বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ ও বিনিয়োগে আগ্রহী সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
এ বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা করেন দুবাই চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ আলী রাশেদ লুতাহ এবং মাহবুবুল আলম।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল বলেন, 'সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম অংশীদার হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন দ্বিগুণ ডেনিম রপ্তানি
তিনি বলেন, ‘আমাদের লাখ লাখ রেমিট্যান্স যোদ্ধা ভাই-বোনেরা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’
তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ ও দক্ষ জনশক্তি নিয়োগে এফবিসিসিআইয়ের পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের জন্য সম্ভাবনাময় খাতগুলো তুলে ধরেন মাহবুবুল।
তিনি নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত করার সরকারের প্রতিশ্রুতি হিসেবে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠা এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর সমাপ্তির কথাও তুলে ধরেন।
ইপিজেডে বিনিয়োগকারী জাপান, ভারত ও কোরিয়ার মতো দেশগুলোর সাফল্যের গল্প তুলে ধরে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল হক। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, পায়রা ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে বিপুল বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও উন্নয়নশীল এশিয়ায় বলিষ্ঠ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির
মাহবুবুল আলম বাংলাদেশের পোশাক, সিরামিক, চামড়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের মতো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত খাতগুলো বিবেচনায় নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
জবাবে দুবাই চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী রাশেদ লুতাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্য দুবাই চেম্বারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এদিকে দুবাই চেম্বারের সভাপতি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দুবাইয়ে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে এফবিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ ফায়াজুর রহমান ভূঁইয়া, ফখোরুস সালেহীন নাহিয়ান, আবুধাবি দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আশীষ কুমার সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন