������������������
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অন্য কোনোভাবে নির্বাচন হতে দেবো না: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের দাবি মেনে নিতে হবে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে।
শুক্রবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় প্রয়াত বিএনপি নেতা আ স ম হান্নান শাহের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন,‘আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে, বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত চলবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। সেজন্যই আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছি এবং এবার অন্য কোনোভাবে নির্বাচন হতে দেব না।’
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লাঠি-বন্দুক নিয়ে হামলা আ.লীগের পরাজয়ের ইঙ্গিত: ফখরুল
ফখরুল আরও বলেন, দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে নির্বাহী বিভাগ অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই সরকারের আমলে জুয়াড়ি,ডাকাত ও খুনিরা সহজে জামিন পেলেও আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় সাজা ভোগ করছেন। আ.লীগের আশঙ্কা,খালেদা জিয়া জামিনে বের হলে জনগণ রাজপথে নেমে সরকারের পতন ঘটাবে। এ কারণে তারা আমাদের নেত্রীকে জনগণের কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন’।
বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরর কড়া সমালোচনা করে এই বিএনপি নেতা বলেন ‘কাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, সে ভয় পাচ্ছে কেন? তিনি ভয় পান, কারণ তিনি মনে করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তার দল ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আমাদের দাবিও পরিষ্কার, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না’।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে আলোচনা সঞ্চালনা করেন কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে শাওন হত্যার জবাব দেয়া হবে: ফখরুল
ইসি’র ইভিএম কেনার প্রকল্প জাতির সঙ্গে উপহাস: ফখরুল
সুষ্ঠু নির্বাচন ঠেকাতে মরিয়া আ.লীগ: রিজভী
দেশে নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: আ’লীগের সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস বিএনপিকে ধোঁকা দেয়ার ফাঁদ: রিজভী
তিনি বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকার দিনের বেলায় সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ভয় পায়। তারা রাতের আঁধারে জাল ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসছে। সেজন্য তারা দেশে যাতে একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হয় সেজন্য উন্মত্ত চেষ্টা চালাচ্ছে’।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জনগণকে বিভ্রান্ত করে ‘দুঃশাসন’ দীর্ঘায়িত করতে বিএনপিকে নিয়ে উল্টাপাল্টা মন্তব্য করছেন।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ চরম কষ্টের মধ্যে থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা লুটপাট ও দুর্নীতি করে বিপুল অর্থ উপার্জন করায় সুখী জীবনযাপন করছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তারা ব্যাপক লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে যে স্বর্গ প্রতিষ্ঠা করেছে তা থেকে বের হতে চায় না। তাই ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত সরাতে বলছেন, অন্যদিকে, আইনমন্ত্রী বলছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে বিএনপিকে পিছু হটতে হবে।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার সরকার যেনতেন ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়: রিজভী
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিপক্ষে, কারণ তারা জানেন যে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ব্যাপক পরাজয়ের মুখোমুখি হবে।
রিজভী বলেন, ‘যারা জনগণের ভোটকে ভয় পায় তারাই নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের ক্ষমতার সিংহাসনের নরম গদি হাতছাড়া হয়ে যাবে। এ কারণেই তারা বিএনপিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে যেতে বলছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে খাতা-কলমের বদলে লাঠি দিয়েছে। ‘কয়েকদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও ইডেন কলেজে এর প্রমাণ দেখেছেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল দুঃশাসন ও লুণ্ঠন অব্যাহত রাখতে চায় বলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের বক্তব্যকেও গুরুত্ব দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ঈদ আসলেই আওয়ামী পরিবহন সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে: রিজভী
