������������
ন্যায্যমূল্য ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিদের
শেখ মফিজুর রহমান শিপন
দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়ে সারা বছরের চাহিদা মেটাতে নানা পরামর্শ দিয়েছে পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় সর্বোচ্চ জেলা ফরিদপুরের চাষিরা।
তারা মনে করেন, উন্নত জাতের পেঁয়াজ বীজ সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি থাকবে না।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের দাবি, চাষিদের মাঝে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ও উন্নত বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত বছর ফরিদপুরের ৯ উপজেলায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করে চার লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের (মুড়িকাটা) আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদিত হবে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ।
আরও পড়ুন: হিলিতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম
ফরিদপুরের সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর মাঠে সরেজমিনে দেখা গেছে, মৌসুমে পেঁয়াজ সংগ্রহের পর পরবর্তী ফসল আবাদের অর্থ যোগান দিতে বাধ্য হয়ে কম মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে হয় তাদের। এছাড়াও গ্রীষ্মকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদের খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। একর প্রতি চাষিদের খচর লাখ টাকার বেশি। এ কারণে এই পেঁয়াজ বাজারের তুলার সময়ে কেজি প্রতি কৃষক পর্যায়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হারে দর না পেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে তারা।
জেলার সালথার মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষি আকবর মাতুব্বর, সিরাজ মোল্লা, হানিফ ব্যাপারীসহ বেশ কয়েক জন চাষি জানান, মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম ও পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না এই পেঁয়াজ।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য এনবিআরকে অনুরোধ
চাষিরা বলেন, ‘পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য, বেশি দিন সনাতন পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায় না। এ কারণে ফরিদপুর অঞ্চলের পেঁয়াজ আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে সারা বছর চাষিরা বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ করতে পারবে।’
বেশি লাভে আখ চাষে ঝুঁকেছেন মাগুরার কৃষকরা
আখ চাষে লাভ বেশি হওয়ায় মাগুরার কৃষকরা দিন দিন আখ চাষে ঝুঁকেছেন। জেলায় আখের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই চলতি মৌসুমে জেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। এখাকার আবহাওয়া ও মাটি চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও ভালো হয়। বোম্বাই, মুগী জাতের আখ চাষে আগ্রহী এখানকার কৃষকরা।
আরও পড়ুন: চৌগাছায় ১৮০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ
কৃষক ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এবারের মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। দামও ভালো আছে। এই রকম দাম থাকলে ভালো লাভ হবে বলে আশা করছি। চাহিদা বেশি থাকায় খেতেই আখ বিক্রি হয়ে যায়। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারে তেমন একটা রোগ বালাই দেখা দেয়নি। অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি লাভের আশা করছি।’
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে মাল্টা ও কমলা চাষে লাভবান চাষিরা
কৃষক আলামিন হোসেন জানান, আখ একটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল, যা জমিতে প্রায় ১৩-১৪ মাস থাকে। বাংলা সনের আশ্বিন ও কার্তিক মাসে আখ জমিতে রোপন করা হয়। আখ বাজারজাতকরণের উপযোগী হতে প্রায় ৮-১০ মাস সময় লাগে।
আরও পড়ুন: আবাদ মৌসুমে সারের দাম বৃদ্ধি, ফরিদপুরে আমন উৎপাদনে শঙ্কিত চাষিরা
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক জানান, এই জেলার মাটি আখ চাষের জন্য উপযোগী। এবার জেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে ঈশ্বরদী ৪১, ৩৭, ১৬ ও ৮ জাতের আখ চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারে আঁখের ভালো ফলন হয়েছে। আশা করছি কৃষকরা লাভবান হবেন।
চৌগাছায় ১৮০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ
শিম শীতকালীন সবজি হলেও বেশ কয়েক বছর থেকে গ্রীষ্মে এ সবজি চাষ করে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। যশোরের চৌগাছায় এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। শীত মৌসুম শুরুর দিকে উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে শিমের দাম বেশি থাকে। বেশি দামে শিম বিক্রিয় আশায় যশোরের চৌগাছার চাষিরা গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
এরমধ্যে অধিকাংশ জমির প্রতিটি গাছ ফুলে ফুলে ভরে গেছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে শিম বিক্রি করে চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছেন।
শীত মৌসুম শুরুর আগে ভাগেই কৃষকরা খেত প্রস্তুত করে শিমের বীজ বপন করেন। পুরো শীতে শিম বিক্রি করে বেশ লাভবান হন তারা। শীতের শিম এখন চাষ হচ্ছে গরমেও। নতুন চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। শিমে অন্যান্য সবজির মত ভাইরাস নেই বললেই চলে। সব ধরনের মাটিতেই শিমের চাষ হয়। বাজারে শিমের চাহিদা ভালো, দামও বেশি পাওয়া যায়। তাই গ্রীষ্মের শিম চাষে ঝুঁকছেন এ জনপদের চাষিরা।
আরও পড়ুন: সবজিতে সবুজ দিগন্ত!
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চৌগাছাতে এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। রুপবান ও ইসপা-২ জাতের শিম বেশি চাষ হচ্ছে।
উপজেলার সিংহঝুলী, ফুলসারা, নারায়নপুর, স্বরুপদাহ ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা গেছে, চাষিরা গ্রীষ্মের শিম অত্যন্ত যত্ন সহকারে মাচায় চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমির শিমে ইতোমধ্যে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। আর সপ্তাহ দুয়েক পরেই কৃষক তার পরিশ্রমের ফল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন।
পেটভরা গ্রামের শিম চাষি মোসত বিশ্বাস বলেন, ‘শিম মূলত শীতের সবজি, কিন্তু গ্রীষ্মেও এর চাষ হচ্ছে ,ফলনও আশানুরুপ। তাই আগাম শিম চাষ করছি।’
আরও পড়ুন: ভাসমান সবজি চাষে সাবলম্বী খুলনার ভূমিহীন কৃষকরা
চলতি মৌসুমে তিনি ১ বিঘা জমিতে রুপবান জাতের শিমের চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত তার প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। কোন দুর্যোগ দেখা না দিলে লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে মনে করছেন মোস্ত বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘গ্রীষ্মের শিম চাষে পোকা মাকড়ের উপদ্রুপ কিছুটা বেশি থাকে, তবে নিয়মিত জমি পরিচর্যা করলে পোকায় শিম বেশি ক্ষতি করতে পারে না। নিয়মিত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করলে শীতের মতই শিম গাছের বৃদ্ধি খুবই ভালো থাকে।’
কৃষক মোস্ত বিশ্বাসের মত কৃষক আব্দুল খালেক, শরিফুল ইসলাম, হাবিবুল্লাহ এক বিঘা করে ও সাইফ দুই বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন।
উপজেলার ফুলসারা ও সিংহঝুলী ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের চাষিরা তুলনামূলক নিচু জমিতে গ্রীষ্মের শিম চাষ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে বন্যার ক্ষতি পোষাতে আগাম সবজি চাষ
কৃষকরা জানান, যে সব জমিতে বছরের বেশির ভাগ সময় পানি জমে থাকে সেই জমিতে শিম চাষ করে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। গত সাত বছর ধরে কৃষকরা নিচু জমিতে উঁচু বেড তৈরি করে সেই বেডে শিমের বীজ রোপন করেন। একাধারে বৃষ্টিপাত হলেও এসব জমির শিম নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম থাকে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস জানান, নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে চৌগাছার কৃষকেরা বেশ পারদর্শী। অনেক আগে থেকেই এ অঞ্চলে গ্রীষ্মের শিম চাষ হচ্ছে। কৃষকরা যাতে এ সব ফসল উৎপাদনে কোন সমস্যায় না পড়েন তার জন্য কৃষি অফিস সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।
সবজিতে সবুজ দিগন্ত!
সবজি চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে যশোরের মুনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের শাহপুর ও হায়াতপুরের কৃষকরা। এই খানে বছরের ১২ মাস সবজি চাষ করা হয়। শাহপুর ও হায়াতপুর গ্রামের অন্তত ৫০০ পরিবার সবজি চাষ করে এখন স্বাবলম্বী।
উপজেলার পশ্চিমে রাজগঞ্জ বাজারের পাশেই শাহপুর ও হায়াতপুর সবজি চাষের মাঠ। মাঠের পর মাঠ নানা ধরনের সবজি ছড়িয়ে আছে। গ্রাম দু’টিতে বিশাল খেত জুড়ে ১২ মাসই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হচ্ছে। আর এই খেতে কাজ করছে শত শত নারী-পুরুষ ।
কৃষি বিভাগ জানায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এই মাঠে সবজি চাষিদের সব সময় উৎসাহ এবং সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: আবাদ মৌসুমে সারের দাম বৃদ্ধি, ফরিদপুরে আমন উৎপাদনে শঙ্কিত চাষিরা
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সরোজমিনে শাহপুর ও হায়াতপুরে দেখা গেছে, সবজি খেতগুলোতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, ঢেঁড়স, মুলা, লাউ, শিম, বরবটি,ক্ষীরা, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো, লালশাক, পালংশাক, কাঁচ কলা, বেগুন, শসা, মেটে আলু, ডাটা,পটল, ঝিংগা, উচ্ছে, কাকরোল, গাজর, চিচিঙ্গা ও ওলসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের ও বারোমাসি সবজিতে ভরপুর। বিশাল এই মাঠে উত্তম কৃষি চাষের মাধ্যমে নিরাপদ ও বালাইমুক্ত সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে।এখানে সবজি চাষে জৈব সারও ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে ফসলের পোকা নিধনে পরিবেশবান্ধব ‘আলোক ফাঁদ’
স্থানীয় চাষি রবিউল ইসলাম জানান, এই মাঠের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যশোর, খুলনা ও ঢাকার বড় বড় বাজারেও সরবরাহ করা হয়।
শাহপুর গ্রামের চাষি শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ২ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। সেই খেত থেকে বুধবারও (১৫ সেপ্টেম্বর) তিনি তিন মণ শিম তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন। দামও ভালো পেয়ে খুব খুশি তিনি।
একই গ্রামেরে সবজি চাষি ফয়সাল আহম্মেদ, রাজু, মেহেদীসহ অনেকেই জানান, কষ্ট করে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে মাঠে কাজ করে বিভিন্ন ধরনের সবজি ফলাই। সেই সবজি তারা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলা-উপজেলা শহরে সরবরাহ করে। সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জ বাজারে বড় হাট বসে। এই দু’দিন শাহপুর ও হায়াতপুরের কৃষকরাই বেশিভাগ সবজি বিক্রির জন্য এই হাটে আনে। রাজগঞ্জ বাজার থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে বিভিন্ন জেলা শহরে নিয়ে যান ব্যাপারিরা।
আরও পড়ুন: রূপসা পাড়ে অফ সিজনাল তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
স্থানীয় ইউনিয়ন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা এসএম মারুফুল হক ও হাসানুজ্জামান জানান, কৃষি বিভাগ থেকে রাজগঞ্জের শাহপুর ও হায়াতপুর মাঠের সবজি চাষিদের সবধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া নতুন জাত ও নতুন ফসল সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী প্লটও স্থাপন করা হয়।
কুয়াকাটা সৈকতে ফের ভেসে এলো মৃত ডলফিন
কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এসেছে একটি মৃত ডলফিন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত ডলফিনটি সৈকতে পরে থাকতে দেখতে পায় স্থানীয় জেলেরা।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৬-৭ ফুট দৈর্ঘ্যের ডলফিনটির মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালের আঘাতে মাছটি মারা গেছে।
আরও পড়ুন: সীতকুণ্ড উপকূলে ভেসে এলো আরও ৩টি মৃত ডলফিন
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, ভেসে আসা ডলফিনটি গঙ্গা নদীর শুশুক প্রজাতির। এ প্রজাতির ডলফিনগুলো সাধারণত মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে। এটি জেলেদের মাছ ধরার জালে আটকে মারা যেতে পারে। আবার বয়সের কারণেও এরা অনেক সময় মারা যায়। জোয়ারের তোপে মৃতদেহ সমুদ্র তীরে চলে আসে।
এর আগেও বেশ কয়েকটি মৃত ডলফিন এবং তিমি সৈকতে ভেসে এসেছে।
উপকূলীয় এলাকার সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর
উপকূলের বিশাল এলাকায় কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
তিনি বলেন, দেশে খাদ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। একইসাথে বাড়ছে পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা। এসব খাদ্যের যোগান অব্যাহত রাখতে হলে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করতে হবে। আর উৎপাদন বৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায়। এ সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে সবাইকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগের আহবান কৃষিমন্ত্রীর
রবিবার রাতে যশোর সার্কিট হাউজে যশোর ও খুলনা অঞ্চলের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।মন্ত্রী বলেন, আগে বছরে যেখানে একটি ফসল হতো, সেখানে এখন সীম চাষ, অসময়ের তরমুজ, মরিচ প্রভৃতি চাষ হচ্ছে।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, কৃষিতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি (প্রিসিসন এগ্রিকালচার) ও রোবট ব্যবহারের মাধ্যমে আগামী দিনের খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
সভায় কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে সমস্যা, সম্ভাবনা ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন। আলোচনায় উঠে আসে ভবদহের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যার কথাও।
জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসির উদ্যোগের প্রশংসা করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, গতবছর বিএডিসি পাম্পের সাহায্যে পানি নিষ্কাশনে কাজ করেছে। এর ফলে মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি উঠতে পারে নি।
আরও পড়ুন: কৃষির উন্নয়নে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহবান কৃষিমন্ত্রীর
এসময় ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কাজ করবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম। এসময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে বিকালে কৃষিমন্ত্রী সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কামারালী ও বাকরা গ্রামে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের মাঠ পরিদর্শন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেন। মাত্র ২৭ টাকা কেজিতে টমেটো বিক্রি করছে জানিয়ে কৃষকেরা এসময় আরও কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন।মন্ত্রী বলেন, টমেটোর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ করে দেয়া হবে। এছাড়া, পরমাণু শক্তি ব্যবহার করে টমেটোসহ শাকসবজি ফলমূলের সংরক্ষণকাল বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, সাতক্ষীরায় এ বছর ৮৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। এটিকে ৭০০ হেক্টরে উন্নীত করা হবে। এজন্য কৃষকদেরকে বীজ, সারসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন: টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গবেষকদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
স্থানীয় কৃষি বিভাগের হিসেবে, সাতক্ষীরায় এ বছর ৮৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। বারি হাইব্রিড-৪ ও বারি হাইব্রিড-৮ জাতের এ টমেটো চাষে যুক্ত আছেন ৫০০ কৃষক ও ১৫০০ শ্রমিক।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদেরকে বীজ, চারা, বালাইনাশক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এসময় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মো: হুমায়ুন কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাগুরায় আউশের ব্যাপক ফলন
মাগুরা জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দুই হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হওয়া তুলনামূলকভাবে লাভ বেশি হচ্ছে। ফলে এ চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, এ বছর আউশ মৌসুমে জেলায় মোট ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। চাষকৃত এ জমিতে ১৯ হাজার মেট্রিকটনের বেশি চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: বিরূপ আবহাওয়াতেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লিচুর বাম্পার ফলন
এর মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলায় আউশের আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। শালিখায় আউশের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫১০হেক্টর জমিতে, মহম্মদপুরে ১ হাজার ৮০০ হেক্টর ও শ্রীপুরে ৩০০ হেক্টর জমি এ চাষের আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে জেলার চার উপজেলায় ক্ষেত থেকে পুরোদমে আউশ ধান কাটা চলছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক বলেন, ইতোমধ্যেই জেলার ৬৫ শতাংশ জমির আউশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: মাগুরায় গমের বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা
তিনি আরও জানান আউশের চালের ভাত খেতে সুস্বাদু। এ জেলার মাটি আউশ ধান উৎপাদনের বেশ উপযোগী। এ চালের চাহিদা থাকায় কৃষকরা আগ্রহ সহকারে প্রতি বছর আউশ আবাদ করেন।
বারোমাসি থাই আম চাষে সাফল্য
মাগুরা জেলায় বারোমাসি থাই আম চাষে সাফল্য পেয়েছেন সদর ও শালিখা উপজেলার কয়েকজন যুবক। মৌসুমের পরেও আম বাজারজাত করতে পারায় দামও অনেক বেশি পাওয়া যায়। জেলায় এই আম চাষের সাফল্যের ফলে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে থাই জাতের আমের চাষ।
এই বর্ষাকালে মাগুরার কয়েকটি আম বাগানে থোকায় থোকায় ঝুঁলছে আম। এ আম পাঁকতে পাঁকতেই গাছে দেখা যাবে আমের নতুন গুটি। সদর উপজেলার কয়েকটি স্থানে থাই বারোমাসি জাতের আম বাগানে দেখা যাচ্ছে এ দৃশ্য।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম উপহার শেখ হাসিনার
আম চাষি কাশেম হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের দিকে তিনি পরীক্ষামূলকভাবে নিজের জমিতে থাই বারোমাসি আম গাছ রোপণ করেন। একসময় গাছগুলোতে আম আসতে শুরু করে। আম সুস্বাদু হওয়ায় ভোক্তাদের আগ্রহ ও চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়তে থাকে।
মৌসুম ছাড়া সময়ে এসব আম ২০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতিকে শেখ হাসিনার আম উপহার
শালিখার কয়েকজন আম চাষি জানান, বর্তমানে এক বিঘা জমিতে আমের চাষ করতে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। যা থেকে বছরে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব বলে জানান চাষিরা।
মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ রোকনুজ্জামান জানান, মাগুরা জেলায় প্রায় ৯০ বিঘা জমিতে বারোমাসি থাই আমের চাষ হচ্ছে। একটি গাছ থেকে বছরে তিনবার আম সংগ্রহ করা যায়। এ আম পাকলেও প্রাকৃতিক উপায়েই দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায় বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার আম উপহার
কৃষকদের লাভবান করতে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে: মন্ত্রী
উৎপাদন খরচ কমিয়ে দেশের কৃষকদেরকে লাভবান করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা ও উন্নয়নসহযোগীদের আপত্তি উপেক্ষা করে কৃষিখাতে বিশাল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি ও প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছেন বলে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন।
শনিবার (৩১ জুলাই) মন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি ‘পারিবারিক কৃষি ও কৃষক: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি উৎপাদনকে কৃষকদের জন্য লাভজনক করতে কাজ করছে। দেশের বেশির ভাগ কৃষকই পারিবারিক, ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও বর্গাচাষি। সেজন্য কৃষিকে লাভজনক করতে সরকার ক্রমাগতভাবে কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
পড়ুন: কৃষির উন্নয়নে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহবান কৃষিমন্ত্রীর
তিনি বলেন, উৎপাদন খরচ কমাতে ইতোমধ্যে চার বার সারের দাম কমিয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে সারের দাম এখন অনেক কম। সেচ, বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণও সহজলভ্য করেছে সরকার। এছাড়া ৫০-৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষকদেরকে দেয়া হচ্ছে ধান কাটা, মাড়াইসহ বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র।
ধান চাষ এখন লাভজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এসব প্রণোদনা প্রদান ও চাল আমদানিতে শুল্কারোপসহ সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা ধানের ভাল দাম পাচ্ছেন ও ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
আম, আনারস, শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসল চাষ কৃষকদের জন্য লাভজনক করতে বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তাদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
পড়ুন: শেখ হাসিনার মানবিক সহায়তা সারা বিশ্বে এক অনন্য নজির: কৃষিমন্ত্রী
ফুড সিস্টেম শক্তিশালী করতে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন: কৃষিমন্ত্রী
তিনি বলেন, দেশের ভিতরে ও বাইরে এসব কৃষিপণ্যের বাজারকে আরও বিস্তৃত করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তাদেরকে কৃষি প্রক্রিয়াজাতে বিনিয়োগ করতে হবে।
এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও দৈনিক বণিক বার্তা এ সেমিনারের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে এএলআরডির চেয়ারপার্সন খুশি কবির, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, এএলআরডির আজিম হায়দার, রওশন জাহান মনি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
কৃষির উন্নয়নে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহবান কৃষিমন্ত্রীর
কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের জন্য গবেষণা, উদ্ভাবন ও জ্ঞানবিনিময়ের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহবান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ।মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে অফিস কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি ইটালির রোমে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী জাতিসংঘের ফুড সিস্টেম প্রিসামিটের ‘খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরে বিজ্ঞানের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো’ শীর্ষক সেশনে যোগ দিয়ে এ আহবান জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ ফুড সিস্টেম শক্তিশালী করতে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন: কৃষিমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক কৃষিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত সংগঠন সিজিআইএআর ও আন্তর্জাতিক কৃষক সংগঠন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। বিজ্ঞানের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে গবেষণা ও উদ্ভাবনে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ধান, গম, ভুট্টা, ফল ও শাকসবজির অনেকগুলো উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।
আরও পড়ুনঃ শেখ হাসিনার মানবিক সহায়তা সারা বিশ্বে এক অনন্য নজির: কৃষিমন্ত্রী
ধানের জাত উদ্ভাবনের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রি ১০০টিরও বেশি ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে ২৬টি জাত বন্যা, খরা, লবণাক্ততাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতসহিষ্ণু। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বিনা ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারিও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতসহিষ্ণু ধান ও অন্যান্য ফসলের বেশ কিছুজাত উদ্ভাবন করেছে। এছাড়া, দেশের বিজ্ঞানীরা বিশ্বে প্রথম জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে।ইরি, সিমিট, ওয়ার্ল্ডফিশ, ইফরি, সিআইপিসহ সিজিআইএআরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ গত ৫০ বছর ধরে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, চলমান কোভিডসহ নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মিলিত সহযোগিতা ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ চালের উৎপাদন বেড়েছে চার গুণেরও বেশি: কৃষিমন্ত্রীজাতিসংঘের ফুড সিস্টেম সামিটে সিজিআইএআরের বিশেষ প্রতিনিধি কানায়ো এনওয়ানজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইথিওপিয়ার কৃষি প্রতিমন্ত্রী ফিকরু রিগাসা, মেক্সিকোর কৃষিমন্ত্রী ভিক্টর ভিল্লালোবোস, সিজিআইএআরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্লদিয়া সাদোফ, আন্তর্জাতিক কৃষক সংগঠনের মহাসচিব অ্যারিয়ানা জিওলিওদোরি, ২০২১ সালের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ বিজয়ী শকুন্তলা থিলস্টেড প্রমুখ বক্তব্য দেন।উল্লেখ্য আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের ‘ফুড সামিট ২০২১’ কে সামনে রেখে এ প্রাক-সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৪৫ টির বেশি দেশ এতে অংশগ্রহণ করছে। সম্মেলনটি শেষ হবে ২৮ জুলাই।