রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গা ভোটার সংখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
কক্সবাজার জেলায় কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিচারপতি নাইমা হাইদার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এদিকে বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ৬ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৩৮ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতি নিয়োগ
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
এর আগে মঙ্গলবার রোহিঙ্গাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না দিয়েই কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন ওই ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিদ।
রিটে কক্সবাজারের সব ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার তালিকা যাচাই করে রোহিঙ্গাদেরকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, তাদের নাগরিকত্ব প্রদান সংক্রান্ত সব নথি বাতিল করা এবং রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব প্রদানের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন ৩৮ জন রোহিঙ্গা। তাদের তালিকা যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়।
এছাড়াও একই ইউনিয়নে কয়েকশ (সাড়ে তিনশ) রোহিঙ্গা নাগরিক হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তাদের নাগরিকত্ব বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ না করা পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখার আবেদন জানানো হয়েছে রিটে।
এই রিটের উপর বুধবার (২৪ এপ্রিল) প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল ও আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রমজানে স্কুল বন্ধ: মঙ্গলবার আপিল বিভাগে শুনানি
সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের সম্পত্তি স্থিতাবস্থায় রাখার নির্দেশ আপিল বিভাগের
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে ইন্দোনেশিয়া ও আইওএমের সহযোগিতার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের তাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনে ইন্দোনেশিয়া ও আইওএমের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মিশন প্রধান আব্দুসাত্তর ইসোয়েভ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলো উঠে আসে। দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার অঙ্গীকার করেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরব আমিরাতকে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া উভয় দেশের সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ায় জাতীয় নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন এবং দেশটির নেতৃত্বকে শুভেচ্ছা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের উচ্চ সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে পাম অয়েল শোধনাগার এবং পণ্যের বাজার প্রতিষ্ঠায় ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানান। দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়াও বৈঠকে হাছান মাহমুদ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মিয়ানমারে তাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য ইন্দোনেশিয়া ও আসিয়ানের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রীকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এদিকে পৃথক এক সাক্ষাতে বাংলাদেশের সঙ্গে আইওএমের কার্যক্রমের বৃত্তান্ত সংক্ষেপে তুলে ধরেন সংস্থার মিশন প্রধান আব্দুসাত্তর ইসোয়েভ।
এ সময় মন্ত্রী আইওএমকে ধন্যবাদ জানান এবং বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মিয়ানমারে তাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান বলে বর্ণনা করেন।
পাশাপাশি ক্লাইমেট মাইগ্রান্টস বা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্থানচ্যুতদের বিষয়ে আইওএমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এসব বিষয়ে জোর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন আইওএম মিশন প্রধান।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের ফেরত পাঠাতে কাজ করছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইন্দোনেশিয়ায় নৌকাডুবি: সাগর থেকে ৩ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের কাছে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির পর তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে প্রাদেশিক তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা।
বৃহস্পতিবার নৌকাটির উল্টে যাওয়া হালে রাতভর গাদাগাদি করে আশ্রয় নেওয়া ৪৪ জন পুরুষ, ২২ জন নারী ও ৯ জন শিশুসহ ৭৫ জনকে উদ্ধার করে জেলে, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল।
কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলেও বেশিরভাগকেই আচেহ বারাত জেলার একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। অনেকে যাত্রাপথে পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন বলে ইউএনএইচসিআর কর্মীদের জানিয়েছেন।
শনিবার জেলেরা তিনটি মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানায়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় প্রস্তুত ইউএনএইচসিআর-আইওএম
রবিবার এক বিবৃতিতে বান্দা আচেহ সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সির প্রধান আল হুসেইন জানান, ওই এলাকায় তল্লাশির পর তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। যাদের মধ্যে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ। তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী। তারা ডুবে যাওয়া নৌকার যাত্রী ছিলেন।
লাশগুলো আচেহ জায়া জেলার কালাং শহরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইউএনএইচসিআরের কর্মী ফয়সাল রহমান বলেন, বেঁচে যাওয়া কয়েকজন মৃতদেহ শনাক্ত করতে সাহায্য করেছেন।
ফয়সাল রহমান আরও জানান, তারা নৌকায় একসাথে ছিল কি না যাচাই করতে শরণার্থীদের মধ্যে একজনকে শনাক্ত করতে ও যাচাই করার জন্য বেছে নেওয়া হয়।
আচেহর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শনিবার থেকে নিকটবর্তী পানিতে মৃতদেহ ভাসতে দেখা গেছে বলে খবর পেয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্র যাত্রা করে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে ডুবে যাওয়া একটি নৌকা থেকে প্রায় ৭০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী নিখোঁজ বা নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে, যারা ২০১৭ সালে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস বিদ্রোহ দমন অভিযান থেকে বাঁচতে পালিয়ে এসেছিল। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার এবং অধিকাংশই নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত।
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো ইন্দোনেশিয়াও জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণ করতে বাধ্য নয় দেশটি। তবে সাধারণত বিপদগ্রস্ত শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ৬৯ রোহিঙ্গা শরণার্থী উদ্ধার
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে এবং তাদের কল্যাণে পরিচালিত বিভিন্ন সহায়তা পরিষেবা সম্পর্কে ধারণা নিতে ভাসানচর ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া।
বুধবার (২০ মার্চ) এ সফরে ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএফপি, আইওএম, ইউনিসেফ, ইউএনউইম্যান এবং ইউএনএফপিএসহ একাধিক জাতিসংঘ সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি।
এছাড়াও, ভূমিধস এড়াতে নরওয়ের অর্থায়নে ইউএনডিপির উদ্যোগে পরিচালিত দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান নির্ভর উদ্যোগসমূহ পরিদর্শন করেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত। তার এই সফর ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনের জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বকে আরও জোরদার করবে।
আরও পড়ুন: উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে সুইডেনের রাজকুমারী
এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য টেকসই আবাসন নিশ্চিত করতে কক্সবাজারে সরকারের খুরুশকুল আশ্রয়ণ হাউজিং প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরের জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপ হাতিয়া পরিদর্শনে যান ক্রাউন প্রিন্সেস। আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কীভাবে এটি হাতিয়ার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ভূমিকা রাখছে সে সম্পর্কে ধারণা নেন তিনি।
এ সময় সুইডিশ ক্রাউন প্রিন্সেসের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মদির, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী ইয়োহান ফরশেল।
আরও পড়ুন: খুলনা-চট্টগ্রামে জলবায়ু সহনশীল উদ্যোগ পর্যবেক্ষণে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত
গত সোমবার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে প্রচারণার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ও ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ভিক্টোরিয়া। ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হওয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ইউএনডিপির প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাসানচরে তাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারে।
তিনি ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে ইউএনডিপির সহায়তা কামনা করেন।
চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় পৌঁছান প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। এ সফরের অংশ হিসেবে কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রিন্সেস বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।
দু'দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ শিকার। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও দেশটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে।
স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন মানুষ যাতে না থাকে সেজন্য সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী ঘর করে দিচ্ছে।
এ ছাড়া তার সরকার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা ১৯৬৯ সালে তার প্রথম সুইডেন সফরের কথা স্মরণ করেন, যখন তার স্বামী পড়াশোনার জন্য সেখানে ছিলেন।
আরও পড়ুন: উপকূলীয়দের জীবনমান দেখতে মঙ্গলবার খুলনায় আসছেন সুইডেনের রাজকন্যা
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে একীভূত করার প্রস্তাব ঢাকার প্রত্যাখ্যান
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে বসবাসে সব ধরনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ইউএনএইচসিআর ও আইওএমসহ সব মানবিক সহায়তা সংস্থাকে অনুরোধ করেছেন।
তিনি দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
গত ১৩ মার্চ জেনেভায় রোহিঙ্গাদের জন্য ২০২৪ জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের (জেআরপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাসুদ এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন সতর্ক করে বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে মৌলবাদ ও চরমপন্থার ঝুঁকি থেকে উদ্ভূত হুমকি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপস্থিতি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে: দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, ন্যায্যতার ভিত্তিতে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দায়িত্ব নিয়ে নীতি বাস্তবায়ন না করলে, শুধু বাংলাদেশ, ইউএনএইচসিআর, আইওএম ও ডব্লিউএফপির পক্ষে রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য কার্যক্রম চালানো এবং সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। ক্রমবর্ধমান তহবিল সংকট কাটিয়ে ঊঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের প্রতিশ্রুত অনুদান আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র সচিব উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর এর গুরুতর প্রভাব থাকা সত্ত্বেও দেশটি গত ছয় বছর ধরে ১.১ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সর্ববৃহৎ দাতা দেশ এবং ২০২২ সালেই ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের চাপ কমাতে বিকল্প পথ অনুসন্ধানে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন করে তুলেছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রতি বছর ৩০ হাজার নবজাতক জন্ম নিচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একীভূত করার সম্ভাবনা নাকচ করে, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে ইউএনএইচসিআর এবং আইওএমসহ সমস্ত মানবিক প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করেন মাসুদ।
এই বছর জেআরপিতে ১৯৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১.৩৫ মিলিয়ন রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য ৮৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল চাওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে জেআরপি-২০১৪ এর প্রথম কৌশলগত উদ্দেশ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনই হবে এই সংকটের টেকসই সমাধান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারীদের জন্য জাতিসংঘ ও সহযোগী সংস্থাগুলোর ৮৫২.৪ মিলিয়ন ডলার আহ্বান
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। এছাড়াও, তিনি রোহিঙ্গা ও নিজ দেশের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের কল্যাণ নিশ্চিতে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ক্রেডিট তহবিল থেকে অনুদান ও ঋণ গ্রহণে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
হাই কমিশনার আরও বলেন, সরকারের এই উদ্যোগ জেআরপির সম্পূরক তহবিল স্ফীত করবে।
মানবিক সহায়তা তহবিলের ক্রমবর্ধমান তহবিল ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ জানান আইওএম মহাপরিচালক এমি পোপ। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগণের মধ্যে অনেক ইতিবাচক সম্ভাবনা রয়েছে। মিয়ানমারে নিজ ভূমিতে তাদের চূড়ান্ত প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে এই জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়াও কক্সবাজারের বাস্তুসংস্থান ও জীব-বৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে উপস্থিত প্রতিনিধিগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি বিশেষ করে উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল কক্সবাজারেই ছয় হাজার হেক্টর সংরক্ষিত বনভূমির অস্তিত্ব এখন বিলুপ্তির মুখে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করতে বলেন।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে জাপানের রাষ্ট্রদূত
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ক্যাম্প পরিদর্শনে যান তিনি।
এ সময় রাষ্ট্রদূত একটি ই-ভাউচার আউটলেট, একটি জীবিকা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও উৎপাদন কেন্দ্র এবং কুতুপালংয়ের একটি শিক্ষা কেন্দ্র এবং ক্যাম্প ৪ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন জাপানি অভিনেত্রী সাহেল রোজ।
শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
২০১৭ সালের আগস্টে ব্যাপক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর থেকে, কক্সবাজারের পাশাপাশি ভাসান চরে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওগুলোর মাধ্যমে ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তা করেছে জাপান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ৫২ লাখ পাউন্ড সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, আশ্রয়, সুরক্ষাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়েছে দেশটি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করে রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা বলেন, ‘কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এটি আমার পঞ্চম সফর, এবং আমি আইএসসিজি, ডব্লিউএফপি, ইউএনএইচসিআর ও ইউনিসেফকে ধন্যবাদ জানাই যারা এই সফরের আয়োজন করেছে। সাহেল রোজও এই সফরে এসেছেন। আমি আশা করি তিনি ক্যাম্পে যা দেখেছেন তা জাপানের লোকদের কাছে জানাবেন।’
তিনি আরও বলেন, এই সংকটের ছয় বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এই সংকট সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা অপরিহার্য।
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে জাপান কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় জাপান
টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছুরিকাঘাতে রোহিঙ্গা নিহত
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নূর মোহাম্মদ নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে টেকনাফের নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে ৫ রোহিঙ্গা নিহত
নিহত যুবকের নাম নূর মোহাম্মদ নয়াপাড়া ক্যাম্পের ডি ব্লকের বাসিন্দা।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, নূর মোহাম্মদ নিজ বাসায় যাওয়ার সময় ডি ব্লক সংলগ্ন পানির ট্যাংকির সামনে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ক্যাম্প সংলগ্ন আইপিডি হাসপাতালে নিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।
লাশ ময়নাতদন্তের কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় আরসা-আরএসও 'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গা নিহত
সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই রোহিঙ্গা নিহত
ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দগ্ধ ৯
নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে পাঁচ শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধদের সবাই রোহিঙ্গা।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল দিকে ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ১৪ জন দগ্ধের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
আহতদের প্রথমে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক হাসিনা জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মুদি দোকানে আগুনে পুড়ে কিশোর নিহত, দগ্ধ-২
রাজধানীর জুরাইনে গ্যাসের চুলার আগুনে নারীসহ ৩ জন দগ্ধ
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপস্থিতি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে: দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে তা এখন দেশের অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
তিনিম বলেন, গত সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে ১০ লাখের বেশি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা নাগরিক আমাদের কক্সবাজার উপকূলে আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৭ সালে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার তাদের উদারভাবে গ্রহণ করে আশ্রয় দিয়েছে। এই উদারতা আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি বড় আকারের বোঝা হিসেবে পরিণত হতে বেশি সময় নেয়নি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় অশনির বাংলাদেশে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই: দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
বছরে আমাদের এই খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকা।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় গুলশানে এজ গ্যালারি বে’স এজওয়াটারে ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘থ্রু দ্য লেন্স অব হোপ: রোহিঙ্গা ক্রাইসিস আনফোল্ডেড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শরণার্থীদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও বিদেশি সাহায্য কমে আসার কারণে খরচের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর পাশাপাশি শরণার্থীদের আগমনের কারণে স্থানীয় চাকরির বাজারেও প্রভাব পড়েছে, শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শ্রমের মূল্য কমেছে। ফলে স্থানীয় শ্রমিকদের কাজের সুযোগ কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কোনো ধরনের সমাধানে না আসা পর্যন্ত এই সমস্যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে রেখেছে। শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবসনের সিদ্ধান্ত এখনও অনিশ্চিত থাকায় নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সীমান্ত অপরাধ যেমন মাদক ও মানব পাচার।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্ক করলেন দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, এই সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান হলো নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও স্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবসন নিশ্চিত করা। আইআরসির এমন একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা এক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করছি, যার মাধ্যমে জাতিসংঘের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থা, ইউএসএইড ও বিশ্বনেতারা সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট হতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি আয়োজিত এই প্রদর্শনীটি সব দাতা সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে, যা রোহিঙ্গা জাতি এবং এই সমস্যা দ্বারা প্রভাবিত স্থানীয় জনগণের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তে পরিণত