সারাদেশ
দশ হাসপাতাল ঘুরে শয্যা না পেয়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
সিলেটের প্রায় ১০টি হাসপাতালে ঘুরে কোনো শয্যা না পেয়ে শেষে বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার লালচান বিবি (৭২)। শ্বাসকষ্ট ও জ্বরসহ কোভিডের উপসর্গ ছিল তার শরীরে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ভর্তির তিন ঘণ্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চান বিবি।
জানা গেছে, বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা রোগীদের জন্য স্থাপিত আইসোলেশন ওয়ার্ডের ১০টি শয্যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত খালি পড়ে ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের সেই শয্যাগুলো প্রায় পূর্ণ হয়েছে। দশ শয্যার সব কয়টিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন করোনায় আক্রান্ত রোগী। এসব রোগীদের একজন হচ্ছেন লাল চান বিবি।
লাল চান বিবিসহ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের দেয়া হচ্ছিল প্রয়োজনীয় সেবা। কিন্তু ভর্তির তিন ঘণ্টা পর শনিবার বিকাল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ইসহাক আজাদ বলেন, ওই বৃদ্ধাসহ ১০ জন করোনা রোগী হাসপাতালের নির্ধারিত আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। লাল চান বিবির শ্বাসকষ্টের সমস্যা প্রকট। তাছাড়া শারীরিক অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না। তাকে আমরা প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে রেখেছিলাম, কিন্তু তিনি ভর্তির তিন ঘণ্টা পর মারা যান।
পড়ুন: দু’একদিনের মধ্যেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু
তিনি বলেন, বৃদ্ধার স্বজনরা জানিয়েছেন সিলেটের দশটি হাসপাতালে তাকে নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কোথাও শয্যা না পেয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তারা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হচ্ছিল।
বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, আমাদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে দশটি শয্যা রয়েছে। এরই মধ্যে সবগুলো শয্যায় ভর্তিরত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। যদিও আমাদের হাসপাতাল করোনা ডিডেক্টেড নয়, তবুও বৃদ্ধা লাল চান বিবির শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে আমরা ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন বিকালেই মারা গেছেন। এর আগে আমরা তার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেছি।
পড়ুন: সিলেটে করোনায় আরও ৯ মৃত্যু, শনাক্ত ৩৪০
সিলেট বিমানবন্দরে প্রবাসী নারীকে হয়রানির অভিযোগ
তিনি বলেন, সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যস্থ বিয়ানীবাজারবাসীর একটি সামাজিক সংগঠন থেকে তিনটি কনসেনট্রেটর পাওয়ায় করোনা রোগীদের সেবা প্রদানে সহযোগিতা হচ্ছে।
আনুসাঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জাম আরও যুক্ত হলে করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা আরও বাড়ানোর কথা জানান তিনি।
যশোরে পরকীয়ার বলি গৃহবধূ!
যশোরের শার্শায় লাবনী খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে উপজেলার বাগঁআচড়ার সাতমাইল গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, পরকীয়ার জেরে লাবনীকে তাঁর স্বামী শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে।
এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী ইমামুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে। শনিবার বিকেলে পুলিশ লাবনীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ জয়পুরহাটে স্ত্রীকে ‘হত্যার’ পর স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা
লাবনী যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চাকলা কাঁটালতলা গ্রামের সবুজ আলী গাজীর মেয়ে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, পাঁচ বছর আগে লাবনী খাতুনের বিয়ে হয় শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ার সাতমাইল এলাকার শফিকুল ইসলাম শফির ছেলে ইমামুল ইসলামের সঙ্গে। প্রথম দিকে সংসার জীবন ভালো চললেও বাঁধ সাধে স্বামীর পরকীয়া। শুক্রবার রাতে স্বামীর ফোন দেখতে গিয়ে স্থানীয় একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম আলাপের একটি অডিও রেকর্ডিং শুনতে পান লাবনী। এ বিষয় জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ইমামুল লাবনীকে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে সেটি আত্মহত্যা বলে রটাতে লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।
আরও পড়ুনঃ স্ত্রী মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার দায় স্বীকার মুকুন্দ চন্দ্রের
নিহতের বাবা সবুজ আলী গাজী জানান, ইমামুল প্রায়ই তার মেয়েকে নির্যাতন করতো। মেয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন রয়েছে। সকালেও তাকে মারধর করা হয়। পুলিশ আসার খবরে ইমামুলসহ বাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে। এ হত্যার সঠিক বিচার চাই। পুলিশ তদন্ত করলে রহস্য উদঘাটন হবে।
আরও পড়ুনঃ স্বামীকে হত্যা করে রান্নাঘরে পুঁতে রাখেন স্ত্রী
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শ্বশুর বাড়ির কাউকে পাওয়া যায়নি। নিহতের বাপের বাড়ির লোকজন আপাতত অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করছে।
লাশ ময়নাতদন্ত শেষে যদি হত্যা প্রমাণিত হয় তখন হত্যা মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সিলিন্ডার উপহার দিলেন আইনমন্ত্রী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার উপহার দিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইনমন্ত্রীর পক্ষে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল উপহারের অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্ল্যার হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুনঃ বেনাপোল দিয়ে আরও ২০০ টন অক্সিজেন আমদানি
এসময় উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুর রহমান, আবাসিক চিকিৎসক শ্যামল কুমার ভৌমিক, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল মমিন বাবুল, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কাজী নাসির উদ্দিন খাদেম লিটন, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু কাউসার ভূইয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাবলু প্রমুখ।
আরও পড়ুনঃ ফোন দিলেই করোনা রোগীর বাড়িতে পৌঁছে যাবে অক্সিজেন
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী একজন মানবিক মানুষ। করোনা পরিস্থিতি শুরু থেকেই তিনি নিজ সংসদীয় এলাকা কসবা-আখাউড়ার মানুষের যথাসাধ্য সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মন্ত্রী মহোদয়ের নিজস্ব অর্থে অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো ক্রয় করে আখাউড়ার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের জনগণকে উপহার দিয়েছেন। তিনি আরও অক্সিজেন সিলিন্ডার দিবেন বলেন আশ্বাস দিয়েছেন।‘
আরও পড়ুনঃ সিলেটে কল দিলেই মিলছে অক্সিজেন সেবা
সিভিল সার্জন এ জন্য মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই মুহুর্তে মানুষের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন অক্সিজেন সিলিন্ডার। মন্ত্রীর এ উপহার বহু মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে।
টিকা কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবককে মারধর, দুজনের এক মাসের কারাদণ্ড
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে করোনা টিকা নিতে গিয়ে রেডক্রিসেন্টের কর্তব্যরত স্বেচ্ছাসেবকদের মারধরের ঘটনায় দুই যুবককে ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মারধরের ঘটনায় আহত অবস্থায় যুব রেডক্রিসেন্টের দুই স্বেচ্ছাসেবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, রাতুল কুমার শীল (১৯) এবং জিলানী (১৬)।
আরও পড়ুনঃ দেশে পৌঁছেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রায় ৮ লাখ টিকা
শনিবার দুপুরে হাসপাতাল চত্বরে টিকাদান কার্যক্রমে নিয়োজিত দুইজন স্বেচ্ছাসেবককে মারধরের ঘটনা ঘটে। তৎক্ষণিকভাবে হাসপাতাল চত্বরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোছাব্বেরুল ইসলাম এই দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার ভদ্রপাড়া গ্রামের আশরাফ ফরাজীর ছেলে মো. একরাম ফরাজী এবং একই গ্রামের মালেক হাওলাদের ছেলে আলী হোসেন। দন্ডপ্রাপ্ত এই দুই যুবককে বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সিলেটে করোনার টিকা নিবন্ধন সাময়িক বন্ধ
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোছাব্বেরুল ইসলাম জানান, বাগেরহাট সদর হাসপাতালে টিকাদান কেন্দ্রে রেডক্রিসেন্টের রাতুল ও জিলানী স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। টিকা গ্রহীতারা সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে একে একে কেন্দ্রে প্রবেশ করছিলেন। কিন্তু দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই যুবক লাইনের সিরিয়াল ভেঙ্গে টিকা কেন্দ্রে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। এসময় সেচ্ছাসেকরা তাদের বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই যুবক অন্যায় ভাবে তাদের মারধর করে।
আরও পড়ুনঃ দেশে পৌঁছেছে সিনোফার্মের আরও ৩০ লাখ টিকা
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই দুই যুবককে দণ্ডবিধির
ভোগান্তি উপেক্ষা করে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
চলমান কঠোর লকডাউনের মাঝেও কলকারখানা খোলার ঘোষণায় মহাসড়কে বেড়েছে মানুষের চলাচল। শনিবার সকাল থেকেই ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় লেগে আছে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভিড়। বিভিন্ন স্থান থেকে ইজিবাইক, ভ্যান বিকশা যোগে টার্মিনালে এসে হাজির হচ্ছে তারা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষেরা। কাজে যোগ দিতে ইজিবাইক, মাহেন্দ্রসহ ছোট ছোট যানে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে তাদের। যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। এসময় যানবাহন না পেয়ে অনেককে বসে থাকতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুনঃ ৫ আগস্টের পরও বিধিনিষেধ বহালের সুপারিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
যশোর থেকে ঢাকাগামী রাশেদুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমরা যশোর আসছি। আগামীকাল থেকে অফিস খোলা। অফিস তো যেতেই হবে। সেই কারণে বাচ্চাদের নিয়ে অনেক কষ্ট করে সিএনজি, অটোরিকশা করে যেতে হচ্ছে। ফ্যাক্টরি খোলা ঠিক আছে। তবে গাড়িগুলো যদি খুলে দিত তাহলে আমাদের ভোগান্তি কম হতো।‘
একই এলাকা থেকে আসা আব্দুল্লাহ নামের এক যাত্রী বলেন,’ আমি আসছি অভয়নগর যশোর থেকে। এখন যাব ঢাকা। আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী আছে। এখন যাব কি করে? ১০ টাকার ভাড়া ১’শ টাকা নিচ্ছে। তাও গাড়ি পাচ্ছি না। খুবই বিপদে আছি।‘
আরও পড়ুনঃ ভোলায় ফেরিঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ভিড়
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে আসা নাজমুল হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘সরকার জনগণের কথা কখনো চিন্তাই করে না। আমাদের কথা যদি ভাবতো তাহলে গাড়ি চালু করতো। গাড়ি বন্ধ করে গার্মেন্টস খুলে দেওয়া কোন ভাবেই উচিত হয়নি। মানুষের কথা ভাবেন দয়া করে। এভাবে ভোগান্তি দেওয়া ঠিক না।‘
আরও পড়ুনঃ পাটুরিয়াঘাট দিয়ে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ ট্রাফিট ইন্সপেক্টর সালাহউদ্দিন বলেন, সকাল থেকে টার্মিনালে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। তারা ছোট ছোট যানবাহনে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত
পাবনায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নছিমন ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। পাবনা-কাশিনাথপুর মহাসড়কের দাড়িয়াপুর নামক এলাকায় শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পাবনা থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা কাশিনাথপুরের দিকে যাচ্ছিল। পথে দ্বারিয়াপুর নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নছিমনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যান।
আহত দুইজনের মধ্যে একজনকে কাশিনাথপুর ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপরজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। হতাহতরা সবাই অটোরিকশার যাত্রী।
আরও পড়ুন: পাবনায় ট্রাকচাপায় বাবা-মেয়ে নিহত
পাবনা ও বাগেরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫
রামেক হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১৩ মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনায় পাঁচজন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও আটজন। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টার মধ্যে করোনা ইউনিটে এই ১৩ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জুলাই মাসে রামেকের করোনা ইউনিটে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬৬ জনে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে করোনায় মৃত্যু ৫, বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের দায়ে ৪৩৮ মামলা
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, চলতি মাসে (১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত) মারা যাওয়া ৫৬৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে ১৮৪ জনের। আর শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর নমুনা পরীক্ষার আগেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৪৪ জন। বাকি ৩৮ জন করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ।
তিনি আরও জানান, এর আগে গত জুন মাসে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান ৪০৫ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ হওয়ার পর মারা গেছেন ১৮৯ জন। বাকিরা করোনা উপসর্গ নিয়ে নমুনা পরীক্ষার আগেই মারা যান। এছাড়াও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৭, মার্চে ৩১, এপ্রিলে ৭৯ ও মে মাসে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সিলেটে করোনায় আরও ৯ মৃত্যু, শনাক্ত ৩৪০
রামেকের পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজশাহীর তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, নাটোরের একজন, নওগাঁর তিনজন ও পাবনার পাঁচজন। এদের মধ্যে সাতজন পুরুষ এবং ছয়জন নারী।
শামীম ইয়াজদানী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪৮ জন। একই সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩২ জন। শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩ বেডের বিপরীতে ভর্তি আছেন ৪৩৩ জন। এদের মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ১৯ জন।
আরও পড়ুনঃ খুলনা বিভাগে করোনায় ১৯ মৃত্যু
করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে ১৮৮ জনের করোনা পজেটিভ রয়েছে। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৭৮ জন; যাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৭ জন।
ফরিদপুরে করোনায় মৃত্যু ৫, বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের দায়ে ৪৩৮ মামলা
ফরিদপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩২ জনের।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুর পিসিআর ল্যাবে ৩৪৪ নমুনা পরীক্ষার মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ১৩২ জনের। আর এই সময়ে করোনায় মারা গেছে পাঁচজন।
আরও পড়ুনঃ ৫ আগস্টের পরও বিধিনিষেধ বহালের সুপারিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ২৭২ রোগী।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সারাদেশে চলমান কঠোর লকডাউনের প্রথম আট দিনে বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের দায়ে ফরিদপুরে ৪৩৮ মামলা হয়েছে। এসব মামলার ৪ লাখ ২ হাজার ৩০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সিলেটে করোনায় আরও ৯ মৃত্যু, শনাক্ত ৩৪০
গত ২৩ জুলাই সকাল থেকে ৩০ জুলাই রাত ১০টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ১৫ জন নির্বাহী হাকিম এই মামলাগুলো করেন। অভিযান চলাকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালানো হয়। কঠোর লকডাউনের এই বিশেষ অভিযানে আদালতকে সহায়তা করেন জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা।
ফরিদপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, কঠোর লকডাউন চলাকালে সরকারের দেয়া বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ১৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত জেলার নয়টি উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা সহায়তা করছেন।
আরও পড়ুনঃ বাগেরহাটে লকডাউনে ৬৩ জনকে জরিমানা
তিনি বলেন, সরকারি কঠোর বিধি নিষেধ জারি থাকাকালে নিয়মিত এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে।
লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলায় ১৬টি স্থায়ী চেকপোস্ট এবং ২৯টি মোবাইল টিম কাজ করছে বিভিন্ন জায়গায়।
ভোলায় ফেরিঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ভিড়
গার্মেন্টসসহ শিল্প কলকারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণার পর কঠোর বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা, চট্টগ্রামের দিকে ছুটছে। শনিবার সকাল থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার জন্য ভোলা- লক্ষ্মীপুর নৌরুটের ইলিশা ফেরিঘাটে শ্রমজীবী মানুষদের ভিড় করতে দেখা যায়।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। ফেরিতে ছিলনা কোন স্বাস্থ্যবিধির বালাই। প্রচণ্ড গরমে অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ পাটুরিয়াঘাট দিয়ে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশ্যে প্রথম ফেরি ছেড়ে গেলেও কয়েক হাজার যাত্রী কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ইলিশা ফেরিঘাটে অপেক্ষা করে পরের ফেরির অপেক্ষায়।
কর্মস্থলে ফেরা শ্রমজীবীদের একজন জানান, হঠাৎ করে গার্মেন্টস শিল্প কলকারখানা খুলে দেয়ায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। তাদের অফিস থেকে আগামীকাল কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। অথচ লঞ্চ থেকে শুরু করে সকল গণপরিবহন বন্ধ। একদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তাদের ১০ দিনের বেতন কাটা হয়। তাই বিপাকে পড়ে চরম দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে পদে পদে বাধা উপেক্ষা করে নিয়ে তারা কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে রওনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন: বিনা বাধায় ফেরিতে যাত্রী আসছে পাটুরিয়াঘাটে
তাদের অভিযোগ ৫ আগষ্ট পর্যন্ত লকডাউন ছিল। তারপর গণপরিবহন খুলে দেয়ার পর কল-কারখানা গার্মেন্টস খোলা হলে তাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
এদিকে ফেরিতে উঠতে না পেরে অনেকে আবার উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে ট্রলারে লক্ষ্মীপুর যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে কোস্টগার্ড ও পুলিশের বাধার মুখে পড়ে যাত্রীরা। এ সময় কয়েকটি যাত্রীবাহী ট্রলার আটক করা হয়।
রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের ৪ সদস্য আটক: অস্ত্র, গুলি উদ্ধার
রাঙামাটিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ইউপিডিএফের (মূল) সশস্ত্র শাখার চারজন সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
শনিবার সকালে রাঙামাটি সদর সেনা জোন এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আটকরা হলেন, সুরেন চাকমা, অসিং চাকমা, অনিল চাকমা, সাইমন চাকমা।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি একে-২২ রাইফেল, ৭৭ রাউন্ড এ্যামুনিশন, ম্যাগাজিন, ওয়াকিটকি সেট, সোলার চার্জার, চাঁদা সংগ্রহের রশিদ বই, চারটি মোবাইল সেট, হাত ঘড়ি, ভূয়া আইডি কার্ড, রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, নগদ ৬৩ হাজার ৫৯২ টাকা ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: কঠোর লকডাউনে ২১ দফা নির্দেশনা, থাকছে সেনাবাহিনী
বিবৃতিতে বলা হয়, শনিবার ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পার্বত্য অঞ্চলের সশস্ত্র চাঁদাবাজদের ধরতে রাঙামাটি রিজিয়ন সদর জোন কর্তৃক বরকল উপজেলার দুর্গম ছোট কাট্টলী এলাকার গভীর জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বরকল থানায় হস্তান্তর করা হবে।
আটকরা দীর্ঘদিন ধরে রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টি করে আসছিল এবং তারা ইউপিডিএফের (মূল) সশস্ত্র শাখার সক্রিয় সদস্য বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।