������������������������
‘অনপ্যাসিভ’ এমএলএম কোম্পানির সঙ্গে লেনদেন নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক প্রতিষ্ঠান 'অনপ্যাসিভ'-এর সঙ্গে বিনিয়োগে সহায়তা বা লেনদেন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) জনগণকে সতর্ক করতে সব তফসিলি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরও পড়ুন: আমানতের ন্যূনতম সুদের হার বাতিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বহু মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) প্রতিষ্ঠান প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এই সংস্থাগুলো জনসাধারণের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক 'অনপ্যাসিভ' ঘটনার দিকে নজর দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশে অনপ্যাসিভ (www.onpassive.com) নামে একটি এমএলএম কোম্পানির সাম্প্রতিক কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর অধীনে এই কোম্পানিতে বিনিয়োগ একটি প্রতারণামূলক অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হয়।
এ ধরনের প্রতারণামূলক 'পঞ্জি স্কিম' প্রচার, বিনিয়োগ, ট্রেডিং, লেনদেন সহজতর করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন আইএমএফ বোর্ডের
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মঙ্গলবার তাদের ডিসেম্বরের বোর্ড সভায় ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদিত হয়েছিল জানুয়ারিতে।
দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশের অ্যাকাউন্টে ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার স্থানান্তর করা হবে। প্রথম ধাপে প্রায় ৪৫ কোটি ডলার স্থানান্তর করা হয়।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার পাশাপাশি আইএমএফের অর্থ গত দুই বছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যে উল্লেখযোগ্য চাপ তৈরি হয়েছে তা প্রশমিত করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ প্রধানদের সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বোর্ড ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। বাকিগুলো আরও ৫ কিস্তিতে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে অক্টোবরে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ২ সপ্তাহের সফরে বাংলাদেশে এসে ঋণ কর্মসূচি পর্যালোচনা করে এবং আইএমএফ বোর্ডের কাছে দ্বিতীয় কিস্তির প্রস্তাব উপস্থাপন করে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি সই
আমানতের ন্যূনতম সুদের হার বাতিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক
আমানতের জন্য আরোপিত ন্যূনতম সুদের হার বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এখন থেকে ব্যাংকগুলো তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুদের হার নির্ধারণ করতে পারবে এবং সে অনুযায়ী আমানত সংগ্রহ করতে পারবে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) এক সার্কুলারের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ এ প্রজ্ঞাপন জারি করে তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য তফসিলি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে আজ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আমানতের ন্যূনতম সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের হার মুদ্রাস্ফীতির নিচে না রাখার নির্দেশনা দেয়।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক ব্যবস্থার বিকাশ বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি ও সুযোগ নিয়ে আসে: অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন
সে সময় ঋণ বিতরণে সর্বোচ্চ সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ। কিন্তু এখন ঋণের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো সীমা নেই। চলতি বছরের জুলাই মাসে ঋণের জন্য বাজারভিত্তিক সুদের হার ব্যবস্থা চালু করা হয়।
ফলে, আমানতের উপর ন্যূনতম সুদের হারেরও প্রয়োজন নেই। এ কারণে ২০২১ সালের ৮ আগস্টের নির্দেশনা বাতিল করা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকে আমানত কমেছে ২২.৫৬ শতাংশ: বাংলাদেশ ব্যাংক
গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকে আমানত কমেছে ২২.৫৬ শতাংশ: বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের গ্রামাঞ্চলের ব্যাংকগুলোতে আমানত কমেছে ২২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অপরদিকে শহরাঞ্চলে ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ আমানত বেড়েছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ কোটি। এ সময়ে তারা তাদের অ্যাকাউন্টে ১৭ কোটি টাকার বেশি জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি টাকা বা তার বেশি আমানত রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের ৪২ দশমিক ৩৫ শতাংশ এ ধরনের অ্যাকাউন্টধারীদের।
আরও পড়ুন: সেরা ৫২৫ করদাতা নির্বাচন করেছে এনবিআর
২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত মোট আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৫৯ লাখের বেশি। এসব অ্যাকাউন্টে আমানতের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা।
