%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF
৫ তরুণ আলোকচিত্রীর 'বোধ'
৩ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী 'বোধ' শুরু হয়েছে শাহবাগের ছবির হাট প্রাঙ্গণে।
শুক্রবার (৮ মার্চ) দুপুর ৩টায় প্রদর্শনীটির উদ্বোধন হয়। এটি চলবে ১০ মার্চ, প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
আলোকচিত্র প্রদর্শনীটির কিউরেট করেছেন তানজিমুল ইসলাম। প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী কে এম আসাদ। তার তত্ত্বাবধানে দুই মাসের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন মো. আবু সুফিয়ান জুয়েল, জীবন আহমেদ, সৈয়দ মাহামুদুর রহমান, মেহেদী হাসান ও মো. সাজ্জাদ হোসেন।
এই তরুণ ৫ আলোকচিত্রী অংশগ্রহণ করে শেখার চেষ্টা করেছেন কীভাবে একটি বিষয়ের দিকে তাকাতে হয় এবং সেটিকে আলোকচিত্রের মাধ্যমে একটি গল্পের আকার দেওয়া যায়। আলোকচিত্রীরা নিজেদের জীবনের কাছাকাছি একটি গল্প বলার চেষ্টা করেছেন।
যদিও তারা ব্যক্তি বা একটি গোষ্ঠীর গল্প বলছেন, কিন্তু সবার প্রয়াস ছিল নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করা। যে ‘বোধের’ ভেতর দিয়ে নিজে গেছেন এবং প্রয়োজন মনে করেছেন সেটি প্রকাশ করতে চেয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
আরও পড়ুন: জীবনে রঙ ও আনন্দ নিয়ে আসে পহেলা ফাল্গুন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বাতিঘরে ‘রাইজিং ইকোস’ শুরু
শিল্পকলায় মিষ্টি মেলা: বাহারি মিষ্টির স্বাদ-গন্ধে মাতোয়ারা রাজধানীবাসী
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি নিয়ে গত বুধবার (৬ মার্চ) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হয়েছে প্রথমবারের মতো জাতীয় মিষ্টি মেলা ২০২৪।
৫ দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। খাদ্য সংস্কৃতি হিসেবে দেশের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিগুলোকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভিন্নধর্মী এ আয়োজন। এতে অংশ নিয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা ৬৪ এর অধিক মিষ্টি শিল্পীরা।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) প্রথম জাতীয় মিষ্টিমেলার দ্বিতীয় দিন বিকেলে মূল অনুষ্ঠানের আগে পরিবেশিত হয় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী। লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সংগীত পরিবেশন করে সরকারি সংগীত কলেজ। সমবেত শাস্ত্রীয় সংগীত ‘রাগ বৈরাগী ভৈরব’ এবং সমবেত যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন তারা। এরপর পর্যায়ক্রমে পরিবেশিত হয় একক সংগীত। একক সংগীত পরিবেশন করেন ড. ফকির শহীদুল ইসলাম, শেখ খালিদ হাসান, মাইনুল আহসান, ছন্দা চক্রবর্তী, উত্তম কুমার সাহা, মফিজুর রহমান, এম এ মমিন, উর্বী সোম, সৌমিতা বোম, পূর্ণ চন্দ্র মণ্ডল, সাইফুল ইসলাম, এম এম ইউনুসুর রহমান ও গোলাম মোস্তফা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মনসুর।
প্রথম জাতীয় মিষ্টি মেলা ২০২৪, ১০ মার্চ পর্যন্ত চলবে প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকাল ৫টায় থাকবে লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়
পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য তাৎপর্যবহুল একটি দিবস শবে বরাত। বরাতের রাত বা ভাগ্যের রজনী হিসেবে পরিচিত এই দিনটি পালিত হয় আরবি বর্ষের শাবান মাসের ১৫ তারিখে। এর পটভূমিতে রয়েছে মূলত দিবাগত রাতের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর মাহাত্ম্য যথেষ্ট প্রভাব রাখে ইসলামী জীবন ধারা চর্চায়। এ রাতে মহান আল্লাহ অতীতের পাপ-পঙ্কিলতা শুধরে নিয়ে আগামী দিনগুলো নতুন করে শুরু করার সুযোগ দেন। আর তাই এক নিষ্পাপ জীবনের প্রত্যাশায় বিগত কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ। চলুন, মহিমান্বিত এই সময়ে পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
শবে বরাতের তাৎপর্য
এই রাতে নির্ধারিত হয়েছিল প্রতিটি মানুষের জীবনের শুরু ও শেষ দিনটি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভাগ্য বিধাতা আল্লাহ তায়ালা এই রাতে মানুষকে তার জীবনের যাবতীয় পাপ মোচনের সুযোগ দেন। এর মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের জন্য নতুন করে জীবন রচনার এক অভাবনীয় দিগন্ত উন্মোচিত হয়। তাই এই রাতকে ক্ষমা ও মুক্তির রাতও বলা হয়। পবিত্র কুরআনে ১৫ শাবানের রাতের কথা না থাকলেও নানা হাদীসগ্রন্থে এর বিভিন্ন ব্যাখা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাত ২৫ ফেব্রুয়ারি
বায়হাকী হাদিস অনুসারে, নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তার স্ত্রী আয়েশা (রাঃ) কে ১৫ শাবানের গুরুত্ব বোঝাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, কোন মানুষ কোন সময়ে জন্মগ্রহণ করবে এবং কোন সময়ে মারা যাবে তা এই রাতে নির্ধারণ হয়। তাই এই সময় মানুষের কৃতকর্মের হিসাব-নিকাশ হয় এবং তাদের রিজিকের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে তাদের জন্য খোলা থাকে আল্লাহর রহমত ও মাগফেরাতের সমস্ত দরজা।
ইবনে মাজাহ ও বায়হাকী হাদিসে আলী ইবনে আবী তালেব (রাঃ) এর বর্ণনায় আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর বাণীতে উঠে আসে শবে বরাতের তাৎপর্য।
এখানে মুহাম্মদ (সাঃ) শাবান মাসের মাঝামাঝি সময়ে সারা রাত জেগে নামায পড়তে আর দিনের বেলা রোযা রাখতে বলেছেন। কেননা আল্লাহ তায়ালা সূর্যাস্তের পর থেকে ফজরের সময় পর্যন্ত দুনিয়ার আকাশে নেমে এসে ক্ষমা প্রার্থনাকারীর ডাকে সাড়া দেন। এ সময় তিনি যার রিযিক দরকার তাকে রিযিক দেন এবং বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে বিপদমুক্ত করেন।
উমর ইবনে আবদুল আজিজসহ অন্যান্য ইসলামী পন্ডিতগণ বছরের চারটি রাতকে অবহেলা করতে নিষেধ করেছেন। কেননা রাতগুলোতে আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন।
এগুলো হচ্ছে- রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫-তম রাত, ঈদুল ফিতরের আগের রাত এবং ঈদুল আজহার আগের রাতে।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
পবিত্র শবে বরাতের শিক্ষা
সত্যিকারের অনুতাপ
এই বিশেষ রাত পূর্বের ভুল-ভ্রান্তির জন্য সত্যিকার অর্থে অনুতপ্ত হতে শেখায়। এই অনুতাপ ভবিষ্যতে কোনো ভুল করার সময় এই রাত্রির কথা মনে করিয়ে দেবে। ফলে এক রকম দায়বদ্ধতার তৈরি হবে, যা জীবনকে পরিচালিত করতে পারে পূণ্যের পথে।
ক্ষমা করার মনোভাব
সমূহ পাপাচারের পরেও যে মন থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহর তাকে ক্ষমা করেন। আর এই বিষয়টি প্রতিটি মানুষকে অন্তরের ঘৃণা দূর করে পরস্পরকে ক্ষমা করতে শেখায়। এই শিক্ষা প্রতিহিংসাপরায়ণতা ও রাগের মত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মানুষকে দূরে রাখে।
ইবাদত
ইসলামের বিভিন্ন ধর্মীয় দিবসগুলোর মত শবে বরাতও আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য মুসলমানদেরকে উদ্বুদ্ধ করে। ছোট জীবনে যত বেশি ইবাদত করা যায়, পাপ কাজ থেকে ততটাই দূরে থাকা যায়। শুধু তাই নয়, এভাবে সার্বক্ষণিক ইবাদতের মধ্যে থাকা একসাথে দুইটি ক্ষেত্রে সুফল দেয়। এক, এভাবে তওবার মধ্যে থাকলে আল্লাহ যদি চান অতীতের সব গুণাহ ক্ষমা করে দেবেন। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি ইবাদতই আল্লাহর কাছে দোয়া করা। এভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা গেলে, এই দোয়াই হবে ভবিষ্যতে বিপদ-আপদ থেকে মুক্তির উপায়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় দৃষ্টিনন্দন ‘সাত গম্বুজ মসজিদ’
মিলানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে ইতালির মিলানের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে।
২১ ফেব্রুয়ারি ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে ভোরে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
প্রথম পর্বে সকাল ৯টায় কনসাল জেনারেলের নেতৃত্বে পদযাত্রার মাধ্যমে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে স্থাপিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এরপর কনস্যুলেটের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনে মহান শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের বিশেষ বাণী পাঠ করা হয়।
শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটে।
সম্মিলিতভাবে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে স্থানীয় সময় ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭.০১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২.০১ মিনিটে) ইতালির মিলানের অস্থায়ী শহীদ মিনারে কনসাল জেনারেলের নেতৃত্বে মিলানের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাতৃভাষার বহুমাত্রিকতার প্রভাব তুলে ধরতে আলোচনাসভা আয়োজন করা হয়। কনসাল জেনারেল এম জে এইচ জাবেদের সঞ্চালনায় মিলানস্থ বিভিন্ন দেশের কনস্যুলেট-এ কর্মরত কূটনৈতিকদের মধ্যে মিলানে নিযুক্ত ক্রোয়োশিয়ার কনসাল জেনারেল স্টেফান রিবিচ, মিলানে নিযুক্ত মিশরের কনসাল জেনারেল মানাল আবদেলদাইম, লা স্টাম্পা এসতেরার সাংবাদিক ডেভিড রোসি এবং লা গেজেটা ডি মিলানের সাংবাদিক আগস্টিনো মারোতা বক্তব্য দেন।
এম জে এইচ জাবেদ বলেন, ভাষা শহীদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার সম্মান সুরক্ষিত হয়েছিল, যার পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর সৃজনশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্জন করে পরম কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
একটি ভাষা শুধু কতক জনগোষ্ঠীর যোগাযোগের মাধ্যম নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট মানবগোষ্ঠীর শত বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। একটি ভাষার মৃত্যু মানে সেই শত বর্ষের জীবনধারার ইতিহাসের পরিসমাপ্তি। সময়ের বিবর্তনে ঠিক সেই বিলুপ্তির শিকারেই পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষাগুলো। সংখ্যালঘু মানুষগুলোর নিবাস দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলগুলোতে হওয়ায় অগোচরেই থেকে যাচ্ছে এই ভাষা বিলুপ্তি। বিগত দশকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী বঙ্গদেশের বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সংখ্যা মোট ১৪টি। চলুন, বিপন্নপ্রায় সেই ভাষাগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে
কন্দ
১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে আগমন ঘটেছিল কন্দ ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর। কন্দদের আদিভাষার নাম কন্দফারসি। ভারতের ওড়িশা থেকে এ দেশে কন্দদের আনা হয়েছিল মূলত রেললাইন স্থাপন ও চা বাগানের কাজে। এদের মধ্যে বর্তমানে কেউই আর সেই কন্দতে কথা বলতে পারে না। ভাবের আদান-প্রদানটা হয়ে থাকে উড়িয়া ভাষায়।
খাড়িয়া
অস্ট্রো-এশিয়াটিক গোত্রের মুণ্ডা শাখার অন্তর্গত খাড়িয়া ভাষার সর্বাধিক ব্যবহার হয় ভারতের ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, ও ওড়িশায়। বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলে মংরাবস্তিতে প্রায় ১০০-এরও বেশি পরিবারের মাতৃভাষা খাড়িয়া। কিন্তু এ ভাষায় স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলতে পারে মাত্র ২ জন। এদের একজন খাড়িয়া সমাজকর্মী হিসেবে নিজেদের মাতৃভাষা রক্ষার কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: আসামের বাংলা ভাষা আন্দোলন নিয়ে মাসুদ করিমের তথ্যচিত্র
২০২০ সালে তিনি খাড়িয়াদের ওপর একটি সমীক্ষা করেছিলেন, যেখানে বাংলাদেশে ৪১টি খাড়িয়া গ্রামের খোঁজ পাওয়া যায়। গ্রামবাসীদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ হাজার ৭০০ জন।
কোডা
পশ্চিমবঙ্গ, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া জেলার প্রচলিত এক ধরনের মুণ্ডা ভাষার নাম কোডা। এর আরও নাম আছে, যেমন কোরা, কাওরা, কোরালি, কোরাটি, কোরে, এবং মুদিকোরা। ভারত ও বাংলাদেশের কোরা গোষ্ঠী দ্বারা কথিত একটি বিপন্ন মুণ্ডা ভাষা। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ কোডা-ভাষী গ্রামগুলো হচ্ছে রাজশাহী বিভাগের কুন্দং এবং কৃষ্ণপুর। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কোডা বাংলার সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। দুয়েক জন প্রবীণদের মুখে কিছু কোডা শোনা গেলেও তরুণদের সবাই বাংলাতেই কথা বলেন।
মুণ্ডারি
অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষা বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুণ্ডা ভাষা এই মুণ্ডারি। নেপাল, পূর্ব ভারতীয় রাজ্যের ঝাড়খন্ড, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুণ্ডাদের এই কথ্য ভাষার সঙ্গে সাঁওতালি ভাষার অনেক মিল।
আরও পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
বাংলাদেশে মুণ্ডারির ব্যবহার দেখা যায় খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে, ডুমুরিয়া, এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর, দেবহাটা ও তালা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে। সুন্দরবন সংলগ্ন নদী পাড়ের গ্রামগুলোর এই আদিবাসীরা এখন কদাচিৎ মুণ্ডা ব্যবহার করে। পাবনার ঈশ্বরদীর তরুণ মুণ্ডাদের অনেকেই প্রথম দিকে জানতো না যে, তাদের নিজস্ব একটি মাতৃভাষা ছিল।
কোল
একদম আলাদা মুণ্ডা ভাষা হলেও কোল এবং কোডাকে মুণ্ডারির মিশ্র ভাষা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ১৮৩১ থেকে ১৮৩২ সালে কোলরা বৃটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাব, আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতা, শিক্ষিত শ্রেণীর সমর্থনের অভাব এবং নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের অভাবে আন্দোলন ব্যর্থ হয়।
কোলদের গ্রাম সবচেয়ে বেশি রয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলে এবং রংপুরের বাবুডাইংয়ে।
আরও পড়ুন: টাকা কীভাবে এলো? মানব সভ্যতায় টাকার ইতিহাস
সৌরা
ভারতের সীমান্ত পিলার ও ত্রিপুরা বনবাজার খেকে ২০০ গজ দূরত্বে বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলের রাজগাট ইউনিয়নের সৌরা পল্লী। এই গ্রাম পরম যত্নে আগলে রেখেছে ২২টি সৌরা পরিবারকে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের রংপুরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সৌরারা। এদের বেশিরভাগই কথা বলেন ওড়িয়া, সাদরি ও স্থানীয় তথা উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক ভাষায়।
মালতো
পূর্ব ভারতের মাল্তো উপজাতির মুখে প্রচলিত উত্তর দ্রাবিড় ভাষা এই মালতো। এর ‘পাহাড়িয়া’ নামটিও বেশ প্রসিদ্ধ, তবে ‘রাজমহালি’ নামটি খুব কম শোনা যায়।
পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মাড়মি পল্লীর অধিবাসীদের প্রথম ভাষা মালতো। এছাড়া নাটোর, রাজশাহী ও নওগা জেলায়ও রয়েছে মালতোদের বসবাস। বর্তমানে জীবিকার উদ্দেশ্যে লেখালেখির যাবতীয় কাজ বাংলায় হওয়ায়, কথা বলার সময়েও কমে গেছে মালতোর ব্যবহার।
আরও পড়ুন: বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ: কোথা থেকে এলো বাংলা ভাষা
খুমি
বার্মার (বর্তমান মিয়ানমার) দক্ষিণ চীন রাজ্যের ভাষা দক্ষিণ চীনের একটি উপভাষা খুমি। বার্মার পালেওয়া ও তার আশেপাশের অঞ্চল এবং বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার আদিবাসীরা এই ভাষা ব্যবহার করে। আরাকানীয় (বর্তমান রাখাইন, যা মিয়ানমারের একটি অঞ্চল) এবং বর্মী ভাষার বিস্তর প্রভাব এই ভাষার ওপর। বান্দরবানের রুমা, থানচি এবং রোয়াংছড়িতে খুমিদের বসবাস।
পাংখোয়া
ভারতের মিজোরাম রাজ্যে ব্যবহৃত কুকি ভাষার নাম পাংখোয়া, যা পাংখু, পাংখোয়া বা পাং নামেও পরিচিত। পাংখোয়ার দুইটি উপভাষা হচ্ছে বিলাইছড়ি ও কংলাক। বাংলাদেশে পার্বত্য রাঙ্গামাটির সাজেক উপত্যকা থেকে বারাবানের রুমা সংলগ্ন এলাকায় পাংখোয়া জাতির বসবাস।
২০২২ সালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে পাহাড়ি ৭টি উপজাতীয় ভাষার স্বতন্ত্র শব্দকোষ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে পাংখোয়া অন্যতম।
আরও পড়ুন: বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস: রূপরেখায় অপশক্তির অবসান কামনায় শান্তি মিছিল
রেংমিটচ্য
খুমি এবং ম্রো ভাষার ঘনিষ্ট প্রভাব থাকলেও মায়ানমারের কুকি-চীন ভাষার শ্রেণীভুক্ত রেংমিটচ্য একটি স্বতন্ত্র ভাষা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে আলীকদমের পার্টি পাড়ায় বাস করতো শতাধিক রেমিটচ্য পরিবার। আলীকদম সদর থেকে ১০ থেকে ১২ মাইল দূরে তৈনখালের উপত্যকার ছোট্ট গ্রাম ক্রাংসিপাড়া। সেখানে রেমিটচ্যভাষীদের বসতি ছিল প্রায় ৩০০ বছর ধরে। কালের বিবর্তনে এই সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা কমতে কমতে ২০২২ সালে ৬-এ এসে দাঁড়ায়। এদের বেশিরভাগই আবার ছিলেন ষাটোর্ধ্ব। এদের মধ্যে ২ জন থাকতেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ম্রোদের সঙ্গে।
মূলত স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ায় সংখ্যা কমছে রেংমিটচ্য ভাষাভাষীদের।
চাক
মিয়ানমারের চাক নৃ-গোষ্ঠীর কথ্য হিসেবে প্রচলিত আরও একটি চীন-তিব্বতি ভাষা চাক। শাল বিভাগভুক্ত এই ভাষাটি সাক নামেও পরিচিত। ১৩ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কাদু জনগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা ভাবে পরিচিতি লাভ করে চাকরা। ১৪ শতকে তাদের রাজ্য আরাকানিরা দখল করলে তারা পার্বত্য চট্রগ্রামে প্রবেশ করে। বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ের ছড়া অঞ্চলগুলোই এখন এই চাকদের নিবাস। সুরপ্রধান চাক ভাষা সাহিত্যে বেশ সমৃদ্ধ হলেও লেখায় তেমন প্রচলন না থাকায় এখন বিপন্ন হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
খিয়াং
রাঙামাটির কাপ্তাই ও চন্দ্রঘোনা এবং বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়িতে বসবাসরত খিয়াং আদিবাসীদের কথ্য ভাষা খিয়াং। বাংলাদেশে খিয়াংরা মূলত দুটি গ্রুপে বিভক্ত- লাইতু ও কংতু। লাইতুরা থাকে সমতলে আর কুংতুরা থাকে পাহাড়ি এলাকায়। এদের বেশিরভাগই বর্তমানে বাস করে রাজকীয় মং সম্প্রদায়ের সঙ্গে। তাই কথ্য রীতিতে আর আগের সেই মৌলিকতা নেই। অবশ্য তা ফিরিয়ে আনার জন্য খুব ছোট পরিসরে হলেও তোড়জোড় শুরু হয়েছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ৭টি পাহাড়ি ভাষার শব্দকোষের মধ্যে খিয়াং একটি।
লুসাই
উত্তর-পূর্ব ভারত ও মিয়ানমারের প্রসিদ্ধ একটি উপজাতীয় ভাষা লুসাই। আসামের লুসাই পাহাড় থেকেই এই ভাষার নামকরণ হয়েছে। বাংলাদেশের লুসাইভাষীরা নিজেদের মঙ্গোলীয়দের বংশধর বলে দাবী করে। রাঙ্গামাটির সদরের বাঘাইছড়ি এবং বান্দরবান সদর ও রুমায় রয়েছে লুসাইদের গ্রাম।
পাহাড়ি ভাষা সংরক্ষণের জন্য রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক যে শব্দকোষগুলো প্রকাশ করা হয়েছিল, তার মধ্যে লুসাইও রয়েছে।
আরও পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
লালেং (পাত্র)
বাংলাদেশের উপভাষাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম পরিচিত পাত্র বা লালেং ভাষা। সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গহীন জঙ্গলে এই ভাষাভাষী লোকদের বসবাস। এই ভাষার নাম মূলত লালেং ঠার বা লাইয়ুংটার। এর কোনও শব্দের সঙ্গে বাংলা অথবা অন্য ভাষার কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শেষাংশ
