������������������������������
সাম্প্রদায়িক শক্তি যেনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে: প্রধান বিচারপতি
দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি যেনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে সব ধর্মের মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, আমরা বাঙালি। এর মধ্যে কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু, কেউ বৌদ্ধ, কেউ খ্রিষ্টান। ধর্ম নয়, আমাদের একমাত্র পরিচয় হওয়া উচিত আমরা বাঙালি।’
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত সরস্বতী পূজার বাণী অর্চনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই দেশের প্রকৃতি কেমন হবে তা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে নির্ধারণ হয়ে গেছে। এটা বাঙালিদের দেশ, এটা বাংলাদেশিদের দেশ। এই দেশের মানুষ ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। এটা কারও করুণা নয়।’
সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতার গ্যারান্টি দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি কেমন হবে সেটা আমাদের সংবিধানে উল্লেখ আছে। কার স্ট্যাটাস কেমন হবে সেটাও উল্লেখ আছে। আমরা কেউ মেজরিটি না আবার কেউ মাইনরিটিও না। সবাই আমরা এদেশের নাগরিক। সবার পরিচয় আমরা বাঙালি। কেউ নিজেকে মাইনরিটি কমিউনিটির লোক হিসেবে ভাববেন না। এটা কখনও ভাবার কোনো অবকাশ নেই।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা যদি বাংলাদেশের সংবিধানকে মানি, তাহলে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এদেশের সবাই বাঙালি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলে যার যার ধর্ম আমরা পালন করব। আমাদের ইসলামের নবী বিদায় হজের ভাষণে বলে গেছেন, ধর্ম নিয়ে তোমরা বাড়াবাড়ি করো না। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারণে অনেক জাতি ধবংস হয়ে গেছে। আসুন ধর্মের বাণী ধারণ করে আমরা সৎ থাকব, আমরা দুর্নীতির কাছে যাব না, আমরা মানিলন্ডারিং করব না। আমরা সব ধর্মের মানুষ মিলে এই দেশকে গড়ে তুলব। কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে দেব না।’
আরও পড়ুন: বিচারপ্রার্থীদের আদালতের বারান্দা থেকে দ্রুত বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
দুর্নীতি ও মানিলন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে সবাইকে শক্ত অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘দুর্নীতির অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। যারা মানিলন্ডারিং করে তাদের খুঁজে বেড় করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে ব্যয় সংকোচন করে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণ করব। আমরা মিত্যবায়ী হব।’
অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে আদালতের নিরাপত্তায় ১১ দফা নির্দেশনা প্রধান বিচারপতির
সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, যেটা দেশবাসী চাচ্ছে, সারা বিশ্বও সেভাবে তাকিয়ে আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আপনাদের (ডিসি) ভূমিকাই মুখ্য হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের ষষ্ঠ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এই কার্য-অধিবেশন হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা বলেছি আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এখন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম। তাদের দেশপ্রেম, তাদের অভিজ্ঞতা, তাদের দক্ষতা...তারা এখন পরিপূর্ণ। কাজেই নির্বাচনের সময় যা প্রয়োজন, তাদের অভিজ্ঞতা ও তাদের দক্ষতা দিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি তারা মোকাবিলা করতে পারবে।'
তিনি বলেন, 'বস্তুত সেই সময় তো আমাদের করণীয় কিছু থাকবে না। মন্ত্রণালয় শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। মূল দায়িত্বে থাকবে ইলেকশন কমিশন। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাছেই ন্যস্ত হবে।'
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ২ উপজাতি তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: একজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তাই আমরা বলেছি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যেটা দেশবাসী চাচ্ছে। সারা বিশ্বও সেইভাবে তাকিয়ে আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আপনাদের ভূমিকাই মুখ্য হবে। সেজন্য আপনারা তৈরি থাকুন, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারেন।'
তিনি বলেন, 'মাদক নিয়ে কথা বলেছি। এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। মাদকের প্রতিরোধে আমরা তিন ভাগে ভাগ করে কাজ করছি। প্রথমে আমাদের চাহিদা কমাতে হবে। এ বিষয়ে তারা (ডিসি) মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
আমরা বলেছি, স্কুল, কলেজ, মসজিদ মাদরাসায় সব জায়গায় যেন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সবসময় খেয়াল রাখেন। মাদকের চাহিদা কমানোর জন্য তারা যাতে কাজ করেন সেই কথা বলেছি। এটা না করতে পারলে আমাদের যে স্বপ্ন ২০৪১, ২০৩০; হয়তো অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি আমরা এই জায়গাটিতে কাজ না করি।'
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের টলারেন্স নীতির কথা তাদের বলেছি। পাসপোর্ট ইমিগ্রেশনে আমরা আধুনিক জগতে চলে গেছি। ই-পাসপোর্ট ই-ভিসা ই-গেট এগুলোতে আমরা চলে গেছি সেগুলোর কথা আমি বলেছি।'
বিজিবির আওতার আট কিলোমিটার বাইরে গুলি হলে সে বিষয়ে প্রশাসনের তদন্তসহ ডিসিদের অন্যান্য প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের সিনিয়র সচিব সে বিষয়ে বলেছেন তিনি এই প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তিনি সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।'
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ কোনদিনও জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়নি। বিদেশ থেকে নানা ধরনের ইঙ্গিত কিংবা ষড়যন্ত্র...আমাদের এখানে দেয়ার প্রচেষ্টা হচ্ছিল যেটা আমি সবসময় বলে আসছি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাজটি সঠিকভাবে করতে পেরেছে। কাজেই জঙ্গি আমরা দমন করেছি। কিন্তু আমরা গোড়া থেকে উঠিয়ে দিতে পারিনি। এখনও মাঝে মাঝে দু-একটি ঘটনা ঘটছে। (জঙ্গিরা) আমাদের এখান থেকে চলে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের ওখানে যোগাযোগ করছে। সেই ঘাঁটিটাও আমরা সমূলে বিনষ্ট করে দিয়েছি।'
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক হলেন ৬ পুলিশ কর্মকর্তা
আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমি তো সবসময় বলে আসছি, রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে, যদি তারা দীর্ঘদিন এখানে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘসহ সব জায়গায় আপিল করছেন।'
তিনি বলেন, 'এই জনগোষ্ঠী সবকিছু হারিয়ে, সবকিছু ফেলে এসেছে। কাজেই জঙ্গিরা এদের প্রলুব্ধ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এটা ধারণা করতে পেরেছেন বলেই, তিনি তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সব সময় চাপ দিয়ে আসছেন।'
রোহিঙ্গাদের একটি অংশ ইয়াবা পাচারসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, 'আমাদের এপিবিএন, আমাদের সেনাবাহিনী, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী সবাই সক্রিয় আছে আমার মনে হয় যা ঘটছে এর আর বিস্তার ঘটবে না।'
আরও পড়ুন: তথ্য সুরক্ষায় তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে: আইনমন্ত্রী
তথ্য সুরক্ষায় তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে তথ্য সুরক্ষা আইন তথ্য সুরক্ষার জন্য প্রণীত হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে নয়।
তিনি বলেছেন, 'একটি আইন যেভাবে পাস হয় সেভাবে আমরা এটি জাতীয় সংসদে নেবো। তার মানে এই নয় যে, এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের কথা শোনা হবে না। এটা নিয়ে যখন সেমিনার হয় তখন আমি বলেছিলাম এটি কন্ট্রোল করার জন্য না এটা প্রটেক্ট করার জন্য। সেই নীতি অনুযায়ী ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট হবে।’
আরও পড়ুন: আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের সঙ্কট নিরসন
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের চতুর্থ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সংসদে তথ্য সুরক্ষা আইনের খসড়া উপস্থাপন করব। এর মানে এই নয় যে স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে পরামর্শ শোনা হবে না।’
এছাড়া সরকার বড়, মাঝারি ও ছোট এই তিন ক্যাটাগরিতে জেলাগুলোকে ভাগ করে সরকারি আইন কর্মকর্তাদের (পিপি ও জিপি) বেতন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এই কার্য-অধিবেশন হয়।
তিনি বলেন, আগে পিপি ও জিপিদের বেতন ছিল দুই হাজার ও তিন হাজার টাকা। এখন আমরা প্রস্তাব যেটা আছে সেটা হলো ৬৪ জেলাকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি। বড় জেলা, মাঝারি জেলা ও ছোট জেলা। আমরা প্রস্তাব করেছি বড় জেলার যিনি পিপি হবেন, তার বেতন হবে ৫০ হাজার টাকা। মাঝারি জেলার পিপির বেতন হবে ৪৫ হাজার টাকা, ছোট জেলার ৪০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, সহকারী পিপি, অতিরিক্ত পিপি ও অতিরিক্ত জিপি থাকবেন সেটাও নির্ণয় করা হবে, কী কী কোর্ট আছে সেটার ওপর নির্ভর করে। সেজন্য ২৬৭ কোটি টাকা আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চেয়েছি, তারা বরাদ্দ দিতে রাজি হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, ‘আমার মনে হয় আগামী নির্বাচনের পর যে সরকারই আসুক না কেন, তারা এটা অবশ্যই বিবেচনা করবেন। কারণ জিপি-পিপিদের দায়িত্ববান হওয়ার জন্য এবং তাদের একটা সম্মানজনক অবস্থানে আনার জন্য এই বেতন কাটামো বদলানো অত্যন্ত প্রয়োজন।’
বহু আগে থেকেই রাজনৈতিক বিবেচনায় জিপি-পিপিদের নিয়োগ দেয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাই প্রথম পিপিদের বেতন বাড়িয়ে ১৫ হাজার ও ১২ হাজার টাকা করি। সেক্ষেত্রে আমরা একটি বিরাট পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি এ ব্যাপারে একটু ধীর গতিতে যাচ্ছিলাম, কারণ আমার টার্গেট ছিল ৫০ হাজার টাকা। কারণ তখন বিজ্ঞ পিপিরা বলেছিলেন, এটাতেই রাজি হয়ে যেতে, তাই তখন আমি রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।’
জিপি-পিপিদের বেতন বাড়ানোর কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে সম্পূর্ণ পিপি সার্ভিসটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস হবে না। ৩০ শতাংশ থাকবে ফর ডেজিগনেটেড পারপাজেস। বিশেষ বিশেষ কাজে তাদের নিয়োজিত করা হবে।’
‘সেটার নিয়োগ হবে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। আমি এটা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলছি আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।'
এটা কি আগামী নির্বাচনের পরে করা হবে কি না- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আমরা চেষ্টা করবো এখনই করার জন্য।’
‘জিপি-পিপিদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কিছুটা হলেও তাদের সম্মান রক্ষা ও তাদের কাছ থেকে দায়িত্ব আদায় যথেষ্ট হবে। বলছি না এটাই সবচেয়ে যথেষ্ট, ইট ইজ ভেরি গুড ফার্স্ট স্টেপ’ বলেন আনিসুল হক।
ডিসিদের সঙ্গে অধিবেশনে মামলাজট কমাতে সরকারের উদ্যোগগুলো তুলে ধরেছেন জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি, লিগ্যাল এইড সার্ভিস নিয়ে বলেছি। একটি বিষয় তুলে ধরেছি, সেটা হলো কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের কম্পাউন্ডেবল এবং নন কম্পাউন্ডেবল যে ধারাগুলো রয়েছে। কম্পাউন্টেবল ধারায় যে বিজ্ঞ বিচারকরা মামলা করতে আসবেন, তাদের উৎসাহিত করবেন, তারা যাতে আদালতের বাইরেই নিষ্পত্তি করে আসেন। এই নিষ্পত্তির ওপর আদালত যদি একটা অর্ডার দিয়ে দেন তবে সেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইনে যাচাই করে যাতে মামলা নেয়া হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা না হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ বিষয়ে বেস্ট প্র্যাকটিসের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। যদি প্রয়োজন হয় তবে অবশ্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট আমরা সংশোধনও করতে পারি।’
আরও পড়ুন: ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা: আইনমন্ত্রী
মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি: আইনমন্ত্রী
অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক হলেন ৬ পুলিশ কর্মকর্তা
পুলিশের চার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার।
একই দিনে দুই অতিরিক্ত আইজিপি গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সর্বশেষ পদোন্নতির বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
আরও পড়ুন: পুলিশের ৭ ডিআইজিকে এআইজিপি পদে পদোন্নতি
পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জামিল আহমেদ, পুলিশ স্টাফ কলেজের ডিআইজি মো. হুমায়ুন কবির, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি ওয়াই এম বেলালুর রহমান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মীর রেজাউল আলমকে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি মো. কামরুল আহসান এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম গ্রেড-১ শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: জনগণের কল্যাণে কাজ করুন: পদোন্নতিপ্রাপ্ত ডিআইজিদের আইজিপি
চট্টগ্রামে ২ উপজাতি তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: একজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল মহাদেবপুর পাহাড়ি আদিবাসী পল্লীতে দুই ত্রিপুরা তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় আবুল হোসেন নামে এক আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আলীমুল্লাহ এই রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় এ মামলায় বেখসুর খালাস পেয়েছে মো. মানিক নামে আরেক আসামি।
বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পোশাল পিপি অ্যাডভোকেট অশোক কুমার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, দুই উপজাতির তরুণীর পরিবার আশঙ্কা করেছিল তারা যেহেতু উপজাতি হয়তো সঠিক বিচার পাবে না। তাদের সে ভুল ভেঙ্গেছে রায়ের মধ্য দিয়ে। মামলার বাদী এবং দুই তরুণীর পরিবার বলেছে তারা ন্যায় বিচার পেয়েছে।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৮ মে রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলায় জঙ্গল মহাদেবপুর পাহাড়ি আদিবাসী পল্লী থেকে দুই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তারা হল- ত্রিপুরা আদিবাসী পল্লির বাসিন্দা ফলিন ত্রিপুরার কন্যা সুখলতি ত্রিপুরা (১৫) এবং সুমন ত্রিপুরার কন্যা ছবি রাণী ত্রিপুরার (১২)। একই ঘরের একটি কক্ষে একজনের লাশ ঝুলন্ত এবং অপরজনের লাশ অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে ধর্ষণের শিকার উপজাতি শিক্ষার্থী
এ ঘটনায় পরদিন সীতাকুণ্ড থানায় নিহত কিশোরী ছবি রানী ত্রিপুরার বাবা সুমন ত্রিপুরা বাদি হয়ে মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, দুই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
অভিযোগ ছিল, বেশ কিছু দিন ধরে পার্শ্ববর্তী গ্রামের আবুল হোসেন দুই কিশোরীকে উত্যক্ত করে আসছিল। এই ঘটনায় তাকে প্রধান আসামি সহ তিনজনকে আসামি করা হয়।
তারা হলেন মো. রাজিব ও মো. মানিক।
অ্যাডভোকেট অশোক কুমার জানায়, মামলা চলাকালে আসামি রাজিব দুর্বৃত্তদের হাতে মারা যায়।
প্রধান আসামি আবুল হোসেন ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ মামলায় আবুল হোসেন ও মো. মানিক আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
আরও পড়ুন: বাসাইলের সাবেক ইউএনও মঞ্জুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
নাটোরে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় বৃদ্ধের ১০ বছরের কারাদণ্ড
না.গঞ্জে পাওয়ার প্লান্টের চীনা কর্মীদের আবাসস্থলে হামলা ও ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৫
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা গ্রুপের নির্মাণাধীন পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত চীনা নাগরিকদের আবাসস্থলে হামলা ও ডাকাতির ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ধারালো অস্ত্র, বেশ কিছু ডলার ও নগদ টাকা জব্দ করার দাবি করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকত দলের এই পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার জানান, মেঘনা গ্রুপের নির্মাণাধীন এনইপিসি পাওয়ার প্লান্ট-৩ প্রকল্পে কর্মরত তিন চীনা নাগরিকসহ আরও কয়েকজন কর্মচারী উপজেলার পিরোজপুর এলাকায় একটি জমি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করছিলেন। গত ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তাদের আবাসস্থলে দশ থেকে বারোজনের একদল সশস্ত্র ডাকাত হানা দেয়। তারা তিন চীনা নাগরিকসহ পাঁচজনকে হাত পা বেঁধে মারধর করে ১১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা সমমানের ডলার ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে ডিবি পরিচয়ে প্রবাসীর গাড়ি আটকে ১০ লাখ টাকার মালামাল লুটের অভিযোগ
এ ঘটনার পরদিন ২১ জানুয়ারি জমির মালিক বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা করলে থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ যৌথ অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার রাতে ডাকাত দলের মূল হোতা ওমর ফারুক ওরফে চাপাতি ফারুককে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ১০/১২ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তার দেয়া তথ্যমতে গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাত দলের আরও চারজনকে।
অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান জেলা পুলিশ সুপার।
আরও পড়ুন: এশিয়ান টিভির নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধির ওপর হামলা!
নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শকসহ আহত ২
১ ফেব্রুয়ারি থেকে আপিল বিভাগে প্রবেশে লাগবে ডিজিটাল পাস
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রবেশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পাস সংগ্রহ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট থেকে এ পাস সংগ্রহ করেই বিচারপ্রার্থীরা আপিলে প্রবেশ করতে পারবেন। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
যে কোনো বিচারপ্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এন্ট্রি লিস্ট মেনুতে ক্লিক করতে হবে। কিউআর কোড স্ক্যান করে বা পর্যায়ক্রমে প্রবেশের তারিখ, মামলার নাম্বার, বিচারপ্রার্থীর নাম, মোবাইল নাম্বার এবং ন্যাশনাল আইডি নাম্বার টাইপ করতে হবে। এরপর নিবন্ধনে বাটনে ক্লিক করে পাস প্রিন্ট করা যাবে।
এ পাসের প্রিন্ট কপি অথবা স্ক্রিনশট বা ডাউনলোড কপি দেখিয়ে প্রবেশ করা যাবে।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতির নিয়োগ
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকাঠামো ক্রমাগত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে প্রবেশ পাস ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে।
আপিল বিভাগে প্রবেশ করতে আগ্রহী বিচার প্রার্থী সংযুক্ত ব্যবহার বিধি অনুসরণপূর্বক স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রবেশের তারিখ ও মামলা নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে আপিল বিভাগের ডিজিটাল পাস সংগ্রহ করতে পারবে।
উক্ত প্রবেশ পাস ডিজিটাল অথবা প্রিন্টকপি ব্যবহার করে আপিল বিভাগের এজলাসে প্রবেশ করতে পারবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে আপিল বিভাগের এজলাস ও এজলাস সংলগ্ন স্থানে কোনো বিচারপ্রার্থী প্রবেশ পাস প্রদর্শন ব্যতিত ঢুকতে বা অবস্থান করতে পারবেন না।
এ আদেশ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে ৪ বিচারপতি নিয়োগ
বিশেষ পরিস্থিতিতে ব্যক্তির চলাফেরায় বাধা দেয়া যাবে: আপিল বিভাগ
বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার: নীলফামারীর বার সভাপতিহ ৩ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, আইন-আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন এবং বিচারকের সঙ্গে অপেশাদারিত্বমূলক, আক্রমণাত্মক ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে এবার নীলফামারী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিদের তলব করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রাজজ) গোলাম সারোয়ারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে নীলফামারী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মমতাজুল হকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
বিচারকদের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির বিশৃঙ্খলা ঘটনা শেষ হওয়ার আগেই নতুন এই ঘটনা সামনে এলো।
এসময়,আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
আইনজীবীরা হলেন- মো. মমতাজুল হক, আইনজীবী মো. আজহারুল ইসলাম ও আইনজীবী ফেরদৌস আলম।
জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) গোলাম সারোয়ারের পাঠানো পত্রে বলা হয়, গত ২৮/১১/২০২২ তারিখে আদালতে আত্মসমর্পণকারী আসামি হাছিনা বেগমের আত্মসমর্পণপূর্বক জামিন শুনানি, আসামি আইনুল হকের জামিনের মেয়াদ বর্ধিতকরণ এবং হাজতি আসামি হাছানের জামিন শুনানির জন্য ছিল। পুলিশ রিপোর্ট, চিকিৎসা সনদ পর্যবেক্ষণ করে এবং আদালতে উপস্থিত ভুক্তভোগীর পরীক্ষার পর আসামির জামিন নামঞ্জুর করা হয় এবং অপরাপর আসামিদের জামিন আবেদন এবং মেয়াদ বর্ধিতকরণ আবেদন না-মঞ্জুর পূর্বক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করি। এই আদেশ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই অত্র মামলার নিয়োজিত আইনজীবী মমতাজুল হক, আইনজীবী মো. আজাহারুল ইসলাম, আইনজীবী ফেরদৌস আলমসহ তাদের অপরাপর সহযোগী আইনজীবীগণ অত্যন্ত মারমুখী হয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এজলাসের টেবিল চাপড়িয়ে বিকট শব্দে আমার প্রতি বিরূপ উক্তি উচ্চারণ পূর্বক হামলা করার প্রয়াস চালায়। তারা হুমকি দিয়ে বলে, 'জামিন দিয়ে নেমে যা, সরি বল, চাকরি করার দরকার নাই, বাড়ি গিয়ে বসে থাক, কোথা থেকে পড়াশোনা করেছো, আইন-কানুন জানো না, নীলফামারীর বার খুবই ভয়ঙ্কর, এর আগে অনেক বিচারককে পিটিয়ে এখান থেকে তাড়িয়েছি, কোথা থেকে এসেছো, এসেই উল্টা পাল্টা আদেশ দাও।' এই পরিস্থিতিতে এজলাসের অবস্থা বেগতিক দেখে আমি তাদের সঙ্গে কোনরূপ তর্কে না জড়িয়ে তাৎক্ষণিকভাবে এজলাসের কার্যক্রম মুলতবি রেখে আমার খাস কামরায় চলে যাই। খাস কামরায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। অপেক্ষা করাকালীন সময়েও ওই আইনজীবীরা আমাকে জঘন্য ভাষায় বার সভাপতি আইনজীবী মমতাজুল হক, সহ-সভাপতি আইনজীবী মো. আজাহারুল ইসলাম এবং আইনজীবী ফেরদৌস আলম আমাকে গালিগালাজ করতে থাকে। উক্ত সময়ে উপস্থিত অপরাপর আইনজীবীদের নিয়ে যে আচরণ করেছেন তাতে আমি বাংলাদেশ বিচার বিভাগের অধস্তন আদালতের সর্বোচ্চ পদে আসীন হিসাবে হতাশ, বাকরুদ্ধ, মর্মাহত, লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছি এবং উক্ত ঘটনার কারণে আমি সহ এই জেলার অপরাপর বিজ্ঞ বিচারকগণ নিরাপত্তাহীনতাসহ লাঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কাবোধ করছি। এমতবস্থায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহোদয়ের সদয় মর্জি হয়।
গত ২৯ ডিসেম্বর নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রাজজ) গোলাম সারোয়ারের পাঠানো অভিযোগপত্রটি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন। গত ৩ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি অভিযোগপত্রটি বিচারের জন্য হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন। তার ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আদেশের জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় উঠে।
আরও পড়ুন: সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি দিলেন হাইকোর্ট
স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
চিকিৎসকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেয়ার পরও নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
সারা দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করায় তলবাদেশে তিনি হাজির হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
ডিজির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
আরও পড়ুন: কারাগারে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে হাইকোর্টের তলব
এর আগে তলবাদেশে হাজির হওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, এই বিষয়টি অনেকবার এসেছে। কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে (তলব) লজ্জা লাগে। এটা শোভনীয় না। আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি।
এ সময় ডিজির পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এটা কনসিডার (বিবেচনা) করেন। স্বাস্থ্যের সমস্যা কোভিডের জন্য হয়েছে।’
তখন আদালত বলেন, সরকার তো কোনও খাতেই টাকা কম দেয় না।
আদালত ফরিদপুর মেডিকেলের দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ৪০০ গুণ একটি জিনিসের দাম হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না?
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সব জায়গায় ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’
আদালত বলেন, গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। ডিজিকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনও কিছু (আদেশ) গেলে রেসপন্স করবেন।
পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আদালতে বলেন, ‘কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে যে বিলম্ব হয়েছে, এটা অনিচ্ছাকৃত। আমার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমি খুবই দুঃখিত। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এমন হবে না।’
আরও পড়ুন: সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি দিলেন হাইকোর্ট
পরে আদালত এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ মে দিন ঠিক করে দেন এবং ডিজিকে তার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।
রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ডিজি আদালতে হাজির হয়ে জানিয়েছেন তিনি সব শূন্য পদে ইতোমধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ করেছেন। ১৪১ জন নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৬ জন যোগদান করেছেন। বাকি পাঁচজন শিগগিরিই যোগদান করবেন।
এছাড়া আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্বের জন্য ডিজি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন।
এছাড়া আদালত ডিজিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যহতি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এতদিন কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ সরাসরি হয় না। প্রেষণে নিয়োগ হত। এখন সরাসরি নিয়োগের জন্য একটি কসড়া নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই খসড়া নীতিমালার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়ে ২ মে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে ডাক্তার নিয়োগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে গত ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়।
অন্যথায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও সে আদেশ বাস্তবায়ন না করায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে তলব করেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, কারা চিকিৎসক সংকট নিয়ে দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে রিট দায়ের করেছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন (রবিন)।
পরে ২০১৯ সালের ২৩ জুন জারি করা রুলে কারাগারে আইনগত অধিকার নিশ্চিত, মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কারা চিকিৎসকের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের খুঁজে বের করতে স্বাধীন কমিশন কেন নয়: হাইকোর্ট
আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এছাড়াও অপর এক আদেশে আদালত সারা দেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মাকে ৫ টুকরো করে হত্যা: সুবর্ণচরে ছেলেসহ ৭ আসামির মৃত্যুদণ্ড
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মাকে পাঁচ টুকরো করে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ছেলেসহ সাত আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়।
২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বুধবার বিকালে উপজেলার চর জব্বর ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের নূরজাহান বেগম (৫৮) এর খন্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলো- ওই ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের আবদুল বারেক, নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির (৩২), একই গ্রামের মিলন মাঝির ছেলে নিরব (২৬), নূর আলমের ছেলে কসাই নূর ইসলাম (৩২), দুলাল মাঝির ছেলে কালাম ওরফে মামুন (২৮), মমিন উল্যার ছেলে মো. ইসমাইল (৩৫), হারুনের ছেলে মিলাদ হোসেন সুমন (২৮) এবং মারফত উল্যার ছেলে হামিদ (৩৫)।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা এ রায় দেন।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ হত্যার ঘটনায় প্রথমে নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় একটি মামলা করে। মামলার সূত্র ধরে পুলিশী তদন্তে হত্যার সঙ্গে সন্তানের সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। একইসঙ্গে তার ৬ সহযোগী মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রমাণ পায় পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৭ আসামি উপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় ২৭ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। একইসঙ্গে আটক নিহতের ছেলের বন্ধু নিরব ও নূর ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি, বালিশ, কোদাল ও নিহতের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বুধবার বিকালে উপজেলার চর জব্বর ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের একটি বিল থেকে নূরজাহানের পাঁচটি খন্ডিত অংশের একটি অংশ উদ্ধার করে। পরে, পুলিশ নিহতের শরীরের আরও চারটি খন্ডিত অংশ উদ্ধার করে।
এর আগে, জমি বিরোধ নিয়ে বাকবিতণ্ডার পর ৬ অক্টোবর রাতে খাওয়ার পর নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন নূরজাহান। রাত ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে কোন এক সময় হুমায়ুন কবির তার ৬ সহযোগীকে নিয়ে ঘুমন্ত নূরজাহানকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিহতের লাশকে পাশ্ববর্তী একটি ধানখেতে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা আলাদাসহ পাঁচ টুকরা করে খন্ডিত অংশ ধানখেত ও বিলের মধ্যে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় মামলা করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হুমায়ুন কবিরকে আটক করে। পরে, জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী খুন হয়েছে প্রমাণ হয় এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তার ছয় সহযোগীকে আটক করে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
ঢামেকে ৭০ বছর বয়সী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু