বিজ্ঞান-এবং-উদ্ভাবন
নিউরালিংক: ইলন মাস্কের ব্রেইন-চিপ কোম্পানির মানবদেহে পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন
ইলন মাস্কের ব্রেইন-চিপ ফার্ম জানিয়েছে, তারা মানুষের ওপর প্রথম পরীক্ষা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে।
নিউরালিংক ইমপ্লান্ট কোম্পানি কম্পিউটারের সঙ্গে মস্তিষ্ককে সংযুক্ত করে মানুষের দৃষ্টি ও গতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করতে চায়।
এতে বলা হয়, অংশগ্রহণকারীদের নিয়োগ শুরু করার তাৎক্ষণিক কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। পরীক্ষা শুরু করার জন্য ইলন মাস্কের পূর্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হয়েছিল।
এফডিএ জানিয়েছে, তারা নিউরালিংকের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটির বিকল্প 'ট্রুথজিপিটি' তৈরির পরিকল্পনা ইলন মাস্কের
গত মার্চে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এফডিএ'র অনুমোদন পাওয়ার জন্য নিউরালিংকের একটি প্রস্তাব নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিউরালিংক পক্ষাঘাত ও অন্ধত্বের মতো অবস্থার চিকিৎসার জন্য এবং কিছু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কম্পিউটার ও মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সহায়তা করার জন্য মাইক্রো চিপগুলো ব্যবহার করার আশা করে।
বানরের ওপর পরীক্ষা করা চিপগুলো মস্তিষ্কে উৎপাদিত সংকেত ব্যাখ্যা করতে এবং ব্লুটুথের মাধ্যমে ডিভাইসে তথ্য পাঠাতে ডিজাইন করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে নিউরালিংকের মস্তিষ্কের ইমপ্লান্ট ব্যাপকভাবে উপলব্ধ হতে হলে প্রযুক্তিগত ও নৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে ব্যাপক পরীক্ষার প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: টেসলার রোবট ‘অপটিমাস’ দেখালেন ইলন মাস্ক
সমুদ্র অর্থনীতিতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর এখনই জোর দেওয়া উচিত
সমুদ্র অর্থনীতিতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর এখনই জোর দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ড. সুব্রত সরকার।
তিনি জানান, বর্তমান বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে। ২০৩৭ সাল নাগাদ বিশ্বে জনসংখ্যা হবে ৯ বিলিয়ন। আর এই বহুল জনসংখ্যার খাদ্য ও কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের সমুদ্রের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হবে। আমরা যদি প্রতিনিয়ত এই সমুদ্র সম্পদ নিতেই থাকি। তাহলে একসময় আমাদের এই সম্পদের মজুদ ফুরিয়ে যাবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমুদ্র অর্থনীতির গুরুত্ব ও করণীয় নিয়ে বার্তাসংস্থা ইউএনবির সঙ্গে কথা বলেন ড. সুব্রত সরকার।
তিনি বলেন, সমুদ্র সম্পদকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা রাখতে চাই, তাহলে আমাদের ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে হবে। সমুদ্র অর্থনীতিতে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। এই উপমহাদেশে সমুদ্রের গুরুত্ব পেয়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সমুদ্র পথে আসার প্রাক্কালে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সমুদ্রের বিষয়টি মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানা জয়ের পর গুরুত্ব পায়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
বর্তমানে সরকার ব্লু ইকোনোমি এর ওপর জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশে ব্লু ইকোনোমির ক্ষেত্রে ফিসারিজ সার্ভে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অতীতে এই ফিসারিজ সার্ভের জটিলতা থাকলেও বর্তমানে সরকার ফিসারিজ সার্ভে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া সরকার এখন সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে মৎস্য চাষে গুরুত্ব আরোপ করেছে। বর্তমানে আমাদের মৎস্য আহরণ উপকূলের ৪০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। ৪০ মিটারের বাইরেও মৎস্য আহরণে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা টুনা মাছ সম্পর্কে অনেকেই জানি। আমাদের সাগর অংশে টুনা মাছ ওইভাবে ধরা পড়েনি। সরকারের পদক্ষেপ অনুযায়ী সরকারিভাবে টুনা মাছ ধরা হবে। আর অন্যরা যাতে টুনা মাছ ধরার জন্য আগ্রহী হয় সরকার সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাইভেট সেক্টর যেনো সমুদ্র অর্থনীতির অংশ হিসেবে আনা যায় সরকার এজন্য কাজ করছে।
সুব্রত সরকার জানান, সমুদ্র অর্থনীতিতে বর্তমানে সি-উইড বিশাল একটি অংশ। বাংলাদেশে বর্তমানে সি-উইড চাষের সম্ভাবনার ক্ষেত্রে বড় পরিসরে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক আকারে এই সমুদ্রসম্পদ সি-উইড উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি জানান, সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তিনটি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া এবং একটি মেরিন রিজার্ভ ঘোষণা করেছে। মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া ছাড়াও সমুদ্র অর্থনীতিতে ট্যুরিজমের চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই বৃদ্ধির বিষয়টি লক্ষণীয়। সরকারের এইদিকে বিশেষ নজর দেখা যাচ্ছে।
সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনার কথা জানিয়ে সুব্রত সরকার বলেন, চলতি বছরের ১২ মার্চ থেকে ২৩মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সমুদ্র বিষয়ক সংস্থা পোগো এবং শাবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে জাপানভিত্তিক সংস্থা নিপ্পন ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায়, জাতিসংঘের সমুদ্র দশক (২০২১-২০৩০) প্রোগ্রাম ও ভারতের জাতীয় সমুদ্র তথ্যসেবা কেন্দ্রের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৭টি দেশ হতে ১৫০টি এর মধ্যে টপ ২২জনকে ট্রেনিং প্রদান করা হয়। যেখানে সমুদ্র অর্থনীতিতে সমুদ্রসম্পদের
ব্যবস্থাপনার দিকগুলোকে মূল বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হয়। সমুদ্র সম্পদের সঠিক ব্যবহার, সুনীল অর্থনীতির ক্রমবিকাশ, সমুদ্র ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া এখন জরুরি। সমুদ্রবিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা এর যেমন জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান কর্মতৎপরতায় সমুদ্র অর্থনীতি আরও বেশি এগিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন
রাশিয়ার থ্রিডি-প্রিন্টেড রকেট উৎক্ষেপণের পরপরই ব্যর্থ!
প্রায় সম্পূর্ণরূপে থ্রিডি-প্রিন্টেড যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি রকেট টেরান-১ বুধবার রাতে উৎক্ষেপণ করা হয়। তবে তিনবারের চেষ্টায় উৎক্ষেপণ সফল হলেও কক্ষপথে পৌঁছাতে পারেনি রকেটটি।
রকেটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিলেটিভিটি স্পেস জানিয়েছে, ছয় বছর আগে তৈরি কোম্পানির প্রথম মেটাল থ্রিডি প্রিন্ট ছাড়া পরীক্ষামূলক এই ফ্লাইটে আর কিছুই ছিল না।
উদ্ভাবনকারীরা রকেটটিকে ১২৫ মাইল উঁচু কক্ষপথে স্থাপন করতে চেয়েছিল, তবে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পৌঁছানোর আগেই রকেটের ওপরের অংশে আগুন ধরে যায়।
জানা যায়, কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে উৎক্ষেপণ করার পর প্রথম ধাপে রকেটটি ঠিকঠাকই কাজ করেছে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী আলাদা হয়ে গেছে। কিন্তু এরপরই ওপরের অংশে আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায় এবং তারপর বন্ধ হয়ে আটলান্টিকে ধসে পড়ে।
আরও পড়ুন: ‘ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি’ নিয়ন্ত্রণে ইমিউন সিস্টেমকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে: গবেষণা
এ বিষয়ে রিলেটিভিটি স্পেসের টেস্ট ও লঞ্চ টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার আরওয়া তিজানি ক্যালি বলেন, ‘কেউ কখনো থ্রিডি প্রিন্টেড রকেট পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানোর চেষ্টা করেনি। আমরা হয়তো পুরোপুরি সফল হইনি, তবে প্রমাণ করতে পেরেছি যে থ্রিডি প্রিন্টেড রকেট ওড়ানো সম্ভব।’
১১০-ফুট (৩৩-মিটার) রকেটের বেশিরভাগ ইঞ্জিনসহ, ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে কোম্পানির বিশাল থ্রিডি প্রিন্টার থেকে বানানো হয়েছে।
রিলেটিভিটি স্পেস বলেছে যে থ্রিডি-প্রিন্টেড ধাতব অংশগুলো দিয়ে টেরান-১ রকেটের ৮৫ শতাংশ তৈরি হয়েছে। রকেটের বড় সংস্করণে আরও বেশি কিছু থাকবে এবং একাধিক ফ্লাইটের জন্য বারবার ব্যবহার করা হবে।
অন্যান্য মহাকাশ সংস্থাগুলোও থ্রিডি-প্রিন্টিংয়ের ওপর নির্ভর করে, তবে টুকরোগুলো তাদের রকেটের খুব ছোট একটি অংশ তৈরি করে।
২০১৫ সালে দুজন তরুণ মহাকাশ প্রকৌশলী রিলেটিভিটি স্পেস তৈরি করে।
আরও পড়ুন: মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে: নাসা
নাসার স্পেসএক্স মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরছেন
‘ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি’ নিয়ন্ত্রণে ইমিউন সিস্টেমকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে: গবেষণা
দীর্ঘদিন ধরে গবেষকরা ক্যান্সার ও প্রদাহজনিত ব্যাধির মতো বিভিন্ন অসুস্থতার সময় মানবদেহে সংঘটিত প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য কাজ করেছেন।
ইউনিভার্সিটি অব মিসৌরি স্কুল অব মেডিসিনের একজন সহযোগী অধ্যাপক এমা টেক্সেইরো ও তার গ্রুপ সম্প্রতি কীভাবে ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি তৈরি ও বজায় রাখা হয় এবং ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি গঠনে প্রদাহ যে ভূমিকা পালন করে তা পরীক্ষা করেছেন। ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা সংক্রমণের বা টিকা দেয়ার পরে ধরে রাখে এবং পুনরায় সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ইউনিভার্সিটি অব মিসৌরি ক্যাম্পাসে নেক্সটজেন প্রিসিশন হেলথ ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা টেক্সেইরো বলেন, ‘আমাদের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। কিন্তু এটি একটি খুব জটিল সিস্টেম যেখানে অনেক মিথস্ক্রিয়া ঘটছে এবং যদি বিষয়গুলো অনিয়ন্ত্রিত হয় তবে এটি আসলে রোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করতে পারে।’তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং, আমাদের গবেষণাটি আরও ভালভাবে বোঝার ক্ষেত্রে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে যে বিশেষত টি-কোষগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করে কীভাবে এই রোগ প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়াগুলো তৈরি ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। টি-কোষ শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার আক্রমণে ভূমিকা রাখতে পারে।’
আরও পড়ুন: ১১০ মিলিয়ন বছর বয়সী ডাইনোসরের জীবাশ্ম বলবে তাদের গল্প!
একটি মাউস মডেল ব্যবহার করে গবেষকরা প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়াগুলির বিভিন্ন স্ট্রেন তৈরি করেছেন যা টি-কোষের ভেতরে ইন্টারফেরন জিন বা স্টিং বা প্রোটিনের উদ্দীপকের মাধ্যমে প্রদাহের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। যদিও অনেক বিজ্ঞানী অনুমান করেছিলেন যে প্রদাহের এই বৃদ্ধির ফলে একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া হবে এবং তাই আরও শক্তিশালী ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি দেখা যায়, তবে টেক্সেইরো ও তার দল এর বিপরীত বিষয় খুঁজে পেয়েছে। আর তা হল- ইমিউনোলজিক্যাল মেমরির কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
টেক্সেইরো বলেন, ‘এই ক্ষেত্রের কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন বা ইমিউনোথেরাপির উন্নতির জন্য ‘স্টিং’ অ্যাক্টিভেশন লক্ষ্য করা যেতে পারে, তাই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি বা ক্ষতিকারক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা কমাতে খেলার সময় সমস্ত মিথস্ক্রিয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: বাঘ তাড়াবে আলোকরশ্মি!
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আরও ভালভাবে বুঝতে চাই কীভাবে ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়; যার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন বা ইমিউনোথেরাপির প্রভাব রয়েছে, যা টি-কোষকে এমনভাবে চালিত করে যে এর থেকে আশা করি- দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। তাই আমাদের শরীর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগ থেকে রক্ষা পায়।’
যদিও তার গবেষণা প্রকৃতিতে মৌলিক, টেক্সেইরোর অনুসন্ধানগুলো ক্যান্সার, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), শৈশবকালে সূচনার সঙ্গে স্টিং-সম্পর্কিত ভাস্কুলোপ্যাথি (এসএভিআই), হাঁপানি এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনক উপসর্গের রোগীদের সাহায্য করার জন্য আরও কার্যকর চিকিৎসার বিকাশে অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জ্ঞানের অন্বেষণই একজন বিজ্ঞানী হিসেবে আমার কৌতূহলকে তাড়িত করে। সঠিক দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই গবেষণাটি ছোট একটি পদক্ষেপ এবং আমি এর অংশ হতে পেরে গর্বিত৷’
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই জানিয়েছে, সম্প্রতি বিষয়টি সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসে (পিএনএএস) প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাসার স্পেসএক্স মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরছেন
১১০ মিলিয়ন বছর বয়সী ডাইনোসরের জীবাশ্ম বলবে তাদের গল্প!
কিছু বছর আগের কথা। কানাডার পশ্চিমাংশে এক খনিতে অন্যান্য দিনের মতোই খনন কাজ চলছিল। একদল খনি শ্রমিক এমন কিছু একটার সঙ্গে হোঁচট খেয়ে বসেন যা মোটামুটি সাম্প্রতিক স্মরণকালের সেরা আবিষ্কার হয়ে দাঁড়ায়। আর হবে না-ই বা কেন! বস্তুটি এ যাবৎকালের সবচেয়ে অক্ষত ডাইনোসরের জীবাশ্ম।
কানাডার আলবার্টা থেকে ১৭ মাইল উত্তরে একটি খনি প্রকল্পে পাওয়া যায় ‘নোডোসর’। এক সময় পৃথিবীর বুকে বিচরণ করা এই তৃণভোজীর জীবাশ্ম ১৮ ফুট লম্বা এবং ওজন প্রায় তিন হাজার পাউন্ড। নিশ্চয় বিস্ময়কর!
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করলো ডাইনোসর!
বাঘ তাড়াবে আলোকরশ্মি!
দীর্ঘদিন ধরেই বাঘ আতঙ্কে রয়েছে সুরন্দরবন সংলগ্ন গ্রামবাসী। সুন্দরবন ছেড়ে বিশেষ করে রাতে মাঝে মধ্যেই লোকালয়ে ঢুকে একের পর এক গ্রাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। হামলা চালাচ্ছে গ্রামবাসী ও গবাদী পশুর ওপর। গ্রামবাসীর পাল্টা হামলায় বাঘও প্রাণ হারাচ্ছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামে বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। এ অবস্থায় বাগেরহাটের একদল ক্ষুদে বিজ্ঞানী বাঘসহ যে কোন বন্যপ্রাণী সনাক্তকরণের জন্য এক ধরনের আলোক রশ্মি উদ্ভাবন করেছে। রাতে বাঘ বাড়িতে ঢুকলে ইনফ্রারেড আলোর রশ্মির মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে এবং এক ধরনের শব্দ বেজে উঠবে। আবার রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে উচ্চক্ষমতা সম্পূর্ণ আলো এবং শব্দ সৃষ্টি করে ওই বাঘকে লোকালয় থেকে ফিরিয়ে দেয়া যাবে। বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কালিদাস বড়াল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের পাঁচ ক্ষুদে বিজ্ঞানী এই উদ্ভাবন করেছে। বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম চত্বরে দুই দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় তারা এই উদ্ভাবনী প্রদর্শন করেছে। এমন উদ্ভাবনী দেখতে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা বয়সের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ভিড় লেগে ছিল।
আরও পড়ুন: নাসার স্পেসএক্স মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরছেন
ক্ষুদে ওই বিজ্ঞানীরা বলছে, বাঘ রক্ষা এবং একইসঙ্গে গ্রামবাসীকে বন্যপ্রাণী থেকে রক্ষা করতে তাদের এই উদ্ভাবন। এই আলোক রশ্মি বন্যপ্রাণী বা পরিবেশের কোন ধরনের ক্ষতি করবে না বলেও তারা জানায়।
সুন্দরবন বিভাগ বলছে, ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের বাঘ শনাক্তকরণের এই উদ্ভাবন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চাওয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা মতামত দিলে বাস্তবায়নের বিষয় পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।
রাতে বাঘসহ বন্য প্রাণী সনাক্তকরণের উদ্ভাবক এই পাঁচ ক্ষুদে বিজ্ঞানী হচ্ছে- মো. ফারদ্বীন খান, প্রিতিরাজ বিশ্বাস, রজত মন্ডল, সুদিপ্ত মন্ডল ও ইব্রাহিম। এরা সবাই জেলার চিতলমারী উপজেলার কালিদাস বড়াল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
ক্ষুদে বিজ্ঞানী মো. ফারদ্বীন খান জানায়, বিভিন্ন সময় বাঘ সুন্দরবন ছেড়ে বনসংলগ্ন লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বাঘ গ্রামবাসীর ওপর হামলা করে। তেমনি গ্রামবাসীর হামলায় বাঘ নিহত হচ্ছে। গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এমন সংবাদ দেখার পর বাঘ এবং গ্রামবাসীকে রক্ষার জন্য সে ভাবতে থাকে। এরপর তারা পাঁচ সহপাঠী মিলে নানা চেষ্টা করে বাঘসহ সব ধরনের বন্যপ্রাণী সনাক্তকরণের জন্য এই আলোক রশ্মি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে। বন্যপ্রাণী থেকে নিরাপত্তার জন্য তারা সেমি স্মার্ট হাউজ তৈরি করে প্রদর্শন করেছে। তারা উদ্ভাবন করে দেখিয়ে দিয়েছে যে, রাতে বাঘ বা যে কোন ধরনে বণ্যপ্রাণী বাড়িতে প্রবেশ করলে ইনফ্রারেড আলোর রশ্মির মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে এবং একধরনের শব্দ বেজে উঠবে। আবার রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে উচ্চক্ষমতা সম্পূর্ণ আলো এবং শব্দ সৃষ্টি করে ওই বাঘকে লোকালয় থেকে ফিরিয়ে দেয়া যাবে।
মো. ফারদ্বীন খানের তথ্য মতে, এই উদ্ভাবনের জন্য তারা যা যা ব্যবহার করছে তার মধ্যে রয়েছে- একটি এলইডি আর সেন্সর, একটি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি, ১০০ কে রেজিস্টার, একটি বার্জার (শব্দ তৈরির জন্য), লেজার লাইট, ব্যাটারি চার্জের বিদ্যুৎ অথবা সৌর বিদ্যুৎ এবং তিন ইঞ্চি ব্যাসার্ধের চারটি গোলীয় দর্পণ (কাঁচ)। এই সব উপাদান ব্যবহার করে লেজারের মাধ্যমে আলোক রশ্মি তৈরি করেছে তারা।
এই উদ্ভাবনী প্রদর্শন করতে তাদের সর্বমোট ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৬শ’ টাকা। বনসংলগ্ন গ্রামে অল্প খরচে তাদের এই উদ্ভাবনী ব্যবহার করতে কয়েক হাজার টাকা ব্যয় হবে। বাঘ এবং মানুষ রক্ষা করতে ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা তাদের এই উদ্ভবনী সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চায়।
সরকারি সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক সহায়তা এবং মানুষের প্রয়োজন হলে সুন্দরবন এলাকায় তাদের উদ্ভাবনী কার্যকারিতা তারা দেখাতে পারে বলে ফারদ্বীন জানায়।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, এ ধরনের উদ্ভাবনী ভাল উদ্যোগ। তবে এই আলোকরশ্মি বাঘের জন্য পরিবেশ বান্ধব কি না জানতে হবে। লেজারের আলোক রশ্মির কারণে বাঘ বা অন্য বন্যপ্রাণীর কোন ক্ষতি হতে পারে কিনা জানা দরকার। এই উদ্ভাবনী নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত চাওয়া যেতে পারে।
ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার স্টল পরিদর্শন শেষে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, যে কোন ভাল উদ্ভাবন সমাজের উপকারে আসে। ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা রাতে বাঘসহ যে কোন ধরনের বন্যপ্রাণী সনাক্তকরণের জন্য যে উদ্ভাবন করেছে তা প্রশাংসার দাবি রাখে। এর সম্ভব্যতা যাচাই এবং মাঠ পর্যায়ে এর অর্থনৈতিক ব্যয়ের বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তাদের কাছে বাঘ সনাক্তকরণের জন্য শিক্ষার্থীদের ওই উদ্ভাবনী ভাল লেগেছে। যে কোন মানুষ তার বাড়িতে এই উদ্ভাবন ব্যবহার করতে পারে।
শনিবার বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম চত্বরে দুই দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। মেলায় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলে মোট ৫৫টি প্রতিষ্ঠান ৩৭টি স্টলে তাদের উদ্ভাবনী প্রদর্শন করে। রবিবার এই মেলা শেষ হয়েছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হাফিজ আল-আসাদ জানান, ডিজিটাল উদ্ভাবনী এই মেলা মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মেলায় ভূমি অফিসের স্টলে রবিবার ছয়জন ভূমির মালিক অনলাইনে তাদের জমির খাজনা বাবদ ২০ হাজার ১৩২ টাকা পরিশোধ করেছেন।
সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার পশ্চিম ধানসাগর গ্রামের আমিন চৌকিদার জানান, প্রায় প্রতিবছর দুই থেকে তিন বার সুন্দরবন ছেড়ে ভোলা নদ পাড়ি দিয়ে বাঘ তাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। গত বছর চারবার বাঘ তার বাড়ির ভিতরে চলে আসে। বাঘের ডাক শুনে তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। বাঘের ভয়ে তাদের নির্ঘুম রাত কাটে। অনেক সময় বাঘ তাদের গরু-ছাগল খেয়ে ফেলে। মানুষের ওপর হামলাও করে। বাঘের হাত থেকে রক্ষা পেতে গ্রামবাসী পাল্টা হামলা করে। অনেক সময় বাঘ গ্রামবাসীর হাতে প্রাণ হারায়। এ ধরনের উদ্ভাবন খুশির খবর বলে মনে করেন আমিন চৌকিদার।
জানা গেছে, সুন্দরবনের মোট আয়াতন ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমানে সুন্দরবনের মোট আয়াতনের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। আর গোটা সুন্দরবন জুড়েই রয়েল বেঙ্গল টাইগার কম বেশি বিচারণ করে থাকে। নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝে মধ্যে বাঘ বনসংলগ্ন লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তৈরি হয় বাঘে মানুষে দ্বন্দ্ব। অনেক সময় গ্রামবাসীর হামলায় বাঘ প্রাণ হারাচ্ছে।
সর্বশেষ ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে জরিপে সুন্দরবনে বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি নির্ধারণ করা হয়। নতুন করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করতে শিগগিরই সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু হবে বলে বন বিভাগ জানায়।
বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০০১ সাল থেকে ২০২২ সালের এ পর্যন্ত সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে নানাভাবে ২৮টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুস্কৃতিকারীদের হাতে ১৪টি, লোকালয়ে জনতার হাতে গণপিটুনিতে পাঁচটি,স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আটটি এবং ঘুর্ণিঝড় সিডরে একটি বাঘ মারা গেছে। চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে ১৯টি।
আরও পড়ুন: মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে: নাসা
দুবাইয়ে চালকবিহীন বৈদ্যুতিক উড়ুক্কু গাড়ি চালাল চীনা প্রতিষ্ঠান
নাসার স্পেসএক্স মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরছেন
ড্রাগন মহাকাশযানে চড়ে পৃথিবীতে ফিরেছেন নাসার স্পেসএক্স ক্রু মিশনের চার নভোচারী। নাসা জানিয়েছে, শুক্রবার বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফ্লোরিডা উপকূলে নিরাপদে অবতরণ করেন নভোচারীরা।
চার সদস্যের আন্তর্জাতিক ক্রু সদস্যরা হলেন-নাসার মহাকাশচারী কেজেল লিন্ডগ্রেন, বব হিনস, জেসিকা ওয়াটকিনস এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির নভোচারী সামান্তা ক্রিস্টিফোরেটি।
মহাকাশযানটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫ এর দিকে ইস্টার্ন টাইম (১৬০৫ জিএমটি) এ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে আনডক করা হয়।
গত ২৭ এপ্রিল ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে এই অভিযাত্রীরা যাত্রা করেন।
আরও পড়ুন: মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে: নাসা
দুবাইয়ে চালকবিহীন বৈদ্যুতিক উড়ুক্কু গাড়ি চালাল চীনা প্রতিষ্ঠান
টেসলার রোবট ‘অপটিমাস’ দেখালেন ইলন মাস্ক
মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে: নাসা
পৃথিবী থেকে লাখ লাখ মাইল দূরে অবস্থিত ছোট এক গ্রহাণুকে এর নিজ কক্ষপথ থেকে সরাতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) মহাকাশযান। শুধু সরিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, ছোট ছোট টুকরায় ধ্বংসও করেছে। ‘সেভ দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা পৃথিবীকে রক্ষার এই পরীক্ষামূলক অভিযান থেকে কী ফল পাওয়া গেছে তা মঙ্গলবার নাসা জানিয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে চালানো অভিযানটিতে মূলত দেখা হয়েছে যে ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে গ্রহাণু বা মহাকাশীয় বস্তু ধেয়ে আসলে তা মোকাবিলায় কী করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত মহাকাশ সংস্থার সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, ‘এই অভিযানটি প্রমাণ করে যে মহাবিশ্ব পৃথিবীর দিকে যাই ছুঁড়ে দিক না কেন তা প্রতিহতে নাসা প্রস্তুত হচ্ছে।’
ডার্ট (ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট) মহাকাশযানটি ২৬ সেপ্টেম্বর ডিমরফোস নামের গ্রহাণুতে ধাক্কা খেলে সেখানে গর্ত তৈরি হয়। এতে ধুলা ও ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে পড়ে, যা দেখতে অনেকটা ধূমকেতুর মতো। যার থেকে আলোর ঝলকানিও দেখা গেছে।
৫২৫ ফুটের গ্রহাণুতে কী প্রভাব পড়ল তা পর্যবেক্ষণ করতে চিলি ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে টেলিস্কোপের সাহায্যে বেশ সময় নিয়ে দেখতে হয়েছে নাসাকে।
ঘটনাটির আগে ছোট এই গ্রহাণু এর প্রধান গ্রহাণুকে প্রদক্ষিণ করতে ১১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট সময় নিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা চেয়েছিলেন গ্রহাণুটির প্রদক্ষিণ সময় ১০ মিনিট কমিয়ে আনতে, কিন্তু নেলসন বলছেন গ্রহাণুটির কক্ষপথ প্রায় ৩২ মিনিট কমে গেছে।
আরও পড়ুন: পৃথিবীকে রক্ষা: স্পেস টেলিস্কোপে ডার্টের কর্মযজ্ঞের ঝকঝকে ছবি
নাসার গ্রহ বিজ্ঞানের পরিচালক লরি গ্লেজ বলেন, ‘আমরা পুরা বিষয়টি হজম করতে কিছুটা সময় নেই… কারণ এই প্রথমবারের মতো মানুষ কোনো গ্রহাণুর কক্ষপথে পরিবর্তন আনতে পেরেছে।’
অলাভজনক বি৬১২ ফাউন্ডেশনের একজন সহপ্রতিষ্ঠাতা, গ্রহাণুর আঘাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য নিবেদিত অ্যাপোলো মহাকাশচারী রাস্টি শোয়েইকার্ট বলেন যে তিনি স্পষ্টতই আনন্দিত। ফলাফল ও মিশনটির মাধ্যমে যে এই ক্ষেত্রে মনোযোগ এনেছে তা নিয়ে তার কোনো প্রশ্ন নেই।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর সুরক্ষায় নাসার মহাকাশযান ধ্বংস করেছে গ্রহাণু!
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা গবেষণাগারের অধ্যাপক ও এই অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ন্যান্সি চ্যাবট বলেন, এধরনের কৌশল প্রয়োগের জন্য আমাদের অবশ্যই উপযুক্ত সময় আসতে হবে যাতে তা কার্যকর হয়।
বলে রাখা ভালো, বিজ্ঞানীরা অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে কোনো মহাকাশীয় বস্তুর আঘাত হানার সম্ভাবনা দেখছে না।
মহাকাশযান তৈরি ও অভিযান পরিচালনায় ৩২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাসার পরীক্ষামূলক চন্দ্রাভিযান: দ্বিতীয় প্রচেষ্টাও ব্যর্থ, পরবর্তী চেষ্টা কয়েক সপ্তাহ পর
দুবাইয়ে চালকবিহীন বৈদ্যুতিক উড়ুক্কু গাড়ি চালাল চীনা প্রতিষ্ঠান
চীনা এক প্রতিষ্ঠান সোমবার দুবাইয়ে একটি চালকবিহীন বৈদ্যুতিক উড়ুক্কু গাড়ি চালিয়ে দেখিয়েছে। ভবিষ্যতের এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে শহরের যানজট কাটিয়ে যাত্রীদের অনায়াসে আকাশপথে কম সময়ে নির্বিঘ্নভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া যাবে।
উড্ডয়ন প্রতিষ্ঠান চীনের গুয়াংজুভিত্তিক এক্সপেং ইনকরপোরেশন এক্সপেং এক্স২ নামের এই উড়ুক্কু গাড়ি তৈরি করেছে। বিশ্বজুড়ে ডজনখানেক উড়ুক্কু গাড়ির প্রজেক্টের মধ্যে এটি একটি। তবে যাত্রীসহ উড্ডয়ন পরীক্ষায় সফল হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে এই পরিষেবা চালু করতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।
সোমবারের এই উড্ডয়ন পরীক্ষায় উড়ুক্কু গাড়িতে ছিল না কোনো মানুষ। তবে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গতবছরের জুলাইয়ে তারা মানুষসহ গাড়িটি পরীক্ষা করে দেখেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি সংযোজন প্লান্ট স্থাপনে কাজ করবে থ্রিডিওএম ও কসমস গ্লোবাল
টেসলার রোবট ‘অপটিমাস’ দেখালেন ইলন মাস্ক
শিশু যখন হাঁটতে শেখে তখন তার প্রতিটি কদমে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা যায়। এই বুঝি পড়ে গেলাম! সেজন্যই হয়তো ছোট ছোট কদমে ধীরে ধীরে পা ফেলতে শুরু করে। ঠিক শিশুর মতোই যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার কার্যালয়ে শুক্রবার দেখা মেলে মানব রোবটের হেঁটে আসার দৃশ্য।
মঞ্চের এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। ধীর কদমে হেঁটে এসে রোবটটি দর্শকদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে অভিবাদন জানায়। রোবটটির নাম রাখা হয়েছে অপটিমাস।
প্রতিষ্ঠানটির কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা দিবসে (এআই ডে) টেসলা যে রোবটটি দেখিয়েছে তা আপাতত একটি প্রোটোটাইপ। যা ভারী বস্তু উঠানোসহ নানা কাজ করতে পারে।
হেঁটে আসা রোবটটি একটি প্রোটোটাইপ হলেও মঞ্চে পরবর্তীতে তিনজন মানুষজে তার ও অন্যান্য সংযুক্ত যন্ত্রাংশসহ রোবট আনতে দেখা যায়। যা দেখতে মোটেই মাস্কের ভাস্য অনুযায়ী রোবটের মতো নয়।
আরও পড়ুন: সময় ও খরচ বাঁচাতে গবেষকরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ওষুধ উদ্ভাবনে কাজ করছে
কার্যালয়ে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে মাস্ক বলেন যে শুক্রবার তারা যে রোবটটি দেখতে পেয়েছে প্রকৃতপক্ষে এটি আরও বেশি কাজ করতে পারে।
মাস্ক অন্যান্য রোবট ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করে বলেন, জাঁকজমক ও আয়োজন করে যে রোবটগুলো দেখানো হয় সেগুলোর আসলে ‘ব্রেন’ থাকে না। নিজে থাকে চলার মতো কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা না থাকার কথাও বলেন তিনি। তবে অপটিমাসের মাধ্যমে তিনি কিছু এআইয়ের নমুনা দেখান।
তবে নতুন এই রোবট নিয়ে সমালোচনাও করতে দেখা গেছে। মঞ্চে দেখানো নমুনায় এআই গবেষক ফিলিপ পিকনিউস্কি সন্তুষ্ট হননি। তিনি টুইটারে লিখেছেন, এটি বেশ তামাশার এবং সম্পূর্ণভাবে ‘স্ক্যাম’।
আরও পড়ুন: ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনে নিচ্ছেন ইলন মাস্ক
মাস্ক জানান, এই প্রথম রোবটটি কোনো সাহায্য ছাড়াই হেঁটেছে। টেসলার লক্ষ্য কি তা জানিয়েছেন মাস্ক। তিনি জানান, এমন রোবট তৈরি করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি যা কাজের ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় সক্ষম হবে। আর রোবটটি তৈরি ও বাজারজাত করা হবে অধিক হারে। যা লক্ষাধিকও হতে পারে। এর মূল্য হবে একটি গাড়ির দামের চেয়েও কম। দামের ধারণা দিয়ে মাস্ক জানান, ২০ হাজার মার্কিন ডলারের কম হতে পারে।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্ক সম্পর্কে কিছু বিস্ময়কর তথ্য