বৈদেশিক-সম্পর্ক
আলজেরিয়ার কাছ থেকে এলএনজি কিনতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আরও প্রচেষ্টায় নিয়োজিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে আলজেরিয়া।
বাংলাদেশও একটি নির্দিষ্ট সময় এবং লক্ষ্য-ভিত্তিক রোডম্যাপের মাধ্যমে নতুন এবং উদীয়মান ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। এছাড়া মুলতুবি থাকা চুক্তি, সমঝোতা স্মারক এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলোকে ত্বরান্বিত করার তাগিদ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলজেরিয়া যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই চুক্তিগুলো সম্পাদন করতে সম্মত হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী এবং ব্রিকস আউটরিচ ফোরামে আলজেরিয়ান প্রতিনিধি দলের প্রধান লাআজিজ ফাইদ বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,অর্থনীতির সম্প্রসারণের ফলে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের এই জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আলজেরিয়ার সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি আলজেরিয়া থেকে এলএনজি কেনার ব্যাপারে বাংলাদেশের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রী পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘ ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা জানান, যার প্রবর্তক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি বাংলাদেশ ও আলজেরিয়ার মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন, যা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি করবে বাংলাদেশ
মোমেন তাকে ব্রিকসে যোগদানের ব্যাপারে বাংলাদেশের আন্তরিক আগ্রহের কথা জানান।
আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রী ১৯৭৩ সালের ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের উল্লেখ করেন এবং ব্রিকসকে ন্যামের ফল হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন।
উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে যে চমৎকার সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও দেশগুলোর মধ্যে এখনও বিশাল অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনা রয়েছে।
ড. মোমেন আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রীকে ‘পারস্পরিক দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন ও বিনিয়োগের সুরক্ষা’ এবং ‘দ্বৈত কর এড়ানোর’ চুক্তি সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার অনুরোধ জানান।
তিনি আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রীকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সম্পর্কেও অবহিত করেন।
বাংলাদেশের ওষুধ ১০০টিরও বেশি দেশে রপ্তানির কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরামর্শ দেন যে আলজেরিয়া বাংলাদেশ থেকে কম দামে সেরা মানের ওষুধ আমদানি করতে পারে।
আরও পড়ুন: দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি পেতে ২ কোম্পানির সঙ্গে নতুন চুক্তি সই করবে সরকার
উভয় দেশ ফার্মাসিউটিক্যালস নিয়ে যৌথ উদ্যোগও শুরু করতে পারে।
তিনি আইটি ও আইসিটি খাত, প্রতিরক্ষা, নির্মাণ খাত, ভোজ্য তেল এবং কৃষিতে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।
উভয় দেশ আগামী বছরে উচ্চ পর্যায়ের সফরে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিষয়টি তুলে ধরবেন।
বৈঠকে আলজেরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতের মতো পরিপক্ক সরকার আঞ্চলিক স্বার্থে কিছু বলতেই পারে: মোমেন
জোহানেসবার্গে বৈঠক করলেন শেখ হাসিনা-শি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ আফ্রিকার আর্থিক জেলা স্যান্ডটনে অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।
বুধবার হিলটন হোটেলে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর (বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১০টা) এই বৈঠক শুরু হয়।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবরের পর থেকে দুই নেতা দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠক করলেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট শি তার বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।
আজকের বৈঠকে চীনের নেতার সঙ্গে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার গুরুত্ব, বর্ধিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং ঋণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ আলোচনা করতে চায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সামরিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতাই ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কের ভিত্তি: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, সামরিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতাই বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্কের ভিত্তি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যহারে অগ্রগতি অর্জন করেছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, আধিপত্য বিস্তার, সম্প্রসারণ বা প্রভাব বিস্তার করা চীনের নীতিতে নেই।
রাষ্ট্রদূত বক্তব্যে বলেন, ‘দুই দেশের নেতারা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, তা সক্রিয়ভাবে বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক চীন।’
বুধবার বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের আমন্ত্রণে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও
লেকচারে এনডিসির কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. আকবর হোসেনসহ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৭০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা এবং বিদেশি সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীন গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভকে অগ্রাধিকার দেয় এবং একটি নিরাপত্তা ধারণা প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন করে। যা একটি সাধারণ, ব্যাপক, সহযোগিতামূলক ও টেকসই পদ্ধতির উপর জোর দেয়।
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
সামরিক পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, চীন একটি জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি অনুসরণ করে যা প্রকৃতিগতভাবে প্রতিরক্ষামূলক।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন নিজের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করার সময় পারস্পরিক ভবিষ্যতের আলোকে একটি বৈশ্বিক সম্প্রদায় গড়ে তোলার লক্ষ্য রাখে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ দুই সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিভিন্ন স্তরে বিনিময় আরও জোরদার করতে ইচ্ছুক। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা শিল্প ও সহযোগিতা আরও গভীর করা, বাণিজ্য, প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি, নৌবাহিনীর জাহাজের পারস্পরিক পরিদর্শন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সহযোগিতা করতেও ইচ্ছুক চীন।
বক্তব্যের শেষে রাষ্ট্রদূত ইয়াও চীন-মার্কিন সম্পর্ক, চীন-ভারত সম্পর্ক, ‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল’, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের আওতায় চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার বিষয়ে খোলামেলা বন্ধুত্বপূর্ণ মতবিনিময় করেন। তাইওয়ান প্রশ্ন এবং দক্ষিণ চীন সাগর নিয়েও কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা-বেইজিংয়ের উচিত নতুন প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্র অন্বেষণে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করা: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশে আকাশ সীমা সুযোগ নিয়ে সৌদি মন্ত্রীর বক্তব্য
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক বিন ফাউজান আল-রাবিয়াহ বলেছেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরব সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে অনেক সুযোগ রয়েছে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি একথা বলেন।
সৌদির মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সৌদির সমর্থন থাকবে: সৌদি মন্ত্রী
সম্পর্কের ক্ষেত্রে তারা কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সৌদির মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন ‘আমরা অনেক সুযোগ দেখছি। আমরা আমাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে চাই। আকাশই সীমা এবং দুই দেশের বন্ধন ইতোমধ্যে খুব শক্তিশালী।
সৌদির মন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও দু'দেশের মধ্যে ভালো সহযোগিতা রয়েছে এবং সৌদি আরবের বিনিয়োগমন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ সফর করবেন।’
ড. তৌফিক বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখে তিনি গভীরভাবে অভিভূত এবং তার দেশ আরও উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাবে।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং তার দেশ বাংলাদেশের ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে জানে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যে উন্নতি করছে তাতে আমি সত্যিই মুগ্ধ।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আরও উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির জন্য সৌদি আরবের সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
সৌদির মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে আশ্রয় দেওয়া প্রবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি। তাদের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ।
তিনি বলেন, আমরা এখানে এসেছি বাংলাদেশিদের মক্কা ও মদিনায় আসার সুযোগ করে দিতে। আমরা অনেক পরিবর্তন এনেছি। বাংলাদেশিরা যাতে সৌদি আরবের যেকোনো শহরে যেতে পারেন, সেজন্য ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এমন উদ্যোগ রয়েছে যা বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি সাইট থেকে সবকিছু বুক করার অনুমতি দেবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, কৌশলগত ইস্যুতে বাংলাদেশ সবসময় সৌদি আরবের পাশে রয়েছে। আমরা অনেক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করছি।
তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় কিছু উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, যা প্রায় ঝামেলামুক্ত এবং প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশিকে স্বাগত জানানোর জন্য বাংলাদেশ সৌদি আরবের প্রতিও কৃতজ্ঞ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আশা করি, কঠোর পরিশ্রমী মানবসম্পদ পাঠানোর মাধ্যমে আমরা সৌদি আরবকে সহায়তা অব্যাহত রাখতে পারব।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, তারা ব্যবসায়িক সহযোগিতা এবং সৌদি আরবের কাছে বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে তুলে ধরার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসনে বাধা দেওয়া উচিত নয়: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসনে কারও বাধা সৃষ্টি করা উচিত নয়। এই ধরনের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন বড় আকারে প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো বুঝতে সহায়তা করবে।
বুধবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বড় ধরনের প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার জন্যই এই পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন। নিয়মিত প্রত্যাবাসনের আগে আরও ভালোভাবে পরিকল্পনার করার জন্য এবং সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে।এতে কারো বাধার সৃষ্টি করা উচিত হবে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বলেনি তারা ফিরতে চায় না; বরং যখনই কোনো বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি ক্যাম্পে তাদের সঙ্গে দেখা করতেন তারা সবসময়ই তাদের দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
তিনি অবশ্য বলেছেন, সরকার সর্বদা একটি ‘মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায়’ প্রত্যাবর্তনের জন্য তার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখবে যদিও এটি পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, অবশ্যই ঝুঁকি আছে এবং ক্যাম্পে বন্দুক হামলা ও মাদক পাচারের ঘটনা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিহত ও আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: মিয়ানমারকে চাপ দিতে জার্মানিকে আহ্বান
তিনি বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ণ না করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কীভাবে ভাসানচরে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য সেটিকে একটি ভাসমান দ্বীপ বলে বর্ণনা করেছিল তা উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। যতদিন তারা বাংলাদেশে থাকবে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী উত্তর রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিংসাত্মক অভিযান শুরু করে। যার ফলে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গুরুতর অপরাধ হয়। পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আগমনের ৬ বছর পর সরকার তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যদিও কিছু দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশে তাদের একীভূত হওয়ার করার জন্য জোর দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সাথে আলোচনায় চীনা প্রেসিডেন্ট
