শিক্ষা
রমজানে স্কুল বন্ধ: মঙ্গলবার আপিল বিভাগে শুনানি
রমজান মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
একইসঙ্গে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামীকাল (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে গতকাল রবিবার রমজানের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশের পর ওই বেঞ্চের ডিএজি শেখ মো. সাইফুজ্জামান বলেন, হাইকোর্ট প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল রোজার মধ্যে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন। দুই মাসের জন্য এই স্থগিতাদেশ জারি করে রুল দিয়েছেন। এ আদেশের ফলে রোজার মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করে রমজানে ১৫ দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রমজানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ দিন ক্লাস চলবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের শিক্ষাবর্ষের ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করা হয়েছে। আগামী ১১ থেকে ২৫ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন সরকারি/বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্তের এই বিজ্ঞপ্তি দুটি চ্যালেঞ্জ করে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অ্যাডভোকেট মো. ইলিয়াছ আলী মন্ডল।
রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, শিক্ষা সচিব, উপসচিব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, উপসচিব শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালককে বিবাদী করা হয়। সেই রিটের ওপর রবিবার শুনানি হয়।
বিওয়াইএলসির সিগনেচার লিডারশিপ প্রোগ্রামের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান সম্পন্ন
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারের (বিওয়াইএলসি) সিগনেচার লিডারশিপ প্রোগ্রামের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সর্বমোট ১৯০ জন শিক্ষার্থী সফলভাবে এই নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) চট্টগ্রামের পেনিনসুলা হোটেল বিওয়াইএলসির বিল্ডিং ব্রিজেস থ্রু লিডারশিপ ট্রেনিং (বিবিএলটি) প্রোগ্রামের ৪০ ও ৪২ তম ব্যাচ এবং বিল্ডিং ব্রিজেস থ্রু লিডারশিপ ট্রেনিং জুনিয়র (বিবিএলটিজে) প্রোগ্রামের ৩৪ ও ৩৬ তম ব্যাচের গ্রাজুয়েশন সেরিমনি অনুষ্ঠিত হয়।
‘দি এমব্যাসি অব দি কিংডম অব দি নেদারল্যান্ডস’ এই লিডারশিপ প্রোগ্রামের সহযোগিতায় ছিল।
বিওয়াইএলসি’র প্রতিষ্ঠাতা ও এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন ইজাজ আহমেদ গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, ‘নেতৃত্ব চর্চার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী হলো সৎ সাহস, সহানুভূতি ও যোগ্যতা।’
আরও পড়ুন: ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম পরিচালনার জন্য টাটা পাওয়ার ডিডিএল ও ব্লকনটসের মধ্যে চুক্তি
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজ পরিবর্তন করতে হলে নিজের কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হতে হবে এবং নিজের সমাজের জন্য কাজ করতে হবে।’
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইংরেজি, বাংলা ও মাদরাসা মাধ্যম থেকে নির্বাচিত মোট ১৯০ জন শিক্ষার্থী ১০ সপ্তাহ এবং ৫ সপ্তাহ ব্যাপী যথাক্রমে বিবিএলটি ও বিবিএলটিজে নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিওয়াইএলসি থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে।
বিবিএলটি ও বিবিএলটিজে প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে নেতৃত্ব চর্চার তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক ধারণাগুলো অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে সমাজসেবামূলক প্রকল্প নিয়ে কাজ করে।
শিক্ষার্থীরা কমিউনিটিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সমাজের সর্বস্তরের ১০ হাজারেরও অধিক মানুষকে সেবা প্রদান করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্রনাথ তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্ব চর্চার এরুপ প্ল্যাটফর্ম তৈরির করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জন্মভূমির প্রতি প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব ও কৃতজ্ঞতার জায়গা থেকে কাজ করে যেতে হবে। এই লক্ষ্যে তরুণদের আরও এগিয়ে আসা এবং জন্মভূমির সব সমস্যা সমাধানে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দিতে হলে হতে হবে সাহসী এবং দক্ষতাসম্পন্ন সুনাগরিক, যেখানে বিওয়াইএলসি তাদের উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসা গবেষণায় আরও সময় দিন: চিকিৎসকদের বললেন প্রধানমন্ত্রী
রোজায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ থাকবে: হাইকোর্ট
রমজানের প্রথম ১০ দিন প্রাথমিক এবং ও ১৫ দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (১০ মার্চ) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহমুদা খানম এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান।
আরও পড়ুন: ১৪ বছরেও হয়নি সেতু, ভেলায় চড়েই স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান জানান, হাইকোর্ট প্রাথামিক ও মাধ্যমিক স্কুল রোজার মধ্যে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন।
এছাড়া দুই মাসের জন্য এই স্থগিতাদেশ জারি করে রুল দিয়েছেন। এ আদেশের ফলে রোজার মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করে রমজানে ১৫ দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে শুরু বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা স্কুল ফুটবল
অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালায় জানায়, রমজানে ১০ দিন ক্লাস চলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের শিক্ষাবর্ষের ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করা হয়েছে।
আগামী ১১ থেকে ২৫ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্তের এই বিজ্ঞপ্তি দুইটি চ্যালেঞ্জ করে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আইনজীবী মো. ইলিয়াছ আলী মন্ডল।
আরও পড়ুন: রমজান মাসে ১৫ দিন খোলা থাকবে স্কুল
রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, শিক্ষা সচিব, উপসচিব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, উপসচিব শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালককে বিবাদী করা হয়। সেই রিটের উপর রবিবার শুনানি হয়।
জলবায়ু সহনশীল ফসল উদ্ভাবনে গবেষণায় গুরুত্বারোপ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের অধ্যাপকদের
জলবায়ু পরিবৃর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জলবায়ু সহনশীল ফসল উৎপাদনে অধিকতর গবেষণা এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প শস্য চাষের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ড এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের (বাকৃবি) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাববিষয়ক একটি সেমিনারে তারা এসব সুপারিশ করেন।
শনিবার (৯ মার্চ) বাকৃবির কৃষি অনুষদের সম্মেলনকক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় ‘খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও জনসাধারণের জীবিকার উপর জলবায়ুর প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক ক্ষয়ক্ষতি কমানো ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রভাবের প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠার উপায় অন্বেষণে গুরুত্বারোপ করেন দুই দেশের অধ্যাপকেরা।
সেমিনারে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ডের অধ্যাপক বিঙ্গুনাথ ইনগিরিগে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কেবল একটি নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়। এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা।
তিনি আরও বলেন, যদি একটি দেশও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী হয় এর প্রভাবে বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই ভুগতে হবে।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
এসময় তিনি জলবায়ুর পরিবর্তনে কৃষিতে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের প্রভাব আলোচনা করেন।
কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীবিকার প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন যেমন কমেছে, দারিদ্র্যের হারও বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঋতুর পরিবর্তন ঘটেছে।
এ কারণে উচ্চ ফলনশীল কিছু কিছু ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কৃষকদের জীবিকা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
দেশের কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব কমানো ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, প্রচলিত সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের পাশাপাশি ফসল রোপণ এবং কাটার সময়কাল জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। জলবায়ু সহনশীল ফসল উদ্ভাবনে অধিক গবেষণা করতে হবে এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প ফসল চাষ করতে হবে।
সেমিনারের এক পর্যায়ে পর্যায়ে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়।
এ পর্বে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষিতে নদীর ভূমিকা, উচ্চ ফলনশীল ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বারোপ, চাষাবাদে অল্প পানি ব্যবহারে উচ্চ ফলন ও ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমানোর উপায়, স্বল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায় এমন ফসল উৎপাদনে জোর দেওয়া, কৃষি উৎপাদনে জ্বালানির প্রভাব কমিয়ে সৌরশক্তির ব্যবহার, কৃষকদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষকদের শহরমুখী হওয়ার কারণ এবং কৃষি উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়া সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রাব্বানী, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আবেদীন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
জবি ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগে হল থেকে বহিষ্কার আরেক শিক্ষার্থী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংগীত বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমীম সানজানা সৃষ্টিকে হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি।
তাকে হল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার।
তিনি বলেন, 'বিষয়টি ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। ঘটনা সত্য প্রমাণ হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। আগামী রবিবার তাকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হবে।
১১ তলার হলের দায়িত্বে থাকা হাউস টিউটর নিপা দেবনাথ বলেন, 'বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে শৃঙ্খলা কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা শেষে আসনটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি তাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।’
এর আগে হলের রান্নাঘরে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি খাতুনকে মারধর করেন সংগীত বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। পরে ভুক্তভোগী হলের হাউস টিউটর ও প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
তাসমীম সানজানাও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন।
ইতি বলেন, 'আমি রান্না করছিলাম। সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চেয়েছিলেন, তাই আমি আমার রান্না বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমার ক্লাস থাকায় আমি তাকে তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করতে বললাম, তখন তিনি গালিগালাজ করতে লাগলেন। প্রতিবাদ করলে আমাকে চড়-থাপ্পড় ও ঘুষি মারেন। এরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম এবং আর কিছু আমার মনে নেই।’
ঘটনার পর এক সাংবাদিক এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সৃষ্টি তার বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম ইশতিয়াককে দিয়ে হুমকি দেন।
অভিযুক্ত সৃষ্টি বলেন, ‘জুনিয়র ওই শিক্ষার্থীও গালিগালাজ করেছেন। তিনি আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। এ কারণে তাকে মারধর করেছি। আমাকেও আঘাত করেছেন তিনি।’
বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ, নেপাল ও মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)। এ আয়োজনে অংশ নেন তিন দেশের প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল ৯টায় লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ময়মনসিংহ হেরিটেজের অর্থায়নে ও বাকৃবি লিও ক্লাবের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাষি ভবনে এই আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়।
এদিন বিকেল ৩টায় তিন দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি প্রদর্শন করে।
আরও পড়ুন: দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
এ সময় বাকৃবির লিও ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কে.এইচ.এম নাজমুল হুসাইন নাজির বলেন, ব্যাপক সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশের সংস্কৃতি বহির্বিশ্বে প্রচারের উদ্দেশ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একে অপরের দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে ও শ্রদ্ধাশীল হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশই চায় তাদের সংস্কৃতি অন্যান্য দেশে প্রচার হোক। বাকৃবিতে প্রতি বছরই বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে আসে। ৩০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী আমাদের লিও ক্লাবের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছে। তাদের মাধ্যমে দেশকে বহির্বিশ্বে ভালোভাবে প্রচার করতেই এই আয়োজন করা হয়েছে।
লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ময়মনসিংহ হেরিটেজের সভাপতি লায়ন ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম এনামুল বলেন, ক্ষুধা, দৃষ্টিশক্তি, শিশু ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও পরিবেশ নিয়ে লায়ন্স ক্লাব সারা বিশ্বে কাজ করে যাচ্ছে। এসব কাজের পাশাপাশি লায়ন্স ক্লাব ও লিও ক্লাবের উদ্যোগে দরিদ্র মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, গরু ছাগলের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন প্রদান, বয়স্কদের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ও পথশিশুদের চিকিৎসা, খাবার ও সাহায্য করা হয়। এছাড়া গর্ভবতী মা ও কিশোরীদের জন্যও সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
তিনি আরও বলেন, দেশের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় লিও ক্লাবেই একমাত্র বিদেশিদের অংশগ্রহণ রয়েছে। তাদের মাধ্যমেই লিও ক্লাব ও লায়ন্স ক্লাবের মানব কল্যাণমূলক কার্যক্রম সহজেই আন্তর্জাতিক আঙিনায় ছড়িয়ে পড়বে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল, ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তানভীর রহমান, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ , অধ্যাপক ড. বাপন দে, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন।
আরও পড়ুন: কেবল দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর রঙিন ফুলকপি: বাকৃবি অধ্যাপক
শাবিপ্রবির যে অধ্যাপক ‘মাদার অফ সোশ্যাল ওয়ার্ক’ হিসেবে পরিচিত
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আমিনা পারভীন। বিভাগটিতে প্রবেশ করলেই শিক্ষার্থীদের কাছে মাদার অফ সোশ্যাল ওয়ার্ক নামে যিনি বেশি পরিচিত। তবে নিজ বিভাগেই কেবল নয়, এই নামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছেও বেশ পরিচিত।
বর্তমানে অধ্যাপক আমিনা পারভীন শাবিপ্রবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শুক্রবার(৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দেশের "নারীর ক্ষমতায়নে সফলতার অগ্রসর" হিসেবে শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীনের গল্প উঠে এসেছে।
আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ইউএনবিকে নিজের গল্প বলেছেন শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন।
জন্মের সাতদিন বয়সেই বাবাকে হারান অধ্যাপক আমিনা পারভীন। আমিনা পারভীনের পিতা ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। দুই ভাইবোনের মধ্যে অধ্যাপক আমিনা পারভীন ছোট এবং বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগ হতে কৃতিত্ত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করে বর্তমানে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে মলিকুলার বায়োসায়েন্স বিভাগে অধ্যাপনা করছেন।
আরও পড়ুন: ৫ নারীর হাতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় জন্ম ও বেড়ে উঠা আমিনা পারভীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮-৮৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
এছাড়া, ২০০৭ সালে সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার্স অফ সাইন্স ইন সোশাল ওয়ার্ক (আইএমএসএসডব্লিও) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল শাবিপ্রবির সমাজকর্ম বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।
অধ্যাপক আমিনা পারভীন শাবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি, হল প্রাধ্যক্ষ, সিন্ডিকেট সদস্য, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপদেষ্টা, সমাজকর্ম বিভাগের প্রধানসহ প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সমাজকর্ম বিভাগের প্রধান এবং ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বকালেই রাষ্ট্রীয়ভাবে আরেকটি নতুন দায়িত্ব চলে আসে। তিনি শাবিপ্রবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে চেয়ারটির দায়িত্ব সফলভাবেই পালন করছেন।
শাবিপ্রবির সমাজকর্ম বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ১৩-১৪ সেশনের ফাহমিদা খান ঊর্মি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর প্রথম যেদিন ওরিয়েন্টেশন হয় সেদিন সকল শিক্ষকদের মধ্যে একজন শিক্ষকের কথাগুলো বেশ মনোযোগ কাড়ল। খুবই মিষ্টি করে, আদর করে কথা বলছিলেন। তার কিছুদিন পরেই আমি একটি দূর্ঘটনায় পতিত হই। রাতে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকাল হতে না হতেই দেখি সেই মমতাময়ী চাহনির মানুষটা আমাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন।’
তিনি আরও বলেন, তিনি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আমিনা পারভীন। কারোর কোনো অসুবিধা বা সমস্যায় যিনি মাতৃরূপে আবির্ভূত হতেন তিনি আমাদের আমিনা পারভীন। আমাদের অধ্যয়নের সময় থেকেই দেখে এসেছি বিভাগের পাশাপাশি নানা দাপ্তরিক কাজে বিভিন্ন সময় তিনি ব্যস্ত থাকতেন। তারপরও তার সর্বোচ্চ প্রাধান্য তার শিক্ষার্থীরা। তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে ডাকেন 'মাদার অফ সোশ্যাল ওয়ার্ক' বলে। আদতে তিনি শুধু সমাজকর্মের না, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর ভরসার এবং আস্থার জায়গা।
সাবেক এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোনো প্রয়োজনে তার কাছে গিয়ে কেউ কখনও অখুশি হয়ে ফিরেছেন বলে আমার মনে পড়ে না। তার দৃঢ় চিত্ত, আপসহীনতা, অটল বিশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কেবল শিক্ষকই না, আমাদের 'মা' যেনো আমাদের মাথার উপরে তার স্নেহের পরশ রেখে যান। আলো জ্বালিয়ে যান।’
