���������������������������������
সৌদি সীমান্তরক্ষীর গুলিতে শতাধিক ইথিওপিয়ান অভিবাসী নিহত: দাবি মানবাধিকার সংগঠনের
সৌদি আরবের সীমান্ত রক্ষীরা ইয়েমেন থেকে দেশে প্রবেশের চেষ্টা করা ইথিওপিয়ানদের উপর মর্টার নিক্ষেপ ও মেশিনগান দিয়ে গুলি করেছে বলে দাবি করা হয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক রিপোর্টে। এতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শতাধিক নিরস্ত্র অভিবাসী নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সৈন্যদের হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং অভিবাসীদের প্রবেশের পথে মৃতদেহ ও সমাধিস্থলের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, নিহতের সংখ্যা 'হাজার হাজার' হতে পারে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের সঙ্গে সৌদি আরবের দক্ষিণ সীমান্তে অভিবাসন প্রত্যাশীদের উপর সেনাদের গুলি বর্ষণের বিষয়ে জাতিসংঘ এরই মধ্যে সৌদি আরবকে প্রশ্ন করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সৌদি সরকারের একজন কর্মকর্তা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনটিকে ‘ভিত্তিহীন এবং অনির্ভরযোগ্য সূত্রের উপর ভিত্তি করে করা’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি এই দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ দেননি। সীমান্তে অভিবাসীদের পাচার করে সপ্তাহে কয়েক হাজার ডলার উপার্জন করছে- ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ইথিওপিয়ান সৌদি আরবে বাস করছে। যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ অনুমোদন ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশ করেছে। ইথিওপিয়ার উত্তর টাইগ্রে অঞ্চলে দুই বছরের গৃহযুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
যুব বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা সৌদি আরব, আদ্দিস আবাবার সঙ্গে আলোচনা করে হাজার হাজার ইথিওপিয়ানকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৩৮ জন ইথিওপিয়ান অভিবাসী এবং তাদের চারজন আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিল। তারা বলেছেন, সৌদি সীমান্তরক্ষীরা অভিবাসীদের উপর গুলি করেছে বা অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষদের উপর বিস্ফোরক ছুঁড়তে দেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রুপটি ২০২১ সালের ১২ মে এবং ২০২৩ সালের ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ৩৫০টিরও বেশি ভিডিও এবং ফটোগ্রাফ বিশ্লেষণ করেছে এবং অন্যান্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি এবং ২০২৩ সালের জুলাইয়ের মধ্যে স্যাটেলাইট ধারণ করা কয়েকশ বর্গকিলোমিটার (মাইল) এলাকার চিত্রও পরীক্ষা করেছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'শরণার্থী শিবির ও চিকিৎসা কেন্দ্রে মৃত ও আহত অভিবাসীদের দেখা গেছে। এ ছাড়া অভিবাসী শিবিরের কাছেই কবরস্থানগুলো কীভাবে বাড়ছে, সৌদি আরবের সীমান্ত নিরাপত্তা অবকাঠামোর সম্প্রসারণ এবং সীমান্ত পারাপারের জন্য অভিবাসীরা বর্তমানে যেসব পথ ব্যবহার করছে তাও দেখা গেছে।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস -এর বিশ্লেষণ করা প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি থেকে ২৭ এপ্রিলের একটি স্যাটেলাইট ছবি সৌদি সীমান্তে ইয়েমেনের আল-রাকউয়ের কাছে অধিকার সংস্থাগুলোর চিহ্নিত করা একই তাঁবুর কাঠামো দেখায়। সীমান্তের ওপারে সৌদি আরবে দুই স্তরের বেড়া দেখা যায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আল-থাবিতে অভিবাসী শিবির হিসেবে চিহ্নিত করা স্থানকে স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা চিত্রগুলোতেও দেখা যেতে পারে, যা গ্রুপের বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। যে ক্যাম্পটি মূলত এপ্রিলের শুরুতে ভেঙে ফেলা হয়েছিল।
উত্তর-পশ্চিম ইয়েমেনের দুটি এলাকাতেই দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি। জাতিসংঘ বলেছে, হুথি-নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন অফিস ‘পরিকল্পিতভাবে অভিবাসীদের সৌদি আরবে সরাসরি পাঠানোর জন্য পাচারকারীদের সহযোগিতা করে’ এবং সপ্তাহে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার আয় করে।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে হুথিরা ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে রেখেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট হুথিদের রাজধানী থেকে উচ্ছেদ না করে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী এবং হুথিদের মধ্যে লড়াই মূলত বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ রিয়াদ যুদ্ধ শেষ করার উপায় খুঁজছে। এ ছাড়া যুদ্ধের বছরগুলোতে, হুথিরা এই পাহাড়ি অঞ্চলে সৌদি সীমান্ত জুড়ে একাধিক অনুপ্রবেশের দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফেরার সুযোগ দিতে সৌদির উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূতের অনুরোধ
ইথিওপিয়া থেকে আসা অভিবাসীরা সৌদি আরব ও ইয়েমেনে যুদ্ধের সময় নিজেদের আটক, নির্যাতিত এবং এমনকি হত্যার শিকার হয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, ইয়েমেন থেকে আসা অভিবাসীদের উপর সৌদি বাহিনী হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ বাড়ছে।
২০২২ সালের ৩ অক্টোবর জাতিসংঘের কাছ থেকে দেশটির কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে বলেছে, এর তদন্তকারীরা ‘সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী আন্তঃসীমান্ত এলাকায় কামানের গুলি এবং ছোট অস্ত্রের গোলাগুলির অভিযোগ পেয়েছে। এতে ৪৩০ জনের মৃত্যু ও ৬৫০ জন অভিবাসী আহত হয়েছে।’
জাতিসংঘের ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘যদি কোনো অভিবাসী আটক হন তাহলে তাদের প্রায়শই লাইনে দাঁড় করিয়ে এবং পায়ের পাশ দিয়ে গুলি করে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এমনকি বুলেটটি কতদূর যাবে তা দেখার জন্য। এ ছাড়াও তারা হাতে বা পায়ে গুলি করতে পছন্দ করে কি না তাও জিজ্ঞাসা করা হয়।’ ‘এই ধরনের আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা পালানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য 'মৃতের ভান করেন' বলে জানিয়েছেন।’
সৌদি আরব সীমান্তে ‘পরিকল্পিত’ হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করার অভিযোগ ‘স্পষ্টভাবে খণ্ডন’ করে মার্চ মাসে জেনেভায় জাতিসংঘে দেশটির মিশনে একটি চিঠি দিয়েছে। এ ছাড়াও চিঠিতে আরও বলেছে, জাতিসংঘ ‘সীমিত তথ্য’ সরবরাহ করেছে তাই এই ‘অভিযোগগুলো নিশ্চিত বা প্রমাণিত নয়।’
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, তার দেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক দিকেই এগোচ্ছে এবং উভয় পক্ষই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে এগিয়ে নেবে।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক শেষে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এ মন্তব্য করেন।
গত মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় ২ দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে সম্মত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে সরকারি সফরে আসা ইরানের শীর্ষ এই কূটনীতিক বলেন, সৌদি মন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক 'ফলপ্রসূ' হয়েছে।
তিনি বলেন, ইরান নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ২ দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাদের বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রযুক্তিগত ও নির্বাহী কমিটি গঠন করবে।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান নিশ্চিত করেছেন যে ইরানের প্রেসিডেন্ট শিগগিরই সৌদি আরব সফর করবেন।
তিনি ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০৩০ আয়োজনের জন্য সৌদি আরবের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে সৌদি মন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার।
তিনি বলেন, সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখবে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অগ্রগতিকে উৎসাহিত করবে।
সৌদি কর্মকর্তাও ইরানের প্রেসিডেন্টের নির্ধারিত সৌদি আরব সফরকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী বাসে বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলা, নিহত ২০
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী একটি বাসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির বিদ্রোহীরা।
বৃহস্পতিবার রাতের হামলাটি ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী (আইএস) সদস্যরা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গোষ্ঠীটি সিরিয়ায় ২০১৯ সালে পরাজিত হওয়ার পর থেকে দেশটির কিছু কিছু অংশে তাদের গুপ্তঘাতক দলগুলোর সাহায্যে মারাত্মক হামলা চালিয়ে আসছে।
ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ইরাকের সীমান্তবর্তী দেইর এল-জোর প্রদেশের মায়াদিনের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের কাছে একটি মরুভূমির রাস্তায় হামলায় ২৩ সিরীয় সেনা নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত
পূর্ব সিরিয়ার সংবাদ পরিবেশনকারী আরেকটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, ২০ জন সেনা নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, বৃহস্পতিবার রাতে এই হামলায় ‘অনেক সেনা নিহত ও আহত হয়েছে।’ তবে এটি বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি, বা হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কেও কিছু জানায়নি।
আইএস সিরিয়া এবং ইরাকের বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০১৪ সালের জুন মাসে খেলাফত ঘোষণা করেছিল। মাত্র তিন বছরের মধ্যে তাদের দখল করা অঞ্চলগুলো হারাতে থাকে এবং ২০১৭ সালে ইরাকে এবং এর দুই বছর পরে সিরিয়ায় পরাজিত হয় গোষ্ঠীটি।
এর আগে এক বছরের মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে আইএস’র গুপ্তঘাতক দল দেশটির কেন্দ্রীয় শহর সুখনার কাছে ছত্রাক সংগ্রহকারীদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ৫৩ জনকে হত্যা করেছিল। যাদের বেশির ভাগই শ্রমিক ছিল। এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে সিরিয়া সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েজন সদস্যও ছিল।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় বিমান হামলায় ২৯ তুর্কি সেনা নিহত
জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর ওপর গবেষণাকারী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চরমপন্থীদের হামলার নতুন ধারাটি সিরিয়া ও ইরাকের লাখ লাখ মানুষকে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে শাসনকারীদের একটি নতুন পুনরুত্থানের চিহ্নিত করে কিনা তা খুব দ্রুতই ঠিক করতে হবে।
গত সপ্তাহে, আইএস সিরিয়ায় তার স্বল্প পরিচিত নেতা আবু আল-হুসেইন আল-হুসেইনি আল-কুরায়শির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে। এই নেতা গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে চরমপন্থী সংগঠনটির প্রধান ছিলেন। মৃত্যুর আগে তার উত্তরাধিকারীর নামও ঘোষণা করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের হাতে এর প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হওয়ার পর চতুর্থ শীর্ষ নেতা হিসেবে তিনি নিহত হন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত ১৩
ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৬ তুর্কি সেনা নিহত : আঙ্কারা
উত্তর ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের বুধবার রাতের হামলায় অন্তত ছয় তুর্কি সেনা নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হতাহতের কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের শেয়ার করা একটি সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে জানায়, পরে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র চার সদস্যও মারা গেছেন।
একদিকে তুরস্ক এবং তুর্কি সমর্থিত গোষ্ঠী এবং অন্যদিকে ইরাক ও সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের মধ্যে মাসব্যাপী উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে সর্বশেষ সহিংসতা এটি।
তুরস্কের মধ্যে এক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়েছে যাওয়া পিকেকে এবং সিরিয়া ও ইরাকের মিত্র কুর্দি গোষ্ঠীগুলিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে বিবেচনা করে আঙ্কারা। তুরস্ক দাবি করে যে পিকেকে সদস্যরা নিয়মিতভাবে উত্তর ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়।
বাগদাদে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে বুধবার ইরাকের সুলায়মানিয়াহ প্রদেশে পিকেকের গাড়ি লক্ষ্য করে পৃথক দুটি তুর্কি ড্রোন হামলায় দুই বিদ্রোহী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
তুরস্ক ইরাকের একটি সীমান্ত অঞ্চলে সৈন্য মোতায়েন করে এবং সেখানে পিকেকে অবস্থানগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। গত বছর এটি উত্তর ইরাকে পিকেকে-এর বিরুদ্ধে ‘ক্ল-লক’ নামে একটি স্থল ও বিমান অভিযান শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবারের বিমান হামলা দুহোক শহরের উত্তরে অবস্থানে আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধাদের ওপর আইএসের হামলা
তুর্কি কর্নেল জেকি আকতুর্ক নিহত সেনাদের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের সৈন্যরা শহীদদের রক্ত মাটিতে ছাড়বে না।একজন সন্ত্রাসী অবশিষ্ট না থাকা পর্যন্ত একই দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনী তাদের লড়াই চালিয়ে যাবে।’
১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কে পিকেকে-এর বিদ্রোহীরা কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
ইরান ও বেলজিয়ামের বন্দী বিনিময়, ত্রাণকর্মী ও কূটনীতিকের মুক্তি
বেলজিয়াম এবং ইরান একটি বন্দী বিনিময় করেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। শুক্রবার ওমানের মধ্যস্থতায় ওমানে এই বন্দী বিনিময় হয়।
তেহরান ফ্রান্সে নির্বাসিতদের একটি সভায় বোমা হামলার চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত একজন ইরানী কূটনীতিকের বিনিময়ে একজন বেলজিয়ামের ত্রাণকর্মীকে মুক্তি দিয়েছে।
ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ঘোষণায় কোন বন্দীদের অদলবদল করা হচ্ছে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
পরে শুক্রবার, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে ত্রাণকর্মী অলিভিয়ের ভান্দেকাস্টিলেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পরে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নিশ্চিত করেছে যে কূটনীতিক আসাদুল্লাহ আসাদিকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে ‘যাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের দেশে ফেরার প্রস্তুতি হিসেবে আজ শুক্রবার তেহরান এবং ব্রাসেলস থেকে মাস্কাটে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০ মার্কিন নাগরিক ৪ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ইরানের
এতে আরও বলা হয়েছে যে ‘ওমানের সালতানাত ইরান ও বেলজিয়ান পক্ষের মধ্যে মাস্কাটে আলোচনায় বিরাজমান উচ্চ ইতিবাচক মনোভাব এবং এই মানবিক সমস্যা সমাধানে তাদের আগ্রহের প্রশংসা করেছে।’
ডি ক্রু জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ভ্যানডেকাস্টিলকে ওমানে বদলি করা হয়েছে। তাকে বেলজিয়ামের কূটনীতিক এবং সামরিক কর্মকর্তাদের একটি দল অভ্যর্থনা জানায়, তারপরে ডাক্তাররা তার শারীরিক পরীক্ষা করেন।
ডি ক্রু লিখেছেন ‘নির্দোষ অলিভিয়ার তেহরানের কারাগারে অসহনীয় পরিস্থিতিতে ৪৫৫ দিন কাটিয়েছেন।’ ‘বেলজিয়ামে অলিভিয়ার ভ্যানডেকাস্টিলের প্রত্যাবর্তন একটি স্বস্তি। তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের জন্য একটি স্বস্তি।’
ওমান দীর্ঘদিন ধরে ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে।
জানুয়ারিতে, ইরান একটি রুদ্ধদ্বার বিচারে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য দোষী সাব্যস্ত করার পরে ভ্যানডেকাস্টিলকে দীর্ঘ কারাদণ্ড এবং ৭৪টি বেত্রাঘাতের শাস্তি দেয়। পাশাপাশি তাকে এক মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইসলামিক রিপাবলিকের নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল এবং রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ করার পর, ভ্যানডেকাস্টিলকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরানে তার জিনিসপত্র প্যাক করার সময় গ্রেপ্তার করেছিল।
ইরানের কূটনীতিকের সঙ্গে অদলবদল সম্ভব করার জন্য, বেলজিয়াম মার্চ মাসে একটি বিতর্কিত বন্দী বিনিময় চুক্তি গ্রহণ করেছিল যা দেশের সাংবিধানিক আদালতে বহাল ছিল।
২০২১ সালে বেলজিয়াম আসাদিকে ফ্রান্সে নির্বাসিত ইরানী বিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ বোমা হামলার পরিকল্পনার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
প্রসিকিউটররা আসাদিকে এক দম্পতির সঙ্গে জড়িত করে যাদেরকে ২০১৮ সালে থামিয়ে বেলজিয়ামের পুলিশ ৫৫০ গ্রাম (এক দশমিক ২১ পাউন্ড) টিএটিপি বিস্ফোরক ও একটি ডেটোনেটর খুঁজে পেয়েছিল। তারা মুজাহেদিন-ই-খালকের ফ্রান্সের ভিলেপিন্টে এমইকে নামে পরিচিত একটি নির্বাসিত ইরানী বিরোধী দলের মিটিংয়ে হামলা করার চেষ্টা করছিল।
অন্যদিকে আসাদিকে একদিন পর জার্মানিতে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বেলজিয়ামে স্থানান্তর করা হয়। বেলজিয়ামের গোয়েন্দারা তাকে ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা হিসেবে শনাক্ত করেছে যিনি অস্ট্রিয়ায় ইরানি দূতাবাসে গোপনে কাজ করতেন। ইরান আসাদির জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
দুবাইয়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের মানবসৃষ্ট চাঁদ!
কে বলে আপনি চাঁদে যেতে পারবেন না? সম্প্রতি দুবাই মানবসৃষ্ট চাঁদ তৈরির জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যদিয়ে মানুষ চন্দ্রপৃষ্ঠে ভ্রমণের স্বর্গীয় অনুভূতি পৃথিবীতে বসেই উপভোগ করতে পারবে।
কানাডিয়ান উদ্যোক্তা মাইকেল হেন্ডারসন দুবাইতে ৩০ মিটার (১০০ ফুট) উঁচু একটি বিল্ডিংয়ের উপরে চাঁদের একটি ২৭৪-মিটার (৯০০ ফুট) প্রতিরূপ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন। আগে থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন এবং বিস্ময়কর বিভিন্ন স্থাপত্যকর্ম সমৃদ্ধ দুবাইকে এটি আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলবে।
মূলত চাঁদের মতো দেখতে একটি সুবিশাল রিসোর্ট তৈরি করা হচ্ছে দুবাইয়ের একটি অভিজাত এলাকায়। দূর থেকে চাঁদ দেখতে যেমন হেন্ডারসনের ‘দুবাই মুন’ ঠিক তেমনি দেখাবে।
হেন্ডারসন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় 'ব্র্যান্ড' আমাদের, স্বর্গীয় অবয়ব হিসেবে চাঁদ নিজেই নিজের ব্র্যান্ড। ‘আট বিলিয়ন মানুষ আমাদের ব্র্যান্ড চেনে। তবে আমরা এখনও রিসোর্টের কাজ শুরু করিনি।’
পৃথিবীর সব মানুষই এটি পছন্দ করবে। এখানে হাঁটলে হবে যেন চাঁদের বুকে হাঁটছেন।
হেন্ডারসনের পরিকল্পনা অনুযাযী গোলাকার কাঠামোর ভিতরে একটি রিসোর্ট থাকবে। যাতে একটি চার হাজার রুমের হোটেল, ১০ হাজার মানুষ বসার মতো হলরুম এবং 'লুনার কলোনি'র মতো বিস্তৃত এলাকা থাকবে। এখানে হাঁটলে হবে যেন চাঁদের বুকে হাঁটছেন। রাতে চাঁদের মতোই জ্বলজ্বল করবে এই রিসোর্ট।
হেন্ডারসন মে মাসের শুরুতে দুবাইয়ে অ্যারাবিয়ান ট্রাভেল মার্কেটে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
ইতোমধ্যেই শিল্পীদের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে মুন ওয়ার্ল্ড রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন ৮২৮ মিটার (দুই হাজার ৭১০ ফুট) বুর্জ খলিফার মতো এটিও প্রচণ্ড ব্যয়বহুল একটি প্রকল্প।
অনেকে এটিকে মানবসৃষ্ট দুবাই পার্ল এর মতো ব্যর্থ প্রকল্প বলে অভিহিত করেছেন। দুবাই পার্ল বিশ্বের সবথেকে বড় মানুষ নির্মিত দ্বীপ, যেটিকে ছোট ছোট দ্বীপ বানিয়ে পাম গাছের মতো সাজানো হয়েছে। দুবাই পার্ল দ্বীপটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
দ্য পার্ল ও পাম জেবেল আলি দুবাইয়ের সবচেয়ে ‘ব্যয়বহুল’ দুটি প্রকল্প। যেগুলো দেশটিতে ২০০৯ সাল থেকে আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, যা শেখদের শাসন ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে এবং দুবাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিকে ২০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: দুবাই এক্সপো ২০২০ শেষে জেফারসনের কোরআন যুক্তরাষ্ট্রের পথে
প্রায় ১৫ বছর পরে, দুবাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
দুবাইয়ের বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট এজেন্সি অলসপ অ্যান্ড অলসপ এর সিইও লুইস অলসপ বলেছেন, ‘২০০৯ সালের তুলনায় দুবাই সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতিতে রয়েছে।’
চাঁদ প্রকল্পে একটি সম্ভাব্য ক্যাসিনোর জন্যও স্থান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অন্যান্য আরব উপদ্বীপের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতেও জুয়া নিষিদ্ধ। তবে সিজার প্যালেসের মতো বড় ব্র্যান্ডগুলো ইতোমধ্যেই দুবাইতে আছে বা ভবিষ্যতে দুবাইতে ঘাটি গাড়বে বলে শোনা যায়।
ওয়েন রিসোর্ট ২০২৭ সালে দুবাইয়ের উত্তরে রাস আল-খাইমাহতে তিন দশমকি ৯ ডলার ব্যয়ে রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছে, যাতে জুয়া খেলার ব্যবস্থা থাকবে। যার অর্থ দেশটির আইনে পরিবর্তন আসতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার ডেভিডসন বলেছেন,অন্যান্য হাই-প্রোফাইল চোখ ধাঁধানো আশ্চর্যের মতো দুবাই মুন দুবাইয়ের অভিজাত শাসকদের চিত্তবিনোদনে ভূমিকা রাখবে।
ক্রিস্টোফার ডেভিডসন ‘শেখ থেকে সুলতানবাদ’ নামে সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মহাকাশ কেন্দ্রও দুবাইতে অবস্থিত। যা মঙ্গল গ্রহে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল এবং চাঁদে রোভার স্থাপনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।
ডেভিডসন বলেন, ‘তাদেরকে যদিও একটি অগণতান্ত্রিক অভিজাত বলা যায়, তবে তারা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাদের হাতে নেওয়া মেগাপ্রকল্পগুলো দেখে তা বোঝা যায়।’
আরও পড়ুন: দুবাইয়ে চালকবিহীন বৈদ্যুতিক উড়ুক্কু গাড়ি চালাল চীনা প্রতিষ্ঠান
ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও ইরান গত বছরের সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় মারাত্মক সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত তিন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। শুক্রবার অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে দেশটি।
মিজান নামের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে অভিযুক্ত মজিদ কাজেমি, সালেহ মিরহাশেমি ও সাঈদ ইয়াঝুবির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা ঘোষণা করেছে, তবে কীভাবে কার্যকর করেছে তা জানায়নি।
কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালে গত নভেম্বরে তারা ইস্ফাহানে এক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আধাসামরিক বাসিজ গ্রুপের দুই সদস্যকে হত্যা করেছিল।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, ওই তিনজনকে নির্যাতন করা হয়েছিল এবং যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে তাদেরকে টেলিভিশনে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।
গত সেপ্টেম্বরে ২২ বছর বয়সী নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ‘কঠোর ইসলামিক ড্রেস কোড’ লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ আটক করেছিল।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের অভিযোগে আরেক ইরানী বন্দীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরানে শাসনকারী ধর্মতন্ত্রকে উৎখাত করার দাবিতে দ্রুত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিক্ষোভ অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে,যদিও এখনও বিক্ষিপ্তভাবে সরকারবিরোধী কার্যক্রম চালু রয়েছে।
এরমধ্যে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নারীর বাধ্যতামূলক ইসলামিক হেডস্কার্ফ (হিজাব) পরতে অস্বীকার করার দাবি অন্যতম।
বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরান মোট সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছে যে তারা (মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা সাতজন) বাদেও আরও কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গোপন রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা আদালতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
শুক্রবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া তিনজনের বিষয়ে ইরানের নিউইয়র্কভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের নির্বাহী পরিচালক হাদি ঘাইমি বলেন, ‘প্রসিকিউশন জোরপূর্বক 'স্বীকারোক্তি'র ওপর নির্ভর করে তাদের শাস্তির রায় ঘোষণা করে, যেগুলো ছিল অস্পষ্ট। যাতে বোঝা যায় এটি ছিল একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।’
সংস্থাটি বলেছে যে কাজেমি তার একজন আত্মীয়কে ফোন করে বলেছিল যে কর্তৃপক্ষ তার পায়ে চাবুক দিয়ে ও একটি স্টান বন্দুক ব্যবহার করে নির্যাতন করেছে এবং তাকে যৌন নিপীড়নের হুমকি দিয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও মামলাগুলোর সমালোচনা করেছে।
ইরানের জন্য নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট ম্যালি তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের বিরোধীতা করে এটিকে ‘সমস্ত ইরানিদের মানবাধিকার ও মৌলিক মর্যাদার প্রতি অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ইরানে অস্কারজয়ী সিনেমার অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার
তিনি বলেন, বোঝা যাচ্ছে যে সরকার ‘বিক্ষোভ থেকে কিছুই শিখেনি।’
ম্যালি বৃহস্পতিবার টুইট করে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জনগণের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। আমরা ইরানি শাসকদের বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরতে এবং মোকাবিলা করতে আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছি।’
কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্যসহ ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১৯ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল; যদিও অনেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইরান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফাঁসি কার্যকরকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। ২০২২ সালে কমপক্ষে ৫৮২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল, আগের বছরে সেই সংখ্যাটি ছিল ৩৩৩ জন।
দেশটিতে মাদকদ্রব্য আইন লঙ্ঘন,‘আল্লাহর সঙ্গে বিরোধীতা’ এবং ‘পৃথিবীতে দুর্নীতি ছড়িয়ে দেওয়ার’ অস্পষ্ট কিছু অভিযোগসহ নানা অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বৃদ্ধির সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও মানবাধিকার কর্মীরা।
আরও পড়ুন: ইরান ইস্যুতে জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান বাংলাদেশের সারা হোসেন
গাজায় বিমান হামলায় আরেক সশস্ত্র কমান্ডার নিহত হয়েছে: ইসরায়েল
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার সশস্ত্র সংগঠনের চতুর্থ কমান্ডার নিহত হয়েছে। যুদ্ধের সর্বশেষ বিস্ফোরণ থেকে নিহতের সংখ্যা ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করার জন্য মিশরীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার খবরের মধ্যে ইসরায়েল আরও রকেট হামলার জন্য প্রস্তুত হয়েছে।
এটি কয়েক মাস ধরে গাজায় ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে লড়াইয়ের সবচেয়ে খারাপ লড়াই হয়েছে এবং নিহতদের মধ্যে মহিলা ও শিশুও রয়েছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে গত বছর ধরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবারের প্রথম দিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইসলামিক জিহাদ নামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালায়। এবং বলেছিল যে গোষ্ঠীর রকেট উৎক্ষেপণ বাহিনীর দায়িত্বে থাকা আলী গালি নামে একজন সিনিয়র কমান্ডার তার অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় নিহত হয়েছেন।
সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি ইসরায়েলি আর্মি রেডিওকে বলেছেন যে হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর আরও দুই সদস্য নিহত হয়েছে। যদিও কোনো গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সদস্য বলে দাবি করেনি এবং ভবনের বাকি অংশ অক্ষত রয়েছে।
হাগারি বলেন, ‘অ্যাপার্টমেন্টটি খুব সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।’ ‘আমি আশা করি হামলাটি ইসলামিক জিহাদের রকেটের ক্ষমতা হ্রাস, এবং ব্যাঘাত ঘটাবে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় কাতাররের নির্মিত একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের একটি ভবনের উপরের তলাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে কমান্ডারসহ অন্তত দুইজন নিহত হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২৫ জন নিহত হয়েছে।
ইসলামিক জিহাদ বলেছে যে গালি তার রকেট স্কোয়াডের একজন কমান্ডার এবং তার সশস্ত্র গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থার সদস্য ছিলেন।গোষ্ঠীটি বলেছে যে ইসরায়েল তার যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা বন্ধ করতে সম্মত হলেই কেবল যুদ্ধবিরতি করবে।
বুধবার তীব্র লড়াইয়ের সময়, যখন দক্ষিণ ও মধ্য ইসরায়েলে রকেট বৃষ্টিপাত হয় এবং গাজায় বিমান হামলা চলানো হয়।
এমতাবস্থায় রাষ্ট্র-চালিত একটি মিশরীয় টিভি স্টেশন ঘোষণা করে যে মিশর,উভয় পক্ষের মধ্যে ঘন ঘন মধ্যস্থতাকারী হিসাবে একটি যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত সহিংসতা অব্যাহত থাকায় দেখা যাচ্ছে কোনো পক্ষই পিছু হটছে না।ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে প্রায় ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে তাদের হামলায় তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছে এবং এটি বলেছে যে এটি নির্ভুল হামলা। তবে তাদের মধ্যে একটি ৪ বছর বয়সী শিশুও নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় হামাসের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা
সামরিক মুখপাত্র হাগারি, আর্মি রেডিওকে বলেছেন যে এবারের লড়াইয়ের সময় নিক্ষেপ করা রকেটগুলোর এক চতুর্থাংশ গাজায় পড়ে, যার মধ্যে একটি ১০ বছর বয়সী মেয়ে, দুটি ১৬ বছর বয়সী এবং একজন ৫১ বছর বয়সী বৃদ্ধলোক সহ কমপক্ষে চারজন নিহত হয়। তবে তাদের সেই দাবি তাৎক্ষণিকভাবে স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
বুধবার একটি টেলিভিশন প্রাইম-টাইম ভাষণে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন যে ইসরায়েল সশস্ত্র গোষ্ঠীদের ওপর কঠোর আঘাত করেছে। তবে তিনি সতর্ক করেছিলেন: ‘এই পর্বই শেষ নয়।’
ইসরায়েল সিদ্ধান্ত নেবে কখন শান্ত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসীদের এবং যারা তাদের পাঠায় তাদের বলছি: আমরা আপনাদেরকে সর্বত্র চোখ রাখছি। আপনি লুকাতে পারবেন না, এবং আমরা আপনাকে আক্রমণ করার জন্য স্থান এবং সময় বেছে নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত, ওআইসির জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশের তীব্র নিন্দামঙ্গলবার প্রাথমিক ইসরায়েলি বিমান হামলা যা গুলি বিনিময় শুরু করে তাতে ইসলামিক জিহাদের তিনজন সিনিয়র সদস্য তাদের বাড়িতে এবং কমপক্ষে ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। নিহতদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে তাদের আক্রমণগুলো উপকূলীয় ছিটমহলে সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের অবকাঠামোর উপর কেন্দ্রীভূত ছিল এবং এটি যে কোনও বেসামরিক মৃত্যুর তদন্ত করবে।
এই হামলাগুলো বুধবার রকেটের আগুনের বিস্ফোরণ ঘটায় যা দক্ষিণ এবং মধ্য ইসরায়েল জুড়ে বিমান হামলার সাইরেন শুরু করে। বিল্ডিংগুলোতে রকেটের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে যেগুলোতে আঘাত হেনেছিল সেগুলো খালি ছিল, কারণ বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েলের দিকে ৫০০টিরও বেশি রকেট ছোড়া হয়েছে। এতে বলা হয়, বেশিরভাগই ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিরোধ করেছিল বা খোলা জায়গায় পড়েছিল।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৯ জন নিহত
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৯ জন নিহত
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) সদস্যদের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় মঙ্গলবার ভোরে কমপক্ষে নয়জন নিহত এবং ১০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাতটি লাশ গাজা শহরের শিফা হাসপাতালে এবং বাকি দুটি লাশ দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের একটি হাসপাতালে আনা হয়েছে।
এক প্রেস বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার গাজা সিটি এবং রাফাহ শহরের বেশ কয়েকটি ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ ১০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।
পিআইজে সূত্র সিনহুয়াকে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সংস্থার মুখপাত্র তারেক ইজেল দেন, তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান এবং আরও দুই সিনিয়র সামরিক নেতা রয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সূত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি ড্রোনগুলো মঙ্গলবার ভোরে গাজা শহর এবং দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের বেশ কয়েকটি ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন: পশ্চিম তীরে কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইল
তারা বলেছিল যে প্রথম বিল্ডিংটি ছিল গাজা শহরের আল-রিমাল পাড়ার ‘দাউদ’ টাওয়ারের একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট এবং অন্য টার্গেট ছিল রাফাহ শহরের একটি ভবন।
সূত্র জানায়, পিআইজে জঙ্গিরা ইসরায়েলি ড্রোনের ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা বোমা বিস্ফোরণ করা দুটি ভবনে ছিল।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও বিস্তারিত প্রকাশ না করে গাজা উপত্যকায় ইসলামিক জিহাদের লক্ষ্যবস্তুতে বোমাবর্ষণ করছে।
অন্যদিকে, গাজা উপত্যকার কাছাকাছি বসবাসকারী ইসরায়েলি বাসিন্দাদের গাজা থেকে রকেট হামলার ভয়ে ৪০ কিলোমিটার দূরে বোমা আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডার সিরিয়ায় নিহত
গাজায় হামাসের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা
ফিলিস্তিন: পশ্চিম তীরে কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইল
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে শুক্রবার ইসরাইলি বাহিনী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেথলেহেম শহরের কাছে একটি গ্রামে ইসরাইলি বাহিনী এবং পাথর নিক্ষেপকারী ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলি চালানো হয়।
মন্ত্রণালয় নিহত কিশোরটিকে মোস্তফা সাবাহ (১৬) হিসেবে শনাক্ত করেছে এবং তার বুকে গুলি করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে জনতা গুলি চালানোর পর কিশোরটির লাশ বহন করছে এবং আরবীতে ‘আল্লাহু আকবার’ বা ‘আল্লাহ মহান’ বলে চিৎকার করছে।
ইসরাইল-ফিলিস্তিনি লড়াই বছরের পর বছর অদৃশ্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডার সিরিয়ায় নিহত
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে,এর আগে শুক্রবার সেনাবাহিনী পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়ে ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই যুবক আহত হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের একটি তথ্য অনুসারে ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে ৯৭ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের অন্তত অর্ধেক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। সে সময় ইসরাইলিদের ওপর ফিলিস্তিনি হামলায় ১৯ জন নিহত হয়।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরাইল গাজা উপত্যাকা এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর দখল করে। ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ওই জমিগুলো চায়।
আরও পড়ুন: পাসওভারেও থেমে নেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