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ব্যাপক নৃশংস অভিযান শুরু করার ছয় বছর পর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম রয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের জেনারেলদের জবাবদিহি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের জন্য সমাধান খুঁজতে মানবিক সহায়তা ও রাজনৈতিক সমর্থন বজায় রাখতে আর্থিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে নতুন করে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, মিয়ানমারে একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তন এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান হিসেবে রয়ে গেছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়, যদি সেটি তাদের জন্য নিরাপদ হয়।’
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সৌদির সমর্থন থাকবে: সৌদি মন্ত্রী
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক বিন ফাওজান আল-রাবিয়াহ বুধবার বলেছেন, তার দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী।
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে সৌদির মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন চমৎকার।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সৌদি আরব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম গন্তব্য। সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি দক্ষ ও অদক্ষ জনশক্তি দুই দেশের অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখছে।
সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কল্যাণে সৌদি সরকার আরও কার্যকর উদ্যোগ নেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: হজ পালন শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
পবিত্র হজ পালনের জন্য বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ঢাকায় অভিবাসন শেষ হওয়ার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এ উদ্যোগের জন্য হজযাত্রীদের জন্য হজযাত্রা ও সম্পাদন সহজ ও আরামদায়ক হয়েছে।
আগামীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব হজযাত্রী আরও সহজে ও নির্বিঘ্নে হজ পালন করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বছর রাজকীয় অতিথি হিসেবে হজের সময় সৌদি সরকারের উষ্ণ আতিথেয়তার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, পবিত্র হারাম শরিফ ও মসজিদে নববীসহ বিভিন্ন ইসলামি ঐতিহ্য বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ।
বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য সৌদি সরকারের মানবিক সহায়তার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে সৌদি আরব বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
হজের সময় সৌদি প্রধানমন্ত্রী ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, তিনি শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন।
সৌদির মন্ত্রী বলেন, দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ভালো।
সৌদি মন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির প্রশংসা করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সৌদি সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশি হজযাত্রীরা যাতে আরও সহজে ও নির্বিঘ্নে হজ পালন করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ট্রানজিট নিয়ে ওমরাহ করতে পারবেন বাংলাদেশিরা
বৈঠকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, রাষ্ট্রপতির সচিব ও বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত এসা ইউসেফ এসা আল দুহাইলান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপ আগামী মাসে
সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে পরবর্তী দফায় কৌশলগত সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা এখন সংলাপের এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছেন এবং ২৭ আগস্ট একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, কৌশলগত সংলাপটি ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে পারে।
সংলাপে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ইস্যু, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাসহ সমগ্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২১ সালে লন্ডনে চতুর্থ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ পলকের
সর্বশেষ কৌশলগত সংলাপে যুক্তরাজ্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত দেশটির বাজারে শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি মসৃণ ও সফল উত্তরণ অর্জনে সহায়তা এবং রপ্তানিমুখী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
যুক্তরাজ্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কার্যকারিতা উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য বিধিমালার আধুনিকায়নের মাধ্যমে অবাধ ও ন্যায্য বাণিজ্য প্রদানে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে।
যুক্তরাজ্যের ল্যান্ডমার্ক ডেভেলপিং কান্ট্রিস ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) চলতি বছরের জুন থেকে কার্যকর হয়েছে, যা বাংলাদেশসহ ৬৫টি উন্নয়নশীল দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাস করে এবং লেনদেনের নিয়ম সহজ করে।
ডিসিটিএস বাণিজ্য বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, এই নতুন প্রকল্পটি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি আধুনিক ও পারস্পরিক লাভজনক অংশীদারিত্বের প্রতি যুক্তরাজ্যের অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য: প্রধানমন্ত্রীকে সারাহ কুক
সংসদ সদস্যদের গোলটেবিল বৈঠক: কপ-২৮ এর আগে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ককাস গঠনের প্রস্তাব
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে জাপানকে বিনিয়োগের আহ্বান পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে জাপানকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: 'হাওর ভিত্তিক পর্যটন' উন্নয়নে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পর্যটনের অপার সম্ভাবনার দেশ। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে কাঙ্ক্ষিত মানে বিকশিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প নতুন যুগে প্রবেশ করবে। বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী জাপান বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের মাধ্যমে এ শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রতিমন্ত্রীর কথার জবাবে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, আগামী অক্টোবরে জাইকার অর্থায়নে নির্মিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে জেনে জাপান আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে চালু হতে যাওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে।
এছাড়াও, সাক্ষাৎকালে জাপানের রাস্ট্রদূত বাংলাদেশের পর্যটন মহাপরিকল্পনা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এভিয়েশন সেক্টরে চলমান উন্নয়ন সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নেও জাপান সহযোগিতা করবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারকে আকাশপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
১৫ বছরে এভিয়েশন খাতে প্রবৃদ্ধি হবে তিনগুণ: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে সুরক্ষিত করতে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সংলাপ
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ২৩-২৪ আগস্ট ঢাকায় ১০ম দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপ করবে, যেখানে প্রতিরক্ষা বিষয়ে সহযোগিতা ও ২ দেশের অভিন্ন ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার ইউএনবিকে বলেন, ‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এই পারস্পরিক লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড ঢাকায় দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপ পরিচালনার জন্য ২৩ ও ২৪ আগস্ট বৈঠকে বসবে।’
তিনি বলেন, এই সংলাপে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বেসামরিক নাগরিকরা অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অগ্রগতির প্রশংসায় মার্কিন কংগ্রেসম্যান অ্যান্ড্রু
দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, ‘তারা সামরিক শিক্ষা, প্রতিরক্ষা নিবন্ধ এবং আগামী বছরের দুর্যোগ মোকাবিলা অনুশীলন এবং বিনিময়সহ আসন্ন সামরিক মহড়া নিয়ে আলোচনা করবেন।’
তিনি বলেন, এই সংলাপ ২ দেশের প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠায় একটি বিস্তৃত সম্পর্কের অংশ, যার মধ্যে রয়েছে অসংখ্য প্রতিরক্ষা বিষয়ে সহযোগিতা।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক সবার অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য একটি অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, সুরক্ষিত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি ঘোষণা করায় তারা উৎসাহিত।
বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সম্প্রতি বলেছেন, উপযুক্ত সময় হলে বৈদেশিক সামরিক বিক্রয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও উন্নত সক্ষমতা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে’ মার্কিন পদক্ষেপ দ. এশিয়ার জন্য ইতিবাচক নয়: ওয়াশিংটনকে দিল্লি
তিনি বলেন, ‘পারস্পরিকভাবে সমাপ্ত সামরিক তথ্য চুক্তির একটি সাধারণ নিরাপত্তা, যা জিএসওএমআইএ নামে পরিচিত, এটি ঘটানোর জন্য মৌলিক।’
২০১২ সালে যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপ শুরু হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে পর্যায়ক্রমে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০২২ সালের ১৭-১৮ মে হাওয়াইয়ের হোনোলুলুতে ৯ম প্রতিরক্ষা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এই সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল কৌশলগত সংলাপের পরিপূরক হিসেবে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনার সুবিধা দেওয়া।
আরও পড়ুন: মাউই দাবানলে প্রাণহানিতে দুঃখ প্রকাশ করে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে হাসিনা-মোদির সৌজন্য সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মাসে নয়াদিল্লিতে একটি বিস্তৃত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। যদিও এই সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তাদের একটি সৌজন্য বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতের সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘..যদি বৈঠকটি হয় তবে এটি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার স্থান নয়।’
জোহানেসবার্গে মোদি ও হাসিনার মধ্যে কোনো বৈঠক হবে কি না জানতে চাইলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
একই ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেন, সেখানে বিপুল সংখ্যক নেতা উপস্থিত থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটাও বুঝি যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও থাকতে পারেন। আয়োজক দেশ থেকে আমাদের এমনটাই জানানো হয়েছে। কিন্তু ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর (মোদি) দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময়সূচি নিয়ে এখনও কাজ চলছে।’
আরও পড়ুন: হাসিনা-শি বৈঠক: বেইজিংয়ের সঙ্গে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ বিষয়ে আলোচনা করতে চায় ঢাকা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ জোহানেসবার্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ চেয়েছে, কারণ দিল্লিতে দুই প্রধানমন্ত্রীরই সেপ্টেম্বরে জি-২০-এর ফাঁকে বিস্তৃত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জোহানেসবার্গে সময় খুবই সীমিত। এবং সরকারগুলো শেষ মুহূর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করে।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
আগামী ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে ১৮তম জি-২০ ভুক্ত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্য দিয়ে মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের মধ্যে চলতি বছরের জি-২০’র সব কার্যক্রম ও বৈঠকের সমাপ্তি হবে।
নয়াদিল্লি শীর্ষ সম্মেলনের সমাপ্তিতে জি-২০ নেতরা একটি ঘোষণা দেবেন। এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পর্যায়ের এবং ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের প্রধান আলোচিত বিষয় এবং সেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর পর নেতাদের প্রতিশ্রুতিগুলো উল্লেখ করা হবে।
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি