কৃষি
চলতি বছর ২৭০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে: কৃষি মন্ত্রণালয়
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার টন বেশি।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) কৃষি মন্ত্রণালয়ের পিআরও কামরুল ইসলাম ভূইয়ার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত বছর মোট ১ হাজার ৭৫৭ টন আম রপ্তানি হয়েছিল।গতবছর ২৮টি দেশে আম রপ্তানি হয়েছিল, এবছর ৩৪টি দেশে আম রপ্তানি হয়েছে।
এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ১২৫৬ টন, ইতালিতে ২৯৬ টন, সৌদি আরবে ২৬০ টন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৩৭ টন, কাতারে ১১১ টন, সিঙ্গাপুরে ৫৫ টন, সুইজারল্যান্ডে ১৪ টন, জার্মানিতে ৭০ টন, ফ্রান্সে ৮৫ টন, সুইডেনে ৬৫ টন, কুয়েতে ২১৮ টন, কানাডায় ৪০ টন উল্লেখযোগ্য।
এতে আরও বলা হয়, দেশে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন আম উৎপাদন হয়। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ অনেক কম।
আরও পড়ুন: ইউরোপের ৪ দেশে পাঠানোর মাধ্যমে আম রপ্তানি শুরু
২০১৭-১৮ সালে মাত্র ২৩২ টন, ২০১৮-১৯ সালে ৩১০ টন, ২০১৯-২০ সালে ২৮৩ টন, ২০২০-২১ সালে ১৬৩২ টন, ২০২১-২২ সালে ১৭৫৭ টন আম রপ্তানি হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববাজারে দেশের আমের বিপুল চাহিদা থাকলেও উত্তম কৃষি চর্চাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে আম উৎপাদন ও প্যাকেজিং না হওয়ায় রপ্তানি কম হচ্ছে। তাই রপ্তানি বাড়াতে কৃষি মন্ত্রণালয় রপ্তানিযোগ্য আমের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের উত্তম কৃষি চর্চা মেনে আম উৎপাদনসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের প্রথম বছরেই গত বছরের তুলনায় ১ হাজার টন আম বেশি রপ্তানি হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুর রহমান জানান, চলতি বছর আরও ১৫-২০ দিন আম রপ্তানি হবে।
আরও পড়ুন: জাপানে আম রপ্তানি শুরু হবে শিগগিরই: কৃষিমন্ত্রী
কুড়িগ্রামে অনাবৃষ্টি ও ব্যাপক লোডশেডিংয়ে আমনের খেত ফেটে চৌচির
কুড়িগ্রামে অনাবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে জমিতে সেচ দিতে না পারায় আমন আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকেরা।
মৌসুমের শুরুতেই খরায় আমনের অনেক বীজতলা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। এতে আমন চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার প্রান্তিক চাষিরা।
বৃষ্টি না হলে আমন ফসলের আশানুরুপ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকেরা।
আমন আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত ও জমিতে লাগানো চারা বাঁচাতে এখন কৃষকদের ভরসা ভূগর্ভস্থ পানি। বর্ষানির্ভর আমন চাষে এখন অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিতে খরচ বাড়ছে কৃষকের।
জেলার কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলায় কমবেশি সব এলাকাতেই এবার খরার কবলে পড়েছে আমন। এর মধ্যে সদরের হলোখানা, ভোগডাঙ্গা, পাঁচগাছী, উলিপুর উপজেলার থেতরাই, বজরা, ধামশ্রেণী ও রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা, বিদ্যানন্দ, নাজিমখা ও ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ও নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের অবস্থা বেশি খারাপ।
বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকেরা গভীর-অগভীর সেচযন্ত্র চালু করে আমনের চারা লাগাচ্ছেন।
এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে সেচ কাজও ব্যাহত হচ্ছে। সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে না পারায় আমনের খেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে চারা লাগানো হয়েছে। সেচের জন্য মাঠে রয়েছে ৩০ হাজার সেচযন্ত্র। খরা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রের প্রায় সবগুলোই চালু রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রস্তুত রয়েছে ৭ হাজার হেক্টর আমন বীজতলা।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন এক বিঘা জমিতে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ দিতে বর্তমানে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ছে। আমনের চারা লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত ও খরার কবলে পড়া আমনের চারা বাঁচাতে ইতোমধ্যে কমপক্ষে দুইবার সেচ দিতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাণীশংকৈল মিষ্টি আলু চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন
এই মৌসুমে এভাবে অনাবৃষ্টি থাকলে কমপক্ষে আরও ছয়বার সেচ দিতে হবে। সেই হিসাবে জেলার ১ লাখ ২৮ হাজার হেক্টর আমনের ফসল রক্ষায় এবার সেচের খরচ বাবদ ব্যয় হবে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।
কৃষকরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহ ও জুলাইয়ের প্রথম চার-পাঁচ দিন প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছিল। মাঠের অনেক জমিতে পানিও জমে গিয়েছিল। কিন্তু তখন জমি প্রস্তুত না হওয়ায় ও বীজতলার চারার বয়স কম থাকায় কৃষকেরা ধানের চারা লাগাতে পারেনি।
সাধারণত জুলাইয়ের এক-দুই সপ্তাহ পর থেকে আগস্টের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমনের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। এখন বৃষ্টির দরকার, কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। গত ১৫-২০ দিন ধরে কুড়িগ্রামে ভারি বৃষ্টি হয়নি। এই সময়ে কখনো টিপটিপ, কখনো একপশলা বৃষ্টি হলেও বর্ষানির্ভর আমন চাষের জন্য তা নগন্য।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঘনশ্যামপুর গ্রামের কৃষক রহিম উদ্দিন হায়দার বলেন, গত ১৫ দিন ধরে আমাদের এলাকায় ভারি বৃষ্টি হয়নি। খরার কারণে চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা জমির মাটি ফেঁটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।যেসব জমিতে চারা লাগানো হয়েছে পানির অভাবে ওই সব চারা মরে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে।
একদিকে খরা আরেক দিকে চলছে লোডশেডিং। এতে প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ বেড়ে যাচ্ছে। আবাদ করার চেয়ে না করাই ভালো মনে হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদরের ঘোগাদহ ইউনিয়নের চৈতার খামার গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বৃষ্টি তো নাই, তার উপর ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং। এভাবে চলতে থাকলে এবার আবাদ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিলে প্রচুর খরচ। আর বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আমনের সময় পার হলে ফলন ভালো হয় না।’
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের কৃষক চাঁদ মিয়া বলেন, ‘গত বছরও আষাঢ়-শ্রাবণ মাস ঠিকমতো বৃষ্টি ছিল না। এবারো একই অবস্থা। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে এর খরচও বেড়েছে।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে এখনই চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। আমনের মৌসুম কেবলই শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, পুরো আগস্ট মাসজুড়েই আমনের চারা লাগানো যাবে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকবে এবং আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করব।
আরও পড়ুন: ‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল
কালবৈশাখীর কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে শার্শার আম চাষীরা
যশোরে এক আমের ওজনই ৫ কেজি!
বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের বিদেশি ফল চাষ করে অনেকে সফলতা পাচ্ছেন। কেউবা শখ করে বিদেশি ফলমূল দেশে এনে চাষ শুরু করেছেন। তবে আম দেশিয় ফল হলেও উন্নত জাতের আমের পরীক্ষামূলক চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছে যশোরের একটি হর্টিকালচার সেন্টার। গাছে ধরেছে তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজনের আম! বাংলাদেশে এটি শুনতে বিস্ময়কর হলেও যশোরের নতুন খয়েরতলা হর্টিকালচার সেন্টারে এমন আমের ফলন হয়েছে। গাছে ঝুলছে তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজনের আম। সাধারণ আমের সঙ্গে এর আকৃতির ভিন্নতাও আছে। দেখতে অনেকটা বালিশের মতো।
আমটির বিশেষ গড়নের কারণে স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছে বালিশ আম। আকার- আকৃতিতে যেমন বড় তেমনি খেতেও সুস্বাদু। দেশের সবচেয়ে বড় এ আমের জাতের নাম ব্রুনাই কিং।
হর্টিকালচার সেন্টারটিতে চার বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে এ জাতের একটি আম গাছ রোপণ করা হয়েছিল। যা এখন সবুজ পাতার সঙ্গে শোভা পাচ্ছে এই ব্রুনাই কিং জাতীয় আম।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী গ্রামের নার্সারি মালিক আতিয়ার রহমানের ভাগ্নের হাত ধরে ব্রুনাইয়ের রাজকীয় বাগানের এ আমটি বাংলাদেশে এসেছে।
আরও পড়ুন: ‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল
এরপর আতিয়ার রহমানের নিজ নার্সারিতে এ আমের চারা তৈরি করেন। চার বছর আগে আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে যশোর হর্টিকারচার সেন্টারে একটি মাতৃ গাছ তৈরি করা হয়েছে। প্রথম দিকে পরিচর্যাগত কারণে ফল না আসলেও এ বছর গাছটিতে প্রায় ৩৫ টি আম ধরেছে।
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক দীপঙ্কর দাস জানান চার বছর আগে এই ব্রুনাই কিং জাতের আম গাছের চারাটি রোপন করা হয়। প্রথম দিকে পরিচর্যাগত সমস্যার কারণে ফল পাওয়া যায়নি। তবে এ বছর গাছটিতে ৩৫টি আম ধরেছে। গাছটির সবথেকে বড় আমটির ওজন প্রায় ৫ কেজি। যেটি দেশের সব থেকে বড় আম। অন্য আমের মতো একই সময়ে এ আমেরও মুকুল আসে। তবে পাকতে দেখা যায় দেরিতে এবং স্বাদে ফজলি আমের মতো।
চাষি পর্যায়ে এ আম প্রসারে কলম তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মচারী মোহাম্মদ ওলিয়র রহমান জানান , আম গাছটি রোপনের পর থেকে আমরা কৃষিবিদদের পরামর্শ মতো পরিচর্যা করে এসেছি। এ বছর ফল ধরেছে।
আরও পড়ুন: রাণীশংকৈল মিষ্টি আলু চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন
আমটি দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে দেখতে আসছেন। বালিশরে মতো হওয়ায় দর্শনার্থীরা সহ স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন বালিশ আম। অনেকে আবার দেখতে এসে গাছের কলম নিয়ে বাড়ির জমিতে রোপন করছেন।
খুলনা থেকে আগত জুয়েল হোসেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন আমি সরকারি চাকরি করতাম। অবসরের পর থেকে বাড়িতে নানা ফলের চারা রোপন করছি। এখানে কিছু ফল গাছের চারা নিতে এসেছি, এসে এই জাতের আম গাছটি দেখতে পেলাম। এই আম দেখে অবাক হয়েছি। নিজে এর কলম নিয়ে বাড়িতে রোপন করব।
চাষি পর্যায়ে এই ব্রুনাই কিং জাতের আম প্রসারে কলম তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে সৌখিন আম চাষিরা এ গাছ লাগাতে পারবে, তবে বাণিজ্যিকভাবে রোপণের আগে পরীক্ষামূলক রোপণের পরামর্শ কৃষিবিদদের।
আরও পড়ুন: ইউরোপের ৪ দেশে পাঠানোর মাধ্যমে আম রপ্তানি শুরু
সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেবে সরকার: কৃষি মন্ত্রণালয়
পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রবিবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সীমিত আয়ের মানুষ ও শ্রমিকদের দুর্ভোগ লাঘব করতে রোববার কৃষি মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের সংকট দূর হবে, পেঁয়াজ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হবে: কৃষিমন্ত্রী
শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষি সচিব
হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
সরকার কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে চায়: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার কৃষকদের দেশের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোই সরকারের লক্ষ্য।
মঙ্গলবার সাপাহারের গোডাউন পাড়া এলাকায় ২০২৩ মৌসুমে আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, তারা আম বা ধান চাষ করুক না কেন, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুন: বোরো মৌসুমে সংগ্রহ করা চালের মান নিয়ে কোনো আপস হবে না: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বোরো,আমন ধান ও আমের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আশা করি তারা আমেরও ন্যায্যমূল্য পাবেন।
সাধন চন্দ্র বলেন, এখন দেশি ফলের সরবরাহ বেশ ভালো। বিদেশ থেকে ফল আমদানি না করলে ডলার সাশ্রয় হবে এবং দেশি ফলের পুষ্টিগুণও বেশি হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ফল রপ্তানির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা আম রপ্তানি করছি। ফলে আম চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হলো, বিদেশিরা জানতে চান আম নিরাপদ কি না। আমরা তাদের সার্টিফিকেট দেখাতে পারব না।
ভবিষ্যতে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে আরও আম রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সাপাহার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামসুল আলম শাহ চৌধুরী, কৃষি শ্রমিক শাপলা খাতুন প্রমুখ।
পরে মন্ত্রী জাবাই বিলে মৎস্য চত্বর এবং উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে জয় বাংলা চত্বর উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন: খাদ্যমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য লজ্জার: খাদ্যমন্ত্রী
ইউরোপের ৪ দেশে পাঠানোর মাধ্যমে আম রপ্তানি শুরু
চলতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে আম রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা চার হাজার টন, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার শ্যামপুরে কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে আম রপ্তানির উদ্বোধন করেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, আম রপ্তানি প্রকল্পের পরিচালক আরিফুর রহমান, বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস এন্ড এলাইড প্রোডাক্ট এক্সপোটার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প এবং বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস এন্ড এলাইড প্রোডাক্ট এক্সপোটার্স এসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।আজ ৪টি দেশে প্রায় ১০ টন আম রপ্তানি হচ্ছে।
২০১১-১২ অর্থবছরে ২ লাখ হেক্টর জমিতে ২৩ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিকটন আম উৎপাদিত হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ২৮টি দেশে ১ হাজার ৭৫৭ মেট্রিকটন আম রপ্তানি করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কৃষিসচিব বলেন, সারাবিশ্বেই বাংলাদেশের আমের সুনাম রয়েছে। দেশে ২৪ লাখ টনের ওপরে আম উৎপাদন হয়। গত বছর মাত্র ১ হাজার ৭৫৭ টন রপ্তানি করা হয়েছে। বিশ্বে আম উৎপাদনে আমরা সপ্তম স্থানে থাকলেও রপ্তানি খুবই কম। রপ্তানি আরও বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য যত ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে তা দূর করা হবে। প্রয়োজনে উৎপাদন স্থানের কাছাকাছি প্যাকিং হাউজ করা হবে।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
আরও পড়ুন: রাণীশংকৈল মিষ্টি আলু চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) ২০২২ হতে ২০২৭ খ্রি. মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা। রপ্তানিযোগ্য মানসম্মত আম উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশের ১৫ টি জেলার ৪৬ টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রকল্প সহায়তায় উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদন প্রদর্শনী- ৩৫০ টি, রপ্তানিযোগ্য জাতের আম বাগান সৃজন-৬০৪টি, বিদ্যমান আম বাগানে সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা-২৪০ টি এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার (প্রুনিং ব্যাগিং ও বালাই ব্যবস্থাপনা) মানসম্মত আম উৎপাদন প্রদর্শনী ২০০ টি স্থাপন করা হয়েছে।
মানসম্মত আম উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রদর্শনীসমূহ ক্লাস্টার আকারে স্থাপিত করা হচ্ছে; ইতোমধ্যে ৯ টি উপজেলাতে ৩৭১ জন আম চাষীকে ক্লাস্টার প্রদর্শনীর আওতায় আনা হয়েছে।
মানসম্মত আম উৎপাদন ও পোস্ট-হার্ভেন্ট ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে কৃষক গ্রুপে ম্যাংগো প্লাকার, হাইড্রোলিক ম্যাংগো হারভেস্টার, গার্ডেন টিলার, ফুট পাম্প, এলএলপি ও ফিতাপাইপ সেট সরবরাহ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) সনদ প্রদানে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা বিদ্যমান না থাকায় ইউরোপ ও আমেরিকার মূলধারার সুপারমার্কেটসমূহে আম রপ্তানি করা সম্ভব হয় না।
আমের গ্যাপ সার্টিফিকেট প্রদানের প্রয়োজনীয় জনবল ও সক্ষমতা অর্জন করা গেলে বাংলাদেশ থেকে উন্নত দেশসমূহে আম রপ্তানির পরিমাণ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানি তরান্বিত করার লক্ষ্যে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের মাধ্যমে আমের পেস্টরিস্ক এ্যানালাইসিস (পিআরএ) ও উত্তম কৃষি চর্চা তৈরি এবং জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রদর্শনী এবং কৃষি প্রযুক্তির তথ্য আদান-প্রদান ও সংরক্ষণের কার্যক্রম চলমান আছে।
এছাড়া রপ্তানিযোগ্য ৫টি আমের জাতের প্রোডাক্ট প্রোফাইল তৈরি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষি সচিব
‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল
রাণীশংকৈল মিষ্টি আলু চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল মুড়াসাকি ও ওকিনামা জাতের মিষ্টি আলু চাষ করছেন কৃষকেরা। বিশেষ করে নদীর তীরে চরাঞ্চলের কৃষক মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকেছেন। অল্প খরচে ও কম পরিচর্যায় বেশি ফলন এবং অধিক লাভ হওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহী বেশি এ অঞ্চলের কৃষকদের। ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা জগদল নাগর নদীর পতিত বালুর চরে মিষ্টি আলু চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কৃষক হাসান আলী।
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহায়তায় কৃষকরা জমিতে মুড়াসাকি ও ওকিনামা জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেন। কৃষক হাসান আলীর জমিতে যে আলু হয়েছে তার মধ্যে কোনো কোনো আলুর ওজন তিন থেকে চার কেজি। উৎপাদিত এতো বড় আকারের মিষ্টি আলু দেখতে গ্রামের মানুষ ভিড় করছেন। দূর দূরান্ত থেকেও আসছেন অনেকে। তারা আলু দেখছেন ও পরামর্শ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: আলু চাষের কথা বলে নিষিদ্ধ মাদক পপি চাষ!
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মিষ্টি আলু চাষের ভালো ফলনের চিত্র দেখা যায়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাণীশংকৈল উপজেলায় মোট পাঁচ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
ধর্মগড় এলাকার কৃষক জমির উদ্দীন জানান, চরের বালু মাটিতে এত সুন্দর ফসল হবে ভাবতেও পারিনি। এতো বড় মিষ্টি আলু জীবনেও দেখিনি। দেখে খুব ভালো লাগছে। যত্ন করলে যে রত্ন পাওয়া যায় হাসান আলী তার উদাহরণ।
কৃষক হাসান আলী জানান, প্রথমে যখন শুরু করি হতাশা কাজ করছিল। এমন ফলনে আমি সত্যিই আনন্দিত। প্রথম বারেই এতো সাফল্য পাব ভাবতে পারিনি। এ যাবত ৫০ হাজার টাকার মিষ্টি আলু বিক্রি করেছি। জমিতে আরও তিনশ’ মনের বেশি আলু রয়েছে, যার বাজার দর তিন লাখ টাকার বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। তবে পানির সেচ বেশি দিতে হয়েছে কারণ চরের জমি মানেই বালু। আশা রাখি এবারও মিষ্টি আলু চাষে লাভবান হয়ে লাভের টাকায় কিছু একটা করবো।’
একই এলাকার দেলদার হোসেন বলেন,আমাদের এলাকা চরাঞ্চল হওয়ায় এখানে অনান্য ফসলের চেয়ে মিষ্টি আলু চাষ করলে ফলন বেশি হয়। মিষ্টি আলু চাষে পরিশ্রম কম ও লাভ বেশি। ফলন ভালো হওয়ায় আশা রাখি এবারও লাভবান হবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, মিষ্টি আলু চাষে তেমন রোগবালাই নেই। এতে লেদা পোকা নামের এক ধরনের পোকার আক্রমণ হয়, যা থেকে পরিত্রাণের জন্য অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
তিনি বলেন, কৃষক হাসান আলী তিন থেকে চার কেজি ওজনের মিষ্টি আলু উৎপাদন করে উপজেলায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বাজারে এ বিশেষ পুষ্টি গুণ সম্পন্ন মিষ্টি আলুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আশা করছি অন্য কৃষকেরা উদ্বুদ্ধ হবেন।
তিনি আরও বলেন, ভালো ফলন পেতে হলে আগাছা পরিষ্কার, সুষম সারের ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় সেচ দিতে হয়। সাধারণত বেলে-দোঁ-আশ মাটিতে মিষ্টি আলুর চাষ ভালো হয়। বীজ রোপণের ১৫০ থেকে ১৬০ দিন পর মিষ্টি আলুর ফলন ঘরে তোলার উপযোগী হয়। প্রতি শতকে ৬০০ থেকে ৬৫০ আলুর কাটিং ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। এবার জেলায় মিষ্টি আলুর ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হবেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: যশোরে বিপাকে আলু চাষিরা
শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষি সচিব
কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার জানিয়েছেন, শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় সাময়িকভাবে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় দেশের অভ্যন্তরে পেঁয়াজের বাজার সবসময় মনিটর করছে। দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকলে শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
রবিবার (১৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত সভায় কৃষিসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। আর বর্তমানে মজুদ আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন।
কৃষি সচিব বলেন, উৎপাদন ও মজুদ বিবেচনায় দেশে এই মুহূর্তে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। অথচ বাজারে দাম কিছুটা বেশি।
আরও পড়ুন: হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
জানান হয়, গত দুই বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টনেরও বেশি। এবছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। আর বর্তমানে মজুদ আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে বা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ৩০-৩৫% পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬- থেকে ২৮ লাখ টন।
সভায় আরও জানান হয়, বর্তমানে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ ২৮-৩০ টাকা। গতবছর ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি উন্মুক্ত থাকার কারণে আমদানি বেশি হয়েছিল।
দেশি পেঁয়াজের বাজারদর কম ছিল, ৩০-৩৫ টাকা ছিল। কৃষকেরা কম দাম পেয়েছিল।
সেজন্য, পেঁয়াজ চাষে কৃষকের আগ্রহ ধরে রাখতে এবছর পেঁয়াজ আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
সভায় পেঁয়াজের উৎপাদন, চাহিদা ও আমদানির তথ্য তুলে ধরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের আগাম ধান ও অন্যান্য ফসল কাটার নির্দেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের
ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' এর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের ৮০ শতাংশ পাকা ধান, আম ও অন্যান্য ফসল কাটার নির্দেশ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
মঙ্গলবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষকরা যাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন সেজন্য গণপ্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি কর্মকর্তাদের তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান এবং বাংলাদেশ কৃষি আবহাওয়া তথ্য সেবা (বামিস) পোর্টাল অনুসরণ করে আবহাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট নিতে বলেছে।
এতে আরও বলা হয়, আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ১২ বা ১৩ মে'র মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশিকা
‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল
দেশের উত্তরের কৃষিতে স্বনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার আবহাওয়া অন্য জেলার তুলনায় আলাদা বলে প্রায় সব ধরনের শস্য, সবজি ও ফলের আবাদ হয় এখানে।
এছাড়া এখানকার উৎপাদিত খাদ্য শস্য ও সবজিসহ নানা রকম ফলের গুণগত মানও যথেষ্ট ভালো।
এবার মধ্যপ্রাচ্যের ফল শাম্মাম চাষে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল ইসলাম।
কৃষক মণ্ডল ইসলাম জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে শাম্মাম চাষ শুরু করেন তিনি। এটির চাহিদা ও বাজার মূল্য ভালো। মূলত লাভের আশায় তিনি এই ফলটি চাষ শুরু করেন। তিন বিঘা জমিতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে পাঁচ লাখ টাকা আয়ের আশা করেছেন।
তিনি আরও জানান, আগে ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে ‘শাম্মাম’ বিক্রি করতেন, এখন খেত থেকেই পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মণ্ডল ইসলামের খেত থেকে ‘শাম্মাম’ কিনতে আসা পাইকার মইদুল বলেন, এ বছর প্রথমবার আমি শাম্মাম ফলের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছি। এখনও স্থানীয়ভাবে এই ফলের বাজার তৈরি হয়নি। তবে নতুন এই ফলটি ঢাকার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শাম্মাম বা রকমেলন ফলটি সর্বনিম্ন ৫০০ গ্রাম থেকে চার কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। ফলটি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় বাজারে। আমি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে খেত থেকে এই ফলটি কিনেছি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষকরা এই ফলটির চাষ সম্প্রসারণ করলে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন, অন্যদিকে পুষ্টির চাহিদাও পুরণ হবে। বাজারেও যুক্ত হবে এই নতুন ফলটির। আমাদের দেশে এটি নতুন হলেও সুপারশপ গুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সদর উপজেলার এক কৃষক এর আগেও ‘শাম্মাম’ চাষ করে ভালো মূল্য ও সাড়া পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া ‘শাম্মাম’ চাষে উপযোগী।
এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এই বিষয়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান এই কৃষিবিদ।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে চিয়া সিড
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনপ্রিয় একটি ফলের নাম ‘শাম্মাম।’ অনেকেই এই ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন।
ইউটিউবে দেখে এই শাম্মাম ফলটি বাংলাদেশের মাটিতে চাষ করে সফল হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মণ্ডল ইসলাম।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই মণ্ডল ইসলাম।
পীরগঞ্জের তেঁতুলতলা এলাকায় ভাতারমারি ফার্মের পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলটির চাষ শুরু করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার দ্বিতীয় বারের মতো ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে। এর আগে গতবছর সদর উপজেলার রাহুল রায় নামে এক কৃষক প্রথম শাম্মাম চাষ শুরু করেন।
এছাড়া এবার জেলায় মোট দুই একর জমিতে ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে।
‘শাম্মাম’ নামের এই ফলটির চাষ সচরাচর ঠাকুরগাঁও জেলায় করতে দেখা যায় না। এই ফলটি চাষ করতে খরচ একটু বেশি হয়। মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলের চারা রোপণ করা হয়।
আর ছিদ্রকরা মালচিং এর ফাঁকা দিয়ে গজিয়ে উঠে ‘শাম্মাম’ ফলের গাছ। চারা রোপণের মাত্র ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ‘রকমেলন বা শাম্মাম’ ফল কর্তন (হারভেস্ট) করে বাজারে নেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: প্রথমবার বোরো চাষের আওতায় ২০০ বিঘা জমি