১ কোটি টাকার বেশি আমানতসহ ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৫৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন মাসের ব্যবধানে ১ কোটি টাকা বা তার বেশি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৩২টি এবং এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৭ হাজার ৬৬টি।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক ব্যবস্থার বিকাশ বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি ও সুযোগ নিয়ে আসে: অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন
বৈশ্বিক ব্যবস্থার বিকাশ বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি ও সুযোগ নিয়ে আসে: অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন
ক্রমবিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থা এবং পরিবর্তিত ভূ-অর্থনৈতিক দৃশ্যপট উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ দুটোই নিয়ে আসে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) বার্ষিক সম্মেলনে ‘ইভলভিং গ্লোবাল অর্ডার অ্যান্ড জিও-ইকোনমিক্স: ইমপ্লিকেশন ফর লেস ডেভেলপড কান্ট্রিজ’- শীর্ষক পাবলিক লেকচারে এসব কথা বলেন তিনি।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার সঞ্চালিত অধিবেশনে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান এবং বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আলোচনা করেন।
মাহমুদ রাজনৈতিক ও বিদেশি অর্থনৈতিক স্বার্থ কার্যকরভাবে হাসিল করার জন্য সরকারগুলোর প্রতি শক্তিশালী জনসমর্থনের তাৎপর্যের উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, বহুজাতিক কোম্পানির মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে শোষণ মোকাবিলায় এই সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আয় বৈষম্য বেড়েছে: ড. বিনায়ক সেন
তিনি শীতল যুদ্ধের যুগের তুলনায় পরাশক্তি, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার স্বতন্ত্র প্রকৃতিও উল্লেখ করেছেন।
ভিয়েতনাম ও চীনের অর্থনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করে মাহমুদ তুলে ধরেন, কীভাবে বেসরকারি খাতে সরকারের সম্পৃক্ততা সুফল পেতে পারে।
জাইদি সাত্তার বিশ্বায়ন থেকে অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদে পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, এমনকি বিশ্বায়নের সমর্থকরাও সুরক্ষাবাদী নীতি গ্রহণ করছে।
তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের অর্থনৈতিক কৌশল প্রণয়নে গভীরভাবে বিবেচনা করার পরামর্শ দেন।
সেলিম রায়হান ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক অ-সম্পৃক্ততা এবং বৈশ্বিক ক্ষমতার দ্বন্দ্বের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে এর উদীয়মান ভূমিকা সম্পর্কে বক্তব্য দেন।
সামগ্রিকভাবে, বিআইডিএস সম্মেলনে বক্তারা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বাহ্যিক ভূ-রাজনৈতিক চাপের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক নীতির ভারসাম্য বজায় রেখে, নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থায় সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রা আমানতের ওপর ব্যাংকগুলো ৭ শতাংশ সুদ দেবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যক্তিগত আয় বিবেচনায় করদাতার সংখ্যা ১ কোটিতে পৌঁছাতে হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
সেরা ৫২৫ করদাতা নির্বাচন করেছে এনবিআর
কর প্রদানে উৎসাহিত করতে জাতীয় পর্যায়ে র্যাঙ্কিয়ের পর সিটি করপোরেশন ও জেলা পর্যায়ে মোট ৫২৫ জন সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ১১টি সিটি করপোরেশনে ৭৭ জন এবং ৬৪টি জেলায় সর্বোচ্চ আয়করদাতা ও দীর্ঘমেয়াদী আয়করদাতা ক্যাটাগরিতে ৪৪৮ জনকে নির্বাচিত করেছে।
আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত আয় বিবেচনায় করদাতার সংখ্যা ১ কোটিতে পৌঁছাতে হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
এর মধ্যে সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে প্রতিটি সিটি করপোরেশন ও জেলা থেকে দু'জন করে এবং নারী ও যুব ক্যাটাগরিতে একজন সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন।
করদাতা নীতিমালা-২০০৮ এর আওতায় জেলাভিত্তিক সর্বোচ্চ ও দীর্ঘতম 'আয়কর পরিশোধের' বিধান অনুযায়ী সেরা করদাতাদের নাম প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য সেরা করদাতা হিসেবে নির্বাচিত হন ১৪১ জন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন। এর মধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে ৭৬ জন, কোম্পানি পর্যায়ে ৫৩ জন এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ১২ জন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২২-২৩ কর বর্ষে সিটি করপোরেশন ও জেলা পর্যায়ে সেরা ৫২৫ জন করদাতার নাম চূড়ান্ত করা হয়।
এর মধ্যে প্রতিটি সিটি করপোরেশন এলাকায় সাতজন হারে ৭৭ জন করদাতাকে সেরা করদাতা হিসেবে ট্যাক্স কার্ড ও পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিটি জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে সাতজন করে এই কার্ড পাবেন।
আরও পড়ুন: জুলাই-অক্টোবরে রাজস্ব আদায় ১৪.৩৬% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা পিছিয়ে: এনবিআর
বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আয় বৈষম্য বেড়েছে: ড. বিনায়ক সেন
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেছেন, বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দেশে আয় বৈষম্য বিস্তৃত হয়েছে, যা এই বৈষম্য মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত নয়।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) আইসিডিডিআরবি'র ৬৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. সেন আরও বলেন, বৈষম্য বাড়ছে- সাধারণভাবে বলতে গেলে, ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে এবং দরিদ্ররা আরও দরিদ্র হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে বৈষম্যের প্রকৃতি কিছুটা ভিন্ন।
আরও পড়ুন: নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
তার মতে, দেশে দরিদ্র ও ধনী উভয়ের অবস্থার উন্নতি হলেও ধনীদের উন্নতির হার বেশি।
২০২২ সালের গৃহস্থালি জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে জাতীয় পর্যায়ে ভোগ বৈষম্যের পরিমাপের গুণাঙ্ক ছিল শূন্য দশমিক ৩৩৪; শহরাঞ্চলে এটি ছিল শূন্য দশমিক ৩৫৬ এবং গ্রামাঞ্চলে শূন্য দশমিক ২৯১।
ড. সেন বলেন,‘যদি বৈষম্য পরিমাপের গুণাঙ্কের মান শূন্য হয় তবে এর অর্থ হলো সমাজে চূড়ান্ত সমতা রয়েছে। আর ১ মানে চূড়ান্ত বৈষম্য আছে; শূন্য দশমিক ৫০ অতিক্রম করা দেশে উচ্চ বৈষম্যকে নির্দেশ করে। অর্থাৎ দেশে এখন উচ্চ বৈষম্য রয়েছে।’
সেমিনারে 'বাংলাদেশে দারিদ্র্য প্রবণতা ও নির্ধারক: সাম্প্রতিক প্রমাণ থেকে অন্তর্দৃষ্টি' শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. সেন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তবে গত এক দশকে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: জুলাই-অক্টোবরে রাজস্ব আদায় ১৪.৩৬% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা পিছিয়ে: এনবিআর
ড. সেন দারিদ্র্যের প্রধান কারণগুলো তুলে ধরেন এবং এটি কাটিয়ে ওঠার জন্য বেশ কয়েকটি নীতিগত প্রস্তাব দেন। স্মার্ট ম্যাক্রোইকোনমিক ম্যানেজমেন্ট, টেকসই প্রবৃদ্ধি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং ভূ-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনাকরে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে এসব নীতি প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন তিনি।
তিনি উপস্থাপনায় তুলে ধরেন যে, সরকারি ব্যয় বাড়লেও কর-জিডিপি অনুপাত কমছে। বিগত ২০০০ থেকে ২০০১ সালে দেশে কর-জিডিপি অনুপাত ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০১-১১ অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত ছিল ১০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ওই বছর জিডিপির অনুপাতে সরকারি ব্যয় ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত ছিল ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, তবে সরকারি ব্যয়-জিডিপি অনুপাত বেড়ে হয়েছে ১৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ কারণে সরকারের ব্যয় সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস। এছাড়াও আইসিডিডিআরবি'র কর্মকর্তা ও গবেষকরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রা আমানতের ওপর ব্যাংকগুলো ৭ শতাংশ সুদ দেবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
বৈদেশিক মুদ্রা আমানতের ওপর ব্যাংকগুলো ৭ শতাংশ সুদ দেবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিটের (আরএফসিডি) ওপর ব্যাংকগুলো ৭ শতাংশের বেশি সুদ দেবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এছাড়া, এ ধরনের অ্যাকাউন্ট থেকে দেশের বাইরে টাকা পাঠানো, একাধিক কার্ড ইস্যু করাসহ বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যাবে।
দেশে চলমান ডলার সংকট নিরসনে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরও পড়ুন: নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়েছে, কেউ আরএফসিডি হিসেবে ১০ হাজার ডলার জমা রাখতে পারেন। এখন থেকে ব্যাংকগুলো বেঞ্চমার্ক হারের সঙ্গে এই আমানতের উপর কমপক্ষে দেড় (১ দশমিক ৫) শতাংশ সুদ দেবে।
এই হিসেবে, আমানতের বিপরীতে দুটি সম্পূরক কার্ড ইস্যু করা যেতে পারে। শিশু বা ভাইবোনসহ নির্ভরশীলরা কার্ডটি ব্যবহার করতে পারেন।
এই অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশে শিক্ষার খরচ পাঠানো যাবে। আবার স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান, ভাইবোন এবং নির্ভরশীল বাবা-মায়ের চিকিৎসার খরচও এখান থেকে বহন করা যায়।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে ডলারের সরবরাহ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি: বাংলাদেশ ব্যাংক
