খুলনা
সিগারেট খেতে নিষেধ করায় শিক্ষককে ছুরিকাঘাত
কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে সিগারেট খেতে নিষেধ করায় শামীম হোসেন নামে এক কলেজ শিক্ষককে ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ওই শিক্ষকের বড় ভাই শাহীন বিশ্বাসকেও মারধর করা হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের ফারাজীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষক শামীম হোসেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হালসা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক।
আহতদের রাতেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখন তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফারাজী পাড়া জামে মসজিদের পাশে একটি দোকানে এলাকার কয়েকজন যুবক সিগারেট খাচ্ছিল। এ সময় কলেজ শিক্ষক শামীম হোসেন তাদের সিগারেট খেতে নিষেধ করলে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এলাকার যুবক জয়, প্রান্ত, পান্থ, জিসান, সাফায়েত, রাব্বি, হাবিবুর রহমান হ্যাপিসহ বেশ কয়েকজন সংগঠিত হয়ে কলেজ শিক্ষক শামীমকে ছুরিকাঘাত এবং তার ভাই শাহীন বিশ্বাসকে মারধর করে। এছাড়াও কলেজ শিক্ষকের বাড়িঘর ভাঙচুর করে পালিয়ে যায় তারা।
পরে স্থানীয় লোকজন শামীম ও তার ভাই শাহীন বিশ্বাসকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় রাতেই ওই কলেজ শিক্ষক শামীম হোসেন কুষ্টিয়া মডেল থানায় বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে। এ মামলার দুইজন আসামিকে পুলিশ রাতেই গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা জানান, এ মামলার দু’জন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাগেরহাটের তাপমাত্রা ৪১.৭ ডিগ্রি
বাগেরহাটের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড করে।
এর আগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাগেরহাটে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রের্কড করা হয়।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে তীব্র গরম, তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
এদিকে প্রচণ্ড তাপদাহের প্রভাব পড়েছে প্রাণীদের উপরও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তাপও বাড়তে থাকে।
শনিবার দুপুরে শহরের পুরাতন বাজার, লোকালবোর্ড ঘাট, নাগের বাজার, মেইন রোড, কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে রোদের মধ্যে দিনমজুর, শ্রমিকরা কাজ করছে। আর রিকশা চলকরা ঘাম ঝরিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে। এসময় শরবত, পানি, ডাব, আইসক্রিমের দোকানে তৃষ্ণার্ত মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ বলছে, বাগেরহাটের উপর দিয়ে আরও কয়েকদিন তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বাগেরহাটে তীব্র তাপপ্রবাহ বেড়ে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার বাগেরহাটে তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপপ্রবাহ আরও কয়েকদিন বয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরের তাপমাত্রা ৪১.৩ ডিগ্রি
টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
খুলনায় ১২টি স্বর্ণের বার জব্দ, যুবক আটক
খুলনা মহানগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে মাসুম বিল্লা নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
এ সময় তার কাছ থেকে ১২টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ, যুবক আটক
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস বাস থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক যুবক মাসুম বিল্লা সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাকড়া গ্রামের আলম গাজীর ছেলে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের একটি বাসে করে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা দিকে মাসুম বিল্লা যাচ্ছিলেন।
এসময় বাসটি আটক করে তল্লাশি করা হলে মাসুমের জুতার নিচে কৌশলে রাখা ১২টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে ৬টি স্বর্ণের বার জব্দ, যুবক গ্রেপ্তার
যশোরে ৩২ স্বর্ণের বার জব্দ, আটক ২
সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের নোটাবেকী এলাকায় মধু আহরণে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মনিরুজ্জামান বাচ্চু নামে এক মৌয়াল নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প, ব্যয় হবে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা
বাচ্চু সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেম গাজীর ছেলে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা নুরে আলম বলেন, বাচ্চুসহ কয়েকজন চলতি মাসের ২ তারিখে মধু আহরণে সুন্দরবনে যান। শনিবার সকালে তিনি নোটাবেকী এলাকায় মধু সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি বাঘ তাকে আক্রমণ করে গহীন বনে নিয়ে যেতে থাকে।
এ সময় তার সহকর্মীরা লাঠি-সোটা নিয়ে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে বাঘের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। তবে, ততক্ষণে তার মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের খাল থেকে মৃত বাঘ উদ্ধার
বাগেরহাটে লোকালয়ে বাঘের পায়ের ছাপে আতঙ্ক
খুলনায় গাছের ডাল কাটার সময় পড়ে একজনের মৃত্যু
খুলনার ডুমুরিয়াশ উঁচু গাছের ডাল কাটতে গিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকার শান্তিনগরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিক মহসিন সানা (৪৭) শান্তিনগর এলাকায় নওশের আলী সানার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজ (শনিবার) ভোর ৬টার দিকে মহসিন সানা ও তার সহযোগীদের নিয়ে রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি শিরিষ গাছের ডাল কাটতে গাছে উঠেন। এক পর্যায়ে ডালটি ছিটকে তার শরীরে লাগলে মাটিতে পড়ে তিনি অজ্ঞান হন।
তার সহযোগীরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টনি মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে বয়লার বিস্ফোরণে চীনের নাগরিক নিহত
নওগাঁয় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দম্পতি নিহত
মেহেরপুরে ১২০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ, গ্রেপ্তার ২
মেহেরপুরে ১২০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ ও ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মৃত পিয়ার আলীর ছেলে মোহাম্মদ জিয়ারুল ইসলাম (৪৮) ও একই গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে মো. হযরত আলী (৪৬)।
মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে ১১৫ বোতল ফেনসিডিলসহ ৪০০ গ্রাম গাঁজা জব্দ, গ্রেপ্তার ৫
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি টিম শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামের বীলপাড়া এলাকায় অভিযান শুরু করে। এ সময় বস্তাভর্তি ফেনসিডিল নিয়ে ওই ২ মাদক ব্যবসায়ী যাচ্ছিলেন। তখন ডিবি পুলিশ দেখে ফেনসিডিল ফেলে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তারা। ডিবি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।’
ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গাংনী থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ফেনসিডিল জব্দ, গ্রেপ্তার ৩
মেহেরপুরে ৪০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ, একজন গ্রেপ্তার
মেহেরপুরের তাপমাত্রা ৪১.৩ ডিগ্রি
কয়েকদিন ধরে মেহেরপুরের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থা আরও বেগতিক হয়ে তাপমাত্রা আগের বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে মেহেরপুর অঞ্চলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যা এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন অংশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি
এদিকে তীব্র তাপদাহে এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন এবং তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন।
এছাড়া মেহেরপুর জেলা ও গাংনী উপজেলায় তীব্র তাপপ্রবাহে পিপাসা মেটাতে শরবতের দোকানগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায় মানুষকে।
দোকানে বিক্রি হচ্ছে বেলের শরবত, আবার কোথাও লেবুর শরবত। পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ডাব ও আখের রস।
এছাড়াও পিপাসা নিবারণে মানুষকে রাস্তার দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির পানীয় ও মিনারেল ওয়াটার কিনে পান করতে দেখা গেছে।
এদিকে গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার লেবুর শরবত ও আখের রসের দোকানে দেখা গেছে ভিড়।
গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার শরবত বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, যত গরম বাড়ছে তত শরবত বিক্রি বাড়ছে। কয়েকদিন ধরে খুব গরম পড়ছে। প্রতিদিন ৮/৯ হাজার টাকার শরবত বিক্রি হয়।
তিনি আরও বলেন, শরবতে লেবু, চিনি, তুকমা দানা, ইসপগুলের ভুসি ব্যবহার করে থাকি। এর মধ্যে খারাপ কিছু নেই।
গাংনী উপজেলা শহরের আখের রস বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বেড়েছে। প্রতিদিন ৭/৮ হাজার টাকার রস বিক্রি করে থাকি।
এদিকে ডাব বিক্রেতা সাবান আলী বলেন, ডাবের প্রচুর চাহিদা। এই গরমের হাত থেকে বাঁচতে ডাবের প্রতি ঝুঁকছেন মানুষ।
এদিকে তীব্র গরমে বাড়ছে নানা রোগ বালাই। বিশেষ করে ডায়রিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আগের তুলনায় বেশি।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, এই গরমে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
পিপাসা মেটাতে ফুটপাতের শরবত, পানি পান থেকে বিরত থাকতে হবে।
আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, মেহেরপুর জেলার উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এ জেলায় শুক্রবার সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৫ শতাংশ। দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমান ছিল ১৯ শতাংশ। এরপর তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিকাল ৩টায় সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ১৭ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে।
আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস জানায়, এটিই দেশে এই মৌসুমেরও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। দীর্ঘদিন জেলায় বৃষ্টিপাত না থাকার কারণে গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এধারা আরও কিছুদিন অব্যহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মেহেরপুরে তীব্র গরম, তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৪ দিনে ফিরলেন ১৮৮২০ যাত্রী
ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের টানা ছুটি কাটিয়ে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। এতে বন্দরে বেড়েছে যাত্রীর চাপ।
শুক্রবার পর্যন্ত ১৮ হাজার ৮২০ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন।
এর মধ্যে ১৬ এপ্রিল ৪ হাজার ৯১০ জন, ১৭ এপ্রিল ৫ হাজার ৩৬৩ জন, ১৮ এপ্রিল ৫ হাজার ১৪৯ জন ও ১৯ এপ্রিল ৩ হাজার ৩২০ জন যাত্রী ফিরেছেন।
আরও পড়ুন: বেনাপোল সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত
পুলিশ জানায়, ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৫ দিনের ছুটি ঘোষণা করে সরকার। লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা, ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকেই ভারতে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে ভারত থেকে ফিরে আসছেন। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। যাত্রীদের নিরাপত্তায় বন্দরে কাজ করছে আনসার, আমর্ড ব্যাটালিয়ন ও বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা।
ভারত থেকে ফিরে আসা মনির হোসেন বলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন। ভারতের পেট্রোপোলে লম্বা লাইনে যে ভিড় তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ফলে অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছি। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
ভারত থেকে আসা অপর যাত্রী মামুনুর রহমান বলেন, ঈদের টানা ৫ দিনের ছুটি পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলাম ভারতে আত্মীয় বাড়িতে। ছুটি শেষ করে দেশে ফিরছি। তবে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে আমাদের। দীর্ঘ সময় রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকায় আমার স্ত্রী ও বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, বেনাপোল দিয়ে কোলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতি বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত যাতায়াত করেন প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্ট যাত্রী। ভ্রমণকর বাবদ সরকারের আয় হয় ১৫০ কোটি টাকা।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্র্যাফিক) রেজাউল করিম বলেন, ঈদের ছুটিতে গত এক সপ্তাহে হাজার হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যান। ছুটি শেষ হওয়ায় ভারত থেকে যাত্রীরা দেশে ফিরতে শুরু করেছে। ফলে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। বন্দরের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ঈদের লম্বা ছুটি কাটিয়ে গত ৪ দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভ্রমন শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন ১৮ হাজার ৮২০ জন যাত্রী।
তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের চাপ বেড়েছে, যাত্রীদের দ্রুত পাসপোর্টের কাজ সম্পন্ন করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছে অফিসাররা।
আরও পড়ুন: বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
ঈদে ৫ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি
টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এ জেলায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্র জানায়, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি, হিট অ্যালার্ট জারি
এর আগে বেশ কিছুদিন ধরে এ জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়াও গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মঙ্গলবার বিকেলে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
অর্থাৎ গত মঙ্গলবার থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত একটানা চার দিন দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হচ্ছে।
এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গাসহ এ অঞ্চলের জনজীবন। রোদের তাপের কারণে হাঁসফাঁস অবস্থা। অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছে না।
শোচনীয় অবস্থার মধ্যে রয়েছেন দিনমজুররা। কাজ না করলে পেটের বাত জুটে না। আবার তীব্র গরম ও কাঠফাঠা রোদে দুপুরের আগেই কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যানচালক আজগর হোসেন ও রিকশাচালক লিয়াকত আলী জানান, প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে রোজার মাসে যাত্রী পাননি তারা। আবার সেই গরম শুরু হয়েছে একেবারেই যাত্রী নেই। সংসার চালানোই দায়।
চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ার বাসিন্দা লতিফুন নাহার বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম পড়ছে। তাই বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। জানি না কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে। আবার ৩ বছর বয়সী বাচ্চাটাও গরমজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর এলাকার মুদি ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে যে তাপ উঠছে তাতে দোকানে বসার অবস্থা নেই। পুরো দোকান দিয়ে মনে হচ্ছে আগুনের ভাপ বের হচ্ছে। এরাম গরমে বেচাবিক্রি ক্যামনে হবে।’
চলমান দাবদাহে সব শ্রেণির মানুষকে সতর্ক করে পরামর্শ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান। তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে তীব্র গরম, তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
অপরদিকে, চলমান দাবদাহে ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছুদিন তীব্র দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, আজ শুক্রবার বেলা ৩টায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। এনিয়ে টানা চার দিন দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হলো চুয়াডাঙ্গায়।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়া সতর্কবার্তা (হিট ওয়েভ এলার্ট) জারি করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা জানান, এই তীব্র তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য সতর্কতায় নানা নির্দেশনা জানিয়ে তথ্য অফিসের মাধ্যমে প্রচার অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, পানি, আইসক্রিম খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। তিন-চার দিন আরও তাপমাত্রা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীব-বৈচিত্র্যের ওপর। এমন প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস চুয়াডাঙ্গাবাসীর।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন অংশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি
বাগেরহাটে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
বাগেরহাটের কচুয়ায় বাসের চাপায় গোলাম রসুল নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী কিশোর নিহত
নিহত গোলাম রসুল বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার দোবাড়িয়া গ্রামের মালেক তালুকদারের ছেলে।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাসিন আলী বলেন, গোলাম রসুল সকালে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। সাইনবোর্ড মোড়ে পৌঁছালে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা বলেশ্বর পরিবহনের একটি বাস চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ওসি আরও বলেন, চালক ও সহযোগী পালিয়ে গেলেও বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাকচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত