সারাদেশ
নতুন রূপে সাজছে কুমিল্লার বোটানিক্যাল গার্ডেন
দুই যুগ পর সংস্কার হচ্ছে বৃহত্তর কুমিল্লার একমাত্র বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা। জেলা পরিষদ বলছে চিড়িয়াখানা নিয়ে রয়েছে পরিকল্পনা এবং পরিকল্পতভাবে সাজানো হচ্ছে বোটানিক্যাল গার্ডেন।
সূত্রমতে, ১৯৮৬ সালে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের একাংশে ১০ একর জমির উপর তৈরি হয় কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। শুরু থেকেই নানা অবহেলায় ছিলো এ বিনোদন কেন্দ্র।
ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাফায়েত উল্লাহ মিয়াজী বলেন, ‘২০ টাকা টিকেটে এ বিনোদন কেন্দ্রে প্রবেশ করলে লস। চিড়িয়াখানায় দেখার মতো তেমন প্রাণী নেই। বোটানিক্যাল গার্ডেন পানির নিচে। এটি সংষ্কার করা খুবই জরুরি।’
আরও পড়ুন: সমুদ্রতীরে ডলফিনের খেলা, বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে পর্যটকদের
নগরীর রেইসকোর্স এলাকার বাসিন্দা গৃহিনী সায়মা ভূঁইয়া শিখা বলেন, সন্তান নিয়ে চিড়িয়াখানায় গিয়েছি দেখার মতো কিছুই নেই। বোটানিক্যাল গার্ডেনে সাধারণ দর্শনার্থীরা ভিতরে প্রবেশ করে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। নগর উদ্যান ছাড়া কোন বিনোদন কেন্দ্র নেই কুমিল্লা শহরে। যদি চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন পরিকল্পিত ভাবে সাজানো হয় তবে শিশুদের নিয়ে যাওয়ার পরিবেশ হবে। নতুন প্রজন্ম বৃক্ষ ও প্রাণীর পরিচয় জানতে পারবে। তারা শিখতে পারবে।
বরিশালে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেয়া শুরু
বরিশালে ৪৬ হাজার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেয়া শুরু হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার নগরের বরিশাল ক্লাব অমৃতলাল দে মিলনায়তনে টিকাদান কেন্দ্রে মহানগরীর এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
আরও পড়ুন: করোনা টিকার নিবন্ধন এখন বিকাশ অ্যাপে
সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ জানান, আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার জন্য সোমবার থেকে বরিশালে এই টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে বরিশাল জেলার মোট ৪৬ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হবে।
উদ্বোধনের পরপরই সিটি মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আব্দুল্লাহ কেন্দ্রে নিজে ঘুরে ঘুরে শিক্ষার্থী টিকা কার্যক্রমের তদারকি করেন। প্রথম দিন এক হাজার শিক্ষার্থীকে ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের রেজিস্ট্রেশন ফরম দেখিয়ে টিকার ফরম পূরন করে তাৎক্ষণিক টিকা গ্রহণ করছে।
আরও পড়ুন: চলতি সপ্তাহেই স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু
এ সময় বরিশাল স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় আনসার সদস্য নিহত
খুলনার রূপসা আলাইপুর আনসার ক্যাম্পের সামনে যাত্রীবাহী বাস চাপায় এক আনসার সদসস্য নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আনসার সদস্যের নাম ইউসুফ আলী (৪৬)। দুর্ঘটনার পর ঘাতক বাসটি জব্দ করে থানায় সোর্পদ করেছেন স্থানীয়রা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৯টার দিকে রূপসা আনসার ক্যাপের সামনে রূপসা-মোংলাগামী যাত্রীবাহী বাস মিথি ক্ল্যাসিক আনসার সদস্য মো. ইউনুস আলীকে চাপা দেয়।
রূপসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন জানান, ইউনুস আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। এঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে মিস ফায়ারে আনসার সদস্য নিহত
মানিকগঞ্জে ট্রাকচাপায় আনসার সদস্য নিহত
মাদারীপুরে ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় আহত বৃদ্ধের মৃত্যু
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। সোমবার সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত আলমগীর প্যাদা (৬০) উপজেলার সিডিখান এলাকার সিডিখান গ্রামের জয়নাল প্যাদার ছেলে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের কালকিনির সিডিখান ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. চান মিয়া শিকদারের সমর্থকদের সাথে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন মিয়ার সমর্থকদের ১০ নভেম্বর সকালে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় এবং দুই শতাধিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এ সময় বোমায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলন মিয়ার সমর্থক আলমগীর প্যাদা গুরুতর আহত হন। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলন মিয়া জানান, আলমগীর প্যাদা আমার বংশের লোক। তাকে বোমা মেরে চান মিয়ার সমর্থকরা আহত করেছেন। সোমবার সকালে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থেকে তার মৃত্যু হয়।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী চান মিয়া সিকদার জানান, আমার লোকজনের বোমায় নয়। মিলন মিয়ার লোকজনের বোমায় আহত হয়ে আলমগীর প্যাদা মারা গেছেন।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আসফাক রাসেল আলমগীর প্যাদার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আহত ৫
ইউপি নির্বাচন: কুমিল্লায় সহিংসতায় যুবক নিহত
দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় নিহত ৬
খুলনায় শিশু হত্যা মামলায় সৎ মায়ের মৃত্যুদণ্ড
খুলনার তেরখাদা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামের আলোচিত শিশু তানিশা হত্যা মামলায় সৎ মা তিথী আক্তার মুক্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার আসামির উপস্থিততে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. এনামুল হক, তার সহযোগী হিসেবে এপিপি সেখ ইলিয়াস হোসেন ও মোসা. শাম্মি আক্তার। সাত কার্যদিবসে মামলাটির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ব্যবসায়ী হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
আদালত জানায়, তানিশা আড়কান্দি গ্রামের আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মো. খাজা শেখের মেয়ে। খাজা শেখের পোস্টিং ছিল বান্দরবন। আগের স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর খাজা ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ফকিরহাট উপজেলার আট্রাকি গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলী শেখের মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর মোবাইলে আসক্ত ছিলেন তিনি। বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে ইমো ও ম্যাসেঞ্জারে কথা বলতো। এ নিয়ে খাজা স্ত্রীকে সন্দেহ করে। তানিশা মুক্তার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতো। ওই বছর ২ এপ্রিল ম্যাসেঞ্জারে ফারাবি প্রসেনজিত নামে এক ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব ও কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে খাজা স্ত্রীকে তালাক দেয়াসহ বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। খাজার ওপর প্রতিশোধ নিতে তানিশাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মুক্তা।
৫ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে হত্যার উদ্দেশে দরজা বন্ধ করে ঘুমন্ত তানিশার ওপর আক্রমণ করেন। দা দিয়ে ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত করতে থাকেন। ধস্তাধস্তির শব্দ শুনে তানিশার দাদি দরজা খুলতে বলেন। কিন্তু মুক্তা দরজা খোলেননি। পরে তানিশার চাচা রাজু শেখ বাড়ি এসে দরজা খুলতে বললে মুক্তা বাইরে বের হন। ঘরে ঢুকে তানিশার নিথর দেহ খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে ফরিদপুরে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, দেবরের যাবজ্জীবন
ভুক্তভোগীর দাদা মো. আবুল বাশার শেখ এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় মুক্তাকে আসামি করে মামলা করেন। ওই বছর ৩১ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম মুক্তাকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
নড়াইলে বোনকে হত্যার দায়ে ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
নড়াইলে বোনকে পিটিয়ে ও পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে ভাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ আদেশ দেন। এসময় আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
ফাতেমা নামে একজনকে হত্যার দায়ে রিপন মোল্যা নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশে দিয়েছেন আদালত। এসময় আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন বিচারক।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন নড়াইলের নড়াগাতি থানার কালিনগর গ্রামের মোকছেদ ওরফে মকু মোল্যার ছেলে।
আরও পড়ুন: একরাম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এমদাদুল ইসলাম ইমদাদ মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, মকু মোল্যার মেয়ে ফাতেমা ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর বেলা ৩টার দিকে কালিনগর গ্রামের নালিয়া নদীর ঘাটে কাপড় পরিষ্কার কতে যায়। তখন তার ভাই রিপন মোল্যা পেছন থেকে ধাক্কা মেরে পানিতে ফেলে চুবিয়ে বাঁশের লাঠি ও টেংগারী দিয়ে জখম করে তাকে হত্যা করে। পরে লাশ পানির নিচে কাদায় পুঁতে রাখে। এ বিষয়টি রিপন মোল্যার ছেলে রাশেদ মোল্যা দেখতে পায়। বিকালে ফাতেমাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে এক পর্যায়ে রাশেদ মোল্যার বর্ণনা অনুযায়ী নদীর ঘাট থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আসামি রিপন মোল্যাকে আটক করলে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা শিকার করে সে। এ ঘটনায় ফাতেমার বাবা বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ সঠিক নয়: আইনমন্ত্রী
খুলনায় জমে উঠেছে শীতের পিঠা বিক্রি
জ্বলন্ত চুলায় লাকড়ি দিয়ে চার-পাঁচটি মাটির খোলায় চিতই পিঠা বানাচ্ছেন নুরুজ্জামান নুরু। চুলার অল্প আঁচে উড়ছে ধোঁয়া। তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিতই। আর চুলা থেকে নামানোর পর মুহূর্তেই তা চলে যাচ্ছে অপেক্ষামান ক্রেতার হাতে। ক্রেতারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সেই পিঠা কিনছেন। কেউ বা নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। কেউ আবার দাঁড়িয়েই খাচ্ছেন।
পাশের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে ব্যস্ত নুরুর বড় ভাই রুহুল আমীন। রাস্তার পাশে এই দুই ভাইয়ের দোকানে অর্ধশত মানুষ পিঠা কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছেন। খুলনা মহানগরীর শান্তিধাম মোড়স্থ জাতিসংঘ শিশু পার্কের পশ্চিম পাশে প্রতিদিনি সন্ধ্যায় এমন দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
নুরুজ্জামান বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে এলে পিঠা বিক্রি করি। এবার প্রায় ১৫-২০ দিন হয়েছে চিতই পিঠা বিক্রি শুরু করেছি। পাঁচ টাকা করে প্রতি পিস। বিক্রিও খুব ভালো।
মামুন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী নুরুর দোকান থেকে পিঠা কিনে প্রশংসা করে বলেন, এখানকার পিঠার মান ভালো। তাই প্রতিবছরই কিনে থাকি। এবারও কিনেছি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পুনাক পিঠা মেলায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা
সোলেমান নগরের প্রবেশপথে পাশাপাশি দুই দোকানে পাটিসাপ্টা, ভাপা, পুলি, তেলের পিঠা ও চিতই পিঠা বিক্রি করছেন রফিক এবং সাহানারা। রফিক জানান, পুলি পিঠা ১০ টাকা পিস, পাটিসাপ্টা ১৫ টাকা ও পাঁপড় তিন পিস ১০ টাকায় বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠা তৈরির ছাঁচে চালের গুঁড়ি নিয়ে তার ওপর গুড়, নারকেল ছিটিয়ে ভাপে দিচ্ছেন দোকানি। খোলায় বানানো হচ্ছে চিতই পিঠা। সন্ধ্যার পরেই পিঠার দোকানে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। অনেকে আবার পিঠা বিক্রির দোকান দিয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।
মহানগরীর রূপসা ঘাট, পিটিআই মোড়, দোলখোলা মোড়, গফফারের মোড়, শিশু হাসপাতাল রোড, তারের পুকুর পাড়, পিকচার প্যালেস মোড়, ক্লে রোড, মহারাজ চত্বর রোড, স্টেশন রোড, কদমতলা রোড, খান জাহান আলী রোড, সোনাডাঙা বাস স্ট্যান্ড, মোল্লা বাড়ির মোড়, নিউ মার্কেট, খালিশপুর, দৌলতপুর, রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার মোড় আর ফুটপাতে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক অস্থায়ী পিঠার দোকান।
মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা মোড়ে মোড়ে পিঠার দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন। আর সাধারণ মানুষও খাচ্ছেন এসব ধোঁয়া-ওঠা গরম গরম পিঠা।
দোকানিরা জানান, খুব বেশি পুঁজি লাগে না বলে সহজে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। জ্বালানি হিসেবে লাকড়ি, অকেজো কাঠের টুকরা, কিংবা গাছের শুকনো ডাল ব্যবহার করছেন তারা। তবে কেউ কেউ আবার পিঠা তৈরি করতে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। কিছু গুড়, আটা, নারকেল নিয়ে এ ব্যবসায় খুলে বসা যায়।
সোনাডাঙা মোল্লা বাড়ির মোড়ের পিঠা বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, পাটিসাপ্টা, পুলি, চিতই, খিজানো পিঠা ও তেলের পিঠা বিক্রি করেন তিনি। দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় দোকানে প্রায় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে।
আরও পড়ুন: বোয়ালমারীতে সন্ধ্যায় ফুটপাতে পিঠা বিক্রির ধুম
করোনা প্রতিরোধে ‘আইডিয়া’র ‘ইমিউনিটি পিঠা’
মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু
মাগুরা শ্রীপুর সড়কের গাংনালিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী অগ্রনী ব্যাংকের এক ম্যানেজার নিহত হয়েছেন। এ সময় তার মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অভীক মজুমদার আহত হন। রবিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত উজ্জ্বল হোসেন মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের বড় সলই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি অগ্রণী ব্যাংক শ্রীপুর শাখা অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ২
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অভীক মজুমদার বলেন, অফিস শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অগ্রণী ব্যাংক শ্রীপুর শাখা থেকে সহকর্মী উজ্জ্বল হোসেনের মোটরসাইকেলের পেছনে বসে মাগুরা যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে গাংনালিয়া বাজারে পৌঁছলে উজ্জ্বল আমাদের মোটরসাইকেলের সামনে থাকা একটি নছিমন গাড়িকে অতিক্রম করতে যায়। এসময় মোটরসাইকেলটি পিছলে গিয়ে আমরা দুজনেই ছিটকে পড়ে যাই। সহকর্মী উজ্জ্বল হোসেন নছিমনের নিচে চাপা পড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর আলম বলেন, নিহত ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ এখন মাগুরা সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ব্যাপারে মাগুরা থানায় মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনা: কুড়িগ্রামে একই পরিবারের ৩ জনসহ নিহত ৪
দেড় দশক শিকলে বাঁধা কোরআনে হাফেজ খালেকের জীবন
দীর্ঘ দেড় দশক ধরে শিকলে বাঁধা অবস্থায় মানবেতর জীবন পার করছেন পবিত্র কোরআনের হাফেজ আবদুল খালেক। কারও সাথে কথাও বলেন না তিনি। মাথা নিচু করে সারাক্ষণ চুপ করে বসে থাকেন। অসুস্থতার কাছে কাবু হয়ে দিন দিন নিথর হয়ে পড়ছেন খালেক।
হাফেজ আবদুল খালেক (৩৮) চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টী পূবর ইউনিয়নের ভোটাল গ্রামের মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
বাবা-মার মৃত্যুর পর জানাজার নামাজে ইমামতি করবে সন্তান, এমন লক্ষ্য মাথায় রেখে নিজের মেধাবী সন্তানকে পড়িয়েছেন হাফেজি মাদরাসায়। আল্লাহর রহমত ও নিজের আপ্রাণ চেষ্টায় পুরো ৩০ পাড়া পবিত্র কোরআনের ৬ হাজার ৬৬৬টি আয়াত মুখস্থ করে নিজের বুকে ধারণও করেছেন আবদুল খালেক। তবে হাফেজি শেষ করলেও স্বপ্ন পূরণ হয়নি তার বাবা-মায়ের। হাফেজি শেষ করার কয়েক মাস পরই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে প্রায় ১৫ বছর শিকলে বাঁধা অবস্থায় মানবেতর জীবনযাবন করছেন খালেক।
আরও পড়ুন: করোনার ছুটি শেষে শাবিপ্রবিতে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা: মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে থাকছে নজরদারি
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়শ্রেরী রাহমানিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন খালেক। পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ছিলেন। ১৫ বছর পূর্বে তিনি হাফেজি পড়া শেষ করার কয়েক মাসের মধ্যে অসুস্থ হয়ে হারিয়ে ফেলেন মানসিক ভারসাম্য।
পরিবারের সামর্থ অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা করানো হলেও বর্তমানে আর্থিক অভাব অনটনের কারণে তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে দিন দিন তার মানসিক ভারসাম্যের অবনতি হচ্ছে। চিকিৎসার খরচ জোগাতে পারছেন না বিধবা মা। তার চিকিৎসায় সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন তার পরিবার।
অসুস্থ আবুদল খালেকের মা শামছুন্নাহার দুঃখ করে বলেন, আবদুল খালেক বিভিন্ন সময় ঘরের আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে। বিভিন্ন সময় এদিক-সেদিকও চলে যায়। পরিবারের পক্ষে সারাক্ষণ তাকে দেখে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। এ জন্য তাকে ঘরে বেঁধে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মন মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
তিনি বলেন, রাতে ছেলের পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় ঘরে ঘুমানোর ব্যবস্থা করি। কিন্তু ছেলের এমন অবস্থায় মা হয়ে আমি নিজেও সারারাত ঘুমাতে পারি না মানসিক যন্ত্রনায়। কারণ কখন সে কী করে বসে এই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
শামছুন্নাহার বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার স্বামী শ্রমিকের কাজ করতেন। ছেলে অসুস্থ হওয়া পর সম্পত্তি বিক্রি করেও তার চিকিৎসা করানো হয়েছে। আবদুল খালেক সুস্থ না হওয়াতে তার বাবাও কয়েক বছর আগে মারা যায়। বর্তমানে ঠিক মতো সংসার চালানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। ছেলের চিকিৎসা করবো কীভাবে? তাকে উন্নত চিকিৎসা করার সামর্থ আমাদের নেই।
কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মা শামছুন্নাহার। তিনি আবেগজড়িত কণ্ঠে ছেলের চিকিৎসায় সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জয়শ্রেরী রাহমানিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার মুহ্তামিম হাফেজ মহসিন মিয়া ইউএনবিকে জানান, আবদুল খালেক খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। সে অসুস্থ হওয়ার পর আমরা মাদরাসায় আমাদের সামর্থ অনুযায়ী দোয়ার আয়োজন করছি যেন সে সুস্থ হয়ে যায়। বর্তমানে সে শিকল বাঁধা অবস্থায় আছে, বিষয়টি অনেক দুঃখজনক। তাকে সুস্থ করার জন্য আল্লাহর রহমতের পাশাপাশি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন।
ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গনি বাবুল পাটওয়ারী এবং উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মানসিক ভারসাম্যহীন আবুদল খালেকের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম রোমান জানান, পরিবারের লোকজন আমাদের কাছে আসলে আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি কি না।
আরও পড়ুন: মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে বাংলাদেশি সংস্থার পাশে ফেসবুক
চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আহত ৫
জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পৃথক ঘটনায় দুই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার কুমারী ও ডাউকি ইউনিয়নে এই সহিংসতার ঘটনাগুলো ঘটে। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে কুমারী ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষের সেলিম (২৫) ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষের সমর্থক হিরণকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ডাউকি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল হোসাইন বলেন, আমার ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পোয়ামারি গ্রামে আমার একটি অফিস ভাঙচুর করেছে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী তরিকুল ইসলামের লোকজন। তারা আমার কর্মী আলী হোসেনকে মারধরসহ তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মিনি খাতুনকে মেরে আহত করে।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: কুষ্টিয়ায় সংঘর্ষে আ'লীগের ১০ কর্মী আহত
একই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'এটা বিএনপি নাকি জামায়াতের অফিস তা কেউ জানে না। একটু ধাক্কাধাক্কিতে ভেঙে গেছে। তবে কাউকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’
অন্যদিকে, কুমারী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোজাম্মেল হক অভিযোগ করে বলেন, পথসভা শেষ করে আমার নির্বাচনী অফিসে আসি। এ সময় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সাইদ পিন্টুর কর্মীরা হঠাৎ আমার অফিসে ভাঙচুর চালায়। তারা আমার কর্মীর মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন লাগায়। এছাড়া আয়ুব আলী নামে আমার এক কর্মীকেও মারধর করে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে একই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাইদ পিন্টু বলেন, আমার কর্মীরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর অফিস ভাঙচুর করেনি। উল্টো তারাই আমার একটি অফিস ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে এবং তারা রিপন ও লাভলু নামের আমার দুই কর্মীকে মারধর করেছে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, কুমারী ইউনিয়নে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছে দুজনের আহতের কথা জেনেছি। এছাড়া স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর একটি মোটরসাইকেল কে বা কারা পুড়িয়ে দিয়েছে সেটার খোঁজ করছি। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের দুজনকে আটক করা হয়েছে।
ওসি বলেন, ‘ডাউকি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর অফিস ভাঙচুরের খবর পেয়েছি। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার পর আমি দুটি ইউনিয়নেই পুলিশি টহল জোরদার করেছি।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের দু’দিন পর কেন্দ্র থেকে বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার উদ্ধার