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লাঠি-বন্দুক নিয়ে হামলা আ.লীগের পরাজয়ের ইঙ্গিত: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে তাদের পরাজয় দেখেছে কারণ দলটি এখন বিএনপি ও শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লাঠি-বন্দুক নিয়ে হামলা করছে।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ছাত্রদলের সমাবেশের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল (বুধবার) বিএনপিকে হাঁটু ভাঙার দল বলেছেন, ‘আমাদের হাঁটু ভেঙেছে কি না তা আপনারা ভালো করেই বুঝতে পারছেন। আমরা আমাদের হাতে লাঠিও নিইনি, তবে আপনাদের পিঠ ইতোমধ্যেই ভেঙে গেছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার শুধু লাঠি নয়, ধারালো অস্ত্র ও তলোয়ারও ব্যবহার করছে এবং পুলিশের বন্দুকের ওপর নির্ভর করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যেহেতু সরকার জনগণের কাছ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তাই ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নির্ভর করছে।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই একটি ‘সন্ত্রাসী’ দল এবং সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে এর জন্ম হয়েছে, ‘তারা ছাত্রলীগের হাতে বন্দুক, পিস্তল, লাঠি সরবরাহ করেছে। যাদেরকে তারা তাদের সোনার ছেলে বলে, তারা পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ শুধু ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ওপর হামলাই করেনি, কোন্দল ও কলহের মাধ্যমে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, গণতন্ত্র ও ভোট ও জনগণের অন্যান্য অধিকার পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনকে দমন করতে সরকার বিরোধী দলের পাঁচ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ‘তারা (সরকার) সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। তারা মানুষকে গুলি করে হত্যা করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’
তিনি দাবি করেন, বিএনপির বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলায় ২৫ হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তিন হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।
যুবদল কর্মী শহিদুল ইসলাম শাওনকে গুলি করে নয়, ইটের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে বলে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার যে কথা বলেছেন তার সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দেয়া ডেথ সার্টিফিকেটে স্পষ্ট লেখা আছে, আঘাতের জন্য নয় তিনি বন্দুকের গুলিতে মারা গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বিদেশে আরামে আছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে অবস্থান করে হাস্যকর ও মিথ্যা মন্তব্য করছেন বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে মিথ্যাচার করছেন। ভয়েস অব আমেরিকা ওয়াশিংটনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে সব নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হয় এবং মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এবং তারা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। বাংলাদেশের মানুষ তার এমন বক্তব্য শুনে হাসছে।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র নেই, জনগণের নিরাপত্তা নেই এবং জনগণের ভোটাধিকার নেই বলে প্রতিদিনই সংবাদপত্র খুন, সংঘর্ষ, সহিংসতা, অনাচার ও ধর্ষণের খবরে ভরে যায়। ‘এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সরকার জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।’
তরুণ ও ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমে অতীতে পরিবর্তন এসেছে বলে তিনি শিক্ষার্থীদের জেগে ওঠার আহ্বান জানান। ‘এবারও পরিবর্তন আসবে ছাত্রদের ত্যাগ ও তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে। আমাদের একমাত্র কর্তব্য এখন সকল ছাত্র-যুবক এবং সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা। এটিই হবে সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ডের উপযুক্ত জবাব। ইনশাআল্লাহ জনগণ বিজয়ী হবে।’
বেপরোয়া মন্তব্য না করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।
১০টি বিভাগীয় শহরে জনসভা করবে বিএনপি
চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ১০টি বিভাগীয় শহরে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
এছাড়া গত ৩১ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত আন্দোলনে নিহত বিএনপি ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতার স্মরণে আগামী ৬ ও ১০ অক্টোবর সব বিভাগীয় শহর ও সব জেলা শহরে দু’টি শোক সমাবেশ করবে দলটি।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
রাজধানীতে ১৪টি সমাবেশের পর সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নতুন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ফখরুল বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনে দলের পাঁচ নেতা- ভোলায় নূর-ই-আলম ও আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান, মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আবদুল আলিম হত্যার নিন্দা জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা ও মামলার প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি ফখরুলের
দলটির ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে, ২২ অক্টোবর খুলনায়, ২৯ অক্টোবর রংপুরে, ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে, ১৯ নভেম্বর সিলেটে, কুমিল্লায় ২৬ নভেম্বর, রাজশাহীতে ৩ ডিসেম্বর এবং ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করবে।
ফখরুল বলেন, কর্মসূচির মাধ্যমে তারা জনমত গড়ে তুলতে চান এবং আন্দোলনের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে চান। ‘আমরা জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণে একটি শক্তিশালী গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের ওপর (আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য) চাপ বাড়াতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করতে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় তাদের কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ বেড়েছে।
এর আগে বিএনপি তার সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে রাজধানীতে ১৬টি সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় এবং দলটি ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৪টি সমাবেশের আয়োজন করে। কিন্তু দলটি লালবাগে সমাবেশ স্থগিত করে এবং পল্লবীতে আরেকটি সমাবেশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বানচাল করে দেয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ২২ আগস্ট থেকে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছে প্রধান বিরোধী এই রাজনৈতিক দলটি।
আরও পড়ুন: আ’লীগের সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস বিএনপিকে ধোঁকা দেয়ার ফাঁদ: রিজভী
সরকার ক্ষমতা না ছাড়লে নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় যাবে না বিএনপি: ফখরুল
শেখ হাসিনার সরকার যেনতেন ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়: রিজভী
শেখ হাসিনার সরকার যেনতেন ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অকাল প্রয়াত খুলনা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল হাসান দুলুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনীর ওপর অনুষ্ঠিত আলোচনা ও স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৩১ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত জন দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হয়েছে।গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অংশ নেয়া মানুষকে আর গুলি করে হত্যা করা যাবে না।
এছাড়া বাঁশের লাঠিতে জাতীয় পতাকা ধারণ করে শাসক দলের সকল ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিএনপির আন্দোলন এগিয়ে যাবে।
রিজভী বলেন, এই সরকার মিথ্যাচারী। তারা নিজেদের অপকর্মের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চায়। ইডেন কলেজের কলঙ্কজনক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে তারা।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশে ও ভিসির প্ররোচনায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জে পুলিশের গুলিতে শাওন নিহত হলে এসপি বলেছে সে ঠেলাঠেলিতে মারা গেছে।
শেখ হাসিনা দেশ শাসন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দেশের সমস্ত মিডিয়াতে তার জন্মদিনের সংবাদ ছাপতে বাধ্য করা হচ্ছে। গণমাধ্যমের মাথার ওপর ধারালো তরবারি ঝুলছে।
আরও পড়ুন: পুলিশের বিরুদ্ধে রিজভীর মামলার আবেদন খারিজ
গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক রহমান আন্দোলনের তরঙ্গ তৈরি করেছেন।
গুম, খুন, অপহরণ, হামলা, মামলা করে আর আন্দোলন দমন করা যাবে না।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সমাবেশে মূখ্য আলোচক ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীর সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুর বারী হেলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সাঈদ সোহরাব, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহীর, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাবেক দল নেতা মো. জমির আলী।
স্মরণ সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন এবং মরহুম আজিজুল হাসান দুলুর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন জেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা ফারুক হোসেন।
আরও পড়ুন: ঈদ আসলেই আওয়ামী পরিবহন সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে: রিজভী
আ’লীগের সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস বিএনপিকে ধোঁকা দেয়ার ফাঁদ: রিজভী
‘উপযুক্ত’ সময়ে নির্বাচনকালীন সরকারের ফর্মুলা উন্মোচন করবে বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের 'উপযুক্ত' সময়ে নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারে একটি 'ফর্মুলা' উন্মোচন করবে যা সংবিধানে যুক্ত করা বর্তমান সরকারের দায়িত্ব। সময় এলে আমরা অবশ্যই সেই (নির্দলীয় সরকারের) ফর্মুলা উপস্থাপন করব।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে তারপর ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট লুটেরা বান্ধব: মির্জা ফখরুল
সংবিধান সংশোধনের কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ তাদের (সরকার) নিতে হবে। কারণ তারা সংকট তৈরি করেছে এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের দায়িত্বও তাদের। যেহেতু এটা জনগণের দাবি, তাই তাদের দাবি মেনে নিতে হবে।
তিনি স্মরণ করে বলেন, বিএনপি ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিল। তারা (বর্তমান সরকার) একইভাবে করতে পারে।
১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন তত্ত্বাবধানে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারণা চালায় এবং ১৯৯৬ সালে তীব্র আন্দোলনের মুখে বিএনপিকে তা মেনে নিতে বাধ্য করা হয়।
সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীকে বেআইনি বলে বাতিল করে দেয়ায় ২০১১ সালে ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়।
এছাড়া গত দুটি সাধারণ নির্বাচন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল বলেন, তারা আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিতে সরকারকে বাধ্য করবেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য হাস্যকর: মির্জা ফখরুল
তিনি আরও বলেন, খুব শিগগিরই তারা 'একযোগে' আন্দোলনের রূপরেখা তুলে ধরবেন।
বিএনপির বিরুদ্ধে ২৫ হাজার নতুন মামলা
ফখরুল বলেন, গত ৩১ জুলাই থেকে জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দলের পাঁচ নেতা- ভোলার নূর-ই-আলম ও আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান, মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আবদুল আলীম-আওয়ামী লীগ সরকারের বিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত হন।
তিনি জানান, এর মধ্যে পুলিশের গুলিতে চারজন এবং ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডারদের’ হাতে আরও একজন নিহত হয়েছে।
এছাড়া ওই সময়ে বিএনপির দুই হাজার ৭৬৮ নেতাকর্মী আহত ও ২৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ফখরুল।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, সরকার তাদের দলের প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৭৫টি ‘মিথ্যা মামলা করেছে।
আমরা এই ধরনের মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা জানাই।
এছাড়া এই অনির্বাচিত সরকার জনগণের ন্যায্য দাবিতে চলমান আন্দোলনকে দমন করতে হত্যা, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: অচিরেই দেশব্যাপী সরকার পতন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে: মির্জা ফখরুল
মাথায় আঘাতজনিত কারণেই মারা গেছেন শাওন: পুলিশ
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত যুবদল কর্মী শাওন বুলেটে নয়, মাথায় আঘাতজনিত কারণেই মারা গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল মামুন ময়নাতদন্ত রিপোর্টের বরাতে প্রেসব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পুলিশের গুলিতে শাওনের মৃত্যু হয়েছে এটি সত্য নয়, তবে মৃত্যু সনদে কেন বুলেটের আঘাতের কথা লেখা হয়েছিল তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
জেলা পুলিশ সুপার আরও বলেন, মঙ্গলবার সরবরাহ করা ময়নাতদন্ত এবং ভিসেরা প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয় যে শাওন ‘সংঘর্ষের সময় মাথায় আঘাতের কারণে’ মারা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে আপোষ করেননি: নৌপ্রতিমন্ত্রী
গত ২১ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির এবং ভোলাও নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে বিরোধী দলের তিন নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির সমাবেশে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ ৫০ জন আহত হন।
পুলিশ বিক্ষোভ মিছিল থামাতে গেলে সংঘর্ষের সময় শাওন গুরুতর আহত হন।
পরের দিন তিনি তার আঘাতজনিত কারণে মারা যান।
এসপি মাহফুজুর রহমান আরও জানান, সংঘর্ষের সময় শাওনসহ অন্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
তিনি আরও দাবি করেন, ‘একপর্যায়ে শাওন লাঠি আনতে গিয়ে পড়ে যান। সেই মুহুর্তে ধোঁয়া উঠছিল যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। যুবদলের অন্য নেতাকর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে তিনি আহত হয়েছেন ‘
আরও পড়ুন: জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আ.লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে: মোশাররফ
বিএনপি নেতা হান্নান শাহের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী কাল
জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আ.লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে: মোশাররফ
বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকারের জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শুধুমাত্র আগামী নির্বাচনে ডিজিটালভাবে ভোট কারচুপির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে আরও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, দেশে এখন স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ নিজেদের শাসনকে সুসংহত করতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে এই শাসনব্যবস্থার পতন ঘটাতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। এ কারণেই বিএনপি আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করার দাবি তুলেছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ‘বিদেশিদের’ পরামর্শের ওপর নির্ভর করছে না: খন্দকার মোশাররফ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে মোশাররফ বলেন, মানুষ যখন নিজের হাতে ভোট দিতে চায় কমিশন তাদের মেশিন ব্যবহার করতে বাধ্য করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা (সরকার) ২০১৮ সালের মতো রাতে আর ভোট কারচুপি করতে পারবে না। সে কারণেই তারা এখন ইভিএম ব্যবহার করে ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দুর্ভিক্ষের মতো’ পরিস্থিতির মধ্যে যখন দেশের মানুষ তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারে না। তখন আট হাজার কোটি টাকা খরচ করে ইভিএম কেনার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ বেঁচে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে এবং তারা গ্রামীণ এলাকায় ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হচ্ছে…এমন পরিস্থিতিতে তারা (সরকার) ইভিএমের জন্য এত টাকা খরচ করতে যাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় বসতে দিলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই দেশ এবং এর অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ।
তিনি বলেন, ‘তারা রক্ষীবাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে এবং এভাবে দেশে হত্যার রাজনীতির সূচনা করেছে। তারা ১৪ বছর ধরে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় আছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে বলেছেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের হাওয়া বইছে।’
তিনি বিএনপিতে হান্নান শাহের অবদান এবং ২০০৭ সালে ১/১১-এর রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় গণতন্ত্রের পক্ষে তার ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: বর্তমান ইসির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে যাবে না: খন্দকার মোশাররফ
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ইমামদের বড় ভূমিকা রয়েছে: খন্দকার মোশাররফ
বিএনপি নেতা হান্নান শাহের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী কাল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য আ স ম হান্নান শাহের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল মঙ্গলবার।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি ও আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি পরিষদ আলোচনা সভা, র্যালিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগুটিয়া গ্রামে হান্নান শাহের সমাধিতে আগামীকাল সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা ও বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন।
আরও পড়ুন: সরকার উৎখাতের চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য জনগণ প্রস্তুত: বিএনপি
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আলোচনা সভার আয়োজন করবে আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি পরিষদ।
এ উপলক্ষে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সমাবেশের আয়োজন করা হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে, দলের জন্য প্রয়াত নেতার অবদানের কথা স্মরণ করে এ উপলক্ষে একটি বিবৃতি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল।
২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছর বয়সে হান্নান শাহ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।
১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন হান্নান শাহ। এরপর ১৯৮৩ সালে বিএনপিতে যোগ দেন এবং ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। তিনি গাজীপুর-৪ আসন থেকে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞায় থেকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মানানসই নয়: বিএনপি
ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার মানুষকে গুলি করে হত্যা করছে: বিএনপি
সরকার উৎখাতের চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য জনগণ প্রস্তুত: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলনের জন্য দেশের মানুষ প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি আর আপনার রাগ, রাইফেল ও বন্দুক দিয়ে জনগণের শক্তিকে দমাতে পারবেন না। আপনি জানেন না যে এখন রাইফেল ও বন্দুক কোন দিকে ঘুরবে। এখনও সময় আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের।’
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টির আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে ফখরুল এসব কথা বলেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, জনগণ সরকারের ‘দুঃশাসন’ ও দমন-পীড়নে বিরক্ত হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞায় থেকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মানানসই নয়: বিএনপি
তিনি জানান, সারা দেশের মানুষ উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং আপনি কোনও ব্যারিকেড দিয়ে তাদের ঠেকাতে পারবেন না। জেগে ওঠা এসব লোকেরা কেবল চূড়ান্ত একটা ধাক্কার জন্য অপেক্ষা করছে এবং তারা এটি করতে প্রস্তুত।
সরকার যুবদলকর্মী শহিদুল ইসলাম শাওন বিএনপি নেতাকর্মীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে নিহত হয়েছেন বলে অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, যারা উল্টাপাল্টা কথা বলছে এবং মানুষ হত্যার পর বিভিন্নভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা জনগণের ক্ষোভ ও ঘৃণা থেকে রেহাই পাবে না।
এই বিএনপি নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে ভাষণ দিয়ে যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং শান্তির পক্ষে কথা বলছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষ হত্যা করছে।
তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গাদের কথা বলতে গিয়ে তিনি এমন সময় কাঁদছেন, যখন বাংলাদেশে রক্ত বইছে। এই দ্বিচারিতা শেখ হাসিনার সঙ্গে মানায়। তিনি তার দেশের গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতাকে কবর দিয়েছেন এবং গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছেন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার মানুষকে গুলি করে হত্যা করছে: বিএনপি
বিএনপি ‘লাশ নিয়ে রাজনীতি’ করে ক্ষমতায় যেতে চায় বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, তাদের দল (বিএনপি) শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করলেও পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
রিজভী আরও জানান, ৩১ জুলাই থেকে বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের চার নেতাকর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ‘এর পরও ওবায়দুল কাদের বলছেন বিএনপি লাশের রাজনীতি করে। তারা মিথ্যাচার করছে এবং শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য অনিয়ন্ত্রিত ও অমানবিক মন্তব্য করছে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) মূল্যহীন ও পরাধীন আখ্যা দিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, এর দ্বারা (ইসি) সুষ্ঠু নির্বাচন করা সক্ষম নয়। ‘তারা (বর্তমান ইসি) শেখ হাসিনার সেবক। শেখ হাসিনা যদি তাদের একটি দিনকে রাত বলতে বলেন, তাহলে তারা সেটাকে রাত বলবে।’
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে শাওন হত্যার জবাব দেয়া হবে: ফখরুল