দেশের এই ১৪টি বিলুপ্তপ্রায় ভাষা কোনোরকম বেঁচে আছে উপজাতিগুলোর গুটি কয়েক প্রবীণ সদস্যের মাঝে। এলাকায় অন্যান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাষার প্রভাবে নৃ-গোষ্ঠীগুলোর নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মাতৃভাষা। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে খাড়িয়া, কোল, রেংমিটচ্য, খিয়াং, ও লুসাইয়ের মত ভাষা, যেগুলো এক সময় নিজ নিজ অঞ্চলে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিল।
সমৃদ্ধ শব্দকোষ তৈরি পাংখোয়া, লুসাই ও খিয়াং ভাষার জন্য নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী উদ্যোগ। এমন পদক্ষেপ বাকি বিপন্নপ্রায় ভাষাগুলোর ক্ষেত্রেও শিগগিরই গ্রহণ করা জরুরি। এক্ষেত্রে শুধু সরকারি মহলগুলোই নয়, এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও।
আরও পড়ুন: ‘ধারণার চেয়েও বেশি’: মধ্যযুগে বাংলায় হাবশি শাসন এবং আফ্রিকা-ভারত সংযোগ সম্পর্কে ডা. কেনেথ রবিন্স
জীবনে রঙ ও আনন্দ নিয়ে আসে পহেলা ফাল্গুন
বাংলা ফাল্গুন মাসের বসন্তের প্রথম দিন পহেলা ফাল্গুনে বর্ণিল পোশাক, ফুল আর সংগীতায়জনের মধ্য দিয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে দেশের উৎসবপ্রেমী মানুষ।
ফাল্গুন বাংলা বর্ষপঞ্জির একাদশ মাস এবং ঋতুর প্রথম মাস বসন্ত। উষ্ণ রোদ, প্রস্ফুটিত ফুল আর পাখির কিচিরমিচির বসন্তকে বাংলাদেশের ষষ্ঠ ঋতুর রাজা করে তোলে।
পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে হাজার হাজার মানুষের সমাগমে রাজধানীতে উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে চারুকলার বকুলতলা।
আরও পড়ুন: গ্যালারি অন হুইলস: ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রিকশা পেইন্টারদের কসমস ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা
বাংলাদেশে পহেলা ফাল্গুন উদযাপনের ঐতিহ্য শুরু হয় ১৪০১ বঙ্গাব্দে। এরপর থেকে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আনন্দঘন সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিয়মিত পহেলা ফাল্গুন উদযাপন করে আসছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ।
বুধবার সকাল ৭টায় সংগঠনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে চারুকলার বকুলতলায় পহেলা ফাল্গুন উৎসব শুরু হয়। বিকালে রাজধানীর উত্তরা রবীন্দ্র সরণি ও বাহাদুর শাহ পার্কে মুক্তমঞ্চে অনুরূপ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বাতিঘরে ‘রাইজিং ইকোস’ শুরু
বাংলাদেশ ও নরওয়ের সাংস্কৃতিক বিনিময় 'লেট দ্য লাইট ইন'
চিরকুট - দ্য গ্লোবাল বাংলাদেশি ব্যান্ড এবং নরওয়ের বিশিষ্ট গায়ক-গীতিকার ও জলবায়ু কর্মী মার্তে উলফ সম্প্রতি তাদের নতুন গান ‘লেট দ্য লাইট ইন’ জনসম্মুখে উপস্থাপন করেছেন।
চিরকুটের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান গায়িকা শারমিন সুলতানা সুমি গত বছর নরওয়ের অ্যাগডার ইউনিভার্সিটিতে একটি আন্তর্জাতিক সংগীত সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে যোগদানের সময় এই গান লেখা, সুরারোপ ও রেকর্ডিং শুরু হয়।
নরওয়েতে সুমি তার ২১ বছরের সংগীত যাত্রার পাশাপাশি বিনোদন জগতে একজন নারী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকাস্থ নরওয়েজিয়ান দূতাবাস এই নরওয়ে-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও নতুন গান ‘লেট দ্য লাইট ইন’ চিরকুটের এক লাইভ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে উদযাপন করেছে।
আরও পড়ুন: নরওয়েতে আন্তর্জাতিক সংগীত বিষয়ক সম্মেলনে যাচ্ছেন চিরকুট ব্যান্ডের সুমি
বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্টদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন, কূটনীতিক, থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতিনিধিরা এই সাংস্কৃতিক উদযাপনে অংশ নেন।
এতে আরও বলা হয়, নরওয়ে ও জনপ্রিয় বাংলাদেশি রক ব্যান্ড চিরকুটের মিউজিক্যাল পার্টনারশিপ, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং বন্ধুত্বের ইতিহাস দীর্ঘ। ২০১১ সালে রিক্সকনসার্টিন (ন্যাশনাল ট্রাভেলিং কনসার্ট) এবং লাইভ স্কয়ার কনসার্ট, বাংলাদেশ-এর মাধ্যমে নরওয়ের সঙ্গে চিরকুটের সহযোগিতা শুরু হয়। এটি রক ব্যান্ডের জন্য একটি নতুন সূচনা ছিল। নরওয়েজিয়ান দূতাবাস এই সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
আরও পড়ুন: মাইকেল জ্যাকসনের স্মৃতিমাখা ওয়েস্টলেক স্টুডিওতে চিরকুট
বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ার পাশাপাশি চিরকুট বিশ্বের বেশ কয়েকটি বৃহত্তম সংগীত উৎসবে পারফর্ম করেছে, ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের মতো বিখ্যাত স্থানে কনসার্টের আয়োজন করেছে এবং অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীর সঙ্গে সহযোগিতা করে বিশ্বব্যাপী তাদের গান ছড়িয়ে দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গভীর ভাবপূর্ন এবং চেতনায় পূর্ণ মৌলিক গানের মাধ্যমে চিরকুট তরুণ এবং জলবায়ুর জন্য কাজ করছে। সম্প্রতি তারা ‘নদী রকস’ তৈরি করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি নদীর জন্য একটি করে গান রচনা করে নদীগুলোর প্রতি ভালবাসা এবং তরুণদের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করাই এই গানগুলোর মূল লক্ষ্য ।
সুমি আর মার্তে-র নতুন গান ‘লেট দ্য লাইট ইন’ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকি এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফের যুক্তরাষ্ট্র মাতাবে ব্যান্ড চিরকুট
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বাতিঘরে ‘রাইজিং ইকোস’ শুরু
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উন্নয়ন ও দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে ‘বাতিঘর-স্মৃতিতে আলী যাকের’ শীর্ষক ১০ দিনব্যাপী ‘রাইজিং ইকোস’ শীর্ষক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর এশিয়াটিক সেন্টারের ছাদে এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। প্রদর্শনীতে মোট ৩১টি শিল্পকর্ম ও আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এক্সে অডিও-ভিডিও কল করা যাবে অ্যান্ড্রয়েড থেকেও
এই প্রদর্শনীতে আলোকচিত্রী মৃত্তিকা গাইন তার ফটোগ্রাফিক লেন্সের মাধ্যমে জলবায়ুজনিত নদী ভাঙনের কারণে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে খুলনার দাকোপের কালাবগি গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা তুলে ধরেন।
একই সঙ্গে অংশগ্রহণকারী আরেক শিল্পী হ্লুবাইশু চৌধুরী তার চিত্রকর্মের মাধ্যমে রাঙামাটিতে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে প্রাকৃতিক দৃশ্যের বিকৃতির চিত্র তুলে ধরেছেন।
মঙ্গল দীপ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ১০ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর কিউরেটর, শিক্ষাবিদ ও ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট শামসুল আলম হেলালের সমন্বয়ে ‘রাইজিং ইকোস’ শীর্ষক এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ছবি মেলা ও ঢাকা আর্ট সামিটেও কিউরেটর হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়ির মায়ুং কপাল, হাতিমুড়া বা হাতি মাথা ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
প্রদর্শনীর আগে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেখানে মঙ্গল দীপ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন সারা যাকের, মঙ্গল দীপ ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি ইরেশ যাকের, শামসুল আলম হেলাল, মৃত্তিকা গাইন, হ্লুবায়শু চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সারা যাকের বলেন, ‘বাংলাদেশি হিসেবে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাদের জন্য কাজ করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিবসা নদীর ভাঙন এবং কাপ্তাই বাঁধের জন্য কাপ্তাই লেক সৃষ্টি এর দুটি উদাহরণ।’
শনিবার শিল্পকলায় ঢাকা পদাতিকের ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকার নাট্যদল ‘ঢাকা পদাতিকের’ ৩৮তম প্রযোজনা ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’। যা হবে নাটকটির ২৯তম প্রদর্শনী।
বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের বীর সেনানী মাস্টার দা সূর্যসেনের প্রহসনমূলক বিচার ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে নাটকটি মঞ্চে আনে ঢাকা পদাতিক।
‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’ নাটকটি রচনা করেন ও নির্দেশনা দেন নাট্যজন মাসুম আজিজ। তার মৃত্যুর পর নির্দেশনার কাজটি করছেন অভিনেতা নাদের চৌধুরী।
এ বিষয়ে নাদের চৌধুরী বলেন, ‘‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন নিয়ে ঐতিহাসিক একটি নাটক। এর রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রয়াত মাসুম আজিজ ভাই। তবে পরবর্তীতে এই নাটকের কিছু কিছু জায়গায় প্রয়োজন সাপেক্ষে অলংকরণ করে আমি নতুন নির্দেশনার কাজটি করেছি।’
আরও পড়ুন: ‘রেজ অ্যান্ড হোপ’: দৃকে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপিত
‘রেজ অ্যান্ড হোপ’: দৃকে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপিত
মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিস (ইউএনআরসিও) এবং দৃক পিকচার লাইব্ররির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'রেজ অ্যান্ড হোপ' শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ১৪ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ঢাকাস্থ দৃক গ্যালারিতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় শেষ হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭৫তম বার্ষিকী, যেটি সম্ভবত পৃথিবীর সর্বাধিক যুগান্তকারী অঙ্গীকার। এ ঘোষণাপত্র সকল মানুষের জাত, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, রাজনৈতিক বা অন্য অভিমত, জাতীয়তা বা সামাজিক অবস্থান, সম্পত্তি বা জন্ম ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও প্রশ্নাতীতভাবে সমান অধিকার রক্ষা করে চলেছে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উদযাপনে আয়োজিত এই প্রদর্শনীটি বাংলাদেশের আলোকচিত্রীদের এমন একটি জায়গা দিয়েছে যেখানে সারা বাংলাদেশ থেকে তাদের কাজের মাধ্যমে উঠে এসেছে নারী অধিকার আন্দোলন, আদিবাসী সম্প্রদায়, এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়, শিক্ষার্থী, জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার জনগোষ্ঠীর অধিকারসহ আরো নানা বিষয়।
আরও পড়ুন: গ্যালারি অন হুইলস: ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রিকশা পেইন্টারদের কসমস ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা
আলোকচিত্রী এবং দূকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শহিদুল আলম আলোকচিত্রকে প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে বহুবছর ধরে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে আসছেন এবং এই প্রদর্শনীর জন্য সারা দেশ থেকে অতীত এবং বর্তমান সময়ের অসাধারণ সব কাজ একত্র করেছেন।
দৃকপাঠ ভবনে সোমবার বিকালে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীটির সমাপনী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, জাতিসংঘের মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিকাশ ও সুরক্ষাবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সমন্বয়ক তাসলিমা আখতারসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন প্রদর্শনীর কিউরেটর এএসএম রেজাউর রহমান।
আরও পড়ুন: ‘বিজয়’: বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী-মুক্তিযোদ্ধা বীরেন সোম ও শিশু শিল্পীদের নিয়ে গ্যালারি কসমসের দিনব্যাপী আর্ট ইভেন্ট