প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরে ৫ দলিল সই ও বহুমুখী সহযোগিতার সম্ভাবনা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সফরে দেশটিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
থাইল্যান্ডের সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারে এ সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি , তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সফরের পর্দা উন্মোচনবিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আগামী ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সরকারি এই সফরে ইউনাইটেড নেশনস ইকনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনেও যোগদান করবেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, ২৬ এপ্রিল থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউজে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
একই দিন শেখ হাসিনা তার সম্মানে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
এছাড়াও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তির পাশাপশি জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতাবিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করতে একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সফরে থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাচাওউহুয়া ও রাণী সুধিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’র পর্যালোচনার পাশাপাশি অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষত বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল এবং সমুদ্র সংযোগ, উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মানব-সম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট পর্যটন প্রচারণা, পর্যটন অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথ কার্যক্রম ও দক্ষতা বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সুবিধা অর্জন করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন হাছান।
তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতার ফলে উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি করা হলে উভয় দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর হবে এবং বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে সরকারি কর্মকর্তারা সময়মতো যোগদান করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে আসিয়ানের ’সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ মর্যাদালাভে বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়ে আরও জোরালোভাবে অনুরোধ করা এবং রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন ও মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিরসনে থাইল্যান্ডসহ আসিয়ান সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে অধিকতর সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হবে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি আরও জানান, ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে ২৫ এপ্রিল এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বক্তব্য প্রদান করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইউএনএসক্যাপের নির্বাহী সচিব সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি সফরটি সফল এবং ফলপ্রসূ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
এ সফরে আরও থাকবেন অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা।
সব মানুষের কল্যাণে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: কৃষিমন্ত্রী
সব মানুষের কল্যাণের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
তিনি বলেন, ‘জনকল্যাণে এটি প্রধানমন্ত্রীর একটি অনন্য উদ্যোগ। কেউ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় যুক্ত হলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না। এই পেনশন ব্যবস্থা অবসরকালীন সময়ে আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং শেষ বয়সে কারো কাছে হাত পাততে হবে না।’
আরও পড়ুন: টেকসই খাদ্য নিরাপত্তায় গবেষণা জোরদার করতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণ সভা ও পেনশন মেলায় এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে গেলে পেনশন পান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত এবং দেশের অন্যান্য মানুষ পেনশনের সুবিধা পান না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা বয়স্কদের ঠিকমতো দেখভাল করেন না, অনেক সময় বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্কদের রেখে আসেন। শেষ বয়সে অনেকেই ট্যাবলেট কিনতে পারেন না। এক্ষেত্রে পেনশন স্কিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘পেনশনে যুক্ত হলে শেষ বয়সে টেনশনে থাকতে হবে না। ছেলে ও মেয়ে দেখছে না বলেও অভিযোগ করতে হবে না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির শিখড়ে উঠেছে। তার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে।’
আরও পড়ুন: কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রি সিন্ডিকেট ভাঙার বড় উদ্যোগ: কৃষিমন্ত্রী
কাউকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে চায়, তবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যা যা করা দরকার তাই করা হবে।
তিনি বলেন, ‘কেউ আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করুক তা আমরা চাই না। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চাই, কিন্তু আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করব। আমাদের এটি সর্বদা মনে রাখতে হবে।’
রবিবার সকালে চট্টগ্রামের হালিশহর সেনানিবাসে আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে নবনির্মিত 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স' উদ্বোধন শেষে দরবারে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় শান্তি চাই। আমাদের দেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম। আমরা যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছি। যুদ্ধে জয়ী হয়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তা আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স' উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে যুদ্ধও ডিজিটাল মাধ্যমে করা হচ্ছে। এজন্য দেশে আধুনিক, জ্ঞানভিত্তিক উচ্চ প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা দরকার।
তিনি বলেন, 'আমরা চাই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আরও উন্নত, আরও দক্ষ এবং আরও প্রশিক্ষিত হবে এবং আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেহেতু প্রয়োজনে সবসময় জনগণের পাশে রয়েছে, তাই এখন তারা জাতির কাছে আস্থার প্রতীক।
তিনি বলেন, 'সশস্ত্র বাহিনী পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্যপরায়ণতা, অনুশীলন, প্রশিক্ষণ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন চৌকস হতে হবে।’
সেনাবাহিনীর সদস্যদের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও আনুগত্য বজায় রেখে কর্তব্যপরায়ণতা, পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে দেশের গৌরব বজায় রাখতে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সেনাবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীতে অত্যাধুনিক বিমান, হেলিকপ্টার, ইউএভি, চতুর্থ প্রজন্মের ট্যাংক, এপিসি, ট্যাংক ধ্বংসের ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র সংযোজন করা হয়েছে।
দেশের কল্যাণে সেনাবাহিনীর সার্বিক কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, 'জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাজের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের জন্য দেশে-বিদেশে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ মিশনগুলোতে অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক হালকা সাঁজোয়া যান এবং মাইন প্রতিরোধী অ্যামবুশ সুরক্ষিত যানবাহন কেনা হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ তাকে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে মুজিব ব্যাটারির ওপর একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: খেলাধুলাই যোগ্য নাগরিক গড়ে তুলতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিচলিত হননি, বরং আরও দৃপ্ত পদভারে জনগণের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়েছেন, দেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদা ও সম্মানের আসনে আসীন করেছেন।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে একুশে পদকে ভূষিত সাংবাদিক প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের 'ভুবনজোড়া শেখ হাসিনার আসনখানি' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব বর্তমান বিশ্বে বিরল। তিনি শুধু দেশেরই নন, তিনি আজ বিশ্বনেতা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, শেখ হাসিনা শুধু তারই নন, তার সন্তানদেরও প্রেরণা। ভারতের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ধরে তাকে নিজের প্রেরণা বলে উল্লেখ করেছেন। ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আরব বিশ্বে একজন শেখ হাসিনা থাকলে হয়তো গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা যেত।’
আরও পড়ুন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
হাছান আরও বলেন, যে কোনো বিশ্বসভায় শেখ হাসিনা যোগ দিলে তিনিই মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন।
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের সমবায় গঠনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষি খাতে সমবায় পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমবায় পদ্ধতিতে এগোতে হবে। যদিও সমবায়ের মাধ্যমে উৎপাদন হচ্ছে, তবে এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যে স্থায়ী উপলব্ধি এখনো গড়ে উঠেনি।’
শুক্রবার বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় সমবায় গঠন করে জমি চাষাবাদে জনগণকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের নেতাদের আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে আমাদের আর খাদ্যের অভাব হবে না।’
সমবায় ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সমবায় ব্যবস্থাপনায় জমি চাষ করা হবে এবং সমবায়ের অধীনে কৃষিযন্ত্র ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
এই ব্যবস্থার আওতায় জমির মালিকরা লাভের একটি নির্দিষ্ট অংশ পাবেন, কৃষক বা শ্রমিকরা আরেকটি নির্দিষ্ট অংশ পাবেন এবং মার্জিনের অবশিষ্ট অংশ মেশিন, সার, বীজ, চাষাবাদ ও সেচসহ কৃষি উপকরণ ব্যবস্থাপনার জন্য সমবায়ের অধীনে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সমবায়ের প্রচার করতে 'আমার বাড়ি আমার খামার' এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে।
কৃষি খাতে তার সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ১ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন থেকে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়ে বর্তমানে ৪ কোটি ৯২ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ৭৯ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে, যা তখন মাত্র ২৮ লাখ হেক্টর জমি ছিল।
এ সময়ে মাছের উৎপাদন ২১ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৫৩ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। আর গৃহপালিত পশুর সংখ্যা এখন ৭ কোটি ৯৯ লাখ, যা ২০০৬ সালে ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ।
কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এক সময় মানুষ তাদের পরিবারের জন্য শুধু চাল-নুন বা চাল-ডালের ব্যবস্থা করতে উদ্বিগ্ন থাকলেও এখন তারা মাছ, মাংস, মুরগি ও ডিমের দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, মানুষ এখন মাছ, মাংস, ডিম ও মুরগির কথা বলে, অর্থাৎ উন্নয়ন হচ্ছে। সরকারের সমালোচকদের এটা স্বীকার করতে বলেন তিনি।
সরকার বর্তমানে কৃষি খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি এ খাতে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে এবং সম্পদ ব্যবহারে কৃচ্ছ্রসাধন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এ সময় বাংলাদেশ কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র গান্ধীর নেতৃত্বে নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কৃষক লীগ নেতাদের গণভবন কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের সবজি উপহার দেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগ ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়নি।
তিনি বলেন, 'যারা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের (বিএনপি) বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তারা অপরাধ করেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
শুক্রবার গণভবনে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এসব অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ছেন প্রধানমন্ত্রী: অর্থমন্ত্রী
অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ হত্যা, দুর্নীতি, অস্ত্র চোরাচালান ও গ্রেনেড হামলার মতো অপরাধ করার জন্য এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন প্রতিহত করতে বিএনপি ২০১৩ ও ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ৩ হাজার ৮০০ কার, বাস, লঞ্চ ও ট্রেন পুড়িয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সহিংসতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ২৮ অক্টোবর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল এবং নির্বাচন বানচাল করতে ট্রেনে আগুন দিয়ে একজন মা ও তার সন্তানকে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, ‘যারা এসব কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত নয়? মানুষ কি তাদের পূজা করবে?'
তিনি বলেন, ‘আজকে তারা সব জায়গায় বলে বেড়াচ্ছে যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের কাছে জানতে চাওয়া উচিত কীসের জন্য মামলাগুলো করা হয়েছে।’
বিএনপির ৬০ লাখ নেতা-কর্মী কারাগারে আছে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কারাগারগুলোর এত লোককে জায়গা দেওয়ার সক্ষমতা নেই।
তিনি বলেন, 'তারা দাবি করছে যে তাদের ৬০ লাখ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে, কিন্তু আমাদের (কারাগারগুলোর) সেই সামর্থ্যও (এত লোককে জায়গা দেওয়ার) নেই।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি বিএনপির এত লোক কারাগারে আটক থাকে, তার মানে এখন যারা কারাগারে আছে তারা সবাই তাদের লোক এবং সেখানে অন্য কোনো অপরাধী নেই।
তিনি আরও বলেন, 'এর অর্থ হচ্ছে ওখানকার সব অপরাধী (যারা কারাগারে আছে) বিএনপির।’
বিএনপি শাসনামলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর সহিংসতা ও নির্যাতনের ভয়াবহ দৃশ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রতিশোধ নিতে যায়নি, বরং দেশের উন্নয়ন ও জনগণের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে মেধা ও শক্তি কাজে লাগিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সৌভাগ্য যে আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ নই বলে তারা এখনো কথা বলার (আওয়াজ তোলার) সুযোগ পায়। তারা সারাদিন লাউড স্পিকার ব্যবহার করে কথা বলে এবং তারপর বলে যে তারা কথা বলার সুযোগ পায় না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
মধ্যপ্রাচ্য সংকট: সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ইসরায়েলের ওপর ইরানের পাল্টা হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের উদ্ভূত পরিস্থিতির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই সংঘাত দীর্ঘদিন চলতে থাকলে বাংলাদেশের কিছু খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই বিবেচনায় সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি।
বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যে বাস্তবতা উদ্ভূত হচ্ছে সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলকে নজর রাখতে হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতির দিকে মন্ত্রিপরিষদ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সব সদস্যকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, সংঘাতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'সংঘাত দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকলে আমরা কীভাবে বিষয়গুলো মোকাবিলা করব বা এসব পরিস্থিতি সামলাতে আমরা কী করতে পারি সে বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সংঘাত দীর্ঘমেয়াদি রূপ নিলে বিভিন্ন খাতে এর প্রভাব পড়বে, সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর কর্তৃপক্ষকে এর প্রভাব মোকাবিলায় পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে।’
কোন কোন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব বলেন, সবাইকে নিজ নিজ খাতসংশ্লিষ্ট প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সংকট তৈরি হলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে। তাই সেক্ষেত্রে কী করা উচিত, তার একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠেয় ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের (এসকাপ) ৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২৪ এপ্রিল থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসকাপ সম্মেলনটি আগামী ২২ থেকে ২৬ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ঈদের উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
সরকারের সিনিয়র এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আরও থাকবেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সফরকালে একটি দ্বিপক্ষীয় উপাদান যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে, যাতে অর্ধ ডজন দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নথি সই হতে পারে।
আগামী ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
'লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৮তম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে এই অঞ্চলে সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ তৈরি করবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনার লক্ষ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এই অধিবেশনে মিলিত করবে।
আয়োজকরা বলছেন, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা ডিজিটাল উদ্ভাবনের রূপান্তরমূলক সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে উন্মোচনের সুযোগগুলো চিহ্নিত করা এবং টেকসই উন্নয়নে তাদের অবদান জোরদার করার পন্থাগুলো নিয়েও আলোচনা করতে সক্ষম হবেন।
একটি ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা অংশীদার এবং স্টেকহোল্ডারদের বিস্তৃত পরিসরে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দেবে, যারা ইতোমধ্যে ডিজিটাল উদ্ভাবনগুলোর মাধ্যমে এই অঞ্চল জুড়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখছে।
টেকসই উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এককভাবে অবস্থান করছে।
ইতোমধ্যে, এই অঞ্চলটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডিজিটাল অর্থনীতি, গভটেক এবং ইন্টারনেট অফ থিংসের মতো অগ্রণী প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় পরিচালিত উদ্ভাবনের জন্য একটি গতিশীল কেন্দ্র হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। তবুও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাপক সম্মিলিত প্রচেষ্টা জোরদার করতে আরও দক্ষতা এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে এই অঞ্চলের একটি পরিকল্পনা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ঈদের শুভেচ্ছায় জনকল্যাণে আওয়ামী লীগের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত প্রধানমন্ত্রীর
আসুন সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে একযোগে কাজ করি: পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আরও পড়ুন: পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি শুরু
১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরবর্তীতে স্থানটির নাম পরিবর্তন করে মুজিবনগর রাখা হয়। প্রথম সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তাজউদ্দীন আহমদকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিসভার সদস্য করা হয়।
মূল মন্ত্রিসভার সফল নেতৃত্ব সেই বছরের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আগামীকাল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস
বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার(৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা ও তার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সম্ভাবনার কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক পণ্য আমদানি বৃদ্ধির জন্য ব্রাজিলের সুযোগের কথা তুলে ধরেন। ফলে মধ্যস্থতাকারীদের প্রয়োজনীয়তা দূর করে এবং এই প্রক্রিয়াটিকে আরও ব্যয়সাশ্রয়ী করে তোলা যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বর্তমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা ব্রাজিলের পক্ষে প্রচণ্ডভাবে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ব্রাজিল থেকে প্রচুর পরিমাণে চিনি, সয়াবিন তেল এবং তুলা আমদানি করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে বিনিময়ে কেবলমাত্র ন্যূনতম পরিমাণে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে। ব্রাজিলের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্রাজিলের আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে- কেবল আরও বেশি তৈরি পোশাক পণ্য নয়, বরং এতে পাট, পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যও অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঐতিহাসিক যোগসূত্রের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে ব্রাজিলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানের ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলের ফুটবলের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের ফুটবলের মান উন্নয়নে সহযোগিতা কামনা করেন।
কূটনৈতিক সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৪ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে যোগদানের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনসিও লুলা দা সিলভার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান।
২০২৪ সালের গ্রুপ অব ২০ (জি২০) শীর্ষ সম্মেলন আগামী ১২-১৪ জুলাই ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে জি-২০ গঠিত। দেশগুলো হলো- আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, জার্মানি, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়ান ফেডারেশন, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে জি-২০ এর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবে ব্রাজিল।
আরও পড়ুন: মানুষের জন্য কাজ করুন, জনগণের আস্থা হারাবেন না: জনপ্রতিনিধিদেরকে প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। ভিয়েরা গাজায় চলমান সংঘাতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েবাংলাদেশের নিন্দাকে সমর্থন জানান সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েরা।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে 'তারা (ইসরায়েল) সব ধরনের আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছে, তারা হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে, আশ্রয় শিবিরে হত্যা অব্যাহত রেখেছে- এটি যুদ্ধ নয়, এটি গণহত্যা।’
তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী শিশু, নারী ও বৃদ্ধদেরও রেহাই দিচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করে ভিয়েরা বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে ব্রাজিলের আগ্রহ প্রকাশ করেন ভিয়েরা। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুই জনবহুল দেশের মধ্যে সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ভিয়েরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি উপহার দেন। যা এই সফরে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা এবং সহযোগিতা ও অভিন্ন প্রবৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পথ খুঁজে বের করে পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং একটি শক্তিশালী ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে এটি ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। এটি বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
আরও পড়ুন: বহুপক্ষীয় ফোরাম: ২৪ এপ্রিল থেকে ৬ মে থাইল্যান্ড-সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী