স্বাস্থ্য
নিপা ভাইরাস এড়িয়ে খেজুর রস খাওয়ার উপায়
নিপা ভাইরাস একটি জুনোটিক ভাইরাস। এটি বাঁদুড় থেকে বিভিন্ন মাধ্যম (বিভিন্ন পশু বা খাবার) হয়ে অথবা সরাসরি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। বাংলাদেশে খেজুরের রস খেকো বাঁদুড় হচ্ছে নিপা ভাইরাসের প্রধান উৎস।
বাঁদুড় খেজুরের রস খাওয়ার সময় তাদের মুখ থেকে নিঃসৃত লালা খেজুরের কাঁচা রসের সঙ্গে মিশে রসকে দূষিত করে। এর ফলে সংক্রামিত ব্যক্তি শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর সমস্যা ও মস্তিষ্কের প্রদাহ জনিত মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে।
আরও পড়ুন: ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
চলুন জেনে নিই কীভাবে নিপা ভাইরাস এড়িয়ে খেজুর রস খাবেন?
নিপা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে আরোগ্য লাভের কোন টিকা নেই, তাই এই ভাইরাস এড়ানোর একমাত্র উপায় প্রতিরোধ। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো হলো-
খেজুর রস সংগ্রহের স্থানটি বাঁদুড়ের উৎপাতমুক্ত রাখা
প্রত্যন্ত অঞ্চলে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানকার খেজুর গাছগুলোর খেজুর রসের স্বাদ বাড়তে থাকে। এ সময় গাছগুলোতে রাতের বেলা শুরু হয় বাঁদুড়ের উৎপাত। তাই সংক্রমণ রোধ করার প্রচেষ্টায় প্রথমে খেজুর রস সংগ্রহের জায়গা অর্থাৎ এই গাছগুলো বাঁদুড়ের সংস্পর্শে আসা থেকে মুক্ত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষামূলক আবরণ যেমন- বাঁশ, ধোইঞ্চা, পাট কাঠি ও পলিথিনের স্যাপ স্কার্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো খেজুর রস সংগ্রহের স্থান থেকে বাঁদুড়কে দূরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই সময়ে যারা নিয়মিত খেজুর রস সংগ্রহ করেন বিশেষ করে গাছিদের এই পদ্ধতি অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।
খেজুর রস সংগ্রহের সরঞ্জামাদি পরিষ্কার রাখা
গ্রামাঞ্চলে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য মাটির হাড়ি ব্যবহার করা হয়। শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছগুলোতে একটি করে মাটির হাঁড়ি ঝুঁলে থাকতে দেখা যায়। বাঁদুড় খেজুর রস খাওয়ার সময় মল-মূত্র ত্যাগ করে এগুলো দূষিত করে ফেলে। এই ময়লাগুলোর মাধ্যমেও নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। তাই প্রতিবার রস সংগ্রহের সময় হাঁড়ির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকটা খেয়াল রাখতে হবে। অবশ্য উপরোল্লিখিত স্যাপ স্কার্টগুলো ব্যবহার করা হলে বাঁদুড় বা অন্যান্য পাখির ময়লা লাগার সম্ভাবনা থাকে না।
সংগৃহীত খেজুর রস অন্যান্য পশুর সংস্পর্শে না রাখা
প্রতিরক্ষামূলক বেষ্টনী থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করলেই কাজ শেষ নয়। সংগৃহীত রস বাড়ির যে জায়গাটিতে রাখা হচ্ছে সে জায়গাটিতে গরু বা ছাগলের আনাগোনা হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা বাঁদুড় থেকে প্রায় সময় গরু-বাছুর ও ছাগলেও নিপা ভাইরাস ছড়ায়। অতঃপর এগুলো খেজুর রস রাখার জায়গাগুলোকে দূষিত করে ফেলতে পারে। এই বিষয়টি বিশেষ করে যারা খেজুর রস সংগ্রহ করে বাজারজাত করে থাকেন বা গাছিদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
এই সংক্রমিত গবাদি পশু খেজুর রস দূষিত করা ছাড়াও সরাসরি মানুষের সংস্পর্শে এসে মানুষের মধ্যে নিপা ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই গৃহপালিত পশু পরিচালনার সময় গ্লাভস ও অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরে থাকা নিরাপদ। তাছাড়া বাড়ির যে স্থানটিতে খেজুর রস রাখা হয়েছে সেখানে বাঁদুড়ই এসে দূষিত করে দিয়ে যেতে পারে। তাই বাড়িতে বাঁদুড় বা অন্যান্য পশুর ধরা ছোয়ার বাইরে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে নতুন খামার করার সময়েই বাদুড়মুক্ত স্থান নির্বাচন করা উচিত। আর প্রাদুর্ভাবের এলাকাগুলো সপরিবারেই ত্যাগ করা উচিত।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডালিমের খোসার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
ঢাকার কোথায় ভালো পরিবেশে সাঁতার শেখা যায়
