������������
খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে কম সময়ে অধিক ফলনে গুরুত্ব দিচ্ছি: কৃষিমন্ত্রী
খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে কম সময়ে অধিক ফসল উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, দেশে ক্রমশ কৃষি জমি কমছে, মানুষ বাড়ছে। এ অবস্থায়, ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দেওয়া খুবই কঠিন। তাই আমরা কম সময়ে অধিক ফলন ও একই জমি থেকে বার বার ফসল ফলানোর উপর গুরুত্বারোপ করছি।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ফরিদপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বৃহত্তর ফরিদপুর ও যশোর অঞ্চলে তেলবীজ ও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, স্বল্পজীবনকালীন উন্নত জাতের ধান ও অন্যান্য অনেক ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে আমাদের বিজ্ঞানীরা। এটি চাষের মাধ্যমে বছরে একটি অতিরিক্ত ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে। একইসঙ্গে, ফলনও অনেক বেশি। এই জাতগুলোকে কৃষকের কাছে দ্রুত জনপ্রিয় করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে আমরা তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। পরিকল্পনার প্রথম বছরেই আমরা ৩ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত সরিষা উৎপাদন করতে পেরেছি।
আরও পড়ুন: কৃষি বিজ্ঞানীদের জন্য আজ বাংলাদেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে: রাজ্জাক
ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আশা করছি, পরিকল্পনা অনুযায়ী, ধানের উৎপাদন না কমিয়েই আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের মাধ্যমে তেল আমদানি অর্ধেকে কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। এতে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য আমরা গত বছর পরীক্ষামূলক কিছু দেশীয় মডেল ঘর নির্মাণ করেছি, যেখানে ৪-৫ মাস ধরে পেঁয়াজ ভালো অবস্থায় আছে। এটি একটি কার্যকর সংরক্ষণ পদ্ধতি হবে। এবছর সারাদেশে এই সংরক্ষণ মডেল ঘর নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে মাঠে পেঁয়াজের উচ্চফলনশীল (উফশী) জাত দেওয়া হয়েছে, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আর মডেল ঘরে সংরক্ষণ করতে পারলে পেঁয়াজের জন্য বিদেশের উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না, বরং আমরা বিদেশে রপ্তানি করতে পারব।
কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো বখতিয়ার, বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: মঙ্গাপীড়িত এলাকার মানুষও এখন তিন বেলা পেট ভরে খায়: কৃষিমন্ত্রী
দেশে ১৫ লাখ বেল তুলা উৎপাদন সম্ভব: কৃষিমন্ত্রী
কৃষি জমির স্বার্থে বালু উত্তোলন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ
কৃষি জমি বাঁচাতে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
সোমবার সংসদ ভবনে চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংসদীয় পর্যবেক্ষণ কমিটির ৩০তম বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
এতে ফসলি ও চরের জমিতে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ নিশ্চিত করতে জমিতে নির্মিত সোলার প্যানেলের উচ্চতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিগত বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের অগ্রগতি নিয়েও বিস্তৃত আলোচনা হয় বৈঠকে।
আরও পড়ুন: বছরে চার ফসলের সম্ভাবনা জাগাচ্ছে ব্রি৯৮ আউশ ধান: কৃষিমন্ত্রী
আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে চরাঞ্চলে ভুট্টা, সূর্যমুখী ও সয়াবিনের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোসলেম উদ্দিন, মামুনুর রশিদ কিরণ, আনোয়ারুল আবেদীন খান, উম্মে কুলসুম, হোসনে আরা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রবি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ১৮৯ কোটি টাকার প্রণোদনা দেবে সরকার
রবি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ১৮৯ কোটি টাকার প্রণোদনা দেবে সরকার
চলতি অর্থবছরে রবি মৌসুমের ১০ ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ১৮৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার প্রণোদনা দেবে সরকার। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১০টি ফসলের মধ্যে রয়েছে- গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন, শীতকালীন পেঁয়াজ, মুগ, মসুর ও খেসারি ডাল।
আরও পড়ুন: কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানের মোট ২৬০ জন করোনায় আক্রান্ত
এ প্রণোদনার আওতায় ৬৪টি জেলার ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ৭০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হবে।
একজন কৃষক ১০ ফসলের যে কোন একটি চাষের জন্য এ প্রণোদনা পাবেন। প্রণোদনার আওতায় একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় গমবীজ ২০ কেজি, ভুট্টার বীজ ২ কেজি, সরিষা/সূর্মুখীর বীজ ১ কেজি, চিনাবাদামের বীজ ১০ কেজি, সয়াবিনের বীজ ৮ কেজি, শীতকালীন পেঁয়াজের বীজ ১ কেজি, মুগ/মসুরের বীজ ১ কেজি ও খেসারির বীজ ৮ কেজি এবং সার বিনামূল্যে পাবেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা এবং বীজ ও চারা খাত থেকে এ প্রণোদনা দেওয়া হবে।
এ সংক্রান্ত আদেশ ইতোমধ্যে জারি হয়েছে। মাঠপর্যায়ে শিগগিরই এসব প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।
আরও পড়ুন: হাওরের ৪১ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে: কৃষি মন্ত্রণালয়
‘কৃষি মন্ত্রণালয়ের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে সহায়ক হবে’
মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু, জেলেদের মাঝে ফিরছে স্বস্তি
চার মাস ১২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বৃহস্পতিবার ( ৩১আগস্ট ) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
গত ১৯ জুলাই কাপ্তাই হ্রদে প্রথম দফার তিন মাসের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়। তবে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় দ্বিতীয় মেয়াদে আরও এক মাস ১২ দিন নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত জারি রাখা হয়।
কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করা এবং অবমুক্ত করা পোনা বেড়ে ওঠার জন্য প্রতি বছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এবছর কম বৃষ্টি হওয়ায় এবং ভারতের মিজোরাম থেকে পানি না আসায় হ্রদের পানি প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়েনি।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) তথ্য অনুযায়ী, হ্রদে ১০৫ এমএসএল (মিনস সি লেভেল) পানি থাকলেই অবমুক্ত করা পোনা বেড়ে ওঠার এবং মা মাছ প্রাকৃতিক প্রজননের পর্যাপ্ত সুযোগ পায়। তবে বর্ষার শুরুতে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পোনা মাছ বেড়ে উঠতে পারেনি। একারণে জেলা প্রশাসন কাপ্তাই হ্রদে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে।
অন্য বছরের থেকে প্রায় এক মাস বেশি মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে জেলেদের। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ায় স্বস্তি ফিরছে তাদের মাঝে।
পুরান জেলে পাড়ার বাসিন্দা সজল দাশ বলেন, তিন মাস ভিজিএফ-এর ২০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র দুই মাস চাল পেয়েছি। আমাদের চলতে কষ্ট হচ্ছে। এখন মাছ ধরার অনুমতি দেওয়ার খবরে আমরা খুবই খুশি।
আরও পড়ুন: কাপ্তাই হ্রদে ২০ এপ্রিল থেকে ৩ মাস মাছ ধরা নিষেধ
শেষ মৌসুমে ‘গৌড়মতি’ আম চাষে মামা-ভাগ্নের সাফল্য
আমের মৌসুম প্রায় শেষ। তবে অসময়ে গৌড়মতি জাতের আম চাষ করে মামা-ভাগ্নে চমক সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়। এই ব্যতিক্রমী চমকে অবাক হয়েছে এলাকাবাসী। মামা-ভাগ্নে আশা করছেন এ মৌসুমে প্রায় ৪০ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবেন তারা।
বিভিন্ন জাতের আমের জোগান যখন শেষ হয়, ঠিক তখনই নতুন এক আমের আগমন ঘটে এই মৌসুমে। আর সেটি হলো সুস্বাদু রসালো গৌড়মতি আম। সাধারণ আমসহ উন্নত জাতের বিভিন্ন আম যখন প্রায় শেষ, ঠিক তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি।
রসালো আর সুস্বাদু নাবি জাতের এই আম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার দক্ষিণ বনগাঁও এলাকার মহব্বত আলী ও বুলবুল নামে দুই চাষি। শুধু স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নই দেখছেন না, এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এই দুই মামা-ভাগ্নে।
চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে মামা মহব্বত আলী ভাগ্নে বুলবুলকে সঙ্গে নিয়ে ১ হাজার চারা রোপণ করে পরিচর্যা শুরু করেন।
আরও পড়ুন: চলতি বছর ২৭০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে: কৃষি মন্ত্রণালয়
সরেজমিনে দেখা গেছে, অসময়ে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলছে শতভাগ বিষমুক্ত রসালো ও সুস্বাদু গৌড়মতি আম। শতভাগ নিরাপদ রাখতে প্রতিটি আমে করা হয়েছে ব্যাগিং। মামা-ভাগ্নের হাতের নিবিড় ছোঁয়ায় দৃষ্টি কাড়ছে এলাকাবাসীসহ বাগান দেখতে আসা অনেক দর্শনার্থীদের। বাগান ঘুরে অনুমান করে দেখা গেছে, ১ হাজার গাছে আম এসেছে প্রায় সাড়ে ৪০০ মণ আম।
নাবি জাতের এই আম উপজেলায় ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর। এই আমের প্রতিটির ওজন ৬৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম। বর্তমানে এই গৌড়মতি আম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গৌড়মতি আমের সাফল্য দেখে অনেকেই এ বাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, বাংলার প্রাচীন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপদের নাম থেকে ‘গৌড়’ আর মূল্য বিবেচনায় রত্নের সঙ্গে তুলনা করে ‘মতি’ শব্দের সমন্বয়ে ২০১৩ সালে নতুন জাতের এই আমের নামকরণ করা হয়েছিল ‘গৌড়মতি’। এ আম আকারে বড় হলেও এর আঁটি ছোট এবং আঁশ পাতলা।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় হলুদ তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে, বিঘাপ্রতি লাভ লাখ টাকা
কৃষক মহব্বত আলী বলেন, চার বছর আগে ১৪ বিঘা জমিতে ১ হাজার গৌড়মতি আমের গাছ লাগিয়েছি। গত বছর থেকেই গাছে আম আসতে শুরু করেছে। গত বছর গাছের পরিপক্বতার কথা ভেবে গাছে আম নেওয়া হয়নি। তবে এ বছর ব্যাপক ফলন হয়েছে। আশা করছি ৪০ লাখ টাকার বেশি আম বিক্রি করতে পারব। যত দিন যাবে গাছ আরও বড় হবে, আমের ফলনও বাড়বে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, এটি নাবি জাতের আম। সারাদেশের আমের জোগান যখন শেষ হয়, তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি। এই আম অত্যন্ত সুস্বাদু। আর যেহেতু সব আমের শেষে পাকে এই আম তাই দামও বেশ ভালো পান চাষিরা।
কোনো কৃষক যদি গৌড়মতি আমের বাগান করতে চায় তাহলে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার হবে বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: দেশে ১৫ লাখ বেল তুলা উৎপাদন সম্ভব: কৃষিমন্ত্রী
দেশে ১৫ লাখ বেল তুলা উৎপাদন সম্ভব: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, হাইব্রিড ও বিটি তুলার চাষ করতে পারলে বছরে দেশে ১৫ লাখ বেল তুলা উৎপাদন সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, দেশে বছরে ৮৫ লাখ বেল তুলার প্রয়োজন হয়, আর উৎপাদন হয় ২ লাখ বেল।
তিনি আরও বলেন, ‘চাহিদার কমপক্ষে ২০ শতাংশ বা ১৫ লাখ বেল তুলা দেশে উৎপাদন করার সুযোগ রয়েছে। সে লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে কাজ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল, রাজপথেও সফল: কৃষিমন্ত্রী
রবিবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেটে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের (সিডিবি) মিলনায়তনে দেশে প্রথমবারের মতো বিটি তুলার দু’টি জাতের অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে তুলার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আগামীতে আরও বাড়বে। বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে, যাতে দেশেই চাহিদার ২০ শতাংশ তুলা উৎপাদন করা যায়।
দেশে বিটি তুলার দু’টি জাত অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশি দেশ ভারত রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও দেশে পেঁয়াজের দামে তেমন প্রভাব পড়বে না।
তিনি আরও বলেন, ‘শুল্ক আরোপের ঘোষণায় এখন দাম কিছুটা বাড়লেও কয়েকদিন পর কমে আসবে।’
তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ১৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছি। দেশে এসেছে মাত্র ৩ লাখ টন। এর অর্থ হলো দেশেও পেঁয়াজ আছে।
মন্ত্রঅ আরও বলেন, ‘মাঠ পর্যায়েও খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দেশের কৃষকদের কাছে এখনো পেঁয়াজের মজুদ আছে। এছাড়া তুরস্ক, মিশর ও চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করা হবে।’
আরও পড়ুন: বছরে চার ফসলের সম্ভাবনা জাগাচ্ছে ব্রি৯৮ আউশ ধান: কৃষিমন্ত্রী
ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
বছরে চার ফসলের সম্ভাবনা জাগাচ্ছে ব্রি৯৮ আউশ ধান: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দিন দিন কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, বিপরীতে জনসংখ্যা বাড়ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান ঠিক রাখতে হলে একই জমি থেকে বছরে বার বার ফসল ফলাতে হবে, বেশি করে ফসল ফলাতে হবে।
তিনি বলেন, সাধারণত ১৪০-১৬০ দিনের মধ্যে ধান হয়, সেই ধান যদি ৯০-১০০ দিনের মধ্যে হয়, তাহলে সেটি বিরাট সম্ভাবনাময়। ব্রি৯৮ আউশ ধান এই সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে, ৯০-১০০ দিনে হচ্ছে; ফলনও বিঘাতে ২৫-৩০ মণ। এ জাতটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তায় বিরাট ভূমিকা রাখবে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে মুশুদ্দি গ্রামে ব্রি৯৮ জাতের আউশ ধানের খেত পরিদর্শনকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত জাতের অভাব এবং খরা, বন্যা ও অতিবৃষ্টির ঝুঁকির কারণে দেশে এখন আউশ ধান অনেক কমে গেছে। বেড়েছে বোরো ও আমনের চাষ। ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা স্বল্পজীবনকালীন উন্নত জাতের আউশ ধান উদ্ভাবন করেছেন।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ব্রি৯৮ মাঠে খুবই সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। এ জাতটি মাঠ পর্যায়ে জনপ্রিয় করতে পারলে দেশে আউশ আবার বড় ফসলে পরিণত হবে। একইসঙ্গে, এটি লাভজনক ফসল হিসাবে কৃষকের হাসিকে আরও চওড়া করবে।
একই জমিতে বছরে ৪টি ফসল ঘরে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান কৃষক ইকবাল।
তিনি জানান, ব্রি৯৮ জাতের এই আউশ ধানটি ২০ দিনের চারাসহ মোট ৯৮-১০০ দিনের মধ্যে কর্তন করেছেন। এর আগে তিনি এই জমিতে বোরো মৌসুমে ব্রি৯৬ চাষ করেছিলেন। এখন তিনি আমনে ব্রি৭৫ লাগাবেন এবং আমন কেটে স্বল্প জীবনকালীন সরিষার আবাদ করবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ফসল উৎপাদনের সাফল্য আজ বিশ্বস্বীকৃত: কৃষিমন্ত্রী
মাশরুম চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে দারিদ্র্য থাকবে না: কৃষিমন্ত্রী
জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করতে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে সরকার।
বুধবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীতে জাহাজ ভাঙা শিল্পের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি জাহাজের নিরাপদ ও পরিবেশগতভাবে সঠিক পুনর্ব্যবহারের জন্য 'হংকং ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন' অনুমোদন করেছে। বাংলাদেশ জাহাজ পুনর্ব্যবহার আইন, ২০১৮- টেকসই জাহাজ ভাঙা শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাহাজ পুনর্ব্যবহার বিধিমালা- ২০১১ এবং মেডিকেল বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ প্রণয়ন করা হয়েছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের উল্লেখযোগ্য অবদান থাকলেও এর পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিতে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। সবার আগে এর সঙ্গে জড়িত শ্রমিক ও তাদের স্বাস্থ্যগত দিকের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। পরিবেশগত ঝুঁকির দিকগুলো চিহ্নিত করে তা দূর করার মাধ্যমে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প যাতে বিকশিত হতে পারে সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প ও পরিবেশ সচিব জাকিয়া সুলতানা ও ড. ফারহিনা আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
আরও বক্তব্য দেন, বেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী আবু তাহের।
বাংলাদেশে জাহাজ ভাঙ্গার পরিবেশ ব্যবস্থাপনার বর্তমান অবস্থার উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (ইসিসি) মাসুদ ইকবাল মো. শামীম এবং জাহাজ ভাঙার কার্যক্রমের বর্তমান অনুশীলন এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী। কর্মশালায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা, বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে জাহাজ ভাঙার পরিবেশ ব্যবস্থাপনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (ইসিসি) মাসুদ ইকবাল মো. শামীম এবং বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী।
সাতক্ষীরায় হলুদ তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে, বিঘাপ্রতি লাভ লাখ টাকা
সাতক্ষীরায় হলুদ তরমুজ চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে কৃষকদের মাঝে। অমৌসুমে তরমুজ চাষ করে কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। একদিকে কৃষকেরা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, অপরদিকে অমৌসুমে এই ফল খেয়ে মানুষের পুষ্টির চাহিদাও মিটছে।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা বিলে টানা তৃতীয় বারের মতো হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন নগরঘাটা গ্রামের কৃষক মাসুদ হুসাইন। তিনি পর পর দুই বছর মাত্র ৫ কাঠা জমিতে এই জাতের তরমুজ চাষ করে বেশ লাভবান হন।
এ বছর তিনি ১ বিঘা জমিতে হলুদ তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে লাভ করেছেন প্রায় লাখ টাকা।
কৃষক মাসুদের সফলতার গল্প শুনে সাতক্ষীরার অনেক কৃষক এখন হলুদ তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন ছড়িয়ে পড়েছে ফলটির চাষ।
মাসুদ হুসাইন বলেন, পর পর তিন বছর ধরে হলুদ তরমুজ চাষ করে আসছি। ভালোই লাভ এতে।
তিনি আরও বলেন, তালা উপজেলার ‘উন্নয়ন প্রচেষ্টা’ নামের একটি বেসরকারি সংগঠন প্রথম হলুদ তরমুজের বীজ দেয়। শুধু বীজ নয়, তারা প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে। উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে এই ফল চাষে সফল হয়েছি।
সাতক্ষীরার বাজারে এক কেজি তরমুজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে চাষ করতে খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর বিক্রি করা সম্ভব ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি প্রায় লাখ টাকা লাভ হয়।
আরও পড়ুন: তরমুজ চাষে সফল হওয়ার প্রত্যাশা পাঁচ তরুণের
চলতি বছর ২৭০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে: কৃষি মন্ত্রণালয়
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার টন বেশি।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) কৃষি মন্ত্রণালয়ের পিআরও কামরুল ইসলাম ভূইয়ার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত বছর মোট ১ হাজার ৭৫৭ টন আম রপ্তানি হয়েছিল।গতবছর ২৮টি দেশে আম রপ্তানি হয়েছিল, এবছর ৩৪টি দেশে আম রপ্তানি হয়েছে।
এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ১২৫৬ টন, ইতালিতে ২৯৬ টন, সৌদি আরবে ২৬০ টন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৩৭ টন, কাতারে ১১১ টন, সিঙ্গাপুরে ৫৫ টন, সুইজারল্যান্ডে ১৪ টন, জার্মানিতে ৭০ টন, ফ্রান্সে ৮৫ টন, সুইডেনে ৬৫ টন, কুয়েতে ২১৮ টন, কানাডায় ৪০ টন উল্লেখযোগ্য।
এতে আরও বলা হয়, দেশে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন আম উৎপাদন হয়। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ অনেক কম।
আরও পড়ুন: ইউরোপের ৪ দেশে পাঠানোর মাধ্যমে আম রপ্তানি শুরু
২০১৭-১৮ সালে মাত্র ২৩২ টন, ২০১৮-১৯ সালে ৩১০ টন, ২০১৯-২০ সালে ২৮৩ টন, ২০২০-২১ সালে ১৬৩২ টন, ২০২১-২২ সালে ১৭৫৭ টন আম রপ্তানি হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববাজারে দেশের আমের বিপুল চাহিদা থাকলেও উত্তম কৃষি চর্চাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে আম উৎপাদন ও প্যাকেজিং না হওয়ায় রপ্তানি কম হচ্ছে। তাই রপ্তানি বাড়াতে কৃষি মন্ত্রণালয় রপ্তানিযোগ্য আমের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের উত্তম কৃষি চর্চা মেনে আম উৎপাদনসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের প্রথম বছরেই গত বছরের তুলনায় ১ হাজার টন আম বেশি রপ্তানি হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুর রহমান জানান, চলতি বছর আরও ১৫-২০ দিন আম রপ্তানি হবে।
আরও পড়ুন: জাপানে আম রপ্তানি শুরু হবে শিগগিরই: কৃষিমন্ত্রী