কৃষি
নওগাঁয় জিরা চাষে সফলতা, জহুরুল ইসলামের দৃষ্টান্ত
জিরা দামি মসলাজাতীয় অর্থকরী ফসলগুলোর একটি। যদিও আমাদের দেশে জিরার চাহিদা মেটাতে নির্ভর করতে হয় আমদানিতে। তবে, এবার পরীক্ষামূলক চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিয়ালা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল।
বাম্পার ফলন পেয়ে তিনি বেশ খুশি। তাকে দেখে অন্যান্য কৃষকদের মাঝে বাড়ছে আগ্রহ। তার চাষ করা জিরা দেখতে ভিড় করছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত দর্শনার্থীরা।
কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন দামি উচ্চ ফলনশীল সবজি চাষ করে আসছেন তিনি। বাজারে দাম বেশি হওয়ায় জিরা চাষে উদ্বুদ্ধ হন। এরপর অনলাইনে এর চাষাবাদ পদ্ধতি দেখে ভারত থেকে প্রায় ১ হাজার টাকা খরচ করে বেগুনি ফুলের জাতের ৫০০ গ্রাম জিরার বীজ সংগ্রহ করেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে সরিষা যেমনভাবে চাষ করা হয় একই উপায়ে ৫ শতক জমিতে এই জিরার বীজ বোপণ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, গাছে যতগুলো ফুল ছিল ততগুলোই জিরা ধরেছে। বর্তমানে জিরা পরিপক্ক হয়েছে। ৫ শতক জমি থেকে ১০ থেকে ১২ কেজি জিরা পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কেঁচো সারে ভাগ্য বদল, লাইসেন্স না পাওয়ায় হুমকি দেখছেন চুয়াডাঙ্গার আসাবুল হক
কেঁচো সারে ভাগ্য বদল, লাইসেন্স না পাওয়ায় হুমকি দেখছেন চুয়াডাঙ্গার আসাবুল হক
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের পীতম্বরপুর গ্রামের আসাবুল হকের ভাগ্যের বদল হয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার তৈরির প্রকল্পে। তবে জৈব সারের মান ভালো ও চাহিদা থাকলেও যোগ্য মূল্য না পাওয়ায় হুমকির মুখে তার এই প্রচেষ্টা।
আসাবুলের প্রতিষ্ঠানের (কৃষি খামার) লাইসেন্স না থাকায় প্যাকেট করে বাজারজাত করতে পারছেন না তিনি। কিন্তু দেশের অনেক স্বনামধন্য সার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আসাবুলের কাছ থেকে কম মূল্যে সার কিনে তা অধিক লাভে সারা দেশে বিক্রি করছে।
নেই প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা, পার হননি স্কুলের গন্ডি। হারিকেনের টিমটিমে আলোয় নিজের নামটুকু শুধু লেখা শিখেছেন মাত্র। দরিদ্রের কষাঘাতে বেড়ে ওঠা ব্যক্তিটি আজ নিজেই একজন উদ্যোক্তা।
চুয়াডাঙ্গায় ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সারে ভাগ্য বদলে গেছে আসাবুল হক নামের ওই উদ্যোক্তার। অনেকটা শূন্য থেকে শুরু করে তার পুঁজি আজ কোটি টাকার বেশি। নিজের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় শতাধিক মানুষের। একই সঙ্গে কৃষি জমির স্বাস্থ্য সুরক্ষাও হচ্ছে তার মাধ্যমে। তিনি আগ্রহী বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য সার্বিক সহযোতিার আশ্বাস দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে উৎসাহিত করছেন।
আরও পড়ুন: উৎপাদন বাড়াতে পাট চাষিদের সাড়ে ৭ কোটি টাকা প্রণোদনা দেবে সরকার
বাংলাদেশে ১৮ লাখ ৩ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
দেশে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৮ লাখ ৩ হাজার বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান।
বাগেরহাট থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এইচ এম বদিউজ্জামানের এক প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় এলাকার মৎস্যজীবীসহ সারা দেশে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৮ লাখ ৩ হাজার ৪১৮ জন। ‘এর মধ্যে ১৪ লাখ আইডি কার্ড ইস্যু করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: গবেষণা করে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
গাইবান্ধা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সরকারি দলের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতির প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির ১৫টি মারাত্মক সংক্রামক রোগের ১৭ ধরনের ভ্যাকসিন উৎপাদন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, এসব টিকা সরকার নির্ধারিত ভর্তুকি মূল্যে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
তিনি বলেন, , বিশেষত প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে ভ্যাকসিনগুলো সহজলভ্য করার লক্ষ্যে সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরে গবাদি পশু ও পোল্ট্রি ভ্যাকসিনের প্রায় ৩২ কোটি ৮৬ লাখ ডোজ উৎপাদন ও বিতরণ করেছে।
আরও পড়ুন: রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
সুপারফুড 'বিটরুট' এর ফলন বৃদ্ধি বিষয়ে গবেষণা করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ফাতেমাতুল বুশরা। গবেষণাটির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন একই বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মো. হারুন অর রশিদ।
বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এনএসটি) ফেলোশিপের অর্থায়নে গবেষণাটি করা হচ্ছে বলে জানান বুশরা।
বুশরা বলেন, ‘বিটরুটের দেশীয় ২টি হাইব্রিড জাত হার্ট বিট ও রেড বেবি এবং যুক্তরাজ্যের জাত বোল্টার্ডি নিয়ে গবেষণা করছি। ৩টি জাতেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপদ মাত্রার মধ্যে বিভিন্ন ডোজে জিব্বেরেলিন নামক গ্রোথ প্রোমোটার বা উদ্ভিদের বৃদ্ধিকারক হরমোন ও সুষম মাত্রায় জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে।’
গ্রোথ প্রোমোটার ব্যবহার করায় ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কেবল দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর রঙিন ফুলকপি: বাকৃবি অধ্যাপক
উৎপাদন বাড়াতে পাট চাষিদের সাড়ে ৭ কোটি টাকা প্রণোদনা দেবে সরকার
সারাদেশে পাট চাষ বাড়াতে কৃষকদের প্রায় ৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা প্রণোদনা দেবে সরকার।
বৃহস্পতিবার(১৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এবার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬০০ জন ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও মাঝারি কৃষক বিনামূল্যে বীজ পাবেন।
আরও পড়ুন: পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদনকারীদের প্রণোদনা দেবে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পাট চাষের আওতায় এক বিঘা জমির জন্য প্রত্যেক কৃষক এক কেজি বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) বীজ পাবেন।
শিগগিরই মাঠ পর্যায়ে এই প্রণোদনাটি বিতরণ শুরু হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বোরো হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বাড়াতে ৯০ কোটি টাকার প্রণোদনার ঘোষণা কৃষি মন্ত্রণালয়ের
জিনোম সেন্টারকে কাজে লাগিয়ে পাটের উৎপাদন বাড়াতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, সরকারের পাটবান্ধব নীতির কল্যাণে বিগত ১০ বছরে পাটের উৎপাদন বেড়েছে ৩৩ লাখ বেল।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে যেখানে ৫১ লাখ বেল পাট উৎপাদন হতো, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে পাট উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৮৪ লাখ বেল। এর মধ্যে প্রায় ৪৩ লাখ বেল পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: মজুতের অভিযোগ পেলে গ্রেপ্তার করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাট গবেষণায় জিনোম সেন্টারের সাফল্য ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য ২০০৯ সালে পাটের জিনোম সিকুয়েন্সিং এর কার্যক্রম শুরু করেন এবং জিনোম সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। এর ফলে ২০১০ সালে বিশ্বে সর্বপ্রথম পাটের জীবন রহস্য উন্মোচন হয়।
তিনি বলেন, জীবন রহস্য উন্মোচনের ফলে দেশে চাষ উপযোগী উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে। আর দেশের মাটিও পাট চাষের জন্য খুবই উপযোগী। কাজেই পাটের উৎপাদন বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে।
বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, পাটের উৎপাদন আরও বাড়াতে উচ্চ ফলনশীল জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। এলক্ষ্যে গবেষণায় আরও মনোযোগী হতে হবে এবং জিনোম সিকুয়েন্সিং ল্যাবের পুরোপুরি ব্যবহারে আপনাদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: আমাদের এখন লক্ষ্য ডালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া: কৃষিমন্ত্রী
পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে কাজ চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি। চাহিদার সিংহভাগ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। পাটের আঁশের বহুমুখী ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে জিওটেক্সটাইলের অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার। শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বজুড়ে নানা কাজে ‘মেটাল নেটিং’ বা পলিমার থেকে তৈরি সিনথেটিক জিওটেক্সটাইলের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ও উৎকৃষ্ট জুট জিওটেক্সটাইলের কদর বাড়ছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ থেকে পাটকাঠির কালো ছাই বর্তমানে চীন, তাইওয়ান, জাপান, হংকং ও ব্রাজিলে রপ্তানি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের বৈঠক
কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য স্থানীয় কৃষি বিভাগকে কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশ
কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ায় পর ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের সঙ্গে সারা দেশে উঠান বৈঠক করার কর্মপরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
এর অংশই হিসেবে প্রথম উঠান বৈঠক করেছেন তিনি।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক ইন্দু ভূষণ পাল নিরুর উঠানে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পাঁচ শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বীজ-সার ও কৃষি উপকরণ সহায়তা বাড়ানো হবে: কৃষিমন্ত্রী
মৌলভীবাজার জেলায় চাষযোগ্য পতিত জমিকে কীভাবে চাষের আওতায় আনা যাবে, কোন জমিতে কী ফসল ফলানো যাবে, সে বিষয়ে আগামী ৫০ দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য স্থানীয় কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
আমন ধান কাটার এই গ্রামের জমি এখনো পতিত পড়ে আছে কেন, কৃষকদের কাছে সে বিষয়ে বিস্তারিত শুনেন কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, চাষযোগ্য জমি অনেক। এখন বোরোর মৌসুম, অথচ আমন ধান কাটার পর এখানে সব জমি পতিত পড়ে আছে। এসব জমি কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
আরও পড়ুন: মজুতের অভিযোগ পেলে গ্রেপ্তার করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
সেচের সমস্যা নিরসনে বিএডিসিকে কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। শ্রমিক সংকট নিরসনে ভর্তুকি মূল্যে আরও বেশি করে কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উঠান বৈঠক প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠক করে স্থানীয় পর্যায়ে কী কী সমস্যা আছে, তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
কৃষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা আরও বেশি করে ফসল ফলান। সরকার আপনাদের পাশে আছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সব স্তরের কর্মকর্তারা আপনাদের পাশে আছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেওয়া হবে। উৎপাদন আরও বাড়াতে পারলে কারও পেটে ক্ষুধা থাকবে না, খাদ্য আমদানি করতে হবে না, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হবে না।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিকে কোনো প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: কৃষিমন্ত্রী
উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বীজ-সার ও কৃষি উপকরণ সহায়তা বাড়ানো হবে: কৃষিমন্ত্রী
ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের মাঝে ভালো বীজ, সারসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ সহায়তা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
তিনি বলেন, যেভাবেই হোক ফসলের উৎপাদন আমাদের বাড়াতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বীজ, সার প্রভৃতি কৃষি উপকরণের কোনো রকম ঘাটতি হবে না, সংকট হবে না। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বেশি করে কৃষি উপকরণ দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার(১৮ জানুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. আব্দুস শহীদ কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ায় তার নির্বাচনি এলাকা শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: আমি পেশায়-নেশায় সবকিছুর মধ্যে কৃষক: কৃষিমন্ত্রী
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে সিন্ডিকেট কাজ করে। কীভাবে এই সিন্ডিকেট ভাঙা যায়, তার কার্যকর পদ্ধতি বের করতে আমরা চেষ্টা করছি। মজুতদারদের রোধ করতে হবে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শই আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পুঁজি। এই আদর্শের কারণেই বঙ্গবন্ধু আমাকে ভালোবাসতেন। স্বাধীনতার পর লন্ডনে গিয়ে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি বলেই সেখানে যাইনি। দেশে থেকে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। এখন জনগণের ভালোবাসাই আমার সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষায় আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
পরে সন্ধ্যায় মন্ত্রী শ্রীমঙ্গলে ফুলছড়া চা বাগানের শীতার্ত ও অসহায় চা-শ্রমিকদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: কৃষিপণ্যের মধ্যস্বত্বভোগীদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিপণ্যের মধ্যস্বত্বভোগীদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
দেশে কৃষিপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে মধ্যস্বত্বভোগীদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
তিনি বলেন, যে পদ্ধতি অনুসরণ করলে মধ্যস্বত্বভোগীদের ধ্বংস করে দেওয়া যাবে আমরা সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাই। আমরা ভোক্তাদের জন্য মার্কেট স্ট্যাডি করতে চাই।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন:
এর আগে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রোস্টার। সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার।
তিনি আরও বলেন, মার্কেট দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে এখনই তার কোনো ডেডলাইন দেওয়া যাচ্ছে না।
মন্ত্রী বলেন, কত দিনের মধ্যে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে সে বিষয় ডেডলাইন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য যতগুলো সেক্টর আছে সবাই একত্রিত হয়ে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা নেব। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়েই আমরা বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে চাই।
তিনি বলেন, বেশি মুনাফার জন্য মানুষের বুকে চাকু মারলাম, সেটা তো হয় না। বাজার নিয়ন্ত্রণে বাজার বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: পেশায়-নেশায় সবকিছুর মধ্যে কৃষক: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এগিয়ে যাওয়া। এগিয়ে যাওয়ার জন্য উন্নত প্রযুক্তির চাষাবাদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। এখানে অনেক বিজ্ঞানী রয়েছেন, আমরা তাদের কাজে লাগাতে চাই।
তিনি আরও বলেন, উৎপাদন যাতে বেশি হয়, ফসল যাতে বেশি হয়, সেজন্য আমরা কোনো জমি খালি রাখতে চাই না। যেসমস্ত জায়গায় ফসল ফলানো যায়, সেখানে যাতে কৃষকরা উৎপাদনে উৎসাহিত হয়, আমরা সে পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজনে আমরা উঠান বৈঠক করব। গ্রাম পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তারা রয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে তিনজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা প্রতিটি এলাকায় ঘুরে ফসলের সমস্যা কী, কীটনাশক সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা ও সঠিক মাত্রায় সার দিচ্ছে কি না- তা তদারকি করে থাকেন। সেই তদারকি আরও জোরদার করা হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের মুক্তি নিয়ে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত: আইনমন্ত্রী
জামার্নির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ বলেন, স্বাধীনতার সময় থেকে জার্মানির সঙ্গে আমাদের একটা সুসম্পর্ক রয়েছে। তারা আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। জার্মানি উন্নত দেশ, কৃষিতে উন্নত। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করবে। পূর্বাচলে আমরা একটি আন্তর্জাতিকমানের প্যাকিং হাউজ ও ল্যাব করতে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে জার্মানির কারিগরি সহযোগিতা দরকার। এ বিষয়েও তারা সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জার্মানিতে আম, আনারস, শাকসবজি রপ্তানি করতে চাই। তাদের বলেছি, কোয়ালিটির ব্যাপারে আমরা কোনো আপস করব না। উৎপাদনের ক্ষেত্রে মানের প্রশ্নে আপস করা হবে না। এক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স।
আরও পড়ুন: আলু আমদানি হলে দাম কমবে, মানুষ স্বস্তি পাবে: কৃষিমন্ত্রী
কুড়িগ্রামে তীব্র ঠান্ডায় বীজতলা ও ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা আর শীতের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরে পড়া কুয়াশা আর দিনের বেলা হিম বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র ঠান্ডায় কাজ করতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। কাজের ফাঁকে শুকনো খড় জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শ্রমিকরা।
এদিকে তীব্র শীতে বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। কনকনে ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে স্বচ্ছ সাদা রঙের প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখছেন বীজতলা। এমন বৈরি আবহাওয়ায় জমিতে চারা রোপণের সাহস পাচ্ছেন না কৃষকরা।
কথা হয় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বোরো আবাদের জন্য বীজতলার চারার পরিণত বয়স হয়েছে। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে জমিতে রোপণ করতে পারছি না। এদিকে বীজতলাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে প্লাস্টিক দিয়ে বীজতলা ঢেকে রেখেছি।
আরেক কৃষক মো. মন্তাজ আলী বলেন, যে শীত পড়ছে তাতে কৃষি আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বিশেষ করে আলু খেত, বীজতলায় হিম ধরা শুরু করেছে। স্প্রে করতেছি কোনো কাজ হচ্ছে না। কী হবে আল্লাহ জানে।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে বোরো ধানের বীজতলা ও সবজির ক্ষতির আশঙ্কায় যশোরের কৃষকরা
শ্রমিক মো. রহমত আলী বলেন, ‘বাহে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ছে। হাত পা টট্টরিয়া নাগছে (বরফ মত)। মাঠে এক-দেড় ঘণ্টা কাজ করলে আর কাজ করা যায় না। কাজের ফাঁকে আগুন তাপা নাগে। কী করমো কাজ না করলে পেটে কি ভাত জুটবে?’
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার অফিসের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বলেন, রবিবার জেলায় সকাল ৬টায় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী দুই-তিন দিন এমন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে। তবে মাসের শেষে একটি শৈত্য প্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা রয়েছে। ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় কৃষকদের বোরো আবাদে বিলম্বিত হচ্ছে। বীজতলা এখনও নষ্ট হওয়া শুরু করেনি। তবে তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে চারা খাদ্য গ্রহণ করতে না পারায় পাতা হলুদ হয়ে যায়। বীজতলা নষ্টের হাত থেকে বাঁচাতে কৃষকদের বাড়তি যত্ন ও ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শৈত্য প্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় যে পরামর্শ দিল কৃষি মন্ত্রণালয়