বিভাগটির আরেক সাবেক শিক্ষার্থী কয়েস মিয়া বলেন, ‘অধ্যাপক আমিনা পারভীন; সাহসিকতা, স্থিরতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতার এক অপূর্ব সম্মেলন। অধ্যাপক আমিনা পারভীন ম্যাম একসময় সমাজকর্ম বিভাগের একান্ত নিজস্ব আলোকবর্তিকা হিসেবে গণ্য হলেও একসময় সেই আলো উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছে ৩২০ একরের প্রতিটি ইঞ্চিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজকর্ম বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক উপাচার্য প্রয়াত অধ্যাপক হাবিবুর রহমান স্যারের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে সমাজকর্ম বিভাগের মুখপাত্র হয়ে ম্যাম পালন করে যাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সব দ্বায়িত্ব। বর্তমানে দ্বায়িত্ব পালন করছেন শাবিপ্রবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ হিসেবে এবং গড়েছেন এক অনন্য নজির।’
আরও পড়ুন: রন্ধন দক্ষতায় নারী ক্ষমতায়নে কাজ করছেন শেফ জাহিদা বেগম
কয়েস মিয়া বলেন, ‘এই প্রশাসনিক পরিচয়ের বাইরেও সমাজকর্ম বিভাগের একজন ছাত্র হিসেবে আমরা ম্যামের কোমল, মমতাময়ী মাতৃরুপের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। ম্যাম বিভাগের শিক্ষার্থীদের সন্তানতুল্য স্নেহ দিয়ে আগলে রেখেছেন সবসময়। আমরা ম্যামকে চিনি 'সমাজকর্ম বিভাগের মা' হিসেবে।’
বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০২০-২০২১ সেশনের আয়াছ চৌধুরী বলেন, আমিনা পারভীন ম্যাম একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক। আমি ২০২২ সালে সমাজ কর্ম বিভাগে ভর্তি হই এরপর থেকে ম্যামকে খুব কাছ থেকে পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গুরুদায়িত্বে ম্যাম অনেক বেশি ব্যস্ত থাকলেও সবসময় ছাত্র -ছাত্রীদের সুবিধা অসুবিধার দিকে খেয়াল রাখেন। আমাদের কিভাবে ভালো হয় সেসব বিষয়ে চিন্তা করেন। ম্যাম এর ছোট ছোট পরামর্শ, স্নেহ - ভালোবাসা আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।
শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালোবাসা, নিজের দায়িত্ব পালন এবং সফল নারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ- বিষয়ে অধ্যাপক আমিনা পারভীন বলেন, ‘সফলতা একটি আপেক্ষিক বিষয়। আমি কতটা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি তার মূল্যায়ন আমার ছাত্রছাত্রী, সহকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, তথা কর্তৃপক্ষ করবেন। তবে এটুকু বলবো আজ আমি যেখানে অবস্থা করছি, সেখানে আসার পেছনে আমার ‘মা’ এর অবদান অপরিসীম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছোটোবেলা থেকে শিক্ষাজীবনের সব গন্ডি পেরিয়ে বর্তমান সময়ে পৌঁছাতে চারপাশের নানা প্রতিবন্ধকতা সামনে এসেছে। আমার মা এর যোগানো সাহসই সেসব প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিকট আমার মা এর দেখানো পথকেই অনুসরণ করেছি। একইসঙ্গে বিভিন্ন দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম হয়েছি। আমার মনে হয় নারীর ক্ষমতায়ন নিজের ঘর থেকেই শুরু হয় এবং নারীর ক্ষমতায়নের প্রথম সোপান আমরা নারীরা কেবল আমাদের মায়ের হাত ধরেই শিখে থাকি।’
তিনি বলেন, নিজেকে তখন সফল মনে হয় যখন নিজের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রতিষ্ঠিত হিসেবে সামনে পাই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দূরত্ব নয়, শেষ সময় পর্যন্ত নিজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই।
আরও পড়ুন: কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়: জবি ভিসি
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি: সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ক্লাসরুমে ছাত্রকে গুলিকরার ঘটনায় কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্তের পর বুধবার ক্লাস বর্জন ও অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে শিক্ষার্থীরা।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সভা, সমাবেশসহ অন্যান্য কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে বলে তা জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে ক্লাস বর্জন করে কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে শিক্ষার্থীরা।পরে পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তারা কর্মসূচি থেকে সরে আসেন তারা।
আরও পড়ুন: শ্রেণিকক্ষে গুলি: সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজের প্রভাষক বরখাস্ত
শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, কলেজ প্রশাসনের আশ্বাসে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্তের পর ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা বৃহস্পতিবার যথারীতি ক্লাস শুরু করবে।
কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করায় শিক্ষার্থীরাও তাদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে মেডিকেল শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় মামলা
সিরাজগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের গুলিতে মেডিকেল ছাত্র গুলিবিদ্ধ
ঢাকায় শুরু হয়েছে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের ডিগ্রিতে ইউসিবি’র আর্লি এনরোলমেন্ট গ্র্যান্ট
দেশের শিক্ষার্থীদের ঢাকায় বসেই লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জনে উৎসাহিত করতে সম্প্রতি ‘আর্লি এনরোলমেন্ট গ্র্যান্ট’-এর ঘোষণা করেছে দেশের শীর্ষ আন্তর্জাতিক শিক্ষাদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ (ইউসিবি)।
এই গ্র্যান্ট বা অনুদান প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ৩ বছরের প্রোগ্রামে ৩ হাজার ৩৯৫ পাউন্ড অর্থাৎ প্রায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সাশ্রয়ের সুযোগ পাবেন।
এই প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা হিসেবে ও/এএস/এ লেভেলস/এইচএসসি-পর্যায়ের শিক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। ইউসিবি’র ইউওএল–এলএসই (ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন – লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস) ‘এর ইএমএফএসএস (ইকোনমিকস, ম্যানেজমেন্ট, ফাইন্যান্স অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস) বিষয়ে আর্লি বার্ড অফারটি পেতে শিক্ষার্থীদের আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
আগ্রহী প্রার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ভিজিট করে আবেদন করতে পারবেন।
চলতি বছরের অক্টোবরে শুরু হবে প্রোগ্রামটি।
সফলভাবে প্রোগ্রামটি সম্পন্নকারী স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মর্যাদাপূর্ণ সনদ এবং লন্ডনে সমাবর্তনে যোগ দেওয়ার অনন্য সুযোগ। পাশাপাশি, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স ও শুধু ফাইন্যান্স বিষয়ে বিএসসি সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টস (আইসিএ), চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস (সিআইএমএ), ও অ্যাসোসিয়েশন অব চার্টার্ড সার্টিফাইড অ্যাকাউন্টস’এর (এসিসিএ) মতো স্বনামধন্য প্ল্যাটফর্মে পেশাগত স্বীকৃতি অর্জনের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন।
এ বিষয়ে ইউসিবি’র প্রেসিডেন্ট ও প্রভোস্ট প্রফেসর হিউ গিল বলেন, ‘বাংলাদেশি তরুণদের মেধা ও সম্ভাবনার ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থী যেন মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, কোনো ধরনের আর্থিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়া বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে, এবং অ্যাকাউন্টেন্সি, কনসাল্টিং, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকিং, সেলস অ্যান্ড ট্রেডিং বা ইনভেস্টমেন্ট অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের মতো সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে ক্যারিয়ার গড়তে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা এই আর্লি এনরোলমেন্ট গ্র্যান্ট’এর ব্যবস্থা করেছি।
ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ (ইউসিবি) বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদিত প্রথম আন্তর্জাতিক শিক্ষাদানকারী প্রতিষ্ঠান। দেশে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধীনে লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকস (এলএসই) ও মোনাশ কলেজ অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিষ্ঠানের একক অংশীদার হিসেবে ও/এএস/এ লেভেলস/এইচএসসি সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে ইউসিবি।
উল্লেখ্য, শ্রেষ্ঠত্বের তালিকায় বিশ্বে ৪৫তম অবস্থান অর্জন করেছে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস। ইউসিবি’র তত্ত্বাবধনে ইউওএল – এলএসই প্রোগ্রাম সম্পর্কে - বিস্তারিত জানার সুযোগ পাবে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে।
সিরাজগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের গুলিতে মেডিকেল ছাত্র গুলিবিদ্ধ
সিরাজগঞ্জের শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে গুলি করেছেন এক শিক্ষক।
আরাফাত আশিক তমাল (২৩) নামে ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বগুড়া জেলার ধানসিঁড়ি নাটাইপাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর শিক্ষক ড. রায়হান সাদিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছিল।
এই ক্লাসে ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপরই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তৃতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর পায়ে গুলি করেন তিনি।
এ ঘটনায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আমিরুল হোসেন চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
এদিকে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং আশপাশের এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।