������������������
শাবিপ্রবিতে হামলার প্রতিবাদে ববি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
মানববন্ধন চলাকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছে। উপাচার্যের নির্দেশে তাদের ওপর পুলিশের হামলা ও গুলিবর্ষণ বর্বরোচিত কাণ্ড। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এই ঘটনার বিচার চাই আমরা, তা না হলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও কঠোর আন্দোলনে নামবে।’
আরও পড়ুন: ৬ মাস পর ভিসি পেল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলিশা মুনতাজের সঞ্চালনায় এসময় গণিত বিভাগের ফরহাদ হোসেন, বাংলা বিভাগের সুমাইয়া আফরিন, সুজয় শুভসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।
পরে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের ভোলা সড়কের মোড় প্রদক্ষিণ করে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে বিক্ষোভ করেন।
বরিশালে হাতকড়াসহ আসামি ছিনতাই, ৩ ঘণ্টা পর আবার আটক
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল স্টেশনের পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়ে সোমবার রাতে আটক এক যুবককে ছিনিয়ে নিয়েছে স্থানীয় কিছু যুবক। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল নগরীর স্পিডবোট টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তারা শহিদুল নামে এক আসামিকে আটকের জন্য কয়েকজন যুবক ও স্পিডবোট মালিক সমিতির আয়োজনে একটি রেস্তোরাঁর পার্টিতে অভিযান চালায়।
তারা শহিদুলকে হাতকড়া পরিয়ে দিলে তারেকসহ প্রায় ৫০ যুবক তাদের ঘেরাও করে এবং আসামিকে ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ। তারা পুলিশের ওপর হামলারও চেষ্টা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভূঁইয়া জানান, বিএমপি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও একটি অতিরিক্ত দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং শহিদুলকে আবার আটক করে।
আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কোম্পানীগঞ্জে নারীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য, স্বামী আটক
সেপটিক ট্যাংক থেকে বাবার লাশ উদ্ধার, ছেলেসহ আটক ২
বরিশালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ৩
বরিশালের মুলাদীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রবাসীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে মুলাদী মীরগঞ্জ সড়কের কাজিরহাট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- বড়ইয়া কাজিরচর এলাকার খালেক হাওলাদারের ছেলে ইদ্রিস হাওলাদার (৬০), একই এলাকার কালাই নলীর ছেলে হারুন নলী (৪৫) ও মোনাসেফ আলীর ছেলে ওমান প্রবাসী রাজীব নলী (২৩)।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা নিহত
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, প্রবাসীসহ ওই তিনজন মোটরসাইকেলে করে মীরগঞ্জ থেকে বড়ইয়া কাজিরচর যাচ্ছিলেন। পথে কাজীরহাট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তিন জন নিহত হন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ বন্ধু নিহত
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: যমজ মেয়ের পর এবার ভেসে এলো মায়ের লাশ!
বরগুনার তালতলী উপজেলার আগাপাড়া এলাকার দুই যমজ মেয়ের লাশের পর এবার নদীতে ভেসে এলো তাদের মা শিমু আক্তারের লাশ। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর বুধবার দুপুরে সুগন্ধা নদীতে তার লাশ ভেসে উঠে। খবর পেয়ে শিমুর ভাই হান্নান গিয়ে তার বোনের লাশ শনাক্ত করেন।
বুধবার সন্ধ্যায় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
এদিকে, শিমুর লাশ তার দুই যমজ কন্যার কবরের পাশেই দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দাফনের কাজ সম্পন্ন করে।
আরও পড়ুন: লঞ্চে আগুন: বাবা-মেয়ে দগ্ধ, বাঁচতে পারেনি মা
জানা গেছে, বরগুনার তালতলী উপজেলার আগাপাড়া এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে শিমু তার দুই যমজ মেয়ে লামিয়া-সামিয়া ও মা দুলু বেগমকে নিয়ে ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনা আসার জন্য এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে রওয়ানা দেন। লঞ্চে ওঠার পরে শিমু তার বৃদ্ধ বাবা আব্দুল আজিজ হাওলাদারের কাছে ফোন করে বাড়ি আসার খবর জানায়। সকালে বৃদ্ধ বাবার কাছে খবর আসে ওই লঞ্চেই আগুন লেগেছে।
লঞ্চে আগুনের ঘটনায় আব্দুল আজিজের দুই নাতনি পুড়ে মারা গেছেন। তাদের লাশ পেয়ে যথারীতি দাফন করেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে তার মেয়ে শিমু নিঁখোজ ছিলেন। স্ত্রী দুলু বেগম (৫৫) হাসপাতালের আইসিউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এ দিকে শিমুর স্বামী রবিউল দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে হারিয়ে এখন দিশেহারা।
সাংবাদিকদের দেখে আব্দুল আজিজ হু-হু করে কেঁদে উঠে বলেন, ‘মোর নাতীর (নাতনী) পোড়া লাশের পাশে মাইয়াডার লাশ। এ করুণ অবস্থা চোহের সামনে কেমনে সই। এ কেমন বিচার করল আল্লাহ্। মুই কি ভুল হরছি আল্লাহ’র ধারে, যে হেই ভুলের জন্য আল্লাহ বড় শাস্তি দিল মোরে। এ কষ্ট মুই কেম্মে সমু।’ এ কথা বলে চিৎকার করতে করতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
আরও পড়ুন: চলন্ত লঞ্চে আগুন: বরগুনায় গণকবরে অজ্ঞাত ২৩ লাশ দাফন
শিমুর ভাই হান্নান বলেন, ‘প্রতিদিনই বোনের লাশের খোঁজখবর নিতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর ঘটনাস্থলে যেতাম। বুধবার জানতে পারি দুই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন সংবাদ পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি আমার বোনের লাশ মাটিতে পড়ে আছে। জেলা প্রশাসনের কাছে বোনের সকল তথ্য দিলে, প্রশাসন আমার কাছে বোনের লাশ বুঝিয়ে দিলে আমি বাড়িতে নিয়ে আসি।’
তালতলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. কাওসার হোসেন জানান, নিহতদের পরিবারকে দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
লঞ্চে আগুন: সুগন্ধা নদীতে তৃতীয় দিনের মতো চলছে উদ্ধার অভিযান
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজদের সন্ধানে টানা তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, সুগন্ধা নদীতে ঘটনাস্থলের অংশ পাশের এলাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নদী থেকে নতুন করে আর কোন মরদেহ উদ্ধার হয়নি।’
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব পালন কারী কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ২৫ জনের তালিকা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চলন্ত লঞ্চে আগুন: বরগুনায় গণকবরে অজ্ঞাত ২৩ লাশ দাফন
এর আগে লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডে নিহত অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৩ জনের লাশ শনিবার বেলা ১২ টায় বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী সরকারি গণকবরে দাফন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার গভীর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার উপকূলে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে ৮০০ যাত্রী নিয়ে ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
শনিবার রাত পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ৭০ জনের বেশি আহত হয়েছেন এবং তাদের অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পড়ুন: ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩৩ মরদেহ বরগুনায় পৌঁছেছে
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩০ জনের জানাযা সম্পন্ন
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩০ জনের জানাযা সম্পন্ন
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ‘এমভি অভিযান ১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩০ জনের জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে বরগুনা সার্কিট হাউজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলার পোটকাখালী কবরস্থানে নিহতদের দাফনের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে, বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোট ৩৭ জনের মরদেহ বুঝে নেয় বরগুনা জেলা প্রশাসন। তার মধ্যে সাত জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, এখনো পর্যন্ত কতজন নিখোঁজের নির্দিষ্ট তথ্য জেলা প্রশাসনের কাছে নেই, তবে তথ্য সংগ্রহের জন্য সেল গঠন করা হয়েছে। আমরা স্বজনদের আহ্বান জানিয়েছি নিখোঁজের তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে। দু’একদিনের মধ্যে নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য জানা যাবে। যদি কেউ ডিএনএ নমুনা নিয়ে আসেন তবে শনাক্ত করে তাকে পরবরর্তীতে কবর শনাক্ত করে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩৩ মরদেহ বরগুনায় পৌঁছেছে
এর আগে রাত পৌনে ১২টার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছায় লাশবাহি গাড়ি। সারিসারি মৃতদেহ নামিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যান স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন রেডক্রিসেন্ট বরগুনার সদস্যরা। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্নায় ভেঙে পড়েন অপেক্ষমান স্বজনরা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার গভীর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার উপকূলে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে যাত্রী নিয়ে ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আরও একজন মারা যান। এতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪০ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩৩ মরদেহ বরগুনায় পৌঁছেছে
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৩৩ মরদেহ বরগুনায় পৌঁছছে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ইউএনবিকে জানান, শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে লাশবাহী ট্রাকে করে মরদেহগুলো বরগুনা সদর হাসপাতালে এসে পৌঁছায়।
এসময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে বরগুনা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণ। স্কাউটসের স্বেচ্ছাসেবকরা গাড়ী থেকে লাশগুলো নামিয়ে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখে।
পরিচয়বিহীন লাশ গুলোর ডিএনএ নমুনা রেখে ২৫ ডিসেম্বর) শনিবার পোটকা খালি গোরস্থানে দাফন করা হবে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার গভীর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার উপকূলে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে ৮০০ যাত্রী নিয়ে ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৩৯ জন নিহত ও ৭২ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আগুন লাগার পরও লঞ্চ ৪০ মিনিট চলে
আহতদের চিকিৎসা সহায়তায় সরকার পাশে দাঁড়াবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
লঞ্চের আগুনে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা
আগুন লাগার পরও লঞ্চ ৪০ মিনিট চলে
‘এমভি অভিজান-১০’ এ আগুন লাগার সাথে সাথে তাৎক্ষণিকভাবে তীরে ভিড়লে হয়তো এতো বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। সেক্ষেত্রে বেঁচে যেত সবাই। এমনটাই মনে করছেন মাঝ নদীতে অগ্নিকাণ্ডে লাশের স্তুপ গড়া লঞ্চ এমভি অভিযান ১০’র বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা।
রাত ২টা নাগাদ বরিশাল নদী বন্দর পার হয় লঞ্চটি। এর ঠিক ২০-২৫ মিনিট পর সুগন্ধি নদীর দপদপিয়া পয়েন্ট পার হওয়ার সময় প্রথম ইঞ্জিন রুমে আগুন জ্বলতে দেখেন লঞ্চের যাত্রী বরগুনার বামনা উপজেলার বাসিন্দা রাশেদ।
বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাশেদ বলেন, ‘লঞ্চ বোঝাই ছিল যাত্রী। কোথাও জায়গা না পেয়ে ইঞ্জিন রুমের পাশেই ছিলাম। দপদপিয়া এলাকা পেরুনোর পরপরই ইঞ্জিন রুমের পাশে জ্বলতে দেখি আগুন। তখন অবশ্য তা খুব বেশি ছিল না। এই অবস্থাতেই চলতে থাকে লঞ্চ। সেই সাথে স্টাফরা চেষ্টা চালাতে থাকে তা নেভানোর। এভাবে প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট চলার পর হঠাৎ করেই বেড়ে যায় আগুনের ভয়াবহতা।’
আগুন লাগার পর লঞ্চ তীরে না ভিড়িয়ে চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন সদ্য সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল আহসান বাদল।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘চালকের অদক্ষতা এক্ষেত্রে বড় অপরাধ হিসেবে কাজ করেছে। আগুন লাগার পর ঝুঁকি না নিয়ে লঞ্চ থামিয়ে দিলে হয়তো এতো বড় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতো না।’
যাত্রীদের দাবি ইঞ্জিন রুমে আগুনের সূত্রপাত
ইঞ্জিন রুমের পাশেই থাকা চিকিৎসাধীন দগ্ধ যাত্রী বরগুনার ঢলুয়া এলাকার বাসিন্দা কালু মিয়া বলেন, ‘ইঞ্জিন রুমের পাশেই ছিল ৭ ব্যারেল তেল। আগুনের উত্তাপে এর পর্যায়ে সেগুলো বিস্ফোরিত হলে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে যায় পুরো লঞ্চে।এর ভয়াবহতা এতোটাই বেশি ছিল যে তৃতীয় তলার কেবিনে থাকা যাত্রীদের প্রায় কেউই আর বেরুতে পারেনি। মুহূর্তেই পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে সবাই।’
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক যাত্রী বরগুনার খোলপটুয়া গ্রামের আসিফ সিকদার বলেন, ‘তীব্র শীতে ঠান্ডা বাতাসের হাত থেকে বাঁচতে একদিকে যেমন লঞ্চে ঢোকা বেরুনোর সবগুলো গেট আটকানো ছিল তেমনি চারপাশের মোটা পর্দাগুলো নামিয়ে রাখা হয় বেঁধে। চোখের পলকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে সবার আগে পুড়তে শুরু করে পর্দাগুলো। তীব্র উত্তাপে স্টীল কাঠামোর আয়তন বেড়ে যাওয়ায় আটকে যায় গেট। ফলে লঞ্চের দু’দিক দিয়ে যেমন যাত্রীরা ঝাপ দিতে পারেনি নদীতে তেমনি গেট আটকে যাওয়ায় বেরুতেও পারেনি কেউ। বদ্ধ উনোনে পুড়ে মরেছ মানুষ।’
লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা সদর ঘাট থেকে লঞ্চটি ছাড়ার পর থেকেই খানিকটা অদ্ভুত শব্দ হচ্ছিল লঞ্চের ইঞ্জিন থেকে।’ নিয়মিত লঞ্চ যাত্রী কামরুল’র ভাষ্যমতে, ‘শব্দটা ছিল অস্বাভাবিক। সাধারণতঃ এরকম শব্দ এর আগে আর কখনো শুনিনি অন্য কোন লঞ্চে। এভাবেই ঢাকা থেকে সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া পর্যন্ত আসার পর আগুর জ্বলে উঠে ইঞ্জিন রুমে। চালকসহ লঞ্চের অন্যান্য কর্মকর্তারা এসময় যদি লঞ্চ না চালিয়ে তীরে ভিড়িয়ে দিতেন তাহলে হয়তো এতোবড় দুর্ঘটনা ঘটতোনা। কিন্তু তারা তা না করে আগুন নেভানোর চেষ্টার পাশাপাশি লঞ্চ চালাতো থাকেন। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন যাত্রীদেরকেও জানানো হয়নি কিছুই। এরপর যখন বিস্ফোরণ এবং মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন আর কারও কিছু করার ছিল না।’
শেবাচিমের পরিস্থিতি
দুর্ঘটনার পর ঝালকাঠী থেকে ৭০ জনের মতো দগ্ধ নারী পুরুষকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত নিয়ে আসা হয় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে। এসব আহতদের প্রায় সবারই পোড়া চিহ্ন দেখা গেছে হাত এবং পায়ে।
এদের একজন বরগুনার বেতাগীর বাসীন্দা হারুন মিস্ত্রি বলেন, ‘আগুন ছড়িয়ে পড়ার পরপরই মুহূর্তের মধ্যে তীব্র উত্তাপে উত্তপ্ত হয়ে উঠে লঞ্চের স্টিল কাঠামো। নিচে ডেকে যেমন রাখা যাচ্ছিল না পা তেমনি হাত দিয়েও ধরা যাচ্ছিল না কিছুই। ওই অবস্থায়ই জীবন বাঁচাতে হাত পা পুড়িয়ে নদীতে ঝাপ দিতে থাকে মানুষ। মূলতঃ যারা নদীতে ঝাপ দিতে পেরেছে তারাই বেঁচে গেছে। অন্যদের ভাগ্যে জুটেছে নির্মম মৃত্যু।’
লঞ্চের বেঁচে যাওয়া একাধিক যাত্রী জানান, ‘ঘটনাস্থলে পৌছানোর পর হঠাৎ যখন লঞ্চটিকে আগুন গ্রাস করে তখন এর চালক প্রথমে তীরের দিকে নিয়ে গেলেও পরে আবার মাঝ নদীতে নিয়ে আসে। কেন সে এটা করলো তা পরিস্কার নয়।’
আরও পড়ুন: লঞ্চের আগুনে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা
যাত্রীর সংখ্যা নিয়ে ধোয়াশা
দুর্ঘটনার সময় অভিশপ্ত অভিযান ১০ লঞ্চে ঠিক কতজন যাত্রী ছিল তাই নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোয়াশা। লঞ্চের মালিক পক্ষের দাবি অনুযায়ী সব মিলিয়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩শ’ যাত্রী ছিল লঞ্চে। বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের যুগ্ম পরিচালক এস এম আজগর আলী-রও দাবি যে ঢাকা থেকে ৩১০ জনের মতো যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। এমনকি দুর্ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে আহত যাত্রীদের দেখতে বরিশালে আসা নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও বলেছেন যে রাতের বেলা সাড়ে ৪শ’র মতো যাত্রী ধারনের অনুমতি থাকা লঞ্চটিতে ৩ সাড়ে ৩শ’র বেশি যাত্রী ছিল না।
তবে দুর্ঘটনার কবল থেবে বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে দেড় হাজারের বেশি যাত্রী ছিল লঞ্চে।
শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যাত্রী বরগুনার রাশেদ বলেন, ‘নিচতলার ডেকে যাত্রীদের ভীড়ের কারণে বসার মতো জায়গা ছিল না। পরে ইঞ্জিনের পাশে কোনভাবে একটু জায়গা করে ফিরছিলাম বরগুনায়।’
দগ্ধ হয়ে আহত আরেক যাত্রী কালু মিয়াও বলেন একই কথা।
দুর্ঘটনার পর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা প্রায় ৭০ জন নারী-পুরুষের পাশাপাশি লাশ উদ্ধার হওয়া ৩৯ (শুক্রবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত) জনের খবর জানা গেলেও লঞ্চে থাকা বাকি যাত্রীদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা এখনো পরিস্কার নয়।
পড়ুন: ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি নেই, দাবি মালিকের
সচল হলো শেবাচিমের আরটিপিসিআর মেশিন
অবশেষে প্রায় ৪ লাখ টাকার যন্ত্রাশং সংযোজন ও মেরামতের পর সচল হলো বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) কলেজের আরটিপিসিআর ল্যাবের মেশিনটি।
বুধবার রাতে রাজধানী ঢাকার ওভারসিজ মার্কেটিং করপোরেশন লিমিটেডের নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিশেষ প্রতিনিধি দল মেশিনটি সচলে কাজ করে। মেশিনটি মেরামত শেষে রাতেই নিজস্ব ব্যক্তিদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলক করোনা পরীক্ষা করে সফল হয়।
বৃহস্পতিবার থেকে আবারও নমুনা পরীক্ষা করানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মনিরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: শেবাচিম হাসপাতালের সিসিইউতে আগুন, আতঙ্কে রোগীর মৃত্যু
সূত্র মতে, গত বছরের ৮ এপ্রিল মেশিনটি চালু হওয়ার পর থেকেই এ পর্যন্ত তিনবার বিকল হয়। সবশেষ গত ৮ ডিসেম্বর মেশিনটি বিকল হয়ে পড়লে এতে করে বিপাকে পরে রোগীরা। তবে বিকল্প হিসেবে ভোলা জেলার আরটিপিসিআর ল্যাব থেকে পরীক্ষা করানো হতো। কিন্তু সেখান থেকে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসতে ৯৬ ঘণ্টার মতো লেগে যেতো।
সোমবার বরিশালে এসে বিষয়টি জানাতে পেরে ক্ষুব্ধ হন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। তিনি জরুরি ভিত্তিতে মেশিনটি মেরামত করার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক মোখলেছুর রহমান সরকারকে নির্দেশ দেন। পরে মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার ওভারসিজ মার্কেটিং কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের বিশেষ প্রতিনিধি দল মেশিনটি সচল করে।
আরও পড়ুন: বরিশালে শেবাচিমের ১শ’ অক্সিজেন সিলিন্ডার উধাও
শেবাচিমের পিসিআর ল্যাবের প্রধান ডা. একেএম আকবর কবির জানান, মেশিনটি বর্তমানে সচল রয়েছে। বুধবার রাতে নিজেদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে সফল হওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার থেকে নমুনা প্রদানকারীদের পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
গলাচিপায় সরকারি বই উদ্ধার, আটক ২
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ভাঙারির দোকান থেকে পাতাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের সরকারি বিনামূল্যের ৬৮০ কেজি বিভিন্ন শ্রেণির বই উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: বই দিয়ে নির্মিত কলেজের প্রধান ‘ফটক’
বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ধলু ফকির বাজারে মো. মিলন হাওলাদারের ভাঙারি দোকান থেকে বইগুলো উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- পাতাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ও একই এলাকার মৃত সুরত আলীর ছেলে মো. সহিদুল ইসলাম খান (৫৬) ও ভাঙারির দোকনের কর্মচারী দশমিনা উপজেলার বেতাগী গ্রামের মৃত আরশেদ আলীর ছেলে মো. মজিদ চৌকিদার (৬২) ।
আরও পড়ুন: এক ট্রাক মাধ্যমিকের বইসহ শেরপুরে আটক ২
এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে গলাচিপা থানায় নাম উল্লেখিত তিন জনসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করে অভিযোগ করেন বলে জানা গেছে।