দুই দশক আগে ভয়াবহ ধর্মীয় দাঙ্গার সময় এক মুসলিম নারীকে ধর্ষণের দায়ে ১১ হিন্দু পুরুষের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড জানুয়ারিতে পুনর্বহাল করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পরে তারা ২০২২ সালে মুক্তি পেয়েছিলেন এবং পরিবার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সংসদ সদস্য আসামিদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ধর্ষণবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকায় জাবি ছাত্র ইউনিয়নের ২ নেতা বহিষ্কার
গত বছর নারী কুস্তিগীররা কুস্তি ফেডারেশনের প্রধানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে বারবার নারীদের স্পর্শ করার অভিযোগ এনেছিলেন। কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভের পর মোদির দলের প্রভাবশালী আইনপ্রণেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে উত্ত্যক্ত, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়। সিং অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নারী অধিকারকর্মী ধাওয়ালে বলেন, হাই প্রোফাইল ধর্ষণের ঘটনাগুলো গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও ভারতে যৌন হয়রানি ও নারীর প্রতি সহিংসতাকে খাটো করে দেখার সংস্কৃতি এখনও রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা প্রতিবাদ জানাতে প্রতিনিয়ত রাস্তায় নেমেছি, কখনও কখনও একটি মামলা দায়ের করার জন্য। এমনটা হওয়া উচিত নয়।’
আরও পড়ুন: খুলনায় ২ শিশুকে ধর্ষণ মামলায় ১ জনের যাবজ্জীবন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শাহবাজ শরিফ
একদিন আগে পার্লামেন্টের অধিবেশনে নির্বাচিত হওয়ার পর সোমবার পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শাহবাজ শরিফ।
অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় ইমরান খানকে। তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন শাহবাজ শরিফ এবং ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। শাহবাজ তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই।
তার নিয়োগ বিতর্কিত, কারণ গত মাসের সংসদীয় নির্বাচনে তার বিরোধীরা দাবি করেছিল যে তার পক্ষে কারচুপি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পার্লামেন্টে বিক্ষোভের মধ্যেই পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত শেহবাজ শরীফ
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) জোর দিয়ে বলছে, নির্বাচনে তারা ভালো করেছে। কিন্তু নির্বাচনে চুরি ও অন্যান্য অনিয়মের কারণে দলটি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) সরকার গঠনের জন্য যথেষ্ট আসন পায়নি, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য অন্যদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে।
তিনি পার্লামেন্টে ২০১ ভোট পেয়ে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী ওমর আইয়ুবকে পরাজিত করেন, যিনি পান ৯২ ভোট।
সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট আরিফ শপথ বাক্য পাঠ করান।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করেছে ইসিপি
পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত ১৪
পার্লামেন্টে বিক্ষোভের মধ্যেই পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত শেহবাজ শরীফ
দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন শেহবাজ শরীফ। রবিবার দেশটির জাতীয় পরিষদের আইনপ্রণেতারা তাকে নির্বাচিত করেন।
এ সময় পার্লামেন্টে অবস্থানরত কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মিত্ররা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে।
স্পিকার আয়াজ সাদিক বলেন, শরীফ ২০১ ভোট পেয়ে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের ওমর আইয়ুবকে পরাজিত করেন, যিনি ৯২ ভোট পেয়েছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে শরীফের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৬৯ ভোট।
ওমর আইয়ুব পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি বা পিটিআই-এর সমর্থন পেয়েছিলেন, যাদের প্রার্থীরা নিজেরা সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত আসন পায়নি। পিটিআই প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে জোট গঠন করতে অস্বীকার করে।
কয়েকদিনের আলোচনার পর, ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পরে সমর্থকদের নিয়ে একটি জোট গঠন করে শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ। দেশব্যাপী মোবাইল নেটওয়ার্ক বিভ্রাটের কারণে অস্বাভাবিক দেরি করে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রার্থী ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলা এড়াতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা জরুরি ছিল।
এদিকে এই ফলাফল ঘোষাণায় দেরির হওয়ার বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে খানের দল। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ভোটে কারচুপি করা হয়েছিল বলে তারা জোর দাবি তুলেছিল। দলটি দাবি করে, তাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে ‘ভোট গণনার সময় কারচুপি করে তাদের বিজয় চুরি করা হয়েছিল’। যদিও নির্বাচন কমিশন তা অস্বীকার করে।
জাপানে সবচেয়ে কম শিশু জন্মহার ২০২৩ সালে, কমেছে বিয়ের হারও
জাপানে টানা অষ্টম বছরের মতো গত বছর শিশুর জন্মহারের সংখ্যা কমে নতুন করে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার(২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত সরকারি তথ্যে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
দেশেটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী ছয় বছরে এই প্রবণতা বিপরীতমুখী করা দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে জাপানে ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩১ শিশুর জন্ম হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ কম। ১৮৯৯ সালে জাপান এই পরিসংখ্যান সংকলন শুরু করার পর থেকে এটিই সর্বনিম্ন জন্মহারের রেকর্ড।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় বিয়ের সংখ্যা কমেছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ফলে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ২৮১ দম্পতিতে দাঁড়িয়েছে, যা বিগত ৯০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো অর্ধ মিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে। এটি শিশু জন্মহার কমার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে পিতৃতান্ত্রিক ঐতিহ্যের উপর ভিত্তিতে এবং পারিবারিক মূল্যবোধের কারণে জাপানে বিবাহবহির্ভূত সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা বিরল।
জরিপে দেখা গেছে, অনেক তরুণ জাপানিরা বিয়ে বা পরিবার গঠনে অনীহা প্রকাশ করে থাকেন। এর কারণ হিসেবে দেখা গেছে চাকরির সম্ভাবনা কম থাকায় তারা নিরুৎসাহিত হন। এছাড়া আয়ের চেয়ে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া এবং কর্পোরেট সংস্কৃতি- যা বাবা-মা উভয়েরই কাজ করার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন কারণও উল্লেখযোগ্য। এমনকি কান্নাকাটি করা শিশু এবং শিশুদের বাইরে খেলাধুলা করা ক্রমবর্ধমানভাবে একটি উপদ্রব হিসাবে বিবেচিত হয় তাদের কাছে। এর বাইরে অনেক তরুণ বাবা-মা বলেন যে তারা প্রায়শই বিচ্ছিন্ন বোধ করেন।
চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশিমাসা হায়াশি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, চলমান নিম্নগামী জন্মহার 'সংকটজনক অবস্থায়' রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আগামী ছয় বছর বা ২০৩০ সাল পর্যন্ত তার বেশি সময় তরুণ জনসংখ্যা দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করবে, তখন আমরা এই প্রবণতা বিপরীত করতে সক্ষম হতে পারি। 'নষ্ট করার মতো সময় নেই।'
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নিম্ন জন্মদানকে 'জাপানের সবচেয়ে বড় সংকট' বলে অভিহিত করেছেন এবং একটি প্রণোদনা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন যার মধ্যে বেশিরভাগ প্রসব, শিশু এবং তাদের পরিবারের জন্য আরও সহায়তা এবং ভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাবার আপিল খারিজ, জাপানি ২ শিশু থাকবে মায়ের জিম্মায়
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে সরকারের এই প্রচেষ্টা কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে তারা সন্দিহান। কারণ, এখন পর্যন্ত তারা মূলত এমন লোকদের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে যারা ইতোমধ্যে বিবাহিত বা ইতোমধ্যে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে বিয়েতে বা পরিবার গঠন করে সন্তান নিতে অনাগ্রহী তরুণদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে যথেষ্টভাবে সম্বোধন করা হয়নি ওই প্রণোদনা কর্মসূচিতে।
জন্মহারের সংখ্যা বিগত ৫০ বছর থেকে কমছে। এই সংখ্যাটি প্রায় ২১ লাখে পৌঁছেছিল। বার্ষিক সংখ্যা ৭ লাখ ৬০ হাজারের নিচে নেমে আসার ঘটনা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে দ্রুত ঘটেছে, যা ২০৩৫ সালের মধ্যে ঘটার কথা ছিল।
২০৭০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ কমে জাপানের জনসংখ্যা ১২ কোটি ৫০ লাখের বেশি থেকে ৮ কোটি ৭০ লাখে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই জনসংখ্যার মধ্যে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জনের বয়স হবে ৬৫ বা তার বেশি।
অন্যদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা মোকাবিলায় দেশটি তার সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করায় অর্থনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি নিম্নমুখী এবং বয়স্ক জনসংখ্যার ব্যাপক চাপে রয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনে জন্মহার কমলেও জনসংখ্যা ১৪০ কোটি ছাড়াল
পাকিস্তানের সংসদ নির্বাচন: সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী ইমরানের মিত্ররা
প্রায় দুই বছর আগে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মিত্ররা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে জাতীয় নির্বাচনে বেশি আসনে জিতেছে।
রবিবার(১১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে এই চিত্র দেখা গেছে।
ভোট কারচুপি, নজিরবিহীন মোবাইল ফোন বন্ধ এবং ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টিকে (পিটিআই) ভোট থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ হয়।
নির্বাচন কমিশন ও সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে তাদের দলের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপের কারণে পিটিআইয়ের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এর একটি পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে দলটির নির্বাচনী প্রতীক কেড়ে নেওয়া, যা নিরক্ষর ভোটারদের ব্যালটে প্রার্থী খুঁজে পেতে সহায়তা করে। আরেকটি ছিল দলীয় সমাবেশ নিষিদ্ধ করা।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া ইমরানকে। এরপর গত আগস্ট থেকেই কারাগারে রয়েছেন তিনি। ফৌজদারি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে ইমরান খানকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিষিদ্ধ করা হয়। এখনও তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন।
চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বা পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ২৬৬টি আসনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০১টি আসন পেয়েছেন।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক দণ্ডপ্রাপ্ত নওয়াজ শরীফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন (পিএমএল-এন) ৭৫ আসন পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পি) ৫৪টি আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে একটি আসনের ফলাফ স্থগিত করা হয়েছে এবং প্রার্থী নিহতের ঘটনায় আরেকটি আসনের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। ২০২২ সালে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচারণার নেতৃত্বে ছিল পিএমএল-এন এবং পি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত ১৪
কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে সরকার গঠন করতে পারেনি, তাই পাকিস্তানের সরকার গঠনে এবার জোট বাঁধতে হবে। নতুন পার্লামেন্ট দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে।
নির্বাচনের ফলাফল নওয়াজ শরিফের জন্য বিব্রতকর। গত অক্টোবরে মসৃণভাবে দেশে ফিরে আসার কারণে শক্তিশালী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের পছন্দের প্রার্থী হিসাবে তিনি বিবেচিত হয়েছিলেন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বরাবরই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চূড়ান্ত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরেছে।
কারাদণ্ড এড়াতে নওয়াজ শরিফ চার বছর বিদেশে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকলেও পাকিস্তানে আসার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাতিল হয়ে যায় তার সাজা।
এমনকি ভোটের দিনও নওয়াজ শরিফ জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি জোট চান না এবং একটি দলকে পুরো পাঁচ বছরের মেয়াদ দেওয়ার দাবি করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পেছনে তার দল পিছিয়ে থাকতে দেখে তিনি জোটগঠন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতার কথা বলেন।
নওয়াজ শরিফ কখনোই পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকেননি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করেছে ইসিপি