নগদকে ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদনপত্র হস্তান্তর করল বাংলাদেশ ব্যাংক
জুলাই-অক্টোবরে রাজস্ব আদায় ১৪.৩৬% বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা পিছিয়ে: এনবিআর
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুসারে, আগের অর্থবছরের ২০২২-২৩ একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ২০২৩-২৪ প্রথম চার মাসে রাজস্ব সংগ্রহ ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা হয়েছে।
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজস্ব বোর্ডের তিনটি শাখা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং শুল্ক বাবদ ১ লাখ ০৩ হাজার ৯৭৬ টাকা সংগ্রহ করেছে। এটি চলতি অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ রাজস্ব বেড়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব বোর্ড ৯০ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল।
খাতভিত্তিক রাজস্ব আয় হয়েছে- শুল্ক থেকে ৩২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা, ভ্যাট থেকে ৪০ হাজার ০৪৮ দশমিক ৬২ কোটি টাকা এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত থেকে ৩১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা।
তবে এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। চার মাসে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ দশমিক ২৩ লাখ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত আয় বিবেচনায় করদাতার সংখ্যা ১ কোটিতে পৌঁছাতে হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা দুই মাস বাড়াল এনবিআর
জুলাই-আগস্টে রাজস্ব কমেছে ৪৮৭০ কোটি টাকা: এনবিআর
নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা আগের মাস অক্টোবরের তুলনায় ৫০ মিলিয়ন ডলার কম।
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশে ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।
নভেম্বর মাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ১৪৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংক পেয়েছে ৫৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো পেয়েছে ১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের শাখাগুলো পেয়েছে ৫ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলার।
প্রবাসীরা অক্টোবরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১ দশিমিক ৯৭ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছিল। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো পেয়েছিল ১৫৪ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার, একটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৫৮ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো পেয়েছিল ১ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের শাখাগুলো পেয়েছিল ৬ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, নভেম্বরে রেমিটেন্স প্রবাহ কিছুটা কমেছে, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ উদ্যোগের কারণে রেমিটেন্স আসার সামগ্রিক প্রবণতা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল রয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে ডলারের সরবরাহ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি: বাংলাদেশ ব্যাংক
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে তাদের আর্থিক উৎস থেকে অতিরিক্ত প্রণোদনা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা আইনি চ্যানেলে রেমিটেন্সের প্রবাহ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
প্রবাসী আয়ে সরকারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি দামে ডলার কিনতে পারবে। মোট প্রেরকদের ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাচ্ছেন। ফলে আইনি মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স আসছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর সেলিম রায়হান বলেন, রেমিটেন্স প্রণোদনার দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা কোনো কাজে আসবে না।
তিনি বলেন, ডলারের দামের ওপর সরকার অতিরিক্ত আড়াই শতাংশ দেবে। রেমিটেন্সে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা সাময়িকভাবে বাড়াবে।
তবে দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান হবে না বলে জানান তিনি।
সেলিম বলেন, রেমিটেন্স বাড়াতে হুন্ডি বন্ধ করতে হবে। হুন্ডি বন্ধ করতে হলে মানি লন্ডারিং বন্ধ করতে হবে। এখনও প্রচুর অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে এবং তা যেকোনো উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংক যত বেশি প্রণোদনা দেবে, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তত বেশি দেবে। তাই যতদিন হুন্ডির প্রচলন থাকবে, ততদিন আইনি মাধ্যমে প্রত্যাশিত রেমিটেন্স আসবে না।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের
১৪-১৮ বছর বয়সী নাগরিকরা এনআইডি ছাড়াই এমএফএস অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে: বাংলাদেশ ব্যাংক