সারা শরীরের রক্ত সঞ্চালন এবং হৃদযন্ত্রে কার্যকলাপ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার চমৎকার উপায় হলো সাঁতার। এক ঘণ্টা সাঁতার কাটা হাড় এবং জয়েন্টগুলোতে কোন নেতিবাচক প্রভাব ছাড়াই শরীরের ক্যালোরি খরচ করতে সাহায্য করে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ব্যথা কমাতে বা শারীরিক সুস্থতাকে ত্বরান্বিত করার জন্যও সাহায্য করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা শারীরিকভাবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন বা দীর্ঘ দিন ধরে আহত ব্যক্তিদের ব্যায়ামের জন্য সাঁতারকে বেছে নিতে বলেন। এছাড়া দুশ্চিন্তা কমিয়ে মানসিক প্রশান্তি লাভের ক্ষেত্রেও সাঁতার বেশ কার্যকর। তাই চলুন জেনে নিই, ঢাকার কোথায় ভালো পরিবেশে সাঁতার শেখা যায়।
ঢাকায় সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিংপুল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার শেখার জন্য ২ হাজার ১০ টাকা দিয়ে ৪৫ মিনিট করে ১৬টি ক্লাস করা যায়। দ্বিতীয় মাসে অনুশীলন করতে চাইলে নবায়ন ফি বাবদ এক হাজার টাকা দিতে হয়। এখানকার শিক্ষার্থীরা ১০০ টাকা দিয়ে সপ্তাহে দুটো করে ক্লাস করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সুইমিংপুলের সদস্য নিতে পারেন ২৬০ টাকা দিয়ে। বিকালের শিফটে সুইমিংপুলের সদস্যদের ফি ছয় মাসের জন্য ৮ হাজার টাকা ও এক বছরের জন্য ১২ হাজার টাকা।
এখানে ভর্তি হওয়া যাবে সাত বছর বয়স থেকে, কিন্তু প্রশিক্ষনার্থীকে লম্বায় কমপক্ষে অবশ্যই চার ফুট হতে হবে। সুইমিংপুলের সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
সৈয়দ নজরুল ইসলাম জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্স, মিরপুর
এই সুইমিংপুলে এক ঘণ্টা করে সাঁতার কাটা যায়। এখানে ভর্তির বয়স কমপক্ষে আট বছর। রবিবার ও সোমবার বাদে প্রতিদিনি খোলা থাকে সুইমিংপুলটি। ভর্তি ফি তিন হাজার টাকা দিয়ে মাসের যে কোন দিন-ই সাঁতার প্রশিক্ষণে ভর্তি হওয়া যাবে। প্রশিক্ষণের মেয়াদ ত্রিশ দিন যেখানে প্রতি সপ্তাহে ক্লাস থাকবে পাঁচ দিন। দ্বিতীয় মাস থেকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হয়। এছাড়া একদিন সাঁতার কাটতে চাইলে এক ঘণ্টার জন্য ২৫০ টাকা। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা সাঁতার শেখার ব্যবস্থা আছে। দশ বছরের নিচে প্রশিক্ষণার্থীর ক্ষেত্রে সাথে একজন অভিভাবক সুইমিংপুলে প্রবেশ করতে পারবেন।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সুইমিংপুল
এই সুইমিংপুলটি শুধুমাত্র ছেলেদের জন্য। সাত বছর বয়স থেকে এখানে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি নেয়া হয়। প্রথম মাসে ভর্তি ফি আড়াই হাজার এবং দ্বিতীয় মাস থেকে দুই হাজার টাকা। মাসের যে কোন দিন ভর্তি হয়ে শুরু করা যাবে ত্রিশ দিনব্যাপি কোর্সটি। সপ্তাহে পাঁচ দিন এক ঘণ্টা করে ক্লাস। সাপ্তাহিক বন্ধ মঙ্গলবার, বুধবার এবং সোমবার বিকালে। শুধুমাত্র যারা সাঁতার জানেন তাদের একদিনের সাঁতার অনুশীলনের জন্য ঘণ্টা প্রতি নেয়া হয় ২০০ টাকা।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত আবেগ হতে পারে শরীরের ক্ষতির কারণ
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
লবণের একাধিক প্রকারভেদ থাকলেও সাধারণভাবে শব্দটির মানে হিসেবে সবাই খাবার লবণকেই বুঝে নেয়। সোডিয়াম ক্লোরাইড বৈজ্ঞানিক নামে এই খনিজ উপাদান মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীকূলের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি এবং খাবারের মৌলিক স্বাদগুলোর মধ্যে একটি।
বিভিন্ন রান্নায় অপরিহার্য সাদা রঙের এই খাদ্য উপাদানটি শুদ্ধতার নিরীক্ষায় হেরে যায় গোলাপি রঙের হিমালয় লবণের কাছে। পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণও বিভিন্ন রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া এর বিশ্বব্যাপী প্রসারের পেছনে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর অসামান্য উপকারিতা দায়ী। এই হিমালয় লবণ কড়চাই নিয়ে এবারে ফিচার।
পিংক সল্ট: পৃথিবীর সবচেয়ে শুদ্ধ লবণ
হিমালয় লবণ পাকিস্তান অংশের পাঞ্জাব থেকে উত্তোলন করা শিলা লবণ। প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর আগে হিমালয়ের স্ফটিক লবণের সমুদ্রতল লাভায় নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তা সহস্রাব্দ ধরে চাপা পড়ে ছিল বরফের নিচে, যা এটিকে ক্রমাগত বাড়তে থাকা দূষণ থেকে রক্ষা করেছিল। এখন এটি একমাত্র অপরিশোধিত, প্রক্রিয়াবিহীন ও প্রাকৃতিকভাবে হাতে উত্তোলন করা হয় লবণ। আর এভাবেই এটি পরিণত হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ লবণে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
সমুদ্রতলের বিশুদ্ধ অবস্থা হিমালয়ের লবণকে প্রক্রিয়াজাত টেবিল লবণের চেয়ে বেশি খনিজ সমৃদ্ধ করে তুলেছে। ফসফরাস, ব্রোমিন, বোরন ও জিঙ্কসহ এতে প্রায় ৮০ খনিজ উপাদান রয়েছে। এর স্ফটিক পাথরের হওয়ায় সূক্ষ্ম টেবিল লবণের চেয়েও বড় ও স্বল্প পরিমাণে সোডিয়াম সমৃদ্ধ।
স্থানীয়দের মতে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সেনাবাহিনী সর্বপ্রথম হিমালয় লবণের মজুত আবিষ্কার করে। ১২০০ দশকে পাঞ্জাব গোত্রের জানজুয়ার লোকেরা সর্বপ্রথম খনি থেকে লবণ উত্তোলন করে।
পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
অম্লতা হ্রাস
হিমালয় লবণ একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করে। এটি শুধু গ্যাস ও অ্যাসিডিটি দূর করে না, বদহজমও সারায়।
রক্তচাপ কমানো
হিমালয় লবণ প্রাকৃতিকভাবে আয়োডিনে সমৃদ্ধ, যা খাদ্য কোম্পানিগুলো কৃত্রিমভাবে টেবিল লবণে যোগ করে। হিমালয় লবণের প্রাকৃতিক আয়োডিন শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য তৈরি, অন্ত্রকে পুষ্টি শোষণ করতে ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে খুব কার্যকর।
হাড় গঠন
পিংক লবণ হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে কারণ এতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো বেশ কিছু খনিজ রয়েছে যা হাড়ের গঠন ও ঘনত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০ শহর
গলার সংক্রমণ
এর প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের কারণে, হিমালয় লবণ গলনালীতে যে কোনও ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। গরম পানিতে লবণটি দ্রবীভূত করে গার্গেল করলে ফোলাভাব সাড়তে পারে এবং যেকোনো জ্বালাপোড়া প্রশমিত হতে পারে।
ত্বককে নরম ও ময়শ্চারাইজ করে
গোলাপী লবণ দিয়ে গোসল করলে ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা বাড়তে পারে। এভাবে ত্বক নরম ও কোমনীয় হয়ে উঠবে। এতে কেবল মুখের ত্বকের মৃত কোষগুলোর বৃদ্ধি বন্ধ হবে না, ত্বক পূর্বাপেক্ষা আরও মসৃণতা পাবে।
বাংলাদেশে হিমালয় লবণ
চওড়া দাম থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব জুড়ে হিমালয় লবণের মার্কেট ক্রম বর্ধমান। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মত বাংলাদেশে হিমালয় লবণের বাজার খুব একটা প্রসার না পেলেও এখানকার অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের মতই বাড়ছে এর দাম। খুচরা মূল্যে প্রতি কেজির দাম ২১০ থেকে ২৯০ টাকায় বর্তমানে সরাসরি ভোক্তারা এই লবণ কিনতে পারছেন। তবে অনলাইন বাজারগুলোতে আকর্ষণীয়ভাবে প্যাকেজিং করা লবণের দাম তোলা হচ্ছে আরও ওপরে।
আরও পড়ুন:অতিরিক্ত আবেগ হতে পারে শরীরের ক্ষতির কারণ
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে পিংক সল্ট-এর ১০০ গ্রামের দামই ৫ থেকে ৮ ডলারে বিক্রি হয় যা সাধারণ খাবার লবণের চেয়ে বিশ গুণ বেশি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হিমালয় লবণের মূল্য পড়ছে প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ৬৫ রুপি। স্বনামধন্য ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন-এ হিমালয় লবণের মূল্য প্রতি ৪০০ গ্রামের জন্য পড়ছে ১৫০ রুপি।
পরিশেষে বলা যায়, পুষ্টিগুণ অনুযায়ী সর্ব সাকুল্যে পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণ একটি সুষম খাদ্য উপাদান হতে পারে। মূল্যের পার্থক্যে সাধারণ খাবার লবণের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম সহজলভ্য হলেও পর্যটন শিল্প কেন্দ্রীক শহরগুলোতে অভিনব খাবারের রেসিপিতে এটি একটি অভিজাত সংযোজন।
অতিরিক্ত আবেগ হতে পারে শরীরের ক্ষতির কারণ
রাগ, ভয় ও দুঃখ মানুষের খুব স্বাভাবিক আবেগের পরিস্ফুটন হলেও অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় এগুলো শরীরের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। এগুলোকে চিন্তা করা যায় অনেকটা মানুষের ভেতরে বাস করা ভয়ঙ্কর কোন দানবের সাথে। ভুলবশত হঠাৎ ছাড়া পেয়ে গেলে ভেতরে লুকিয়ে থাকা এই দানবগুলোই মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত এই আবেগগুলোর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর। তাই এগুলোর অনিয়ন্ত্রিত প্রকাশভঙ্গি এন্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ডোজের মতই মানবদেহের ওপর নেতিবাচক ভূমিকা রাখে। এই ফিচারের মাধ্যমে জানা যাবে সেই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো।
অতিরিক্ত আবেগের শারীরিক প্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত রাগ
যখন কেউ অত্যাধিক রাগান্বিত হয় তখন অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলো শরীরে অ্যাড্রেনালিন এবং কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ করে। শারীরিক পরিশ্রমের প্রস্তুতির জন্য মস্তিষ্ক অন্ত্রের দিকে সঞ্চালিত রক্ত সরিয়ে পেশীর দিকে সঞ্চালন করে। ফলশ্রুতিতে হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ও শ্বাস-প্রশ্বাস বৃদ্ধি পায়, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক ঘামতে থাকে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
অতিরিক্ত ক্রোধ থেকে স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যায় মধ্যে আছে মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, অনিদ্রা, উৎকন্ঠা বৃদ্ধি, বিষন্নতা, উচ্চ রক্তচাপ, একজিমা, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক।
প্রচন্ড দুঃখের অনুভূতি
দুঃখিত বোধ করাটা যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় তবে তা বিষন্নতায় রূপ নিতে পারে। এর ফলে সারাক্ষণ ক্লান্ত বোধ বা রাতে অনিদ্রা হতে পারে। এ রকম বিষন্নতায় মাথাব্যথা, পেটব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। প্রবল মাত্রায় এটি কখনও কখনও স্নায়বিক রোগেরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণত কোন কাজে মনোনিবেশ করতে অক্ষমতা, স্মৃতিশক্তির সমস্যা ও সিদ্ধান্ত নেয়ার অসুবিধার মতো লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত হয়।
দীর্ঘস্থায়ী ভীতি
এর শুরুটা হয় বাইরের কোন উৎস থেকে পাওয়া যে কোন ধরনের হুমকির মস্তিষ্কের সংবেদনশীল সিস্টেমগুলোকে আলোড়িত করার মাধ্যমে। মস্তিষ্কের হুমকি সনাক্তকরণ অংশগুলো উদ্বেগ বা ভয়জনিত উত্তেজনার স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। এই পরিবর্তনগুলোই দীর্ঘ পরিসরে ব্যাধিতে পরিণত হয়। দীর্ঘস্থায়ী ভীতির ফলে মাথাব্যথা রূপ নেয় মাইগ্রেনে, শরীরের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় পরিণত হয় এবং হালকা শ্বাসকষ্ট পরিণত হয় হাঁপানিতে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০ শহর
স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক আবেগের প্রভাব
সুখের অনুভূতি
আনন্দ ও সুখের দিগ্বিজয়ী অভিব্যক্তি হাসিতে ম্লান হয়ে যায় সকল বিবাদ ও কষ্ট। হৃদয়গ্রাহী হাসি শারীরিক উত্তেজনা এবং চাপ থেকে মুক্তির প্রতিষেধক যা দেহের পেশীগুলোকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শিথিল রাখে। স্ট্রেস হরমোন হ্রাস এবং রোগ প্রতিরোধক কোষ বৃদ্ধির মাধ্যমে হাসি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত রাখে। হাসি শরীরে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসরণ করে, যা সামগ্রিকভাবে সুস্থতার অনুভূতি বাড়ায়।
রক্তনালীগুলোর কার্যকারিতা উন্নত করে এবং রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে হাসি যা হার্ট অ্যাটাক এবং অন্যান্য হৃদপিণ্ড সংক্রান্ত সমস্যা থেকে রক্ষা করে। দিনে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাসি প্রায় ৪০ ক্যালোরি বার্ন করতে পারে, যা এক বছরে তিন থেকে চার পাউন্ড ওজন হারানোর জন্য যথেষ্ট। সুখী মানুষদের রক্তে ক্রমাগতভাবে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কম থাকে তাই তাদেরকে বিবাদে জড়াতে দেখা যায় না।
আশাবাদের দৃষ্টিভঙ্গি
বিষয়টি মনস্তাত্ত্বিক হলেও দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা ব্যাপক। কারণ এটি মূলত হতাশার বিপরীত তাই এক্ষেত্রে হতাশা থেকে উদ্ভূত স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো এখানে থাকে না। পাশাপাশি আশাবাদীরা নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ইতিবাচক থাকে বলে প্রতিদিনি নতুন উদ্যম নিয়ে নিজেদের যত্ন নেয়। নিজের মধ্যে ভালো কিছুর আশা জন্মানোর অনুশীলন করাটা দুশ্চিন্তা দূর করার সেরা উপায়। আর তাই এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলশ্রুতিতে স্নায়ুতন্ত্র বিপজ্জনক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
আরও পড়ুন: হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়
সর্ব সাকূল্যে নেতিবাচক আবেগের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আবেগের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে জীবন ধারণের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি। যে কোন পরিস্থিতিতে আবেগ প্রকাশের আগে ভালো ভাবে চিন্তা করা, কৃতজ্ঞতা বোধ ও ক্ষমার চর্চা করা এবং সর্বপরি, আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার মাধ্যমে জীবন ধারণকে স্বাস্থ্যকর করা যেতে পারে।
হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়
প্রেসার সিস্টোলিকে ৯০ মিলিমিটার পারদ চাপ এবং ডায়াস্টোলিকে ৬০ মিলিমিটার পারদ চাপ হলো নিচের দিকে রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা। এর কম হলেই তখন লো প্রেসার জনিত বিভিন্ন জটিলতা শুরু হয়। বসা বা শুয়ে থাকা থেকে দাঁড়ানোর সময় প্রেসার কমে যাওয়া লো প্রেসারের সবচেয়ে সাধারণ রূপ। বয়স্ক লোকদের সাধারণত খাওয়ার পরে হঠাৎ করে প্রেসার কমে যেতে দেখা যায়। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত রক্তপাত ও গুরুতর সংক্রমণের জন্য লো প্রেসার অনেক সময় জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে। চলুন জেনে নেই হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে কি করতে হবে।
হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে করণীয়
প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ
সোডিয়াম দ্রুত প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বেশি সোডিয়াম গ্রহণ হৃদরোগেরও কারণ হতে পারে। তাই শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে আগে থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যে, হঠাৎ সোডিয়াম খাওয়া ঠিক হবে কি না।
লবণাক্ত খাবার প্রেসার বাড়াতে পারে। টিনজাত স্যুপ, পনির, আচারযুক্ত আইটেম এবং জলপাই ইত্যাদি লবণাক্ত খাবার হিসেবে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
অপ্রক্রিয়াজাত খাবারে টেবিল লবণ যোগ করা যায়। এতে কতটা লবণ খাওয়া হচ্ছে তার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার প্রেসার বৃদ্ধি করে। ফোলেট-সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো- মটরশুটি, মসুর ডাল, শাক, ডিম এবং সাইট্রাস ফল যেমন লেবু, কমলা।
ক্যাফেইনযুক্ত চা বা কফি কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে এবং হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে অস্থায়ীভাবে প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন:
মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
মাইগ্রেন হলো মাথাব্যথার সর্বোচ্চ পর্যায় যেখানে মাথার যে কোন এক পাশে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথার সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনেকে অসুস্থ বোধ করেন। এমনকি আলো বা শব্দ সহ্য করতে পারেন না। মস্তিষ্কের রাসায়নিক গঠনে, স্নায়ু এবং রক্তনালীতে অস্থায়ী পরিবর্তনের ফলস্বরূপ এরকম ব্যথার আধিক্য হতে পারে। এছাড়া জিনগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেও মাইগ্রেন বিভিন্ন মানুষের মধ্যে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। কখনো প্রচণ্ড শারীরিক চাপ, ক্লান্তি ও নির্দিষ্ট কোন খাবার বা পানীয় গ্রহণ মাইগ্রেন ব্যথার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। আজ জানবো, কিভাবে এই মাইগ্রেনের ব্যথা কমানো যায়।
মাইগ্রেনের ব্যাথা কমানোর উপায়সমূহ
অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা
আলো এবং শব্দ অধিকাংশ সময় মাইগ্রেন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম একটি শান্ত ও অন্ধকার জায়গা খুঁজে বের করা জরুরি। সম্ভব হলে অন্ধকার ঘরে কিছু শুয়ে থাকা অথবা ঘুমের চেষ্টা করা যেতে পারে।
অনেক সময় সান্ধ্যকালীন পরিবেশে শান্ত প্রকৃতির গান মাইগ্রেনের ব্যথা উপশমে কাজ দেয়।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
অ্যারোমাথেরাপিতে ব্যবহৃত কিছু তেল আছে যেগুলো মাথার ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে যাদের সুগন্ধি সংবেদনশীলতা আছে তারা এই তেলগুলো ব্যবহার করার আগে নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজন যে সেগুলোর গন্ধে মাথাব্যথা আরও বেড়ে যাচ্ছে কি না। এই তেলগুলো হলো- ল্যাভেন্ডার, পুদিনা, মৌরি, রসুন এবং গোলাপের তেল।
আলোক সংবেদনশীলদের জন্য সানগ্লাস পড়াটা আবশ্যক। যখনই আলো বিরক্তিকর হয় তখনই সানগ্লাস পড়ে ফেলা দরকার, এমনকি বাড়ির ভিতরে থাকলেও।
সানগ্লাসের উপরে ফাঁকা অংশ দিয়ে আলো প্রবেশ ঠেকানোর জন্য ক্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে। সব মিলিয়ে শ্রবণ, ঘ্রাণ এবং দৃষ্টি; এই তিন ইন্দ্রিয়ের জন্য অনুকূল পরিবেশের ব্যবস্থা মাইগ্রেনের ব্যথা হাল্কা করতে পারে।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
গরম বা ঠান্ডা পরশ
প্রচণ্ড গরমের সময় ঠান্ডার পরশ আর শীতকালে গরমের পরশ শরীর ও মন দুটোকেই আরাম দেয়। বাইরে থেকে ঘরে আসার পর বাইরের অতিরিক্ত শব্দ, অধিক পরিশ্রমের কারণে দেহ ও মন দুটোরই খুব খারাপ অবস্থা থাকে। এ অবস্থায় মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ সময় গরম স্নান বা ঝরনা পেশী শিথিল করে মুড ভালো করে দিতে পারে। সাথে মাথা ব্যথাটাও অনেকটা কমে যায়।
পেশী সংকোচনের কারণে মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘাড় বা মাথার পিছনের অংশে বা সর্বত্র তাপ প্রযোগটা অনেক কাজে দেয়।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
উচ্চ রক্তচাপ এমন একটি অবস্থা যেখানে মানবদেহের অভ্যন্তরে ধমনীর প্রাচীরে রক্তের দীর্ঘমেয়াদী অতিরিক্ত চাপের ফলে চূড়ান্তভাবে হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। রক্তচাপ হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করা এবং ধমনী সরু হওয়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। পারদের মিলিমিটারে রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকসহ গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করণীয়গুলো নিয়ে এবারের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ফিচার।
যে খাবারগুলো উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
১। সাইট্রাস ফল
জাম্বুরা, কমলা এবং লেবুর মত সাইট্রাস ফলগুলোতে রক্তচাপ-হ্রাসের শক্তিশালী প্রভাব আছে। এগুলোতে ভিটামিন, খনিজ এবং উদ্ভিদ যৌগ রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপের মতো হৃদরোগের ঝুঁকির কারণগুলি হ্রাস করে যা হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
২। তরমুজ, কলা
তরমুজ ও কলা হলো পটাসিয়ামের আধার যা একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। এটি শরীরকে সোডিয়াম থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে এবং রক্তনালীতে চাপ কমায়।
আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়
৩। শিম
শিম ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস। খনিজ উপাদানে ভরপুর এই সবজি রক্তনালীগুলোকে শিথিলকরণে ভূমিকা রাখে।
৪। বাধাকপি
এটি সেই সুপারফুডগুলোর মধ্যে একটি যেগুলোতে পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রচুর ভিটামিন সি এবং ফাইবার রয়েছে। এগুলো উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়।
৫। রসুন
রসুন প্রাকৃতিক ওষুধের নামান্তর। এই প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকে রক্তনালীগুলোর প্রসারণকে পরিবর্তন করে, ফলে রক্তচাপও পরিবর্তন হয়। কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুনের বেশ সহজলভ্যও বটে।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
৬। মটরশুটি এবং মসুর ডাল
মটরশুটি এবং মসুর ডালের ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
মোটর বাইক রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার
নিরাপত্তা কোনো অভিজ্ঞতা বা যানবাহনের ধরনের উপর নির্ভর করে না। বিশেষ করে মোটর বাইক ক্রয়ের পর নিরাপত্তার জন্য অবধারিত বিষয় রাইডিং সেফটি গিয়ারে বিনিয়োগ করাটা অতিরঞ্জিত কোন ব্যাপার বা বিলাসিতা নয়। ব্যয়বহুল হওয়ার জন্য অনেকেই এতে বিনিয়োগ করতে গড়িমসি করেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে, একজন মানুষের জীবনের চেয়ে সেফটি গিয়ারের মূল্য বেশি নয়। তাই মোটর বাইক রাইডারদের উদ্দেশ্য করে আজকের ফিচার সেফটি গিয়ার নিয়ে।
বাইক রাইডিং-এর সময় সেফটি গিয়ারের প্রয়োজনীয়তা
শরীরের বিভিন্ন অংশের সুরক্ষা
প্রতিটি সেফটি গিয়ার শরীরের নির্দিষ্ট অংশ রক্ষা করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র একটি হেলমেট শরীরের হাড়ভাঙা বা অন্যান্য আঘাত থেকে নিস্তারের নিশ্চয়তা দিতে পারে না।
হেলমেট ছাড়াও সেফটি গিয়ারের মধ্যে আছে হাঁটু এবং কনুই গার্ড, চেস্ট আর্মার, রিফ্লেক্টর, জ্যাকেট, বুট এবং গ্লাভ্স।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ড ডে ট্যুর: একদিনে ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মহামায়া লেক
দীর্ঘমেয়াদে অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ বাঁচাতে
মোটর বাইকের দুর্ঘটনা অন্য যে কোন যানবাহনের দুর্ঘটনা থেকে অত্যধিক গুরুতর হয়ে থাকে। তাছাড়া কখনো ছোট্ট একটি আঘাতও বড় কোন বিপদের কারণ হয়ে দাড়ায়। আর সেই বিপদ সামাল দিতে পাহাড়সম খরচের সম্মুখীন হতে হয়। অনেকেই মোটর বাইক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালের খরচ চালাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সঠিক সেফটি গিয়ারে বিনিয়োগ এই অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা ও খরচ থেকে বাঁচাতে পারে।
কিভাবে সেফটি গিয়ার মোটর বাইক রাইডারের দেহকে রক্ষা করে
মাথা বাঁচাতে হেলমেট
হেলমেট পরা কখনই একজন রাইডারের জন্য ঐচ্ছিক বিষয় নয়। হেলমেট ছাড়া মাথা সমূহ বিপদের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায় বিধায় গুরুতর আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। মানবদেহে মাথা সবচেয়ে সংবেদনশীল আর এ কারণেই বিচারব্যবস্থায় হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো বে-আইনি।
আরও পড়ুন: সাজেক ভ্রমণ: ঘুরে আসুন মেঘে ঢাকা স্বর্গে
দুই পায়ের নিরাপত্তায় বুট
যে কোন দুর্ঘটনায় পা সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থানে থাকে। মোটর বাইক ভালোভাবে চালানোর সময় ভারসাম্যের জন্য দুই পায়ের ভূমিকা অপরিসীম। পাশাপাশি আসন্ন বিপদ থেকে রক্ষার নিমিত্তে পূর্ব সতর্কতায়ও পায়ের ব্যবহার করেন মোটর বাইক রাইডাররা। তাই পা থাকতে হবে যথাসম্ভব সুরক্ষিত বন্ধনীতে। আর এর জন্য আছে বিশেষভাবে ডিজাইন করা বুট। এগুলো পড়ে যাওয়া বা অন্য রাইডারের সাথে সংঘর্ষের সময় পা-এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
হাড়ভাঙা ও ক্ষত-বিক্ষত হওয়া থেকে বাঁচাতে পোষাক
মোটরসাইকেল-এর দুর্ঘটনাগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে আরোহীর হাড় ভাঙ্গা ও শরীর ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার দিকে ধাবিত করে। মোটর বাইক রাইডারদের জন্য বিশেষ ভাবে বানানো জ্যাকেট, চেস্ট গার্ড, প্যান্ট এই দুর্ঘটনার গুরুতর প্রভাব থেকে রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: শীতের মৌসুমে বাইক রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস
শারীরিক ব্যায়ামের কোন সময় নেই। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ক্ষেত্রেই ব্যায়ামের প্রয়োজন। তবে শীতের সময় ব্যায়ামটা বেশ উপভোগ্য। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে এ সময়টাতে ঘর থেকে বের হওয়াটা বেশ শীতল হিমালয় জয় করার মতই হয়ে যায়। আর সেটা যদি হয় বাইক রাইডিং, সেখানে আরও অনেক কিছু রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপার চলে আসে। সেই প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দিতেই এবারের ফিচার শীতে বাইক রাইডিং নিয়ে।
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড-এর সমস্যাগুলো
ত্বক ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসা
প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়া বাইক চালানোর সময় চামড়ায় রীতিমত সূঁচের মত ফোটে। বাইক দ্রুত গতিতে সামনে চলার সময় মুখসহ শরীরের অনাবৃত অংশগুলো বিপরীত দিক থেকে ধেয়ে আসা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে। বাতাসটা কতটুকু ঠান্ডা তার থেকে ত্বকের ক্ষতির দিকটা নির্ভর করে কতক্ষণ ধরে বাইক চলছে তার উপর। খুব স্বল্প সময়ের তীব্র শীতও শরীরের বিভিন্ন অংশের জন্য হুমকি হতে পারে।
অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ বাইক চালানোয় শরীর গরম হয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায়; এমনকি শীতেও। এই ঘামও ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাছাড়া স্থান ভেদে বাতাসের গতিবেগের উপর নির্ভর করছে কতক্ষণ চোখ খোলা রেখে বাইক চালিয়ে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা শীতের সবজি
পিচ্ছিল রাস্তাঘাট
শীতে শিশির জমে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। মাঝে মাঝে কখনো হাল্কা বৃষ্টিপাত শীতের কোন রৌদ্রজ্জ্বল দিনে যে কোন বাইক রাইডারকে চমকে দেয়। তাই বাইকের চাকা যত ভালোই হোক না কেন; ভেজা চাকা নিয়ে কোন রকমে হয়ত সোজা অনেকটা পথ ছুটে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাঁক নেয়া বা ইউ টার্ন নিয়ে ঘুরে আসা? অবশ্যই কোন ভালো ধারণা হবে না। বাংলাদেশে তুষারপাত অমাবস্যার চাঁদের মত হলেও বাইক নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণে যাবার ক্ষেত্রে বিশেষত কোন মফস্বল শহরে বা গ্রামের বিস্তীর্ণ ঘাসে ভেজা মাঠ পেরবার সময় অত্যাধুনিক টায়ারের কাটাগুলোও অদ্ভূত আচরণ করতে পারে।
দৃষ্টিগোচরতা
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকেই শুরু হতে থাকে ছোট দিন ও দীর্ঘ রাতের মৌসুম। তার মানে কম আলোতে বা কখনো সম্পূর্ণ অন্ধকারে বাইক চালানোটা হরহামেশাই ঘটবে। এমনকি বাইকের হেডলাইট এবং টেললাইটের উপরও এ সময় পুরোপুরি নির্ভর করা দুষ্কর। যেহেতু ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন ছোট-বড় গাড়ির সাথে রাস্তা শেয়ার করতে হচ্ছে, তাই কুয়াশার কারণে ক্ষণিকের অন্ধত্বও অনেক বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। এছাড়া খোলা ম্যানহল, রোড ব্রেকার, রাস্তার পাশের আইল্যান্ড, নুয়ে পড়া গাছের ডালপালা, ও ল্যাম্প পোস্টের পাশাপাশি হঠাৎ রাস্তা পারাপার হওয়া মানুষের ঝামেলা তো আছেই।
পড়ুন: নেপাল ভ্রমণ: শত বছরের তীর্থস্থান ঘুরতে হিমালয়ের দেশে
লবঙ্গের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও ঝুঁকি
লবঙ্গ গাছের ফুলের শুকনো কুঁড়িই হলো লবঙ্গ। লবঙ্গ গাছের বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিয়াম অ্যারোমাটিকাম। এটি একটি চিরহরিৎ উদ্ভিদ যা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় পরিবেশে বৃদ্ধি পায়। লবঙ্গ ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপপুঞ্জের (বা মোলুকাস) স্থানীয় এবং সাধারণত মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এশিয়ান, আফ্রিকান, ভূমধ্যসাগরীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির লবঙ্গ রান্নায় স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। এর ভেষজ ও নানাবিধ পুষ্টিগুণের কারণে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার, পানীয়, সাবান, টুথপেস্ট, ওষুধ, সুগন্ধী ইত্যাদিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। চলুন, লবঙ্গের উপকারিতার পাশাপাশি জেনে নিই কোন কোন ক্ষেত্রে তা ঝুঁকিপূর্ণ।
লবঙ্গের উপকারিতা
পেটের সমস্যা সমাধান
হজমশক্তি বাড়াতে এবং পাকস্থলি ও অন্ত্র সম্পর্কিত জটিলতা নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ অনেক কাজ দেয়। তদুপরি, ভাজা লবঙ্গ খাওয়া এমনকি তাদের চেতনানাশক বৈশিষ্ট্যের কারণে বমি হওয়া বন্ধ করতে পারে। এটি আলসারের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর শোধনকারী হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
যকৃতের সুরক্ষা
লবঙ্গে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা যকৃতকে রক্ষা করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে বিপাক যকৃতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমিয়ে ফ্রি র্যাডিক্যাল উৎপাদন করে এবং লিপিড প্রোফাইল বাড়ায়। এক্ষেত্রে, লবঙ্গের নির্যাস তাদের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
লবঙ্গ থেকে নির্যাস নির্দিষ্ট উপায়ে ইনসুলিন তৈরি করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
হাড় সংরক্ষণ
লবঙ্গের হাইড্রো-অ্যালকোহলিক নির্যাসগুলো হাড়ের ঘনত্ব এবং হাড়ের খনিজ উপাদান সংরক্ষণে সহায়ক হতে পারে। এমনকি অস্টিওপোরোসিসের ক্ষেত্রে হাড়ের প্রসারণ শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
আয়ুর্বেদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিকাশ ও সুরক্ষায় কার্যকরী একটি উদ্ভিদ হল লবঙ্গ। লবঙ্গের শুকনো ফুলের কুঁড়িতে এমন যৌগ রয়েছে যা শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
মাড়ির রোগ যেমন মাড়ির প্রদাহ এবং পেরিওডোনটাইটিস কমানোর জন্য লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে। লবঙ্গের নির্যাস মুখের রোগজীবাণুগুলোর বৃদ্ধিকে উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে, যা মুখের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। দাঁতের ব্যথার জন্য, দাঁত তোলার সময় ব্যথা নিয়ন্ত্রণের জন্য লবঙ্গ সরাসরি মাড়িতে প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া লবঙ্গ মুখ ও গলার প্রদাহের জন্য প্রতিরোধক হিসেবে ত্বকে ভালো কাজ দেয়।
মাথাব্যথা নিরাময়
লবঙ্গ ব্যবহারে মাথাব্যথা কমে যেতে পারে। কয়েকটি লবঙ্গের পেস্টের সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে তা এক গ্লাস দুধের সাথে যোগ করে তৈরি মিশ্রণ দ্রুত ও কার্যকরভাবে মাথাব্যথা কমায়।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়