���������������������-���������������������
কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৩-২৫ মে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিতব্য কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এ সফরের বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
দোহায় অবস্থিত ফোরামটি কৌশলগতভাবে এশিয়াকে আফ্রিকা এবং তার বাইরের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য কাতারের ক্ষমতায়নের পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক কূটনৈতিক হাব ও এলএনজি জ্বালানি প্রযুক্তির অন্যতম নেতা হিসেবে এর অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।
আয়োজকরা বলেছেন, ফোরামে বৈশ্বিক নেতা এবং উদ্ভাবকদের একটি কিউরেটেড গ্রুপ রয়েছে, যারা বর্তমানের আরও কিছু প্রাসঙ্গিক চ্যালেঞ্জের সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছে। কারণ তারা আমাদের ভাগ করা ভবিষ্যতের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন-ইরাক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ এস আল-সুদানী, জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলি, রুয়ান্ডা প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি পল কাগামে, কাতার এয়ারওয়েজের গ্রুপ সিইও আকবর আল-বাকার, সৌদি আরবের বিনিয়োগমন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহ, সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ আল-জাদান,কাতারের জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী এবং কাতার এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সাদ শেরিদা আল-কাবি।
আরও পড়ুন: ইউএনইএসসিএপি’র ৭৯তম অধিবেশনে ৪ দফা সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের মধ্যে অন্যতম অতিথি উল্লেখ করেন।
কাতার ইকোনমিক ফোরাম ২০২৩ বিশ্বব্যাপী সমাজ ও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে এমন উল্লেখযোগ্য বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর ফোকাস করবে।
২০২৩ সালের আয়োজনে এই চ্যালেঞ্জিং অর্থনৈতিক পরিবেশে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উন্নয়নে একটি নতুন রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হবে।
একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রী ২২ মে দোহার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন এবং ২৬ মে দেশে ফিরবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের জন্য কমনওয়েলথের পর্যবেক্ষক চান প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে: যুক্তরাজ্যকে প্রধানমন্ত্রী
স্বাগতিক দেশকে অবশ্যই কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে: মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সমস্ত কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ১৫ মে (যুক্তরাষ্ট্র সময়) স্টেট ডিপার্টমেন্টে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণে প্রবেশ করতে যাচ্ছি না।’
তিনি অবশ্য উল্লেখ করেছেন যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, যে কোনও স্বাগতিক দেশকে অবশ্যই ‘সমস্ত কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ এবং কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তার বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে হবে এবং কর্মীদের উপর যে কোনও আক্রমণ প্রতিরোধে সমস্ত উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূতসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্যাটেল এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দল অপর রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করছে না: মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল বলেছেন, ‘তারা চাইলে অর্থের বিনিময়ে পেতে পারে। আমরা করদাতাদের অর্থ দিয়ে এই অতিরিক্ত (নিরাপত্তা) এসকর্ট পরিষেবা প্রদান করব না।’
মোমেন বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে কোনো সরকারই এ ধরনের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেয় না।
মন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি যে এ ধরনের সেবা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক ৫ প্রকল্পে সমন্বিত ২.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি সই
ইউএনইএসসিএপি’র ৭৯তম অধিবেশনে ৪ দফা সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইউএনইএসসিএপি) ৭৯তম অধিবেশনে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা, সেইসঙ্গে জলবায়ু অর্থায়ন এবং জ্ঞান, প্রযুক্তি-নতুন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হস্তান্তরের উপর আলোকপাত করে তার চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেন।
টেকসই উন্নয়নের জন্য এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডকে ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে সোমবার ইউএনইএসসিএপির ৭৯তম অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে।
এই অঞ্চলে এবং এর বাইরে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডকে ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতির বিকল্প এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করতে এই অধিবেশনটি সমগ্র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারের নেতাদের এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীরপূর্ব ধারণ করা ভিডিও বার্তাটি লিডারস সেগমেন্টে প্লে হয়েছিল। হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বিপজ্জনক হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বিশ্বকে একটি নিরাপদ ও ভালো জায়গা করে তোলার জন্য 'আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব সুসংহত করার' আহ্বান জানান।
তিনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে জলবায়ু-সংরক্ষিত উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষ করে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, তাদের জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই নয়, জাতিসংঘের সামনে জমা দেওয়া তাদের জাতীয়ভাবে-নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থের প্রয়োজন।
এই বিষয়ে, প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু-সহনশীলতা বৃদ্দির জন্য জ্ঞান ভাগ করে নেওয়া, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং উদ্ভাবন-চালিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহ 'আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থার' ওপর জোর দেন, অর্থাৎ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের মতো দেশ যারা উন্নত হচ্ছে। অতীতে প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টি উত্থাপন করেছেন যে এই জাতীয় গ্রুপিং থেকে স্নাতক হওয়া কষ্ট বা শাস্তি আনা উচিত নয়, যেমন, সুবিধা হ্রাস বা বর্ধিত শুল্ক।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে মোকাবিলা করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো প্রশমিত করতে, তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাণিজ্য সুবিধার ব্যবস্থা, ডিজিটাল বাণিজ্য এবং আইটি-সক্ষম পরিষেবাগুলোর প্রাপ্যতার উপর জোর দেন। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই উন্নয়নের জন্য জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডকে উন্নীত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন যে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করা উচিত, বিশেষ করে বিদ্যমান অংশীদারিত্বকে ত্বরান্বিত করা এবং নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।
জলবায়ু সলিউশন ফেয়ার দ্বারা পরিপূরক জলবায়ু অর্থ ও বিনিয়োগকে অনুঘটক করার বিষয়ে উৎসর্গীকৃত আলোচনার ৭৯তম ইউএনইএসসিএপি অধিবেশন সুযোগগুলো শনাক্তকরণ, সমাধানগুলো ভাগ করে নেওয়া এবং উভয় ঝুঁকি এবং প্রভাবগুলো হ্রাস করতে অংশীদার এবং স্টেকহোল্ডারদের একটি বিস্তৃত সেটের সঙ্গে জড়িত হওয়ার সুবিধা প্রদানের অনুমতি দেবে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নেট-জিরো পাথওয়ের দিকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী জলবায়ু ক্রিয়াকে উৎসাহিত করে এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি সীমাবদ্ধ করে না।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অনলাইনে এবং ব্যক্তিগতভাবে কমিশন অধিবেশনে অংশগ্রহণ করছে এবং বিভিন্ন এজেন্ডা আইটেমে বাংলাদেশের অবস্থান এবং কমিশনের ফলাফল তুলে ধরে অধিবেশনে অবদান রাখছে।
সোমবার উদ্বোধনী অধিবেশন চলাকালীন, ইউএনইএসসিএপি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হাই এবং দূতাবাসের বিকল্প ও উপ-স্থায়ী প্রতিনিধিরা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত ছিলেন, এবং প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইউএনইএসসিএপির আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের চারটি পরিচালনা পরিষদে বাংলাদেশ নির্বাচিত
করদাতাদের টাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা সেবা দেওয়া হবে না: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ঢাকায় কোনো বিদেশি কূটনীতিককে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার বৈষম্য করতে চায় না, তবে অর্থের বিনিময়ে তারা এ ধরনের সুবিধা পেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পাঁচ-ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূত এ ধরনের অতিরিক্ত নিরাপত্তা সেবা পান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার সন্ধ্যায় ইউএনবিকে ফোনে বলেন, ‘যদি তারা এটি চায়, তাহলে তারা অর্থপ্রদানের বিনিময়ে এটি পেতে পারে। আমরা করদাতাদের অর্থ দিয়ে আর এই বাড়তি এসকর্ট (নিরাপত্তা) সার্ভিস দেবো না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, পাঁচ থেকে ছয়জন কূটনীতিক এ ধরনের সেবা পেয়ে থাকেন এবং এখন অন্যান্য কূটনীতিকেরাও এই সুবিধা চান।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশ একটি মডেল দেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিয়মিত নিরাপত্তা সেবা চালু থাকায় সরকার জনগণের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে রাজি নয়।
মোমেন বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে কোনো সরকারই এ ধরনের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেয় না।’
মন্ত্রী বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি যে এ ধরনের সেবা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বা বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কুটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য আমাদের নজরে এসেছে।
উল্লেখ্য যে প্রতিটি দূতাবাসেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বিধান অব্যাহত রেখেছেন এবং রাষ্ট্রদূতদের পুলিশ প্রদত্ত গানম্যান নিয়োজিত আছেন। এই কারণে নিরাপত্তা প্রত্যাহার সম্পর্কিত এই বিভ্রান্তকর খবরটি সঠিক নয়।
বাংলাদেশ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আন্তর্জাতিক আইন এবং প্রচলিত রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সাধারণত বাংলাদেশ পুলিশ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার গুরু দায়িত্বটি সবসময় পালন করে থাকে।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মোমেনের ফলপ্রসূ বৈঠক
কিন্তু বাংলাদেশের কয়েক বছর আগের একটি ঘটনাপরবর্তী সময় থেকে কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অলিখিতভাবে গাড়িসহ মূলত নিয়মিত ট্রাফিক মুভমেন্টের সহায়তার জন্য বাড়তি কিছু লোকবল দেওয়া হয়েছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে আছে। তাই তাদেরকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদানের কোনো আবশ্যকতা নাই।
পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কাজের পরিধি বৃদ্ধির জন্য এই বাড়তি সুবিধাটি এখন অব্যাহত রাখা যাচ্ছে না।
এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে পৃথিবীর কোনো দেশেই বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রদূতকে বাড়তি নিরাপত্তা ও চলাচলের ক্ষেত্রে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো সুবিধা দেওয়া হয় না।
আরও উল্লেখ করা যায় যে সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু দূতাবাস থেকে একই ধরনের সুবিধার জন্য অনুরোধ করার একটি প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করছি। এ লক্ষ্যে তাদের সকলের সুবিধার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে একটি চৌকস দল তৈরি করেছে।
বিদেশি কূটনীতিকরা তাদের খরচে এ সুবিধাটি গ্রহণ করতে পারবেন। কোনো দূতাবাস আনসার সদস্যদের এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে চাইলে বা বাড়তি সুবিধা নিতে চাইলে আমাদেরকে লিখিতভাবে জানালে আমরা সেই ব্যবস্থাটি গ্রহণ করব।
খুব শিগগিরই সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সকল বিদেশি দূতাবাসকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ পানি সম্মেলনের প্লেনারি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
ভ্যাটিকানের পোপের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
ভ্যাটিকান,১৪ মে (ইউএনবি)- ভ্যাটিকানে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিসের কাছেঅনাবাসী রাষ্ট্রদূত হিসেবে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন।
শনিবার (১৩ মে) ভ্যাটিকান সিটির এপোস্টলিক প্রাসাদে এক আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে এ পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাড়াও আরও চারটি দেশের রাষ্ট্রদূতেরা পোপের কাছে তাদের পরিচয়পত্র পেশ করেন। পরিচয়পত্র গ্রহণের পর পোপ নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতগণের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
পোপ তার বক্তব্যে সুদান, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো, লেবানন, ইউক্রেন, জেরুজালেম ও বিশেষত মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষ ও অস্থিতিশীলতায় নিরীহ বেসামরিক জনগণের দুর্ভোগ, অস্ত্র উৎপাদন ও ক্রয়ের প্রতিযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূলতাসহ বর্তমান বিশ্বের নানা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন। নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি বিশ্ববাসীর জন্য আশার আলো হয়ে বিশ্বশান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতগণকে আহ্বান জানান পোপ।
রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান পোপকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে দেন।
এছাড়াও রাষ্ট্রদূত সুফিউর শুক্রবার ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি ফর রিলেশনস (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আর্চবিশপ রিচার্ড গ্যালাঘার এর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ভ্যাটিকানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এদিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ভ্যাটিকানের বিকল্প সেক্রেটারি অফ স্টেট (বিকল্প প্রধানমন্ত্রী) আর্চবিশপ এডগার পেনা পেরার সঙ্গেও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমৃদ্ধ ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ এবং প্রগতিশীল দেশ গঠনে সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় ও উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন এবং এতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বাংলাদেশিদের অবদানের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানে খ্রিস্টান মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান তুলে ধরেন। আর্চবিশপ পেনা পেরা (বিকল্প প্রধানমন্ত্রী) বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে বলে উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গাদের নিজদেশে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে গৃহীত পাইলট স্কিম গ্রহণের প্রেক্ষিত বর্ণনা করে বিশ্ববাসীর অব্যাহত সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য ও বেলজিয়াম
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন যুক্তরাজ্য ও বেলজিয়াম।
শনিবার সুইডেনের স্টকহোমে দ্বিতীয় ইইউ ইন্দো-প্যাসিফিক মিনিস্টেরিয়াল ফোরামের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে এ কথা জানান যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমদ এবং বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাদজা লাহাবিব।
যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্কের সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করেন।
লর্ড আহমদ এসময় আশ্বাস দেন যে যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখবে এবং দেশটি রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সক্রিয় থাকবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন তরান্বিত করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘অবিচলভাবে মধ্যস্থতা করছে’ চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
আগামী বছর ঢাকায় কনসুল্যার মিশন খুলতে পারে পর্তুগাল
পর্তুগালের সেক্রেটারি অব স্টেট ফ্রান্সিসকো আন্দ্রে জানান, পর্তুগাল আগামী বছর ঢাকায় কনসুল্যার মিশন খুলতে পারে।
তিনি জানান, পর্তুগাল সরকার আগামী বছরের মধ্যে ঢাকায় একটি কনস্যুলার মিশন খোলার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। এতে করে বাংলাদেশিদের পর্তুগাল ভ্রমণ সহজ হবে।
শনিবার সুইডেনের স্টকহোমে দ্বিতীয় ইইউ ইন্দো-প্যাসিফিক মিনিস্টেরিয়াল ফোরামের সাইডলাইনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে এসব তথ্য জানান ফ্রান্সিসকো আন্দ্রে।
এসময় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ পর্তুগালের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
ফ্রান্সিসকো আন্দ্রে পর্তুগালে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশিদের উদ্যোক্তা হিসেবে কর্মকাণ্ড এবং পরিশ্রমী মনোভাবের প্রশংসা করেন।
তিনি আরও বলেন, পর্তুগিজ সমাজের সঙ্গে মিলেমিশে তারা (প্রবাসী বাংলাদেশিরা) অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখছে।
‘আইওসি-২০২৩’ আয়োজন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের অবস্থানকে সুসংহত করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক এবং ভূ-অর্থনৈতিক বাস্তবতার নিরীখে ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স (আইওসি)-২০২৩ আয়োজনের অংশীদার হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের অবস্থান সুসংহত হয়েছে।
‘পিস প্রোসপারিটি অ্যান্ড পার্টনারশিপ ফর এ রেজিল্যান্ট ফিউচার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইন্ডিয়ান ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ঢাকায় হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে দুই দিনব্যাপী (১২ ও ১৩ মে) অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স শেষে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (১২ মে) সন্ধ্যায় সম্মেলনটির উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মরিশাসের রাষ্ট্রপতি, মালদ্বীপের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং ১৭টি মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি দলসহ মোট ২৫টি দেশের সরকারি প্রতিনিধি দল। এছাড়া তিনটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থা- সার্ক, ডি-৮ এবং বিমসটেক এর মহাসচিব এবং আরও কয়েকটি দেশের ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মিশন ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ আরও ১৫০ জন বিদেশি অতিথিও সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
মোমেন বলেন, এই আয়োজনের মাধ্যমে আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিমন্ডলে ভারত মহাসাগর উপকূলবর্তী দেশসমূহসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব সুদৃঢ় হয়েছে।
আরও পড়ুন: এ অঞ্চলের দেশগুলোর সমস্যা সমাধান করে একসঙ্গে চলতে চায় বাংলাদেশ: শাহরিয়ার
মন্ত্রী বলেন, সম্মেলনটি ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশসমূহকে নিয়ে আয়োজন করা হলেও এই ফোরামে সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি আলোচিত হয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের আলোচনায় অনেক সুপারিশ ও মতামত উঠে এসেছে। দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিভিন্ন ক্ষেত্র- নিরাপত্তা, বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি, সামুদ্রিক সম্পদ, সুনীল অর্থনীতি, পর্যটন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং পরিবেশগত ভারসাম্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কেন্দ্রে বাংলাদেশ অবস্থিত হওয়ায় এটি এই অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও জানান মন্ত্রী।
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ পুর্নগঠনের কার্যক্রম শুরু করে সাগর ও সামুদ্রিক অর্থনীতির উপর জোর দেন। তিনি ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট-১৯৭৪ প্রণয়ন করেন, যা ছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সামুদ্রিক আইন।
আরও পড়ুন: ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স: 'মুক্ত, নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চলের' সুপারিশ মাসুদ মোমেনের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ উদ্বৃত করে মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলের স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ এবং উত্তোরত্তর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ছয়টি বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন-সামুদ্রিক কূটনীতি; জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা; অংশীদারিত্ব জোরদার করা; সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা জোরদার করা; শান্তির সংস্কৃতির প্রসার; এবং ন্যায়সঙ্গত এবং সমতাভিত্তিক ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রণীত ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের জন্য ভারত মহাসাগরের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সকলের সমৃদ্ধি নিশ্চিতে তিনি অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত মহাসাগরের উপর জোর দেন।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন, মরিশাসের রাষ্ট্রপতি, মালদ্বীপের উপ-রাষ্ট্রপতি ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তৃতীয় প্লেনারি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও ১২ মে চারটি প্রাক-সম্মেলন অধিবেশন ও সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে আরও চারটি প্লেনারি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আমন্ত্রিত মন্ত্রী ও মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
সফররত মন্ত্রীরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর বর্ধিষ্ণু অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো এশিয়া: শাহরিয়ার আলম
ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স: 'মুক্ত, নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চলের' সুপারিশ মাসুদ মোমেনের
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ এমন একটি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বপ্ন দেখছে যা মুক্ত, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক। সবার জন্য ভাগ করে নেওয়া সমৃদ্ধিতে এগিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই লক্ষ্যে আমাদের সমস্ত আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।’ বাংলাদেশ এই অঞ্চলে ‘ভাগাভাগি দায়বদ্ধতার’ মাধ্যমে ‘ভাগাভাগি সমৃদ্ধির’ পক্ষে। যার মাধ্যমে তারা টেকসই উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি ২০৩০ অর্জন করবে৷
ষষ্ঠ ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে সমাপনী বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, যদি তারা এটিকে পুরোপুরি উপলব্ধি করেন এবং প্রশংসা করেন, তাহলে তারা শান্তি, সমৃদ্ধি এবং একটি সহনশীল ভবিষ্যতের জন্য অংশীদারিত্বের দিকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পারেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারত মহাসাগরের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার ‘ভিশন ২০৪১’ অর্জনের একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বিবেচনা করে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল বৈশ্বিক জিডিপি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, জলবায়ু কর্মকাণ্ডে এবং বৈশ্বিক শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ফলাফল-ভিত্তিক ফোকাসের দিকে এই অঞ্চলে সহযোগিতা প্রসারিত করতে প্রস্তুত রয়েছে যা এই অঞ্চলের সাধারণ কল্যাণের জন্য অর্জনকে বাড়িয়ে তুলবে।
মাসুদ বলেন, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছয়টি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে পরামর্শ দিয়েছেন যেখানে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে গুরুত্ব দেয়া উচিত- সামুদ্রিক কূটনীতি; জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা; অংশীদারিত্ব জোরদার করা; সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা জোরদার করা; শান্তির সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা; এবং ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই উন্নয়নের পৃষ্ঠপোষকতা।
পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ‘এগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, আমরা আমাদের জন্য একটি ভাল ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য ভারত মহাসাগরের দেশগুলোর মধ্যে আমাদের সমন্বয় এবং সহযোগিতা গড়ে তুলতে পারি।’
সরকারের পক্ষ থেকে তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই ৬ষ্ঠ ইন্ডিয়ান ওশান সম্মেলন-২০২৩-এ অংশগ্রহণকারী সকল দেশের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আপনার প্রতিশ্রুতি এবং অবদানের সঙ্গে আমি বিশ্বাস করি যে এই ষষ্ঠ ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্যে পরিণত হয়েছে এবং আমরা এই সম্মেলনের গ্রহণযোগ্যতাকে পরবর্তী সম্মেলনে এবং অন্যান্য বৈশ্বিক আলোচনায় নিয়ে যেতে পারি।
এতে যোগ দেন মরিশাসের প্রেসিডেন্ট ও মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্র পূর্ব দিকে এশিয়া ও আফ্রিকার দিকে চলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্ব বিশেষ করে এমন অনেক দেশের জন্য যার অস্তিত্ব, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা ছিল এবং সর্বদা এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিল, তার জন্য কোন পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর বর্ধিষ্ণু অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো এশিয়া: শাহরিয়ার আলম
তবুও, তিনি বলেছিলেন, ভারত মহাসাগরের অর্থনীতি সম্ভবত বিশ্বের উচ্চ অর্থনৈতিকভাবে সমন্বিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি নয়।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের এই বিষয়টির প্রতিও মনোযোগ হারানো উচিত নয় যে মহাসাগরগুলো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি ইঞ্জিন এবং খাদ্য নিরাপত্তার একটি মূল উৎস।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভৌত, প্রাতিষ্ঠানিক, জ্বালানি, ডিজিটাল এবং মানব সংযোগ বৃদ্ধি, পণ্য, পরিষেবা, পুঁজি এবং জনগণের একটি পদ্ধতিগতভাবে চলাচল সহজতর করে এবং এই অঞ্চলে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং উদ্ভাবনের সুযোগকে উন্নীত করার উপর ব্যাপক জোর দেয়।
‘আমরা এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকে সক্রিয়ভাবে জড়িত এবং সহযোগিতা করতে চাই।
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, জল সংহতি, এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, সামুদ্রিক দূষণ এবং পরিবেশের উপর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ও ক্ষতিকর প্রভাবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স ও দ্বিপক্ষীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকায় মরিশাসের প্রেসিডেন্ট
এ অঞ্চলের দেশগুলোর সমস্যা সমাধান করে একসঙ্গে চলতে চায় বাংলাদেশ: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, আলোচনা ও যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে বাংলাদেশ এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে একত্রে চলতে চায়।
তিনি অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে ভালো অনুশীলন ভাগাভাগি করার ওপরও জোর দেন, কারণ বাংলাদেশ এই অঞ্চলে সহযোগিতা চায়।
প্রতিমন্ত্রী শনিবার ঢাকায় ৬ষ্ঠ ‘ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স’-এর ফাঁকে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী, জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহকারী মন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক তিনটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স-এ অংশগ্রহণকারী নেতারা আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং শেখ হাসিনার অব্যাহত প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা মেরিটাইম সেক্টর নিয়ে আরও কাছাকাছি আসতে পারে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
শাহরিয়ার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার অংশীদারদের কাছ থেকে সহায়তা চায়।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সফরে জাপানের সঙ্গে চুক্তি ও সই করা যৌথ যোগাযোগের বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখছে, যাতে লক্ষ্যমাত্রাগুলো দ্রুত অনুসরণ করা যায়।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর বর্ধিষ্ণু অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো এশিয়া: শাহরিয়ার আলম